ফরহাত এগারো বছর বয়স থেকে পরদা করতে শুরু করেছে।গত দু'বছরে মোয়াযযম আলী তাকে দেখেন নাই। তার মা কখনো কখনো তার কথা বলেন।
একদিন তিনি তাদের বাড়ি থেকে ফিরে এসে মোয়াযযম আলীকে বললেন: বেটা, ফরহাত আজ তোমার কথা জিজ্ঞেস করেছিলো।
মোয়াযযম আলীর গাল ও কান লজ্জায় লাল হয়ে উঠে। তিনি প্রশ্ন করলেন, আমার কথা সে কি জিজ্ঞেস করেছিলো?
মা বললেন, সে জিজ্ঞেস করেছিলো, কেন তুমি ফৌজে ভর্তি হও নাই?
মোয়াযযম হেসে বললেন, আম্মাজান, আমার আফসোস আমার জন্য আপনাকে ছোট্ট ছোট্ট মেয়েদের বিদ্রুপও শুনতে হচ্ছে।
মা জওয়াবে বললেন, বেটা সে তো আমাকে বিদ্রুপ করেনি, বরং সে আমায় হামদর্দী দেখাচ্ছিলো। ফরহাত এখন আর ছোট্ট মেয়েটি নেই। তাকে এখন বেশ জোয়ান দেখাচ্ছে। মুর্শীদাবাদের বড়বড় ঘর খেকে তার সম্বন্ধ আসছে কিন্তু তার মা কিছুতেই রাজী হচ্ছে না। ফরহাত এমন মেয়ে কোন নবাবের ঘরেই ওকে মানায়।
মোয়াযযম জানতেন, তার মা ফরহাতকে খুব ভালোবাসেন। তাই মা কে চটাবার জন্য বললেন, আম্মাজান, ফরহাত সেই মেয়েটি নয় যার যার নাক চেপ্টা, রঙ মিশকালো আর একটা চোখ খানিকটা ছোট ছিলো ।
শরম করে কথা বলো, মা রেগে বললেন ।
মোয়াযযম আলী হাসতে হাসতে বের হয়ে গেলেন।
(খুন রাঙা পথ বইয়ে, ভারতবর্ষে নবাব আলীবর্দী খান থেকে শুরু করে আহমদ শাহ আবদালীর পানিপথের যুদ্ধ হয়ে টিপু সুলতানের প্রতিরোধের ইতিহাস সম্পূর্ণ ভিন্ন আঙ্গিকে বিবৃত করা হয়েছে।)
0 comments: