জামায়াতের সামরিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক নীতিমালা

ভূমিকা

১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও ইসলামী মূল্যবোধ রক্ষার অঙ্গীকার নিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কাজ শুরু করে। জন্মলগ্ন থেকে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশে সার্বিক শান্তি প্রতিষ্ঠা ও কল্যাণ সাধণের লক্ষ্যে আল্লাহ প্রদত্ত ও রাসূল (সা:) প্রদর্শিত ইসলামী জীবন বিধান অনুযায়ী আল্লাহর সন্তুষ্টি ও পরকালীন সাফল্য অর্জনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার স্বার্থে জাতীয় জীবনের সকল ক্ষেত্রে ইসলামী মূল্যবোধের উজ্জীবন ও জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। দায়িত্বশীল নাগরিক এবং চরিত্রবান ও যোগ্য নেতৃত্ব সৃষ্টির মাধ্যমে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সর্বশক্তিমান আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস, আইনের শাসন, গণতন্ত্র, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সুবিচার, ধর্ম-বর্ণ-সম্প্রদায় নির্বিশেষে মৌলিক মানবাধিকার ও স্বাধীনতার সুরক্ষা, সব মানুষের জন্য খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা, জান-মাল ও
সম্মানের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, সম্পদের সুষম বন্টন, জাতীয় আয় ও উৎপাদন বৃদ্ধি এবং মানুষের জীবন মান উন্নত করে শোষণ, দুর্নীতি, সন্ত্রাসমুক্ত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে জামায়াতে ইসলামী ন্যায় ও ইনসাফের ভিত্তিতে বিশ্ব মুসলিম ভ্রাতৃত্ব গড়ে তোলা ও বিশ্বের সকল রাষ্ট্রের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনকে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করছে।

ইসলামের পূর্ণাঙ্গ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশের সকল নাগরিকের নিকট ইসলামের প্রকৃত রূপ বিশ্লেষণ করে তাদের চিন্তার পরিশুদ্ধি ও বিকাশ সাধনের মাধ্যমে জীবনের সকল ক্ষেত্রে ইসলামের অনুসরণ ও প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়নতার অনুভূতি জাগিয়ে তুলতে চেষ্টা চালাচ্ছে। আগ্রহী সৎ ব্যক্তিদের সংগঠিত করে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে যোগ্যতা সম্পন্ন হিসেবে গড়ে তুলে জামায়াত রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় প্রয়োজনীয় সংশোধনীর জন্য নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় সরকার পরিবর্তন এবং সমাজের সর্বস্তরে সৎ ও আল্লাহভীরু নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠাকল্পে কাজ করে যাচ্ছে।

গণতান্ত্রিক পন্থায় ক্ষমতার পরিবর্তনে বিশ্বাসী একটি রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে জামায়াতে ইসলামী প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই দলের অভ্যন্তরে পূর্ণ গণতন্ত্র চর্চা করে আসছে। সুষ্ঠু গণতন্ত্র চর্চার লক্ষ্যে জামায়াতে ইসলামী একটি সুষ্ঠু পদ্ধতি অনুসরণ করে আসছে। ফলে যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়মিত নেতৃত্বের পরিবর্তন, নেতৃত্বের বিকাশ, আভ্যন্তরীণ শৃংখলা ও শক্তিশালী সাংগঠনিক কাঠামো গঠনে সক্ষম হয়েছে। গণতান্ত্রিক চর্চার কারণেই জামায়াতে ইসলামীতে পরিবারতন্ত্রের কোন সুযোগ সৃষ্টি হয়নি। দলে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দানের লক্ষ্যে সিদ্ধান্তগ্রহণে পরামর্শ ও গঠনমূলক সমালোচনা পদ্ধতিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদান করা হয়।

একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা হিসেবে ইসলামের সুমহান আদর্শের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সকলকে সচেতন করার লক্ষ্যে পরিচালিত জামায়াতের আহ্বানে প্রতিনিয়ত সর্বস্তরের জনগণ সাড়া দিচ্ছে। এরই ফলশ্র“তিতে দেশের গণমানুষের সমর্থিত অন্যতম একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে গুরুত্ব অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। প্রতিষ্ঠার পর হতে প্রতিটি জাতীয় সংসদেই জামায়াতে ইসলামীর মনোনয়নে সংসদে প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছে।

দলীয় কর্মকান্ড পরিচালনার ব্যয়ভার বহনের লক্ষ্যে জামায়াতে ইসলামী তার সদস্য, কর্মী ও শুভাকাঙ্খীদের নিকট থেকে নিয়মিত আর্থিক অনুদান পেয়ে থাকে। এই অর্থের যথাযথ ব্যয় নিশ্চিত করার লক্ষ্যে অর্থ বিভাগ সর্বোচ্চ সচ্ছতা নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছে। নারীর রাজনৈতিক অংশগ্রহণ সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে জামায়াতে ইসলামী শক্তিশালী মহিলা বিভাগের মাধ্যমে সর্বস্তরের নারীদের সংগঠিত করতে সক্ষম হয়েছে।

রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন, সহিংসতা, দুর্নীতিগ্রস্থ পরিবেশের মাঝেও জামায়াতে ইসলামী নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে সকল আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছে। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে আট দল, সাত দলীয় জোট ও পাঁচদলীয় জোটের বাইরে জামায়াতে ইসলামীর ভূমিকা সর্বস্তরে প্রশংসিত হয়েছে। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে জামায়াতে ইসলামীই সর্বপ্রথম তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ধারণা প্রদান করে। এই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাংবিধানিক স্বীকৃতির জন্য অন্যান্য বিরোধী দলের সাথে জামায়াতে ইসলামী যুগপৎ আন্দোলনে অংশ নেয়।

জনকল্যাণে কাজ করতে সরকারকে চাপ প্রয়োগের লক্ষ্যে জামায়াতে ইসলামী বিভিন্ন সময়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি রোধ, দুর্নীতি দমন, পানি-বিদ্যুৎ-গ্যাস সহ জনদুর্ভোগ লাঘবের দাবিতে মিছিল, প্রতিবাদ সভা-সমাবেশ, হরতালের মত নিয়মতান্ত্রিক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। জাতীয় সংসদকে সকল কার্যক্রমের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন সংসদে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। সরকারের স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদে জনস্বার্থে তৃতীয় ও পঞ্চম সংসদ হতে এর সদস্যগণ পদত্যাগ করেছিলেন।

দেশের ইসলামী মূল্যবোধকে সংরক্ষণের লক্ষ্যে বিভিন্ন সময়ে ইসলাম বিরোধী সরকারী পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা পালন করে আসছে। আঞ্চলিক আধিপত্যবাদী শক্তি ও সাম্রাজ্যবাদী শক্তির সম্প্রসারণবাদী নীতির বিরুদ্ধে জাতীয় স্বার্থ ও সার্বভৌমত্ব অটুট রাখতে জামায়াতে ইসলামী সবসবময় আপোষহীন ভূমিকা পালন করেছে। যার মধ্যে টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণ, ট্রানজিট প্রদান, ফারাক্কার পানির ন্যায্য হিস্যা, সীমান্তে হত্যাকান্ড, টিফা ও পিআরএসপি চুক্তি, অন্যান্য ঋণ চুক্তিসহ সকল প্রকার জাতীয় স্বার্থবিরোধী ইস্যুতে ভূমিকার ফলে জামায়াতে ইসলামী জনগণের নিকট স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার আস্থাশীল সংগঠনে পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন দেশের সাথে বন্ধুপ্রতিম সম্পর্ক স্থাপন, দেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরা, শ্রমবাজার সম্প্রসারণ, বৈদেশিক বিনিয়োগ ও সাহায্য বৃদ্ধি এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন দেশে নেতৃবৃন্দের সফর, উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি প্রেরণ, দেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের সাথে মতবিনিময়ের মাধ্যমে বৈদেশিক সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে জামায়াত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। অভ্যন্তরীণ সংহতি বজায় রাখার স্বার্থে পার্বত্য শান্তিচুক্তি সহ অন্যান্য চুক্তির বিরুদ্ধে আইনী লড়াই ও প্রতিবাদ করে আসছে।

একটি আদর্শবাদী দল হিসেবে দেশ ও ইসলামের জন্য কাজ করতে গিয়ে জামায়াতে ইসলামীকে বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক হয়রানি, হামলা, মামলা, অত্যাচার ও নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। কিন্তু গণতন্ত্রে বিশ্বাসী দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াত কখনও সহিংসতার পথ বেছে নেয়নি। বরং পূর্ণ সহনশীলতা ও বুদ্ধিবৃত্তিক উপায়ে এসব পরিস্থিতির মোকাবিলা করেছে। উপরন্তু ইসলামের নামে সকল প্রকার বিশৃঙ্খলা বা চরমপন্থার বিরুদ্ধে সবসময় সোচ্চার রয়েছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সুদৃঢ়করণ ও নির্বিঘেœ সকল ধর্ম পালন এবং বিকাশের ক্ষেত্রে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি ও তা বজায় রাখতে জামায়াত বদ্ধপরিকর। একটি উন্নত গণতান্ত্রিক পরিবেশ সুনিশ্চিত করতে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড বন্ধ, মানবাধিকার রক্ষা, দুর্নীতি রোধ, জনবান্ধব প্রশাসন প্রতিষ্ঠা, রাষ্ট্রযন্ত্রের সকল পর্যায়ে দলীয়করণ-আত্মীয়করণ ও স্বজনপ্রীতিরোধ, প্রতিরক্ষা ব্যাবস্থাকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে জামায়াত সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। রাজধানীর ওপর চাপ কমাতে এবং মাঠ পর্যায়ে উন্নয়নকে ত্বরাণ্বিত করতে প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ ও স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা শক্তিশালী করার ওপর জামায়াত সর্বাত্মক গুরুত্বারোপ করে।

একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জনকল্যাণে নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী জামায়াতে ইসলামী বিনা মূল্যে চিকিৎসা প্রদান, যৌতুকমুক্ত বিবাহের ব্যবস্থা, যৌতুকের বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টি, নারী নির্যাতন রোধে নৈতিকতার প্রসারে অগ্রণী ভূমিকা রাখছে।

বিভিন্ন দুর্যোগকালীন সময়ে ত্রাণ বিতরণ ও আর্থিক অনুদান প্রদান, শীত বস্ত্র, গৃহ নির্মাণ সামগ্রী ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণ, দু:স্থ ও বয়স্কদের পুনর্বাসনে সামর্থ অনুযায়ী জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে। যে সকল বীর সেনানীরা রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছেন সে সকল মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সহায়তা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা, পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধাদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা, হজ্জ ডেলিগেশনে মুক্তিযোদ্ধাদের অন্তর্ভূক্ত করণ ও তাদের কল্যাণে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ অব্যাহত রেখেছে।

সুদভিত্তিক ও শোষণমূলক অর্থনীতির বিপরীতে যাকাত ভিত্তিক অর্থব্যবস্থা প্রবর্তনের মাধ্যমে বৈষম্য কমিয়ে আনা ও আত্ম কর্মসংস্থানের মাধ্যমে দারিদ্র দূর করার ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত স্থাপনে সক্ষম হয়েছে। কৃষিতে নতুন করে সবুজ বিপ্লব ঘটিয়ে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের কোনো বিকল্প নেই বলে জামায়াত দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে। একই সাথে আধুনিক শিল্প প্রসারের মাধ্যমে রপ্তানী আয় বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানের মাধ্যমে জনসংখ্যাকে জনসম্পদে রূপান্তর করে জামায়াত অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন করতে চায়। অদক্ষ শ্রমিকদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলে বিশ্ব শ্রমবাজাওের গুরুত্বপূর্ণ অংশিদার হতে চায়। খেটে খাওয়া মানুষের অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে যৌক্তিক মজুরি কাঠামো ও শ্রমনীতি প্রণয়নকে জামায়াত অন্যতম নীতি হিসেবে গ্রহণ করেছে। জাতীয় সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং সমগ্র জনগোষ্ঠীর জন্য বিদ্যুৎ ও জ্বালানীর সরবরাহ নিশ্চিত করে সামগ্রিক উন্নয়ন ত্বরাণ্বিত করার লক্ষ্যে কার্যকর উদ্যোগ ও প্রস্তাবনা পেশ করে আসছে। অনাথ, এতিম ও পথশিশুদের মাঝে শিক্ষা বিস্তারের মাধ্যমে তাদেরকে মানব সম্পদে পরিণত করার লক্ষ্যে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে যাচ্ছে।



নৈতিক ও কর্মমুখী আধুনিক বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা প্রবর্তনের লক্ষ্যে বিভিন্ন সময়ে সুচিন্তিত পরামর্শ ও সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপের সুপারিশ করেছে। আধুনিক প্রযুক্তির বিকাশ ও তার পরিকল্পিত ব্যবহার নিশ্চিত করার মাধ্যমে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন ও অগ্রগতিকে ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সকল প্রকার হত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও সংকীর্ণ দলীয় স্বার্থ থেকে শিক্ষাঙ্গনকে মুক্ত রাখতে জামায়াত সবসময়ই আপোষহীন ভূমিকা রেখেছে। আকাশ সংস্কৃতির আগ্রাসনের মোকাবিলায় জাতীয় সংস্কৃতির সাথে ইসলামী মূল্যবোধের সমন্বয়ের মাধ্যমে একটি সুস্থধারার পরিশীলিত সংস্কৃতি বিকাশে জামায়াত নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এভাবে জাতীয় জীবনের সকল ক্ষেত্রে কল্যাণমুখী ভূমিকা এবং দলের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা রক্ষা ও গণতন্ত্র চর্চার মাধ্যমে বাংলাদেশের রাজনীতিতে জামায়াতে ইসলামী একটি আদর্শ দল হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছে।


স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে জামায়াতের সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং পরবর্তী নির্বাচন সমূহে ভোটপ্রাপ্তির হারের বিবেচনায় জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশে সরকার পরিবর্তনের ক্ষেত্রে অন্যতম নিয়ামক শক্তির ভূমিকায় আবির্ভূত হয়। ফলশ্র“তিতে সকল প্রকার দুঃশাসনের অবসান এবং দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা সংরক্ষণ, অর্থনীতি পুনর্গঠন, দারিদ্র্যদূরীকরণ, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা, সন্ত্রাস ও দুর্নীতির অবসান, মানুষের মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে দেয়া, সর্বোপরি গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়া ও জনগণের অবাধ ভোটাধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ইসলামী ও জাতীয়তাবাদী শক্তির সমন্বয়ে চার দলীয় ঐক্যজোট গঠিত হয়। জোটের শরীক হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী প্রথম বারের মত ২০০১ সালে সরকারে অংশ নেয়। জাতীয় সংসদে ৩০০ আসনের মধ্যে জামায়াতের আসন ছিল ১৭টি, আর মন্ত্রী ছিলেন ২ জন। পরবর্তীতে জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনে ৪ জন সদস্যা নির্বাচিত হন। চার দলীয় জোট পাঁচ বছর সফলভাবে সরকার পরিচালনা করতে সক্ষম হয়।


জোট সরকারের পাঁচ বছরে দেশ থেকে সন্ত্রাস দূর করার কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি স্থিতিশীল ও সহাবস্থানের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টির প্রচেষ্টা চালানো হয়। জাতীয় আয় বৃদ্ধি পায় এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার প্রায় ৬.৫% ছাড়িয়ে যায়। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের ক্ষেত্রে ব্যাপক অগ্রগতি সাধিত হয়। মাথা পিছু আয় ৩৪০ মার্কিন ডলার থেকে ৪৮২ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়।

নিজস্ব সম্পদ দিয়ে উন্নয়ন-ব্যয় শতকরা ৪২ ভাগ থেকে ৫৮ ভাগে উন্নীত করা হয়। দারিদ্র্য বিমোচনের ক্ষেত্রে দারিদ্র্যের হার শতকরা ৯ ভাগ কমানো হয় এবং অতি দারিদ্রের হার ২৪% থেকে ১৮% নেমে আসে। বিনিয়োগের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করে বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয়। নারী শিক্ষার প্রসারকল্পে বিভিন্ন প্রকার বৃত্তি, উপবৃত্তি চালুসহ মহিলাদের জন্য পৃথক কারিগরি ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু করা হয়। প্রতিবন্ধি ব্যক্তিদের জন্য ভাতা ও বিনা সুদে ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা নেয়া হয়। তথ্য-প্রযুক্তির মহাসড়কে প্রবেশের মাধ্যমে তথ্য-প্রযুক্তিকে সহজলভ্য করা হয়। স্বল্পতম সময়ের মধ্যে জনগণের সহযোগিতায় বোমাবাজদের গ্রেফতার, তাদের নেটওয়ার্ক ভেঙ্গে দেয়া এবং দ্রুত বিচারে সোপর্দ করা হয়। শিক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এ খাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেয়া এবং নকলমুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা নেয়ার ব্যবস্থা করে যথার্থ যোগ্য নাগরিক তৈরীর ব্যবস্থা করা হয়। মাদরাসা শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব দিয়ে ফাজিল ও কামিলকে ডিগ্রী ও মাস্টার্সের সমমান প্রদান করা হয়। কওমী মাদরাসার সনদের স্বীকৃতি প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বিপুল সংখ্যক স্কুল, কলেজ ও মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করা হয়। অবকাঠামোগত উন্নয়নে ব্যাপক সাফল্য অর্জিত হয়। গ্রামীণ অর্থনীতিতে সঞ্চারিত হয় ব্যাপক গতি। এভাবে জোট সরকার দেশকে একটি উন্নয়নমুখী স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে গড়ে তোলার প্রচেষ্টা চালিয়েছে।

২০০১ সাল হতে ২০০৬ সাল পর্যন্ত জামায়াতের দুজন মন্ত্রী কৃষি, শিল্প ও সমাজ কল্যাণ মন্ত্রনালয় পরিচালনা করেন। স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথমবারের মত মন্ত্রীত্ব লাভের পর জামায়াত পূর্ণ সততা, যোগ্যতা ও দক্ষতার সাথে মন্ত্রনালয় পরিচালনা করতে সক্ষম হয়। সকল প্রকার দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও অন্যায়-অবিচার থেকে মুক্ত থেকে সুষ্ঠুভাবে মন্ত্রনালয় পরিচালনায় সফল হওয়ার কারণেই বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে দুর্নীতি বিরোধী কঠোর অভিযানেও জামায়াতের দুই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে কোনো প্রকার দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশের ইতিহাসে সরকার পরিচালনায় এটি ছিল একটি নজিরবিহীন ঘটনা।

জামায়াতের আমীর কৃষি মন্ত্রী থাকাকালে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষ্যে কৃষি সেক্টরে ব্যাপক গতি সঞ্চারিত হয়। রফতানিযোগ্য কৃষি পণ্যের উৎপাদন ব্যাপক বৃদ্ধি করা হয়। দারিদ্র্য বিমোচন ও কৃষকের ক্ষমতায়নের জন্য “চাষীর বাড়ি-বাগান বাড়ি” প্রকল্প চালু করা হয়। বৃক্ষরোপন অভিযানের সাথে ফলজ গাছের রোপণ অন্তর্ভুক্ত করে ফল চাষের নতুন অধ্যায়ের সূচনা করা হয়। দেশীয় ফলের উৎপাদন প্রায় দ্বিগুন হয়। মাঠ পর্যায়ের প্রায় ১২০০০ ব্লক সুপারভাইজারদের পদ আপগ্রেড করে উপ-সহকারী কৃষি অফিসার পদে পদায়ন করা হয়। দেশে দ্রুত শিল্পায়ন, বেকারত্ব দূরীকরণ, কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি, দেশব্যাপী ক্ষুদ্র ও মাঝারি (এসএমই) শিল্পের ব্যাপক প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে শিল্প নীতি-২০০৫ এবং এসএমই উন্নয়ননীতি কৌশল-২০০৫ প্রণয়ন করা হয়। দারিদ্র্য বিমোচন, কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধারা আরো বেগবান করার জন্য ‘স্মল এন্ড মিডিয়াম এন্টারপ্রাইজ’ (এসএমই) ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করা হয়। বিএসটিআই’র আধুনিকায়ন, ন্যাশনাল এ্যাক্রিডিটেশন বোর্ড গঠন, পেটেন্ট রাইট্স অফিস এবং ট্রেডমার্ক রেজিষ্ট্রি অফিসকে একীভূত করে পেটেন্ট রাইট্স, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর গঠন করা হয়। বন্ধ শিল্প যেমন কর্ণফুলী পেপার মিলস লিঃ (কেপিএম)-এর কস্টিক ক্লোরিন প্লান্ট ও খুলনা হার্ডবোর্ড মিল পুনঃচালু করা হয়। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পে মহিলাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে জাতীয়ভাবে শিল্পোদ্যোক্তা ফোরাম গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। সফল সার ব্যবস্থাপনা, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পখাতের উন্নয়ন, মানব সম্পদ উন্নয়নের জন্য ন্যাশনাল প্রোডাকটিভিটি অর্গানাইজেশনের আধুনিকায়ন করা হয়। লবন উৎপাদন দ্বিগুন হয়। চিনি শিল্পে প্রথম দু’বছরের প্রচেষ্টায় ১২ বছর ধরে চলা লোকসান বন্ধ হয় এবং ৩য় বছরের শেষে লাভজনক শিল্পে পরিণত হয়। এ সময়ে শিল্পখাতের প্রবৃদ্ধির হার ১২% উন্নীত হয়ে অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে যায়। এছাড়াও কৃষি ও শিল্প সেক্টরে অনেক উন্নয়ন কর্মসূচী গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হয়, ফলে দেশের ব্যাপক অর্থনৈতিক উন্নয়ন অর্জিত হয়।

জামায়াতের সেক্রেটারী জেনারেল সমাজ কল্যাণ মন্ত্রী থাকাকালে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক দারিদ্র্য বিমোচন ও মানব সম্পদ উন্নয়নের লক্ষ্যে সুদমুক্ত ঋণ, অনুদান, আয়বর্ধক প্রশিক্ষণ, ইত্যাদি কর্মসূচী গ্রহণ ও সম্প্রসারণ করা হয়। উপরোক্ত কর্মসূচী বাস্তবায়নের জন্য বাজেট প্রায় ৪ গুণ বৃদ্ধি করা হয় । বয়স্ক ভাতাভোগীদের সংখ্যা ৪ লক্ষ থেকে বৃদ্ধি করে ১৭ লক্ষে উন্নীত করা এবং ভাতা বৃদ্ধিসহ বাজেট প্রায় ৮ গুণ বৃদ্ধি করা হয়। গরীব-দুস্থ-অসহায় ব্যক্তিদের জটিল রোগের চিকিৎসার জন্য ডায়াবেটিক হাসপাতাল, হার্ট ফাউন্ডেশন ও অন্যান্য হাসপাতাল-এর কার্যক্রম সম্প্রসারণ করা হয়। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উন্নয়ন ও কল্যাণে ৮ দফা স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য ভাতা ও বিনাসুদে ঋণ প্রদান এবং প্রতিবন্ধী ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষা সম্প্রসারণের জন্য ছাত্রবৃত্তি প্রদানের স্থায়ী নিয়ম চালু করা হয়। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের আয়বর্ধক কমসূচী যেমন, মিনারেল ওয়াটার উৎপাদন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা ও বিপণন ব্যবস্থা চালু করা এবং প্লাষ্টিক দ্রব্যের উৎপাদন ও বিপণন ব্যবস্থা সম্প্রসারণ করা হয়।

সর্বোপরি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এমন একটি দুর্নীতিমুক্ত, জুলুম-নিপীড়নমুক্ত, দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত, সুখী-সমৃদ্ধশালী, স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ গড়তে চায় যেখানে থাকবে পূর্ণ শান্তি ও নিরাপত্তা এবং প্রতিটি নর-নারী পাবে পরিপূর্ণ মানবিক অধিকার ও মর্যাদা। জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি ও সামাজিক সুবিচার, আন্তঃসাম্প্রদায়িক সমঝোতা, সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধি, ইতিহাস-ঐতিহ্যের সংরক্ষণ, স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের সংরক্ষণ, সকল পেশা-ধর্ম-বর্ণ-গোত্রের মানুষের অধিকার ও কল্যাণের নিশ্চয়তা বিধান, গঠনমূলক, কল্যাণধর্মী এবং মানবতাবাদী পদক্ষেপের মাধ্যমেই এ লক্ষ্য বাস্তবায়ন সম্ভব। এ জন্য জামায়াতে ইসলামী সকল গণতন্ত্রকামী ও দেশপ্রেমিক শক্তির কল্যাণধর্মী, গণমুখী, নিয়মতান্ত্রিক ও গণতান্ত্রিক নীতি এবং কর্মতৎপরতাকে সমর্থন ও সহযোগিতা করে। দেশ ও জাতির স্বার্থ বিরোধী এবং কুরআন-সুন্নাহ পরিপন্থী সকল অপতৎপরতা প্রতিরোধে আপোষহীণ ভূমিকা পালন করে। জামায়াত চায় গণতান্ত্রিক পন্থায় ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রাথমিক ধাপ হিসাবে এদেশের বিদ্যমান আইন-কানুন বিধি বিধান সংস্কারের মাধ্যমে তা সময়োপযোগী করতে এবং ব্যাপক প্রশাসনিক সংস্কারের মাধ্যমে একটি আধুনিক কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে। জামায়াত বিশ্বাস করে, জনগণের আস্থা, বিশ্বাস, সমর্থন ও সহযোগিতা নিয়ে একটি নির্বাচিত সরকারের পক্ষেই ক্রমান্বয়ে একটি মর্যাদাশীল শক্তিশালি, সমৃদ্ধশালী কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।


বিদেশনীতি


০১. “সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে শত্র“তা নয়” এই নীতির ভিত্তিতেই বিদেশনীতি পরিচালিত হবে।

০২. দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, ভৌগোলিক অখণ্ডতাকে সবার ওপর স্থান দিয়ে বিদেশনীতি ও কার্যক্রমে প্রতিবেশী দেশসমূহসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ স¤পর্ক স্থাপনে গুরুত্ব দেয়া হবে।

০৩. বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় দেশের পক্ষে জোরালো ভূমিকা রাখা হবে।

০৪.দেশের মর্যাদা হানিকর কোন চুক্তি বা নীতি গ্রহণ বা বাস্তবায়ন করা হবে না এবং দেশের স্বার্থ পরিপন্থী সকল কালো চুক্তি স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের আলোকে পুনর্বিন্যাস ও পুনর্বিবেচনা করা হবে। কোন রাষ্ট্রকে তার সামরিক প্রয়োজনে এবং বাংলাদেশের নিরাপত্তার পরিপন্থি হয় এমন ক্ষেত্রে কোন রাষ্ট্রকে বাংলাদেশের স্থল, জলপথ, সমুদ্রসীমা ও আকাশপথ ব্যবহার করতে দেয়া হবে না।

০৫. আধিপত্যবাদ, সম্প্রসারণবাদের বিরোধীতা সহ একরাষ্ট্র কর্তৃক অন্য রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখা হবে।

০৬. বর্ণবাদ ও জাতিগত নিপীড়নের বিরুদ্ধে সোচ্চার থেকে প্রতিটি জাতিসত্তার স্বাতন্ত্র ও সকল জাতির আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকারের সংগ্রামের প্রতি পূর্ণ সমর্থন দেয়া হবে।

০৬. ডি-এইট (D-8) ও সার্ক (SAARC)-কে শক্তিশালী করা হবে এবং আসিয়ানের (ASEAN)সদস্যপদ লাভের জন্য বাস্তবমুখী উদ্যোগ নেয়া হবে। অন্যান্য আন্তর্জাতিক জোট ও সংস্থার সাথে সুসম্পর্ক ও পারস্পারিক সহযোগীতার সম্পর্ক রাখা হবে ।

০৭. ওআইসি অন্তর্ভুক্ত দেশসমূহের মধ্যে অর্থনৈতিক ও অন্যান্য সহযোগিতা আরো বৃদ্ধি করার ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

০৮. বিশ্বের সকল সম্ভাবনাময় শান্তি প্রিয় শক্তির সাথে আরও দৃঢ় ও আন্তরিক সম্পর্ক গড়ে তোলাসহ মুসলিম বিশ্বের সাথে বিশেষ সম্পর্ক রক্ষা করা হবে।



সংসদ বিষয়ক সংস্কার

কোন দলীয় বা নির্দলীয় সংসদ সদস্যগণ যাতে পার্লামেন্ট অধিবেশনে অনুপস্থিত থেকে সংসদকে অকার্যকর করতে না পারে সে জন্য সংসদের রুলস অব প্রসিজিউর এবং প্রয়োজনে, সংবিধান সংশোধন করা হবে। সংসদের স্থায়ী কমিটিগুলো সংসদের ২য় অধিবেশনেই গঠন করা হবে এবং এ কমিটিগুলোকে কার্যকর ও তৎপর রাখার ব্যবস্থা করা হবে।



প্রশাসনিক সংস্কার




০১. স্বাধীন দেশের উপযোগী একটি সৎ, দক্ষ, দায়িত্বশীল, জবাবদিহি ও সেবামূলক প্রশাসন গড়ে তোলা হবে।
 ০২. প্রশাসনকে দুর্নীতি মুক্ত করার জন্য সরকারী কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ও আর্থিক সুবিধা বৃদ্ধি করা হবে।
০৩. কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ ও পদোন্নতি দলীয় দৃষ্টিতে দেখা হবে না। বরং মেধা, দক্ষতা, যোগ্যতা, চরিত্র ও সিনিয়রিটির মাপকাঠিকে বিবেচনায় আনা হবে।
০৪. প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানসমূহকে আরো কার্যকরভাবে গড়ে তোলা হবে।
০৫. প্রশাসনের সকল পর্যায় থেকে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও প্রভুসুলভ আচরণ দূর করার প্রচেষ্টা চালানো হবে। এ ব্যাপারে কর্মকর্তাগণকে নৈতিক প্রশিক্ষণদান ও দেশ প্রেমে উজ্জীবিত করা হবে।
০৬. প্রশাসনে তদবীর বাণিজ্য কঠোরভাবে দমন করা হবে।
০৭. প্রশাসনে অহেতুক রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ করা হবে।
০৮. প্রশাসনের সর্বস্তরে E-Governance চালু করা হবে। 



স্বাস্থ্যসেবা

১. মানব উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ সূচক এবং মানুষের অন্যতম মৌলিক অধিকার চিকিৎসা সমাজের সর্বস্তরের মানুুষের কাছে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৮ (১) অনুযায়ী জনগণের পুষ্টির স্তর উন্নয়ন ও জনস্বাস্থ্যের উন্নতি সাধন করা এবং অনুচ্ছেদ ১৫ (ক) অনুযায়ী চিকিৎসার মৌলিক উপকারণ পৌঁছে দেয়া হবে।
২. অঞ্চল, গোত্র, ধর্ম-বর্ণ, নারী পুরুষ নির্বিশেষে সকলের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করা হবে।
৩. UH & FWC কে প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যার `First referal center\' হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা হবে। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা এবং গ্রাম,ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে গ্রহণযোগ্য মানের চিকিৎসা ব্যবস্থার সহজ লভ্যতা নিশ্চিত করা হবে। এতে পর্যপ্ত জনবল মানসম্পন্ন উন্নত ও ব্যবহারোপযোগী প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি,ঔষধ ও অন্যান্য সামগ্রীর সরবরাহ ও রক্ষণাবেক্ষণ নিশ্চিত করা হবে।
৪. প্রতিরোধযোগ্য মাতৃ মৃত্যুর হার (MMR) এবং শিশু মৃত্যুর হার (IMR) কমাবার জন্য সর্বাত্মক প্রয়াস চালানো হবে। এজন্য ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত মা ও শিশু স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য সন্তোষ জনক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং যত শীঘ্র সম্ভব প্রতিটি গ্রামে নিরাপদ ও স্বাস্থ্য সম্মত এসব সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করা হবে।
৫. জাতীয় প্রজনন স্বাস্থ্য উন্নয়নের সামগ্রিক কার্যক্রমকে একই কাঠামো ও সমন্বিত কার্যক্রমের আওতায় আনা হবে।
৬. আর্সেনিক দূষন জনিত রোগ প্রতিরোধে আর্সেনিক আক্রান্ত এলাকা সমূহ যথাযথ চিহ্নিত করা , জনগণকে সচেতন করা এবং পানির বিকল্প উৎস সন্ধানের জন্য সম্মিলিত প্রয়াস চালানো হবে।
৭. শহর ও গ্রামের জনসাধারণের মধ্যে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ,স্বাস্থ্য সম্মত পয়ঃ প্রণালী ব্যবস্থা গড়ে তোলা ও পরিবেশ দূষণ প্রতিরোধে সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
৮. নিম্নমানের ও অস্বাস্থ্যকর খাদ্য বিক্রয় ও সরবরাহের জন্য শাস্তির বিধান রেখে এসব আইনকে সংশোধন করা হবে। সমন্বিত খাদ্য ও ঔষধ প্রশাসন কর্তৃপক্ষ গঠন করা হবে, যাতে নিন্মমানের ও ভেজাল খাদ্য এবং ঔষধ থেকে জনগণের স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায়।
৯. হাসপাতাল বর্জ্যরে নিরাপদ, পরিবেশ বান্ধব ও ব্যয়-সাশ্রয়ী ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা হবে। হাসপাতাল এলাকার সন্নিহিত স্থান সমুহে শব্দ দূষণ প্রতিরোধে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সাথে সমন্বিত প্রয়াস চালানো হবে।
১০. দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠী ও অসহায় পরিবার সমূহকে স্থানীয় ভাবে চিহ্নিত করে শিশু ও মহিলাদের জন্য খাদ্য ও পুষ্টি সরবরাহে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
১১. সরকারী হাসপাতালের প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা এবং অবকাঠামো গড়ে তোলা হবে। এজন্য হাসপাতাল সমূহের ব্যবস্থাপনা, পরিবেশ ও প্রদত্ত সেবার মান সন্তোষজনক পর্যায়ে রাখার ব্যবস্থা করা হবে। জনগণ যাতে সরকারী হাসপাতালের সুযোগ সুবিধার পরিপূর্ণ সদ্ব্যবহার যাতে করতে পারে সে জন্য জনগণকে অবহিত, সচেতন ও উদ্বুদ্ধ করা হবে।
১২. মেডিকেল কলেজ ও বিশেষায়িত হাসপাতাল এবং সরকারী ও বেসরকারী হাসপাতাল/ক্লিনিক সমূহের নিয়ন্ত্রন পরিচালনা ও সেবার মান সম্পর্কে যথাযথ আইন প্রণয়ন ও নিয়ম নীতির প্রচলন করা হবে। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সহযোগীতা প্রদান করা হবে ।
১৩. জলবায়ূ পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পর্যায় সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
১৪. দূর্যোগ কবলিত জনগণের কাছে জরুরী সহায়তা হিসেবে স্বাস্থ্য সেবা, ঔষধ, যন্ত্রপাতি ইত্যাদি সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে। দূর্যোগ প্রবণ এলাকা সমূহে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত নিরাপত্তা বেষ্টনী গড়ে তোলা হবে।
১৫. প্রতিরোধযোগ্য রোগ (preventable disease) সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করা হবে। রোগ প্রতিরোধকে গুরুত্ব দিয়ে Surveillance এর মাধ্যমে রোগ নিয়ন্ত্রণের কর্মসূচীর সমন্বয় সাধন করা হবে।
১৬. স্বাস্থ্য শিক্ষা ও রোগ প্রতিরোধ বিষয়কে পাঠ্যসূচীর অর্ন্তভূক্ত করা ও প্রতিরোধযোগ্য সংক্রামক ব্যাধি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে সকল টিকাদান কর্মসূচীতে সকল শ্রেণীর জনগনের অংশ গ্রহণে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
১৭. শিল্প কারখানায় নিয়োজিত শ্রমিকদের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য শিল্পমালিক ও উদ্যোক্তাদের সহযোগিতা করা হবে।
১৮. মানসিক, শারীরিক প্রতিবন্ধী এবং বয়ো-বৃদ্ধদের জন্য বিশেষ সেবার ব্যবস্থা করা হবে।
১৯. দেশের অভ্যন্তরে সবরকম রোগের আর্ন্তজাতিক মানের সন্তোষজনক চিকিৎসা ব্যবস্থার আয়োজন করার চেষ্টা করা হবে।
২০. দূরারোগ্য, জটিল এবং গরীব রোগীদের সাবসিডি দেয়া হবে। এক্ষেত্রে সরকারী হাসপাতাল সমূহের সমাজ কল্যাণ তহবিলকে জোরালো করা হবে।
২১. এলাকাভিত্তিক ম্যালেরিয়ার প্রকোপ, কালাজ্বর, ফাইলেরিয়া এবং যক্ষা ও ঔষধ প্রতিরোধী যক্ষা (MDR-TB)প্রতিরোধে গবেষণা ও নির্ণয়ে সহযোগিতা করা হবে এবং এসব রোগের চিকিৎসা জনগণের কাছে অধিকতর সহজলভ্য করা হবে।
২২. WHO ঘোষিত Neglected tropical disease (NTD) এর মধ্যে যেসব রোগের আমাদের দেশে প্রাদুর্ভাব বেশি যেমন- ডেঙ্গু, কুষ্ঠ,ফাইলেরিয়া,মাটি বাহিত কৃমির উপসর্গ ইত্যাদি প্রতিরোধ
২৩. ঔষধ উৎপাদনে স্বনির্ভরতা অর্জন এবং কার্যকর নিরাপদ ও মানসম্পন্ন ঔষধের ক্রয় সাধ্য মূল্যে প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা হবে। উচ্চ প্রযুক্তি নির্ভর ঔষধ স্থানীয় ভাবে উৎপাদনের লক্ষ্যে প্রযুক্তি হস্তান্তরের ও উন্নয়নের জন্য সহায়ক নীতিমালা গ্রহণ করা হবে।
২৪. কালাজ্বর , ঔষধ প্রতিরোধী যক্ষা প্রভৃতি রোগের কার্যকর ঔষধ (যেমন-Inj.Amphotericin B) ইত্যাদি স্থানীয় ভাবে উৎপাদনের জন্য সহযোগিতা করা হবে।
২৫. অনুনমোদিত, ভেজাল ও নকল ঔষধের উৎপাদন, সংরক্ষন, বিতরণ ও ব্যবহারের বিরুদ্ধে আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করা হবে ।
২৬. কিউরেটিভ হেলথ কেয়ার এর বাজেট বৃদ্ধি ও অবকাঠামোগত উন্নয়নে যথাযথ গুরুত্ব দেয়া হবে।
২৭. অসংক্রামক রোগের কারণে সৃষ্ট অসুস্থতা ও অকাল মৃত্যু হ্রাস করার জন্যে সমন্বিত উপায়ে সকল পর্যায়ে প্রাথমিক প্রতিরোধ, চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের যথাযথ কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। সরকারী ও বেসরকারী খাতের অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে প্রধান প্রধান অসংক্রামক ব্যধি সমুহ যেমন: হৃদরোগ, ক্যান্সার, ডায়াবেটিস প্রভৃতি সর্ম্পকে ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টি, চিকিৎসা সেবা প্রদান এবং অস্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ ও জীবন ধারা পরিবর্তনের কাজে উদ্বুদ্ধ করা হবে।
২৮. সংক্রামক রোগ যেমন: শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহ, ডায়ারিয়া, ডেঙ্গু , যক্ষা প্রভৃতি প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রনের বর্তমান কর্মসূচী জোরদার এবং আরও সম্প্রসারণ করা হবে।
২৯. চিকিৎসা সেবা সহ স্বাস্থ্য খাতের সামগ্রীক ব্যবস্থাপনায় তথ্য প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ও সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে। স্বাস্থ্য খাতের গবেষণা ও সেবা প্রদান ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রয়াসকে শক্তিশালী করার জন্য বিশ্ব ও আঞ্চলিক তথ্য নেটওয়ার্কের সাথে কার্যকর সংযোগ প্রতিষ্ঠা করা হবে।
৩০. ধূমপান ও মাদকাসক্তি দূরীকরনে সচেতনতা এবং কঠোর ও সমন্বিত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
৩১. HIV/AIDS এবং STI(sexually transmitted infections) নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে সকল ধর্মীয় নেতা এবং মিডিয়ার মাধ্যমে গণসচেতনতা সৃষ্টি করা হবে। ব্যাপক প্রচারাভিযান চালিয়ে জনগণকে ধর্মীয় মূল্যবোধে ও সংযত জীবনযাপনে দীক্ষিত করা হবে।
৩২. তৃণমূল জনগণের দরগোড়ায় চিকিৎসা সেবা পৌছাবার লক্ষ্যে এ খাতকে দূর্নীতিমুক্ত করা হবে।
৩৩. দূর্ঘটনা, আঘাত প্রাপ্ত, পোড়া রোগী ও সহিংসতার শিকার নারীর চিকিৎসার ক্ষেত্রে সরকারী সুযোগ সুবিধা আরো বাড়ানো হবে। এক্ষেত্রে বেসরকারী প্রতিষ্ঠান সমূহকে উদ্বুদ্ধ করা হবে।
৩৪. জাতীয় বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে পর্যাপ্ত বরাদ্দের ব্যবস্থা করা হবে।
৩৫. নব-আবির্ভুত যেমন- SARS,Avian Flue, Anthrax ও পুনরায় উদ্ভুত রোগসমূহ মোকাবিলার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
৩৬. সনাতন চিকিৎসা পদ্ধতিকে বিজ্ঞান ভিত্তিক ও মানোন্নয়ন করা হবে।
৩৭. চিকিৎসা সেবার সকল ক্ষেত্রে Medical Ethics মানার ব্যাপারে গুরুত্ব দেয়া হবে এবং সচেতনতা সৃষ্টি করা হবে।
৩৮. প্রয়োজনের ভিত্তিতে চিকিৎসা,শিক্ষাও প্রশিক্ষন কার্যক্রমকে আরো গণমুখী ও যুগোপযোগী করা হবে। চিকিৎসা জনশক্তির শিক্ষাকালীন সময়ে সেবার মান, রোগীর প্রতি সংবেদনশীল আচরণ,মমত্ববোধ ও নৈতিকতা বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টিতে গুরুত্ব দেয়া হবে।


আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও সন্ত্রাস দমন


০১. জনগণের জান, মাল ও ইজ্জতের নিরাপত্তা বিধান করা হবে।
০২. দলমত নির্বিশেষে অপরাধী যত বড় শক্তিশালীই হোক না কেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
০৩. সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, খুন, ডাকাতি, ছিনতাই, ধর্ষণ, নারী নির্যাতন, রাহাজানি, চোরাচালান, মাদকব্যবসা, নারী ও শিশু পাচারসহ সকল অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড কঠোর হস্তে দমন করা হবে।
০৪. নিরাপরাধ লোক যাতে কোনভাবেই হয়রানির শিকার না হয় তার কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
০৫. পুলিশ, বিডিআর, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীকে প্রয়োজনীয় পেশাগত ও নৈতিক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে এবং উপযুক্ত যানবাহন ও আধুনিক উপকরণে সজ্জিত করা হবে। বেতন-ভাতা বৃদ্ধিসহ এক্ষেত্রে প্রশাসনিক সংস্কার করা হবে।
০৬. কমিউনিটি পুলিশিং জোরদার করা হবে।
০৭. চোরাচালান, পাচার ইত্যাদি সীমান্ত অপরাধ দমনে প্রয়োজনীয় সীমান্ত সড়ক নির্মাণ করা হবে।


দুর্নীতি দমন

০১. জাতীয় উন্নতি ও অগ্রগতির পথে অন্যতম প্রধান বাধা দুর্নীতি উচ্ছেদের লক্ষ্যে দুর্নীতি দমন কমিশনকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করা হবে যেন উক্ত প্রতিষ্ঠান স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে।
০২. দুর্নীতির বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
০৩. দুর্নীতি দমন কমিশনের পাশাপাশি দুর্নীতি পরায়ণ কর্মকর্তা কর্মচারীদের বিরুদ্ধে কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
০৪. দায়িত্বশীল পদে আসীন দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তির জন্য কঠোর শাস্তির বিধান করে আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগের ব্যবস্থা করা হবে।


দ্বিতীয় অংশ - (ক্লিক)
তৃতীয় অং- (ক্লিক)


রেফারেন্স : জামায়াত ইসলামীর আফিসিয়াল ওয়েবসাইট   

0 comments:

Comment Please

মন্তব্য..

সবিস্তার সূচীপত্র
টেম্পলেট কাষ্টমাইজেশন - তরঙ্গ ইসলাম | তরঙ্গ ইসলাম