মাটি থেকে সৃষ্টি হয়েছে মানুষ, আবার মাটিতেই মিশে যাবে। এ মাটিকেই চাষাবাদ করে টিকে থাকতে হয় মানুষের। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রতিটি মানুষ কৃষির ওপর নির্ভরশীল। অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, স্বাস্থ্য সেবা, পথ্য, শিক্ষা সরঞ্জাম, পানি, বিদ্যুৎ, যানবাহন সব কিছুর মূল উৎপাদন কৃষি থেকেই আসে।
আদি পিতা হযরত আদম (আঃ) পৃথিবীতে এসে প্রথম কৃষিকাজ শুরু করেন। তিনি স্বহস্তে কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেছেন। তিনি ছিলেন কৃষি বিজ্ঞানের যাবতীয় শিক্ষায় সুশিক্ষিত। আল্লাহ তাকে যাবতীয় ব‘র নাম শিক্ষা দিয়েছেন। ইসলামের প্রাথমিক যুগে অধিকাংশ মুহাজির ও আন সাররাও ছিলেন কৃষক। রাসূল পাক (সাঃ) নিজে ‘জারেক’ নামক স্থানে কৃষি ফসলাদি উৎপাদন করেছেন বলে হাদিসে উল্লেখ রয়েছে। নবীজি বাল্যকালে পাহাড়ের পাদদেশে মেষপাল চরিয়েছেন। নিজ হাতে খেজুর গাছ রোপণ করেছেন। অনেক সাহাবিকে তিনি কৃষি কাজে উৎসাহিত করেছেন। অনেক সাহাবি ক্ষেত-খামারে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন, ফলের বাগান করায়ও অনেকে উৎসাহী ছিলেন। হযরত আয়শা (রাঃ) থেকে বর্ণিত- হুজুর (সাঃ) বলেছেন, তোমরা জমিনের প্রচ্ছন্ন ভান্ডারে খাদ্য অম্বেষণ করো। তিনি কৃষি কাজে সেচ ব্যবস্থা ও কূপ খননের প্রতিও উৎসাহিত করেছেন। আবু হোরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত এক হাদিসে নবীজি (সাঃ) বলেন, ‘প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি আটক রেখে ঘাস উৎপাদন করা নিষিদ্ধ।’ তিনি আরো বলেন, ‘রুমার কূপ খননকারীর জন্য জান্নাত নির্ধারিত হয়েছে। (বুখারি শরীফ)। অন্যএক হাদিসে এসেছে ‘এমন কোন নবী-রাসুল ছিলেন না যিনি বকরি বা ছাগল চরাননি। মহান স্রষ্টার বিধিবিধান মেনেই তারা ঘরে বাইরে কাজ করেছেন।
পবিত্র কুরআনে কৃষি উৎপাদনকে বিশ্বমানবের প্রতি একটি বিরাট অনুগ্রহ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ইসলাম কৃষি কাজকে সুপ্রেরণার দৃষ্টিতে দেখে। ইরশাদ হচ্ছে, ‘তিনিই তোমাদের জন্য মাটিকে ব্যবহারের উপযোগী করে দিয়েছেন। সুতরাং তোমরা এর দিকে বিচরণ করো এবং তার দেয়া রিযিক আহার করো, পুনরুত্থান তারই কাছে হবে। (সূরা মূলক, ১৫)।
কৃষিকাজ করা প্রিয় নবী সাঃ-এর আদর্শও বটে। দেশের ভূমি যেন পরিত্যক্ত বা অনাবাদী না থাকে সেজন্য রাসূল (সঃ) বলেন, ‘তোমরা জমি আবাদ করো, আর যে ব্যক্তি নিজে আবাদ করতে না পারে, সে যেন ভূমিটিকে অন্য ভাইকে দিয়ে দেয়, যাতে সে আবাদ করে ভোগ করতে পারে। কৃষি ক্ষেত্রে আত্মনির্ভরশীলতা ও আত্মত্যাগের মাধ্যমে কৃষকরা অত্যন্ত সহজ সরল জীবনযাপন করে থাকেন। তাদের মধ্যে কোন অলসতা নেই। ভোর বেলা গরু নিয়ে মাঠে যায়, অতি প্রত্যুষে তারা কাজে মনোযোগী হয়ে যায়। নবীজি (সাঃ) বলেন, ফজরের নামাজের পর তোমরা জীবিকা অর্জনের কাজে অমনোযোগী হয়ে আবার ঘুমিয়ে যেওনা (কাথুল উম্মাল)।
বীজ কৃষির মূল ভিত্তি। বীজ ব্যতীত কৃষি উৎপাদনের কথা ভাবাই যায় না। স্রষ্টা বলেন, তিনি পৃথিবীকে স্থাপন করেছেন সৃষ্ট জীবের জন্য। এতে আছে ফল মূল এবং আর রসযুক্ত খেজুর বৃক্ষ এবং খোসা বিশিষ্ট দানা ও সুগন্ধি গুল্ম। (আর রহমান, ১১-১২)। তোমরা যে বীজ বপন করোসে সম্পর্কে ভেবে দেখছ কি? তোমরা সেটা উৎপন্ন করো, না আমি উৎপন্নকারী? আমি ইচ্ছে করলে সেটা খড়কুটোয় পরিণত করে দিতে পারি। তখন তোমরা আবাকও হয়ে যাবে। (সূরা ওয়াকেয়া ৬৩-৬৫)। মহা কৃষি বিজ্ঞানী স্রষ্টা আকাশ থেকে বৃষ্টির পানি বর্ষণ করেন। ফলে নানান উদ্ভিদ জন্মে, সবজি হয়, শস্য ফলে। বৃষ্টির মাধ্যমেই মৃত জমিন প্রাণ ফিরে পায়।
কৃষির সঙ্গে কৃষকের সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। কৃষক অনেক কষ্ট করে, শ্রম দিয়ে ফসল ফলান। তারা বীজ বপন করেন। সঠিক উৎপাদন ও ফলন বৃদ্ধির জন্য যত্ন ও পরিচর্যা করেন। ভালো বীজবপন, আগাছা, রোগ বালাই দমন ইত্যাদি বিষয়ে সর্বদা সতর্ক দৃষ্টি রাখেন। ফসল পরিপক্ব হলে সময় মত সংগ্রহ করে ঘরে তোলেন। ফসল ভালো হলে আনন্দিত হন। তাদের দৃষ্টান্ত যেমন একটি চারাগাছ। যা থেকে বের হয় কুঁড়ি। অতঃপর সেটা শক্ত ও পুষ্ট হয় এবং কান্ডের ওপর দৃঢ় ভাবে দাঁড়ায়। যা কৃষকদের জন্য আনন্দদায়ক। (সূরা আল ফাত্হ্-২৯)।
কৃষি কাজের প্রতি আমাদের তৎপরতা আরো বহু গুণ বৃদ্ধি করা উচিত। সিলেটের অনাবাদী জমিসহ সারাদেশের সব অনাবাদি ও পরিত্যক্ত ভূমি চাষাবাদের ব্যবস্থা করা জরুরি। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে অধিক ফসল ফলাতে পারলেই আমাদের খাদ্য ঘাটতি দূর হবে। এ বিষয়ে সরকার ও জনগণকে অবশ্যই আন্তরিক হওয়া চাই। এখানে উল্লেখ্য যে, জমি চাষ, পশুপাখি পালন, বৃক্ষ রোপণ ফল-ফুলের বাগান, বনায়ন, মৎস্য চাষ সবই কৃষি ক্ষেত্রের অন্তর্ভুক্ত। ইবাদতের পাশাপাশি জমিতে ফসল উৎপাদন করে নিজে বাঁচা এবং অন্যকে বাঁচানো ঈমানী দায়িত্ব। আর এ জন্যই এমন উর্বর নিয়ামতের ভূমি আল্লাহ আমাদের দিয়েছেন।
বিশ্ব অর্থনীতির স্বার্থে কৃষি উন্নয়ন একটা মৌলিক ও জরুরি বিষয়। অর্থনীতির এ পরম সত্য কথাটি ইসলাম আমাদের শিখিয়েছে। কে বলে বাংলাদেশ দরিদ্র দেশ। বাংলাদেশে রয়েছে সোনার ছেলে-কৃষক আর সোনার ভূমি। এ সোনার ভূমি হচ্ছে আমাদের শস্য স্বরূপ। এ ভূমি কেবল মাটিকেই বুঝায় না। বরং পাহাড় পর্বত, নদী-নালা, সাগর, ভূগর্ভস্থ সম্পদ সব কিছুকেই বুঝায়। এসব সম্পদ কাজে লাগিয়ে আমরা যতো বেশি স্বণির্ভর ও স্বাবলম্বী হবো, দেশও ততো উন্নত, সুখী ও সমৃদ্ধ হবে। দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য কৃষির সাথে শিল্পের বন্ধুত্বপূর্ণ সেতু বন্ধন তৈরি হওয়াও প্রয়োজন। শাহ ওয়ালী উল্লাহ (রহঃ) বলেছেন, ‘ওই অর্থনীতি কখনো দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে না, যেখানে কৃষিকে অবজ্ঞা করে শিল্পকে অস্ত্রের জোরে বা গায়ের জোরে টিকিয়ে রাখা হয়। এরূপ অর্থ ব্যবস্থার ধ্বংস অবশ্যাম্ভাবী।
বাংলাদেশের মাটিকে মহান স্রষ্টা উর্বর করে দিয়েছেন। কৃষি উৎপাদনের যোগ্য করে দিয়েছেন। এ দেশের মাটিতে রয়েছে গ্যাস, ভালোভাবে অনুসন্ধান চালালে তেলও পাওয়া যেতে পারে। সম্প্রতি বাংলাদেশে ইউরিনিয়াম পাওয়া গেছে। আমরা যদি কৃষি ও কৃষকের উন্নয়ন সাধনে জোরদার হই, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আরো গ্যাস ক্ষেত্র বের করি, ইউরেনিয়াম উত্তোলনে সক্ষম হই, তাহলে বাংলাদেশ হবে পৃথিবীর অন্যতম একটি ধনী রাষ্ট্র। এ জন্য দেশের প্রতি ইঞ্চি ভূমিকে কাজে লাগাতে হবে। এ মুহূর্তে মালয়েশিয়া ও ইরানের মতো উন্নত প্রযুক্তির একান্ত প্রয়োজন আমাদের। আর পিছনে নয়, এবার আমাদের সামনে এগুনোর পালা।
- মোশাররফ হোসেন পাটওয়ারী
আদি পিতা হযরত আদম (আঃ) পৃথিবীতে এসে প্রথম কৃষিকাজ শুরু করেন। তিনি স্বহস্তে কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেছেন। তিনি ছিলেন কৃষি বিজ্ঞানের যাবতীয় শিক্ষায় সুশিক্ষিত। আল্লাহ তাকে যাবতীয় ব‘র নাম শিক্ষা দিয়েছেন। ইসলামের প্রাথমিক যুগে অধিকাংশ মুহাজির ও আন সাররাও ছিলেন কৃষক। রাসূল পাক (সাঃ) নিজে ‘জারেক’ নামক স্থানে কৃষি ফসলাদি উৎপাদন করেছেন বলে হাদিসে উল্লেখ রয়েছে। নবীজি বাল্যকালে পাহাড়ের পাদদেশে মেষপাল চরিয়েছেন। নিজ হাতে খেজুর গাছ রোপণ করেছেন। অনেক সাহাবিকে তিনি কৃষি কাজে উৎসাহিত করেছেন। অনেক সাহাবি ক্ষেত-খামারে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন, ফলের বাগান করায়ও অনেকে উৎসাহী ছিলেন। হযরত আয়শা (রাঃ) থেকে বর্ণিত- হুজুর (সাঃ) বলেছেন, তোমরা জমিনের প্রচ্ছন্ন ভান্ডারে খাদ্য অম্বেষণ করো। তিনি কৃষি কাজে সেচ ব্যবস্থা ও কূপ খননের প্রতিও উৎসাহিত করেছেন। আবু হোরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত এক হাদিসে নবীজি (সাঃ) বলেন, ‘প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি আটক রেখে ঘাস উৎপাদন করা নিষিদ্ধ।’ তিনি আরো বলেন, ‘রুমার কূপ খননকারীর জন্য জান্নাত নির্ধারিত হয়েছে। (বুখারি শরীফ)। অন্যএক হাদিসে এসেছে ‘এমন কোন নবী-রাসুল ছিলেন না যিনি বকরি বা ছাগল চরাননি। মহান স্রষ্টার বিধিবিধান মেনেই তারা ঘরে বাইরে কাজ করেছেন।
পবিত্র কুরআনে কৃষি উৎপাদনকে বিশ্বমানবের প্রতি একটি বিরাট অনুগ্রহ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ইসলাম কৃষি কাজকে সুপ্রেরণার দৃষ্টিতে দেখে। ইরশাদ হচ্ছে, ‘তিনিই তোমাদের জন্য মাটিকে ব্যবহারের উপযোগী করে দিয়েছেন। সুতরাং তোমরা এর দিকে বিচরণ করো এবং তার দেয়া রিযিক আহার করো, পুনরুত্থান তারই কাছে হবে। (সূরা মূলক, ১৫)।
কৃষিকাজ করা প্রিয় নবী সাঃ-এর আদর্শও বটে। দেশের ভূমি যেন পরিত্যক্ত বা অনাবাদী না থাকে সেজন্য রাসূল (সঃ) বলেন, ‘তোমরা জমি আবাদ করো, আর যে ব্যক্তি নিজে আবাদ করতে না পারে, সে যেন ভূমিটিকে অন্য ভাইকে দিয়ে দেয়, যাতে সে আবাদ করে ভোগ করতে পারে। কৃষি ক্ষেত্রে আত্মনির্ভরশীলতা ও আত্মত্যাগের মাধ্যমে কৃষকরা অত্যন্ত সহজ সরল জীবনযাপন করে থাকেন। তাদের মধ্যে কোন অলসতা নেই। ভোর বেলা গরু নিয়ে মাঠে যায়, অতি প্রত্যুষে তারা কাজে মনোযোগী হয়ে যায়। নবীজি (সাঃ) বলেন, ফজরের নামাজের পর তোমরা জীবিকা অর্জনের কাজে অমনোযোগী হয়ে আবার ঘুমিয়ে যেওনা (কাথুল উম্মাল)।
বীজ কৃষির মূল ভিত্তি। বীজ ব্যতীত কৃষি উৎপাদনের কথা ভাবাই যায় না। স্রষ্টা বলেন, তিনি পৃথিবীকে স্থাপন করেছেন সৃষ্ট জীবের জন্য। এতে আছে ফল মূল এবং আর রসযুক্ত খেজুর বৃক্ষ এবং খোসা বিশিষ্ট দানা ও সুগন্ধি গুল্ম। (আর রহমান, ১১-১২)। তোমরা যে বীজ বপন করোসে সম্পর্কে ভেবে দেখছ কি? তোমরা সেটা উৎপন্ন করো, না আমি উৎপন্নকারী? আমি ইচ্ছে করলে সেটা খড়কুটোয় পরিণত করে দিতে পারি। তখন তোমরা আবাকও হয়ে যাবে। (সূরা ওয়াকেয়া ৬৩-৬৫)। মহা কৃষি বিজ্ঞানী স্রষ্টা আকাশ থেকে বৃষ্টির পানি বর্ষণ করেন। ফলে নানান উদ্ভিদ জন্মে, সবজি হয়, শস্য ফলে। বৃষ্টির মাধ্যমেই মৃত জমিন প্রাণ ফিরে পায়।
কৃষির সঙ্গে কৃষকের সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। কৃষক অনেক কষ্ট করে, শ্রম দিয়ে ফসল ফলান। তারা বীজ বপন করেন। সঠিক উৎপাদন ও ফলন বৃদ্ধির জন্য যত্ন ও পরিচর্যা করেন। ভালো বীজবপন, আগাছা, রোগ বালাই দমন ইত্যাদি বিষয়ে সর্বদা সতর্ক দৃষ্টি রাখেন। ফসল পরিপক্ব হলে সময় মত সংগ্রহ করে ঘরে তোলেন। ফসল ভালো হলে আনন্দিত হন। তাদের দৃষ্টান্ত যেমন একটি চারাগাছ। যা থেকে বের হয় কুঁড়ি। অতঃপর সেটা শক্ত ও পুষ্ট হয় এবং কান্ডের ওপর দৃঢ় ভাবে দাঁড়ায়। যা কৃষকদের জন্য আনন্দদায়ক। (সূরা আল ফাত্হ্-২৯)।
কৃষি কাজের প্রতি আমাদের তৎপরতা আরো বহু গুণ বৃদ্ধি করা উচিত। সিলেটের অনাবাদী জমিসহ সারাদেশের সব অনাবাদি ও পরিত্যক্ত ভূমি চাষাবাদের ব্যবস্থা করা জরুরি। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে অধিক ফসল ফলাতে পারলেই আমাদের খাদ্য ঘাটতি দূর হবে। এ বিষয়ে সরকার ও জনগণকে অবশ্যই আন্তরিক হওয়া চাই। এখানে উল্লেখ্য যে, জমি চাষ, পশুপাখি পালন, বৃক্ষ রোপণ ফল-ফুলের বাগান, বনায়ন, মৎস্য চাষ সবই কৃষি ক্ষেত্রের অন্তর্ভুক্ত। ইবাদতের পাশাপাশি জমিতে ফসল উৎপাদন করে নিজে বাঁচা এবং অন্যকে বাঁচানো ঈমানী দায়িত্ব। আর এ জন্যই এমন উর্বর নিয়ামতের ভূমি আল্লাহ আমাদের দিয়েছেন।
বিশ্ব অর্থনীতির স্বার্থে কৃষি উন্নয়ন একটা মৌলিক ও জরুরি বিষয়। অর্থনীতির এ পরম সত্য কথাটি ইসলাম আমাদের শিখিয়েছে। কে বলে বাংলাদেশ দরিদ্র দেশ। বাংলাদেশে রয়েছে সোনার ছেলে-কৃষক আর সোনার ভূমি। এ সোনার ভূমি হচ্ছে আমাদের শস্য স্বরূপ। এ ভূমি কেবল মাটিকেই বুঝায় না। বরং পাহাড় পর্বত, নদী-নালা, সাগর, ভূগর্ভস্থ সম্পদ সব কিছুকেই বুঝায়। এসব সম্পদ কাজে লাগিয়ে আমরা যতো বেশি স্বণির্ভর ও স্বাবলম্বী হবো, দেশও ততো উন্নত, সুখী ও সমৃদ্ধ হবে। দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য কৃষির সাথে শিল্পের বন্ধুত্বপূর্ণ সেতু বন্ধন তৈরি হওয়াও প্রয়োজন। শাহ ওয়ালী উল্লাহ (রহঃ) বলেছেন, ‘ওই অর্থনীতি কখনো দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে না, যেখানে কৃষিকে অবজ্ঞা করে শিল্পকে অস্ত্রের জোরে বা গায়ের জোরে টিকিয়ে রাখা হয়। এরূপ অর্থ ব্যবস্থার ধ্বংস অবশ্যাম্ভাবী।
বাংলাদেশের মাটিকে মহান স্রষ্টা উর্বর করে দিয়েছেন। কৃষি উৎপাদনের যোগ্য করে দিয়েছেন। এ দেশের মাটিতে রয়েছে গ্যাস, ভালোভাবে অনুসন্ধান চালালে তেলও পাওয়া যেতে পারে। সম্প্রতি বাংলাদেশে ইউরিনিয়াম পাওয়া গেছে। আমরা যদি কৃষি ও কৃষকের উন্নয়ন সাধনে জোরদার হই, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আরো গ্যাস ক্ষেত্র বের করি, ইউরেনিয়াম উত্তোলনে সক্ষম হই, তাহলে বাংলাদেশ হবে পৃথিবীর অন্যতম একটি ধনী রাষ্ট্র। এ জন্য দেশের প্রতি ইঞ্চি ভূমিকে কাজে লাগাতে হবে। এ মুহূর্তে মালয়েশিয়া ও ইরানের মতো উন্নত প্রযুক্তির একান্ত প্রয়োজন আমাদের। আর পিছনে নয়, এবার আমাদের সামনে এগুনোর পালা।
- মোশাররফ হোসেন পাটওয়ারী
0 comments: