আপনি সম্ভবত জানেন, জামায়াত আজকাল মুক্তিযোদ্ধাদের সম্বর্ধনা দেয়, শিবির বিজয় র্যালী করে, জামায়াতের মুক্তিযোদ্ধা ফোরাম রয়েছে !!! এর মানে কিন্তু এটা না যে জামায়াত মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের দল হয়ে গিয়েছে । এর মানে হলো, জামায়াত মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে পাওয়া বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের পক্ষে এসে দাড়িয়েছে । যেটা তারা ৭১ এ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পরেও অনেকদিন পর্যন্ত করেনি ।
আমাদের
শিক্ষাব্যবস্থায় যে ইতিহাস শেখানো হয়, তার মূল ফোকাস থাকে ১৯৫২ থেকে
শুরু করে । ভাবটা এমন আমাদের ইতিহাস ওই সময় থেকে শুরু । কিন্তু বাংলাদেশের
বর্তমান অবস্থা ও বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মকান্ড সম্পর্কে
জানতে হলে এই ইতিহাসকে অনেক আগে থেকে খুব ভালোভাবে জানতে হবে । অন্তত
১৭৫৭ এর সীরাজুদ্দৌলার পরাজয়ে মাধ্যমে স্বাধীনতা হারানোর পর থেকে কি কি
হলো, তা জানাটা খুব ই জরুরী । আরো ভালো হয় যদি বখতিয়ার খিলজীর অভিযান
থেকে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে সব ইতিহাস নিজে নিজে জেনে নেয়া যায় । তাহলে অনেক
বিষয়েই আর কাউকে প্রশ্ন করা লাগবেনা ।
- ১৭৫৭ থেকে ১৯৪৭ পর্যন্ত উপমহাদেশে মুসলমানরা সবচেয়ে বেশি নিপীড়িত হয়েছিলো । কারন দুটো-
১. ইংরেজরা ক্ষমতা গ্রহণ করেছিলো মুসলমানদের পরাজিত করে ।
২. ১৯০ বছর ধরে যত স্বাধীনতা আন্দোলন হয়েছে সবগুলো করেছে মুসলমানরা । যেমন ফকির বিদ্রোহ, তীতুমীরের কেল্লা, বালাকোটের জিহাদ , সীপাহী বিদ্রোহ!
নিপীড়ন নির্যাতনের পরিমান যে কত ভয়াবহ ছিলো, তা উপলদ্ধি করা খুবই জরুরী! একটা সমৃদ্ধ জাতি একেবারে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিলো ১৯০ বছরের পরাধীনতায়!
এসম্পর্কে সহজে জানতে পারবেন, যদি শফিউদ্দিন সরদারের সিরিজ উপন্যাসগুলো পড়েন । তিনি বখতিয়ার খীলজী থেকে শুরু করে পরবর্তী সকল ইতিহাসকে উপন্যাস আকারে লিপিবদ্ধ করে গিয়েছেন । শফীউদ্দিন সরদারের বইগুলো অবশ্যই পড়বেন ।
- ৪৭ এ স্বাধীনতা লাভের সময় হিরো ছিলো মুসলিম মূল্যবোধসম্পন্ন নেতারাই । কোন সেক্যুলার নয়, কোন কম্যুনিষ্ট নয় । মুসলীম লীগের নেতৃবৃন্দের বিচক্ষণতা ও কৌশলী রাজনীতির কারনে উপমহাদেশের মুসলমানরা স্বাধীন আবাসভূমি পেয়েছিলো, যা হবার কথা ছিলো ইংরেজ ও হিন্দুদের জুলুম নির্যাতন থেকে মুক্ত ।
- ৪৭ এ দেশ বিভাগের সময়েও করুন অবস্থা হয়েছিলো ইসলামী রেঁনেসা ও মুসলিম ব্রাদারহুডের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা পাকিস্তান রাষ্ট্রের । ভারতীয় উপমহাদেশের সবচেয়ে সমৃদ্ধ শহরগুলোই হিন্দুদের ভাগে পড়েছিলো! এমনকি মুসলমানদের প্রাপ্য সবগুলো এলাকাও তারা পায়নি । বাংলাদেশের সিলেট ও খুলনা একেবারে শেষ মুহুর্তে পেয়েছিলো ভোটের আধিক্যের কারনে, হারিয়েছে কলকাতা বা মুর্শিদাবাদ! হারিয়েছে মুসলিম কাশ্মীর! লক্ষ লক্ষ মুসলমানকে সব সম্পদ হারিয়ে হিজরত করতে হয়েছে । হাজার হাজার মুসলিম নারী পুরুষ শিশু হিন্দুদের হাতে কচুকাটা হয়েছে । এগুলো সম্পর্কে একটা পরিষ্কার ধারনা পাবেন, নসীম হিজাজীর “ভারত যখন ভাংলো” বইটা পড়লে । অবশ্যই পড়বেন এটা ।
- এই যে এত কুরবানী! এত ত্যাগ-তীতিক্ষা..এত পরিশ্রমে দুই শতাব্দীর গোলামী থেকে মুক্তির সনদ পাকিস্তান রাষ্ট্র অর্জন... একটু ভাবেন তো তখনকার অবস্থা! এই রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যদি কেউ অবস্থান নেয়, ২০০ বছরের হাজারো শহীদদের উত্তরসূরীদের ভূমিকা কি হওয়া উচিত ? ভাবতে যদি কষ্ট হয়, তাহলে সহজ করে দিচ্ছি, ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যে ইতিহাস আপনারা জানেন, তা বলে যে, বাংলাদেশ রাষ্ট্রটির প্রতিষ্ঠাতেও অসংখ্য জীবনহানী ও অনেক রক্তের প্রয়োজন হয়েছে । এখন মনে করেন, জামায়াত বা অন্য কোন দল যদি এই বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ফের ষড়যন্ত্র শুরু করে তবে আপনার কি ইচ্ছা হবেনা জামায়াতকে বা অন্য সেই ষড়যন্ত্রকারীদেরকে ছিঁড়ে-খুঁড়ে ধুলিস্যাত করে দিতে ???
- হিন্দু ভারত ও মুসলিম পাকিস্তান প্রতিষ্ঠিত হবার শুরু থেকেই পাকিস্তানের সাথে শত্রুতা শুরু করে ভারত । কোটি কোটি মূল্যমানের জালমুদ্রায় ছেয়ে দেয় পাকিস্তানকে, কম্যুনিষ্ট ও নাস্তিকদের লাল বইয়ের গোডাউনে পরিনত হয় পাকিস্তান । পাকিস্তান নামের মুসলিম রাষ্টটিকে ভেঙে ফেলার সবচেয়ে মোক্ষম ষড়যন্ত্র ভারত শুরু করে ভাষা-আন্দোলনে ইন্ধন দিয়ে । এগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত বলা এখানে সম্ভব না । বই রেফার করতে পারি । (http://www.mediafire.com/? c7osnqk9l3bwbgi) এখানে বেশ কিছু বই আছে । যেগুলো থেকে সেই সময়ের অনেক মুছে ফেলা ইতিহাস জানতে পারবেন ।
- উর্দু ভাষাকে পশ্চিম পাকিস্তানীদের ভাষা বলে যে প্রচারনা চালানো হয়, তা ছিলো সর্বৈব একটা মিথ্য প্রচারণা । উর্দু পশ্চিম পাকিস্তানের প্রধান ভাষা ছিলোনা । পশ্চিম পাকিস্তান আলাদা আলাদা অনেকগুলো জাতিগোষ্ঠির বসবাসস্থল ছিলো..... বেলুচ-সিন্ধু-পাঠান.... এদের প্রত্যেকের নিজস্ব ভাষা রয়েছে । উর্দু ছিলো সমগ্র পাকিস্তান কে ঐক্যবদ্ধ করার একটা মাধ্যম মাত্র । লক্ষ্য করুন, পশ্চিম বাংলার বাংলাভাষী হিন্দুরা কিন্তু হিন্দী ভাষাকে ভারতের রাষ্ট্রীয় ভাষা বলে নিয়েছে ঠিকই । আরো অসংখ্য ভাষাভাষী বিশাল ভারতে ভাষা আন্দোলন কখনোই জোরদার করতে পারেনি । অথচ ২০০ বছরের জুলুমে জরজর একটা নবগঠিত মুসলিম রাষ্ট্রএর ভিত নাড়িয়ে দিয়েছিলো এই বিচ্ছিন্নতাবাদী জাতীয়তাবাদী ভাষা আন্দোলন ।
- পশ্চিম পাকিস্তান কর্তৃক শোষণের ইতিহাস : তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানীরা নাকি পশ্চিম পাকিস্তান কর্তৃক শোষিত হয়েছে । এদেশের টাকায় নাকি পশ্চিম পাকিস্তানের উন্নয়ন হয়েছে ! এটা একটা চূড়ান্ত মিথ্যা প্রচারণা । বাংলা-বিহার-উড়িষ্যার নবাব সিরাজকে পরাজিত করে ২০০ বছর ধরে যে শোষণ ও লুন্ঠনএর শুরু করেছিলো, পশ্চিম পাকিন্তানের রাজ্যগুলোর অবস্থা তার থেকে ভিন্ন ছিলো । পশ্চিম পাকিস্তানের রাজ্যগুলো বৃটিশদের করায়ত্ত্ব হয় অনেক পরে । আর বাংলার বানিজ্যের পুরোটাই ছিলো হিন্দুদের দখলে যারা এদেশের সম্পদ দিয়ে গড়ে তুলেছিলো কলকাতা শহরকে। এমনকি মুসলমানরা-ও বিনিয়োগের পুরোটুকু ওই কলকাতাতেই করতো বৃটিশদের সময়ে । ফলে ৪৭ এ যখন কলকাতা পেলোনা পাকিস্তান, তখন বাংলা ছিলো সব রস শুষে নেয়া নিতান্তই ছিঁবড়ে এক ভূখন্ড । আদমজী-ইস্পাহানী প্রমূখ মুহাজির শিল্পপতিদের উদ্যোগেই এই ভূখন্ডের উন্নয়ন শুরু হয় । বাংলাদেশ ভূখন্ডের যে উন্নয়ন হয়েছে, তার ৯০ ভাগের ও বেশি ৪৭ থেকে ৭১ এর পচিশ বছরেই হয়েছে । এদেশে কিছু ছিলোনা । স্রেফ কিছু ছিলোনা । পাটকলগুলো সব ওই সময়ে হয়েছে, ৪৭ এর পূর্বে যা হতো কলকাতাতে । শেরাটন-শাহবাগ হোটেল, এদেশের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয় গুলো, হাজার হাজার স্কুল-কলেজ, মিল কারখানা.... প্রায় সব ওই পচিশ বছরের অর্জন । এবং খুব আশ্চর্যজনক ব্যাপার হলো এসবের উদোক্তা ছিলো হয় মুহাজির অবাঙালীরা অথবা পাকিস্তান কেন্দ্রীয় সরকার ।
- বিদায় হজ্জ্বে আমাদের রাসুল মুহাম্মাদ সা: এর একটা কথা নিশ্চয়ই আপনি জানেন । “কোন অনারবের উপর কোন আরবের শ্রেষ্ঠত্ব নেই” ... এর অর্থ জানেন ? এর মানে হলো ভৌগোলিক জাতীয়তাবাদকে ইসলাম নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে । একজন বাঙালীকে আমি শুধু এজন্য সমর্থন দেবো, কারন সে বাঙালী.. এটা হতে পারেনা, যেহেতু আমি রাসুল সা: এর অনুসারী । প্রতিটি বিশ্বাসী মুসলমান বাংলাদেশীকে এই পয়েন্টটা অবশ্যই ভালোমত আয়ত্বে আনতে হবে । বুঝতে হবে যে এধরনের জাতীয়তাবাদের কোন স্থান ইসলামে নেই ।
- আচ্ছা, এবার আপনাকে আমি একটা প্রশ্ন করবো । অবশ্যই জবাব দেবেন স্পষ্টভাবে ।
মনে করেন, বর্তমান পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিবাসীরা আলাদা রাষ্ট্র হবার আন্দোলন শুরু করলো । বিক্ষোভ শুরু করলো । সশস্ত্র যুদ্ধ শুরু করলো । তারা স্বাধীন চট্টগ্রাম চায় । মনে করেন, আপনিও চট্টগ্রামে বাস করেন । এই অবস্থায়..
১. আপনার ভূমিকা কি হবে ?
২. বাংলাদেশ সেনাবাহীনির কি করা উচিত ?
অবশ্যই জবাব দেবেন ।
এ পর্যন্ত যদি ঠান্ডা মাথায় পড়েন, এবং বইগুলোও পড়েন, তাহলে ৭১ নিয়ে বাকী অভিযোগগুলো আর তেমন জোড়ালো হয়না । তাই সংক্ষেপেই শেষ করা যায়..
____________________
__________________
________________
১. মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লক্ষ বাঙালীর মৃত্যু এবং ২ লক্ষ রেইপের যে কথা বলা হয়, তা জঘন্য মিথ্যাচার ।
২. মুক্তিযুদ্ধের কিছু পূর্ব থেকে শুরু করে অসংখ্য বিহারী হিজরতকারী মুসলমানদের ওপর গনহত্যা চালিয়েছিলো বাংলাদেশ আন্দোলনকারীরা । যার ফলে পাকিস্তান সেনাবাহিনী যখন একশনে নামলো খুব স্বাভাবিকভাবেই অনেক নিরীহ বাঙালী-ও তাদের আক্রোশের স্বীকার হয়েছে ।
৩. ইসলামী কোন দলের কোন কর্মী কোন রকম নারী নির্যাতন করেনি । করতে পারেনা । এটা অসম্ভব । এসম্পর্কে যা বলা হয়, তা যুদ্ধে বিজয়ী শক্তির বানানো মিথ্যাচার । ...অথবা এরকম ঘটনা যদি ঘটেও থাকে, তাহলে তার যে সংখ্যা বলা হয়, তা অবাস্তব অবশ্যই ।
৪. ১৯৭১ সাল ছিলো একটা যুদ্ধাবস্থা! এসময়ের সংঘটিত মৃত্যুকে আপনি কিছুতেই “খুন” আখ্যায়িত করতে পারেন না । দুটো পক্ষ আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে যুদ্ধে লিপ্ত । সেখানে অনেক মানুষের মৃত্যু তো স্বাভাবিকভাবেই ঘটবে !! তাইনা ? সেটাতে আপনি এভাবে বলতে পারেন না যে, ‘আপনি অমুককে খুন করেছেন!’
৫. একাত্তরে জামায়াত নেতা ও কর্মীরা পাকিস্তান রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ত্বের পক্ষে অবস্থান নিয়ে সরাসরি যুদ্ধে অংশ নিয়েছে । মুক্তিযোদ্ধারা যদি পরাজিত হতো ওই যুদ্ধে, তাহলে যুগ যুগ ধরে জামায়াত ও অন্য ইসলামী দলগুলো তাদের ভূমিকার জন্য প্রশংসিত হতো ! দুটো পক্ষের মধ্যে যুদ্ধ হয়েছে । ক. যারা সেই যে ১৯০ বছরের হিন্দু ও ইংরেজদের গোলামী থেকে মুক্তি পাওয়া পাকিস্তানের স্বাধীনতার সপক্ষ শক্তি ছিলো, যাদের হাত ধরেই পাকিস্তান নামের রাষ্ট্রটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো । পাকিস্তান (পূর্ব –পশ্চিম এইরকম বিভক্তি কেবলমাত্র নামকরনের জন্যই ব্যবহার করা যায়, এই বিভক্তির ভিত্তিতে আলাদা আচরন করাই হলো ভৌগোলিক জাতীয়তাবাদ, যা ইসলামে নিষিদ্ধ) রাষ্টটি ছিলো তাদের সন্তানসম। খ. যারা পাকিস্তান রাষ্ট্রের স্বাধীনতা ও অখন্ডতার রক্ষাকবচ ইসলামের বিপক্ষশক্তি ছিলো । যারা নিজেদেরকে সেক্যুলার বলে ঘোষণা করেছিলো । যারা রাষ্টটিকে ভেঙে ফেলতে চেয়েছিলো যা ছিলো ১৯৬৫ সালে যুদ্ধে পরাজিত ভারতেরও একান্ত আকাঙ্খা । .............এবার ভাবুন, আল্লাহর কাছে, ইসলামের কাছে কোন পক্ষটি গ্রহণযোগ্য ?????
৬. মুক্তিযুদ্ধে ৯ মাসের অন্তত সাত মাসেও মুক্তিযোদ্ধারা বিজয়ী হওয়া তো দূরের কথা, একটা শহর ও নিজেদের দখলে নিতে পারেনি । একেবারে শেষ পর্যায়ে এসে তারা অল্প সময়ের মধ্যে বিজয়ী হয়ে যায় । এই জায়গাটায় ইতিহাস একটা ধোঁয়াশা তৈরী করেছে । আসল ব্যাপার হলো, তখন ভারতীয় সেনা-নৌ ও বিমান বাহিনী সরাসরি বাংলাদেশে প্রবেশ করে যুদ্ধ শুরু করে । পাকিস্তান পরাজিত হয়েছিলো সরাসরি ভারতের কাছে ।
আমি কোন নিদৃষ্ট দলের জন্য আমার সমর্থন দেইনা । আমার সমর্থন ইসলামের জন্য । আমার সমর্থন ইসলামী সমাজ কায়েমের আন্দোলনের জন্য । আমার সমর্থন সারাবিশ্বে ফের ইসলামী বিপ্লবের পক্ষে । কুরআন হাদীসে যেহেতু সংঘব্ধ জীবনযাপনের হুকুম দেয়া হয়েছে, তাই আমার পর্যবেক্ষন ও পড়াশুনায় যে দলটি সবচেয়ে যোগ্য বলে মনে হচ্ছে, আপাতত আমি নিজেকে তাদের অন্তভূর্ক্ত করে নিয়েছি । ধন্যবাদ ।
(এক ভাই ইনবক্সে মেসেজ দিয়ে জিজ্ঞেস করেছেন, আমি কি জামায়াত নেতাদের সমর্থন দেই । দিলে তার কারন কি ? জবাবটা অনেক বড় হওয়ায় মেসেজে রিপ্লাই দিতে পারলাম না । )
- Rifat ভাই : আমার এই লেখাটা ছিলো আপনার জন্য । আর লেখাটায় আপনার জন্য আমার পক্ষ থেকে খুব জরুরী একটা প্রশ্ন ছিলো । যার জবাব দিতে বলেছিলাম অবশ্য অবশ্য । আপনার জন্য আমি এত কষ্ট করে এত লম্বা একটা নোট লিখলাম, আর আপনি আমার প্রশ্নটা এড়িয়ে গেলেন নির্ম...মভাবে ! এটা একেবারেই ভালো কাজ হয়নি ।প্রশ্নটা আবার এখানে রিপিট করছি..___________আচ্ছা, এবার আপনাকে আমি একটা প্রশ্ন করবো । অবশ্যই জবাব দেবেন স্পষ্টভাবে ।মনে করেন, বর্তমান পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিবাসীরা আলাদা রাষ্ট্র হবার আন্দোলন শুরু করলো । বিক্ষোভ শুরু করলো । সশস্ত্র যুদ্ধ শুরু করলো । তারা স্বাধীন চট্টগ্রাম চায় । মনে করেন, আপনিও চট্টগ্রামে বাস করেন । এই অবস্থায়..১. আপনার ভূমিকা কি হবে ?২. বাংলাদেশ সেনাবাহীনির কি করা উচিত ?অবশ্যই জবাব দেবেন ।
প্রশ্নের জবাবটা দেবার আগে, আমার লেখাটা প্রথম থেকে আবারো আপনার পড়া দরকার । কেননা, আমার মনে হলো, আপনার দৃষ্টিকে আমি যে হাজার বছরের প্রশস্ত ইতিহাসের দিকে ফিরিয়এ দেবার অনেক চেষ্টা করেছিলাম, তাতে ব্যর্থ হয়েছি । এখনো খুব সংকীর্ণ একটা ৩০-৪০ বছরের ...ইতিহাসে আপনি ঘুরপাক খাচ্ছেন।একটা ইশকুলে খুব ভালো একজন ছাত্র ছিলো । সে প্রত্যেক ক্লাশে ফাষ্র্ট হতো । ক্লাশ ওয়ান থেকে ক্লাশ নাইন পর্যন্ত ফার্ষ্ট হবার পর ক্লাশ টেনে সে আর প্রথম হতে পারলোনা । কারন পরীক্ষার সময়ে সে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছিলো । এই সুযোগে অন্য একটা ছেলে ফার্ষ্ট হয়ে ১০ বছর ধরে ফার্ষ্ট থাকা ছেলেটিকে নানাভাবে অপদস্থ করা যদি শুরু করে, তখন ব্যাপারটা কেমন লাগে !পোষ্ট আরেকবার পড়তে কষ্ট হলেও শুধু এনিচের অংশটুকু আরেকবার উপলদ্ধি করে আমার উপরের প্রশ্নের জবাব দেবেন ।___________- এই যে এত কুরবানী! এত ত্যাগ-তীতিক্ষা..এত পরিশ্রমে দুই শতাব্দীর গোলামী থেকে মুক্তির সনদ পাকিস্তান রাষ্ট্র অর্জন... একটু ভাবেন তো তখনকার অবস্থা! এই রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যদি কেউ অবস্থান নেয়, ২০০ বছরের হাজারো শহীদদের উত্তরসূরীদের ভূমিকা কি হওয়া উচিত ? ভাবতে যদি কষ্ট হয়, তাহলে সহজ করে দিচ্ছি, ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে যে ইতিহাস আপনারা জানেন, তা বলে যে, বাংলাদেশ রাষ্ট্রটির প্রতিষ্ঠাতেও অসংখ্য জীবনহানী ও অনেক রক্তের প্রয়োজন হয়েছে । এখন মনে করেন, জামায়াত বা অন্য কোন দল যদি এই বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ফের ষড়যন্ত্র শুরু করে তবে আপনার কি ইচ্ছা হবেনা জামায়াতকে বা অন্য সেই ষড়যন্ত্রকারীদেরকে ছিঁড়ে-খুঁড়ে ধুলিস্যাত করে দিতে ???
আপনি আমার প্রশ্নের জবাব দিতে ব্যর্থ হয়েছেন বলেই আপনাকে নতুন করে উল্টো আমাকে প্রশ্ন করতে হয়েছে । ... সেগুলোর জবাব দিতে ইচ্ছে হচ্ছেনা, তবুও একটু চেষ্টা করি ।১. ৭১ এ বিহারী হত্যার প্রতিশোধ নিতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী বাঙালী হত্যা করেছে .. আমি ...এরকম কথা বুঝাইনি । তবে এটা নিরীহ বাঙালী হত্যার অণ্যতম কারন । মূল কারন না । সারাদেশব্যপী যুদ্ধ শুরু হলে অনেক নীরিহ মানুষ মারা পড়বে, এটা অনিবার্য বাস্তবতা । আর তখন দেশটা ছিলো পাকিস্তান.. পুর্ব হোক বা পশ্চিম হোক, পুরোটা মিলেই একটামাত্র দেশ ছিলো । সেই দেশের সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে যেই কাজ করবে, সে আর "নীরিহ" থাকেনা । সে যুদ্ধের একটা পক্ষে চলে যায় । (আবার মনে করিয়ে দেই, পা.চট্ট. নিয়ে আমার প্রশ্নের স্পষ্ট জবাব দেবেন ।)২. ৩০ লক্ষ্য হত্যা আর ২ লক্ষ রেপ ৯ মাসে কখনো কোন মানুষের বাহিনীর পক্ষ্য সম্ভব না । মাথাটা একটু খাটিয়ে চিন্তা করলেই এই নিয়ে বিভ্রান্তি দূর হওয়া উচিত । হত্যা এবং রেপ অবশ্যই হয়েছে । কিন্তু কোন অবস্থাতেই আজ পর্যন্ত তার সাথে অন্তত জামায়াত ইসলামীর কোন কর্মী বা নেতার সম্পৃক্ততা প্রমান হয়নি । বিগত ৩ যুগেও এটা প্রমানিত যে হত্যা এবং রেপের সাথে জড়িত সংগঠনটির নাম আওয়অমীলীগ বা যুবলীগ বা ছাত্রলীগ । এধরনের অপরাধ গত তিন যুগেও একটা ইসলামী ব্যক্তি-ও করেনি । অস্বীকার করতে পারবেন না । ৭১ এ রাজাকার বাহিনী-বদরর বাহীনি.. এরা সশস্ত্র যুদ্ধ করেছে মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে । দুপক্ষের হাতেই অস্ত্র ছিলো । দুপক্ষেই অনেকের মৃত্যু হয়েছে ।৩. জামায়াত মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দিয়ৈ প্রতারণা করছেনা । যেহেতু মুক্তিযোদ্ধাদের কারনে বাংলাদেশের অর্ভুদয় এবং জামায়াত কর্মীরাও এই দেশেরই বৈধ নাগরিক,সেহেতু এই দেশের স্বাধীনতা জামায়াত মেনে নিয়েছে । এই সেন্স থেকেই জামায়াত মুক্তিযোদ্দাদের সংবর্ধনা দিয়ৈছে ।আপনি যদি এতটা সংকীর্ণমনস্কতা নিয়ে আমার কথা বিশ্লেষণ করেন, তাহলে আপনার সাথে কথা বলা বৃথা ।৪. ১৯৭১ এ বাংলাদেশের একটা ইসলামী দলও নতুন বাংলাদেশের পক্ষে ছিলোনা । একজন মুসলমানের জন্য এর চেয়ে বেশি আর কি জানার দরকার হতে পারে ???আপনি একটা কথা মনে রাখবেন । ইতিহাস সবসময়ে বিজয়ীরা রচনা করে এবং তাদের নিজেদের সুবিধা অনুযায়ী রচনা করে । ৭১ এ বিজয়ী শক্তি ৭১ এর ইতিহাস আপনাকে শুনিয়েছে । এতে ভয়াবহ রকমের মিথ্যাচার রয়েছে । আপনি অমুক বই রাজাকারের বই, তাই ওইটা পড়বোনা, এই মেন্টালিটি নিয়ে থাকলে মিথ্যাচারের এই ঘুর্নিপাক থেকে কখনোই বের হতে পারবেন না ।.....................বর্তমান পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিবাসীরা আলাদা রাষ্ট্র হবার আন্দোলন শুরু করলো । বিক্ষোভ শুরু করলো । সশস্ত্র যুদ্ধ শুরু করলো । তারা স্বাধীন চট্টগ্রাম চায় । মনে করেন, আপনিও চট্টগ্রামে বাস করেন । এই অবস্থায়..১. আপনার ভূমিকা কি হবে ?২. বাংলাদেশ সেনাবাহীনির কি করা উচিত ?...................আবারো পেষ্ট করলাম । এই পশ্নের জবাব না দিয়ে নতুন কোন কথা বললে তার কোন মূল্য নেই আমার কাছে । ধন্যবাদ।-writer
0 comments: