শুনেছ কি বলে গেল
শুনেছ কি বলে গেল সীতানাথ বন্দ্যো ?
আকাশের গায়ে নাকি টকটক গন্ধ ?
টকটক থাকে নাকো হ'লে পরে বৃষ্টি-
তখনও দেখেছি চেটে একেবারে মিষ্টি ।
পালোয়ান
খেলার ছলে ষষ্ঠিচরণ হাতী লোফেন যখন তখন,
দেহের ওজন উনিশটি মণ, শক্ত যেন লোহার গঠন ।
একদিন এক গুণ্ডা তাকে বাঁশ বাগিয়ে মার্ল বেগে-
ভাঙল সে বাঁশ শোলার মত মট্ করে তার কনুই লেগে ।
এইত সেদিন রাস্তা দিয়ে চল্তে গিয়ে দৈব বশে,
উপর থেকে প্রকাণ্ড ইট পড়্ল তাহার মাথায় খ'সে ।
মুণ্ডুতে তার যেম্নি ঠেকা অম্নি সে ইঁট এক নিমেষে
গুঁড়িয়ে হ'ল ধুলোর মত, ষষ্ঠি চলেন মুচকি হেসে ।
ষষ্ঠি যখন ধ্মক হাঁকে কাঁপতে থাকে দালান বাড়ী,
ফুঁয়ের জোরে পথের মোড়ে উল্টে পড়ে গরুর গাড়ী ।
ধুম্সো কাঠের তক্তা ছেঁড়ে মোচড় মেরে মুহূর্তেকে,
একশ জালা জল ঢালে রোজ স্নানের সময় পুকুর থেকে ।
সকাল বেলার জলপানি তার তিনটি ধামা পেস্তা মেওয়া,
সঙ্গেতে তার চৌদ্দ হাঁড়ি দৈ কি মালাই মুড়কি দেওয়া ।
দুপুর হ'লে খাবার আসে কাতার দিয়ে ডেক্চি ভ'রে,
বরফ দেওয়া উনিশ কুঁজো সরবতে তার তৃষ্ণা হরে ।
বিকাল বেলা খায়না কিছু গণ্ডা দশেক মণ্ডা ছাড়া,
সন্ধা হ'লে লাগায় তেড়ে দিস্তা দিস্তা লুচির তাড়া ।
রাত্রে সে তার হাত পা টেপায় দশটি চেলা মজুত থাকে,
দুম্দুমাদুম্ সবাই মিলে মুগুর দিয়ে পেটায় তাকে ।
বল্লে বেশি ভাব্বে শেষে এসব কথা ফেনিয়ে বলা-
দেখবে যদি আপন চোখে যাওনা কেন বেনিয়াটোলা ।
সাবধান

আরে আরে, ওকি কর প্যালারাম বিশ্বাস ?
ফোঁস্ ফোঁস্ অত জোরে ফেলোনাকো নিঃশ্বাস ।
জানোনা কি সে বছর ওপাড়ার ভূতোনাথ,
নিঃশ্বাস নিতে গিয়ে হয়েছিল কুপোকাৎ ?
হাঁপ ছাড় হ্যাস্ফ্যাঁস্ ও রকম হাঁ ক'রে-
মুখে যদি ঢুকে বসে পোকা মাছি মাকড়ে ?
বিপিনের খুড়ো হয় বুড়ো সেই হল' রায়,
মাছি খেয়ে পাঁচ মাস ভুগেছিল কলেরায় ।
তাই বলি- সাবধান ! ক'রোনাকো ধুপ্ধাপ্,
টিপি টিপি পায় পায় চলে যাও চুপ্ চাপ্ ।
চেয়োনাকো আগে পিছে, যেয়োনাকো ডাইনে
সাবধানে বাঁচে লোকে,- এই লেখা আইনে ।
পড়েছ ত কথামালা ? কে যেন সে কি ক'রে
পথে যেতে পড়ে গেল পাতকো'র ভিতরে ।
ভালো কথা- আর যেন সকালে কি দুপুরে,
নেয়োনাকো কোনো দিন ঘোষেদের পুকুরে ।
এরকম মোটা দেহে কি যে হবে কোন্ দিন,
কথাটাকে ভেবে দেখ কি রকম সঙ্গিন !
চটো কেন ? হয় নয় কেবা জানে পষ্ট,
যদি কিছু হ'য়ে পড়ে পাবে শেষে কষ্ট ।
মিছিমিছি ঘ্যান্ঘ্যান্ কেন কর তক্ক ?
শিখেছ জ্যাঠামো খালি, ইঁচড়েতে পক্ক ।
মানবে না কোন কথা চলা ফেরা আহারে,
একদিন টের পাবে ঠেলা কয় কাহারে ।
রমেশের মেঝ মামা সেও ছিল সেয়না,
যত বলি ভালো কথা কানে কিছু নেয় না
শেষকালে একদিন চান্নির বাজারে
প'ড়ে গেল গাড়ি চাপা রাস্তার মাঝারে !
রিলেটেড অন্যান্য চাপ্টারসুকুমার রায়,
সুকুমার-ছড়া
- নিঃস্বার্থ, বর্ষ গেল বর্ষ এল, মূর্খমাছি
- বর্ষ শেষ , বর্ষার কবিতা, গ্রীষ্ম, শ্রাবণে
- নিরুপায়, হিতে-বিপরীত, নন্দগুপি
- লোভী ছেলে, জীবনের হিসাব, আশ্চর্য !
- হিংসুটিদের গান, সাধে কি বলে গাধা !, তেজিয়ান
- আড়ি, নাচের বাতিক, অবুঝ,কাজের লোক
- হরিষে বিষাদ, পরিবেষণ, জালা-কুঁজো সংবাদ
- অসম্ভব নয় !, বেশ বলেছ, খাই খাই, বিষম চিন্তা
- আবোল তাবোল, দাঁড়ের কবিতা, পাকাপাকি
- ভয় পেয়ো না, হাত গণনা, ভুতুড়ে খেলা, কাঁদুনে
- নারদ! নারদ!, ফস্কে গেল, আহ্লাদী
- খুচরো ছড়া, দাঁড়ে দাঁড়ে দ্রুম, গল্প বলা, ডানপিটে
- ট্যাঁশ গরু, কাতুকুতু বুড়ো, বিজ্ঞান শিক্ষা
- সুকুমার রায় সাহিত্য সমগ্র
- সম্পাদকের দশা, সন্দেশ, বিষম ভোজ, বিষম কাণ্ড
- ছুটি, বুঝবার ভুল, ছবি ও গল্প
- আজব খেলা, আয়রে আলো আয়, আলোছায়া, কিছু চাই ?
- বেজায় খুশি, আবোল তাবোল, বাবু, বেজায় রাগ
- কানে খাটো বংশীধর, আদুরে পুতুল, মেঘের খেয়াল
- নূতন বৎসর, মনের মতন, মেঘ, শিশুর দেহ
0 comments: