ভূমিকা
ক্রীড়া উন্নয়ন
০১. বিনোদনের ব্যবস্থা করা হবে। স্টেডিয়াম, খেলার মাঠ, পার্ক, শিশু পার্ক এবং সাঁতার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন, সংস্কার, আধুনিকায়ন ও উন্নয়নের ব্যবস্থা করা হবে।
০২. আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের লক্ষ্যে সুষ্ঠু পরিকল্পনা, প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও দক্ষ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা হবে।
০৩. দেশে ক্রিকেট, ফুটবল, সাঁতার, শুটিং, হকিসহ বিভিন্ন খেলাধুলা বিকাশের জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মুক্তিযোদ্ধাদের অধিকার
০২. পঙ্গু ও অসুস্থ মুক্তিযোদ্ধাদের সুচিকিৎসার বন্দোবস্ত করা হবে।
০৩. মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়কে আরও শক্তিশালী করা হবে।
০৪. মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতার পরিমাণ বৃদ্ধি করা হবে এবং সন্তানদের জন্য উপবৃত্তি চালু করা হবে।
০৫. মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণট্রাষ্টকে কার্যকরী করা হবে।
০৬. প্রতি বছর হজ্ব ডেলিগেশনে মুক্তিযোদ্ধাদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
নারী ও শিশু অধিকার
০১. নারীর যথার্থ মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তাদের প্রতিভা ও যোগ্যতানুযায়ী কর্ম-সংস্থানের ব্যবস্থা, সর্বত্র নারী-নির্যাতন প্রতিরোধ ও নারীর সার্বিক অধিকার সংরক্ষণে অসহায় বিধবাসহ দুস্থ ও আশ্রয়হীন মহিলাদের পুনর্বাসনের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
০২. পতিতাবৃত্তি উচ্ছেদের লক্ষ্যে সংশোধন ও সামাজিক পুনর্বাসন কার্যক্রম সম্প্রসারণ করা হবে।
০৩. শিশু অধিকার রক্ষায় জাতিসংঘের ঘোষণানুযায়ী \'\'সবার আগে শিশু” শ্লোগানকে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শিশুশ্রম বন্ধ, পথ শিশুদের পুনর্বাসনসহ যুগোপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
০৪. এসিড নিক্ষেপ, ঘৃণ্য যৌতুক প্রথাসহ সকল ধরনের নারী ও শিশু নির্যাতন কঠোর হস্তে দমন করা হবে।
অমুসলিমদের অধিকার
০১. নাগরিক অধিকারের ক্ষেত্রে জাতি-ধর্ম-গোত্র নির্বিশেষে সকলের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হবে ।
০২. দেশের অমুসলিম নাগরিকদের জানমাল, ইজ্জতের নিরাপত্তা, ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষা এবং নাগরিক ও আইনানুগ অধিকার সংরক্ষণ করা হবে।
০৩. তফসিলী সম্প্রদায়ের সার্বিক কল্যাণ ও উন্নতি সাধন এবং অমুসলিম ও উপজাতীয়দের স্বতন্ত্র জাতিসত্তার মর্যাদা রক্ষাসহ শিক্ষা ও চাকুরীর ক্ষেত্রে সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হবে।
এনজিও (NGO) কার্যক্রম
০১. দেশের সার্বিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সহযোগী হিসেবে বেসরকারী দেশী-বিদেশী আন্তর্জাতিক ও স্বেচ্ছাসেবীমূলক উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানসমূহের (এনজিও) স্বাভাবিক ও গঠনমূলক কাজে সহযোগিতা করা হবে।
০২. এনজিওসমূহের আর্থিক ব্যবস্থাপনার স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ ও সার্বিক কার্যক্রম তত্ত্বাবধানের জন্য এনজিও ব্যুরোকে আরো বিস্তৃত ও শক্তিশালী করা হবে।
০৩. দেশের সর্বত্র এনজিও কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।
০৪. এনজিও কার্যক্রমকে সম্পূর্ণভাবে রাজনীতি মুক্ত করা হবে। বিদেশী-এনজিও নির্ভরতা কমিয়ে আনা হবে।
০৫. এনজিও কার্যক্রমের উপর জাতীয় নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম ও ক্ষুদ্র জাতিসত্তা
০১. বাংলাদেশের এক-দশমাংশ সার্বভৌম অঞ্চল পার্বত্য-চট্টগ্রামের বিপন্ন অস্তিত্ব রক্ষা এবং সেখানে বসবাসরত সকল অধিবাসী, উপজাতি-বাঙ্গালী-অবাঙ্গালী-হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রীষ্টানসহ তাবৎ জাতি-বর্ণ-ধর্ম নির্বিশেষে সকল বাংলাদেশী নাগরিকের সার্বিক অধিকার ও ইজ্জতের সংরক্ষণ, নিরাপত্তা, সাংস্কৃতিক স্বকীয়তা রক্ষা এবং সর্বোপরি জীবন-জীবিকার নিশ্চিয়তা বিধানে যথাযথ সাংবিধানিক ও মানবিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
০২. পার্বত্য-চট্টগ্রাম ও অন্যান্য অঞ্চলে বসবাসরত উপজাতীয় ও পশ্চাদপদ ক্ষুদ্র জাতিসত্তাসহ দেশের সকল জনগণের সব ধরনের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা হবে।
০৩. বাংলাদেশের কৌশলগত ও ভূ-রাজনৈতিক দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূ-ভাগের সার্বভৌমত্ব ও ভৌগলিক অখণ্ডতা বিরোধী যে কোন ধরনের চক্রান্ত, ষড়যন্ত্র ও জাতীয় স্বার্থবিরোধী অপতৎপরতা কঠোরভাবে প্রতিরোধ করা হবে।
সাংবিধানিক ও আইনগত সংস্কার
০১. শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক রীতির মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার জন্য সংবিধান সংশোধন করা হবে।
০২. সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে আইনী ও নাগরিক অধিকারের ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।
০৩. প্রচলিত আইনের সংস্কার ও সংশোধন করে ন্যায় বিচারকে দ্রুততর করা হবে।
০৪. আইন কমিশনকে সক্রিয় ও কার্যকর করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
০৫. আইনের শাসন কায়েম করা হবে অর্থাৎ আইন সকলের জন্য সমানভাবে প্রয়োগ করা হবে।
০৬. হরতাল ও অবরোধের মত ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি বে-আইনী করার উদ্যোগ নেয়া হবে।
০৭. অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে নির্বাচন কমিশনকে সম্পূর্ণ স্বাধীন এবং নির্বাচনী আইন, বিধিমালা ও পদ্ধতির যথোপযুক্ত সংস্কার করা হবে।
০৮. দীর্ঘদিন ধরে বিচারের জন্য অপেক্ষমান মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য বিশেষ কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।
০৯. আদালতগুলোতে যোগ্য ও ন্যায়-বিচারক নিয়োগের ব্যবস্থা করা হবে।
১০.সরকারী কৌশলী/আইনজীবী নিয়োগের ক্ষেত্রে পেশাদার ও দক্ষ আইনজীবীদের প্রাধান্য দেয়া হবে।
সাহিত্য সংস্কৃতি কার্যক্রম
বাংলাদেশের রয়েছে হাজার বছরের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। বিশ্বের মুসলমানদের এক দশমাংস বসবাস করেন এই দেশে। এদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে হাজার হাজার ওলী আউলিয়া ও ইসলামী ব্যক্তিদের স্মৃতি চিহ্ন। ইতিহাস থেকে প্রমাণিত সত্য যে, এ অঞ্চলের মানুষ রাসুল (সা.) এর একান্ত প্রিয় সাহাবী ও অন্যান্য মনিষীদের সহচর্যে আসার সুযোগ পেয়েছিলেন। তাঁদের চরিত্র মাধুর্য্য ও আন্তরিকতায় এই এলাকার সহজ সরল এবং নিপীড়িত ও বঞ্চিত মানুষ দলে দলে ইসলামের ছায়াতলে এসে শান্তির সন্ধান পেয়েছিলেন। ব্যক্তি পরিবার সমাজ রাষ্ট্র সবখানেই ইসলাম তার নিজস্ব গুণেই উল্লেখযোগ্য স্থান দখন করে নেয়। শত ঘাত প্রতিঘাতেও এ অঞ্চলের জনগণ তাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে বিলীন হতে দেয়নি। শাহজালাল, শাহমাখুদম, তিতুমীর, শরীয়তুল্লাহর মতো সাহসী ব্যক্তিরা প্রজ্ঞা ও নিষ্ঠার সাথে এ দায়িত্ব পালন করে গেছেন। তাঁদের আত্মত্যাগ আমাদের জাতিসত্ত্বা টিকিয়ে রাখতে অসাধারণ ভূমিকা পালন করেছে।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনে করে আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি ও ইসলামী মুল্যবোধ টিকিয়ে রাখার উপরই বাংলাদেশের ভবিষ্যত নির্ভর করে। অতীতের মতো বর্তমানেও আমাদের মূল্যবোধ ধ্বংসের কাজ চলছে পরিকল্পিতভাবে। বাংলাদেশের আকাশ উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে বিজাতীয় সংস্কৃতি অনুপ্রবেশের জন্য। তরুণ প্রজন্মের উল্লেখযোগ্য অংশ আজ মদ, জুয়া আর নেশায় মত্য। গ্রাম বাংলার ছোট ছোট চা-এর দোকানগুলোও আজ সিনেমা হলে পরিণত হয়েছে। উঠতি বয়সের ছেলে মেয়েরা তাদের জীবনের মূল্যবান কাজের সময়টা পার করছে এ সবের মাঝে ডুবে থেকে। আমাদের সম্মানিত মায়ের জাতি নারীকে কেউ কেউ পন্য হিসাবে ব্যবহার করছে মিডিয়ায়। মোট কথা শুধুমাত্র ভৌগলিকভাবে বাংলাদেশের নামটি রেখে ভিতর থেকে এর অন্তরাত্মা ধবংসের প্রচেষ্টা চলছে পরিকল্পিতভাবে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দায়িত্বশীল সংগঠন হিসাবে সর্বগ্রাসী এই আগ্রাসনের ব্যাপারে সজাগ। এজন্য সাহিত্য সংস্কৃতি অঙ্গনে সাধ্যমত কাজ করে যাচ্ছে। এগুলোর মাঝে উল্লেখযোগ্য হলো-
০১. ইসলামের কল্যাণময় বাণী প্রচার ও মূল্যবোধ বিকাশের জন্য কুরআন হাদীস ও ইসলামী সাহিত্য প্রকাশ।
০২. নতুন প্রজন্মকে আদর্শবান রূপে গড়ে তোলার জন্য শিশুতোষ প্রকাশনা, অডিও ভিডিও প্রডাক্ট নির্মাণ ও ছড়িয়ে দেয়া।
০৩. জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, ফররুখ আহমদসহ উত্তরসূরী কবি সাহিত্যিক ও লেখকদের পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান ও নতুন নতুন লেখায় উৎসাহ প্রদান।
০৪. সুস্থ সাহিত্য সংস্কৃতি চর্চা ও জনগণকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য দেশব্যাপী সাহিত্য সংস্কৃতি সংগঠন বিস্তার ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন।
০৫. জাতীয় দিবস সমূহ যথাযোগ্য মর্যাদায় উদ্যাপন।
০৬. মাহে রমজান, রবিউল আউয়াল, ঈদ ইত্যাদি দিবস সমূহ ব্যাপকভাবে উদ্যাপন।
০৭. ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় জাতি গঠনমূলক অনুষ্ঠান সম্প্রচারে উদ্বুদ্ধ করা।
০৮. সাহিত্য সংস্কৃতি অঙ্গনে পেশাদারীত্ব মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসা সংশ্লিষ্টদের যোগ্যতা বিকাশে সহযোগিতা করা।
০৯. আমাদের সমৃদ্ধ ইতিহাস ও ঐতিহ্য নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরার জন্য সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, র্যালী ইত্যাদির আয়োজন করা।
১০. জ্ঞান ভিত্তিক সমাজ গড়ে তোলার জন্য পাঠাগার প্রতিষ্ঠা ও সমৃদ্ধ করা।
১১. সাহিত্য সংস্কৃতির সকল শাখা ও বিভাগে ইতিবাচক কর্মসূচীর বিস্তার ঘটানো।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এদেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে উল্লেখিত কর্মসূচীর সাথে সম্পৃক্ত করতে বদ্ধপরিকর। বাংলাদেশ তার ঐতিহ্য ও মূল্যবোধ নিয়ে টিকে থাকবে ইনশাআল্লাহ।
সামাজিক ন্যায়বিচার
একটি সমাজে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হলে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান সমূহের শক্তিশালী ও নিরপেক্ষ ভূমিকা অপরিহার্য। উক্ত প্রতিষ্ঠান সমূহের কার্যকারিতায় নিম্নোক্ত শর্ত সমূহ পুরণ সুশাসনের জন্য অত্যাবশ্যক।
সামাজিক অপরাধ ও তার প্রতিকার:
আমরা মনেকরি সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, খুন, ডাকাতি, ছিনতাই, নারীনির্যাতন, চোরাচালান মাদক ব্যবসাসহ সকল প্রকার অপরাধমূলক কর্মকান্ড প্রতিরোধে শুধুমাত্র কঠোর আইন প্রয়োগই যথেষ্ঠ নয়। এর পাশাপাশি সামাজিক মূল্যবোধ শক্তিশালী হওয়া আবশ্যক। বিদ্যমান রাজনৈতিক ব্যবস্থায় অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সন্ত্রাস নির্ভর পেশীবহুল রাজনীতি গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান সমূহকে দুর্বল করে দিচ্ছে। ফলে জনগণ গণতন্ত্রের সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। রাজনৈতিক বিবেচনায় অপরাধীদের ক্ষমা করে দেওয়ার ফলে অপরাধীদের দৌরাত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে। নারীর উপর সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন দলের উচ্ছৃঙ্খল কর্মীরাই বেশী অগ্রগামী। রাজনৈতিক প্রভাবের দরুন এরা শাস্তির আওতামুক্ত থাকায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। রাজনীতিতে এই সন্ত্রাসীদের ব্যবহার ও চাঁদাবাজ টেন্ডারবাজদের প্রশ্রয়দানের ফলে সমাজ থেকে অপরাধ দূর করা দূরহ হয়ে উঠেছে। তাছাড়া এর ফলে রাজনীতিতে সৎ ও যোগ্য ব্যক্তিরা আগ্রহ হারাচ্ছে এবং জাতি সময়োপযোগী নেতৃত্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সন্ত্রাসীদের বিদ্যমান সামাজিক প্রভাব যুব সমাজকে সন্ত্রাস-প্রবণ করে তুলছে। এমতাবস্থায় সন্ত্রাস নির্ভর রাজনীতি বন্ধ করা অত্যাবশ্যক হয়ে পড়েছে। তবে মনে রাখা প্রয়োজন যদিও সন্ত্রাস রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করেছে তথাপি সাধারণ জনগণ এই ধরনের রাজনীতি চর্চার বিরোধী। জনগণের এই মনোভাবকে কাজে লাগিয়ে দেশপ্রেম ও জনকল্যাণমুখি রাজনীতি জনপ্রিয় করা সম্ভব। এর জন্য ব্যাপক ভিত্তিতে সৎ, দক্ষ ও দেশপ্রেমিক নাগরিকদের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হওয়া জরুরী। এর পাশাপাশি নৈতিক শিক্ষার স¯প্রসারণ ও সন্ত্রাস বিরোধী প্রচারণা আবশ্যক। বৈধ গণতান্ত্রিক দলের উপর রাজনৈতিকভাবে আরোপিত সরকার কর্তৃক জুলুম নির্যাতন চরমপন্থাকে উৎসাহিত করছে। তাই জঙ্গিবাদ ও চরমপন্থা প্রতিরোধে গণতান্ত্রিক ধারায় স্বাধীনভাবে রাজনৈতিক দল গঠন ও কার্যক্রম পরিচালনা করার পূর্ণাঙ্গ সুযোগ থাকা জরুরী। তাছাড়া ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, সম্প্রদায় নির্বিশেষে সকলের জন্য আইনের সমান প্রয়োগ ও বিচারব্যবস্থায় নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা জরুরী। রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট বিচারব্যবস্থায় সুশাসণ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে বিচার কার্যক্রম দীর্ঘায়িত করা ঠিক নয়। বিচার ব্যবস্থার উপর জনগণের আস্থা বৃদ্ধি করা আবশ্যক। এর জন্য সৎ ও ন্যায়নিষ্ঠ বিচারক নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন। দলীয় বিবেচনায় বিচারক নিয়োগ দেওয়া বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। সুশাসণ প্রতিষ্ঠায় বিচারব্যবস্থা স্বাধীন হওয়া আবশ্যক। সমাজে নরীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে প্রয়োজনীয় সামাজিক ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ আবশ্যক। নারীর পতিতাবৃত্তি গ্রহণ প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ জরুরি। পতিতাবৃত্তি নারী পাচারের প্রধান কারণ। তাই নারী পাচার রোধে পতিতাবৃত্তি বন্ধ হওয়া জরুরী। নিঃসন্দেহে এটি নারীর প্রতি চরম অবমাননা এবং সামাজিক ভাঙ্গনের অন্যতম কারণ। তাই পতিতাবৃত্তি প্রতিরোধে নৈতিক শিক্ষার সম্প্রসারণ, নারীর কর্মসংস্থনের ব্যবস্থা ও সামাজিক পুনর্বাসন কার্যক্রম জোরদার করা জরুরী। জাতীয় উন্নতি ও অগ্রগতির পথে অন্যতম প্রধান বাধা দুর্নীতি প্রতিরোধে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা প্রয়োজন। রাজনৈতিক প্রশ্রয়ে দুর্নীতিবাজরা পার পেয়ে যাচ্ছে। ফলে দুর্নীতি প্রতিরোধ দুরুহ হয়ে দাড়িয়েছে। তাই দুর্নীতিবাজদের রাজনৈতিক প্রশ্রয়দান বন্ধ ও দুর্নীতি পরায়ন কর্মকর্তা কর্মচারীদের বিরুদ্ধে কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ আবশ্যক। মাদক যুব সমাজের অবক্ষয়ের অন্যতম প্রধান কারণ। এটি যুবসমাজের স্বক্ষমতাকে কমিয়ে দিচ্ছে এবং পরিবারে ও সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। ফলে পারিবারিক শান্তি বিনষ্ট হচ্ছে এবং সমাজে অপরাধমূলক কর্মকান্ড বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই মাদকের অবাধ প্রবাহ বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। মাদকাসক্তি দূর করণে কঠোর ও সমন্বিত ব্যবস্থা গ্রহণ আবশ্যক।
নারীর অধিকার:
আমরা মনেকরি সমৃদ্ধ সমাজ গঠনে নারী ও পুরুষের সমান ও সহযোগিতামূলক ভূমিকা আবশ্যক। সমাজের এই অর্ধাংশকে পশ্চাতে রেখে একটি সমৃদ্ধ সমাজ গঠন সম্ভব নয়। মানুষ হিসেবে উভয়ই নিজ নিজ অবস্থানে পূর্ণ সক্ষমতা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। সমাজ গঠনে তার অবদান, দায়িত্ববোধ, সততা, ন্যয়পরায়ণতা, উন্নত নৈতিক ও মানবিক চরিত্র তাকে অপরোপারের উপর শ্রেষ্ঠত্ব প্রদান করে। তাই উভয়ের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা প্রয়োজন। বিদ্যমান সমাজ ব্যবস্থাই নারী বিভিন্ন ধরনের বৈষম্যের শিকার। পারিবারিক পরিমন্ডলে তারা যেমন অবহেলিত তেমনি সামাজিকভাবেও অধিকার বঞ্চিত। পরিবারে তাদের মতামতকে বিবেচনা করা হয় না। মনে করা হয় নারীরা সুপরামর্শ দিতে অক্ষম। অপরপক্ষে তাদের মৌলিক পয়োজন পুরণেও গৃহকর্তা সচেষ্ট থাকেন না। ফলে তারা অনেক সময় মৌলিক চাহিদা থেকে বঞ্চিত হন। তাছাড়া অনেক পরিবারে নারী শিক্ষার ব্যপারে রয়েছে প্রবল অনীহা। বরং তারা এটিকে অবাঞ্ছিত বাড়াবাড়ি বলে মনে করে থাকে। ছেলের শিক্ষার ব্যপারে তারা যতটা পেরেশান মেয়ের শিক্ষার ব্যপারে তাদের ততটাই অণিহা। তাছাড়া অনেক পরিবারে মেয়েদেরকে সামাজিকীকরণে অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হয়না। এমতাবস্থায় নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় জোরালো ও কার্যকর ভূমিকা সময়ের অপরিহার্য দাবী। নারীর ব্যাপারে সমাজের এই বদ্ধমূল ধারনা দুরীকরণে একটি শক্তিশালী সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা অত্যাবশ্যক। এজন্য নারী-পুরুষ বৈষম্য দুরীকরণে নারী শিক্ষা সম্প্রসারণের পাশাপাশি সমাজে ও কর্মক্ষেত্রে নারীর যথাযথ সুযোগ ও অধিকার নিশ্চিত করা প্রয়োজন। সকলপ্রকার সামাজিক প্রতিষ্ঠানে নারীর প্রয়োজনীয় ভূমিকা নিশ্চিত করা জরুরি। একটি আদর্শ পরিবার গঠনে নারীর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পারিবারিক পরিমন্ডলে শিশুর মানসিক ও শারীরিক বিকাশে নারী সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। তাই উক্ত ভূমিকা পালনের প্রয়োজনীয় পরিবেশ নিশ্চিত করা আবশ্যক। সম্পত্তিতে নারীর মালিকানা ও পর্নাঙ্গ কর্তৃত্ব নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সামাজিক ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরী। উত্তরাধিকার সম্পত্তিতে নারী যেন তার প্রাপ্য যথার্থ রূপে বুঝে পায় তার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা আবশ্যক। নারীনির্যাতন, এসিড নিক্ষেপ ও যৌতুক প্রতিরোধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ অত্যাবশ্যক।
শিশু-কিশোর কল্যাণ:
আজকের শিশু আগামী দিনের দেশ গঠনের কারিগর। তাই শিশুর শারিরীক ও মানসিক সুসমাঞ্জস্যপুর্ণ বিকাশ একটি সমৃদ্ধ দেশ গঠনের অন্যতম প্রধান শর্ত। এক্ষেত্রে লিঙ্গীয় বৈষম্য কোনভাবেই কাম্য নয়। প্রতিটি শিশুকে শিক্ষার আওতাধীনে আনা অপরিহার্য। দেশ থেকে শিশুশ্রম উচ্ছেদ করে সকল শিশুর জন্য উপযুক্ত শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিনোদন ও সুন্দর পরিবেশের ব্যবস্থা করা জরুরী। শিশুর প্রতি সকল প্রকার নির্যাতন ও বৈষম্য দুর করা আবশ্যক।
প্রতিবন্ধীর কল্যাণ:
সমাজে প্রতিবন্ধীদের প্রাপ্ত মর্যাদা ও সম্মান নিশ্চিত করা পয়োজন। তাছাড়া তাদেরকে উপযুক্ত সুযোগ ও শিক্ষা দিলে প্রগতিশীলতাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম। তাদের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা দরকার। তাদের সামাজিকীকরণ সহজতর করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ আবশ্যক।
দারিদ্র বিমোচন ও কর্মসংস্থান:
দারিদ্র একটি সমাজের সবচেয়ে বড় অভিশাপ যেটি সমাজের সকল উন্নয়ন সুচককে খারাপভাবে প্রভাবিত করে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, বাসস্থান সকল কিছুর মান দারিদ্র বৃদ্ধির সাথে সাথে কমে যায়। তাই সমৃদ্ধ দেশ গঠনে দারিদ্র প্রধানতম বাধা। তই এই দারিদ্র বিমোচনে খুব কৌশলী, সময়োপযোগী ও কার্যকর পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন প্রয়োজন। বাংলাদেশের কৃষি নির্ভর অর্থনীতিতে কৃষিকার্যে উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের ব্যবস্থা গ্রহণ অপরিহার্য। কৃষকদের মাঝে উন্নত কৃষি উপকরণ বিতরণ, সেচ ব্যবস্থায় আধুনিকায়ন ও পর্যাপ্ত আর্থিক সহয়োগিতাদান আবশ্যক। উৎপাদন বৃদ্ধি করে খাদ্যে স্বনির্ভরশীলতা অর্জনের লক্ষে উন্নত বীজ সরবরাহ জরুরী।
শিল্পায়ন ছাড়া অর্থনীতিতে গতিশীলতা আনায়ন সম্ভব নয়। তাই শিল্পের বিকাশে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ অপরিহার্য। এক্ষেত্রে ক্ষুদ্্র ও বৃহৎ শিল্প উদ্যোক্তাদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান আবশ্যক। দেশীয় পণ্যের বাজার তৈরিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার। তাছাড়া নতুন নতুন কর্মসংস্থান তৈরিতে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সর্বাত্তক সহযোগিতা দান জরুরী। তাছাড়া কর্মক্ষম জনশক্তির দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রয়োজনীয় কারিগরি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। প্রবাসে বাংলাদেশী শ্রমিকের চাহিদা বৃদ্ধিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।
শ্রমিকের অধিকার:
অর্থনৈতিকভাবে নিরাপদ শ্রমিক শিল্পোৎপাদনে বেশি ভূমিকা রাখে। একজন শ্রমিক যেন তার যথার্থ মজুরী যথা সময়ে বুঝে পায় তার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ আবশ্যক। একজন শ্রমিকের সর্বনিম্ন মজুরী এমন হওয়া উচিৎ যার দ্বারা সে তার পরিবারকে সাথে নিয়ে স্বাচ্ছন্দে চলতে পারে। খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ও সন্তানদের শিক্ষার সুবন্দোবস্ত হয়। শ্রমিকদের স্বাস্থ্যের দিকেও বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন। উপযুক্ত কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করা ও কর্মঘন্টা স্বাভাবিক সীমার মধ্যে রাখা অপরিহার্য।
সংখ্যালঘুদের অধিকার:
বাংলাদেশ বিভিন্ন ছোট-বড় জনগোষ্ঠীর আবাস। বিভিন্ন শ্রেনী- হিন্দু, বৌদ্ধ, খৃস্টান কিংবা ছোট-বড় উপজাতি সকলেই এ দেশের উন্নয়ন অগ্রগতিতে সমান ভূমিকা রেখেছে। তাই আমরা মনেকরি এ দেশে বসবাসরত সকল মানুষের জন্য সমান ও অভিন্ন সুযোগ নিশ্চিত করা জরুরী। জাতিভেদ কিংবা বর্ণভেদ কোন অর্থেই গ্রহণ যোগ্য নয়।
সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড:
আমরা মনে করি মানুষের সকল প্রকার চিন্তা ও কর্মধারার প্রকাশই হচ্ছে সংস্কৃতি। শিল্প ও সাহিত্যই কেবলমাত্র সংস্কৃতির অন্তর্ভূক্ত উপাদান নয়, মানুষের মুল্যবোধ, বিশ্বাস ও তার জীবনধারাও সংস্কৃতির অঙ্গ। প্রত্যক সংস্কৃতি একটি নির্দিষ্ট জাতিসত্তাকে ধারণ করে এবং কতগুলো অপরিবর্তনীয় মূল্যবোধকে প্রতিষ্ঠিত করে। প্রত্যেক জাতি সংস্কৃতির মাধ্যমেই পৃথিবীতে তার অস্তি-ত্বকে সুচিহ্নিত করে। বাংলাদেশ এ ঐতিহাসিক বিবর্তনের ধারাবাহিকতাই একটি স্বতন্ত্র ও তাৎপর্যমন্ডিত সংস্কৃতি গড়ে তুলেছে। বহু সংস্কৃতির সংস্পর্সে এসে শুভ ও কল্যাণকে গ্রহণ করে সে যেমন নিজে সমৃদ্ধ হয়েছে তেমনি সমৃদ্ধ করেছে অপরাপর সংস্কৃতিকে। এখানে অঞ্চলভেদে সংস্কৃতির মধ্যে যে ভিণœতা তা এর মৌলিকত্বকে অক্ষুন্ন রেখেই সৃষ্টি হয়েছে এবং এ ভিন্নতা আমাদের সংস্কৃতিকে পূর্ণতা দান করেছে। সংস্কৃতির মৌলিকত্বের উপর আঘাত হানে এমন সকল প্রকার কর্মকান্ড অপসংস্কৃতি। আর এ অপসংস্কৃতি প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ অপরিহার্য। বিভিন্ন ক্ষুদ্র ও বৃহৎ জনগোষ্ঠীর নিজস্ব সাংস্কৃতিক উপাদান সংরক্ষণ ও বিকাশে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার।
কৃষি ও খাদ্য
০১. খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের জন্য কৃষিতে ভর্তূকির পরিমাণ বৃদ্ধি করা হবে।
০২. আধুনিক প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও তা প্রয়োগের জন্য কৃষি গবেষণা ও সম্প্রসারণ কর্মকাণ্ড পরিচালনা সফল করার লক্ষ্যে অর্থ বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হবে।
০৩. কৃষি উৎপাদনকে বহুমুখীকরণ করা হবে। শস্য, হাঁস-মুরগী, গবাদি পশু ও মৎস্য চাষের ব্যাপক প্রসার ও এগুলোকে রপ্তানিযোগ্য করার ব্যবস্থা নেয়া হবে।
০৪. দেশের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ কৃষিখাতকে লাভজনক করার জন্যে ভর্তূকি বৃদ্ধিসহ বীজ, সার, কীটনাশক ও বিদ্যুৎ সরবরাহ সহজলভ্য করা হবে।
০৫. আলু, পেয়াজ, রসুন, আদা, শাক-সব্জি ও ডাল উৎপাদনে দেশকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার লক্ষ্যে খাত ভিত্তিক সহায়তা প্রদান করা হবে।
০৬. কৃষিপণ্যের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করার জন্য কৃষি বাজার ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো হবে। এছাড়া “প্রাইস কমিশন” (Price Commission) গঠন করে উৎপাদন খরচসহ অন্যান্য খরচ বিবেচনা করে সকল ফসলের ন্যায্য মূল্য নির্ধারণ করা হবে।
০৭. কৃষি ব্যবসাকে লাভজনক ও স্থিতিশীল করার লক্ষ্যে উন্নয়ন প্রকল্পের ঋণ কার্যক্রম ব্যাংকসমূহের মাধ্যমে পরিচালনা করা হবে।
০৮. অতীতের কৃষি ঋণের সুদ মওকুফ করা হবে। স্বচ্ছতা ও সরলীকরনের মাধ্যমে প্রান্তিক ও বর্গাচাষীদের ঋণ প্রদান করা হবে।
০৯. টিএসপি, এমওপি ও ডিএপি সার কৃষকের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখার জন্য বিদ্যমান ভর্তূকির পরিমাণ বাড়ানো হবে।
১০. শিল্পায়ন ও আবাসনে কৃষিজমির ঢালাও ব্যবহার রোধকল্পে ভূমি ব্যবহার নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা হবে।
১১. ভূমি আইন সংস্কারের মাধ্যমে খাস ও পতিত জমি প্রকৃত ভূমিহীন কৃষকদের মাঝে বিতরণের ব্যবস্থা করা হবে।
১২. ঢাকা শহরের চতুর্দিকে ৬০ মাইল পর্যন্ত রাস্তার উভয় পার্শ্বের কৃষিজমিতে শিল্প স্থাপন নিরুৎসাহিত করা এবং সবুজায়নকে উৎসাহিত করা হবে। দেশের অন্যান্য অঞ্চলের কৃষি জমিতে শিল্প স্থাপন পরিহার করার বাস্তব পদক্ষেপ নেয়া হবে। শিল্প স্থাপনের জন্য কম উৎপাদনশীল জমি ও উপকূলীয় জমি ব্যবহারের জন্য উদ্যোক্তাগণকে উৎসাহিত করা হবে।
১৩. কৃষকের উন্নয়নে দেশব্যাপী কৃষিভিত্তিক শিল্পস্থাপন, মূল্যবান ফল-ফসলের সংরক্ষণ, বাণিজ্যিকীকরণ ও রপ্তানির ব্যবস্থা নেয়া হবে।
১৪. কৃষিপণ্য উৎপাদনের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট এলাকায় “কৃষিপণ্য রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল” AÂjÓ (Agricultural Export Processing Zone) প্রতিষ্ঠা করা হবে। উক্ত অঞ্চলসমূহ “বেপজার” (ইঊচতঅ) পরিবর্তে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে আনা হবে।
১৫. বন্যা, খরা, জলোচ্ছ্বাস, পাহাড়ী ঢলসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে সকল ধরনের ফসল রক্ষার সম্ভাব্য ব্যবস্থা উদ্ভাবন ও গ্রহণ করা হবে।
১৬. অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য পরিকল্পিত বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে দেশের কৃষি-বনায়ন, সামাজিক-বনায়ন এবং পাট, চা, রাবার, বেশম ও ফলমূলের উন্নত চাষের ব্যাপ্তি ঘটানো হবে।
১৭. কৃষি শ্রমিকের ন্যূনতম মজুরী ও আর্থিক সুবিধাদি নির্ধারণের লক্ষ্যে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে “কৃষি শ্রমিক ওয়েজ বোডর্” প্রতিষ্ঠা করা হবে।
১৮. কৃষি সেক্টরে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করে কৃষি খাতকে আরো শক্তিশালী করা ও দেশকে ত্বরিত খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে কৃষি মন্ত্রণালয় এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়কে সমন্বিত করা হবে।
১৯. কৃষি শিক্ষা-গবেষণা ও সম্প্রসারনকে যুগোপযুগী করে কৃষিবিদদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।
২০. আবাদী জমির পরিমাণ বৃদ্ধির লক্ষ্যে “পল্লী নগর” গড়ে তোলা হবে।
২১. ভূমি দস্যুতা রোধকল্পে ভূমি রেকর্ড, নামজারী ইত্যাদি কার্যক্রমকে আধুনিকায়ন করা হবে।
প্রতিরক্ষা
০১. বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও ভৌগলিক অখণ্ডতা রক্ষার লক্ষ্যে আধুনিক সমরাস্ত্র, প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে একটি সময়োপযোগী ও শক্তিশালী প্রতিরক্ষাবাহিনী গড়ে তোলা হবে। এ জন্য প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দ রাখা হবে।
০২. জাতীয় নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিয়ে জাতীয় প্রতিরক্ষা নীতি প্রণয়ন করা হবে।
০৩. প্রতিরক্ষা শিল্পকে যথাযথ গুরুত্ব প্রদান ও উৎসাহিত করা হবে।
০৪. দেশের প্রতিরক্ষা বাহিনীকে ন্যায় ও কল্যাণমুখী আদর্শের ভিত্তিতে দেশরক্ষার চেতনায় উজ্জীবিত করার উদ্যোগ নেয়া হবে।
০৫. প্রতিরক্ষা বাহিনীর তত্ত্বাবধানে ২০-৩০ বছর বয়সের নাগরিকদেরকে ক্রমান্বয়ে সামরিক প্রশিক্ষণ দেয়ার ব্যবস্থা নেয়া হবে।
0 comments: