র্যাব-পুলিশের নিরাপত্তা বেষ্টনির কারণে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও ভোরে যারা জামায়াত নেতা কামারুজ্জামানের জানাজায় অংশ নিতে পারেননি তাদের উপচে পড়া ভীড়ে লোকে লোকারণ্য শেরপুরের সদর উপজেলার কুমরী বাজিতখিলা এলাকা।
বাজিতখিলার এতিমখানার পাশের জমিতে চিরনিদ্রায় সায়িত হয়েছেন দেশের বৃহত্তম ইসলামী দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর এই শীর্ষ নেতা।
তার দাফন-কাফনের পর যখন নিরাপত্তা শিথিল করা হয় তখন থেকেই বাজিতখিলায় বাড়তে থাকে জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীসহ জনতার ঢল।
এদের কেউ কামারুজ্জামানের রুহের মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করছেন, কবরে মাটি ছিটিয়ে দিচ্ছেন। এ সময় অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়ছেন।
রবিবার সকাল ৫টা ২০ মিনিটে মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। কামারুজ্জামানের প্রতিষ্ঠিত শেরপুর সদর উপজেলার কুমরী বাজিতখিলা এতিমখানার পাশের জমিতে তাকে দাফন করা হয়। দাফনের জন্য আগেই কবর খুড়ে রাখেন কামারুজ্জামানের বড় ভাই কফিল উদ্দিন।
আসসালামু আলাইকুম ইয়া আহলাল কুবুর । চির নিদ্রায় শায়িত শহীদ মোহাম্মদ কামারুজ্জামান । আল্লাহপাক কবরটিকে জান্নাতের বাগান বানিয়ে তাকে যেন জান্নাতের মেহমান হিসেবে কবুল করেন |
এর আগে ভোর ৪টা ৫০ মিনিটে এতিমখানা মাঠে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে কামারুজ্জামানের ৪/৫জন আত্মীয়সহ শতাধিক মানুষ অংশ নেন। এ সময় আশেপাশে হাজার হাজার মানুষ উপস্থিত হলেও আইনশৃংঙ্খলা বাহিনী নিরাপত্তা বেষ্টনির কারণে তারা জানাজায় অংশ নিতে পারেননি।
দাফনস্থলে গণমাধ্যম কর্মীসহ স্থানীয়দেরকে যেতেও দেয়া হয়নি।
এর আগে শনিবার রাত থেকেই বিজিবি, র্যা ব ও পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য সেখানে মোতায়েন করা হয়েছে। তিনস্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা বেষ্টনীর মাধ্যমে পুরো এলাকা নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়।
বাজিতখিলা ইউনিয়নের মধ্যকুমরী গ্রামের মজিবর রহমান (৪০) ও আব্দুল কুদ্দুস বলেন, তারা নামাজে জানাজায় অংশগ্রহণের জন্য অজু করে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অনুমতি না দেয়ায় জানাযায় অংশ নিতে পারেননি।
বাজিতখিলা গ্রামের কামরুল ইসলাম বলেন, কামারুজ্জামানের জানাজায় অংশ নিতে কয়েক হাজার মানুষ এতিমখানার আশপাশে সমবেত হয়েছিলেন কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের জানাজাস্থলে আসতে দেয়নি।
কামারুজ্জামানের বড় ভাই আলমাছ আলী (৬৮) কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, ‘আমার ভাই কামারুজ্জামান ছিলেন নিরাপরাধ ও নির্দোষ। বিচারের নামে তাকে হত্যা করা হয়েছে। এজন্য যারা দায়ী আল্লাহর কাছে তাদের বিচার চাই।’
কামারুজ্জামানের আরেক বড় ভাই মো. কফিল উদ্দিন বলেন, তার (কামারুজ্জামানের) শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী মরদেহ কুমরী বাজিতখিলা এতিমখানার পাশে দাফন করা হয়।
এদিকে রবিবার ভোর থেকে বাজিতখিলা ইউনিয়নের বিভিন্নস্থানে বহু গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ভিডিও
0 comments: