কবিতার শক্তি সাহস জোগায়
মাঝে মাঝে হৃদয় যুদ্ধের জন্য হাহাকার করে ওঠে মনে হয় রক্তই সমাধান, বারুদেই অন্তিম তৃপ্তি; আমি তখন স্বপ্নের ভেতর জেহাদ, জেহাদ বলে জেগে উঠি
- আল মাহমুদ
কবি আল মাহমুদের মতো আমিও তাই বিশ্বাস করি। বিশ্বাস করি বিপ্লবেই রয়েছে মানবতার মুক্তি। আর তাই মুহাম্মাদ নিয়ে এসেছিলেন মানবতার মুক্তির বার্তা আর মানবতার মুক্তির জন্য তাকে করতে হয়েছে জিহাদ, যুদ্ধ ও বিপ্লব।
সময়টা ২০০০ সালের। নতুন শতাব্দি কেবল মাত্র শুরু হয়েছে। পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে টেকনলজি আর বিজ্ঞানের উৎকর্ষতায়। আর আমরা চলছি প্রস্তরযুগের দিকে। সারা বিশ্বে ইসলাম জেগে উঠেছে আবার তার পূর্বের ধারালো যুক্তি আর মানবতার মুক্তির জন্য। মানুষ যখন দিশেহারা হয়ে মুক্তি আর স্বাধীনতার জন্য পথ খুঁজছে তখনই ইসলাম তার শতাব্দী সেরা জ্ঞানী দের হাত ধরে আবারো পর্দার সামনে। বিশ্বব্যাপি ইসলামের গনজাগরন শুরু হয়েছে। সে গনজাগরন বাংলাদেশেও লেগেছে বৈকি। তা না হলে যে দেশটায় নাস্তিক আর বামদের পদচরানায় মুখর ছিলো ষাটের/সত্তুরের দশক সেখান থেকে বংলাদেশের জনগন ফিরে পেলো আস্থার জায়গা ইসলামের সুশীতল ছাউনি। ধর্ম ভীরু বাঙালী বুঝতে ও জানতে পারলো ইসলাম কেবল ঘরে বসে কুরআন তিলাওয়াত আর পাঁচবার মসজিদে যাওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। তারা বুঝলো ইসলাম মানে জিবন ব্যবস্থা। ইসলাম মানে দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত চলাচলের উপায়। আর এই জিবন ব্যাবস্থাকে কায়েম করে কল্যান রাস্ট্র তৈরি করে দেশ ও সমাজের সকল ধর্ম ও বর্নের মানুষকে সুখী করা যায় এবং একজন মুসলমানের তা করার জন্য সর্বদা সচেষ্ট থাকতে হবে।
ইসলামের গনজাগরন
বাংলাদেশে ইসলামের এই গন জাগরনের মূল শক্তি হিসেবে কাজ করেছে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্র সমাজের মধ্যে ইসলামী ছাত্র শিবির। কিন্তু অপশক্তি কখনোই বসে থাকেনি। অশুভ শক্তি সব সময় ইসলামের এই অনিবার্য বিজয়কে ঠেকাতে ছিলো তৎপর। তাই তারা মোড়ে মোড়ে, অলিতে গলিতে ফাঁদ পেতে বসে থাকতো। আর বাংলাদেশের মানুষকে সেইসব ফাঁদে ফেলে ইসলাম ও চারিত্রিক গুনাবলী সম্পন্ন মানুষ হওয়া থকে দূরে সরে রাখতে চেষ্টা করতো। তারা কখনো কখনো সফলও হয়েছে।
ইসলামী শক্তির উত্থান রুখতে অশুভ শক্তির তৎপরতা
আজ যখন জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের প্রায় বছর দেড়েক ধরে বিনা বিচারে কারাগারের অন্ধ প্রকোষ্টে নির্যাতন করা হচ্ছে। জামায়াত কর্মীদের বুকের ভেতর কি প্রচন্ড ব্যাথা তা বুঝতে কষ্ট হয়না কারোরই। আজ যখন মাওলানা সাঈদির মতো মানুষকে নির্যাতন করে তার বিরোদ্ধে ৩৬০০০ পৃষ্টার অপরাধ বৃত্তান্ত প্রকাশ করে দেশের টাকা অপচয় করা হয় তখন বুঝতে কোন অসুবিধা হয়না যে দেশটা যে মগের মুল্লুক হয়ে গেছে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ সরকারের এমন বিষেদাগার একবিন্দুও বিশ্বাষ করেনি। মাওলানা সাঈদী যে মাপের আলেম ও আল্লার খালিছ বান্ধা, তার দ্বারা যে এমন অপরাধ সংগঠিত হয়নি তাও সবাই জানে। সবাই এটাও বিশ্বাষ করে যে কেবল মাত্র রাজনৈতিক ভাবে কোনঠাসা করার জন্য জমায়াত নেতার এমনভাবে কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে রাখা হয়েছে। সাংবাদিক মাহমুদুর রহমানের জেল জিবনের কাহীনী পড়লে কিছুটা অনুধাবন করা যাবে মাওলানা সাঈদীর সাথে কি রূপ অমানবিক আচরন করা হচ্ছে।
ইন্নাল্লাহা মাআসসোয়াবিরিন
জামায়াত কর্মীরা বুকের কষ্ট বুকে চাপায়ে এতোদিন ধৈর্য ধরে আসছিলো। কারন তারা বিশ্বাষ করে নিশ্চয় আল্লাহ সবর অবলম্বনকারীদের সাহায্য করেন। সবরের ফলাফল নিশ্চয় পাওয়া যাবে। দেড়টি বছর ধৈর্য ধরেছে তারা আর কতো। শেষে একদিন জেগে উঠলো, জেগে উঠলো শরীরের সমস্ত শক্তি সঞ্চয় করে। ধৈর্যের বাঁধ ভেঙ্গে উত্তাল বঙ্গোপসাগরের ফেনিল সে জোয়ার সমস্ত শক্তি নিয়ে আছড়ে পড়লো ঢাকা শহরের রাজ পথে। প্রমত্ত এ জনজোয়ার দেখে স্বৈরাচার আজ অতংকিত হয়ে প্রলাপ বকছে। আর জালিমের সহচরেরা বর্ননা করছে আক্রমন। এ যেনো গুয়েবলসের প্রপাগ্যান্ডাকেও হার মানচ্ছে। কেউ কেউ বলছে তান্ডব ! কি বিচিত্র এদেশ যখন পার্শ্ববর্তী রাস্ট্র নির্বিচারে সীমান্তে আমার দেশের মানুষকে ব্রাশফায়ার করে হত্যা করে তখন কিন্তু এটা তান্ডব কিংবা আক্রমন হয়না। যখন রাস্তায় কিশোরী তরুনীকে উত্যক্ত করে তাকে ফাসীতে ঝুলতে বাধ্য করা হয় তখন কিন্তু তান্ডব হয়না। যখন সরকারী দলের ছেলেরা ও মেয়ে নিজেদের মধয়ে মারামারি করে ছাদের উপর থেকে তারই আরেক সহচর কিংবা বন্ধুদের হত্যার উদ্দেশ্যে ফেলে দেয় তখন কিন্তু তান্ডব হয়না। আর অত্যাচারিত, নির্যাতিত মজলুমান যখন জেগে উঠে তখনই এটা তান্ডব হয়। না হয় হলো একটা তান্ডব তবে আশার কথা হচ্ছে জাময়াতে ইসলামী নারকীয় তান্ডব চালায়নি, তাদের মতো যারা রাজপথে নৌকার সংগি লগি আর বৈঠা নিয়ে ঘোষনা দিয়ে হত্যা করা হয়েছে অনেক সজিব সতেজ প্রানকে। এমন নারকীয় তান্ডবের মূল হোতারা যখন বলে জামায়াত তান্ডব চালিয়েছে তখন মনে হয় শয়তানও হাসে দোজখে বসে যে তার চেয়েও বড় মিথ্যাবাদী ও ষড়যন্ত্রকারী মানুষ সমাজের মধ্যেও আছে এটা ভেবে।
বিজয় অনিবার্য
আজ জামায়াত-শিবির দেখিয়ে দিয়েছে জনগনকে বিচ্ছিন্ণ রেখে কোন ষড়যন্ত্রই সফল হবে না। তাদেরকে ভেঙ্গে দেওয়ার যে ভারতীয় পরিক্লনা তা রুখতে জামায়াত-শিবিরের লক্ষ তরুন প্রস্তুত। তাই আজকের এই বিদ্রোহ দেখে আশাবাদী হতেই হবে জনগনকে। এমন একটা দিনের প্রতিক্ষায় মজলুম মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলো এতিদিন ধরে। নাভিশ্বাস চরমে ছিলো। নাগিনীর ছোবল আর বিষাক্ত নিশ্বাসে দম নিতে পারছিলোনা নির্যাতিত মানুষ। তাই মনে পড়ে জামায়াত যেখানেই জেগে উঠেছে সেখানেই বিজয় সুনিশ্চিত হয়েছে।
এক জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়
বলছিলাম ২০০০ সালের কথা। ইসলামের মহান সৈনিক বাংলাদেশের মানুষের হ্রদয়ের স্পন্দন শাহজালালের পূন্য ভূমি সিলেটে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে নাস্তিককূল শিরোমনি জাহানারা ইমামের নামে একটি হলের নাম করন করা হয়েছিলো। সিলেটের এক কোটি মানুষ সেদিন প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছিলো। বেপোরোয়া সরকার সেদিন বদ্ধ পরিকর ছিলো পূন্যভূমি সিলেটকে কালিমালিপ্ত করতে আর পঙ্কিলতায় ভরিয়ে দিয়ে জাহানারা ইমামের নামে হলের নাম প্রতিষ্ঠা করে।কিন্তু সিলেটবাসী সংঘবদ্ধ হয়েছিলো যে বিশ্বিদ্যালয়ের নাম আল্লার অলি শাহজালালের নামে সে বিশ্ববিদ্যালয়ে কখনোই খোদাদ্রোহী নাস্তিকের নামে কোন হলের নাম করন হতে পারবেনা। দীর্ঘ সংগ্রামের ফসল হিসেবে শহীদ বেলালের রক্তের সিঁড়ি দিয়ে সেদিন খোদা দ্রোহীদের এ অশুভ প্রয়াসকে ব্যার্থতায় পর্যবসিত করা হয়েছিলো। আর আল্লাহ দ্রোহী হাসিনা সরকারের পতন ও শুরু হয়েছিলো সেখান থেকেই। যিনি ছিলেন এ আন্দোলনের নায়ক আর অগ্রপথিক সেই ডা. শফিকুর রহমান আজ জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারী জেনারেল। তার হাত ধরেই সিলেটের সকল দল ও মতের মানুষ সকল আলেম, রাজনীতিবিদ এমনকি আওয়ামীলীগের নেতারাও ঐক্যমতে পৌঁছেছিলেন। এবং অবশেষে তৎকালীন প্রাধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডা. শফিকের সাথে বৈঠক করে নাস্তিক জাহানারা ইমামের নামে হলের নামকরন করা থেকে সরে আসার ঘোষনা দিয়েছিলেন। সে বিজয় আর সে বিজয়ের পিছনের আন্দোলনের ইতিহাস আজো ইসলামী ও জাতীয়তাবাদী শক্তিকে প্রেরনা যোগায়। আজো ছাত্রলীগ ছাড়া সিলেটের যেকোন যুবসমাজের কাছে তার জীবনে যুদ্ধের শ্রেষ্ঠ সময় জিজ্ঞেস করলে উত্তর আসে বিশ্ববিদ্যালয় নামকরন বিরোধী আন্দোলনের কথা। আজ সেই নেতাকে সেক্রেটারী করায় বিশ্বাস করি ডা. শফিকের প্রজ্ঞা আর মেধায় জামায়াত আবারো বিশ্ববিদয়ালয়ের নামকরন বিরোধী আন্দোলনের মতো এক বেগবান আন্দোলনের জন্ম দিবে। আর আল্লাহ সহায় হলে সফলতা আসবেই।
মুক্তির সূর্যটা আনবোই
আজ জামায়াতের রুদ্ররূপ দেখে বুকে আশা জাগে ইসলামী আন্দোলন এখনো নড়বড়ে হয়ে যায়নি, ইসলামের বাতিকে ফুৎকারে নিভিয়ে দেবার শক্তি কোনদিনও ছিলোনা এখনো নেই। সকল বাঁধার পাহাড় পেরিয়ে, সব জুলুমের অবসান ঘটিয়ে মুক্তির সূর্যটা ছিনিয়ে আনবেই বিপ্লবী জনতা। ষড়যন্ত্রের সব বেড়াজাল ছিন্ন করে ইসলামের বিজয় অবশ্যই অনিবার্য।
মাঝে মাঝে হৃদয় যুদ্ধের জন্য হাহাকার করে ওঠে মনে হয় রক্তই সমাধান, বারুদেই অন্তিম তৃপ্তি; আমি তখন স্বপ্নের ভেতর জেহাদ, জেহাদ বলে জেগে উঠি
- আল মাহমুদ
কবি আল মাহমুদের মতো আমিও তাই বিশ্বাস করি। বিশ্বাস করি বিপ্লবেই রয়েছে মানবতার মুক্তি। আর তাই মুহাম্মাদ নিয়ে এসেছিলেন মানবতার মুক্তির বার্তা আর মানবতার মুক্তির জন্য তাকে করতে হয়েছে জিহাদ, যুদ্ধ ও বিপ্লব।
সময়টা ২০০০ সালের। নতুন শতাব্দি কেবল মাত্র শুরু হয়েছে। পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে টেকনলজি আর বিজ্ঞানের উৎকর্ষতায়। আর আমরা চলছি প্রস্তরযুগের দিকে। সারা বিশ্বে ইসলাম জেগে উঠেছে আবার তার পূর্বের ধারালো যুক্তি আর মানবতার মুক্তির জন্য। মানুষ যখন দিশেহারা হয়ে মুক্তি আর স্বাধীনতার জন্য পথ খুঁজছে তখনই ইসলাম তার শতাব্দী সেরা জ্ঞানী দের হাত ধরে আবারো পর্দার সামনে। বিশ্বব্যাপি ইসলামের গনজাগরন শুরু হয়েছে। সে গনজাগরন বাংলাদেশেও লেগেছে বৈকি। তা না হলে যে দেশটায় নাস্তিক আর বামদের পদচরানায় মুখর ছিলো ষাটের/সত্তুরের দশক সেখান থেকে বংলাদেশের জনগন ফিরে পেলো আস্থার জায়গা ইসলামের সুশীতল ছাউনি। ধর্ম ভীরু বাঙালী বুঝতে ও জানতে পারলো ইসলাম কেবল ঘরে বসে কুরআন তিলাওয়াত আর পাঁচবার মসজিদে যাওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। তারা বুঝলো ইসলাম মানে জিবন ব্যবস্থা। ইসলাম মানে দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত চলাচলের উপায়। আর এই জিবন ব্যাবস্থাকে কায়েম করে কল্যান রাস্ট্র তৈরি করে দেশ ও সমাজের সকল ধর্ম ও বর্নের মানুষকে সুখী করা যায় এবং একজন মুসলমানের তা করার জন্য সর্বদা সচেষ্ট থাকতে হবে।
ইসলামের গনজাগরন
বাংলাদেশে ইসলামের এই গন জাগরনের মূল শক্তি হিসেবে কাজ করেছে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্র সমাজের মধ্যে ইসলামী ছাত্র শিবির। কিন্তু অপশক্তি কখনোই বসে থাকেনি। অশুভ শক্তি সব সময় ইসলামের এই অনিবার্য বিজয়কে ঠেকাতে ছিলো তৎপর। তাই তারা মোড়ে মোড়ে, অলিতে গলিতে ফাঁদ পেতে বসে থাকতো। আর বাংলাদেশের মানুষকে সেইসব ফাঁদে ফেলে ইসলাম ও চারিত্রিক গুনাবলী সম্পন্ন মানুষ হওয়া থকে দূরে সরে রাখতে চেষ্টা করতো। তারা কখনো কখনো সফলও হয়েছে।
ইসলামী শক্তির উত্থান রুখতে অশুভ শক্তির তৎপরতা
আজ যখন জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের প্রায় বছর দেড়েক ধরে বিনা বিচারে কারাগারের অন্ধ প্রকোষ্টে নির্যাতন করা হচ্ছে। জামায়াত কর্মীদের বুকের ভেতর কি প্রচন্ড ব্যাথা তা বুঝতে কষ্ট হয়না কারোরই। আজ যখন মাওলানা সাঈদির মতো মানুষকে নির্যাতন করে তার বিরোদ্ধে ৩৬০০০ পৃষ্টার অপরাধ বৃত্তান্ত প্রকাশ করে দেশের টাকা অপচয় করা হয় তখন বুঝতে কোন অসুবিধা হয়না যে দেশটা যে মগের মুল্লুক হয়ে গেছে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ সরকারের এমন বিষেদাগার একবিন্দুও বিশ্বাষ করেনি। মাওলানা সাঈদী যে মাপের আলেম ও আল্লার খালিছ বান্ধা, তার দ্বারা যে এমন অপরাধ সংগঠিত হয়নি তাও সবাই জানে। সবাই এটাও বিশ্বাষ করে যে কেবল মাত্র রাজনৈতিক ভাবে কোনঠাসা করার জন্য জমায়াত নেতার এমনভাবে কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে রাখা হয়েছে। সাংবাদিক মাহমুদুর রহমানের জেল জিবনের কাহীনী পড়লে কিছুটা অনুধাবন করা যাবে মাওলানা সাঈদীর সাথে কি রূপ অমানবিক আচরন করা হচ্ছে।
ইন্নাল্লাহা মাআসসোয়াবিরিন
জামায়াত কর্মীরা বুকের কষ্ট বুকে চাপায়ে এতোদিন ধৈর্য ধরে আসছিলো। কারন তারা বিশ্বাষ করে নিশ্চয় আল্লাহ সবর অবলম্বনকারীদের সাহায্য করেন। সবরের ফলাফল নিশ্চয় পাওয়া যাবে। দেড়টি বছর ধৈর্য ধরেছে তারা আর কতো। শেষে একদিন জেগে উঠলো, জেগে উঠলো শরীরের সমস্ত শক্তি সঞ্চয় করে। ধৈর্যের বাঁধ ভেঙ্গে উত্তাল বঙ্গোপসাগরের ফেনিল সে জোয়ার সমস্ত শক্তি নিয়ে আছড়ে পড়লো ঢাকা শহরের রাজ পথে। প্রমত্ত এ জনজোয়ার দেখে স্বৈরাচার আজ অতংকিত হয়ে প্রলাপ বকছে। আর জালিমের সহচরেরা বর্ননা করছে আক্রমন। এ যেনো গুয়েবলসের প্রপাগ্যান্ডাকেও হার মানচ্ছে। কেউ কেউ বলছে তান্ডব ! কি বিচিত্র এদেশ যখন পার্শ্ববর্তী রাস্ট্র নির্বিচারে সীমান্তে আমার দেশের মানুষকে ব্রাশফায়ার করে হত্যা করে তখন কিন্তু এটা তান্ডব কিংবা আক্রমন হয়না। যখন রাস্তায় কিশোরী তরুনীকে উত্যক্ত করে তাকে ফাসীতে ঝুলতে বাধ্য করা হয় তখন কিন্তু তান্ডব হয়না। যখন সরকারী দলের ছেলেরা ও মেয়ে নিজেদের মধয়ে মারামারি করে ছাদের উপর থেকে তারই আরেক সহচর কিংবা বন্ধুদের হত্যার উদ্দেশ্যে ফেলে দেয় তখন কিন্তু তান্ডব হয়না। আর অত্যাচারিত, নির্যাতিত মজলুমান যখন জেগে উঠে তখনই এটা তান্ডব হয়। না হয় হলো একটা তান্ডব তবে আশার কথা হচ্ছে জাময়াতে ইসলামী নারকীয় তান্ডব চালায়নি, তাদের মতো যারা রাজপথে নৌকার সংগি লগি আর বৈঠা নিয়ে ঘোষনা দিয়ে হত্যা করা হয়েছে অনেক সজিব সতেজ প্রানকে। এমন নারকীয় তান্ডবের মূল হোতারা যখন বলে জামায়াত তান্ডব চালিয়েছে তখন মনে হয় শয়তানও হাসে দোজখে বসে যে তার চেয়েও বড় মিথ্যাবাদী ও ষড়যন্ত্রকারী মানুষ সমাজের মধ্যেও আছে এটা ভেবে।
বিজয় অনিবার্য
আজ জামায়াত-শিবির দেখিয়ে দিয়েছে জনগনকে বিচ্ছিন্ণ রেখে কোন ষড়যন্ত্রই সফল হবে না। তাদেরকে ভেঙ্গে দেওয়ার যে ভারতীয় পরিক্লনা তা রুখতে জামায়াত-শিবিরের লক্ষ তরুন প্রস্তুত। তাই আজকের এই বিদ্রোহ দেখে আশাবাদী হতেই হবে জনগনকে। এমন একটা দিনের প্রতিক্ষায় মজলুম মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলো এতিদিন ধরে। নাভিশ্বাস চরমে ছিলো। নাগিনীর ছোবল আর বিষাক্ত নিশ্বাসে দম নিতে পারছিলোনা নির্যাতিত মানুষ। তাই মনে পড়ে জামায়াত যেখানেই জেগে উঠেছে সেখানেই বিজয় সুনিশ্চিত হয়েছে।
এক জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়
বলছিলাম ২০০০ সালের কথা। ইসলামের মহান সৈনিক বাংলাদেশের মানুষের হ্রদয়ের স্পন্দন শাহজালালের পূন্য ভূমি সিলেটে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে নাস্তিককূল শিরোমনি জাহানারা ইমামের নামে একটি হলের নাম করন করা হয়েছিলো। সিলেটের এক কোটি মানুষ সেদিন প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছিলো। বেপোরোয়া সরকার সেদিন বদ্ধ পরিকর ছিলো পূন্যভূমি সিলেটকে কালিমালিপ্ত করতে আর পঙ্কিলতায় ভরিয়ে দিয়ে জাহানারা ইমামের নামে হলের নাম প্রতিষ্ঠা করে।কিন্তু সিলেটবাসী সংঘবদ্ধ হয়েছিলো যে বিশ্বিদ্যালয়ের নাম আল্লার অলি শাহজালালের নামে সে বিশ্ববিদ্যালয়ে কখনোই খোদাদ্রোহী নাস্তিকের নামে কোন হলের নাম করন হতে পারবেনা। দীর্ঘ সংগ্রামের ফসল হিসেবে শহীদ বেলালের রক্তের সিঁড়ি দিয়ে সেদিন খোদা দ্রোহীদের এ অশুভ প্রয়াসকে ব্যার্থতায় পর্যবসিত করা হয়েছিলো। আর আল্লাহ দ্রোহী হাসিনা সরকারের পতন ও শুরু হয়েছিলো সেখান থেকেই। যিনি ছিলেন এ আন্দোলনের নায়ক আর অগ্রপথিক সেই ডা. শফিকুর রহমান আজ জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারী জেনারেল। তার হাত ধরেই সিলেটের সকল দল ও মতের মানুষ সকল আলেম, রাজনীতিবিদ এমনকি আওয়ামীলীগের নেতারাও ঐক্যমতে পৌঁছেছিলেন। এবং অবশেষে তৎকালীন প্রাধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডা. শফিকের সাথে বৈঠক করে নাস্তিক জাহানারা ইমামের নামে হলের নামকরন করা থেকে সরে আসার ঘোষনা দিয়েছিলেন। সে বিজয় আর সে বিজয়ের পিছনের আন্দোলনের ইতিহাস আজো ইসলামী ও জাতীয়তাবাদী শক্তিকে প্রেরনা যোগায়। আজো ছাত্রলীগ ছাড়া সিলেটের যেকোন যুবসমাজের কাছে তার জীবনে যুদ্ধের শ্রেষ্ঠ সময় জিজ্ঞেস করলে উত্তর আসে বিশ্ববিদ্যালয় নামকরন বিরোধী আন্দোলনের কথা। আজ সেই নেতাকে সেক্রেটারী করায় বিশ্বাস করি ডা. শফিকের প্রজ্ঞা আর মেধায় জামায়াত আবারো বিশ্ববিদয়ালয়ের নামকরন বিরোধী আন্দোলনের মতো এক বেগবান আন্দোলনের জন্ম দিবে। আর আল্লাহ সহায় হলে সফলতা আসবেই।
মুক্তির সূর্যটা আনবোই
আজ জামায়াতের রুদ্ররূপ দেখে বুকে আশা জাগে ইসলামী আন্দোলন এখনো নড়বড়ে হয়ে যায়নি, ইসলামের বাতিকে ফুৎকারে নিভিয়ে দেবার শক্তি কোনদিনও ছিলোনা এখনো নেই। সকল বাঁধার পাহাড় পেরিয়ে, সব জুলুমের অবসান ঘটিয়ে মুক্তির সূর্যটা ছিনিয়ে আনবেই বিপ্লবী জনতা। ষড়যন্ত্রের সব বেড়াজাল ছিন্ন করে ইসলামের বিজয় অবশ্যই অনিবার্য।
লেখক : ব্লগার উপপাদ্য
0 comments: