◄ ছাত্রলীগ ► বাংলাদেশের সন্ত্রাসী সংগঠন ◄
বাংলার স্বাধীনতা আনলে যারা
আমরা তোমাদের ভুলবনা ......
বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের সোনালি ইতিহাস ছাত্রদের আন্দোলনের কাছে অসাধারণ ঋণী। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে স্বাধীনতার পরে ছাত্ররাজনীতির কোনো স্বচ্ছ এবং গঠনমূলক ধারা গড়ে উঠেনি আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। দলীয় রাজনীতি আর আধিপত্য প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো পরিণত হয়েছে বারবার যুদ্ধক্ষেত্রে। এর সাথে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, ভর্তিবাণিজ্য এসব তো আছেই। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের সংঘর্ষে ছাত্রছাত্রী নিহত হওয়ার ঘটনা সারা পৃথিবীতে বিরল হলেও বাংলাদেশে প্রায় নিত্য নৈমিত্যিক ঘটনা।
যেখান থেকে বেরিয়ে আসবে সৎ, দক্ষ ও দেশপ্রেমিক নাগরিক; যাদের ছোঁয়ায় সমৃদ্ধির উচ্চশিখরে আরোহণ করবে বাংলাদেশ, আজ সেখানে কলমের পরিবর্তে অস্ত্র দেখা যায়। বই-খাতার বদলে হাতে হাতে শোভা পায় মদ-গাঁজা ও ফেন্সিডিলের নীল ছোবল। মেধার লড়াইয়ের পরিবর্তে আধিপত্য বিস্তারের লড়াইয়ে সর্বশক্তি ব্যয় করতে দেখা যায় বিদ্যাপীঠের বিদ্যার্থীদের। পিতা-মাতার স্বপ্ন খুন হয়ে কফিন হয়ে দরজায় কড়া নাড়তে দেখা যায়।
২০০৮-এর ২৯ ডিসেম্বরে একটি প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের মাধ্যমে অগণতান্ত্রিক সরকার পরিবর্তিত হয়ে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করে। দেশের মানুষ গণতন্ত্র ফিরে পাওয়ার প্রত্যাশায় আশান্বিত হয়ে ওঠেন। ছাত্ররা শিক্ষার অন্বেষায় প্রিয় ক্যাম্পাসে ছুটে আসে। কিন্তু হায়! ক্যাম্পাসে এসে দেখে প্রিয় প্রতিষ্ঠান নেকড়ের আঁখড়ায় পরিণত হয়েছে। কোথাও শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নেই। নেই জীবনের নিরাপত্তা। প্রতিদিন সংবাদ হয়ে ছড়িয়ে পরে অসংখ্য ঘটনা। যে ঘটনাগুলোর জন্ম দেয় ক্ষমতাশীন দলের ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের দলীয় সংগীত ‘কাঁপিয়ে তুলবো সারা চরাচর কাঁপাবো দিগি¦দিক’। সত্যিই তাদের দলীয় সংগীতের মত আজ প্রতিটি জনপদ ছাত্রলীগের ভয়ে কাঁপছে। বন্ধ হয়ে যাচ্ছে একের পর এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। লাশ হয়ে ফিরছে প্রিয় ভাই, আদরের সন্তান। সম্ভ্রম হারাচ্ছে বোন। অরক্ষিত হচ্ছে জীবনের নিরাপত্তা।
আজ ছাত্রলীগের সার্বিক কর্মকাণ্ড নিয়ে পর্যালোচনা করলে যে সত্যগুলো বেরিয়ে আসে তা সমগ্র জাতিকে ভাবিত করে। এভাবে চলতে থাকলে নিশ্চিত দেশ এক মহা সঙ্কটে পতিত হবে।
একটি ছাত্রসংগঠনের যে যে বৈশিষ্ট্য থাকা দরকার ছাত্রলীগের মাঝে তার অণুপরিমাণ বৈশিষ্ট্যও লক্ষ্য করা যায় না। ছাত্রলীগের নিয়মিত কাজের অংশ হিসেবে খুন, ধর্ষণ, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, পতিতাবৃত্তি, অস্ত্রব্যবসা, আন্ডারওয়ার্ল্ড কানেকশন, মাদকব্যবসা, সিট ও ভর্তি বাণিজ্য, বিরোধী আদর্শের অনুসারীদের ছাত্রাবাস ও বাসাবাড়িতে হামলা, ভাঙ্চুর ও তা দখল, টেন্ডারবাজি, ছিনতাই, শিক্ষক লাঞ্ছনা, সাংবাদিক নির্যাতন, সংখ্যালঘু নির্যাতন, চুরিসহ মানবতাবিরোধী বৈশিষ্ট্যগুলো সকালের সূর্যের ন্যয় সত্য হয়ে বিকশিত হচ্ছে। সময় যত গড়াচ্ছে ছাত্রলীগের অপকর্মের রেকর্ডও তত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাদের এই অপকর্মের কারণে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে নিজেদের অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষে নিহত হয়..
► ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রলীগ সেক্রেটারি আবুল কালাম রাজিব
► ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র আবুবকর ছিদ্দিক
► চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগনেতা মু. আসাদুজ্জামান
► ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থানা ছাত্রলীগের সভাপতি ফারুক
► যশোর সদর উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রিপন হোসেন ওরফে দাদা রিপন
► রাজধানীর আদাবরের ৪৩ নং ওয়ার্ড সভাপতি সৈয়দ ওয়াহিদুজ্জামান রমিজ
► পঞ্চগড় ছাত্রলীগের কর্মী ফারুক
যেখানে তারা নিজেরা নিজেরা মারামারি করে নিজেদেরই মতাবলম্বী একই দলের নেতা কর্মী হত্যা করতে পারে সেখানে ভিন্ন মতাবলম্বী সংগঠনের সাথে যখন বিনা কারণে সংঘর্ষ বাধায় তখন অপর সংগঠনের নেতা-কর্মী হত্যা করা তাদের জন্য সহজ ও সাধারণ ঘটনা ছাড়া কিছুই নয়।
► ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএম হলের ছাত্রলীগের সভাপতি সৈকত এর হাত পায়ের রগ কেটে দেয় সেক্রেটারী আনুর গ্র“পের কর্মীরা।
► জিয়াহলের ছাত্রলীগ নেতা সাইফুল ইসলাম সোহাগের রগ কেটে দেয় নিজগ্র“পেরই কর্মীরা। যার সুবাদে সে কুমিল্লা জেলা উত্তরের বর্তমান সভাপতি।
► জহরুল হক হলের সেক্রেটারী রাহাত এর হাতের রগ কেটে নেয় সভাপতি সুমন গ্র“পের কর্মীরা।
► সিলেট সরকারী কলেজের ছাত্রশিবিরের কয়েদ নামে এক কর্মীর হাতের রগ কেটে নেয় ছাত্রলীগ।
► জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর সেখানকার ছাত্রলীগের কার্যক্রম লোক দেখানোর জন্য কিছুদিন স্থগিত রাখা হয়। অন্যদিকে সারাদেশে বিভিন্ন শিাপ্রতিষ্ঠানে তারা একের পর এক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটিয়ে যাচ্ছে। এসব সংঘর্ষের অধিকাংশই অভ্যন্তরীণ কোন্দল।
► রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ মুজিবুর রহমান হলে বোমা বানাতে গিয়ে আহত হয় ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আউয়াল কবির জয়। একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাত্রী লাঞ্ছনাসহ অসামাজিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকার অভিযোগে প্রশাসন কাউসার নামে এক ছাত্রলীগ নেতাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করে।
► ঢাকা কলেজে ও ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষের পর অস্ত্র ও অর্থসহ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করে পুলিশ।
আন্দোলনে কোন ভূমিকা না থাকলেও সরকার দলের সুবিধা নিয়ে চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজি করে যাচ্ছে ছাত্রলীগের নেতারা। ঢাবি শিক্ষকদের ব্যাচেলর কোয়ার্টার নির্মাণের টেন্ডার নিয়ে ছাত্রলীগের কয়েকজন সহ-সভাপতি মিলে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় যুবলীগ নেতাদের সঙ্গে। এর আগে মূলত টেন্ডার নিয়েই বড় ধরনের সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ। ঢাবি ক্যাম্পাস জুড়ে চলছে নীরব চাঁদাবাজি। পলাশীতে জহুরুল হক হল এলাকায় জাদুঘর নির্মাণ নিয়ে ঘটেছে চাঁদাবাজির ঘটনা।
ভর্তি বাণিজ্য
টেন্ডারবাজি ও চাঁদাবাজির সঙ্গে যোগ হয়েছে ছাত্রলীগ নেতাদের ভর্তি-বাণিজ্য। রাজধানীর নামিদামি কলেজগুলোতে অনার্স প্রথম বর্ষে ভর্তি নিয়ে ছাত্রলীগের অবৈধ বাণিজ্যে বিব্রত প্রশাসন। ছাত্রলীগের চাপে টিকতে না পেরে ঢাকা ও বাঙলা কলেজের ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ। সূত্র জানায়, সরকারি কলেজগুলোতে ১০০ থেকে ৫০০টি আসনে অবৈধভাবে ভর্তির আবদার করছেন ছাত্রলীগের নেতারা। এর মাধ্যমে এরই মধ্যে কোটি টাকারও বেশি লেনদেন হয়েছে বলে সংশি−ষ্টদের অভিযোগ। ভর্তি-বাণিজ্যের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ঢাকা কলেজ, ইডেন কলেজ, মিরপুর বাঙলা কলেজ, তিতুমীর কলেজ, তেজগাঁও কলেজ, সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল কলেজ।
সিট বাণিজ্য
ভর্তির পর ছাত্র-ছাত্রীদের হলে তুলতে ‘সিট বাণিজ্য’ করে ছাত্রলীগ। প্রতিটি সিটে একজন তোলার বিনিময়ে কমপক্ষে ১০ হাজার টাকা নেওয়া হয়। এবার ইডেন ও বদরুননেসা কলেজে অর্থের বিনিময়ে প্রায় ৫০০ ছাত্রীকে সিটে তোলা হয়েছে। আর এই ঘটনার আড়ালেই জঘন্যতম সত্য জাতির সামনে উন্মোচিত হয়েছে।
ইডেন কলেজে গত ১২ মার্চ ছাত্রলীগের দু’গ্র“প ভর্তিবাণিজ্যের টাকার ভাগ নিয়ে হকিস্টিক, রড, ক্রিকেট স্ট্যাম্প নিয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে মুখোমুখি অবস্থান নেয়। ক্ষোভ জমেছিল ঐ কলেজ শাখার ছাত্রলীগের সভানেত্রীসহ অন্যদের বিরুদ্ধে। এখানে ভর্তিবাণিজ্য এখন ওপেন সিক্রেট। শুধু এখানেই বা কেন, এই ভর্তিবাণিজ্য পরিব্যাপ্ত হয়েছে প্রায় সকল কলেজে। ছাত্রলীগ নেতাদের পয়সা না দিয়ে কারো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে আর ভর্তি হওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ইডেন কলেজে ছাত্রলীগের বিক্ষোভে দ্বিতীয় কারণটি বড় কুৎসিত, বড় বেদনাদায়ক, বড় বিভীষিকাময়। এবার ছাত্রলীগেরই এক পক্ষ আর এক পক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে যে, ইডেন কলেজ ছাত্রলীগ সভানেত্রী প্রধানত প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রীদের দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে জোরপূবর্ক দেহব্যবসা করিয়ে আসছে। ঐ নেত্রীরা ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতাদের বাসায় এবং রাজধানীর কাকরাইল, গুলিস্তান, এলিফ্যান্ট রোড, মালিবাগ, মতিঝিল, মোহাম্মদপুর ও মিরপুরের আবাসিক হোটেলগুলোতে তাদের যেতে বাধ্য করে। অভিযোগ আরো অনেক। ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ও মন্ত্রীদের চরিত্রেরও একটা বহিঃপ্রকাশ এর মধ্যদিয়ে ঘটে গেল। তারা ছাত্রলীগের মহিলা নেত্রীদের দ্বারা তরুণী ছাত্রী সংগ্রহ করে যে ভোগ বিলাসে মেতে উঠেছেন তারও প্রমাণ পাওয়া গেল ইডেন ছাত্রীদের অভিযোগ থেকে।
পিরোজপুরে ছাত্রলীগের নেতা টাইগার মামুন ১০ম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে জিম্মী করে যে ভিডিওচিত্র বাজারে ছেড়েছে তা ছাত্রলীগের পর্ণগ্রাফি ব্যবসার সামান্য একটি চিত্র মাত্র।
ছাত্রলীগের আন্ডার ওয়ার্ল্ড কানেকশন
শুধু টেন্ডারবাজি-চাঁদাবাজি আর তদবির নয় ছাত্রলীগ নেতারা জড়িয়ে পড়েছেন নানাবিধ আন্ডারওয়ার্ল্ড কানেকশনে। হত্যাকাণ্ডসহ নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়েছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতারা। নিজেদের স্বার্থে, কখনো বা ভাড়ায় অংশ নিচ্ছে নানা কিলিং মিশনে। এদের অনেকেই শীর্ষ সন্ত্রাসী। সূত্র জানায়, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফর গিয়ে সে দেশে পালিয়ে থাকা বাংলাদেশের ২০ জন সন্ত্রাসীর তালিকা ভারত সরকারকে দিয়েছেন। তার মধ্যে অন্যতম মিরপুর থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদত। সরকার ঘোষিত শীর্ষ সন্ত্রাসী কালা জাহাঙ্গীরের সেকেন্ড ইন কমান্ডখ্যাত এই সন্ত্রাসী জীবিতদের মধ্যে সবচেয়ে দুর্ধর্ষ। গার্মেন্টসের ঝুট থেকে তার দৈনিক চাঁদা আদায় হয় ৪ লাখ টাকা। শাহাদতের সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে কাজ করছে আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী খোরশেদ। খোরশেদ ছাত্রলীগ ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক। ছাত্রলীগ মহানগর উত্তরের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক সরকার ঘোষিত শীর্ষসন্ত্রাসী কিলার আব্বাস। সাইদুর রহমান নিউটন হত্যা মামলাসহ ২ ডজন হত্যা মামলার আসামী সে।
মীরপুর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি বশির আহমেদ। এক সময় টাক বাহিনীর প্রধান এই ৪০ বছর বয়স্ক ছাত্রলীগ নেতা বর্তমানে তার সেকেন্ড ইন কমান্ড সোহেলকে দিয়ে আন্ডার ওয়ার্ল্ড নিয়ন্ত্রণ করছে।
ঢাকা মহানগর উত্তরের সহ-সভাপতি হারুনুর রশীদ লিটন। লেদার লিটন নামেই সে সমধিক পরিচিত। সেভেন স্টার গ্র“পের সদস্য এই ছাত্রলীগ নেতা শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকাভূক্ত। এ ছাড়াও মিরপুর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সভাপতি তৌফিক আলম খান পিয়াল ও মোহাম্মদপুর থানার সাধারণ সম্পাদক তুহিনের বিরুদ্ধে রয়েছে সন্ত্রাস ও হত্যার একাধিক অভিযোগ। মার্চ মাসের ১২ তারিখে পিয়াল ভারতে সন্ত্রাসী কার্যকলাপের অভিযোগে ভারতীয় পুলিশের কাছে আটক হয়।
তেজগাঁও কলেজের নিয়ন্ত্রক ফরিদুর রহমান খান ইরান পুলিশের তালিকাভূক্ত আসামী। দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী সুইডেন আসলামের ঘনিষ্টজন হিসেবে তার পরিচিতি রয়েছে। সুইডেন আসলামের সাথে সে কয়েকবার গ্রেফতারও হয়েছে। তেজগাঁও থানার আহ্বায়ক সায়েম কিলার আশিকের ঘনিষ্ঠজন। কাওরান বাজারের থ্রি-মার্ডারের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতার সূত্র পাওয়া যায়।
এক বছরের অর্জন
ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে গত এক বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ প্রায় সব ক্যাম্পাসে রক্তপাত হয়েছে। সেসব রক্তপাত রোধে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। গত এক বছরে ছাত্রলীগ হেন কোনো অপকর্ম নেই যার সাথে জড়িয়ে পড়েনি। যে জন্য ছাত্রলীগের সাথে নতুন একটি নাম যোগ হয় যার নাম চাপাতিলীগ। তাদের অব্যাহত টেন্ডার দখল, জায়গা দখল, হল দখল, প্রভাব বিস্তার প্রভৃতি অপকর্মে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে সাধারণ মানুষ। এসব ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীসহ আওয়ামী লীগের দায়িত্ববান ব্যক্তিরা মৃদু ভর্ৎসনাও করেছেন। এসব মান-অভিমানে যে কার্যত কোনো ফলোদয় হয়নি, তা এখন দিবালোকের মতো স্পষ্ট। ছাত্রলীগের এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সরকারের নীরব ভূমিকায় তারা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে আরো অনেক বেশি। সেটাই খুব স্বাভাবিক। এ অবস্থায় আওয়ামী লীগের ঘোর সমর্থক পত্রপত্রিকাও প্রধানমন্ত্রীকে ছাত্রলীগ সামলানোর পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে। সরকার ঘরানার এমনই একটি পত্রিকা লিখেছে, ‘মহাজোট ক্ষমতায় আসার পরপরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজির অভিযোগ শুরু হয়। অভিযোগ রয়েছে, জগন্নাথ হলের নতুন ভবনের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে ছাত্রলীগ। কারণ ছাত্রলীগ নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের কাজে বরাদ্দ করা অর্থের মোট ২৫ শতাংশ দাবি করে। অর্থ না দেয়ায় ছাত্রলীগ নেতারা ভবনের কাজ বন্ধ করে দেন। কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত একটি সমঝোতা হয়।
চারুকলা অনুষদ শাখার সভাপতি হয়েই চাঁদাবাজিতে জড়িয়ে পড়েন জামিরুল ইকবাল আজাদ। সভাপতি হওয়ার মাত্র কয়েক দিন পরই মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে তিনি নিউ মার্কেটের বিপরীতে নির্মাণাধীন বহুতল ভবনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিশ্বাস বিল্ডার্সের কাজ বন্ধ করে দেন।
প্রক্টর ও রেজিস্ট্রার অফিস সূত্রে জানা যায়, গত বছর সরকার বদলের সাথে সাথেই বিভিন্ন হলের প্রায় ৩২৭টি কক্ষ দখল করে নেয় ছাত্রলীগ। এ সময় হল থেকে বিতাড়িত করা হয় তিন হাজার ৮৮ জনকে। ১৫টি আবাসিক হল দখল করে বিতাড়িত করে আবাসিক ছাত্রদেরকে। ঢাবি শিক্ষকদের ব্যাচেলর কোয়ার্টার নির্মাণের টেন্ডার একটি বিশেষ কোম্পানিকে পাইয়ে দেয়ার বিনিময়ে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ছাত্রলীগের কয়েকজন। .... চাঁদাবাজি করার সময় টিএসসির মোড় থেকে ছয়জন ছাত্রলীগ কর্মীকে পুলিশ হাতেনাতে গ্রেফতার করে, যার মধ্যে ঢাবির পাঁচ ছাত্র ও ঢাকা কলেজের এক ছাত্র রয়েছেন।
শাহবাগ পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত বছরের জুন মাসের মাঝামাঝি বনানী চেয়ারম্যান বাড়ির এক ব্যবসায়ীর গাড়ি মধ্যরাতে ছিনতাই করে নিয়ে যায় ছাত্রলীগ কর্মীরা। পুলিশ ছিনতাইয়ের অভিযোগে ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সদস্য নজরুল ইসলাম খান জেরীকে গ্রেফতার করে। জেরী গাড়ি ছিনতাইয়ের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি লাভলু মোল্লা শিশির সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবীর গাড়ি বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠে আটকে রেখে চাঁদা দাবি করে। ওই আইনজীবী গাড়ি উদ্ধারের জন্য শাহবাগ থানায় ফোন করলে পুলিশ তাকে ছাত্রলীগ নেতাদের সাথে আপস করার পরামর্শ দেন।’
ছাত্রলীগের এতসব মানবতাবিরোধী জঘন্য অপকর্মের বিচার না করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের অপকর্মকে নির্ভিঘে চালিয়ে নেয়ার জন্যে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক পদ থেকে পদত্যাগ করলেন।
এতে হলো কী? বেড়ে গেল ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টি ছাত্রলীগের অন্য সকল কুকীর্তিকে হার মানিয়েছে। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নিজেদের ভিতর কোন্দলের কারণে নিহত হয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রলীগ সেক্রেটারি আবুল কালাম রাজিব। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবুবকর ছিদ্দিক। বহিরাগত ছাত্রলীগ এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের আভ্যন্তরীন সংঘাতে নিহত হয় মু. আসাদুজ্জামান। টাকা ভাগাভাগীকে কেন্দ্র করে নিহত হয় ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থানা ছাত্রলীগের সভাপতি ফারুক। আভ্যন্তরীন কোন্দলে যশোর সদর উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রিপন হোসেন ওরফে দাদা রিপন নিহত হয়। টেন্ডার বক্স ছিনতাই করার সময় চাপাতির আঘাতে পঞ্চগড় ছাত্রলীগের কর্মী ফারুক নিজদলের সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত হয়। রাজধানীর আদাবরের ৪৩ নং ওয়ার্ড সভাপতি সৈয়দ ওয়াহিদুজ্জামান রমিজ পহেলা বৈশাখের টাকা ভাগাভাগীতে নিহত হয়। রাজশাহী পলিটেকনিকে ছাত্রলীগের হামলায় নিহত হয় ছাত্রমৈত্রীর নেতা সানি। ছাত্রলীগের হামলায় নিহত হয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রশিবির সেক্রেটারি শরীফুজ্জামান নোমানী, জামালপুরের ছাত্রশিবির সভাপতি হাফেজ রমজান আলী।
এত এত হত্যাকাণ্ড এবং ছাত্রলীগের অপকর্মে যখন আওয়ামী সরকার ইমেজ সঙ্কটে হাবুডুবু খাচ্ছিল যখন সরকারের ব্যর্থতার কথা চারিদিকে শোনা যাচ্ছিল, তখনই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ কর্মী ফারুক হোসেনকে খুন হতে দেখা যায়। এবং সাথে সাথেই খুনের তীর ছোড়া হয় ছাত্রশিবিরকে লক্ষ্য করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন আবুবকর খুন হয় তখনও দেখি খুনি হিসেবে ছাত্রদলকে দায়ী করা হয়। কিন্তু ঘটনাটি যেহেতু ছাত্রলীগের দু’গ্র“পের কারণে হয়েছে সেহেতু ছাত্রদলকে নিয়ে মন্ত্রীদের বক্তব্য নিস্ফল হওয়ায় লজ্জা ঢাকতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ফারুক হত্যার প্রতিশোধ নিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন ঘোষণা করলেন- “যারা আমার নির্দেশ পালনে অবহেলা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।”
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আরেকটু এগিয়ে বললেন- সারা দেশে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের উৎখাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। শিবিরের আধিপত্য রয়েছে এমন সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও এলাকা থেকে তাদের উৎখাতে চিরুনি অভিযান পরিচালনার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এর আগে ১০ ফেব্র“য়ারি বুধবার রাজশাহী ডিআইজি অফিসে ও দলীয় নেতাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠকে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শিবিরকে উৎখাতে সর্বশক্তি নিয়োগ করার নির্দেশ দেন এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের শিবিরের আস্তানা গুঁড়িয়ে দেয়ার জন্য পুলিশের প্রতি আহ্বান জানান।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের একজন কর্মী নিহত হওয়ার ঘটনায় সরকার উপযুক্ত তদন্তের মাধ্যমে সন্ত্রাসীদের খুঁজে বের করে বিচারের সম্মুখীন করবে এমনটাই আশা ছিল সবার। কিন্তু তা না করে কোনো প্রকার তদন্ত হওয়ার আগেই সরকার ঘোষণা দিয়ে সারা দেশে শিবিরের বিপক্ষে একটা ঢালাও ধরপাকড়ের নির্দেশ দিয়েছে পুলিশবাহিনীকে। করিৎকর্মা পুলিশ চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবির নেতা শাহীনকে মুখের মধ্যে বন্দুকের নল ঢুকিয়ে গুলি করে হত্যা করে। চট্টগ্রামে ২ শিবিরকর্মী মহিউদ্দিন মাসুম, হারুনুর রশিদ কায়সার হত্যার পর সারা বাংলাদেশে শিবির নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার কিসের ঈঙ্গিত বহন করে তা এখন আর বুঝতে কারোই বাকি নেই।
মিডিয়ায় আলোচিত ছাত্রলীগের হাতে ১৩টি হত্যাকাণ্ডের পর সরকারযন্ত্রে উদাসীনতা আর ফারুক হত্যাকাণ্ডের পর সরকারের অতি উৎসাহী হয়ে সারা বাংলাদেশে অভিযান চালানো সামগ্রিকভাবে এটাই প্রমাণ করে যে ফারুক হত্যাকাণ্ডটি ছাত্রলীগের লাগামহীন ভয়ঙ্কর কর্মকাণ্ড থেকে মানুষের দৃষ্টিকে অন্য দিকে ফেরানোর অপকৌশল মাত্র।
একটি অন্যায় আরেকটি অন্যায়ের জন্ম দেয়। একটি হত্যাকাণ্ড আরেকটি হত্যাকাণ্ডের পথ প্রস্তুত করে। একটি অবিচার আরেকটি অবিচার আর আইন হাতে তুলে নেয়ার পরিস্থিতি তৈরি করে। ১৯৮২ সাল থেকে আজ পর্যন্ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েই ছাত্রশিবিরের ১৭ জন নেতা-কর্মীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে।
ছাত্রলীগ বনাম ছাত্রশিবির
কোনো সংগঠন তার মৌলিক চরিত্রে সন্ত্রাসী হয়ে উঠলে তার নগ্ন বহিঃপ্রকাশ ঘটে তার ক্ষমতায় থাকার সময়ে। ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামী ৪ দলীয় জোটের অংশীদার ছিল। এই সময়ে প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসীদের হাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের একজন মারা গেলেও শিবিরের হাতে অন্য কোনো সংগঠনের কেউ মারা যায়নি। সারা বাংলাদেশে ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত ছাত্রশিবিরের ২০ জন নেতা-কর্মী মারা যায় কিন্তু শুধু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ই না, এই সময়ে কোনো ক্যাম্পাসেই শিবিরের কারণে কোনো নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটে নি। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অংশীদার থেকেও অন্যান্য ছাত্রসংগঠনের মতো নৈরাজ্য সৃষ্টির পথে না গিয়ে গঠনমূলক রাজনীতি তৈরির এই উদ্যোগ প্রমাণ করে বিভিন্ন সময়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়াটা অব্যাহত দমন-নিপীড়নের একটা অবশ্যম্ভাবী প্রতিক্রিয়া ছিল মাত্র।
একটা বিষয় না বললেই নয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবির কখনই কথিত আধিপত্য প্রতিষ্ঠার সুযোগ পায়নি। এখানে বেশিরভাগ সময়ই ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনের একক আধিপত্য থাকে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সন্ত্রাস যদি শুধু শিবিরের সাথে সংশি−ষ্ট বিষয়ই হবে তাহলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর থেকে মুক্ত থাকার কথা ছিল। কিন্তু পরিসংখ্যান বলে, স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত ৭৫ জন ছাত্র নিহত হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিভিন্ন সংগঠনের পারস্পরিক এবং অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সংঘর্ষে। এর মধ্যে শিবিরের সাথে সংশি−ষ্ট ঘটনা নেই একটিও। ঢাবির এই হত্যাকাণ্ডের সংখ্যা দেশের অন্যান্য সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট হত্যকাণ্ডের যোগফলের চেয়েও বেশি।
অসত্য প্রোপাগাণ্ডার মাধ্যমে যারা সন্ত্রাসকে শুধুমাত্র ছাত্রশিবিরের সাথে জুড়িয়ে দিতে চান তারা সামগ্রিক সত্যকে পাশ কাটিয়ে এক ধরনের সাম্প্রদায়িক মনোভাবের প্রতিনিধিত্ব করেন মাত্র। মানবাধিকার সংস্থা ‘অধিকার’-এর তথ্য মতে বর্তমান সরকারের প্রথম বছরে রাজনৈতিক সহিংসতায় নৃশংসভাবে খুন হয়েছে ২৫১ জন, আহত হয় ১৫ হাজার ৫৫৯ জন। যার অধিকাংশই হয়েছে সরকারি দলের সন্ত্রাসের কারণে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মত দেশের অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তথ্যউপাত্ত বিশে−ষণ করলেও একই চিত্র পাওয়া যায় যে শিবির বাংলাদেশে সবচাইতে বেশি সন্ত্রাসের শিকার। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭ জন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪ জনসহ সারা বাংলাদেশে ১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজ পর্যন্ত শিবিরের নিহত নেতা-কর্মীর সংখ্যা ১৩৬ জন। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষ বা চাঁদাবাজি করতে গিয়ে নিহত হয়েছে এমন একটি উদাহরণও নেই। উদাহরণ নেই টেন্ডারবাজি করতে গিয়ে গ্র“পিং আর মারামারি করার। বাধনকে লাঞ্ছিত করার মত ন্যক্কারজনক কোনো ঘটনার সাথে শিবিরের সংশি−ষ্টতার কথা তার শত্র“রাও বলে না কখনো। ড. তাহের হত্যাকাণ্ডের মত ঘটানাগুলোর সাথে শিবিরকে জড়িয়ে তুমুল প্রচারণা চালানোর পর আদালতের রায়ে প্রমাণিত হয় শিবিরের নির্দোষিতার কথা। দেশের বামপন্থী চরমপন্থী দলগুলোর কর্মকাণ্ডের জন্য মূলধারার বামপন্থী দলগুলোকে দায়ী করাকে বাস্তবসম্মত না ভাবলেও জেএমবি’র মত মাথা গরম দলের কাজের জন্য কোনো প্রমাণ ছাড়াই অহরহ দায়ী করা হয় জামায়াত-শিবিরকে। বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতিতে অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রের যেখানে অনেক অভাব সেখানে শিবির নিয়মতান্ত্রিকভাবে তার গঠনতন্ত্র অনুসরণ করে নিয়মিত নির্বাচনভিত্তিক গণতান্ত্রিক কাঠামো অনুসরণ করে একটি অনন্য উদাহরণ স্থাপন করতে পেরেছে। ছাত্রশিবিরের এই অনন্য সুন্দর দিকটি উপেক্ষিতই থেকে গেছে বোদ্ধাদের কাছে।
কয়লা ধূলে ময়লা যায় না। একটি কমেডি নাটকের জন্ম দিলেন মাননীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম। প্রতিমন্ত্রী সাহেব নেতাদের রক্ত পরীক্ষা করে দেখছেন ছাত্রলীগের কোন্ কোন্ নেতার রক্তে নেশার প্রভাব আছে। এর মাধ্যমে তিনি কয়লা থেকে ময়লা ধোয়ার চেষ্টা করছেন। যারা খুন, ধর্ষণ, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, পতিতাবৃত্তি, অস্ত্রব্যবসা, আন্ডারওয়ার্ল্ড কানেকশন, মাদকব্যবসা, সিট ব্যবসা, ভর্তি বাণিজ্য, বাড়ি দখল, টেন্ডারবাজি, ছিনতাই, শিক্ষক লাঞ্ছনা, সাংবাদিক নির্যাতন, সংখ্যালঘু নির্যাতন, চুরি, পহেলা বৈশাখে ছাত্রীদের বস্ত্রহরণ, ইডেন কলেজের ঘটনার মত মানবতাবিরোধী অপকর্মকে জীবনের মিশন হিসেবে নিয়েছে তাদেরকে শত চেষ্টা করেও আর ভালো করা যাবে না এটা মনে হয় আওয়ামীলীগ ভুলেই গেছেন। ছাত্রলীগ করবে আবার ভাল থাকবে এটা কল্পনাই করা যায়না। ভাল থাকলে ছাত্রশিবির হিসেবে কখন চিহ্নিত হয়ে আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাহেবের তীক্ষ তীর এসে জীবননাশ করে সে ভয়ে ভাল থাকার বন্ধুর পথে কোন ছাত্রলীগের নেতা কর্মী হাটবেন না এটা ১২০% নিশ্চিত।
ছাত্রলীগকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আনার জন্য দলীয় প্রধান শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের কর্তা ব্যক্তিদের অনেক প্রচেষ্টা বিশ্ববাসী অবলোকন করেছে। কিন্তু কোনো প্রচেষ্টাই সফল হতে দেখা যায়নি। বরং বিভিন্ন সময় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের হাতে কর্তা ব্যক্তিদের লাঞ্ছিত হওয়ার খবর প্রকাশিত হয়েছে।
দেশের মানুষ সুন্দর ভাবে বাঁচতে চায়
তাই আর বৃথা চেষ্টা না করে আসুন, এখনই সময় রক্তের বিনিময়ে অর্জিত প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ হতে সন্ত্রাসী জঙ্গিবাদী মানবতাবিরোধী ছাত্রলীগকে চিরতরে নিষিদ্ধ করার মাধ্যমে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করি।
পড়ুন ►
ভিউ
সংযুক্তি ►
Click This Link style='border: 1px solid #ccc;align:center;clear:both'; width=400px; />
5 comments:
ছাত্রলীগকে নিয়ে বলার কিছু নাই। কিন্তু তোরা নিজেরা কি? তোরা তো কুত্তার ও অধম।
এ কাজ করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।আমরা প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহার করব।ইনশা'আল্লাহ
KJUUUYYH
ছাত্রলীগ নয় চাপাতী লীগ। চাপাতী লীগের চাপাতীর হিংস্রতা থেকে রক্ষা পায়নি তাদের নিজ সংগঠনের কর্মীরাও। এদের যাতাকল থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রক্ষা করতে না পারলে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম মেধাহীন হয়ে পড়বে।
chatraleague is a killer organization.............sumon