তাওহীদ মানুষের ব্যক্তিজীবন ও সমাজ-জীবনের একমাত্র শৃঙ্খলা স্থাপক, তওহীদ বিশ্বশান্তির একমাত্র বুনিয়াদ। দূর উর্ধ্বের শূন্যলোকে ঝিকমিক করে যে লক্ষ তারা, শুক্লপক্ষের মুক্ত আকাশে জ্যোৎস্না মধুর প্লাবন বহায় যে চাঁদ, অন্ধকারের বুক দীর্ণ করিয়া উদয় গগনের পূর্ব তোরণে ফুটিয়া ওঠে যে রঙীন ঊষার দৃপ্ত লালিমা, অমানিশার অবসানে দিগন্ত উদ্ভাসিত করে যে দীপ্ত সুর্য্য, ইহারা সকলেই লক্ষকন্ঠে বারংবার জানায় এই তওহীদেরই সজীব সত্যতা। বিশ্ব-প্রকৃতি, গ্রহলোক ও সৌরজগতের অটুট শৃংখলার মর্মকথা হইতেছে এই তাওহীদ। প্রভাতের মৃদু সমীরণে, সদ্য প্রস্ফুটিত কুসুমরাজির বর্ণে-গন্ধে, ভ্রমরের গুঞ্জুনে, পাখীর কাকলিতে, পত্রপল্লবের মর্ম ধ্বনিতে, মেঘমালার গুরু-গম্ভীর নাদে, বিদ্যুতের চমকে, ঝড়ের তান্ডবনৃত্যে, স্রোতের গতিবেগে, কল্লোলের কুলকুল গানে, শিশুদের কলহাস্যে ও রূঢ় কান্নায় রহিয়াছে তাওহীদের শাশ্বত প্রমাণ। তাওহীদ সর্বগ্রাসী তাওহীদ সর্বত্রই বিক্ষিপ্ত রহিয়াছে তাওহীদের জ্বলন্ত নিদর্শন। তাওহীদ তাই অনস্বীকার্য; তাওহীদ তাই অপ্রতিহত।
দৃষ্টিমান তাওহীদের জ্বলন্ত প্রমাণ দেখিয়া বিমুদ্ধ হইয়াছে। বিজ্ঞানী তাহার সন্ধান পাইয়া জ্ঞানের মশাল জালাইয়াছে। কবি তাহা অনুভব করিয়া মহাকাব্য রচনা করিয়াছে, শিল্পী তাহার রূপ দিতে অবাঞ্চিত প্রচেষ্ট চালাইয়াছে। তাওহীদ সকল শেণীর মানুষের অনাবিল দৃষ্টিতে, স্বচ্ছ হৃদয়ে, নির্ভুল বিচারের মানদন্ডে, সূক্ষ্ম বিশ্লেষণে, যুক্তিতে শাণিত কষ্টি পাথরে অতীব বলীষ্ঠ ভংগীতে স্বীকৃতি পাইয়াছে। তাওহীদ তাই সর্বজনগ্রাহ্য।
মানুষ, সমাজ ও রাষ্ট্র যতদিন এই তাওহীদকে স্বীকার করিয়াছে এবং উহারই বুনিয়াদে নিজকে সংগঠিত ও উহার দ্বারা নিজকে নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত করিয়াছে ততদিন তাহাদের কেন্দ্রে-কেন্দ্রে প্রতি দিকে ও বিভাগে অনাবিল শান্তি ও সমৃদ্ধির অমিয়ধারা প্রবাহিত হইয়াছে, ততদিন সর্বত্র বিরাজিত রহিয়াছে ক্রমবিকাশ, উৎকর্ষ ও অগ্রগতি। কিন্তু যখন উহাকে উপেক্ষা করা হইয়াছে, তখনই জীবনে সমাজে রাষ্ট্রে ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে শুরু হইয়াছে মহা ভাঙন, সর্বাত্মক বিপর্যয়। জীবনের গ্রন্থি ছিন্ন হইয়াছে; সুবিচার ও পরার্থপরতা, প্রেম ও সহানুভূতি, নৈতিকতা ও আর্দশবাদিতা, কর্তব্যবোধ ও দায়িত্বজ্ঞান, ন্যায় নিষ্ঠা ও পরার্থপরতা, পরকালের ভয় ও মহাশান্তির আতংক-সবকিছুরই অপমৃত্যু ঘটিয়াছে। মানুষ হারাইয়াছে তাহার মনুষ্যত্ব, হারাইয়াছে তাহার সমস্ত বিত্ত ও সম্পদ। তাই বর্তমানের মানুষ হইয়াছে সর্বহারা, সর্বশ্বান্ত।
মানুষ প্রধানতা : দুইটি জিনিসের সমন্বয়। একটি তাহার মনুষ্যত্ব আর অন্যটি পশুত্ব, পাশবিকতা। মনুষ্যত্বের প্রতিষ্ঠা তওহীদে; আর পাশবিকতার লীলাক্ষেত্র হইতেছে শিরক ও কুফরি। তওহীদের পশুত্ব থেকে মনুষ্যত্বের অধীন, দাসানুদাস ও হুকুম বরদার হইয়া। ইহাই মনুষ্যত্বের স্বাভাবিক আবস্থা। কিন্তু বর্তমানে পশুত্ব হইয়াছে শৃংখলমুক্ত, স্বাধীন ও স্বেচ্ছাচারী। আর মনুষ্যত্ব হইয়াছে পর্যদস্ত, পদদলিত। মানুষ হারাইয়াছে তাহর মহিমা, সকল বৈশিষ্ট্য। তাহার ভিতরকার পশুত্ব আগলমুক্ত হইয়াছে, বিষাক্ত করিয়া তুলিয়াছে সমস্ত পরিমন্ডল ও পরিবেশ। হিংস্র বানাইয়া দিয়াছে সমস্ত সমাজ ও রাষ্ট্রকে। ক্ষুধার্ত শার্দুলের ন্যায় হুংকার দিয়া জাগিয়া উঠিয়াছে তাহার সকল জিঘাংসুবৃত্তি। মানুষে মানুষে, শ্রেণীতে শ্রেণীতে, জাতিতে জাতিতে, রাষ্ট্রে রাষ্ট্রে তাইত এত হিংসা বিদ্বেষ; জ্বলিয়া উঠিয়াছে যুদ্ধের প্রলয়ংকর লেলিহান শিখা। স্বার্থের সংঘর্ষ, প্রভুত্বের লড়াই নিত্য তীব্রতর। এই অবস্থা যদি আরো কিছুদিন চলে, মানুষের আভ্যন্তরীণ পশুকে যদি বন্দী করা না যায় তবে সভ্যতার সুউচ্চপ্রসাদ চূর্ণ হইয়া যাইবে, ধ্বংস হইয়া যাইবে সমগ্র জনপদ পৃথিবী। মানুষরূপী এই পশুদের দেহটাও তখন রক্ষা পাইবে না।
তাই প্রয়োজন হইয়াছে তাওহীদের, আবশ্যক হইয়াছে পশুত্বকে বন্দী করার, মানবত্বকে জাগ্রত ও জয়ী করার; অপরিহার্য হইয়া পড়িয়াছে তাওহীদের পুন:প্রতিষ্ঠার। পশুত্বের আজ দমন করিতে হইবে, নির্মূল করিতে হইবে তাহার লেলিহান জিহ্বা, চূর্ণ করিতে হইবে এই বিষধর সর্পের দাঁতগুলি। আর তাওহীদ ছাড়া এ-কাজ সম্ভব নয়। তাই প্রয়োজন হইয়াছে তওহীদের। তাওহীদ তাই অপরিহার্য। চাই তাওহীদের পুন:প্রতিষ্ঠা।
তাওহীদকে হারাইয়া এযুগের মানুষ, সমাজ ও রাষ্ট্র মহাসংকটের সম্মুখীন। বর্তমান সময় সকল প্রকার দু:খ দুর্ভোগ, অশান্তি ও নির্যাতন, শোষণ ও বঞ্চনার মূলীভূত কারণ ইহাই। তাই, যদি মানুষকে রক্ষা করিতে হয়, আসন্ন ধ্বংসের হাত হইতে যদি বাঁচাইতে হয়, সমাজকে সকল প্রকার উচ্ছৃঙ্খলা-বিশৃংখলা, অবিচার ও অত্যাচার হইতে যদি গড়িয়া তুলিতে হয় মানুষের উপযোগী কোন সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থা তাহা হইলে তাওহীদের পুন:প্রতিষ্ঠা ব্যতীত উপায়ন্তর থাকিতে পারে না। তাই তাওহীদ বিশ্ব মানবতার সংরক্ষক।
তাওহীদী ব্যবস্থা ছাড়াও কি মানুষকে রক্ষা করা সম্ভব? ............কে তাহা করিবে? কিসের সাহায্য করিবে, করিবে কেমন করিয়া? পাশ্চাত্য গণতন্ত্র মানুষকে দিয়াছে চরম বঞ্চনার আঘাত। বলা হইয়াছিল: মানুষই হইবে মানুষের শাসক, রাষ্ট্র ও সরকার হইবে মানুষের কল্যাণকামী, একনিষ্ঠ সেবক হইয়াছে কি? হয় নাই। মানুষকে পারে নাই মানুষের দাসত্ব হইতে মুক্তি দিতে পারে নাই পৌঁছাইয়া দিতে বিপুল প্রাচুর্যপূর্ণ ঐশ্বর্য হইতে তাহার নায্য হিসসা। বরং সেখানে চলিয়াছৈ স্বেচ্ছাচারিতা, চলিয়াছে সংখ্যাগরিষ্ঠের একচেটিয়া শাসন-নিষ্পেষণ, চলিয়াছে ব্যক্তি মালিকানার অসীম অবাধ সুযোগে অপ্রতিরোধ্য শোষণ ও বঞ্চনা। একদিকে প্রাচুর্য ও বিলাস-বাসনের স্তুপ জমিয়াছে, অপর দিকে উহারই পাশাপাশি রচিত হইয়াছে অভাব দারিদ্রের রসাতল। এ-আঘাত চুরমার করিয়া দিয়াছে। এ আঘাত মানুষ কোন দিনই ভূলিতে পারে না-ভূলিতে পারিবে না।
ইহার পর আসিল সমূহবাদ-সমাজতন্ত্রবাদ। মুখে বিপ্লবের বাণী: ব্যক্তি মালিকানা হরণ করিতে হইবে: বিত্তসম্পত্তি, জমি ও কারখানা, উৎপাদনের যাবতীয় উপায়ের উপর কায়েম করিতে হইবে সামগ্রিক মালীকানা, রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব। বলা হইল, ইহাতেই শোষণ ও বঞ্চনার অবসান, ইহাতেই মানবতার মুক্তি। কিন্তু পরিমাণ কি হইয়াছে? ইহার পরিণতি হইয়াছে মানবতার পক্ষে সর্বাধিক মারাত্মক। মানুষ হারাইয়াছে তাহার ব্যক্তি-স্বাতন্ত্র, হারাইয়াছে তাহার স্বাভাবিক মানবিক আজাদী চিরকালের জন্য। মুক্তির আকাংখায় হইয়াছিল যে যাত্রার শুরু মুষ্টিমেয় কয়েকজন সর্বোচ্চ কর্মকর্তার চিরদাসত্বের নিগড়ে বন্দী হওয়াই হইয়াছে তাহার পরিণতি। মানুষ হইয়াছে নিষ্প্রাণ কাঁচামাল, আর উহার উপর চালাইয়া দেওয়া হইয়াছে সর্বনিষ্পেষণকারী যাঁতাকল।মানুষের মুক্তি সম্ভব হইল না, আকাশ কুসুম হইয়াই থাকিল তাহা চিরদিনের জন্য।
ইহার কারণ কি? কারণ একটি-ই রহিয়াছে ইহার মূলে এবং তাহা এই যে, তাওহীদ ভিত্তিক ব্যবস্থা ছাড়া আর কোনটিই মানুষের স্বভাব সম্মত নয়। একের পর এক যত ব্যবস্থাই মানুষের জন্য চিন্তা করা হইয়াছে, তাহার প্রত্যেকটিই প্রমাণিত হইয়াছে নিত্যন্ত অস্বভাবিক। অস্বাভাবিক ব্যবস্থা মানুষকে কোনদিনই একবিন্দু কল্যাণ দিতে সমর্থ নয়। তাই এ ব্যর্থতা। অত:পর আর নতূন কোন ব্যবস্থাও আসিবার নাই। বিশ্বমানবতা আদর্শ ও মতবাদের দিকদিয়া সম্পূর্ণ বন্ধ্যা হইয়া গিয়াছে, নি:শেষ হইয়া গিয়াছে উহার নতুন কোন আদর্শ দেওয়ার ক্ষমতা। অতএব তাওহীদী ব্যবস্থা ছাড়া মানবতার মুক্তি নাই। তাওহীদ তাই বিশ্ব-মানবতা একমাত্র আশ্রয়, তাওহীদ তাই মানুষের একমাত্র ভবিষ্যৎ। অতএব চাই তাওহীদের পুন: প্রতিষ্ঠা।
কিন্তু তাওহীদের পুন: প্রতিষ্ঠা কিরূপে সম্ভব? কিভাবে আর কোন পদ্ধতিতে কাজ করিলে পৃথিবীর বুকে তাওহীদকে পুন:প্রতিষ্ঠিত করা যাইতে পারে। বস্তুত: এই প্রশ্নই আজ প্রচন্ড, এই জিজ্ঞাসা-ই আজ জটিল হইয়া দেখা দিয়াছে তাওহীদ আদর্শবাদিদের সম্মুখে এবং ইহার সঠিক জওয়াব নির্ধারণ করিতে হইবে তাহাদেই।
তাওহীদ প্রতিষ্ঠার উপায় কি, এ প্রশ্ন লইয়া বেশী চিন্তা করার, বেশী মাথা ঘামাইবার প্রয়োজন করেনা। কেননা তাওহীদ প্রতিষ্ঠার একাজ দুনিয়ার আজ অভিনব কিছু নয়, অনৈতিহাসিকও নয়। মানব ইতিহাসের প্রথম দিন হইতেই ইহার প্রতিষ্ঠা আন্দোলন চলিয়াছে, দুনিয়ায় বারে বারে হইয়াছে ইহার প্রচার, ইহার প্রতিষ্ঠা। যুগে যুগে নবীগণ আগমণ করিয়াছেন তাওহীদের বিপ্লবী বাণী লইয়া তাওহীদ প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব ও মিশন লইয়া। তাঁহারা ইহার জন্য যে পন্থা অনুসরণ করিয়াছেন, মানিয়া চলিয়াছেন যে কর্মসূচী, প্রকৃতপক্ষে তাহাই হইতেছে তাওহীদ প্রতিষ্ঠার চিরন্তন কর্মনীতি, স্বাভাবিক পদ্ধতি। তাই ইহার জন্য আজিও সেই পন্থা-ই অনুসরণীয়। উহার ব্যতিক্রম হইলে তওহীদ প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয় কোন মতে। তাই তাওহীদ প্রতিষ্ঠার কাজ একান্তভাবে সম্পন্ন হইবে সেই চিরন্তন কর্মনীতিতে।
নবীগণ প্রথমে তাওহীদের বিপ্লবী বাণী প্রচার করিয়াছেন, আহবান জানায়াইছেন সে বাণী মনে-প্রাণে কবুল কারা জন্য, জীবনে মানিয়া চলার জন্য। যাহারা তাহা কবুল করিয়াছে, তাহাদের লইয়া গঠন করিয়াছেন এক বিপ্লবী জন-সংস্থা। উহার অন্তর্ভূক্ত মানুষদের মন-মগজ ও চরিত্রকে তাঁহারা সংশোধন করিয়াছেন তাওহীদের আলোকে। যাহা কিছু উহার বিপরীত দেখিয়াছেন তাহা দূরীভূত করিয়াছেন জ্ঞান ও চেতনার ভিত্তিতে, করিয়াছেন ক্রমিক নিয়মে, বিকাশমান নীতির ক্রম-অনুসরণে। আজিও সেই নিয়মই অনুসরণীয়: ব্যতিক্রম নয়।
তাওহীদ প্রতিষ্ঠার এ প্রচেষ্টার প্রথম ওএকমাত্র ভিত্তি হইবে তাওহীদের বিপ্লবী কালেমা লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ। ইহার ভিত্তিতে ব্যক্তি গঠন করিতে হইবে, গঠন করিতে হইবে ব্যক্তির মন-মগজ, চরিত্র ও জীবন। উহারই উপর ঢালিয়া রচনা করিতে হইবে তাওহীদের প্রতিমূর্তি, তাওহীদের বাস্তব প্রতীক। তাই তাওহীদ প্রতিষ্ঠার জন্য অপরিহার্য এক তাওহীদী জামায়াত, তাওহীদের বাস্তব প্রতিষ্ঠাকামী এক বিপ্লবী জনসংস্থা।
তাওহীদী জামায়ের ভিত্তি যেমন তাওহীদ, উহার কর্মসূচীও হইবে তাওহীদের প্রচার। তাওহীদের আলোকে ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রকে পুনগর্ঠিত সমুদ্ভাবিত করাই হইবে উহার একমাত্র উদ্দেশ্যে, চূড়ান্ত লক্ষ্য।
তাওহীদের প্রতীক এই জামায়াত অংকুরিত হইবে তাওহিদময় জমীনের বুকে। জমীন তাহার সর্বশক্তি দিয়া, আকাশ-বাতাস তথা সমগ্র প্রকৃতি তাহার সামগ্রিক উপাদান দিয়া ক্রমে শক্তিশালী ও জোরদার করিয়া তুলিবে তাওহীদের এই অংকুরকে। তাওহীদের এ অংকুর ক্রমে বর্ধিত হইয়া রূপায়িত হইবে এক বৃক্ষে। বৃক্ষ উহার কাণ্ড ও শিকড় মজবুত করিয়া গ্রথিত করিবে সমাজের সরজমিনে। বাহির হইবে উহার শাখা ও প্রশাখা, পত্র ও পল্লব। এই পূর্ণাঙ্গ তাওহীদী বৃক্ষই বিশ্ব-মানবকে দিতে পারিবে তাওহীদী জীবনের অমৃত। তখনই মানব সমাজ সমাজ হইবে তাওহীদময়, তাওহীদী ভাবধারায় সঞ্জীবিত।
তাওহীদের এ বিপ্লবী আন্দোলনে কাঁপিয়া উঠিবে শিরক ও বিদয়াতের গগচুম্বী প্রসাদের-ভিত্তি, জ্বলিয়া ছারখার হইয়া যাইবে শীরকী আকীদা ও আমলের সব স্তুপীকৃত আবর্জনা ও জঞ্জাল। ভূমণ্ডল হইবে পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন। মানবতা পাইবে চিরমুক্তি নফসের দাসত্ব হইতে, মানবতার অবমাননা হইতে। তখনই মানুষের প্রকৃত শান্তি ও সমৃদ্ধি, মনুষ্যত্বের সার্থক বিকাশ, চূড়ান্ত বিজয়। মানুষের এই জীবন হইবে সার্থক সুন্দর ও স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ জীবন।
তাই তাওহীদ প্রতিষ্ঠার জন্য চাই তাওহীদের বিপ্লবী আন্দোলন আর তাওহীদ প্রতিষ্ঠার জন্য চাই এক তাওহীদী জনসংস্থা।
وَلْتَكُنْ مِّنْكُمْ اُمَّّةٌ يَّدْعُوْنَ اِلَىْ الْخَيْرِ وَيَامُرُوْنَ بِالْمَعْرُوْفِ وَيَنْهُوْنَ عَنْ الْمُنْكَرِ وُاُلئكَ هُمْ الْمُفْلِحُوْنَ ـ (ال عمران)
তোমাদের মধ্যে অবশ্যই ইহবে এমন এক উন্নত, যাহারা কল্যাণের দাওয়াত দিবে, ভাল কাজ কাজের নির্দেশ দিবে এবং সব মন্দ কাজ হইতে মানুষকে বিরত রাখিবে। প্রকৃতপক্ষে ইহারাই সফলকাম।
0 comments: