১৫ আগষ্ট-১৯৬৯। ইসলামী শিক্ষাব্যবস্থার স্বপক্ষে বক্তব্য রাখায় নাস্তিক-কম্যুনিষ্ট আর ধর্মনিরপেক্ষবাদের সমর্থকদের স্বশস্ত্র আক্রমনে নিহত হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ রসায়ন বিভাগের সেরা ছাত্র শহীদ আব্দুল মালেক । এই দিনটিকে ইসলামী শিক্ষা দিবস হিসেবে পালন করা হয় ।
অসাধারণ মেধাবী আব্দুল মালেকের শিক্ষাজীবন ছিলো আলোকোজ্জ্বল_
-তিনি জুনিয়র স্কলারশীপ লাভ করেন।
-এসএসসি পরীক্ষায় রাজশাহী বোর্ডে মেধা তালিকায় একাদশ স্খান অর্জন করেন।
-এইচএসসি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় ৪র্থ স্খান অর্জন করেন।
-এইচএসসি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় ৪র্থ স্খান অর্জন করেন।
-এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জৈব রসায়ন বিভাগে ভর্তি হন।
-শাহাদাত বরণ কালে তিনি ৩য় বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
-তিনি ফজলুল হক মুসলিম হলের আবাসিক ছাত্র হিসেবে ১২২ নং রুমে থাকতেন।
আজ ইসলামী শিক্ষা আন্দোলনের অগ্রসেনানী আব্দুল মালেকের ৪২তম শাহাদাত বার্ষিকী। ইসলামী শিক্ষার পক্ষে কথা বলতে গিয়ে ধর্ম নিরপেক্ষতাবাদী ও সমাজতন্ত্রী নাস্তিকদের হাতে গুরুতর আহত হওয়ার (১২ আগষ্ট) ৩ দিন পর ১৯৬৯ সালের এই দিনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
পাকিস্তান শাষনামলে সর্বশেষ শিক্ষা কমিশন গঠন করা হয় ১৯৬৯ সালে । এতে শিক্ষা ব্যবস্থার আদর্শিক ভিত্তি কি হবে, তা নিয়ে জনমত জরিপের আয়োজন করা হয় । এর অংশ হিসেবে সরকারের পক্ষ থেকে ১৯৬৯ সালের ২ আগষ্ট এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয় । এই সময়ে বামপন্থী ও ইসলামবিরোধী সংগঠনসমূহ এই শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করে । এই আলোচনা সভায় বামপন্থীদের বিরোধীতামুলক বক্তব্যের মধ্যে শহীদ আব্দুল মালেক মাত্র ৫ মিনিট বক্তব্য রাখার সুযোগ পান । অসাধারন মেধাবী বাগ্মী আব্দুল মালেকের সেই ৫ মিনিটের যৌক্তিক বক্তব্যে সভায় উপস্থিত ছাত্রদের মোটিভ পুরোপুরি পরিবর্তিত হয়ে যায় । উপস্থিত শ্রোতারা আব্দুল মালেকের বক্তব্যের সাথে ঐক্যমত্য পোষণ করে । আব্দুল মালেকের ত্বত্ত্ব ও যুক্তিপূর্ণ সংক্ষিপ্ত বক্তব্য ক্ষিপ্ত করে দেয় ইতোপূর্বে বক্তব্য রাখা ইসলাম বিরোধী বক্তাদের ।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে ইসলামী শিক্ষার পক্ষের জনমতকে বিভ্রান্ত করার উদ্দেশ্যে টি.এস.সি. তে ১২ আগষ্ট আয়োজন করা হয় আরেকটি আলোচনা সভার । বামপন্থী শিক্ষকরা এখানে শহীদ আব্দুল মালেক ও তার সংগীদের আসতে বাধার সৃষ্টি করে । কিন্তু যেভাবেই হোক আব্দুল মালেক সভায় উপস্থিত হন । ডাকসুর সভায় সাধারন ছাত্রের কথা বলার অধিকার আছে । শহীদ আব্দুল মালেকসহ কয়েকজন ইসলামী শিক্ষাব্যবস্থার পক্ষে কথা বলার আবেদন করলে তা প্রত্যাখ্যান করা হয় ।
একচেটিয়া বক্তব্যমঞ্চ দখল করে ছাত্র ইউনিয়নের নেতারা বক্তব্যের ভাষা ধীরে ধীরে ইসলামকে আক্রমণ করে দেয়া শুরু করে । এসময় মস্কোপন্থী এক ছাত্র ইউনিয়ন নেতা ইসলাম সম্পর্কে চরম আপত্তিকর বক্তব্য রাখতে শুরু করলে অনুষ্ঠানের উপস্থিত ইসলামপ্রেমী ছাত্ররা প্রতিবাদ জানায় । যুক্তি ও বান্তবতার লড়াইয়ে পরাজিত বাম ও ধর্মনিরপেক্ষ গোষ্ঠী ক্ষিপ্ত হয়ে আক্রমন চালায় ছাত্রদের ওপর ।
সকল সংগীকে নিরাপদে বিদায় দিয়ে শহীদ আব্দুল মালেক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের (তৎকালীন রেসকোর্স ময়দান) পাশ দিয়ে যাবার পথে লোহার রড-হকিষ্টিক নিয়ে তার ওপর ঝাপিয়ে পড়ে ধর্মনিরপেক্ষ ও বাম ছাত্ররা । রক্তাক্ত হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের অন্যতম সেরা ছাত্র আব্দুল মালেক । তিনদিন পর ১৫ আগষ্টে শাহাদাত বরন করেন ইসলামের এই মহান বক্তা ।
আব্দুল মালেকের জন্ম ১৯৪৭ সালের মে মাসে। জন্ম স্খান বগুড়া জেলার ধুনট উপজেলার খোকসাবাড়ী গ্রামে।
শহীদ আব্দুল মালেকের মধ্যে বিস্ময়করভাবে অনুকরণীয় সব গুণের সমাবেশ ঘটেছিল। তিনি ছিলেন প্রখর মেধাবী, নিরহংকার, বিনয়ী, মিষ্টভাষী, সঠিক নেতৃত্ব দানের দূর্লভ যোগ্যতার অধিকারী, ভালোবাসা, ত্যাগ ও কুরবানীর উজ্জ্বল ও অনুপম দৃষ্টান্ত।
ইসলামী শিক্ষাব্যবস্থার পক্ষে কথা বলতে গিয়ে প্রথম শহীদ , শহীদ আব্দুল মালেক ইসলামী আন্দোলনের প্রতিটি কর্মীর মনে চিরদিন ভাস্বর হয়ে থাকবেন প্রেরনার এক সুউজ্জ্বল বাতিঘর হয়ে ।
১৯৬৯ সালের সেই ঐতিহাসিক বক্তব্যঃ
নতুন ঘোষিত শিক্ষানীতির ইডিওলজিকাল বেসিস সম্পর্কে এখানে আলোচনা হতে যাচ্ছে । এখানে এই বেসিস সম্পর্কে শিক্ষানীতিতে যেটা বলা হয়েছে যে পাকিস্তান মাস্ট এইম এট ইডিওলজিকাল ইউনিটি নট এট উডিওলজিকাল ভেকুয়াম । ইট মাস্ট ইমপার্ট এ ইউনিট এন্ড ইন্টেগ্রেটেড সিস্টেম অব এডুকেশন হুয়িচ কেন ইমপার্ট এডুকেশন অন দ্যি কমন সেট অব কালচার ভেলু বেসড অনদ্যি টিচেস অব ইসলাম। আমার মনে হয় আজকে যারা এখানে আলোচনা করেছেন তাদের পক্ষ থেকে এমন অনেকগুলো অযৌক্তিক বিষয় এর অবতারণা করা হয়েছে এ প্রসঙ্গে। কমন সেট অব কালচারাল ভেল্যূ বলতে হয়তো কেউ বুঝেছেন ওয়ান সাইড অব কালারাল ভেল্যূ । কিন্তু তাদেরএটা মনে রাখা দরকার কমন সেট ভেলু মানে ওয়ান সাইড অব কালচারাল ভেল্যূজ নয়। ওয়ান সাইড অব কালচারাল ভেল্যূ সোভিয়েত রাশিয়াতে রয়েছে যেখানে একটা পলিটারিয়ানিজম সোসাইটি আর সেখানে বিভিন্ন রাষ্ট্র যেগুলো রয়েছে অঙ্গরাজ্যগুলোর কালচারকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিয়ে সেখানে একটা ওয়ান সাইড অব কালচারাল ভেল্যূ তৈরী করা হয়েছে। আমরা এটার বিরোধী। আমরা বলতে চাই কমন সেট অব কালচারাল ভেল্যূ নট ওয়ান সাইড অব কালচারাল ভেল্যূ।
এর পরবর্তি পর্যায়ে আমি আলোচনা করতে চাই যে আসলে শিক্ষার উদ্যেশ্য কী। আমি এখানে অন্য কোন বিষয় না আলোচনা করে শুধুমাত্র মহাকবি মিল্টনেরই একটা কথা আলোচনা করতে চাই। মিল্টন বলেছিলেন এডুকেশন ইজ দ্য হারমনিয়াস ডেভেলপমেন্ট অব বডি মাইন্ড এন্ড সউল। এই বডি মাউন্ড এন্ড সোলের হারমনিয়াস ডেভেলপমেন্ট কোনো ইডিওলজি বা কোন আদর্শছাড়া হতে পারে এটা যারা ইডিওলজিকাল শিক্ষাব্যবস্থা চান না তাদের কাছে আমার জিজ্ঞাস্য।
এরপরে এসে আমি আপনাদের সামনে যে জিনিসটা আলোচনা করতে চাই তা হল যে মিল্টনের এ সংজ্ঞাকে সামনে রেখে আমরা যদি দেখি তাহলে শিক্ষার প্রকৃত উদ্যেশ্য হচ্ছে ব্যক্তি চেতনা এবং সঠিক ব্যক্তিত্ব সৃষ্টি করার মাধ্যমে জাতীয় চেতনা এবং জাতীয় মতের সৃষ্টি করা। এরপরে শিক্ষার্থী যারা রয়েছেন তাদের মধ্যে মেন্টাল ফিজিকাল এবং মোরাল ট্রেনিং দিয়ে তাদেরকে একটা পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া যাতে করে তারা ভবিষ্যতে জনসমষ্টির সাথে একটা কমন কালচারাল এবং ইডিওলজিকাল বেসিক একটা ব্রিজ তৈরী করতে পারে। এবং এখনকার যে আদর্শ রয়েছে সেটা যাতে ধীরে ধীরে ইনক্রিজ হতে পারে ভবিষ্যতের দিকে, এরমই একটা পরিকল্পনা রয়েছে মিল্টনের এই সংজ্ঞার ভিতর দিয়ে।
এরপরে আমি আপনাদের সামনে আলোচনা করতে চাই ধর্মহীন শিক্ষার্ব্যবস্থার যারা প্রবক্তা তারা পাশ্চাত্যের সমাজের দিকে তাকিয়ে দেখুন যে পাশ্চাত্যে সমাজে লিবারেল এডুকেশনের নাম দিয়ে যে শ্ক্ষিাব্যবস্থা প্রণয়ণ করা হয়েছে সেই শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষিত আমেরিকার একজন ফিলোসোফার সোসাল ফিলোসোফার নিজে বলেছেন শিক্ষা সম্পর্কে যে, থ্রি কাইন্ডস অব প্রগ্রেস আর সিগনিফিকেন্ট ; প্রগ্রেস ইন নলেজ এন্ড টেকনলজি ; প্রগ্রেস ইন সোসিয়ালাইজেশন অব ম্যান; প্রগ্রেস ইন ¯স্প্রিচুয়ালিটি। দ্যা লাস্ট ইজ দ্যা মোস্ট ইমপরটেন্ট। আর এইু ভদ্রলোকের নাম হচ্ছে আলবাট রিচার্ড। তিনি যে বই লিখেছেন তার নাম হচ্ছে ভিজিটিং অব রেনড্রেমপার্ট লাইফ। এরপর এসে তিনি বর্তমান আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষাব্যাবস্থা যে সেকুলার এবং লিবারেল শিক্ষাব্যবস্থা যে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে সেখান থেকে টার্নিং পয়েন্টে শিক্ষাকে ইডিওলজিকাললি ওরিয়েন্ট করার জন্য বলেছেন। এজন্য পরামর্শ দিয়েছেন ,আওয়ার এইজ মাস্ট এছিভ ¯স্প্রিচুয়াল রিনিওয়াল। এ নিউ রেনেসা মাস্ট কাম। দ্যি রেনেসা ইন হুয়িছ ম্যানকাইন্ড ইজ কভার্ড দ্য ইথিকাল একশন ইজ দ্য সুপ্রিম ট্রুথ এন্ড দ্য সুপ্রিম ইটিলিটারিয়ানিজম। বাই হুয়িছ ম্যানকাইন্ড উইল বি রেভূলেটেড। এই ¯স্প্রিচুয়াল রেভূলেশন ছাড়া ম্যানকাইন্ডের কোন বিকল্প হতে পারে না-তিনি এটা অত্যন্ত স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন। তো আমার মনে হয় আর কোন কথা এখানে আলোচনা করার প্রয়োজন নেই যে, যে পাশ্চাত্যে ধর্মহীনশিক্ষাব্যবস্থায় , তথাকথিত লিবারেল এডুকেশনে যিনি শিক্ষিত, তিনি বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে ; সেই পাশ্চাত্যের শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে একথাগুলো বলেছেন। তো আমার ক থা হচ্ছে পাকিস্তানের বুকে বাইশ বছর যাবৎ পর্যন্ত এ সেকুলার এবং ধর্মহীন শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত ছিল । এই শিক্ষাব্যবস্থা আমাদের সমাজে এমন কতগুলো ম্যাকুলের(মেকেলে) ব্রেইন চাইল্ড এবং ব্রাউন ইংলিশম্যান তৈরী করেছে যাদের মুখ থেকে আমরা ধর্মহীন শিক্ষাব্যবস্থার কথা শুনছি। কিন্তু জেনে রাখা দরকার এ শিক্ষাব্যবস্থা যখন প্রবর্তন করা হয় আজ থেকে দেড়শ বছর আগে তখন এই শিক্ষাব্যবস্থা যখন ফেইল করল , মুসলমানদের মধ্যে তখন স্যার উইলিয়াম হান্টারকে এসে কমেন্ট করতে দেয়া হয়েছিল, উনি কি কথাগুলো বলেছিলেন, দেখুন , তিনি বলেছেন, দি ট্রু থ ইজ দেট আওয়ার সিসটেম অব পাবলিকইন্স ট্রাকশন ইজ অপোজ টু দ্য ট্রেডিশন আনটু দ্যাট রিকোয়ারম্যান্ট এন্ড হেটফুল টু দ্যা রিলিজিয়ন অব মুসলমান।
তো যারা বলেন যে ইসলামের ইডিওলজি কি তাদেরকে আমি শুধুএই প্রশ্ন করব যে আপনারা একটু তার ইতিহাস একবার পর্যালোচনা করেন। ইসলামের ইতিহাস দেখে তারপরে বলুন ইসলামের ইডিওলজি কী। এটা একটা বিরাট রকমের পরিস্কার ইনস্ট্রাকশন রয়েছে । আর ইসলামিক ইডিওলজিতে বা ইসলামিক কালচারের ভিত্তিতে যে সমাজও সোসাইটি গড়ে উঠেছিল সেখানে তার স্থানীয় কালচার বা স্থানীয় সংস্কৃতিরও সেখানে দাম ছিল এবং তাদেরকেও বিকাশ করার জন্য চেষ্টা করা হয়েছে। সোভিয়েত রাশিয়ার মত সেখানে ওয়ান সাইড অব কালচারকরা হয় নি; কমন সেট অব কালচারকরা হয়েছিল । আজ আমার শেষ বক্তব্য হচ্ছে , (১৯৬৯ সালের বক্তব্য )পাকিস্তান আমরা পেয়েছি যে জন্য, যে উদ্যেশ্যে সেখানে ১৯৩৮সালে শেরে বাংলা একে ফজলুল হক সাহেব পাটনা সম্মেলেনে ঘোষণা করেছিলেন, যে , আমরা পাকিস্তান এর বুকে একটি ইসলামিক শিক্ষাব্যবস্থা প্রবর্তন করতে চাই।...
এর পরবর্তি পর্যায়ে আমি আলোচনা করতে চাই যে আসলে শিক্ষার উদ্যেশ্য কী। আমি এখানে অন্য কোন বিষয় না আলোচনা করে শুধুমাত্র মহাকবি মিল্টনেরই একটা কথা আলোচনা করতে চাই। মিল্টন বলেছিলেন এডুকেশন ইজ দ্য হারমনিয়াস ডেভেলপমেন্ট অব বডি মাইন্ড এন্ড সউল। এই বডি মাউন্ড এন্ড সোলের হারমনিয়াস ডেভেলপমেন্ট কোনো ইডিওলজি বা কোন আদর্শছাড়া হতে পারে এটা যারা ইডিওলজিকাল শিক্ষাব্যবস্থা চান না তাদের কাছে আমার জিজ্ঞাস্য।
এরপরে এসে আমি আপনাদের সামনে যে জিনিসটা আলোচনা করতে চাই তা হল যে মিল্টনের এ সংজ্ঞাকে সামনে রেখে আমরা যদি দেখি তাহলে শিক্ষার প্রকৃত উদ্যেশ্য হচ্ছে ব্যক্তি চেতনা এবং সঠিক ব্যক্তিত্ব সৃষ্টি করার মাধ্যমে জাতীয় চেতনা এবং জাতীয় মতের সৃষ্টি করা। এরপরে শিক্ষার্থী যারা রয়েছেন তাদের মধ্যে মেন্টাল ফিজিকাল এবং মোরাল ট্রেনিং দিয়ে তাদেরকে একটা পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া যাতে করে তারা ভবিষ্যতে জনসমষ্টির সাথে একটা কমন কালচারাল এবং ইডিওলজিকাল বেসিক একটা ব্রিজ তৈরী করতে পারে। এবং এখনকার যে আদর্শ রয়েছে সেটা যাতে ধীরে ধীরে ইনক্রিজ হতে পারে ভবিষ্যতের দিকে, এরমই একটা পরিকল্পনা রয়েছে মিল্টনের এই সংজ্ঞার ভিতর দিয়ে।
এরপরে আমি আপনাদের সামনে আলোচনা করতে চাই ধর্মহীন শিক্ষার্ব্যবস্থার যারা প্রবক্তা তারা পাশ্চাত্যের সমাজের দিকে তাকিয়ে দেখুন যে পাশ্চাত্যে সমাজে লিবারেল এডুকেশনের নাম দিয়ে যে শ্ক্ষিাব্যবস্থা প্রণয়ণ করা হয়েছে সেই শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষিত আমেরিকার একজন ফিলোসোফার সোসাল ফিলোসোফার নিজে বলেছেন শিক্ষা সম্পর্কে যে, থ্রি কাইন্ডস অব প্রগ্রেস আর সিগনিফিকেন্ট ; প্রগ্রেস ইন নলেজ এন্ড টেকনলজি ; প্রগ্রেস ইন সোসিয়ালাইজেশন অব ম্যান; প্রগ্রেস ইন ¯স্প্রিচুয়ালিটি। দ্যা লাস্ট ইজ দ্যা মোস্ট ইমপরটেন্ট। আর এইু ভদ্রলোকের নাম হচ্ছে আলবাট রিচার্ড। তিনি যে বই লিখেছেন তার নাম হচ্ছে ভিজিটিং অব রেনড্রেমপার্ট লাইফ। এরপর এসে তিনি বর্তমান আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষাব্যাবস্থা যে সেকুলার এবং লিবারেল শিক্ষাব্যবস্থা যে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে সেখান থেকে টার্নিং পয়েন্টে শিক্ষাকে ইডিওলজিকাললি ওরিয়েন্ট করার জন্য বলেছেন। এজন্য পরামর্শ দিয়েছেন ,আওয়ার এইজ মাস্ট এছিভ ¯স্প্রিচুয়াল রিনিওয়াল। এ নিউ রেনেসা মাস্ট কাম। দ্যি রেনেসা ইন হুয়িছ ম্যানকাইন্ড ইজ কভার্ড দ্য ইথিকাল একশন ইজ দ্য সুপ্রিম ট্রুথ এন্ড দ্য সুপ্রিম ইটিলিটারিয়ানিজম। বাই হুয়িছ ম্যানকাইন্ড উইল বি রেভূলেটেড। এই ¯স্প্রিচুয়াল রেভূলেশন ছাড়া ম্যানকাইন্ডের কোন বিকল্প হতে পারে না-তিনি এটা অত্যন্ত স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন। তো আমার মনে হয় আর কোন কথা এখানে আলোচনা করার প্রয়োজন নেই যে, যে পাশ্চাত্যে ধর্মহীনশিক্ষাব্যবস্থায় , তথাকথিত লিবারেল এডুকেশনে যিনি শিক্ষিত, তিনি বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে ; সেই পাশ্চাত্যের শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে একথাগুলো বলেছেন। তো আমার ক থা হচ্ছে পাকিস্তানের বুকে বাইশ বছর যাবৎ পর্যন্ত এ সেকুলার এবং ধর্মহীন শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত ছিল । এই শিক্ষাব্যবস্থা আমাদের সমাজে এমন কতগুলো ম্যাকুলের(মেকেলে) ব্রেইন চাইল্ড এবং ব্রাউন ইংলিশম্যান তৈরী করেছে যাদের মুখ থেকে আমরা ধর্মহীন শিক্ষাব্যবস্থার কথা শুনছি। কিন্তু জেনে রাখা দরকার এ শিক্ষাব্যবস্থা যখন প্রবর্তন করা হয় আজ থেকে দেড়শ বছর আগে তখন এই শিক্ষাব্যবস্থা যখন ফেইল করল , মুসলমানদের মধ্যে তখন স্যার উইলিয়াম হান্টারকে এসে কমেন্ট করতে দেয়া হয়েছিল, উনি কি কথাগুলো বলেছিলেন, দেখুন , তিনি বলেছেন, দি ট্রু থ ইজ দেট আওয়ার সিসটেম অব পাবলিকইন্স ট্রাকশন ইজ অপোজ টু দ্য ট্রেডিশন আনটু দ্যাট রিকোয়ারম্যান্ট এন্ড হেটফুল টু দ্যা রিলিজিয়ন অব মুসলমান।
তো যারা বলেন যে ইসলামের ইডিওলজি কি তাদেরকে আমি শুধুএই প্রশ্ন করব যে আপনারা একটু তার ইতিহাস একবার পর্যালোচনা করেন। ইসলামের ইতিহাস দেখে তারপরে বলুন ইসলামের ইডিওলজি কী। এটা একটা বিরাট রকমের পরিস্কার ইনস্ট্রাকশন রয়েছে । আর ইসলামিক ইডিওলজিতে বা ইসলামিক কালচারের ভিত্তিতে যে সমাজও সোসাইটি গড়ে উঠেছিল সেখানে তার স্থানীয় কালচার বা স্থানীয় সংস্কৃতিরও সেখানে দাম ছিল এবং তাদেরকেও বিকাশ করার জন্য চেষ্টা করা হয়েছে। সোভিয়েত রাশিয়ার মত সেখানে ওয়ান সাইড অব কালচারকরা হয় নি; কমন সেট অব কালচারকরা হয়েছিল । আজ আমার শেষ বক্তব্য হচ্ছে , (১৯৬৯ সালের বক্তব্য )পাকিস্তান আমরা পেয়েছি যে জন্য, যে উদ্যেশ্যে সেখানে ১৯৩৮সালে শেরে বাংলা একে ফজলুল হক সাহেব পাটনা সম্মেলেনে ঘোষণা করেছিলেন, যে , আমরা পাকিস্তান এর বুকে একটি ইসলামিক শিক্ষাব্যবস্থা প্রবর্তন করতে চাই।...
ইসলামী শিক্ষা দিবসের কিছুটা ইতিহাস
ভিডিও
9 comments:
অসাধারন মেধাবী বাগ্মী আব্দুল মালেকের সেই ৫ মিনিটের যৌক্তিক বক্তব্যে সভার মোটিভ পুরোপুরি পরিবর্তিত হয়ে যায় । তিনি স্পষ্ট করে সেদিন বলেছিলেন,
, "Pakistan must aim at ideological unity, not at ideological vacuum- it must impart a unique and integrated system of educatiuon which can impart a common set of cultural values based on the precepts of Islam. We need Common set of cultural values, not one set of cultural values”-
অসাধারন মেধাবী বাগ্মী আব্দুল মালেকের সেই ৫ মিনিটের যৌক্তিক বক্তব্যে সভার মোটিভ পুরোপুরি পরিবর্তিত হয়ে যায় । তিনি স্পষ্ট করে সেদিন বলেছিলেন,
"Pakistan must aim at ideological unity, not at ideological vacuum- it must impart a unique and integrated system of educatiuon which can impart a common set of cultural values based on the precepts of Islam. We need Common set of cultural values, not one set of cultural values”-
ডাকসুর সভায় সাধারন ছাত্রের কথা বলার অধিকার আছে । শহীদ আব্দুল মালেকসহ কয়েকজন ইসলামী শিক্ষাব্যবস্থার পক্ষে কথা বলার আবেদন করলে তা প্রত্যাখ্যান করা হয় ।
ইকরা বিসমি রাব্বিকাল্লাযী খলাক' -কুরআনের এই আয়াতের সমর্থনে যারা শিক্ষাব্যবস্থাকে ইসলাম নির্দেশিত উপায়ে সাজাতে চায় - তাদের অগ্রপথিক, ইসলামী শিক্ষার পক্ষে কথা বলতে গিয়ে নাস্তিক-কম্যুনিষ্টদের হাতে নিহত প্রথম বাঙালী শহীদ, শহীদ আব্দুল মালেক।
আব্দুল মালেকের মৃত্যুর দিনটাকে পুরা বাঙালী জাতির জন্য আজীবন শোকের দিন বানায়ে দিসেন আল্লাহ.. মুসা নবীকে ফেরাউনের ঘরে অথবা ইউসুফ নবীকে কুয়া থেকে উদ্ধারের মত ব্যাপার! - আল্লাহ কত বড় কৌশলী !
আজ ১৫ আগষ্ট। ১৯৬৯ সালের এই দিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র আব্দুল মালেক ইসলাম বিরোধী শক্তির হাতে নির্মমভাবে শাহাদত বরণ করেন। মূলত ইসলামী শিক্ষার পক্ষে কথা বলতে গিয়েই তিনি এই আক্রমনের শিকার হয়েছিলেন। তিনি ছিলেন তৎকালীন পাকিস্থানী ইসলামী আন্দোলনের প্রথম শহীদ। মালেক ভাই কেমন ছিলেন তা লেখার নুন্যতম যোগ্যতাও আমার নেই তাছাড়া তা লিখেও শেষ করা যাবে না। শুধু এতটুকু বলতে পারি বর্তমানে মালেক ভাইয়ের... বড় অভাব। আজ ইসলামী আন্দোলন অনেক বড় হয়েছে ঠিকই কিন্তু মালেক ভাইয়ের মত যোগ্যতা সম্পন্ন এবং মানবীয় গুনাবলীর অধিকারী নেতৃত্বের দৈন্যতা প্রতিটি পদে পদে অনুভুত হচ্ছে।
১৯৪৭ সালে বগুড়া জেলার ধুনটের খোকসাবাড়ি গ্রামে জন্মগ্রহনকারী শহীদ আব্দুল মালেক ছিলেন ঈর্ষনীয় মেধার অধিকারী। এস.এস.সি এবং এইচ.এস.সি তে তিনি রাজশাহী বোর্ডে যথাক্রমে একাদশ ও চতুর্থ স্থান অধিকার করে ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ রসায়নের ছাত্র আব্দুল মালেক এত মেধাবী হওয়া সত্বেও ক্যারিয়ার নিয়ে কখনও ভাবতেন না। সব সময় বিচলিত থাকতেন ইসলামী আন্দোলন নিয়ে। তিনি বলেতেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসের চাইতে ইসলামী ছাত্র সংঘের অফিস আমার কাছে অধিক বেশী গুরত্বপূর্ণ”।
তিনি ছিলেন একজন উচু মাপের দ্বায়িত্বশীল। নবী রাসুল আর সাহাবায়ে কেরামের আর্দশ তার জীবনে বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। তাইতো শিক্ষা শিবির কিংবা বিভিন্ন প্রোগ্রাম গুলোতে তাকে দেখা যেত বিভিন্ন সেবা মুলক কাজে। সারাদিন প্রোগ্রামে পরিচালকের ভুমিকা পালন করার পর তাকে দেখা যেত কখনও বা ডেলিগেটদের জন্য প্লেট পরিস্কার করছেন কখনও বা তাকে দেখা যেত বুক পরিমান পানিতে নেমে ডেলিগেটদের ব্যবহৃত টয়লেট মেরামত করছেন।
তার কর্মীদেরকে তিনি তার জীবনের চেয়েও বেশী ভালবাসতেন। কেউ যদি তার ফজলুল হক হলের ১১২ নং রুমে থাকতে যেতেন তবে তাকে তিনি তার বিছানা ছেড়ে দিতেন। আর তিনি রুমের মেঝেতে থাকতেন ইট কিংবা বই দিয়ে বালিশ বানিয়ে। অত্যন্ত সরল জীবন যাপন করতেন তিনি, বিলাসীতাকে কখনও প্রশ্রয় দিতেন না।
তার এক জোড়া পান্জাবী আর পায়জামা ছিল। তিনি রোজ তার রুমে ফিরে রাতের অন্ধকারে তার পড়নের জামা কাপড় ধুয়ে দিতেন, সারা রাত শুকাতো আবার ওটা পরদিন সকালে ব্যবহার করতেন।
তিনি ছিলেন অত্যন্ত সরল প্রকৃতির। একবার ময়মনসিং গিয়ে বর্তমান জামায়াত নেতা কামারজ্জামানের কাছে উঠেছিলেন। ট্রেন তাকে যখন ময়মনসিং নামিয়ে দেয় তখন রাত তিনটা কি চারটা। কামারজ্জামান ভাইকে ডাকলে তার রুম মেটের ঘুম ভেঙ্গে যেতে পারে তাই তিনি বাকি রাতটুকু দরজায় দাড়িয়ে কাটিয়ে দেন। ভোরে যখন কামারজ্জামান ভাই দারজা খুলে বাহিরে আসেন তখন অবাক হয়েছিলেন আব্দুল মালেকের মহানুভবতা দেখে। এরকম হাজারো গুনের সমষ্টি ছিলেন আব্দুল মালেক।
তিনি ছিলেন ভারসাম্যপুর্ন জীবনের অধিকারী। একদিকে তিনি যেমন ছিলেন ভাল ছাত্র আবার পাশাপাশি একজন ভাল সংগঠক। সহসাই তিনি সংগঠনের সকলকে আপন করে নিতে পারতেন। শত ব্যস্ততার মাঝেও ছোট বড়, বন্ধু বান্ধব সকলের সাথে চিঠির মাধ্যমে যোগাযোগ করতেন। নবম শ্রেণীর ছাত্র অবস্থায় তিনি তার বাবাকে লিখেছিলেন, “বাড়ির কথা ভাবিনা, আমার শুধু এক উদ্দেশ্য, খোদা যেন আমার উদ্দেশ্য সফল করেন। কঠিন প্রতিজ্ঞা নিয়ে এসেছি এবং কঠোর সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়েছি, দোয়া করবেন।“
মায়ের প্রতি তার ছিল অকৃত্রিম ভালবাসা কিন্তু ইসলামী আন্দোলনের প্রতি তার ভালবাসা ও আবেগ ছিল অপরিসীম। আপনজনদের প্রতি ভালবাসা কখনও তার আন্দোলনের পথে বাধা হয়ে দাড়াতে পারেনি। তিনি লিখেছিলেন, “ মায়ের বাধন ছাড়া আমার আর কিছু নেই। বৃহত্তর কল্যাণের ফলে সে বাধনকে ছিড়তে হবে। কঠিন শপথ নিয়ে আমি আমার পথ চলতে চাই।“
তিনি কিশোর ও তরুনদের খুব ভালবাসতেন। তাদের নিয়ে আগামী দিনের বিপ্লবের স্বপ্ন দেখতেন। তাইতো তিনি আহবান জানিয়েছিলেন, “ আমরা চাই দুনিয়ার বুকে একটা ইসলামী হুকমাত প্রতিষ্ঠা করতে। আমাদরন সেই স্বপ্নের কাফেলায় তোমরাই হবে নিশান বরদার, তোমরাই হবে তার সিপাহসালার।“
তিনি সবসময় শাহাদতের মুত্যু কামনা করতেন, আল্লাহ তার সেই আশাও পূরুণ করেছিলেন। তার কথা ও কাজে তার যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়। তার ছোট্র সাথী বিলালের কাছে তিনি লিখেছিলেন, “ দোয়া কর, আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে জানমাল কোরবানীর যে শপথ নিয়েছি আল্লাহকে হাজির নাজির জেনে, জীবনের বিনিময়ে হলেও যেন তার মর্যাদা রক্ষা করতে পারি।“ আর তাইতো ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থার পক্ষে কথা বলতে গিয়ে ইসলাম বিরোধীদের নির্মম হামলার শিকার হয়েছিলেন ১৯৬৯ সালের ১২ আগষ্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশেই সোহরাওয়ার্দী উদ্দ্যানে। তিন দিন মৃত্যুর সাথে লড়াই করে অবশেষে মহান আল্লাহর সান্নিধ্য লাভ করেন ১৫ আগষ্ট।
আমাদের দেশে আর হয়ত আব্দুল মালেক ভাইয়ের জন্ম হবে না কিন্তু তার সমগ্র জীবনের প্রতিটি অধ্যায় পর্যালোচনা করে, তার অভিজ্ঞজ্তা ও যোগ্যতাকে কাজে লাগিয়ে আমরাও যেন ইসলামী আন্দোলনের এই ময়দানে নতুন নতুন নের্তত্ব সৃষ্টি করে দ্বীন প্রতিষ্ঠার এই আন্দোলনকে আরও বেগবান করতে পারি, মহান আল্লাহর কাছে সেই আশাবাদ ব্যক্ত করছি।
(যেহেতু এখানে পরামর্শ দেয়ার জন্য বলা হয়েছে, তাই বলছি)
এই পেজের কালার কম্বিনেশনটা ভালো হয় নাই, পেজের লুকিংটাও আকর্ষণীয় না। এটা ঠিক করলে মনে হয় ভালো হয়। ধন্যবাদ।