শহীদ রাহাত ভাই, ইউসুফ সানী ভাই ও আমি ২০০৬ সালে মদন মোহন কলেজে সম্মান ১ম বর্ষে ভর্তি হ ই। ৩জন ই তারাপুর ক্যাম্পাসের ছাত্র হওয়ার সুবাধে একি সাথে প্রাইভেট পড়ার জন্য ছুটাছুটি করতাম। এক্ষেত্রে সবচেয়ে মনযোগি ছাত্র ছিলেন আমাদের রাহাত ভাই। শেষ বর্ষ পর্যন্ত প্রত্যাকটি প্রাইভেট পড়ার উদ্যোগ তিনি ই নিতেন। কখনো কমার্স কোচিং এর মাহবুব ভাই, ওয়াদুদ স্যার, জয়দ্বীপ স্যার, শরিফ ভাই সহ প্রমুখের বাসায় আমরা ৩জন একসাথে ক্লাস করতাম। সদা হাস্যোজ্জল রাহাত ভাই ছিলেন প্রান চঞ্চল ও সাধাসিদে প্রকৃতির একজন সহজসরল মানুষ।
কোন একসময় মদনমোহন কলেজের ইন্টার্মিডিয়েট ওয়ার্ডের সভাপতি থাকার কারনে কলেজের অনেক জনশক্তির সাথে ছিল গভির ভ্রাতৃত্বপূর্ন সম্পর্ক। প্রায় সময় নাম ধরে ধরে জনশক্তিদের খোজখবর নিতেন ও তাদের সম্পর্কে বিভিন্ন পরামর্শ দিতেন।
প্রিয় ক্যাম্পাসকে ভালোবাসতেন তার হৃদয়ের সবটুকু উজার করে। তাই তো শাহাদাতের কিছুদিন পুর্বে যখন শোনলেন আমাদের কলেজের ব্যানারে কলেজ মসজিদ থেকে আগামিকাল হরতালের মিছিল হবে তখন আর তিনি দ.. সুরমাতে না গিয়ে উত্তর সুরমায় রাত্রি যাপন করলেন। উনি সবসময় বলতেন ভাই ক্যাম্পাস নিয়া একটু চিন্তা করেন। আমরা আর কত ক্যাম্পাসের বাহিরে থাকব। একটু মহানগরির সাথে আলাপ করেন ! ইত্যাদি ইত্যাদি
যেদিন তিনি আঘাতপ্রাপ্ত হন এর পূর্বের দিন আঞ্জুমানে খেদমতে কোরআনের তাফসির মাহফিল চলছিল। সারাদেশে শহীদের সংখ্যা বৃদ্ধি হওয়ার দরুন আক্ষেপ করে আমাকে এসে বলছিলেন "পারভেজ ভাই আমরা তো শহীদের কাতারে পিছিয়ে পড়ছি". সেই কথাটি আজ ও আমার কানে স্পষ্ট ভেসে ওঠে।
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তার শ্রেষ্ট ফুলটিকে শাহাদতের জন্য কবুল করেন। সেই দিনের মিছিলে আমরা ও ছিলাম....... কিন্তু আল্লাহ তার প্রিয় বান্দা যে কিনা শাহাদাতের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিল। রোজারত অবস্থায় তার বুকে ই বুলেটটি ঢুকিয়ে দেন।
হে আল্লাহ আমাদের রাহাত ভাইকে শহীদের সর্বোচ্চ মর্যাদা দান করুন। তার রেখে যাওয়া আন্দোলনের অবাস্তবায়িত কাজ যাতে আমরা বাস্তবায়ন করতে পারি সেই তৌফিক দান করুন। এবং তার প্রিয় ক্যাম্পাসে নারায়ে তাকবির স্লোগানে প্রকম্পিত করতে পারি সে সুযোগ আমাদেরকে করে দাও। আমীন, ছুম্মা আমীন!
- Parvaz Ahmad
0 comments: