অধ্যায় ০৯ : বাংলাদেশে শ্রমিক আন্দোলন

শ্রমিক আন্দোলন

ইসলামের শ্রমিক-মজুরদের জন্য যে সব অধিকার নির্ধারিত হইয়াছে, তদৃষ্টে এইকথা জোর করিয়াই বলা যাইতে পারে যে, ইসলামী সমাজে মজুরদের কোন প্রকৃত সমস্যাই অসমাপ্ত থাকিয়া যাইতে পারে না। শুধু সমাধান তাহাই নয়, শ্রমিক-মজুরদের যাবতীয় মৌলিক সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান কেবলমাত্র ইসলামী আদর্শে গঠিত সমাজেই সম্ভব।

ইসলাম আদর্শ মজুর-শ্রমিকদের যাবতীয় সমস্যার যেভাবে সামাধান করে, তাহা কোন বিছিন্ন ও স্বতন্ত্র জিনিস নহে। এমন জিনিস নহে যে, উহার সাহায্য নিরপেক্ষভাবে কেবলমাত্র মজুরদের সমস্যারই সমাধানকরা সম্ভব হইতে পারে। বরং তাহা ইসলামের পূর্ণাঙ্গ সমাজ ব্যবস্থার এক অপরিহার্য অংশ, পূর্ণমাত্রায় গঠিত ইসলামী সমাজেই-যেখানেই ইসলামী আদর্শের ভিত্তিতে মানুষের সামগ্রিক সমস্যার সমাধান করা হইয়াছে, কেবলমাত্র সেখানেই-এই সমস্যার সমাধান পূর্ণমাত্রায় কার্যকরী করা সম্ভব নয়। ইসলামী আদর্শে গঠিত নয় এমন সমাজে মজুর সমস্যার ইসলামী সমাধান কার্যকর হওয়ার কোনই সম্ভবনা থাকিতে পারে না। এই কারণে যাহারাই ইসলামী আদর্শে মজুর সমস্যার সমাধান করিতে ইচ্ছুক, তাহাদিগকে সোজা-সুজি ও কেবলমাত্র মজুর সমস্যার সমাধানের জন্য নহে; বরং ইসলামী আদর্শে এক পূর্ণাঙ্গ সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনের উদ্যোগী হইতে হইবে। ইসলামী আদর্শ বিরোধী সমাজে মজুরদের সমস্যার ইসলামী সমাধান লাভ করিতে চাওয়া মরুভূমির বুকে ঝর্ণা প্রবাহের কামনা করিবার সমতুল্য।

শ্রমিক ও সমাজ

বস্তুত মজুর শ্রমিক একটি গোটা সমাজের অঙ্গ বিধায় সামগ্রিকভাবে গোটা সমাজের যাহা আদর্শ মজুর সমস্যার সমাধানেরও সেই আদর্শই কার্যকরী হইতে পারে। আর সমাজ যদি পুঁজিবাদী হয়, মজুর শ্রমিকরাও পুঁজিবাদী আদর্শেই নিজেদের সমস্যাবলীর সমাধান পাইতে পারে; আর সমাজ যেখানে সমাজতন্ত্রী, মজুর শ্রমিকগণও সেখানে গোটা সমাজের ন্যায় সামগ্রিকতাবাদের (Totalitarianism) শৃংখলে বন্দী হইয়া থাকিতে বাধ্য। অনুরূপভাবে মজুর-শ্রমিকদের ইসলাম প্রদত্ত অধিকার ও মর্যাদা কেবলমাত্র ইসলামী সমাজেই বাস্তবায়িত হইতে পারে। কাজেই শ্রমিক-মজুরদের সমস্যার ইসলামী সামাধানকে কার্যকরী করিবার জন্য ইসলামী আদর্শের ভিত্তিতে গোটা সমাজকে গঠন করাই প্রাথমিক কাজ। সমাজবিজ্ঞান সম্পর্কে একবিন্দু ধারণাও যাহাদের আছে, তাহারা এই কথার যথার্থতা সহজেই বুঝিতে পারিবেন। অতএব ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠার আন্দোলন মজুর সমস্যার ইসলামী সমাধান কার্যকরী করা সম্পর্কে নিরপেক্ষতা বা নিরবতা ও ঔদাসিন্যতা অবলম্বন করিতে পারেনা। পক্ষান্তরে মজুর সমস্যার ইসলামী সমাধান কার্যকরী করণের জন্য যে আন্দোলন তাও মূলগতভাবে ইসলামী সমাজ গঠনের আন্দোলন তাহাকে মৌলিক নীতি প্রকৃতির দিক দিয়া অবশ্যই ইসলামী আন্দোলন হইতে হইবে এবং গোটা ইসলামী আন্দোলনকে ও শ্রমিক-মজুরদের সমস্যাবলীকে ইসলামী আদর্শের ভিত্তিতে সমাধান করিবার জন্য পূর্ণমাত্রায় দায়িত্বশীল হইতে হইবে।

বাংলাদেশে শ্রমিক আন্দোলন

বাংলাদেশে যদিও ইসলামী রাষ্ট্রে পরিণত হইতে যাইতেছে এবং সেখানে পূর্ণমাত্রায় ইসলামী সমাজ গঠনের জন্য প্রবল ও বিজ্ঞানসম্মত পন্থায় আন্দোলন চলিতেছে; কিন্তু এখানে মজুর সমস্যার সমাধানের উদ্দেশ্য যে আন্দোলন চালিতেছে তাহা ইসলামী আদর্শ ভিত্তিক নহে এবং তাহা ইসলামের নির্ধারিত পথে পরিচালিত হইতেছে বলিয়াও দাবি করা চলে না। ইহার কারণ প্রধানত এই যে, বাংলাদেশের শ্রমিক আন্দোলন বৃটিশ ভারতের শ্রমিক আন্দোলনেরই উত্তরাধিকারী মাত্র।

পাক ভারতের শ্রমিক আন্দোলন প্রথম মহাযুদ্ধের পর এক স্বতন্ত্র শক্তি হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পর ভারত বিভাগ পর্যন্ত ইহা এক নিজস্ব ও নির্ধারিত রূপ পরিগ্রহ করে। ভারত বিভাগের পর অতি স্বাভাবিকভাবেই মজুর আন্দোলনও বিভক্ত হইয়া এদেশে অনুপ্রবেশ করে। পূর্বেই এই আন্দোলন যে ধরনের নেতৃত্বে এবং যে ধারা-প্রকৃতিতে পরিচালিত হইত এদেশেও ঠিক অনুরূপ নেতৃত্বেও ধারা-প্রকৃতিতে পরিচালিত হইতে শুরু করে। তাই বলা যায়, বিভাগ পূর্ব মজুর আন্দোলন ও বিভাগোত্তর শ্রমিক আন্দোলনের মধ্যে রীতি-নীতি ও ধারা-প্রকৃতির দিক দিয়া কোনোই পার্থক্য নাই। আর এই কারণেই এদেশে জনগণের আদর্শিক ভিত্তির সহিত এখানকার শ্রমিক আন্দোলনের কোন সামঞ্জস্য বা ঐক্য খুঁজিয়া পাওয়া যায় না। অতএব এইখানে ইসলামী ধারা-প্রকৃতির অনুরূপ এক শ্রমিক আন্দোলন গড়িয়া তোলা একান্তই আবশ্যক।

দেশের বর্তমান শ্রমিক-নেতৃত্ব বৃটিশ ভারতের উত্তরাধিকারী হওয়া এবং এখানকার সমাজ ও রাষ্ট্র কাঠামো ইসলামী আদর্শের ভিত্তিতে গঠিত না হওয়ার কারণে এদেশের জনগণের আদর্শিক চেতনার পরিপ্রেক্ষিতে এখানকার শ্রমিক আন্দোলনের ধারা-প্রকৃতিতে কোনরূপ পরিবর্তন সূচিত করিবার প্রয়োজন বোধ হয় নাই। পূর্বে এ আন্দোলন যেমন চলিত সম্পূর্ণ সেকিউলারিস্ট ধারায় ও দৃষ্টিভঙ্গিতে এবং উহার পরিণামে সৃষ্টি হইত মালিক ও শ্রমিক স্বার্থের দ্বন্দ্ব ও সংঘর্ষ; ঠিক তেমনি বর্তমান শ্রমিক আন্দোলনেও এই শ্রমিক-মালিক সংঘর্ষ ছাড়া অন্য কিছুই দেখিতে পাওয়া যায় না। উপরন্তু এখানকার নেতৃত্বে মজুরদের ন্যায়সঙ্গত অধিকার স্বার্থোদ্ধারের ব্যাপারেও পূর্ণ নিষ্ঠাবান বলিয়া প্রমাণিত হইতে পারে নাই। এদেশে এইরূপ নেতৃত্ব বিরল নহে, যাহারা মজুর-শ্রমিকদের নির্দিষ্ট দাবির ভিত্তিতে ধর্মঘট করিতে বাধ্য নিজেদের মালিক পক্ষের সহিত গোপন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় এবং কিছু দিনের মধ্যেই মালিকদের নিকট হইতে বিপুল পরিমাণ অর্থ গ্রহণের বিনিময়ে ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা প্রচার করে। ফলে মজুরদের স্বার্থ বিনষ্ট হয়, আর মাঝখান দিয়া তাহাদের নেতৃত্ব বিপুল অর্থ লুটিয়া লয়। মজুরদের ন্যায়সঙ্গত স্বার্থ, লবি অন্যায় স্বার্থ উদ্ধার করিয়া লয়। এইরূপ মজুর-নেতা এদেশে যথেষ্ট সংখ্যক বিরাজ করিতেছে বলিয়া মজুরদের কোন সমস্যারই একবিন্দু সমাধান লাভ আজও সম্ভব হইল না।

তাই এই কথায় কোনই সন্দেহ থাকেনা যে, দেশের বর্তমান শ্রমিক আন্দোলন আদর্শিকতার দিক দিয়া যেমন এখানকার জনগণের চিন্তা-বিশ্বাসের সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ নহে, তেমনই তাহা মজুর-শ্রমিকদের অধিকার ও ন্যায়সঙ্গত স্বার্থ আদায়েরও অনুকূল নহে। মজুরদের বর্তমান নেতৃত্ব কোন দিনই প্রকৃত সমস্যার সমাধান করিতে চেষ্টিত হইবেনা, বরং উহাকে যথাযথভাবে জিয়ায়ে রাখিতেই সযত্নে চেষ্টা চালাইতে থাকিবে। কেননা সমস্যার সমাধানই যদি হইয়া যায় তাহা হইলে শ্রমিক আন্দোলনেরও প্রয়োজন থাকিবে না, আর তাহাদের নেতৃত্বের আবশ্যকতাও ফুরাইয়া যাইবে।



শ্রমের উদ্বোধক

ইসলামী সমাজে শ্রমের উদ্বোধক স্বার্থ, লোভ বা বিলাস উপকরণ সঞ্চয় প্রবণতা নয়; বরং হচ্ছে জীবনের চূড়ান্ত উদ্দেশ্য লাভ, আল্লাহ ও রাসূলের সন্তোষ বিধান এবং ইহকাল ও পরকালের সর্বোচ্চ কল্যাণের অধিকারী হওয়ার উদ্দীপনা।

কিন্তু বাংলাদেশের বর্তমান শ্রমিক আন্দোলনে উপরোক্ত পঞ্চ ভিত্তিকে উপেক্ষা করা হইয়াছে। ফলে এখানকার শ্রমিক আন্দোলন যেমন দুর্বল হইয়া পড়িয়াছে তেমনি ইহার নেতৃত্বও চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়াছে। আন্দোলনের দুর্বলতা ও নেতৃত্বের ব্যর্থতার অন্য সব কারণের মধ্যে শিল্পপতি ও মালিক পক্ষের ভুল আচরণ ও সরকারী লেবার ডিপার্টমেন্টের মজুরধ্বংসী নীতিকে প্রধানত দায়ী করা হয়। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে স্বয়ং মজুর নেতৃত্বের বন্ধ্যাত্ব যে অন্যতম কারণ তাহা স্বীকার করিতে দ্বিধা-সংকোচ করা হইতেছে। কিন্তু প্রকৃত ব্যাপার এই যে, উপরোক্ত পঞ্চ ভিত্তিকে স্থায়ী বুনিয়াদ হিসাবে গ্রহণ করিয়া শ্রমিক আন্দোলন গঠন করা না হইলে-না আন্দোলন জোরদার হইতে পারে আর না পারে উহার নেতৃত্ব কিছুমাত্র বলিষ্ঠ হইতে। এই কথা যতশীঘ্র স্বীকার করা হইবে শ্রমিক আন্দোলনের স্বার্থকতা ততই নিশ্চিত ও আসন্ন হইবে।

ইসলামী আদর্শে মজুর আন্দোলন গড়িয়া তুলিতে হইলে প্রথমত সাধারণভাবে সমগ্র শ্রমজীবি এবং বিশেষভাবে তাহাদের মধ্যে অপেক্ষাকৃত শিক্ষিত শ্রেণীর মধ্যে এই চেতনা জাগ্রত করিতে হইবে যে, দেশে সামগ্রিকভাবে ইসলামী সমাজ গঠনই হইতেছে তাহাদের যাবতীয় সমস্যার সুষ্ঠু সমাধানের সঠিক ব্যবস্থা। অতপর এই প্রেক্ষিতেই শ্রমিক আন্দোলন গড়িয়া তুলিতে হইবে। বস্তুত সমগ্র দেশে যদি ইসলামী শিক্ষা, নৈতিকতা, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও তামাদ্দুনিক বিধবিধান প্রতিষ্ঠিত হইতে পারে তাহা হইলে সাধারণ লোকদের ন্যায় মজুর-শ্রমিকরাও মনস্তাত্বিক অশান্তি এবং নৈতিক ও অর্থনৈতিক দূর্নীতি ও শোষণ-অপমান হইতেও স্থায়ীভাবে মুক্তি লাভ করিতে পারিবে। এই কারণে শ্রমিক আন্দোলনের দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা ইহাই হইতে হইবে।

ইহারই পরিপ্রেক্ষিতে এক আদর্শিক শিক্ষা ব্যবস্থা রচনা করাও আবশ্যক। কেনা নিজস্ব শিক্ষা পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করা ব্যতীত কোন আদর্শ ভিত্তিক আন্দোলনই সফল লাভ করিতে পারেনা। ইহা এক গুরুত্বপূর্ণ কাজ, যাহার সাহায্যে শ্রমজীবীরা ধীরে ধীরে ও অত্যন্ত কার্যকর ভাবে ইসলামী সমাজ ব্যবস্থার অনুকূলে এক জীবন্ত সার্থক শক্তি হিসাবে গড়িয়া উঠিবে। শ্রমিক আন্দোলনের সাধারণ টেকনিকও এই উদ্দেশ্যের অনুকূলে গ্রহণ করা হইবে।

এই দীর্ঘমেয়াদী কর্মসূচীর একটি বিশেষ অংশ হিসাবে সাধারণ মজুর-শ্রমিকদের মধ্যে ইসলামী জীবন ও সমাজ ব্যবস্থা সম্পর্কে ব্যাপক চেতনা ও জ্ঞান এবং সেইজন্য এক উদগ্র পিপাসা জাগাইয়া তুলিতে হইবে। তাহাদের এমনভাবে ট্রেনিং দিতে হইবে যেন তাহারা ইসলামী সমাজ গঠন ও রাষ্ট্রপ্রতিষ্ঠায় ব্রতী ব্যক্তি বা দলের সাথে পূর্ণ সহযোগিতা করে।

স্বল্প মেয়াদী পরিকল্পনা

স্বল্প মেয়াদী পরিকল্পনা হিসাবে মজুরগণ যাহাতে দেশের উন্নয়নমূলক কাজে পূর্ণ অংশ গ্রহণ করিতে পারে, মজুর আন্দোলনকে সেইজন্য যত্নবান হইতে হইবে। এই উদ্দেশ্যে বর্তমান শ্রমিক আইন (Labour laws) এর পরিবর্তন ও সংশোধন সূচিত করা, শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি, কাজের সময়ের পরিমাণ হ্রাস, সাধারণ জীবন যাপনের মান উন্নয়ন, শ্রমিকদের শিশু সন্তানের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সংরক্ষণের পুর্ণ ব্যবস্থা করণ এবং সেই সঙ্গে মজুর সংগঠনের এবং সভা-সম্মেলন অনুষ্ঠানের অবাধ স্বাধীনতা অর্জনের জন্য নিয়মতান্ত্রিক চেষ্টা চালাতে হইবে। মজলুমের সাহায্য ও জুলুম প্রতিরোধের জন্য বীর দর্পে আগাইয়া আসিতে হইবে। সেইজন্য প্রাণপণে চেষ্টা করিতে হইবে। প্রত্যেক শ্রমজীবী যাহাতে মানুষের মর্যাদা ও অধিকার পাইয়া জীবন যাপন করিতে পারে, সেইদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখিতে হইবে। আর গোটা আন্দোলনকে এমন প্রকৃতিতে গড়িয়া তুলিতে ও চালাইতে হইবে যে, উহাতে যাবতীয় দাবি দাওয়াকে সংঘর্ষের পরিবর্তে একই সমাজের দুইটি শ্রেণীর পারস্পরিক বিরোধ নিষ্পোত্তির পর্যায়ে রাখিয়া সকল দাবি-দাওয়া আদায় ও সকল সমস্যার সমাধানের সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পথ উন্মুক্ত হইবে।

এক্ষণেই এইরূপ এক নবতর আদর্শবাদী শ্রমিক আন্দোলনের প্রয়োজনীয়তা তীব্রভাবে অনুভব করা যাইতেছে। বর্তমান শ্রমিক ইউনিয়ন সমূহের নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ শ্রমজীবিগণের আশু দৃষ্টি এইদিকে আকৃষ্ট হওয়া আবশ্যক।

0 comments:

Comment Please

মন্তব্য..

সবিস্তার সূচীপত্র
টেম্পলেট কাষ্টমাইজেশন - তরঙ্গ ইসলাম | তরঙ্গ ইসলাম