GRE পরীক্ষা প্রস্তুতি : দ্বিতীয় পর্ব

জি আর ই তে সবচেয়ে সহজ হচ্ছে Quantitative মানে ম্যাথ সেকশানে ভালো করা। তারচেয়ে বড় কথা যারা ইঞ্জিনিয়ারিং এ পড়তে যাচ্ছেন তাদের জন্য ম্যাথ সেকশানে স্কোর ভালো করা অত্যাবশ্যক; কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয় প্রকৌশলের জন্য একটা মিনিমাম স্কোর সেট করে দেয় এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সেই স্কোরটা ৭৫০ বা তার উপরে। সুতরাং ম্যাথকে পাত্তা না দেয়ার কোনো অর্থ হয় না। আমার অভিজ্ঞতায় দেখেছি যারা জি আর ই ম্যাথে ধরা খায় তাদের বেশিরভাগই অতি-আত্মবিশ্বাসের কারণে ধরা খায়। আমি ভালো ছাত্র সারাজীবন ম্যাথে ফুলমার্কস পেয়ে এসেছি; ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেছি; কত টিউশনি করালাম; কত ক্লাশ নিলাম কোচিংয়ে এই সব আত্মবিশ্বাস নিয়ে পরীক্ষার হলে ঢোকেন ইনারা। পরীক্ষা শুরু হলে হয়তো একটা সহজ অঙ্কে আটকে যান, কিন্তু মানতে পারেন না। জেদ চেপে যায় তাদের; অনেক সময় নষ্ট করেন সে অঙ্কের পেছনে; আর সময় সীমিত হওয়ার কারণে বাকিগুলো ঠিকমত উত্তর করতে পারেন না।



সমস্যা হলো জি আর ই এর স্কোর সোজাসাপ্টা না। ২৮টার মধ্যে ২৮টা পারলে ৮০০ আর কম পারলে সে অনুপাতে কম এই সহজ পার্টিগণিত জি আর ই তে খাটে না। জি আর ই টেস্টে স্কোর দেয়া হল পার্সেন্টাইল ভিত্তিতে। ধরেন সর্বপ্রথম এমন একটা প্রশ্ন দেয়া হলো যা জি আর ই টেস্ট টেকারদের প্রায় ৫০ পার্সেন্ট পারে, আপনিও সে প্রশ্ন পারলেন; সে ক্ষেত্রে পরের প্রশ্নটা আসবে আরেকটু কঠিন, ধরা যাক ৪০ পার্সেন্ট পারে এমন প্রশ্ন, সেটাও পারলেন এবার ৩০ শতাংশ পারে তেমন; সেটা ভুল করলেন এবার আবার ৪০ পার্সেণ্টের প্রশ্ন। এভাবে আপনার পারফর্মেন্সের উপর ভিত্তি করে প্রশ্ন এসে থাকে। তাই এখানে কয়টা সঠিক উত্তর দিলেন তার ভিত্তিতে সরাসরি স্কোর হিসেব করা সম্ভব নয়। প্রশ্নের মেধা এবং উত্তরের সঠিকতার ভিত্তিতে স্কোর দেয়া হয়। একারণে যে কোন সেকশানেই প্রথম দশটি প্রশ্ন খুব গুরুত্বপূর্ণ; এগুলোর মাধ্যমে মোটামুটি আপনার পার্সেন্টাইল নির্ধারিত হয়ে যায়। এরপর শুধু সেই পার্সেন্টাইলের প্রশ্ন দিয়ে যোগ্যতা যাচাই চলে; তাই প্রথম দশটি প্রশ্ন সমাধানে প্রয়োজনে বেশি সময় নিন।




এবার আসি ম্যাথের প্রস্তুতির ব্যাপারে। জি আর ই পরীক্ষার পনেরোতম দিন থেকে শুরু করুন ম্যাথ পড়া। প্রথমে নোভার সব এক্সাম্পলগুলো সলভ করে ফেলুন। চার থেকে পাঁচদিনের বেশি লাগার কথা না, প্রতিদিন চার থেকে পাঁচ ঘন্টা সময় দিলে। একটা লিস্ট বানান কমন কিছু সূত্রের...পরিমিতি, ত্রিকোণমিতি, নবম দশম শ্রেণীর জ্যামিতির উপপাদ্যের সাধারণ নির্বচন সমূহে আবার চোখ বুলান। পারলে এইচ এস সি’র পারমুটেশন-কম্বিনেশন, সরলরেখা, বৃত্ত, দ্বিপদী সমীকরণ, বহুপদী এসবেও। জি আর ই তে সময় একটা বড় ফ্যাক্টর- খুব দ্রুত হিসেব কষতে হয়। দ্রুত ক্যালকুলেটর ছাড়া হিসেব করতে একটা ট্রিক কাজে লাগান। এক থেকে শুরু করে ৩০ পর্যন্ত সব পূর্ণ সংখ্যার বর্গ মুখস্ত করুন। এটা অনেক কাজে দেবে। আর মুখস্ত করুন এক থেকে শুরু করে ১৩ পর্যন্ত সব পূর্ণ সংখ্যার বর্গমূল। ৩০ পর্যন্ত বাকি মৌলিক সংখ্যাগুলোর বর্গমূলও মনে রাখতে পারেন। মনে রাখবার মতো আরেকটা বিষয় হলো এক থেকে এগারো পর্যন্ত সব সংখ্যার ইনভার্স। মানে হচ্ছে দুই এর ইনভার্স ০.৫, আট এর ইনভার্স ০.১২৫ এইসব। কিছু কম্পারিজনের প্রবলেম থাকে এই ছোট্ট ট্রিকগুলো তাতে ভালো কাজ দেয়।


পরীক্ষার চার পাঁচ দিন আগে থেকে Dr. Raju’s এর ফোরামের প্রশ্নগুলো সলভ করতে থাকুন। সে-ই সলভ চলবে পরীক্ষার আগের দিন পর্যন্ত।

পরীক্ষার আগের রাতে একটা পাওয়ার প্রেপ মডেল টেস্ট দিয়ে নিশ্চিন্তে ঘুমাতে যান। ইনশাল্লাহ স্কোর ভালো আসবেই।

লেখক : ব্লগার ক্লান্ত পথিক ০০০

ভিউ

0 comments:

Comment Please

মন্তব্য..

সবিস্তার সূচীপত্র
টেম্পলেট কাষ্টমাইজেশন - তরঙ্গ ইসলাম | তরঙ্গ ইসলাম