ভিডিও
-ছেলেটা হুমহাম তাড়াহুড়া করে ভাত মুখে পুরছিলো । এত তাড়া তার !! মা ধমক দিয়ে ধীরে সুস্থ্যে খেতে বলে , কিন্তু তার মাথায় তখন অন্য চিন্তা । সংগীরা অপেক্ষা করছে ও পাড়ার সুপাড়ী বাগানে । এমন সময় কে একজন দৌড়ে এসে তার কানে কানে খবরটা দিয়ে যায় , মন্ডলদের বাড়ির পেছনে একটা বাঘের বাচ্চা দেখা গেছে । ভাতের থালা থেকে হাত গুটিয়ে উঠে পড়ে সে । কতদিনের শখ- একটা বাঘের বাচ্চা পুষবে ...
-তীতুমীরের জীবনগাঁথা নিয়ে লেখা কোন এক উপন্যাসের শুরুটা এমন ছিলো । অস্পষ্ট মনে আছে । নাম সম্ভবত "তীতুর লেঠেল " আতা সরকার লেখক ...
-সাইয়্যেদ মীর নীসার আলীর তীতুমীর হবার একটা গল্প-ও আজই শুনলাম । একেবারে ছেলেবেলায় নাকি তিনি রোগা ছিলেন , তাই দাদী গাছের বাকল, লতা, পাতা, শিকড় বেটে তিতা রস বানিয়ে খাওয়াতেন তাকে । অনায়াসে গিলে ফেলতেন তিনি সেই রস । দাদী এখান থেকেই তাকে ডাকতে শুরু করেন তিতা-মীর
-২৭ জানুয়ারী ১৭৮২ সালে উপমহাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের এই মহান যোদ্ধার জন্ম হয় । বাংলা ক্যালেন্ডারের হিসেব অনুযায়ী তারিখটা ১৪ ই মাঘ- ১১৮২ । জন্মস্থান চব্বিশ পরগনার হায়দ্রাবাদ । তীতুমীরের বাবা মীর হাসান আলী এবং মা আবিদা রুকাইয়া খাতুন । তীতুমীর হযরত আলী রা: এর বংশধর । তার পূর্বপুরুষ সৈয়দ শাহাদাত আলী ইসলাম প্রচারোদ্দেশ্যে প্রথম আরব থেকে আসেন । শাহাদাত আলীর পুত্র সাইয়্যেদ আব্দুল্লাহকে জাফরপুরের প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেয় দিল্লী প্রশাসন । উনি-ই বিচারকার্যের জন্য "মীর-ইনসাফ" উপাধি পান ....
-১৮ বছর বয়সে কুরআনের হাফেজ হন তীতুমীর । বাংলা - আরবী-ফারসী ভাষায় দক্ষতা অর্জন করার পাশাপাশি একই সাথে একজন ব্যয়ামবীর পালোয়ান হিসেবে পরিচিত হন বন্ধুমহলে । ইসলামী আইন-বিচারব্যবস্থা - দর্শনশাস্ত্রেও পারঙগমতা অর্জন করেন তিনি ...
-মূলত: ১৮২২ সালে হজ্জ্বে যাওয়ার পর থেকেই তীতুমীরের চিন্তাধারার বৈপ্লবিক পরিবর্তন শুরু হয় । বিশ্বমুসলিমের এই মহাসমাবেশের পর তার সাথে দেখা হয় সৈয়দ আহমেদ ব্রেলভীর সাথে । ১৮২৭ এ তিনি ফিরে আসেন নিজ গ্রামে । শির্ক ও বিদয়াতমুক্ত মুসলিম সমাজ গঠনের দাওয়াতে নেমে পড়েন । মুসলিম সমাজের সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্য রক্ষার দিকেও মনোযোগ দেন তিনি । তার কাজ শুরু হয় চব্বিশ পরগনা ও নদীয়া জেলায় ।
-কিছুদিনের মধ্যেই তৎকালীন সৈরাচারী সাম্প্রদায়িক জমিদারশ্রেনীর সাথে তীতুমীরের টক্কর শুরু হয়ে যায় । নানারকম অপমানজনক ট্যাক্স ধার্য করা হচ্ছিলো । মুসলমানদের দাঁড়ি রাখা .. এমনকি মসজিদের ওপর ট্যাক্স ধার্য করে ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর মদদপুষ্ট অত্যাচারী জমিদার কৃষ্ণদেব রায় । একই সাথে দেবনাথ রায় (গোবরা গোবিন্দপুর) , গৌড়ী প্রসাদ চৌধুরী (নাগপুর), রাজনারায়ণ (তারাকান্দি), কালিপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় (গোবরডাঙ্গা) প্রমুখ হিন্দু জমিদারেরাও সতর্ক হয়ে ওঠে তীতুর আন্দোলনের ব্যাপারে ।
-এসময় তীতুমীর অত্যাচারিত কৃষকদের কে সংগঠিত করে লাঠি-সড়কি জাতীয় দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত বাহিনী গড়ে তোলেন । তার ভাগ্নে শহীদ গোলাম মাসুম ছিলেন এই মুজাহিদ বাহিনীর সেনাপতি ।
- জমিদার কৃষ্ণদেব রায় পার্শ্ববর্তী সরফরাজপুরে (বর্তমান নাম - সর্পরাজপুর) শত শত লোক জড় করে লাঠিসোঁটা, ঢাল-তলোয়ার, সড়কিসহ শুক্রবার জুমার নামাজরত অবস্খায় মসজিদ ঘিরে ফেলে এবং মসজিদে আগুন ধরিয়ে দেয়। এদিন দু’জন শাহাদত বরণ করেন , আহত হন অসংখ্য । মুসলমানদের মামলায় পুলিশ ঘটনাস্খলে না গিয়ে থানায় বসেই মামলার রিপোর্ট দেয়।
-তিতুমীর তার লোকজন নিয়ে সরফরাজপুর থেকে ১৭ অক্টোবর ১৮৩১ সালে নারকেলবাড়িয়া হিজরত করেন। ২৯ অক্টোবরেই কৃষ্ণদেব নারকেলবাড়িয়া আক্রমণ করে বহু লোক হতাহত করে। ৩০ অক্টোবর এই সংক্রান্ত মামলা দায়ের করতে গেলে কোনো ফল হলো না। ৬ নভেম্বর কৃষ্ণদেব আবার মুসলমানদের ওপর নারকেলবাড়িয়ায় আক্রমণ করল।
-হিন্দু ও ইংরেজদের যৌথ আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বাঁশের মজবুত খুঁটি দিয়ে কেল্লা তৈরী করেন । ইতিহাসে এটা ‘তিতুমীরের বাঁশের কেল্লা’ নামে পরিচিত।
-শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমঝোতা করার সব উপায় ব্যর্থ হবার পর তীতুমীর বারাসাতে ইংরেজ সরকারের বিপক্ষে প্রথম বিদ্রোহ ঘোষণা করেন । চব্বিশ পরগনার কিছু অংশ , নদীয়া ও ফরিদপুরের একাংশ নিয়ে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করেন । এটাই বারাসাত বিদ্রোহ নামে পরিচিত হয় । বর্নহিন্দুর অত্যাচারে জর্জরিত অনেক হিন্দু কৃষক ও এ বিদ্রোহে ছিলো । বারাসাত বিদ্রোহে গোবরাগোবিন্দপুরের জমিদার নিহত হয় ।
- বারাসাত বিদ্রোহের পর তীতুমীর উপলদ্ধি করেন ইংরেজদের বিরুদ্ধে চুড়ান্ত লড়াই আসন্ন । ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী সরকার কর্নেল স্টুয়ার্ডকে সেনাপতি করে একশত ঘোড়া, তিনশত পদাতিক সৈন্য, দু'টি কামানসহ নারকেলবাড়ীয়াতে রওনা করায় ১৩ নভেম্বর। মেজিষ্ট্রেট আলেকজান্ডার নারকেলবাড়ীয়ায় একজন হাবিলদার, একজন জমাদ্দার, পঞ্চাশ জন বন্দুক ও তরবারীধারী সৈন্য নিয়ে নারকেলবাড়িয়ার কাছাকাছি ভাদুড়িয়ায় উপস্খিত হন। পরে বশিরহাটের দারোগা সিপাহী নিয়ে ভাদুড়িয়ায় আলেকজান্ডারের সাথে মিলিত হয়। প্রচণ্ড সংঘর্ষ হয় মুজাহিদ বাহিনীর সাথে । এতে উভয় পক্ষের লোক হতাহত হয়। যুদ্ধে দারোগা ও একজন জমাদ্দার মুসলমানদের হাতে বন্দী হয়, বারাসাতের জয়েন্ট ম্যাজিস্ট্রেট মি: আলেকজান্ডার পালিয়ে বেঁচে যান ।
-পরের দিন ১৪-নভেম্বর কর্নেল স্টুয়ার্ডের নেতৃত্বে ইংরেজ বাহিনী তিতুমীরের বাঁশের কেল্লার প্রধান দরজায় পৌঁছে । স্টুয়ার্ড পথ প্রদর্শক রামচন্দ্র বন্দোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাস করলেন, 'এই ব্যক্তিই কি তিতুমীর'? রামচন্দ্র, বলল 'হ্যাঁ, সে নিজেকে তিতু বাদশা বলে প্রচার করে। আপনার আগমনে তারা বাহানা পরিবর্তন করেছে।'
-স্টুয়ার্ড রামচন্দ্রকে বলল, 'তিতুমীরকে বলুন, বড়লাট লর্ড বেন্টিংক-এর পক্ষ থেকে আমি সেনাপতি হিসেবে এসেছি। তিতুমীর যেন আমার কাছে আত্মসমর্পণ করে। তবে উত্তরে সে যা বলবে তা আমাকে হুবহু বলবেন।'
-রামচন্দ্র তিতুমীরকে বলল, 'আপনি কোম্পানী সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে এখন জপমালা ধারণ করেছেন। আসুন, তরবারী ধারণ করে বাদশার যোগ্য পরিচয় দিন।'
-শুনে সাইয়েদ নিছার আলী তিতুমীর বললেন, 'আমি কোম্পানী সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করিনি। হিন্দুদের ন্যায় আমরাও কোম্পানী সরকারের প্রজা। জমিদার নীলকরদের অত্যাচার দমন এবং মুসলমান নামধারীদের প্রকৃত মুসলমান বানানোর জন্য সামান্য চেষ্টা করছি মাত্র।'
-তিতুমীরের জবাব শুনে রামচন্দ্র দোভাষী হিসেবে কর্নেল স্টুয়ার্ডকে বলল, 'হুজুর, তিতুমীর আত্মসমর্পণ করবে না, যুদ্ধ করবে। সে বলে, সে তোপ ও গোলাগুলীর তোয়াক্কা করে না। সে আরো বলে, সে তার ক্ষমতাবলে সবাইকে টপ টপ করে গিলে খাবে। সে এই দেশের বাদশা, কোম্পানী আবার কে?'
-দোভাষীর কাজ করতে গিয়ে রামচন্দ্রের বিশ্বাসঘাতকতায় যুদ্ধ শুরু হয়ে গেলো । সুশিক্ষিত ইংরেজ সৈন্য মেজর স্কটের পরিচালনায় ও তাদের ভারী কামানের গুলীর সামনে লাঠি আর সড়কির কৃষকসেনারা দাঁড়িয়ে গেলো । বাঁশের কেল্লা ধ্বসে পড়লো । তিতুমীর ও তার মুজাহিদরা হানাদারবাহিনীর কাছে মাথা নত না করে জীবনের শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যান । ১৯ নভেম্বরে শেষ হয়ে যায় তীতুমীরের প্রতিরোধ । শহীদ হন উপমহাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসের এই বীরমুজাহিদ ।
__________________________
যেসব পেইজ দেখে লিখতে গিয়ে কিছুটা গোলমাল হয়েগেছে বলে আমার ধারনা ....
7 comments:
আপসোস্!এ অঞ্চলের মাটি, মানুষের বিশ্বাসের সাথে যে বীরসন্তানদের নাড়ির সম্পর্ক তোষামোদকারী ও সুবিধাভোগীদের ভীড়ে আজ তারা অনুচ্চারিত ইতিহাস! মহামান্য রাষ্ট্রপতি ঢাবির বিশেষ সমাবর্তনে এ অঞ্চলে বৌদ্ধ, হিন্দি, দ্রাবিড়, আর্য, রবীন্দ্রনাথ, অতীশ দীপংকর, বঙ্গবন্ধু, অমর্ত্যসেন, ক্ষুদিরাম, জগদীশচন্দ্র, চারনেতা, লালন, সূর্যসেন প্রমূখের ভূমিকার কথা স্মরন করলেও, উচ্চারন করলেন না শাহজালাল, তিতুমীর, বখতিয়ার, শায়েস্তা খান, ইলিয়াস শাহ, সলিমুল্লাহ, খানজাহান আলী, জিয়া, ওসমানী কিংবা দেশের একমাত্র নোবেল বিজয়ী কৃতি সন্তান ড. ইউনূসের নামটিও। রবীন্দ্রনাথ আর বাঙ্গালির গুণকীর্তনে ঠাসা বক্তব্যে একটি বারের জন্য উচ্চারিত হয়নি পীর-আউলিয়ার পূর্ণভূমির সংখ্যাগরিষ্ট মানুষের চেতনা ও বিশ্বাসের কথা।
তিতুমীরকে পরিমাপ করতে না পারার সীমাবদ্ধতাও অন্যতম কারণ হতে পারে। তিনি মুসলমান হওয়াটাও বোধ করি সামপ্রদায়িক বিদ্বেষ লালনকারী হীনম্মন্যদের জন্য একটা প্রতিবন্ধকতার বিষয় হতে পারে। ‘একবার বিদায় দেয় মা ঘুরে আসি...’ আবেগ ছড়ানো গান। মর্ম স্পর্শ করে।
ক্ষুদিরামকে সামনে এনে দেশপ্রেমের প্রতীক বানিয়ে দেয়। ইংরেজদের বিরুদ্ধে দ্রোহকে বাঙ্গময় করে তুলে ধরে। ক্ষুদিরাম দু’জন ইংরেজ মহিলাকে হত্যা করে ফাঁসির রায় মাথা পেতে নেন। অপর দিকে তিতুমীর মুক্তিযোদ্ধা, প্রতিরোধ আন্দোলনের নেতা, মহান সংস্কারক, প্রজা আন্দোলনের পথপ্রদর্শক। তার সময়ের তাঁতি, কামার, কুমার, জেলে, কৃষক, শ্রমিক, মেহনতি জনতার অপ্রতিদ্বন্দ্বী ত্রাণকর্তা। ইংরেজদের সশস্ত্র আক্রমণ ঠেকাতে প্রতিরোধ যুদ্ধে শাহাদতবরণ করেন এই সাহসী ও লড়াকু বীর। বাঁশের কেল্লার এই রূপকার ইংরেজ শাসনের মোকাবেলায় আলাদা সরকার গঠন করেছিলেন।
সাম্প্রদায়িকতার ঊর্ধ্বে থেকে শ্রেণীবৈষম্য, ধর্মীয় ও সামাজিক অনাচার ঠেকাতে তিনি এ যুগেরও প্রেরণা। কুসংস্কারের কুজ্ঝটিকা থেকে ধর্মের প্রাণশক্তি ও জীবনধর্মী অবয়ব পুনরুদ্ধারে তার কোনো তুলনা হয় না। বর্ণাঢ্য ও সংগ্রামী জীবনের রূপময়তায় তিতুমীরের তুলনা শুধুই তিতুমীর। বাংলাদেশের দক্ষিণ, উত্তরাঞ্চল ও পশ্চিমবঙ্গের বিরাট এলাকাজুড়ে ছিল তার কর্মক্ষেত্র। এখনো নীল দর্পণ, জমিদার দর্পণ- সাহিত্য, রাজনীতি ও সমাজ-সংস্কৃতিতে অনুপ্রেরণার উৎস। অথচ যিনি যুদ্ধ করে স্বাধীনতার লড়াই করতে করতে প্রাণ দিতে কুণ্ঠিত হলেন না, তাকে আমরা গভীরভাবে মূল্যায়নের দায় নিলাম না। ফকির আন্দোলন, সন্ন্যাসী আন্দোলন ও মোহাম্মদী আন্দোলনও আমরা ভুলতে বসেছি। ফরায়েজি আন্দোলন ও মুন্সি মেহেরুল্লাহর বাকযুদ্ধও আমরা বিবেচনায় নিচ্ছি না। এমন ইতিহাস ‘বিনির্মাণ’ করছি- যেন ইতিহাসের নাড়ি ছিঁড়ে আমরা হঠাৎ করে একাত্তরে এসে গেছি। আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনাও যেন আমাদের দলান্ধ ভাবনার গণ্ডিবদ্ধ বিষয় হয়ে গেছে। স্বাধীনতার অহঙ্কার আজ মানসিক গোলামিতে রূপান্তরিত হয়েছে।
এই মানসিক গোলামির জিঞ্জির অতিক্রম করতে হলে ইতিহাসের শিক্ষাগুলো সামনে টেনে আনতে হবে। তবেই আমাদের স্বাধীনতার লাগাতার ইতিহাস অন্বেষায় তিতুমীর সামনে এসে দাঁড়াবেন। বুয়েটের তিতুমীর হল আর তিতুমীর সরকারি কলেজের স্মৃতি তর্পণের মধ্যে একজন বীরকে মূল্যায়নের মাত্রা সীমাবদ্ধ থাকা কাম্য হতে পারে না। কালজয়ী সিপাহসালার শহীদ তিতুমীর ছিলেন বাংলার স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম প্রাণপুরুষ। স্থানীয় জমিদার ও নীলকরদের অত্যাচার প্রতিরোধে তার ভূমিকা ছিল প্রবাদতুল্য। একই সাথে ব্রিটিশ শাসন থেকে বাংলাকে মুক্ত করার লক্ষ্যে পরিচালিত আন্দোলনে তিনি ছিলেন পথপ্রদর্শক। একজন মহান সংস্কারক হিসেবে তিতুমীর ছিলেন অনন্য। প্রাথমিক পর্যায়ে তার লক্ষ্য ছিল সামাজিক ও ধর্মীয় সংস্কার। মুসলিম সমাজ থেকে শিরক ও বিদআতের প্রভাব নির্মূল করাই ছিল এই সংস্কারের লক্ষ্য। মুসলমানদের দৈনন্দিন জীবনে ইসলামের অনুশাসন অনুসরণে উদ্বুদ্ধ করাই ছিল তার অন্যতম মিশন ও ভিশন। এই বর্ণাঢ্য ব্যক্তিত্বের জীবনকথার ওপর খানিকটা দৃষ্টি দেয়া যাক।
তিতুমীরের প্রকৃত নাম সৈয়দ মীর নিসার আলী। পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলার বশিরহাট মহকুমার চাঁদপুর গ্রামে তার জন্ম। জন্মের সালটি ছিল ১১৮৮ বঙ্গাব্দের ১৪ মাঘ। সেটা ছিল ১৭৮২ খ্রিষ্টাব্দ। বাবা ছিলেন মীর হাসান আলী। তার মায়ের নাম আবিদা রোকাইয়া খাতুন। হজরত আলী রা:-এর বংশধর হিসেবেও তার পরিবারের আলাদা সম্মান ছিল। তার পূর্বপুরুষ সৈয়দ শাহাদাত আলী ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে আরব থেকে বাংলায় এসেছিলেন। তারই ছেলে সৈয়দ আবদুল্লাহকে দিল্লির সুলতান জাফরপুরের প্রধান কাজী নিযুক্ত করেছিলেন। তিনি ‘মীর ইনসাফ’ খেতাবে ভূষিত হয়েছিলেন। ‘মীর’ ও ‘সৈয়দ’ উভয় খেতাবই তিতুমীরের পরিবার বংশপরম্পরায় ব্যবহার করত।
স্থানীয় মক্তবে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে তিতুমীর মাদরাসায় পড়াশোনা করেন। তিনি ছিলেন কুরআনে হাফেজ। একই সাথে বাংলা, আরবি ও ফারসি ভাষায়ও তার ভালো দখল ছিল। এ ছাড়াও তিনি আরবি ও ফারসি সাহিত্যের প্রতি ছিলেন গভীর অনুরাগী। ধর্ম, আইন, দর্শন, তাসাউফ ও মানতিক সম্পর্কেও তিনি পাণ্ডিত্য অর্জন করেছিলেন। মাদরাসায় অধ্যয়নকালেই তিতুমীর একজন দক্ষ কুস্তিগীর হিসেবেও খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। লাঠিখেলায়ও ছিল তার বিশেষ পারদর্শিতা।
তিতুমীর ১৮২২ সালে হজ পালনের জন্য মক্কায় যান। সেখানেই তিনি বিখ্যাত সংস্কারক ও বিপ্লবী নেতা সৈয়দ আহমদ বেরলভীর গভীর সান্নিধ্য লাভ করেন। সৈয়দ আহমদ তাকে বাংলার মুসলমানদের কুসংস্কারাচ্ছন্ন রীতিনীতি বর্জনে অনুপ্রাণিত করতে নিজেকে নিবেদিত করার আহ্বান জানান। একই সাথে বিদেশী শক্তির পরাধীনতা থেকে মুক্ত করার কাজে সক্রিয় হতে উদ্বুদ্ধ করেন। ছয় বছর পর দেশে ফিরে তিতুমীর চব্বিশ পরগনা ও নদীয়া জেলায় মুসলমানদের মধ্যে ইসলামের মৌলিক বিশ্বাস তুলে ধরেন। তিনি মুসলমানদের শিরক ও বিদআত অনুশীলন থেকে নিবৃত্ত করতে ইসলামের অনুশাসন মেনে জীবনযাত্রা পরিচালনায় অনুপ্রাণিত করেন। বিশেষ করে তাঁতি ও কৃষকদের মধ্যে তিনি প্রজা আন্দোলনের চিন্তাধারার ব্যাপক প্রচার চালান। এ সময় মুসলমানদের প্রতি সামপ্রদায়িক বিদ্বেষ এবং তাদের ওপর অবৈধ করারোপের জন্য হিন্দু জমিদার কৃষ্ণদেব রায়ের সাথে প্রতিবাদী তিতুমীরের সংঘর্ষ বেধে যায়। কৃষক, মজদুর ও তাঁতিদের ওপর জমিদারদের অত্যাচার প্রতিরোধ করতে গিয়ে ক্রমান্বয়ে অপরাপর জমিদারের সাথেও তিতুমীরকে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়তে হয়। তৎকালীন অত্যাচারী জমিদার গোবরডাঙার কালীপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়, তারাগোনিয়ার রাজনারায়ণ, নাগপুরের গৌরীপ্রসাদ চৌধুরী এবং গোবরা-গোবিন্দপুরের দেবনাথ রায় সম্মিলিতভাবে তিতুমীরের আন্দোলন ও প্রতিবাদ প্রতিহত করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন।
প্রতিকূল অবস্থা মোকাবেলা এবং কৃষক-তাঁতিদের নিরাপত্তার জন্য তিতুমীর মুজাহিদ বাহিনী গঠনের উদ্যোগ নেন। তাদের লাঠি ও অপরাপর দেশীয় অস্ত্র চালনায় প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করেন। তার শিষ্য ও আত্মীয় গোলাম মাসুমকে মুজাহিদ বাহিনীর অধিনায়ক নিযুক্ত করেন। তিতুমীরের শক্তি বৃদ্ধিতে আতঙ্কিত হয়ে জমিদারেরা তার বিরুদ্ধে সম্মিলিত প্রতিরোধ সৃষ্টির উদ্যোগ নেন। এসব অত্যাচারী জমিদারই তিতুমীরের বিরুদ্ধে ইংরেজদের সম্পৃক্ত করার প্রচেষ্টা চালান। গোবরডাঙার জমিদারের প্ররোচনায়ই মোল্লাহাটির ইংরেজ কুঠিয়াল ডেভিস তার বাহিনী নিয়ে তিতুমীরের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে পরাজিত হন। তিতুমীরের সাথে অপর এক সংঘর্ষে গোবরা-গোবিন্দপুরের জমিদারও নিহত হন। বারাসতের কালেক্টর আলেকাজান্ডার বশিরহাটের দারোগাকে নিয়ে তিতুমীরের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে শোচনীয়ভাবে পরাজয় বরণ করেন। এ সময়ে তিতুমীর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি সরকারের কাছে জমিদারদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় অভিযোগ পেশ করেন। কিন' তাতে কোনো ফল হয়নি। এভাবেই প্রজা আন্দোলনের নেতা, স্বাধীনতাকামী, মহান সংস্কারক ও ইসলাম প্রচারক তিতুমীরকে সশস্ত্র সংগ্রামের পথে ঠেলে দেয়া হয়। বাধ্য হয়ে আত্মরক্ষা ও প্রতিরোধ সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে তিতুমীর ১৮৩১ সালের অক্টোবর মাসে নারকেলবাড়িয়ায় নতুন ধারণার দুর্ভেদ্য বাঁশের কেল্লা নির্মাণ করেন। মুজাহিদ বাহিনীতে বিপুলসংখ্যক মুজাহিদ নিয়োগ করে তাদের সামরিক প্রশিক্ষণ দেয়ার ব্যবস্থা করেন। সে সময় মুজাহিদদের সংখ্যা প্রায় পাঁচ হাজারে উন্নীত হয়েছিল। সামরিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করে তিতুমীর নিজেকে এ অঞ্চলের জনগণের মনোনীত প্রশাসক হিসেবে ঘোষণা দেন। একই সাথে ব্রিটিশের বিরুদ্ধে জেহাদে অবতীর্ণ হওয়ার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান। স্বল্প সময়ের মধ্যে তিনি চব্বিশ পরগনা, নদীয়া ও ফরিদপুর জেলায় একক প্রভাব বলয় প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হন। ইংরেজ বাহিনী তিতুমীরের বিরুদ্ধে প্রেরিত হয়। তত দিনে তিতুমীর অত্যাচারী জমিদার ও ইংরেজদের কমন শত্রুতে পরিণত হন। গোবরডাঙার জমিদারের প্ররোচনায় কলকাতা থেকে আগত ইংরেজ ও জমিদারদের সম্মিলিত বাহিনীও মুজাহিদদের কাছে শোচনীয় পরাজয় বরণ করে। শেষ পর্যন্ত লর্ড বেন্টিঙ্ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল স্টুয়ার্টের নেতৃত্বে ১০০ অশ্বারোহী, ৩০০ স্থানীয় পদাতিক, দু’টি কামানসহ গোলন্দাজ সৈন্যের এক নিয়মিত বাহিনী তিতুমীরের বিরুদ্ধে প্রেরণ করেন। ১৮৩১ সালের ১৪ নভেম্বর ইংরেজ বাহিনী মুজাহিদদের ওপর আক্রমণ চালায়।
মুজাহিদেরা সনাতনী ধরনের স্থানীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত ইংরেজ বাহিনীকে প্রতিরোধ করতে ব্যর্থ হন। বাধ্য হন বাঁশের কেল্লায় আশ্রয় নিতে। ইংরেজেরা কামানের গোলাবর্ষণ করে কেল্লা সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত করে দেয়। বিপুলসংখ্যক মুজাহিদ প্রাণ হারায়। ১৮৩১ সালের ১৯ নভেম্বর বহু অনুসারীসহ তিতুমীর যুদ্ধে শহীদ হন। মুজাহিদ বাহিনীর অধিনায়ক গোলাম মাসুমসহ প্রায় সাড়ে তিন শ’ মুজাহিদ ইংরেজদের হাতে বন্দি হন। গোলাম মাসুমকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। ১৪০ জন বন্দী বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন।
তিতুমীর আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলনের পথপ্রদর্শক। সাহসী এই যোদ্ধার জীবন ছিল বর্ণাঢ্য ও রূপময়তায় ভরা। তার সংস্কার আন্দোলন আজো আমাদের প্রেরণার উৎস। প্রজা আন্দোলন, কৃষক-কামার-কুমার ও তাঁতিদের নিয়ে মেহনতি জনতার স্বার্থরক্ষার সংগ্রাম তিতুমীরকে আলাদাভাবে চেনা ও জানার প্রধান উপজীব্য বিষয়। ধার্মিক কিন' অসামপ্রদায়িক চেতনাসমৃদ্ধ তিতুমীর বাংলার মানুষকে স্বাধীনতার অর্থ শিখিয়েছেন। যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে ইংরেজ তাড়ানোর সাহস জুগিয়েছেন। রাষ্ট্রীয় ও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে ইতিহাসের এই মহানায়ক আজ বিস্মৃতপ্রায়। নতুন প্রজন্মকে তার বহুমুখী প্রতিভা ও সংগ্রামী জীবন সম্পর্কে পরিচয় করিয়ে দেয়ার দায়িত্ব আমাদের ওপরই বর্তায়।
তা ছাড়া সন্ধিচুক্তি, ট্রানজিট-করিডোরের নামে প্রকৃত স্বাধীনতা ও জাতীয় নিরাপত্তাকে বর্গা দেয়া হয়েছে। স্বাধীনতার তাৎপর্যকে করা হয়েছে ভূলুণ্ঠিত। সার্বভৌমত্বও প্রশ্নবিদ্ধ। খণ্ডিত ইতিহাসচর্চার ফলে জাতিকে, জাতীয় সত্তা ও স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যকে নির্বাসনে পাঠানো হয়েছে। ইংরেজদের মতো জাতিকে বিভক্ত করে শাসন-শোষণ করার প্রবণতাও দৃশ্যমান। ধর্মীয় মূল্যবোধকে অবজ্ঞা আর সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্যকে উপেক্ষাই যেন সরকারি নীতি। দেশের নাগরিকেরা রাজার প্রজা কিংবা জমিদারের রায়তে পরিণত হয়েছে। শুধু সুবচন নির্বাসনে যায়নি, সুশাসনও নির্বাসিত। গণতন্ত্র, আইনের শাসন, মানবাধিকার ও ন্যায়-ইনসাফ প্রতিষ্ঠার শেষ আকুতিটুকুও গলাটিপে হত্যা করা হচ্ছে। আশা ও ভরসার দুয়ারগুলো একে একে বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। সর্বত্র আর্তনাদ ও গুমরে কান্নার আওয়াজ শোনা যায়। সূচকগুলো এতটাই নিম্নগামী যে আত্মাহুতি দেয়ারও জায়গা নেই। এমন পরিস্থিতিতে তিতুমীর যেন আমাদের স্বপ্নের সাহসী পুরুষ হিসেবে ধরা দেয়। আসুন! ইতিহাসের সিঁড়ি বেয়ে আমরা আবার স্বাধীনতাপাগল জাতির বরণীয় ব্যক্তিত্বদের অনুসরণ করে বাঁক ঘুরে দাঁড়াই। হতাশার অন্ধকারে আলোর মশাল জ্বালাই। বাধাবিঘ্ন উপেক্ষা করে বুক টান করে দাঁড়াই- যেমনটি দাঁড়িয়েছিলেন শহীদ তিতুমীর।
গত একুশে বইমেলার সময়ের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছিল। প্রতিবেশী দেশ থেকে একজন নোবেল বিজয়ীকে ভাড়া করে এনে আমাদের প্রাণের বই মেলাতে সম্মাননা দেয়া হয়, ঠিক সেদিনই দেশের একমাত্র নোবেল বিজয়ী কৃতি সন্তান ড. ইউনূসকে দই চুরির মামলায় জড়িয়ে বিশ্বদবারে জাতিকে নজীরবহীনভাবে অপমানিত করা হয়।
এর কারণ হতে পারে অজ্ঞতা কিংবা অদূরদর্শী রক্ষণশীল চিন্তা। দেশের সত্যিকার বীরদের পরিমাপ করতে না পারার সীমাবদ্ধতাও অন্যতম কারণ হতে পারে। তারা মুসলমান হওয়াটাও বোধ করি সামপ্রদায়িক বিদ্বেষ লালনকারী হীনম্মন্যদের জন্য একটা প্রতিবন্ধকতার বিষয় হতে পারে। যদিও তারা কথায় কথায় অসাম্প্রদায়িকতার লেবাস ধরে!
স্বাধীনতার ৪০ বছর পার করলেও অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও অন্যান্য ক্ষেত্রে কার্যত এখনো আমরা আগ্রাসন ও অন্যরকম নির্যাতন ও বৈষম্যের শিকার। বলতে গেলে এসব ক্ষেত্রে প্রতিবেশি বন্ধু দাবীদার দেশটির আগ্রাসনের মাত্রা অতীতের ভয়াবহতাকেও ছাপিয়ে গিয়েছে।
আমাদের ভোগকৃত অধিকাংশ পণ্যসামগ্রীই শুধু নয়, চিন্তা-চেতনা তথা সংস্কৃতিও হয় প্রতিবেশী দেশ নতুবা ওই সব মোড়ল দেশের বহুজাতিক কোম্পানি বা চ্যানেল থেকে আমদানি করা।
এ দেশে এখন সরকারি, বেসরকারি অনেক অনুষ্ঠান শুরু হয় ভারতীয়দের অনুকরণে মঙ্গল প্রদীপ জ্বালিয়ে, ঢোল বাদ্য বাজিয়ে। মন্ত্রী, সচিব, সরকারদলীয় সংসদ সদস্য, সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব, আওয়ামীপন্থী, বাম সমর্থক বুদ্ধিজীবীরা এটা করছেন।
বিটিভি কিংবা সুশীল প্রচারমাধ্যম রবীন্দ্রদর্শনের নামে বিশেষ ধর্মের আচার-অনুষ্ঠান ও বিশ্বাসকে এদেশের মানুষের আদর্শ বলে চালিয়ে দেওয়ার অনবরত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ অঞ্চলের সংখ্যাগরিষ্ট মানুষের সত্যিকার চেতনা ও বিশ্বাসের শেকড়কে আজ ভুলিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
ধিক্কার জানাই এদেশের পরাশক্তি নির্ভর নেতৃবৃন্দ ও তথাকথিত মিডিয়াকে: মহৎ কিংবদন্তীর শাহাদাত দিবসের খবরটিও যথাযথভাবে ঠাঁই পায়না অধিকাংশ সুশীল মিডিয়ায়! ধিক্কার জানাই এসব মিডিয়াকে: অর্ধনগ্ন নায়িকা-গায়িকা-নর্তকী-নটিনীদের ঢাউস রঙিন ছবি ছাপানোর জায়গার অভাব হয় না। কিন্তু উপমহাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের অগ্রনায়কের শাহাদাত দিবসের খবরটিও ঠাঁই পায়না? যে দেশে গুণীর সম্মান দেয়া হয় না, সে দেশে কখনো গুণী জন্মায় না।
আপসোস্ ঠিক এ জায়গাটিতেই। আমাদের তরুণ প্রজন্মের সামনে নেতিবাচক বিষয়গুলোকে বড় করে না দেখিয়ে এই সব বীরকে তুলে ধরা হলে আমরা ইভটিজার না পেয়ে এরকম দেশপ্রেমিক সিপাহসালারদের পেতাম। আজকে কাদের দেখে তরুণ সমাজ বড় হবে? দেশে একজন শেরে বাংলা, শরীয়ত উল্লাহ, তিতুমীর, ভাসানী, ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ, বঙ্গবন্ধু কিংবা জিয়াউর রহমান কি আছেন?
আমরা মহান প্রতিপালকের নিকট তার নিবেদিত প্রাণ গোলাম তথা মহান মুক্তিযোদ্ধা ও উপমহাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের অগ্রনায়কের শাহাদাত কবুলিয়াতের জন্য দোয়া করছি। আমীন
মিঃ হাসান আপনাকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি জানালাব্লগে স্ববান্ধব যোগ দেবার জন্য। www.janalablog.com ধন্যবাদ।