ভূমিকা
আল্লাহ তাআলা মানব জাতিকে আশরাফুল মাফলুকাত (সৃষ্টির সেরা জীব) হিসাবে সৃষ্টি করেছেন। তিনি তাদের প্রতিপালক ও হায়াত-মওতের মালিক। মহাবিশ্বের আর সবকিছু তিনি তাদেরই কল্যাণে সৃষ্টি করেছেন এবং তাদের সেবায় নিয়োজিত রেখেছেন। তাঁরই কাছে আবার মানুষকে ফিরে যেতে হবে। হিসাব দিতে হবে, জীবনের সকল কর্মকান্ডের। হিসাবে যারা সফলকাম হবে, তারা প্রবেশ করবে অফুরন্ত নিয়ামতে পরিপূর্ণ জান্নাতে। আর যারা ব্যর্থ হবে, তারা নিক্ষিপ্ত হবে কঠিন ও ভয়ানক শাস্তির নিবাস জাহান্নামে।
ইহজগতে একটি সুখী ও সমৃদ্ধ জীবনে মানবতার একান্ত কাম্য। পরিবার হচ্ছে, সমাজ ও রাষ্ট্রের ভিত্তিমূল এবং তার অন্যতম অঙ্গ। পরিবারের শান্তি-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার উপর কার্যত নির্ভর করে সামাজিক শান্তি, সমৃদ্ধি, শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা। মাতা-পিতা হচ্ছেন পরিবারের কর্ণধার, সন্তানের জন্মদাতা ও লালন-পালনকারী।
যে কোন ব্যক্তির জন্য মাতা-পিতাই হচ্ছেন আল্লাহ তায়ালার সবচাইতে বড় নিয়ামত। সন্তানের অস্তিত্ব, জন্ম ও লালন-পালন ইত্যাকার বিষয়ে আল্লাহর পরেই মাতা-পিতার অবদান সবচাইতে বেশী। এ কারণে সন্তানের প্রতি মাতা-পিতার অধিকারও অনেক বেশী। তাই আল্লাহ তায়ালা মানব জাতির প্রতি তাঁর ইবাদত-বন্দেগী করার পরই মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার ও তাদের অধিকার আদায়ের প্রতি সমাধিক গুরুত্ব প্রদান করেছেন।
আল্লাহর ইবাদাত-বন্দেগী করলে এবং মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার ও তাদের অধিকার আদায় করলে, তাদের নাফলমানী করা থেকে দূরে থাকলে একদিকে যেমন সুখী ও সমৃদ্ধশালী পরিবার ও সমাজ বিনির্মাণের মাধ্যমে মানুষের ইহজীবন শান্তি, সমৃদ্ধি ও স্বাচ্ছন্দে ভরপুর হয়ে উঠবে, অপরদিকে পরকালীন অনন্ত জীবনে তদ্রূপ তারা লাভ করবে আল্লাহর অফুরন্ত নিয়ামতে ভরা জান্নাত। সেখানে রয়েছে সীমাহীন শান্তি ও অনাবিল সুখ-সম্ভোগ।
আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা ও সমাজ ব্যবস্থা অনেকাংশেই ইসলামী নয়। বিধায় সন্তানের প্রতি মাতা-পিতার কি কি অধিকার রয়েছে এবং মাতা-পিতার ব্যাপারে সন্তানের কি কি করণীয় তা আমাদের অনেকেরই অজানা। বরং এ ব্যাপারে আমরা খুবই অসচেতন ও গাফিল। অথচ একটি সুন্দর জীবন, একটি সুখী-সমৃদ্ধিশালী সমাজ গড়ে তোলার জন্য মাতা-পিতার অধিকারের প্রতি লোকেরা সচেতন ও যত্নবান হলে আমরা প্রচেষ্টা সার্থক হয়েছে বলে মনে করবো।
এ কাজে যারা আমাকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন তাদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি, বিশেষ করে মুহতারাম মুহাম্মাদ সানোয়ার হোসেন ভাইয়ের প্রতি। পুস্তিকাটি লিখার কাজে তিনিই আমাকে অণুপ্রাণিত করেছেন এবং তাঁর তত্ত্বাবধানেই পুস্তিকাটির প্রথম প্রকাশ সম্পন্ন হয়। বইটিতে কোন ভুলত্রুটি কারো দৃষ্টিগোচর হলে এবং তা আমাদের জানালে কৃতজ্ঞতার সাথে গ্রহণ করা হবে। ইনশাআল্লাহ! আল্লাহ পাক আমাদের এ নগণ্য প্রচেষ্টা কবুল করুন। আমীন।।
বিনয়াবনত
মুহাম্মাদ আব্দুল মান্নান
- অধ্যায় ০১ : আল্লাহর পরই মাতা-পিতার হক
- অধ্যায় ০২ : মায়ের সাথে সন্তানের আচরণের একটি চিত্র
- অধ্যায় ০৩ : অমুসলিম মাতা-পিতার প্রতি আচরণ
- অধ্যায় ০৪ : মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহারের প্রতিদান
- অধ্যায় ০৫ : মাতা-পিতার নাফরমানী
- অধ্যায় ০৬ : মাতাপিতার অধিকার আদায় করা ও না করার পরিণাম
0 comments: