নির্মম ভাবে আব্দুস সালামকে শহীদ করা হল



বীর মুসলমান,ধর আলকুরআন। হৃদয়ে আনো সেই হারানো সম্মান। যে আওয়াজ শুনে ভয়ে প্রকম্পিত হত কাফির-মুশরিক। গানটি গাইতে গাইতে চিরবিদায় নিলেন আলহাজ্ব আব্দুস সালাম মোড়ল (৬৩)। নিহতে পূবে তার মোবাইলে রের্কডকৃত গান।গত ২৮ ফেব্রুয়ারী পুলিশের গুলি ও সরকার দলীয় ক্যাডারদের হাতে নির্মমভাবে নিহত হন সাতক্ষীরা আশাশুনি উপজেলার খাজুরাইউনিয়নের তুয়ারডাঙ্গা গ্রামের মৃত্য মাহবুদ্ধিন মোল্লার ছেলে আব্দুস সালাম।
১৩ ভাই-বোনের মধ্যে সে ছিল সবার বড়। নিহতের আগে তিনি পরিবার পরিজনের কাছ থেকে চিরবিদায় নেন। এযেন বদর,ওহুদ ও খন্দকের যুদ্ধকেও হার মানাবে। ঘটনার দিন সকালে তিনি শেষ গোসল করেন। নিজের হজ্বকৃত পোষাক পরিধান করেন। নেমে পড়েন মাওলানা সাঈদীর রায়ের প্রতিবাদে জামায়াতের ডাকা হরতালের পিকেটিংএ।

 পিকেটিং এর একর্পায়ে ঘোষণা আসল যে কোন মুহূর্তে সাঈদীর রায় ঘোষণা হবে। ছুটে আসে বাড়িতে। কিন্তু বাসায় বিদ্যুৎ না থাকায় বিভিন্ন জায়গায় মোবাইল করতে থাকে । একপর্যায়ে আল্লামা সাঈদীর ফাঁশির রায় শূনে জোরে জোরে কাঁদতে থাকে। এযেন আপন জন হারানো কান্না। আর বলতে থাকেন আল্লাহ মাওলানা সাঈদীর ফাঁশির রায় কার্যকারে আগে আল্লাহ যেন আমাকে তুলে নেন। নিজ চোখে সাঈদীর ফাঁশি দেখার চেয়ে মরে যাওয়া অনেক ভাল। একথা বলতে থাকে পরিবারে সকলের সাথে।

 এসময় তিনি আরো বলেন,আমি যদি আজ শহীদ হতে পারি তাহলে তোমরা আমার গোসল দিবে না। সাঈদীর রায় হওয়ার কথা শুনে গ্রামের বাড়ি ছেড়ে শহরের পুরাতন সাতক্ষীরা ছেলের বাড়িতে আসেন ঘটনার একদিন আগে। রায় ঘোষণার প্রতিবাদে সাতক্ষীরা জামায়াতের নিধারিত কর্মসূচি ছিল বিকাল ৪টায় শহরের কদমতলা বাজারে। কর্মসূচি শুরু হওয়ার আধাঘণ্টা আগেই তিনি ঘটনা স্থলে চলে যান। যথা সময়ে প্রোগ্রাম শুরু। লাখ সাঈদী প্রেমিকের জন স্রোত। সমাবেশ স্থল ছাপিয়ে সার্কিট হাউজ মোড়ে পর্যন্ত চলে যায় সমাবেশ স্থল। বেলা ৫টার দিকে শুরু হয় সাঈদী প্রেমিক জনতার উপর পুলিশ বিজিবি ও সরকার দলীয় ক্যাডারদের মুহু মুহু গুলি বর্ষন। লুটিয়ে পড়ে কয়েক জন। সালাম তাদের সরাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে ।

এক পর্যায়ে তার বুকে গুলি বিদ্ধ হয়। তিনি রক্তার্থ অবস্থায় পার্শবর্তি ডা,আজিজুর রহমানের ক্লিনিকের সামনে গেলে স্থানীয়রা তাকে হাসপাতালে পাঠানোর চেষ্টা করে। এসময় সরকার দলীয় ক্যাডারারা তাকে ভ্যান থেকে নামিয়ে লাঠি ও রড দিয়ে পিটাতে থাকে। তার হাত,পা ভেঙ্গে দেন তারা। প্রত্যক্ষ দর্শীরা জানা এসময় তিনি পানি চাইলে তার মুখে সন্ত্রাসীরা থু-থু ও প্রসাব করে দেন। তিনি বার বার আল্লাহ আল্লাহ শব্দ করতে থাকেন। মৃত্যু নিশ্চিত করে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। পাশ্ববর্তি অনেকে এ ঘটনা মোবাইলে ধারণ করে। রাত ৮টার দিকে তাকে সদর হাসপাতালের মর্গে আনা হয়। এর মধ্যে সন্ত্রসীরা তার লাশ ক্ষত-বিক্ষত করে ফেলে।

নিহত আব্দুস সালাম দীর্ঘ সময় ধরে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন এর গুদাম রক্ষক এর দায়িত্বে কর্মরত ছিলেন। তাকে ঘুষ লেনদেন করতে বাধ্য করায় ১৯৯২ সালে তিনি স্ব-উদ্যোগে চাকুরি ছেড়ে দেন। তিনি তার গ্রামের বাড়িতে একটি পাঞ্জেখানা গড়ে তুলেছেন। সেখানে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আজান দেওয়ার দায়িত্ব ছিল তার। প্রতিদিন ফজরের নামাজের আগে তিনি মুসুল্লিদিরে ডেকে দিতেন। ১৯৫২ সালের ১০ নবেম্বর জন্মের পর তার বিরুদ্ধে কোথাও কোন অভিযো ছিল না। নিহতের আগ পর্যন্ত তিনি জামায়াতের সক্রীয় কর্মী ছিলেন।

তার সহধর্মী মমতাজ বেগম দীর্ঘ সময় ধরে মহিলা জামায়াতের রোকনের দায়িত্ব পালন করে আসছে। নিহতের স্ত্রী জানান,আল্লামা সাঈদীর রায় প্রত্যাহার করা হলে আমার স্বামীর বিচার পাব। এদিকে নিহতের স্বজনরা অবিলম্বে খুনিদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবী জানিয়েছে। আব্দুস সালামের নিহতের ঘটনা ইতিহাসে বিরল হয়ে থাকবে বলে সাতক্ষীরা বাসী মনে করেন।

নিহতের জানাজা নামাজ পূর্ব সমাবেশে এক হূদয় বিদারক অবস্থার সৃষ্টি হয়। এসময় সাঈদী প্রেমিক হাজারো জনতা বলেন,আল্লাহ আব্দুস সালামকে পচছন্দ করেছেন। আমারা ও আল্লাহর পচছন্দের বান্দা হতে চাই। প্রয়োজনে মাওলানা সাঈদীর জীবন রক্ষার্থে আমরা লাখ সাঈদী প্রেমিক জীবন দিব। তাকে মুক্ত না করে আমরা ঘরে ফিরে আসব না।আগামিতে সাঈদী সাহেবের কিছু হলে হাজারো মানুষ শাহাদাত বরণ করতে প্রস্ত্তত আছে ।

0 comments:

Comment Please

মন্তব্য..

সবিস্তার সূচীপত্র
টেম্পলেট কাষ্টমাইজেশন - তরঙ্গ ইসলাম | তরঙ্গ ইসলাম