৫ই মে ২০১৩ শাপলা চত্বরের ভয়ংকর অভিজ্ঞতা

পুলিশের রায়ট কার আসছে দেখে সবাই দৌড়ে শাখা রোডে ঢুকে যাচ্ছিল। আমি মেইন রোডের ফুটপাতে ৪ ফিট উচু একটি বিদ্যুৎ নাকি টেলিফোনের বক্সের আড়ালে বসে পড়লাম।

রায়ট কারের উপরে মাথা বের করে থাকা পুলিশটি গুলি তাক করে সতর্ক অবস্থায় এদিক ওদিক তাকাচ্ছিল। আমি খুব জড়সড় হয়ে বসেছিলাম কেননা বক্সটি চওড়ায় বেশি না। যে কোনভাবে আমাকে দেখলেই গুলি চালাবে। ভয় লাগছিল কারণ আমার আশে পাশে একজনও অবশিষ্ট নেই। আমি উকি দিয়ে দেখছিলাম।

যখন ফকিরাপুল পানির ট্যাঙ্কের মোড় অতিক্রম করছিল তখন এক হেফাজত কর্মী সরে যেতে দেরি করে ফেললো। সে দৌড়ে সরে যাচ্ছিল কিন্তু রায়ট কারের উপর থেকে নিষ্ঠুর পাষাণ হৃদয়ের পুলিশটি গুলি ছুড়তেই সোজা কলাগাছের মত মাটিতে লুটিয়ে পড়ল।


এই প্রথম চোখের সামনে সরাসরি গুলিবিদ্ধ হতে দেখলাম।

কি দরকার ছিল গুলি করার? সেতো হামলা করতে আসছিল না। সেতো উল্টো দিকে দৌড়ে সরে যাচ্ছিল।

আমি দৌড়ে গেলাম তার কাছে। প্রথমে হাতের কাছে রক্ত দেখে নির্ভয় দিয়ে বললাম কিছু হবেনা। হাতে লেগেছেতো।

সে মৃদু কন্ঠে বলল পেটে লাগছে। আমি পাঞ্জাবি উল্টিয়ে আঘাত বুঝতে গিয়ে দেখি নাহ! রাইফেলের গুলি পেট গোল ছিদ্র করে ঢুকে গেছে। রক্ত গড়িয়ে পড়ছে। ধরাধরি করে ভ্যানে তুলে দিলাম।

মনের মধ্যে এক প্রচন্ড ক্ষোভের আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছিল।

জানিনা ছেলেটি বেঁচে আছে নাকি অনন্ত পথের যাত্রী হয়ে চলে গেছে। যে পথে পৃথিবীর সকলকেই যেতে হয়। দুদিন আগে আর পরে।

কারও জন্য এই প্রস্থান অত্যন্ত সুখকর আর কারও জন্য এক চরম যন্ত্রনাদায়ক জীবনের শুরু। যেই জীবনের আর কোন শেষ নেই।

হে আল্লাহ!! যেতেই যখন হবে এইরকম সৌভাগ্যের এবং সম্মানের সহিত তোমার কাছে তুলে নিও।

( ৫ই মে ২০১৩ শাপলা চত্বরের ভয়ংকর অভিজ্ঞতা থেকে

0 comments:

Comment Please

মন্তব্য..

প্রিয়বই.কম → (19)123456 -► পরের পাতা
সবিস্তার সূচীপত্র
টেম্পলেট কাষ্টমাইজেশন - তরঙ্গ ইসলাম | তরঙ্গ ইসলাম