দাওয়াত ও তবলিগ এবং তরবিয়তি নিজাম
একটি ইসলামী দলের সর্বপ্রথম কাজই হচ্ছে মানুষের সামনে ইসলামের দাওয়াত পরিবেশন করা। পেশ করতে হবে বুদ্ধিমত্তাসহ হৃদয়গ্রাহী ভাষায়। আল্লাহর সকল নবী এ কাজ আনজাম দিয়েছেন।
দাওয়াতী কাজের দুটি সুফল যদি তা সঠিকভাবে করা যায়।
এক. সঠিক দাওয়াত দানের মাধ্যমে যতো বেশী লোককে আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত করা যাবে, ততোবেশী ইসলামের স্বপক্ষে জনমত সৃষ্টি হবে। ইসলামী বিপ্লবের জন্য জনমত সৃষ্টি অপরিহার্য।
দুই, যিনি দাওয়াত পেশ করবেন, তাকে অবশ্যই ইসলামের মডেল হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করতে হয়। ফলে তার পক্ষে ইসলামের অনুশাসন মেনে চলার প্রেরণা সৃষ্টি হয়।
একটি ইসলামী দলের দাওয়াতী কাজ বন্ধ হয়ে গেলে তা একটা প্রাণহীন ও অর্থহীন সংগঠনে পরিণত হয়। দলের প্রতিটি ব্যক্তি নিয়মিত দাওয়াতী কাজ করছেন কি না তার ভালোভাবে তদারকি হওয়া দরকার।
তরবিয়তি নিজাম
দাওয়াত দাতার মধ্যে যেসব যোগ্যতা ও গুণাবলীর প্রয়োজন, তা অর্জন করার জন্য তরবিয়তি নিজাম বা প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা অবশ্যই থাকা দরকার। জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশে তা আছে। তা ফলপ্রসূ হচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেখা উচিত।
মাওলানা মওদূদী বিভিন্ন সময়ে কর্মী ও রুকনদের বিভিন্ন সমাবেশে তরবিয়ত ও তাযকিয়া সম্পর্কে যে মূল্যবান ভাষণ দিয়েছেন তার কিছু এখানে উল্লেখ করা হচ্ছে।
মাওলানা কর্মীদের জন্য এটা অতি আবশ্যক বলে গণ্য করেন যে, তাদেরকে প্রথমতঃ চারটি গুণের অধিকারী হতে হবে।
১। ইসলামের সঠিক উপলদ্ধি,
২। ইসলামের উপর পাকাপোক্ত ঈমান,
৩। কথা ও কাজের মধ্যে পূর্ণ সামঞ্জস্য,
৪। দীনকে জীবনের উদ্দেশ্য হিসাবে গ্রহণ।
কর্মীদের মধ্যে সামাজিকভাবে যে সব গুণাবলীর প্রয়োজন তা হলোঃ
১। ভ্রাতৃত্ব ও ভালোবাসা,
২। পারস্পরিক পরামর্শের ভিত্তিতে কাজ করা,
৩। নিয়ম-শৃঙ্খলা পুরোপুরি মেনে চলা,
৪। সংশোধনের নিয়তে সমালোচনা করা।
পূর্ণতাদানকারী গুণাবলী যা সাফল্যের চাবিকাঠিঃ
১। আল্লাহর সাথে গভীর সম্পর্ক ও তাঁর সন্তুষ্টির জন্য কাজ করা।
২। আখিরাতের জবাবদিহিকে স্মরণ রাখা।
৩। চরিত্র মাধুর্য।
৪। ধৈর্য।
৫। প্রজ্ঞা।
তরবিয়ত ও তাযকিয়া বিষয়ক নিম্নলিখিত সাহিত্যগুলো কর্মীদের অধ্যয়ন করা উচিতঃ
১। তাহরিক আওর কারকুন- মাওলানা মওদূদী।
২। ইন্তেখাব ও তারতীব- মাওঃ খলিল আহমদ হামিদী।
(এ গ্রন্থ বিভিন্ন সময়ে মাওলানা মওদূদীর প্রদত্ত ভাষণের সংকলন)
৩। তা’মীর সীরাত কে লাওয়াযেম- নঈম সিদ্দিকী
৪। তাযকিয়ায়ে নফস – মাওঃ আমীন আহসান ইসলাহী।
৫। ইসলাম আপসে কিয়া চাহতা হ্যায়- সাইয়েদ হামেদ আলী
৬। আপনি ইসলাহ আপ – নঈম সিদ্দিকী
৭। ইসলাম এক নিযামি তরবিয়াত – মাওঃ ইনআমুর রহমান খান।
৮। তাহরিকে ইসলামী মে- খুররম মুরাদ।
৯। বাহামী তায়াল্লুকাত – খুররম মুরাদ।
প্রথম ও অষ্টম বইখানির বাংলা অনুবাদ হয়েছে। বাকীগুলোও কর্মীদের পাঠ্য তালিকায় থাকা উচিত। অনুষ্ঠিত শিক্ষা শিবিরগুলোতে কর্মীদের মধ্যে এ সবের বাস্তব প্রতিফলনের অনুশীলন হওয়া উচিত।
অত্র প্রবন্ধে যা কিছু বলা হলোঃ তা একটি আদর্শবাদী ইসলামী আন্দোলনকে তার সম্ভাব্য বিকৃতি ও পতন থেকে রক্ষা করার জন্য কিছু পরামর্শ। অতীতে যে সব কারণে এ ধরণের দলের পতন হয়েছে তার অভিজ্ঞতার আলোকে এ পরামর্শ পেশ করা হয়েছে। পতনের অন্যতম কারণ হলো নিয়মিত দীনি সাহিত্য পড়াশুনা বন্ধ হয়ে যাওয়া। তাফহীমুল কুরআন, সীরাতে সরওয়ারে আলম, রাসায়েল ও মাসায়েল এবং মাওলানা মওদূদীর সাহিত্যাবলী পাঠের অভাবে চিন্তার ক্ষেত্রে বন্ধ্যাত্ব দেখা দেয়, জনশক্তির মধ্যে ঐক্যের অভাব ঘটে, নৈরাশ্য, অবসাদ, ক্লান্তি, আন্দোলন বিমুখতা ও নিষ্ক্রিয়তা এসে যায়। পড়াশুনা বন্ধ হলেই এমনটি হয়ে থাকে। আল্লাহর দীন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আন্দোলনে শরীক সকলকে সিরাতুল মুসতাকীমে অটল থেকে সঠিকভাবে নিজ দায়িত্ব পালনের তওফীক আল্লাহ তায়ালা দান করুন, আমীন।
একটি ইসলামী দলের সর্বপ্রথম কাজই হচ্ছে মানুষের সামনে ইসলামের দাওয়াত পরিবেশন করা। পেশ করতে হবে বুদ্ধিমত্তাসহ হৃদয়গ্রাহী ভাষায়। আল্লাহর সকল নবী এ কাজ আনজাম দিয়েছেন।
দাওয়াতী কাজের দুটি সুফল যদি তা সঠিকভাবে করা যায়।
এক. সঠিক দাওয়াত দানের মাধ্যমে যতো বেশী লোককে আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত করা যাবে, ততোবেশী ইসলামের স্বপক্ষে জনমত সৃষ্টি হবে। ইসলামী বিপ্লবের জন্য জনমত সৃষ্টি অপরিহার্য।
দুই, যিনি দাওয়াত পেশ করবেন, তাকে অবশ্যই ইসলামের মডেল হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করতে হয়। ফলে তার পক্ষে ইসলামের অনুশাসন মেনে চলার প্রেরণা সৃষ্টি হয়।
একটি ইসলামী দলের দাওয়াতী কাজ বন্ধ হয়ে গেলে তা একটা প্রাণহীন ও অর্থহীন সংগঠনে পরিণত হয়। দলের প্রতিটি ব্যক্তি নিয়মিত দাওয়াতী কাজ করছেন কি না তার ভালোভাবে তদারকি হওয়া দরকার।
তরবিয়তি নিজাম
দাওয়াত দাতার মধ্যে যেসব যোগ্যতা ও গুণাবলীর প্রয়োজন, তা অর্জন করার জন্য তরবিয়তি নিজাম বা প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা অবশ্যই থাকা দরকার। জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশে তা আছে। তা ফলপ্রসূ হচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেখা উচিত।
মাওলানা মওদূদী বিভিন্ন সময়ে কর্মী ও রুকনদের বিভিন্ন সমাবেশে তরবিয়ত ও তাযকিয়া সম্পর্কে যে মূল্যবান ভাষণ দিয়েছেন তার কিছু এখানে উল্লেখ করা হচ্ছে।
মাওলানা কর্মীদের জন্য এটা অতি আবশ্যক বলে গণ্য করেন যে, তাদেরকে প্রথমতঃ চারটি গুণের অধিকারী হতে হবে।
১। ইসলামের সঠিক উপলদ্ধি,
২। ইসলামের উপর পাকাপোক্ত ঈমান,
৩। কথা ও কাজের মধ্যে পূর্ণ সামঞ্জস্য,
৪। দীনকে জীবনের উদ্দেশ্য হিসাবে গ্রহণ।
কর্মীদের মধ্যে সামাজিকভাবে যে সব গুণাবলীর প্রয়োজন তা হলোঃ
১। ভ্রাতৃত্ব ও ভালোবাসা,
২। পারস্পরিক পরামর্শের ভিত্তিতে কাজ করা,
৩। নিয়ম-শৃঙ্খলা পুরোপুরি মেনে চলা,
৪। সংশোধনের নিয়তে সমালোচনা করা।
পূর্ণতাদানকারী গুণাবলী যা সাফল্যের চাবিকাঠিঃ
১। আল্লাহর সাথে গভীর সম্পর্ক ও তাঁর সন্তুষ্টির জন্য কাজ করা।
২। আখিরাতের জবাবদিহিকে স্মরণ রাখা।
৩। চরিত্র মাধুর্য।
৪। ধৈর্য।
৫। প্রজ্ঞা।
তরবিয়ত ও তাযকিয়া বিষয়ক নিম্নলিখিত সাহিত্যগুলো কর্মীদের অধ্যয়ন করা উচিতঃ
১। তাহরিক আওর কারকুন- মাওলানা মওদূদী।
২। ইন্তেখাব ও তারতীব- মাওঃ খলিল আহমদ হামিদী।
(এ গ্রন্থ বিভিন্ন সময়ে মাওলানা মওদূদীর প্রদত্ত ভাষণের সংকলন)
৩। তা’মীর সীরাত কে লাওয়াযেম- নঈম সিদ্দিকী
৪। তাযকিয়ায়ে নফস – মাওঃ আমীন আহসান ইসলাহী।
৫। ইসলাম আপসে কিয়া চাহতা হ্যায়- সাইয়েদ হামেদ আলী
৬। আপনি ইসলাহ আপ – নঈম সিদ্দিকী
৭। ইসলাম এক নিযামি তরবিয়াত – মাওঃ ইনআমুর রহমান খান।
৮। তাহরিকে ইসলামী মে- খুররম মুরাদ।
৯। বাহামী তায়াল্লুকাত – খুররম মুরাদ।
প্রথম ও অষ্টম বইখানির বাংলা অনুবাদ হয়েছে। বাকীগুলোও কর্মীদের পাঠ্য তালিকায় থাকা উচিত। অনুষ্ঠিত শিক্ষা শিবিরগুলোতে কর্মীদের মধ্যে এ সবের বাস্তব প্রতিফলনের অনুশীলন হওয়া উচিত।
অত্র প্রবন্ধে যা কিছু বলা হলোঃ তা একটি আদর্শবাদী ইসলামী আন্দোলনকে তার সম্ভাব্য বিকৃতি ও পতন থেকে রক্ষা করার জন্য কিছু পরামর্শ। অতীতে যে সব কারণে এ ধরণের দলের পতন হয়েছে তার অভিজ্ঞতার আলোকে এ পরামর্শ পেশ করা হয়েছে। পতনের অন্যতম কারণ হলো নিয়মিত দীনি সাহিত্য পড়াশুনা বন্ধ হয়ে যাওয়া। তাফহীমুল কুরআন, সীরাতে সরওয়ারে আলম, রাসায়েল ও মাসায়েল এবং মাওলানা মওদূদীর সাহিত্যাবলী পাঠের অভাবে চিন্তার ক্ষেত্রে বন্ধ্যাত্ব দেখা দেয়, জনশক্তির মধ্যে ঐক্যের অভাব ঘটে, নৈরাশ্য, অবসাদ, ক্লান্তি, আন্দোলন বিমুখতা ও নিষ্ক্রিয়তা এসে যায়। পড়াশুনা বন্ধ হলেই এমনটি হয়ে থাকে। আল্লাহর দীন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আন্দোলনে শরীক সকলকে সিরাতুল মুসতাকীমে অটল থেকে সঠিকভাবে নিজ দায়িত্ব পালনের তওফীক আল্লাহ তায়ালা দান করুন, আমীন।
0 comments: