বহুমুখী প্রতিভাধর এক অনন্য মেধাবী ব্যক্তিত্ব
মুহাম্মদ কামারুজ্জামান প্রথম শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত বরাবরই প্রথমস্থান অধিকারী ছিলেন। অষ্টম শ্রেণীতে তিনি আবাসিক বৃত্তি পান। ১৯৬৭ সালে ৪টি বিষয়ে লেটারসহ এসএসসি পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন এবং আবাসিক বৃত্তি লাভ করেন। পুরো শেরপুরে একজন ভালো ছাত্র হিসেবে তিনি পরিচিত ছিলেন। ১৯৭৩ (১৯৭৪ সালে অনুষ্ঠিত) সালে ঢাকা আইডিয়াল কলেজ থেকে ডিস্ট্রিংশনসহ বিএ পাস করেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে মাস্টার্সে ভর্তি হন। সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের আবাসিক ছাত্র হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবৃত্তি লাভ করেন। ১৯৭৬ সালে কৃতিত্বের সাথে সাংবাদিকতায় এমএ পাস করেন।
বিশ্ব মুসলিম যুব সংস্থা (ওয়ামী) এবং বাংলাদেশ সরকারের যুব মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে ১৯৭৯ সালে মৌচাক স্কাউট ক্যাম্পে আন্তর্জাতিক ইসলামী যুব সম্মেলন আয়োজন করা হয়। এতে তিনি প্রধান সংগঠকের দায়িত্ব পালন করেন। এ সময় যুব মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন শেরপুরের আরেক কৃতী সন্তান মরহুম খন্দকার আব্দুল হামিদ। উল্লেখ্য যে, এই সম্মেলনে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট শহীদ জিয়াউর রহমান উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন।
ছাত্র জীবন শেষে মুহাম্মদ কামারুজ্জামান সাংবাদিকতাকেই পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন। ১৯৮০ সালে তিনি বাংলা মাসিক ‘ঢাকা ডাইজেস্ট’ পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে কাজ শুরু করেন। ১৯৮১ সালে সাপ্তাহিক ‘সোনার বাংলা’ পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্ব নেন। সামরিক স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে সোনার বাংলায় ক্ষুরধার লেখনির কারণে এরশাদের শাসনামলে পত্রিকাটির প্রকাশনা নিষিদ্ধ হয়েছিল। জনাব মুহাম্মদ কামারুজ্জামান পত্রিকাটির সম্পাদক ছিলেন। তিনি একটি ব্যতিক্রমধর্মী সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন ‘নতুন পত্র’ প্রকাশ শুরু করেছিলেন। ১৯৮৩ সাল থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত দশ বছর দৈনিক সংগ্রামের নির্বাহী সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেন। মুহাম্মদ কামারুজ্জামান জাতীয় প্রেস ক্লাব এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সদস্য ছিলেন। ১৯৮৫-৮৬ সালে তিনি ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের কার্যনির্বাহী পরিষদের নির্বাচিত সদস্য ছিলেন।
মুহাম্মদ কামারুজ্জামান বাংলাদেশের রাজনীতি, ইসলামী সংগঠন ও আন্দোলন, গণতন্ত্র ও তার বিকাশ, নির্বাচন, গণমাধ্যম, সমাজ সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রচুর চিন্তা ও গবেষণা করে চলেছেন। তিনি বাংলাদেশে অবাধ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠাসহ ইসলামী আদর্শ প্রতিষ্ঠা ও তার কৌশল নিয়ে বেশ কয়েকটি মৌলিক গ্রন্থ রচনা করেছেন এবং সেই বইগুলো পাঠকমহলে বেশ সমাদৃত হয়েছে। তার সর্বশেষ বই ‘সাঈদ বদিউজ্জামান নুরসী’ প্রকাশিত হয়েছে।
বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন
১৯৭৯ সালে তিনি জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করেন। ১৯৮১-৮২ সালে কিছুদিনের জন্য ঢাকা মহানগরী জামায়াতের জয়েন্ট সেক্রেটারি ছিলেন। ১৯৮২ সাল থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯২ সালে তাঁকে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেলের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। জামায়াতের কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক কমিটি ও লিয়াজোঁ কমিটির সদস্য হিসেবে বিগত স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ১৯৮৩-৯০ পর্যন্ত তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৯৩-৯৫ সাল পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে তাঁর ভূমিকা ছিল উল্লেখযোগ্য।
তিনি জামায়াতের নির্বাহী কমিটি, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ ও বিভিন্ন কমিটির সদস্য এবং আন্তর্জাতিক বিষয়ক সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসায় রাজনৈতিক অঙ্গনে দুর্যোগের ঘনঘটা দেখা দেয়। এ সময় তিনি ইসলামী ও জাতীয়তাবাদী শক্তির ঐক্য গড়ে তোলায় দুঃসাহসিক ভূমিকা পালন করেছেন, যা জাতি চিরদিন স্মরণ রাখবে। চারদলের কেন্দ্রীয় লিয়াজোঁ কমিটির অন্যতম শীর্ষ নেতা হিসেবে তাঁর অবদান উল্লেখযোগ্য। ইসলামী ও জাতীয়তাবাদী শক্তির ঐক্য প্রচেষ্টায় তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করেন। এজন্য দলীয় রাজনীতি ছাড়াও বিভিন্ন ফোরামে সভা-সমাবেশ, সেমিনার-সিম্পোজিয়ামে তাঁর সক্রিয় উপস্থিতি বিশেষভাবে লক্ষ্য করা যায়।
আজকের ছাত্রশিবির ও মুহাম্মদ কামারুজ্জামান
বিশ্বের ছাত্র ইসলামী আন্দোলনে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির এক গৌরব গাঁথার নাম। কিন্তু এর সাথে অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িয়ে আছে মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের নামটি। ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির প্রতিষ্ঠিত হলে তিনি প্রথম ঢাকা মহানগরীর সভাপতি এবং পরে সেক্রেটারি জেনারেল মনোনীত হন। ১৯৭৮ সালের ১৯ এপ্রিল ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং একমাস পরই নির্বাচনের মাধ্যমে সেশনের বাকী সময়ের জন্য কেন্দ্রীয় সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৭৮-৭৯ সালেও শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি হিসেবে পুনঃনির্বাচিত হন। ১৯৭৯-র শেষভাগে ছাত্র জীবন সমাপ্ত করলেও মনোনীত প্রাক্তন সদস্য হিসেবে দীর্ঘতম সময় কার্যকরী পরিষদ সদস্য থেকে সরাসরি ছাত্রশিবিরকে তিনি গাইড করেছেন। বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির আজ দেশে এক ব্যতিক্রমী শিক্ষালয় ও গ্রহণযোগ্য প্রতিষ্ঠানে পরিণত হওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর চিন্তাধারার প্রতিফলন রয়েছে।
১. শেরপুরের জনগণের ম্যান্ডেট
১৯৮৬ সাল থেকে শেরপুর সদর তথা শেরপুর-১ আসনে জনাব মুহাম্মদ কামারুজ্জামান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে উল্লেখযোগ্য ভোট পেয়ে আসছেন। সর্বশেষ দুটি সাধারণ নির্বাচনে (২০০১ ও ২০০৮) তিনি খুব অল্প ভোটের ব্যাবধানে হেরে গেলেও ধারণা করা হয় তিনিই প্রকৃত বিজয়ী। কারণ ঐ দুই নির্বাচনেই আওয়ামী লীগ প্রার্থী তার নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকার ভোট কেন্দ্রগুলো দখল করে ব্যাপক কারচুপির মাধ্যমে বিজয় ছিনিয়ে নেন। প্রশাসন নির্বিকার থাকার কারণে এর কোনো প্রতিকারও সম্ভব হয়নি। এত কিছুর পরও ২০০১ এর নির্বাচনে জনাব কামারুজ্জামান ৬৫,৪৯০ ভোট ( বিজয়ী আওয়ামী প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোট ৮৬,১০১)এবং ২০০৮ এর ডিজিটাল নির্বাচনে ১,১০,০৭০ ভোট পান (বিজয়ী আওয়ামী প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোট ১,৩৬,১২৭)। ১৯৭১ সালে শেরপুরের ঘটনাগুলোর প্রত্যক্ষদর্শী মানুষগুলো বেঁচে থাকতে জনাব কামারুজ্জামানকে এত বিপুল ম্যান্ডেট দেয়া কি কোনো অর্থ বহন করে না? উল্লেখ্য যে, তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের ঘটনাস্থল সমূহ শেরপুর-এখানকার মানুষগুলো তাকে দেখে-শুনে বিগত ৪০ বৎসর ধরে যা জেনে এসেছে; সেখানে যদি কামারুজ্জামানের সংশ্লিষ্টতা থাকত, তাহলে শুধুমাত্র ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তার এমন গণরায় কি সম্ভব?
২. মুক্তিযুদ্বের গৌরবময় পরিবারের জামাই
শেরপুর জেলা মুক্তিযোদ্বা সংসদের নির্বাচিত বর্তমান জেলা কমান্ডার-অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক এ জি এম ’৭১ এর রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম হিরুর ছোট বোন মিসেস নুরুন্নাহার জনাব কামারুজ্জামানের সহধর্মিণী। আনোয়ার হোসেন মন্জু (সম্বন্ধী) স্বনামধন্য অনুবাদক, বাসসের সাবেক চিফ রিপোর্টার, সাবেক বার্তা সম্পাদক: দৈনিক বাংলার বাণী (শেখ ফজলুল হক মণি প্রতিষ্ঠিত ও শেখ ফজলুল করিম সেলিম এম পি সম্পাদিত-এক সময়ে আওয়ামী লীগের মূখপত্র হিসেবে পরিচিত), বর্তমানে আমেরিকা প্রবাসী। আবুল কালাম আযাদ (শ্যালক) ২ বারের ইউ পি চেয়ারম্যান, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী। শ্বশুর জনাব আজিজুর রহমান ১৯৭১ সালে কৃষি অধিদপ্তরে চাকরি করতেন, যুদ্ধের সময় অনেক মুক্তিযোদ্বাদের আশ্রয় দিতেন, খাবার দিতেন, সবরকমের সহযোগিতা করতেন। শেরপুরের সুনামধন্য এ পরিবার ’৭১-এর এতগুলো গুরুতর অপরাধে অভিযুক্তের হাতে ১৯৭৮ সালে কি নিজেদের মেয়েকে তুলে দিতে পারেন?
৩. মিসেস কামারুজ্জামানের বিবৃতি
ট্রাইব্যুনালের রায়ের পর জনাব মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের সহধর্মিণী মিসেস নুরুন্নাহার এক বিবৃতিতে মামলার কতিপয় অসংগতি তুলে ধরেছেন দেশবাসীর কাছে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়- প্রিন্সিপ্যাল হান্নানকে (চার্জ-২) নির্যাতনের অভিযোগে জনাব কামারুজ্জামানকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। যাকে অত্যাচারের অভিযোগে কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আনা হয়েছে সেই প্রিন্সিপ্যাল আবদুল হান্নান এখনো সুস্থতার সাথে শেরপুরে বসবাস করছেন। প্রসিকিউশন তাকে সাক্ষী করলেও ট্রাইব্যুনালের সামনে উপস্থাপন করা হয়নি। প্রিন্সিপ্যাল হান্নান আদালতে সত্য প্রকাশ করে দিবেন সে ভয়ে প্রসিকিউশন তাকে ট্রাইব্যুনালের সামনে নেননি। অথচ স্যোসাল মিডিয়ায় প্রচারিত হান্নান সাহেবের বক্তব্যের ভিডিও লিংকে দেখা যাচ্ছে তিনি কামারুজ্জামানের বিরুদ্বে উত্থাপিত অভিযোগটি ডাহা মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছেন এবং উনার প্রশংসা করছেন। মিসেস কামারুজ্জামানের বিবৃতি এ ধরনের সকল অসঙ্গতিগুলোর জবাব কি দিতে হবে না?
কেনা বেচার রাজনীতি ও কামারুজ্জামান
জনাব মুহাম্মদ কামারুজ্জামান যখন ছিলেন তুখোড় ছাত্রনেতা এবং উদীয়মান রাজনীতিবিদ তখন বাংলাদেশে চলছিল কেনা-বেচার রাজনীতির রমরমা বাণিজ্য। ডাকসুর ভি পি আক্তারুজ্জামান, জি এস জিয়া উদ্দিন বাবলু, ছাত্র দলের গোলাম সরওয়ার মিলন, গোলাম ফারুক অভি, সাবেক ছাত্রলীগের শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, আওয়ামী লীগের কোরবান আলীসহ অনেকে তখন খোলস পাল্টিয়ে আখের গোছিয়েছিলেন। পতাকাসহ চড়া দামে বিনিময় হওয়ার জোরালো অফার বার বার প্রত্যাখ্যান করতে উনার সময় নিতে হয়নি। এটাও কি তাঁর অপরাধ?
বাংলাদেশের ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন
মুহাম্মদ কামারুজ্জামান এক ক্ষণজন্মা নেতা; বাংলাদেশের ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্নের জন্য অপরিহার্য সততা, মেধা-যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, ক্লিন ইমেজ-জনপ্রিয়তায় সমৃদ্ধ অনন্য প্রতিভা। স্বাধীন-আত্মনির্ভরশীল বাংলাদেশের অস্তিত্বের বিরোধী সাম্রাজ্যবাদী চক্রের তাই তিনি চক্ষুশূল।
সাংবাদিক, লেখক, বুদ্ধিজীবী, সংগঠক, রাজনীতিবিদ পরিচয়ের বাইরেও শেরপুর জেলার বাজিতখিলা ইউনিয়নের মোদিপাড়া গ্রামে ১৯৫২ সলের ৪ জুলাই জন্ম নেয়া মুহাম্মদ কামারুজ্জামান এ মাটির সন্তান। জামায়াতে ইসলামীর অন্যতম নীতিনির্ধারক হলেও পিতা-মাতার আদরের দুলাল, সন্তানদের পিতা, মিসেস নুরুন্নাহারের স্বামী। আর দশ জন নাগরিকের মতো ন্যায় বিচার পাওয়ার অধিকার তাঁর রয়েছে-বেঁচে থাকার অধিকারতো বটেই।
বর্তমান সরকার সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব আল্লামা দেলওয়ার হোসাইন সাঈদীকে যারা নারী ধর্ষক, খুনী, ডাকাত বলে অপপ্রচার চালিয়েছে; কসাই কাদের সাজিয়ে অসাধারণ প্রতিভাধর রাজনীতিবিদ আবদুল কাদের মোল্লাকে ফাঁসি দিয়েছে, এই সরকারের কাছে আমাদের কিছু চাওয়ার থাকতে পারে না। শুধু দেখার বিষয়-কিয়ামত পর্যন্ত প্রতিটি বিবেকের যে তীব্র ঘৃণাবৃষ্টি এরা নিজেদের জন্য অপরিহার্য করে নিয়েছে তার ফিরিস্তি আর কত দীর্ঘতর করবে? যারা অনুভূতিকে তালাবদ্ধ করে সরকারকে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন তাদের নীরবতা কবে ভাঙবে?
- সিরাজুল ইসলাম শাহীন
0 comments: