রানা প্লাজা ট্রাজেডি : রেশমা ‘উদ্ধার’ নাটকের চাঞ্চল্যকর তথ্য উন্মোচণ



সাভারের রানা প্লাজা ধসের প্রথম দিনেই বের হয়ে এসেছিলেন আলোচিত গার্মেন্ট কন্যা রেশমা। সামান্য আহত রেশমা এরপর সাভারের একটি হাসপাতালে চিকিত্সাও নেন। আমার দেশকে এসব তথ্য জানিয়েছেন রেশমার সঙ্গে বের হয়ে আসা নিউ ওয়েব স্টাইল গার্মেন্টের লাইনম্যান এবং রেশমার এক ঘনিষ্ঠ সহকর্মী।

মাত্র চারটি বিসু্কট ও এক বোতল পানি খেয়ে রেশমার দিনের পর দিন বেঁচে থাকা এবং পরিপাটি নতুন পোশাকে উদ্ধার হওয়ার ঘটনা নিয়ে দেশব্যাপী ব্যাপক রহস্য সৃষ্টি হয়। এ ঘটনার সত্যাসত্য সম্পর্কে জানার জন্য অনুসন্ধান চালায় আমার দেশ।

ঘটনাস্থল সাভার, রেশমার গ্রামের বাড়ি দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটসহ বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিন অনুসন্ধান চালিয়ে জানা গেছে, গত ২৪ এপ্রিল সাভারের রানা প্লাজা ধসের পর প্রথম দিনই ভবনের ভেতর থেকে আহত অবস্থায় বের হয় রেশমা। তাকেই আবার কথিত ১৭ দিন পর ‘উদ্ধার’ করা হয়। ‘উদ্ধার’ হওয়া ‘অলৌকিক কন্যা’ রেশমাকে নিয়ে শুধু দেশের মিডিয়াই নয়, আন্তর্জাতিক মিডিয়াও বেশ মাতামাতি করে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, রেশমা উদ্ধারের কাহিনী ছিল একটি সাজানো নাটক। কিন্তু রেশমাকে নিয়ে কেন সাজানো হলো এই নাটক?

বিশ্লেষকরা বলছেন, ওই সময়ে হেফাজতের ওপর গণহত্যা, বিরোধীদল দমন-পীড়ন, রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় আন্তর্জাতিক নিন্দা, উদ্ধার অভিযানে ব্যর্থতাসহ সরকারবিরোধী বিভিন্ন ইস্যু চাপা দিতেই এ নাটক সাজানো হয়।

বিনিময়ে অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন দিন আনে দিন খাওয়া রেশমাকে তার হতাশাপূর্ণ জীবনের অধ্যায় শেষ করে আমেরিকা যাওয়া অথবা দেশের শীর্ষস্থানীয় কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পছন্দের একটিতে ৬০ হাজার টাকা বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখানো হয়েছে এবং এরই মধ্যে তাকে লোভনীয় বেতনে একটি পাঁচতারা হোটেলে চাকরি দেয়া হয়েছে।

রেশমাকে উদ্ধারের প্রকৃত ঘটনা জানতে তার মা জোবেদা, বোন আসমা, তার গ্রামের বাড়ির প্রতিবেশী, সাভারে ভাড়াটিয়া বাসার মালিক দম্পতি, সেখানকার প্রতিবেশী, রেশমার ঘনিষ্ঠ বান্ধবী রুমা, নিউওয়েভ স্টাইল গার্মেন্টের তৃতীয় ফ্লোরের লাইনম্যান এনামুল, ভবনের পাশের ক্যান্টিন মালিক আলম, রানা প্লাজার কয়েকজন দারোয়ান, নিউওয়েভ স্টাইলের তিনতলা ও ৭ তলার শ্রমিক রাজা, ময়না, জসিমসহ বেশ কয়েকজন শ্রমিক, উদ্ধার কাজে অংশ নেয়া স্থানীয় বহু লোক এবং রানা প্লাজার পাশের মজিদপুরের বহু বাসিন্দা ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে আমার দেশ।

গত ১০ মে রানা প্লাজার ধ্বংসাবশেষ থেকে রেশমাকে উদ্ধারের দাবি করা হয়। এ ঘটনা সারাবিশ্বে তোলপাড় সৃষ্টি করে। তাত্ক্ষণিকভাবে এমন ‘অলৌকিক ঘটনা’য় বাংলাদেশসহ পুরো দুনিয়ার কোটি কোটি মানুষ বিমোহিত হয়ে পড়েন। একটি জীবনের ‘জয়গানে’ তারা ভুলে যায় ১১২৭টি তাজা প্রাণের লাশ হয়ে যাওয়ার দুঃখ! সর্বত্র চলে হই-হুল্লোড়।

এভাবে অল্প কিছুক্ষণ চললেও সচেতন লোকেরা মোহ কাটিয়ে উঠতে থাকে খুব দ্রুতই। তারা বিশেল্গষণ শুরু করে দেন ‘উদ্ধার’ অভিযানের ঘটনা। খুঁটিনাটি বিশ্লেষণের পর ওইদিনই ভার্চুয়াল জগতে রটে যায়, ‘রেশমার উদ্ধার একটি নাটক’! ১১শ’ লাশের দুঃখ ভুলিয়ে দিতে আবেগপ্রবণ বাঙালির জন্য এটি মঞ্চস্থ করা হয়েছে!

তাত্ক্ষণিকভাবে এই সন্দেহবাদীদের কথা অনেকে উড়িয়ে দিলেও তাদের তুলে দেয়া কিছু প্রশ্নের কোনো উত্তর কেউ দিতে পারেনি। এসব উত্তর খুঁজতে অনুসন্ধান শুরু করে দৈনিক আমার দেশ। এরপর থেকেই বের হতে থাকে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য।

উদ্ধার হওয়া মেয়েটি কী ‘রেশমা’ না ‘জয়া’, নাকি ‘ফাতেমা’?: ‘উদ্ধার হওয়া রেশমার নাম নিয়েও ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। মা বলেছেন নিউওয়েভ গার্মেন্টে তার কার্ডে নাম ছিল জয়া। বোন বলেছে তার নাম জয়া নয়। তার কার্ডে নাম ছিল ফাতেমা। অফিসের লাইনম্যান জানিয়েছেন তার নাম জয়া। রেশমার ভাড়া বাসা বাড়ির মালিক জানেন রেশমা নামে। কিন্তু সেনাবাহিনীর উদ্ধার কর্মীর একটি দল জানায়, তার নাম ‘রেশমা’। কিন্তু তার মা জোবেদা বেগম এবং গ্রামের লোকজন বলেছেন, তার আসল নাম ‘জয়া’।

তাহলে রেশমা নাম এলো কী করে? এ প্রশ্নের জবাবে তার মা বলেন, রেশমা ডাকনাম। কিন্তু ভবন ধসের পর মা ও বোন মিলে প্রকৃত নামেই (জয়া) কার্ড ছাপিয়ে সাভারে গিয়ে তাকে খুঁজেছেন। ওই কার্ডের ছবিও আমার দেশ সংগ্রহ করেছে। তবে সাভারের ব্যাংক কলোনি এলাকার ভাড়াটিয়া বাসার মালিক নুরু মিয়া ও তার স্ত্রী হাজেরা বেগম ‘রেশমা’ হিসেবেই তাকে চেনেন।

আবার ‘রেশমা’র বড় বোন আসমা, যিনি তাকে ঢাকায় নিয়ে আসেন এবং রানা প্লাজার নিউ ওয়েভ স্টাইলে চাকরি জোগাড় করে দেন, তিনি আমার দেশ-কে জানিয়েছেন, ‘রেশমা’ ‘ফাতেমা’ নামে এখানে কাজ নেয়। তার নাম জয়া নয় বলেও জানান আসমা। কারণ হিসেবে জানান, গার্মেন্টেসে জন্ম নিবন্ধনের সার্টিফিকেট দরকার ছিল যা রেশমার ছিল না। তাই অন্য এক ফাতেমার নাম দিয়ে সে ওই গার্মেন্টে কাজ নেয়।

কিন্তু রহস্যজনকভাবে আসল নাম ‘জয়া’ এবং গার্মেন্টে এন্ট্রি করা নাম ‘ফাতেমা’র কথা কেউ বলেননি। এনাম মেডিকেলে ২৪ তারিখ থেকে ২৬ তারিখ পর্যন্ত আহতদের তালিকায় ফাতেমা নামে একজনের ভর্তি হওয়ার তথ্যও পাওয়া গেছে। ওই নাম তালিকার প্রথম দিকেই রয়েছে।

২৪ এপ্রিলই রানা প্লাজা থেকে এনামুলের সঙ্গে বের হয়ে আসেন রেশমা : রেশমা তিনতলার যে কোম্পানিতে (নিউ ওয়েভ স্টাইল লিমিটেড) কাজ করতেন, ওই প্রতিষ্ঠানেরই ‘লাইনম্যান’ হিসেবে কাজ করতেন গাইবান্ধা জেলার সাদুল্লাপুর উপজেলার নলডাঙ্গার এনামুল। এনামুল জানান, এ ঘটনার পর থেকেই বাড়িওয়ালার সঙ্গে তার যোগাযোগ হয়। তবে ভবন ধসে পড়ার পর সে কিছুটা আহত অবস্থায় বের হয়ে আসে। দু’দিন এনাম হাসপাতালে চিকিত্সা নিয়ে সে গাইবান্ধায় চলে যায়। ১০ মে রেশমা ‘উদ্ধার’ ঘটনার পরে ভেতরে থাকা রহস্যের ব্যাপারে জানার জন্য বহু চেষ্টা করেও এনামুলকে ঢাকায় আনা যায়নি। বিভিন্ন মোবাইল থেকে ভিন্ন ভিন্ন পরিচয়ে তার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেও সফল হওয়া যায়নি। অবশেষে ‘রানা প্লাজায় নিখোঁজ রেশমা নামক একজনের বোন’ পরিচয়ে বেশ কয়েকদিন তার সঙ্গে কথা বলা হয়। যোগাযোগের একপর্যায়ে কিছুটা আশ্বস্ত হলে অনেক বিষয়ে (মোবাইল নং- ০১৭৭৮০০০৩৩৪) কথা বলেন এনামুল।

একপর্যায়ে নিজের বের হয়ে আসার ঘটনাসহ রেশমার ব্যাপারেও তথ্য দেন। এ সময় এনামুল জানান, তিনি এক রেশমাকেই চেনেন। তার আসল নাম ‘জয়া’ (যাকে ‘১৭ দিন পর উদ্ধার করা হয়েছে’)। এনামুল স্বীকার করেন, এ রেশমা ২৪ এপ্রিল ভবন ধসের ঘটনার সময় তার পেছন পেছন বের হয়ে আসেন। এ সময় রেশমাও আহত অবস্থায় এনাম হাসপাতালে ভর্তি হন। কিন্তু নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত এনামুল দুদিন পরে হাসপাতাল ছাড়ার সময় আর রেশমাকে খুঁজে পায়নি। এরপর তার সঙ্গে রেশমার বাড়িওয়ালার যোগাযোগ হয়। বাড়িওয়ালা ফোনে রেশমাকে হাসপাতালে পেয়েছেন বলেও নিশ্চিত করেছেন এনামুলকে। এনামুলের সঙ্গে এসব বিষয়ে কথা বলার একপর্যায়ে তিনি জানান, দুদিন রেশমা এনাম মেডিকেলে ভর্তি ছিলেন। তারপর ওখান থেকে ক্যান্টমেনটে চলে যায় বলে শুনেছি। এরপর আর রেশমার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ হয়নি।

কিন্তু এ বিষয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন করতে শুরু করলে সে ফোন কেটে দেয়। এরপর একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে সে ক্ষিপ্ত হয়। আলাপচারিতায় প্রথম পর্যায়ে এনামুল দাবি করে রেশমার সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু সে বিবাহিত জানার পর আর পাত্তা দেয়নি। এনামুলের সঙ্গে এসব কথোপকথনের সব রেকর্ড রয়েছে আমার দেশ-এর হাতে।

অক্ষত গ্রাউন্ড ফ্লোর থেকেই ‘উদ্ধার’ করা হয়েছিল রেশমাকে : রানা প্লাজা ধসের ঘটনার শুরু থেকে উদ্ধার অভিযানের শেষ পর্যন্ত অক্ষত ছিল গ্রাউন্ড ফ্লোর। গ্রাউন্ড ফ্লোরের চারপাশটা ধ্বংসস্তূপে ঢাকা ছিল মাত্র। তাই ঘটনার দিনই মালিক সোহেল রানাকে আর এস টাওয়ারের ভেতর থেকে জানালা ভেঙে গ্রাউন্ড ফ্লোর দিয়ে উদ্ধার করা হয়েছিল। ওই একই জায়গা থেকে ১৭ দিন পর রেশমাকেও ‘উদ্ধার’ করার দাবি করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, পুরো ৯ তলার ৮টা ফ্লোরের ধ্বংসস্তূপ একসঙ্গে ধসে পড়েনি। তিনতলা পর্যন্ত অক্ষত ছিল কয়েকদিন। পরে বাকি ফ্লোর ধসে পড়লেও গ্রাউন্ড ফ্লোরের ছাদ সম্পূর্ণ অক্ষত ছিল। তাই তিনতলা থেকে কারও বেজমেন্টে পড়ার সুযোগ নেই। এমনকি মসজিদের সঙ্গে সিঁড়ির পথ ধ্বংসস্তূপের কারণে একেবারেই বন্ধ থাকায় কেউ ওই পথে যেতে পারেনি। তাই সিঁড়ির পথ দিয়েও গ্রাউন্ড ফ্লোরে নেমে আসার মতো ব্যাপারটিও অবিশ্বাস্য।

শুধু তাই নয়, গ্রাউন্ড ফ্লোরের ছাদ অক্ষত থাকায় উদ্ধার অভিযানের সময় এলাকাবাসী রানা প্লাজার দুপাশের আর এস টাওয়ার ভবন ও গুদামঘর থেকে অক্ষত গ্রাউন্ড ফ্লোর পর্যন্ত সুড়ঙ্গ পথ তৈরি করে নিয়েছিলেন। অথচ রেশমাকে উদ্ধারের পর তাত্ক্ষণিকভাবে বলা হয়, তাকে বেজমেন্টের মসজিদ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। আরও বলা হয়, রেশমা ধসের সময় তিনতলায় ছিল। পরে দ্বিতীয় ও গ্রাউন্ড ফ্লোর ধসার পর সে বেজমেন্টের মসজিদে পড়েছিল।

কিন্তু রানা পল্গাজার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করা এবং উদ্ধার অভিযানে প্রথম থেকেই অংশ নেয়া স্থানীয় বাসিন্দা ও শ্রমিক রাজা, আলম, রবিউল, জসিম, মিলনসহ অনেকে জানান, গ্রাউন্ড ফ্লোর ধসেনি। তাই তিনতলা থেকে পড়ে বেজমেন্টের মসজিদে কারও যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। রেশমাকেও কথিত উদ্ধারের সময় আর এস টাওয়ারের ভেতর থেকে বের করা হয়েছে।

রেশমা উদ্ধারের তিনদিন আগে রানা প্লাজার তিনদিকে ছিল অঘোষিত ‘কারফিউ’: রেশমাকে উদ্ধারের ঘটনার তিনদিন আগে থেকে ছিল অঘোষিত কারফিউ। ওই তিনদিনে রানা প্লাজার চারপাশে কাউকে ঘেঁষতে দেয়া হয়নি।

এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিপুলসংখ্যক র্যাব, বিজিবি সদস্য এবং সেনাসদস্য ওই এলাকা ঘিরে রাখে। রানা প্লাজার চারপাশের বাড়িঘরের সামনে গেটে নক করে সন্ধ্যার আগেই বন্ধ করা এবং কোনোভাবেই বের না হওয়ার জন্য হুশিয়ার করে দেয় তারা।

রানা পল্গাজার সামনে (উত্তর দিকে) ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক। পূর্ব-পশ্চিম দিকে মার্কেট ও দোকানপাট এবং দক্ষিণ দিকে মজিদপুর আবাসিক এলাকা। ১০ মে বিকাল সাড়ে চারটায় রেশমাকে উদ্ধারের আগে ৭ তারিখ থেকে রানা প্লাজার পূর্ব ও পশ্চিম দিকে দোকানপাটগুলো সন্ধ্যার পরপরই বন্ধ করে দেয়া হতো। আর দক্ষিণ দিকের আবাসিক এলাকায় সবচেয়ে কাছে থাকা হোসনে আরা বেগমের বাড়িসহ কয়েকটি বাড়ির বাসিন্দাদের ৭ তারিখ সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়। হোসনে আরা বেগমের বাড়ির লোকজনসহ কয়েকটি বাড়ির মালিক জানান, কোনো কারণ ছাড়াই নিরাপত্তা বাহিনীর লোকজন এসে তাদের বাড়িঘর ছেড়ে ৫-৬ দিনের জন্য এলাকার বাইরে গিয়ে থাকার আদেশ দেন। ফলে তারা বাড়িঘর ছেড়ে চলে যান। ফিরে আসেন রেশমা উদ্ধারের ঘটনার ২ দিন পর। কি কারণে তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বলা হয়েছিল সে ব্যাপারেও তাদের জানার কোনো সুযোগ দেয়া হয়নি।

রানা প্লাজার ৩০০ গজ দূরত্বের পর থাকা মজিদপুরের অনেক বাড়ির গেটে সন্ধ্যার পর থেকেই দুজন করে সেনাবাহিনীর সদস্য অবস্থান নিয়ে বাসিন্দাদের দরজা বন্ধ করে ভেতরে থাকার নির্দেশ দেয়। ৮ ও ৯ মে একইভাবে চলে। কিন্তু ১০ মে বিকালে রেশমা উদ্ধারের পর আর কোনো নিরাপত্তা টহল ছিল না ওইসব এলাকায়।

মজিদপুরের ‘কাশেমের দোকান’র মালিক কাশেম মিয়া, ক্যান্টিন মালিক আলম, হোসনে আরা বেগমের বাড়ির লোকজনসহ আরও অনেকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তারা বলেন, নিরাপত্তা বাহিনীর এ ধরনের আচরণে তারা মনে করেছিলেন যে রাতের অন্ধাকারে ধ্বংসস্তূপের সঙ্গে গাড়ি ভর্তি লাশ গুম করার জন্যই এমনটা করা হচ্ছে। কারণ শাহীনার ঘটনার পর থেকে দিনের বেলায় লাশ উদ্ধার করার কোনো নজির নেই। সব লাশ উদ্ধার করা হয়েছে রাতের অন্ধকারে।

স্বামীর মারধরের কারণেই রেশমার হাতে দাগ : রেশমাকে উদ্ধারের পর এএফপির ছবি দেখিয়ে অনেককে বলতে শোনা গেছে, ‘এটা নাটক হলে হাতে এতো দাগ থাকত না। ধ্বংসস্তূপ থাকার কারণে হাত থেতলে গিয়ে এমন হয়েছে।’
এ ব্যাপারে জানতে ২২ মে সকাল ১০টায় দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট এলাকায় রানীগঞ্জ বন্দরের কুশিগাড়ি গ্রামে রেশমার বাড়ি যান স্থানীয় সাংবাদিক মো. মোখলেসুর রহমান সওদাগরসহ আমার দেশ-এর তিন প্রতিবেদক। মাটির দেয়াল ও ছনের চালাবিশিষ্ট ঘরের সামনে বসেছিলেন রেশমার মা জোবেদা বেগম ও খালাসহ স্থানীয় কিছু নারী-পুরুষ। 

তার আগের দিন সকালে অর্থাত্ ২১ মে রেশমার মা ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসেন। এ সময় রেশমার মা জোবেদা বেগম তার মেয়ে জামাই কিভাবে মেয়ের ওপর নির্যাতন চালাতো সেসব ব্যাপারে তুলে ধরেন।

অন্যদিকে তার আগে সাভার ব্যাংক কলোনিতে রেশমার ভাড়া বাসার মালিক নুরু মিয়া জানান, স্বামী রাজ্জাকের অমানুষিক নির্যাতনে বাধ্য হয়ে তাকে ডির্ভোস দেয় রেশমা। নুরু মিয়া বলেন, রেশমার হাতে যত দাগ আছে সেগুলো তার স্বামীর সিগারেটের ছ্যাঁকার দাগ। নুরুর স্ত্রী হাজেরা বেগম আরও জানান, রেশমার এক হাতে লম্বা একটা কাটার দাগ আছে, সেটিও রাজ্জাকের নির্যাতনের চিহ্ন। রেশমার স্বামীর নির্যাতনের বর্ণনার ব্যাপারে রেশমার মা ও বাড়িওয়ালার কথার মিল রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনের সময় রেশমার হাতে অনেক আগের পুড়ে যাওয়া সিগারেটের দাগ দেখা গেছে। জোবেদা বেগমের দেয়া তথ্য অনুযায়ী রেশমার স্বামী আবদুর রাজ্জাকের বাড়ি দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার মণ্ডপপাড়া গ্রামে। 

সেখানে সরেজমিনে গেলে আবদুর রাজ্জাককে পাওয়া যায়নি।

বেজমেন্টে কোনো দোকান ছিল না : রেশমার ‘নতুন’ ড্রেস পরার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে সেনা কর্মকর্তারা সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বলেন, ‘যেখানে সে পড়েছিল সেখানে কয়েকটি কাপড় ও খাবারের দোকান ছিল। ১৭ দিন ধ্বংসস্তূপে থাকার কারণে তার গায়ের কাপড় ছিঁড়ে যাওয়ায় উদ্ধারের আগে সে ওইসব দোকানের একটি থেকে কাপড়গুলো সংগ্রহ করে রেশমা নিজেই গায়ে দেয়।’ কিন্তু রানা পল্গাজার গার্ড রবিউল, আবদুল মজিদ, সাততলার সিকিউরিটি গার্ড মীর দেব, ক্যান্টিন মালিক আলম, স্টোর শ্রমিক সরোয়ার,এবং ভবনে কাজ করা অন্য জীবিত শ্রমিকরা জানান, বেজমেন্টে কোনো দোকান ছিল না। সেখানে ছিল গাড়ি পার্কিং, বৈদ্যুতিক ট্রান্সমিটার এবং মসজিদ। সাভারের অন্যান্য বহুতল ভবনগুলো ঘুরে দেখা গেছে ওই এলাকায় কোথাও বেজমেন্ট ফ্লোরে দোকান রাখার প্রচলন নেই। আলম জানান, রানা প্লাজা নির্মাণের পর থেকে তার এই ক্যান্টিন। তিনি প্রত্যক্ষ স্বাক্ষী বেইজমেন্টে কোনো খাবারের দোকান এবং কাপড়ের দোকন ছিল না।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়েছে, একাধিকবার জামা পরিবর্তন করেছেন রেশমা। এমনকি রেশমার দেয়া বর্ণনা অনুযায়ী তিনি যখন প্রথম তিনতলায় আটকে ছিলেন তখন তার সামনে মাত্র ১০ ইঞ্চি ফাঁকা ছিল। ওই ফাঁকার মধ্যে রেশমার ম্যাচিং করা ড্রেস পড়া অসম্ভব। তাছাড়া তিনতলায় কোনো দোকান ছিল না। ছিল শুধু গার্মেন্ট, যেখানে এ ধরনের পোশাক তৈরি হয় না।

শাহীনাকে উদ্ধারে ব্যর্থতার পর উদ্ধারকারীদের ভিন্ন আচরণ : গার্মেন্ট শ্রমিক শাহীনাকে জীবিত উদ্ধারে ব্যর্থতা নিয়ে মিডিয়ায় সমালোচনা ও এলাকাবাসীর রোষানলে পড়ে নিরাপত্তা বাহিনী। ঘটনার পর প্রথমে বলা হয়েছিল, ৭২ ঘণ্টা পর জীবিত পাওয়ার সম্ভাবনা না থাকায় উদ্ধার অভিযান বন্ধ করা হবে। কিন্তু এরপর বিশেষ বিবেচনায় অভিযান চলার সময় ঘটনার ১০৮ ঘণ্টা পরে শাহীনা নামক জীবিত এক মহিলার সন্ধান পাওয়া যায়। এরপর তাকে জীবিত উদ্ধারের জন্য ২৯ ঘণ্টা চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় উদ্ধারকারী দল। ব্যর্থ হওয়ায় এলাকার স্থানীয় উদ্ধারকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষ হয়। এ সময় দু’পক্ষ থেকেই ইটপাটকেল ছুড়ে মারার ঘটনাও ঘটে।

স্থানীয় উদ্ধারকারীরা জানান, এর পর থেকেই নিরাপত্তা বাহিনীর আচরণ অন্যরকম হয়ে যায়। তারা কাউকেই আর ধ্বংসস্তূপের আশপাশে ঢুকতে দেয়নি। এমনকি ফায়ার সার্ভিসের লোকজনকেও তারা ফেরত পাঠিয়ে দেয়। কোনো কারণ ছাড়াই রানা প্লাজার সঙ্গে গুদামঘর-লাগোয়া মজিদপুর রোডটি বন্ধ করে দিয়ে গুদামঘরের গেট তালাবদ্ধ করে দেয়া হয়।

শতাধিক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, রেশমাকে গুদামঘর থেকে ঢোকানো হয়েছে। উদ্ধার দেখিয়ে আরএস টাওয়ার থেকে বের করা হয়েছে। রেশমাকে যাতে কেউ না দেখে সেজন্য সবার দৃষ্টির আড়ালে আগেভাগেই তারা নাটকের মঞ্চ তৈরি করে রাখেন।

এসব ঘটনার সময়ে কোনো সাংবাদিককে রানা প্লাজার ধারেকাছেও ঘেঁষতে দেয়া হয়নি। দূর থেকে ফুটেজ ও ছবি নিতে হতো।

রেশমাকে উদ্ধারের পর স্থানীয় অনেকে এই প্রতিবেদকের কাছে মন্তব্য করেছেন, শাহীনাকে উদ্ধারের ব্যর্থতা ভোলাতে নিরাপত্তা বাহিনী রেশমাকে ‘উদ্ধার’ করেছে।

শুধু রাতের অন্ধকারে উদ্ধার অভিযান নিয়ে এলাকায় ক্ষোভ : শাহীনার ঘটনার পর থেকে সরকারের উদ্ধারকারীরা দিনের বেলায় কোনো উদ্ধার অভিযান চালায়নি। রাতের অন্ধকারে উদ্ধারকাজ চালানোয় স্থানীয়া ক্ষুব্ধ ছিল। 

উদ্ধারকাজের আড়ালে অন্যকিছু ঘটছে কিনা এমন সন্দেহ থেকে তারা রাতের বেলা সাভার এলাকায় চলাচলকারী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গাড়ি তল্লাশি করে। কিন্তু ৭ মে সন্ধ্যা থেকে অঘোষিত কারফিউয়ের অবস্থা সৃষ্টি করায় ১০ মে রাত পর্যন্ত স্থানীয় বাসিন্দারা কোনো গাড়ি তল্লাশি করেনি।

রেশমাকে আমেরিকা পাঠাতে চায় সরকার : সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারের সাজানো নাটক যাতে প্রকাশ না হয়, সেজন্য রেশমাকে বিদেশ পাঠাতে মরিয়া সরকার। এ সুযোগ ছাড়তে নারাজ পরিবারও। তবে তারা চায় রেশমার হাত ধরে সপরিবারে আমেরিকা পাড়ি জমাতে। কিন্তু সরকার চায় শুধু রেশমাকে পাঠাতে। রেশমার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।

জোবেদা বেগম যা বলেন তা হুবহু তুলে ধরা হলো—‘উদ্ধারের পর প্রধানমন্ত্রী জোবেদা বেগমের হাতে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছেন। রেশমাকে দুটি শাড়ি ও একটি চাদর দিয়েছেন। এছাড়াও গার্মেন্ট মালিকও রেশমাকে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছেন। আরও অনেকে অনেক টাকা দিয়েছেন (নাম বলতে পারেননি)। রানা প্লাজায় সেনাবাহিনীর উদ্ধারকারী টিমের প্রধান (জিওসি) রেশমার কাছে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী জানতে চেয়েছেন, রেশমা কি আমেরিকা যেতে চায়, নাকি দেশে ক্যান্টনমেন্টের ভেতরে যে হোটেল (হোটেল রেডিসন) আছে সেখানে চাকরি করতে চায়? রেশমা বলেছে, সে আমেরিকা যেতে চায় না। দেশে ওই হোটেলে চাকরি চায়। ওই হোটেলে চাকরি করলে অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন রেশমার বেতন হবে ৩৫ হাজার টাকা এবং অন্যান্য সুবিধাসহ তার মোট বেতন হবে ৬০ হাজার টাকা।’ আপনারা পরিবারের লোকজন কি চান—জানতে চাইলে রেশমার মা বলেন, ‘আমরা বলেছি রেশমা একা যাবে না। গেলে পরিবারের সবাই যাব। রেশমাও তা-ই বলেছে।’

রেশমার লেখাপড়া কী করেছে—জানতে চাইলে জোবেদা বেগম বলেন, ‘দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়েছে মাত্র। বেশি লেখাপড়া জানে না আমার মেয়ে।’

রেশমার প্রতিক্রিয়া : গত ৬ জুন হোটেল ওয়েস্টিনে যোগদানের সময় সংবাদ সম্মেলনে রেশমার কাছে জানতে চাওয়া হয়, রানা প্লাজা ধসের সময় তিনি লাইনম্যান এনামুলের সঙ্গে বেরিয়ে আসেন। দুই দিন তিনি এনাম মেডিকেলেও চিকিত্সা নিয়েছিলেন।

এ কথা শুনে তিনি চমকে ওঠেন। কয়েক সেকেন্ড সময় নেন। তারপর চিত্কার করে বলেন, কী বললেন?

আবার তাকে প্রশ্ন করা হয়, আপনি যে গার্মেন্টে কাজ করতেন, ওই গামেন্টের লাইনম্যান এনামুলকে তো আপনি চেনেন, তা-ই না? জবাবে ‘হ্যাঁ’ অথবা ‘না’ উত্তর দেননি রেশমা। তবে তিনি লাইনম্যান এনামুলকে অস্বীকারও করেননি। পরে রেশমা বলেন, ‘আমি যেখানে ছিলাম, সেখানে আপনি ছিলেন না। তাই আমার যে কী কষ্ট হয়েছে, আপনি জানেন না। আপনি ভুল কথা বলছেন।’ এরপর আর কোনো কথা বলেননি রেশমা।

এ সময় ওয়েস্টিনের কর্মকর্তারা বলেন, রেশমাকে কেউ এ ধরনের ব্যক্তিগত প্রশ্ন করতে পারবেন না।

প্রথম ছবিতেই অসঙ্গতি : রেশমাকে উদ্ধারের পর বার্তা সংস্থা এএফপির ছবিতে দেখা যায়, রেশমার হাতের নখ খুবই ছোট, ১৭ দিন না কাটলে যা এর চেয়ে কয়েকগুণ বড় হওয়ার কথা। চিকিত্সা বিজ্ঞানের মতে, কেউ দীর্ঘসময় অন্ধকারে থাকার পর তার চোখ তাতে অভ্যস্ত হয়ে যায়। এক্ষেত্রে তাকে আলোতে আনার সময় চোখ বেঁধে আনতে হয়। ধীরে ধীরে তার কাছে আলো সহনীয় হয়ে ওঠে। অন্যথায় ক্ষতির আশঙ্কা থাকে। বিশেষ করে ৭২ ঘণ্টার পর হঠাত্ করে কেউ আলোতে এলে তার দৃষ্টিশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। কিন্তু ৩৯১ ঘণ্টা অন্ধকারে থাকার পর রেশমাকে কেন খোলা চোখে বের করা হলো? টিভির লাইভে দেখা গেছে, স্ট্রেচারে ওঠানোর পর তিনি চঞ্চল দৃষ্টিতে চারদিকে তাকাচ্ছিলেন।

সেনাবাহিনীর কথা : রেশমা ‘উদ্ধার’ প্রসঙ্গে কথা হয় সেনাবাহিনীর সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তার সঙ্গে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে গত ৬ জুন তিনি জানান, রেশমাকে ক্যান্টনমেন্ট থেকে ওয়েস্টিনের কর্মকর্তা বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত এক অস্ট্রেলিয়ান এসে নিয়ে যান। রেশমাকে আমেরিকা যাওয়ার এবং হোটেল রেডিসনে চাকরির প্রস্তাব সরকার দিয়েছিল। তবে ওয়েস্টিন হোটেল কর্তৃপক্ষ রেশমাকে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে জোড়ালোভাবে লবিং করায় সরকারও সম্মতি দিয়েছে।’

রেশমা নাটক গোপনে মঞ্চায়নের জন্য অঘোষিত রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছিল কিনা জানতে চাইলে ওই সেনা কর্মকর্তা বলেন, ঠিক কী হয়েছিল, সে ব্যাপারে তিনি নিশ্চিত করে বলতে পারবেন না। তবে তার জানামতে, অঘোষিত রেড অ্যালার্ট দেয়া হয়েছিল টেকনিক্যাল কিছু সমস্যার জন্য।

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, সাধারণ উদ্ধারকারী দল চেয়েছিল গর্ত তৈরি করে উদ্ধার অভিযান চালাবে, যা তাদের জন্যই বিপদের কারণ হতে পারে। তাই ভারী যন্ত্রপাতি দিয়ে দ্বিতীয় পর্যায়ের অভিযানের জন্য রেড আ্য্যলার্ট দেয়া হয়েছিল। সেখানে অনেকে বাড়াবাড়ি করেছে ।

রানা প্লাজায় উদ্ধার অভিযান ও রেশমা ‘উদ্ধারে’র পর সংবাদ সম্মেলনসহ সাংবাদিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করার নেতৃত্বদানকারী সেনা কর্মকর্তা মেজর তৌহিদ উজ জামান আমার দেশকে বলেন, ‘সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার কথা ভেবেই তারা উদ্ধার অভিযানের সময় কাউকে রাখেননি। এমনকি রেশমাকে তারা সুস্থ করেই ওয়েস্টিনের কাছে হস্তান্তর করেছেন। এরপর আর রেশমার কোনো দায়দায়িত্ব তাদের হাতে রাখেননি।’



ওসি-ইউএনও’র ঘুম হারাম! প্রশাসনের বাড়াবাড়িতে কেঁদে ফেললেন রেশমা : মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলতে মানা

‘অলৌকিক কন্যা’ রেশমাকে নিয়ে সরকারের লুকোচুরি চলছেই। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে অসুস্থতার কথা বলে তাকে সাংবাদি-কদের নাগালের বাইরে রাখা হয়েছে অত্যন্ত সযতনে। শুধু সিএমএইচ হাসপাতালে এবং ঢাকার ওয়েস্টিন হোটেলে সেনাবাহিনীর অফিসার ও প্রশাসনের লোকজন পরিবেষ্টিত অবস্থায় সীমিত আকারে কিছু কথা বলতে দেয়া হয়েছিল রেশমার সঙ্গে। তবে কোনো প্রশ্নের উত্তর দেয়া হয়নি। গত বৃহস্পতিবার আবার ঘটল একই ধরনের ঘটনা। রানা প্লাজার ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধারের পর বৃহস্পতিবারই প্রথম তিনি তার গ্রামের বাড়ি দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে যান। সেখানে প্রশাসনের লোকজনের মাত্রাতিরিক্ত বাড়াবাড়িতে শুধু এলাকার লোকজন ও সাংবাদিকরাই নন, রেশমা নিজেই একপর্যায়ে অসহ্য হয়ে কেঁদে ফেলেন।

বৃহস্পতিবার রাত প্রায় দেড়টায় একটি পাজেরো জিপে করে ঢাকা থেকে রওনা দিয়ে বাড়িতে পৌঁছেন রেশমা। সঙ্গে ছিলেন তার কর্মস্থল ঢাকার ফাইভস্টার হোটেল ওয়েস্টিনের এক কর্মকর্তাসহ দুজন সফরসঙ্গী।

এদিকে রেশমার বাড়ি আসার খবর পেয়েই সকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মাকসুদা বেগম সিদ্দিকা ও থানার ওসি জাহিদ হোসেন একভ্যান পুলিশ নিয়ে তার বাড়িতে ছুটে যান। শুরু হয় প্রশাসনের বাড়াবাড়ি আচরণ। এক রেশমাকে নিয়েই ইউএনও-ওসির যেন ঘুম-হারাম অবস্থা!

উদ্ধারের পর প্রথম বাড়ি আসায় স্বাভাবিকভাবেই এলাকার মানুষ, বিশেষ করে সাংবাদিকদের মাঝে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। সবাই কথা বলতে উদগ্রীব হয়ে ছিলেন তাদের বহু কাঙ্ক্ষিত রেশমার সঙ্গে। কিন্তু উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাফ জানিয়ে দিলেন, কোনো মিডিয়া রেশমার সাক্ষাত্কার নিতে পারবে না। এমনকি মিডিয়ার লোক তার সঙ্গে (রেশমা) একটি কথাও বলতে পারবে না, শুধু ছবি তুলতে পারবে!

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেশমার ভাই, বোন, মাসহ পরিবারের সবাইকে সতর্ক করে দেন, কোনো সাংবাদিককে যেন রেশমার সঙ্গে কথা বলতে দেয়া না হয়।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাকসুদা বেগম সিদ্দিকাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি রেশমার শারীরিক অসুস্থতার কথা উল্লেখ করেন। তিনি ‘এটি প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত গড়ানো ব্যাপার’ বলেও সাংবাদিকদের সতর্ক করেন।

প্রশাসনের লোকজন তাকে অসুস্থ বললেও রেশমাকে দেখে উপস্থিত সবার কাছে একেবারে সুস্থ বলেই মনে হয়েছে। তার নিরাপত্তার বিষয়ে প্রশাসনকে বেশ বাড়াবাড়ি রকম উদ্বিগ্ন দেখা গেছে।

একপর্যায়ে হোটেল ওয়েস্টিনের কর্মকর্তাদের শুক্রবার বিকালের মধ্যেই রেশমাকে ঢাকায় নিয়ে যেতে বারবার চাপ দেয়া হয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে। অথচ রেশমা আরও ৫-৬ দিন বাড়িতে থাকতে চাইছিলেন। তারপরও ঢাকায় পাঠাতে জোরাজুরি করায় একপর্যায়ে তিনি কেঁদে ফেলেন।

রেশমাকে উদ্ধারের প্রায় দেড় মাস পরও তিনি অসুস্থ—এ অজুহাতে সাংবাদিকসহ সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলতে না দেয়ায় এলাকার অনেকের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। রেশমার আত্মীয়স্বজন, শুভাকাঙ্ক্ষী যারা এসেছিলেন তার মুখ থেকে রানা প্লাজায় ১৭ দিন পড়ে থাকার বর্ণনা শুনতে, তাদের এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে।





Rana Plaza Tragedy: The Drama of Reshma’s “Miraculous Rescue”

Investigations by Amar Desh reveal the ‘miraculous rescue’ of Reshma from Rana Plaza 17 days after the building collapsed to have been a staged drama.

Reshma, the widely known young garments worker lady [‘saved’ alive from the Rana Plaza rubble on the 17th day of the collapse], had in fact been saved from the disaster during rescue operations on the very first day of the Rana Plaza collapse in Savar. Slightly injured Reshma had even taken treatment from a hospital in Savar. Newspaper, Amar Desh, was informed of this by a lineman of New Wave Style Garments, which was housed in the building and was the factory where Reshma worked also. The lineman, Enamul, is a close colleague of Reshma who had also come out of the rubble with her on the first day.

Throughout Bangladesh doubts had been cast upon the story of Reshma, who was said to have survived on 4 biscuits and a bottle of water, and was also seen to have been rescued in completely new and fresh clothes. Amar Desh went on to investigate the facts behind the story.

It has been known from first hand investigation at the scene of Savar, at Reshma’s home village Ghoragath of Dinajpur and at a few other areas – that Reshma was saved injured from beneath the building rubble on the very first day of the collapse of Rana Plaza on 24th April. Then 17 days later she was claimed to be have been rescued from the rubble. It wasn’t only the local media but even the international media which went into a frenzy with regards to the ‘rescued’ ‘miracle girl’.

Amar Desh’s investigations have found the rescue of Reshma was a staged drama. Why was this drama set up?

Analysts have commented that this set up was done to cover up various government failures and misdeeds that had peaked during the time; the mass-murder at the May 5 and 6 Hefazat Rally, the oppression on the opposition party, the international outcry after the Rana Plaza collapse and the consequent failure of the government during the rescue operations.

In exchange for her part in the drama, the literate and hand-to-mouth-earner Reshma was offered to choose either to go to the United States or take up a job at a top-notch organization within the country that would pay her BDT 60,000 monthly, bringing an end to her difficult life. She has already been appointed at a five-star hotel paying her an alluring wage.


Reshma at a press conference after being ‘saved’ 17 days after the collapse of Rana Plaza.

To understand what had actually happened behind this ‘rescue’ Amardesh spoke to her mother Jobeda; her sister Asma; her neighbour at her home village; the landlord-couple of her home in Savar; her neighbor in Savar; her close friend Ruma; the lineman of the 3rd floor of New Wave Style Garments, Enamul; the owner of the canteen beside the collapsed building, Alom; a number of guards of Rana Plaza; a number of workers of the 3rd and 7th floor of New Wave Style Garments, including Raja, Moyna and Joshim; many local people who tok part in the rescue operations and a number of residents and small business-owners of Mojidpur (just beside Rana Plaza).

It had been claimed that Reshma was rescued on 10th May from the rubbles of the collapsed Rana Plaza. This news sent shockwaves across the globe. In the immediate moments after the ‘miraculous incident’ – thousands of people across the globe were overwhelmed with the news. The tragedy of losing at least 1127 lives was forgotten by the victory of saving one. There was excitement everywhere.

This excitement went on for a short period and the emotional haze quickly went away amongst the ones who are self-aware. They analyzed the whole incident of the rescue operation. After an in depth analysis of all the facts – news began to spread in the virtual media on the ‘set-up drama of Reshma’s rescue’. It was stated that this was done to erode the sad memories of 1100-deaths in the minds of an emotionally volatile Bangladeshis. A lot of people had brushed aside this doubt that had been cast. However, a few important questions had not been answered. Amar Desh began this investigative reporting to find the answers of those questions. And this paved the way to discovering an array of sensational revelations.

The rescued girl – is she Reshma, Joya or Fatema?

Confusion has arisen even with the actual name of Reshma. The mother said her name in the ID of New Wave Garments was Joya. The sister said her name wasn’t Joya but that her ID bore the name ‘Fatema’. The lineman of the workplace said her name is ‘Joya’. The landlord of her home knows her by the name of ‘Reshma’. The rescuers of the army said her name was Reshma. But her mother and the people of her village said her actual name is ‘Joya’.

When asked how the name Reshma came about her mother replied that it was her nickname. However, after the collapse of the building the mother and sister had gone to look for her in Savar by printing her actual name (Joya) on the cardboard. Amar Desh also collected the card that bore that name. However, the owner of the rented house at Savar Bank Colony, Nur Miah and his wife Hajera Begum, knew her by the name of Reshma.

Reshma’s older sister Asma, who had brought her to Dhaka and was the one who sought out her job at New Wave Style, told Amar Desh that Reshma had taken up the job in the name of Fatema. Her name was not Joya there according to the sister. The reason she stated was that the garments required birth certificate which Reshma didn’t have. So she took up the job at the garments factory taking up another person’s name.

But mysteriously no one mentioned the actual name of Joya nor the Factory entry name Fatema.

The list of injured people from 24th to 26th April had a person named Fatema. The name was entered at the very beginning section of the list.

Reshma had come out of Rana Plaza along with Enamul on 24th April

Enamul of Noldanga under the Upazila of Shadullapur of Gaibandha district worked as lineman of the same company (New Wave Style Limited) of the 3rd floor of Rana plaza where Reshma worked. Enamul informed he had contacted the landlord immediately after. He was slightly injured in the collapse. After being under treatment in Savar’s Enam Hospital for two days – he went off to Gaibandha. Enamul couldn’t be brought to Dhaka to seek information with regards to the ‘Rescue’ on 10th May even after repeated efforts. Even after trying to speak to him from various phone numbers under various names, it wasn’t possible. At last, after claiming to be ‘the sister of the missing Reshma of Rana Plaza’, Amar Desh spoke to him several times. During this communication (Cell: 01778000334) he became convinced and went on to speak about a lot of issues.

At one point he began giving information regarding his rescue along with Reshma’s. He said he knew only one Reshma. Her actual name is ‘Joya’ (who was rescued 17 days after the collapse). Enamul acknowledged that the same Reshma had in fact come out of the building following him on 24th April. Reshma had also been admitted in Enam Hospital. But Enamul could not find Reshma after he was released from the hospital. He then contacted Reshma’s landlord. The landlord confirmed to Enamul that he had found Reshma at the hospital. During the conversation with Enamul, he informed that Reshma was at the hospital for two days. She had gone off to the army cantonment from there. He had no contact with Reshma after that.

However, Enamul hung up when subsequent questions were put forward with regards to this issue. He became angry when he was contacted repeatedly. During the initial phases of the conversation Enamul had claimed he had an affair with Reshma. But she refused him after she became aware that he was married. Amar Desh has a full record of the conversation with Enamul.

Reshma was rescued from the intact ground floor

The ground floor of Rana Plaza was intact from the very beginning since the building collapsed. It was only covered by rubble. That’s why on the very first day, the owner Sohel Rana was rescued from that floor by breaking the R S tower window. It has been claimed that Reshma was rescued from the same place 17 days after.

Eyewitnesses inform that among the whole nine stories, eight of them did not collapsed at the same time. Up to the 3rd floor was intact for few days. So it was not possible for anyone to drop from 3rd floor direct to ground floor. Even the channel that links the Mosque was also completely closed so no one was able to go there. So the suggestion that someone came down via the stairways to the ground floor is completely unbelievable.

Not only that, as the ground floor roof was intact at the time of rescue, a tunnel was built along both sides of RS tower and storeroom to the ground floor. But right after Reshma was rescued it was said that she was rescued from the basement mosque. It was also said that while the building collapsed, Reshma was in the 3rd floor, and after the 3rd and 2nd floor collapsed she was in the ground floor.

However, the workers of varies organization in Rana Plaza and those who took part in the rescue from the very beginning including local resident and worker Raja, Alam, Robiul, Joshim, Milon and many others informs that the ground floor didn’t collapsed. So there were no way to drop from the 3rd floor to the ground floor. Reshma was also claimed to have been rescued from the RS tower.

Three days prior to Reshma’s ‘miraculous rescue’, unannounced curfew in place around Rana Plaza

From the three days before Reshma was rescued, there was an unannounced curfew in place around Rana Plaza. No one was allowed to go close to the plaza.

Local residents and witnesses said that many officers of RAB (Rapid Action Battalion), BGB (Border Guards Bangladesh) and military members surrounded that place. They knocked all the houses around that area and instructed inhabitants to close the doors before evening and not leave under any circumstances.

In front of Rana Plaza (north side) is Dhaka-Aricha highway. On the east and west side there are markets and shops and on the south is the Masjidpur residential area. On May 10 at 4.30pm Reshma was rescues, but from 7th May the east-west side shops and market were made to close before evening. The south side residents who lived close to Rana Plaza, including Hosne Ara and others, were evacuated from their houses at 7th May evening. The owners of those houses informed that the law enforcement members ordered them to leave the place without explanation for 5 to 6 days. So they left the houses. They returned 2 days after Reshma was rescued. They were not given any opportunity to know why they were evacuated from their houses.

Three hundred yards from Rana plaza, two military members were guarding the front of many houses, issuing orders that residents close the doors and stay inside. On May 8 and 9 things remained the same way. But from May 10 after Reshma was rescued there were no more security activities in that area.

This information were confirmed by the owner Kashem Mia of “Kashem Tea stall” in Mashjidpur, Canteen owner Alam, the residents of Hosne Ara’s building and many others. They said, they thought such behavior of the law enforcement group was in order to remove corpses in the dark hidden along with the rubble which were removed [such that death toll figures could be reduced]. This was felt because after the Shahina tragedy at Rana Plaza, there was no evidence of the rescue of corpses in the day time. All the corpses were removed in the darkness of night.

The scars on Reshma’s hand is due to her husband’s beating

After Reshma was rescue many used the pictures of AFP to claim that if her miracle was a staged drama then why does she have scars on her hands. They claimed these scars occurred because her hand was crushed under the rubble.

To know about this, a local journalist along with three correspondents of Amar Desh went to Reshma’s house on May 22 at 10am in Dinajpur district, Ghoraghat area, Ranigange port, Kashigari village. Her house was made of mud wall and hay roof in front of which Reshma’s mother Jubaida Begum, her aunt and many other local men and women were seated. A day before, that is on May 21 Reshma’s mother returned from Dhaka. Reshma’s mother Jubaida Begum explained how Reshma’s husband used to torture her daughter.

Before that in savar bank colony, Reshma’s house owner, Nuru, informed that Reshma divorced her husband Razzak due to his inhuman torture on her. He stated the scars on Reshma’s hand are from the burns of her husband’s cigarate. Nuru’s wife Hazera informed that Reshma has a long one hand length scar, which was also due to Razzak’s torture. The description of Reshma’s mother and Nuru’s wife regarding her husband’s torture was alike. During the press conference, there were old burn scars evident on Reshma’s hand.

According to reshma’s mother, Razzak’s house was in Dinajpur, birampur area, mondoppara village. Razzak was not found when Amar Desh sought him there.

There was no shop in the basement

To explain away reshma’s new dress at the press conference, the military officials said that there were some food and dress shops where she was grounded. After 17 days under rubble, Reshma’s dress was torn, so at the time of rescue she took a dress from there and wore it herself. But the guard of Rana Plaza Robiul, Abdul Mojid, security guard of 7th floor Mir Deb, canteen owner Alam, Store worker Sarowar and many other surviving workers said that there were no shops in the basement. There was a car park, electric transmitter and mosque. After visiting many other high stories building in Savar, it was understood that there is no trend of keeping shops in the basement. Alam informs that his canteen was there since Rana Plaza was constructed.

Moreover, according to Reshma, when she was on the 3rd floor, there was an approximately 10 inch vacant space in front of her. So it was possible for her to change into her new and matching dress. Yet there were no shops in the 3rd floor either. There were only garments factories, where such dresses were not made as only western export clothing was made.

The rescuers attitude changed after the failed rescue of Shahina

After failing to rescue Shahina, the security force was under huge criticism from the media and local residents. It was first declared that as there is no possibility of anymore lives, the rescue will be stopped. But under special consideration the rescue went on and after 108 hours a worker name Shahina was traced alive. After 29 hours of trying, the rescuers failed to rescue her alive. Due to the failure, clashes occurred between the local residents and the security force. There were even incidents of throwing stones from both sides. Local rescuers informed that after that incident the security force’s attitude change completely. They didn’t allow anyone to come near the disaster site anymore. They even sent back the fire service members.

Without any explanation they blocked off the tunnel from the store room to Rana Plaza, and locked the store room’s door. Hundreds of residents claim that Reshma was entered from the storeroom. That depicted it as a survival and brought out from RS tower. They planned the drama in secret earlier so that no one can see Reshma. In the meantime no journalist was allowed to go close to Rana Plaza. They had to take pictures and footage from a distance.

After Reshma was rescued, many local residents commented to this reporter that the security force staged this drama to compensate the grief inflicted due to the failure of Shahina’s rescue attempt.

The anger of local people for rescuing in the dark of night only

After the Shahina incident, the government rescue team did not carry out any rescue activities during the day time. The local people were angry that the rescue activities were now being carried out in the dark of night. In suspicion of something else going on under the curtain of rescue activities, they searched cars of the law enforcement. But due to unannounced curfew that was implemented from 7th may, they were not able to search anymore.

Government wants to send Reshma to America

Known from the sources, government has become desperate to send Reshma abroad so that the drama does not leak. Her Family also does not want to miss this opportunity. But they want to move the full family. However the government wants only to send Reshma alone. This information has been confirmed from her family members.

Here are the exact words of Jubaida Begum: “after the rescue, the Prime Minister gave 50 thousand taka in Reshma’s hand. They also gave her 2 sarees and a shawl. The garments owner gave her a further 50 thousand taka. Many others also gave her money (she could not tell the names). The head of Rana Plaza rescue team (GOC) told Reshma that the Prime Minster asked her whether Reshma wants to go to America or wants to work in the hotel which is in the cantonment (hotel Raddison)? Reshma said, she do not want to go to America. She wants a job in that hotel. If she works in that hotel, the literate Reshma’s salary will be 35 thousand taka and after adding all other facilities her salary will be total 60 thousand taka.” After asking what her family wants, reshma’s mother replied:- “ We said, Reshma will not go alone. If she goes she will do so with her family. Reshma also said the same.”

After asking about Reshma’s education her mother said: “she studied up to class two. My daughter did not get much education.”

Reshma’s reaction

On June 6 2013 at a press briefing for her joining at the Westin hotel, she was questioned regarding emerging from Rana Plaza on the first day with lineman Enamul. Also that she was in Enam medical college.

The question astounded her. She took a few seconds and then yelled back, ‘what did you say?’

She was again asked, ‘the garments you use to work for, you do know the lineman Enamul, isn’t it?’ Reshma did not reply yes or no. But she also did not deny about lineman Enamul. Later Reshma said, ‘Where I was, you were not there. So you have no idea how hard I endured. You are wrong.’ Reshma did not say anything after that.

The Westin officials requested the journalist not to ask any personal questions.

Discrepancy in the very first picture

After the rescue of Reshma, it was seen in the picture taken by AFP that Reshma’s finger nails were trimmed; they should have been much longer if it was left for 17 days. As per medical science, long hours in the darkness make the eyes adjusted to darkness itself. And so to bring the person into an illuminated area the person needs to be blindfolded and gradually the eyes begin adjusting to the light. Otherwise there is the fear of damage to the sight. A person’s eyes are susceptible to damage if kept away from light for 72 hours at a stretch. Then why was Reshma pulled out without a cover over her eyes after 391 hours? TV footage shows she was looking inquisitively around her after she was pulled out in the stretcher.

Army’s statement

An army officer was contacted regarding the issue of Reshma’s rescue. Without revealing his identity, he confirmed Reshma was taken away from the army cantonment to Westin by a Westin authority who was a Bangladeshi-Australian by nationality. The Government had offered her to be taken to the United States or to take up a job at Radisson. However, after Westin authorities’ consistent lobbying, the Government agreed to let them take Reshma in.

When asked whether there was an unannounced red-alert during the secret drama set-up of the rescue operation, the army officer replied that he didn’t know exactly what happened, but there was an unannounced red alert due to some technical issues.

The reason he thought that way – is that the regular rescue workers wanted to drill a hole for furthering the rescue which could have been harmful for themselves. And so a red alert was issued to start the second phase of the rescue operation with heavy equipment. And there were exaggerations during that time.

Major Tawhiduzzaman, the army officer who led the media relations wing of the rescue operations including the press conference during the rescue operation and after the rescue of Reshma, told Amardesh that they didn’t allow general people into the scene for the safety of these general people. They even handed Reshma to Westin authorities only when Reshma was cured. They didn’t keep any responsibility of Reshma to themselves after that.

0 comments:

Comment Please

মন্তব্য..

সবিস্তার সূচীপত্র
টেম্পলেট কাষ্টমাইজেশন - তরঙ্গ ইসলাম | তরঙ্গ ইসলাম