৫৫.
হৃদয়ে প্রেমের দিন
হৃদয়ে প্রেমের দিন কখন যে শেষ হয় — চিতা শুধু পড়ে থাকে তার,
আমরা জানি না তাহা; — মনে হয় জীবনে যা আছে আজো তাই শালিধান
রূপশালি ধান তাহা… রূপ, প্রেম… এই ভাবি… খোসার মতন নষ্ট ম্লান
একদিন তাহাদের অসারতা ধরা পড়ে, — যখন সবুজ অন্ধকার,
নরম রাত্রির দেশ নদীর জলের গন্ধ কোন এক নবীনাগতার
মুখখানা নিয়ে আসে — মনে হয় কোনোদিন পৃথিবীতে প্রেমের আহ্বান
এমন গভীর করে পেয়েছি কি? প্রেম যে নক্ষত্র আর নক্ষত্রের গান,
প্রাণ যে ব্যাকুল রাত্রি প্রান্তরের গাঢ় নীল অমাবস্যায় –
চলে যায় আকাশের সেই দূর নক্ষত্রের লাল নীল শিখার সন্ধানে,
প্রাণ যে আঁধার রাত্রি আমার এ, — আর তুমি স্বাতীর মতন
রূপের বিচিত্র বাতি নিয়ে এলে, — তাই প্রেম ধুলায় কাঁটায় যেইখানে
মৃত হয়ে পড়ে ছিল পৃথিবীর শূণ্য পথে সে গভীর শিহরণ,
তুমি সখী, ডুবে যাবে মুহূর্তেই রোমহর্ষে — অনিবার অরুণের ম্লানে
জানি আমি; প্রেম যে তবুও প্রেম; স্বপ্ন নিয়ে বেঁচে রবে, বাঁচিতে সে জানে।
৫৬.
কোনোদিন দেখিব না
কোনোদিন দেখিব না তারে আমি: হেমন্তে পাকিবে ধান, আষাঢ়ের রাতে
কালো মেঘ নিঙড়ায়ে সবুজ বাঁশের বন গেয়ে যাবে উচ্ছ্বাসের গান
সারারাত, — তবু আমি সাপচরা অন্ধ পথে — বেনুবনে তাহার সন্ধান
পাবো নাকে: পুকুরের পাড়ে সে যে আসিবে না কোনোদিন হাঁসিনীর সাথে,
সে কোনো জ্যোৎস্নায় আর আসিবে না — আসিবে না কখনো প্রভাতে,
যখন দুপুরে রোদে অপরাজিতার মুখ হয়ে থাকে ম্লান,
যখন মেঘের রঙে পথহারা দাঁড়কাক পেয়ে গেছে ঘরের সন্ধান,
ধূসর সন্ধ্যায় সেই আসিবে না সে এখানে; — এইখানে ধুন্দুল লতাতে
জোনাকি আসিবে শুধু: ঝিঁঝিঁ শুধু; সারারাত কথা কবে ঘাসে আর ঘাসে
বাদুড় উড়িবে শুধু পাখনা ভিজায়ে নিয়ে শান্ত হয়ে রাতের বাতাসে;
প্রতিটি নক্ষত্র তার স’ান খুঁজে জেগে রবে প্রতিটির পাশে
নীরব ধূসর কণা লেগে রবে তুচ্ছ অনূকণাটির শ্বাসে
অন্ধকারে — তুমি, সখি চলে গেলে দূরে তবু; — হৃদয়ের গভীর বিশ্বাসে
অশ্বত্থের শাখা ঐ দুলিতেছে; আলো আসে, ভোর হয়ে আসে।
৫৭.
ঘাসের ভিতরে সেই
ঘাসের ভিতরে সেই চড়ায়ের শাদা ডিম ভেঙে আছে — আমি ভালোবাসি
নিস্তব্ধ করুণ মুখ তার এই — কবে যেন ভেঙেছিল — ঢের ধুলো খড়
লেগে আছে বুকে তার — বহুক্ষণ চেয়ে থাকি; — তারপর ঘাসের ভিতর
শাদা শাদা ধুলোগুলো পড়ে আছে, দেখা যায় খইধান দেখি একরাশি
ছড়ায়ে রয়েছে চুপে; নরম বিষন্ন গন্ধ পুকুরের জল থেকে উঠিতেছে ভাসি;
কান পেতে থাকি যদি, শোনা যায়, সরপুটি চিতলের উদ্ভাসিত স্বর
মীনকন্যাদের মতো, সবুজ জলের ফাঁকে তাদের পাতালপুরী ঘর
দেখা যায় — রহস্যের কুয়াশায় অপরূপ — রূপালি মাছের দেহ গভীর উদাসী
চলে যায় মন্ত্রিকুমারের মতো, কোটাল ছেলের মতো রাজার ছেলের মতো মিলে
কোন এক আকাঙ্খার উদঘাটনে কত দূরে; বহুক্ষণ চেয়ে থাকি একা
অপরাহ্ন এল বুঝি? — রাঙা রৌদ্রে মাছরাঙা উড়ে যায় — ডানা ঝিলমিলে;
এক্ষুনি আসিবে সন্ধ্যা, — পৃথিবীতে ম্রিয়মাণ গোধূলি নামিলে
নদীর নরম মুখ দেখা যাবে — মুখে তার দেহে তার কতো মৃদু রেখা
তোমারি মুখের মতো: তবুও তোমার সাথে কোনোদিন হবে নাকো দেখা।
১৯. হৃদয়ে প্রেমের দিন + কোনোদিন দেখিব না + ঘাসের ভিতরে সেই
☼→
রূপসী বাংলা
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
রিসেন্ট ব্লগ পোষ্টস
বিষয়শ্রেণী
রাইটার
প্রিয়-ক্লিক
কিছু বই
- অরক্ষিত স্বাধীনতাই পরাধীনতা
- অর্থনীতিতে রাসূল (সা) এর দশ দফা
- আদর্শ মানব মুহাম্মদ (সা)
- আসহাবে রাসূলের জীবনকথা
- ইসলাম ও জিহাদ
- ইসলাম পরিচিতি
- ইসলামী আন্দোলন : সাফল্যের শর্তাবলী
- ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের পারস্পরিক সম্পর্ক
- ইসলামী আন্দোলনের নৈতিক ভিত্তি
- ইসলামী দাওয়াত ও কর্মনীতি
- ইসলামী নেতৃত্বের গুণাবলী
- ইসলামী বিপ্লবের পথ
- ইসলামী রেনেসাঁ আন্দোলন
- ইসলামী সমাজে মজুরের অধিকার
- একটি আদর্শবাদী দলের পতনের কারণঃ তার থেকে বাঁচার উপায়
- চরিত্র গঠনের মৌলিক উপাদান
- দায়ী’ ইলাল্লাহ - দা’ওয়াত ইলাল্লাহ
- নামাজ কেন আজ ব্যর্থ হচ্ছে
- নামায-রোজার হাকীকত
- মোরা বড় হতে চাই
- যাকাতের হাকীকত
- রাসূলুল্লাহর বিপ্লবী জীবন
- শাহ ওয়ালিউল্লাহ দেহলভী ও তাঁর চিন্তাধারা
- সত্যের সাক্ষ্য
- হেদায়াত
0 comments: