কারাগারের রাতদিন (ইখওয়ান)

১৯৩৬ সালে মিশরে প্রতিষ্ঠিত হয় ইসলামী মহিলা সংস্থা (মুসলিম উইমেন্স এসোসিয়েশন) । এটি একটি নিয়মতান্ত্রিক ইসলামী সংগঠন এবং জীবনের যাবতীয় সমস্যার সুষ্ঠু এবং স্থায়ী সমাধানের  লক্ষ্যে আল্লাহর দেয়া জীবন বিধান আল কুরআনকে পূর্ণরুপে বাস্তবায়ন করা এর লক্ষ্য। সংস্থাটি একটি স্বাধীন সংগঠন ছিলো!

এর কয়েকবছর পূর্বে ইমাম হাসানুল বান্না প্রতিষ্ঠা করেন ইখওয়ানুল মুসলেমিন বা মুসলিম ব্রাদারহুড! যেই অবিস্মরণীয় ইসলামি আন্দোলনটি আজ মিশর বিজয় করে পৃথিবীর দিকে দিকে অনেকগুলো দেশে ঢেউ তুলেছে।  ইসলামী মহিলা সংস্থা প্রতিষ্ঠার প্রায় মাস ছয়েক পরে এক সভায় ইমাম বান্না ইখওয়ানের একটি মহিলা সভায় বক্তব্য রাখছিলেন। জনাব বান্না এসময়ে ইখওয়ানের মহিলা মাখা খুলবার প্রথম উদ্বোগ নেন। জনাবা জয়নাব গাজালী ওই সভায় উপস্তিত ছিলেন। মুসলিম মহিলা সংস্থার নেতৃ জয়নাব গাজালীকে ইমাম বান্না ইখওয়ানের মহিলা শাখার দায়িত্ব নেবার দাওয়াত দেন। কিন্তু ইসলামী মহিলা সংস্থার শীর্ষ নেতৃদের পরামর্শ আনুযায়ী তারা ইখওয়ানের সাথে একাত্ম হতে অসম্মতি জানান তবে ইখওয়ানের যেকোন প্রোগ্রাম ও প্রয়োজনে সার্বিক সহযোগিতার অংগীকার করেন।




১৯৪৮ সালে ইখওয়ানকে নিষিদ্ধ করা হলে জনাবা গাজালী নিদারুন মর্মপীড়ায় ইখওয়ানের সাথে একীভূত করতে রাজি হন তার সংগঠনকে তবে হাসানুল বান্না বলেন, ভিন্ন ভিন্ন থাকাই আপাতত ভালো। এর কিছুদিনের মধ্যে বান্নাকে শহীদ করে দেয়া হয়। ইসলামী মহিলা সংস্থাকেও নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয় কিন্তু আদালতে চ্যালেন্জ করে মহিলা সংস্থা মামলা জিতে পুনরায় ময়দানে ফিরে আসে। এসময় ইমাম হোযায়বীর নেতৃত্বে ইখওয়ান পুনরায় কার্যক্রম শুরু করলে ইখওয়ানের নতুন আফিস উদ্বোধনের প্রথম দিনেই জনাবা গাজালী প্রকাশ্য ইখ্ওয়ানের সাথে সার্বিকভাবে যোগ দেন।

১৯৬৪ সালে জামাল নাসের সরকার ইসলামী মহিলা সংস্থাকে পুনরায় নিষিদ্ধ করে। এসময় ইখওয়ানের ছোটবড় প্রায় সকল নেতাকে হয় শহীদ নাহয় কারান্তরীন করে রাখা হয়। স্বৈরাচারের প্রতিবাদ করার মত মানুষ ই থাকেনা কোথাও! - এই ভয়াবহ অন্ধকার অত্যাচারের যুগ থেকেই আল্লাহর দ্বীনের রশ্মিকে উজ্জীবিত করে রাখেন যে মহিয়সী রা, তাদের রোমহর্ষক কাহিনী লিপিবদ্ধ হয়েছে কারাগারের রাতদিন (ইংরেজী নাম রিটার্ন অব ফারাও) বইয়ে। একটি ইসলামী আন্দোলন কি পরিমান জুলুম নির্যাতনের মধ্য দিয়ে ধৈর্য্য ও বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যায় সেই অবিস্মরণীয় সত্য ঘটনা জানতে বইটি পড়ুন।


আরো ছবি (ক্লিক)

বইটির সূচীপত্র যেভাবে সাজানো হয়েছে 

→ আমার প্রতি জামাল নাসেরের ব্যক্তিগত আক্রোশ
→ আমি এবং সমাজতন্ত্রী ইউনিয়ন
→ খোদাদ্রোহীদের জন্য নয়
→ আমরা কি করবো?
→ টালবাহানা ও প্রতারণা
→ রাতের উল্লুক
→ সবাই আহামদ রাসেখ

→ আনুগত্যের শপথ
→ মুখোশ উন্মোচিত
→ দায়িত্ব পালনের ডাক
→ আব্দুল ফাত্তাহ ইসমাঈলের সাথে হজ্জ্বের পথে
→ কাজের অনুমতি
→ স্বামীর সাথে স্পষ্ট কথাবার্তা
→ সাইয়েদ কুতুবের সাথে সাক্ষাৎ

→ ষড়যন্ত্র
→ এবার আমার পালা
→ চব্বিশ নম্বর কক্ষের পথ
→ চব্বিশ নম্বর কক্ষে
→ স্বপ্ন
→ আল্লাহ আমাদের সহায়
→ জুলুম নির্যাতনের স্টীমরোলার
→ প্রেসিডেন্ট নাসেরের প্রতিনিধি
→ আমার সেলে অনেক চেহারা
→ রাফাত মোস্তফা নুহাসের ইন্তেকাল
→ খাদ্য গ্রহণ ইবাদত তুল্য
→ দুর্যোগের রাত
→ এবার হামজার পালা
→ সেলে প্রত্যাবর্তন
→ দ্বিতীয় রজনী
→ সংক্ষিপ্ত বিশ্রাম
→ জুলুমের রাত
→ স্যুটকেস এবং প্রেসিডেন্ট নাসেরের চিঠি

→ শামস বদরানের অত্যাচার
→ পানির সেল
→ অপরাধ
→ আমার সেলে পশুত্বের লাশ
→ ইঁদুরের পাশ থেকে পানির দিকে
→ পানি এবং এটর্নির দিকে
→ খাদ্য এবং চাবুক
→ হাসপাতালে
→ আবার শামসের কবলে
→ অত্যাচারের নাটকীয় দৃশ্য
→ বত্রিশ নাম্বার সেলে
→ ঈমানের মান ও মিথ্যের অপমান
→ আমার ফাঁসির হুকুম
→ পাশার দফতরে
→ সংশয়ের আবর্তে
→ শামস তার বিভ্রান্তিতে অটল
→ প্রবৃত্তির মাসন ও ণীচ লোকদের প্রভূত্ব
→ হাসপাতালেও জোর জুলুম

→ নাসেরের উপস্তিতিতে নির্যাতন
→ আসল চক্রান্ত : গুজব
→ মোহাম্মদ কুতুব
→ তদন্ত
→ আবার আদালত
→ আবার সেই আত্যাচার
→ শাস্তি
→ অর্থ
→ গোশতের কীমার প্যাকেট
→ হাসপাতালে অভুক্ত
→ অত্যাচারীর অনুতাম ও সত্যপথে প্রত্যাবর্তন
→ ফায়সালা নিকটবর্তী
→ সু-খবর
→ প্রতিশ্রুত দিবস
→ আদালত
→ চরম বর্বরতা
→ মামলার রায় ঘোষণা
→ সাইয়েদের সাথে কয়েক মুহূর্ত
→ ফাঁসির আগের পায়তারা
→ ফায়সালা কার্যকরী
→ শেষ কয়দিন
→ আমার স্বামীর ইন্তেকাল
→ নয়া প্রতিবেশী
→ নাসেরের বিচার চাই

→ কানাতীর জেলে সাথানান্তর
→ মানসিক পীড়ার রাত
→ নতুন পর্যায়ের সংঘাত
→ শত্রু  হলেও মানুষ বটে
→ মৃত্যু ও বিদ্রোহী
→ বুদবুদ উড়ে যায়
→ নতুন পরীক্ষা
→ শেষ পাঁয়তারা




ডাউলোড


ফেসবুকে আমাদের লাইক করুন

শেয়ার করুন ►(http://on.fb.me/N9p2o4









X 2 -ভিউ

4 comments:

নিঝুম বলেছেন...

যায়নাব গাযযালির আত্মজীবনী আমাকে মুগ্ধ করেছে : রেডলি

ইভোন রেডলি একজন ব্রিটিশ মহিলা সাংবাদিক। আফগানিস্তানে মার্কিন হামলার মাত্র ক’দিন আগে তিনি ছদ্মবেশে আফগানিস্তানে প্রবেশ করেন। এর পর পরই তিনি তালেবানদের হাতে বন্দি হন। পরবর্তীতে সেখান থেকে মুক্তি পেয়ে হয়ে তিনি ইসলাম বিষয়ে বিস্তর পড়াশোনা করেন এবং ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। তার বন্দি জীবন এবং ইসলাম গ্রহণের বিবরণভিত্তিক তিনটি সাক্ষাত্কার পাঠকদের জন্য এখানে তুলে ধরা হলো।


দুঃসাহসী ব্রিটিশ মহিলা সাংবাদিক ইভোন রেডলির নামটি ‘ওয়ার অন টেরর’ বা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বিশ্বব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টিকারী একটি নাম। আফগানিস্তানের গগনচুম্বী পর্বতশৃঙ্গকে যিনি নত করেছিলেন তার দুঃসাহসিক মনোবল দ্বারা তিনি রেডলি। জাঁদরেল পশ্চিমা সাংবাদিকরা যখন তালেবান-আলকায়দার স্বর্গরাজ্য আফগানিস্তানের কথা ভেবে আতঙ্কে আঁতকে উঠত এবং নাইন ইলেভেনের পর মার্কিন রণ হুঙ্কারের পাল্টা প্রতিক্রিয়াস্বরূপ পাক-আফগান সীমান্ত জিহাদি আগ্নেয়গিরির সংকেত ঈশান কোণে জমাট বেঁধে উঠছিল, তখন একজন মহিলা হয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছিলেন রেডলি। কিন্তু তালেবানের অদক্ষ হাতেই ধরাশায়ী হলো ব্রিটিশ সেই সাংবাদিকের নায়কসুলভ ও বীরত্বপূর্ণ সব কৌশল। আফগান বোরকার মধ্যে তালেবানরা আবিষ্কার করতে সক্ষম হলেন ভিন্ন জাত, ভিন্ন ধর্ম, ভিন্ন চামড়ার এক রমণীকে। গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে অবশেষে তার ঠাঁই হলো কারা অন্ধকার প্রকোষ্ঠে। পরে জানা গেল, তিনি এক বিখ্যাত ব্রিটিশ সাংবাদিক। কিন্তু পরিস্থিতি তালেবানদের বাধ্য করল তাকে পর্যবেক্ষণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত সন্দেহের বেড়াজালে আবদ্ধ রাখতে।


রেডলির মুখেই শোনা যাক তার গ্রেফতার, মুক্তি ও ইসলাম গ্রহণের কাহিনী।


মিসরে একান্ত সাক্ষাত্কারে রেডলি

২০০৬ সালে মিসরের রাজধানী কায়রোতে অনুষ্ঠিত (ডব্লিউএএম ওয়াই)-এর সম্মেলনে বিশেষ অতিথির আমন্ত্রণে রেডলি সেখানে উপস্থিত হলে সাংবাদিক হাসুনা হাম্মাদ সম্মেলনের ফাঁকে নিচের সাক্ষাত্কারটি গ্রহণ করেন।

আপনি কিভাবে ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হলেন?

রেডলি : আমি ১১ সেপ্টেম্বরের ঘটনার আগে “সানডে এক্সপ্রেস’’ পত্রিকার পক্ষ থেকে আফগানিস্তানের ইসলামি দলগুলো বিশেষ করে ক্ষমতাসীন তালেবানদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত ছিলাম। কিন্তু ১১ সেপ্টেম্বরের ঘটনার পর অর্থাত্ আরো সুনির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে আমি সেপ্টেম্বরের ২৮ তারিখ তালেবানের হাতে বেআইনিভাবে আফগানিস্তানে প্রবেশ করার অভিযোগে গ্রেফতার হই। এর পর ১০ দিন আমি তাদের কাছে জিম্মি থাকি। প্রতিটি সময় তাদের হাতে নিহত হওয়ার ভয়ে আতঙ্কিত ছিলাম। ষষ্ঠ দিনে হঠাত্ তালেবানের এক শাইখ এসে আমাকে ইসলামে প্রবেশ করার দাওয়াত দিলেন। আমি বলে দিলাম, এটা সম্ভব নয়। তবে আমাকে মুক্তি দেয়ার শর্তে এ প্রতিশ্রুতি দিয়েছি যে, লন্ডন ফিরে গেলে আমি কোরআন নিয়ে গবেষণা করব। আসলে এ প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে আমার আসল উদ্দেশ্য ছিল মুক্তির সুযোগ বের করা। কেননা, আমি যে কোনো উপায়ে এ সঙ্কট থেকে বের হতে চাচ্ছিলাম। সত্যি বলতে কি, এ পথটি, বলতে পারেন আমার এ কৌশলটি সফল হয়।

অতঃপর তারা আমাকে এবং আমার সঙ্গে অন্যদেরও মুক্তি দিল। মোল্লা ওমর মানবিক কারণে আমাকে মুক্তি দেন। কিন্তু ফিরে আসার পর আমি সিদ্ধান্ত নেই কমিটমেন্ট রক্ষা করব।

তালেবানের হাতে বন্দি থাকাকালে আপনার সঙ্গে তাদের ব্যবহার কেমন ছিল?

রেডলি : সে সময় আমি তাদের সাথে কথা বলা বন্ধ করেছি এবং অনশন করি। আমি যতই তাদের সঙ্গে কঠোর আচরণ করতে থাকি ততই তারা আমার সঙ্গে নম্র ব্যবহার করতে থাকে। তারা বলত, তুমি আমাদের বোন, আমাদের অতিথি। আমরা চাই তুমি খুব শান্তিতে থাক। মনে মনে ভাবতাম যে, যদি আমি তাদের সঙ্গে নম্রতা প্রদর্শন করি তাহলে তারা আমার সঙ্গে কঠোর ব্যবহারে উদ্ধত হবে। ভেবেছি তারা বিদ্যুতের শক, ধর্ষণ ইত্যাদি মাধ্যমে আমাকে নির্যাতন করবে, যা আমেরিকা মুসলমানদের সঙ্গে গোয়ান্তানামো এবং আবুগারিবের কারাগারে করে আসছে। কিন্তু আমি একজনকেও পেলাম না যে আমাকে হয়রানি করেছে কিংবা আমার দিকে খারাপ দৃষ্টি দিয়েছে।

নিঝুম বলেছেন...

ইসলাম গ্রহণের পর আপনি কি কোন অসুবিধার সম্মুখীন হয়েছেন?

রেডলি : ইসলাম গ্রহণের পর আমাকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়। ব্যক্তিগত কোন কারণে নয় ব্রিটিশ সরকারি বাহিনী আমার ওপর নির্যাতন চালায় শুধু ইসলামের কারণে। তবে আমি ব্লেয়ার সরকারের কাছে সম্মানিত ছিলাম। আমার কাছে এমন সব পত্র আসে যেখানে বলা হয়, যে ব্যক্তি ইসলাম গ্রহণ করবে কিংবা হিজাব পরিধান করবে সে পাশ্চাত্য সমাজে নিজেকে সংঘাতের প্রথম কাতারে নেয়ার শামিল। আর বাস্তবিকই হিজাব পরিধানকারী মহিলারা এ ধরনের চ্যালেঞ্জ ও সমস্যার মুখোমুখি।


আপনি কি কোরআনের ভাষায় আরবি শেখার ব্যাপারে কোন চিন্তা-ভাবনা করেছেন?

রেডলি : আমি আরবিতে শুধু একটি শব্দই জানি। আর তা হলো, আল-হক (সত্য) এবং এ শব্দটি আমি আমার কথাবার্তা ও আলোচনায় প্রায়ই উল্লেখ করে থাকি।

ব্রিটিশ প্রশাসনের ন্যায় আপনার পরিবারের প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল?

রেডলি : আমার দুই বোন, বড় বোন বিশ বছর ধরে এক মুসলিম পরিবারের প্রতিবেশী হওয়ায় আমার ইসলাম গ্রহণের সংবাদে বিচলিত হননি, স্বাভাবিকভাবেই নিয়েছিলেন। কিন্তু আমার দ্বিতীয় বোন বিদ্রূপ করে বলেছিল, এবার তুমি আত্মঘাতী হামলার কাজটিও সেরে ফেল। আর আমার আম্মাও বিচলিত হয়ে গির্জায় আসা-যাওয়া বাড়িয়ে দিলেন। তিনি স্বভাবতই খুব ধার্মিক। এ বিষয়টি ইসলামের কাছাকছি। আর যখন আমি তাকে ইসলামের সুস্পষ্ট দাওয়াত দিলাম তিনি বললেন, আমার বয়স ৭৯। এ অবস্থায় আমার পরিবর্তন হওয়া সম্ভব নয়।


আপনি এখন কোথায় কর্মরত আছেন?

রেডলি : ইসলাম গ্রহণের পর আমি বিভিন্ন ইসলামি মিডিয়ায় ইংরেজি ভাষায় অনেক আলোচনা উপস্থাপনা করেছি। পাশ্চাত্য মিডিয়াতেও ইদানীং লেখালেখি শুরু করেছি। আমার সর্বশেষ প্রবন্ধটি ছিল ‘হিজাব’, যেটি ওয়াশিংটন পোস্টে প্রকাশিত হয়। অমুসলিম বন্ধুদের সঙ্গে আমার সুসম্পর্ক বজায় আছে। বর্তমানে আমি আল-জাজিরা ইংলিশ চ্যানেলে কর্মরত রয়েছি।

মুক্তির পর আপনি যে ইসলাম নিয়ে গবেষণা শুরু করেছেন, তার মধ্যে প্রথম বই/গ্রন্থ কোনটি ছিল?

রেডলি : এটি ছিল শহিদ সৈয়দ কুতুব রচিত “মাআলীকিত্ তারীখ”। এ কিতাবটি পড়ে আমি খুব প্রভাবিত হই। যারা এটা পড়েননি আমি তাদের সবাইকে এটা পড়ার অনুরোধ করবো। বড় দুঃখের বিষয়, আমি যখন মিসর গিয়েছিলাম তখন কোন লাইব্রেরিতে এই কিতাবগুলো পাইনি। উসামা বিন লাদেনের ওপর আমি একটি বই রচনা করেছি। কারণ, তিনি সারা বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। উদ্দেশ্য উসামা বিন লাদেনের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন নয়।

ডেনমার্কের ঘটনার পর মুসলিম ও পাশ্চাত্যের সম্পর্কের ক্ষেত্রে আপনার কী মূল্যায়ন?

রেডলি : আমাদের শক্তি ঐক্যের মাঝে, যা আমরা পশ্চিমা পণ্য বয়কটের মাধ্যমে লক্ষ্য করেছি। অর্থনৈতিক বয়কট সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। এ ক্ষেত্রে আমি যায়নবাদী ইহুদি রাষ্ট্রের সমর্থক সব দেশেরই কোম্পানিগুলোর পণ্য বয়কট করা উচিত বলে মনে করি। আমি তো এটা কল্পনাও করতে পারিনি যে, মুসলমানরা কীভাবে কোকাকোলা পান করে। তারাতো কোকাকোলা নয়, ফিলিস্তিনি ভাইয়ের রক্ত পান করছে। অর্থনৈতিক বয়কট হলো মত প্রকাশের একটি শান্তিপূর্ণ পথ।

পাশ্চাত্যের ইসলামভীতি সম্পর্কে আপনার বক্তব্য কী?

রেডলি : আমি মনে করি, অন্যের সঙ্গে সম্পর্ক ও কর্মপন্থা ঠিক করার আগে আমাদের নিজেদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নজর দেয়া উচিত। বিশেষত মুসলিম সমাজে ওই সব লোকেরা যারা ইসলামের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে; মিসরের সাংস্কৃতিক মন্ত্রী ফারুক হোসনির মতো লোকেরা। আল্লাহ তার অন্তরকে রোগমুক্ত করুক। তার ক্ষমা চাওয়া উচিত। সে তো বুঝতে পারেনি তার এসব বক্তব্য পাশ্চাত্যের মুসলিম নারীদের কত ক্ষতি করেছে। বলুন, আমরা শত্রুর মোকাবিলা কীভাবে করি? সমস্যা তো আমাদের ভিতরেই।


কোনো মুসলিম মহিলা কি আপনাতে ইসলাম গ্রহণে প্রভাবিত করেছেন?


রেডলি : অনেক মুসলিম আরব মহিলাই, তবে বিশেষ করে যায়নাব আল-গাযযালী (রহ.) এর কথা উল্লেখ করব। তার আত্মজীবনী আমাকে মুগ্ধ করেছে।


(দৈনিক আমারদেশ : ২৩.১২.২০১১)

Roman বলেছেন...

অসাধারণ একটি বই! আমার মতে ইসলামী আন্দলনের সাথে সম্পর্কিত এ বইটি অন্ততঃ এক বার পড়ে নেয়া উচিৎ।

যুগে যুগে আলিম দের সাজা দেয়ার পরিণাম বলেছেন...

হুসায়ন বিন আলীকে মারার পর উবাইদুল্লাহ বিন জিয়াদ উন্মাদ হয়ে যান, এবং তাকে এই কারণেই কুফার শাসন ক্ষমতা ছাড়তে হয়। বাদশাহ ইয়াজিদের মন রক্ষা করতে যে হুসাইন কে মারতে তিনি নির্দেশ দিয়েছিলেন, সেই ইয়াযিদ তাকে ঘৃণা করতেন।

আবদুল্লাহ বিন যুবাইর কে মারতে নির্দেশ দেন ইয়াজিদ। হাজ্জাজ বিন ইউসুফ কে তাকে হত্যার দ্বায়িত্ব দেয়া হয়। হাজ্জাজ মক্কা দখল করে হারাম শরিফে আব্দুল্লাহ বিন জুবাইর কে ঘেরাও করে রাখে। মিনজানিক দিয়ে কাবার চারপাশের দেয়াল ভাংগা হয়। এবং হাজরে আসওয়াদকে ভেংগে ফেলা হয়। এর পর শুরু হয় ইয়াজিদের মারাত্মক রোগ, মারা যান তিনি।

সাঈদ বিন জুবাইর নামক এক জন শ্রেষ্ঠ তাবেয়ীকে মারার পর হাজ্জাজ বিন ইউসুফের পেটের পীড়া দেখা দেয়, এবং ক'দিন পরেই মারা যায় ইসলামের ইতিহাসের এই সবচেয়ে রূদ্র ও জালিম প্রধানমণ্ত্রী। আর সেই সাথে মাত্র ৮০ বছরেই উমাইয়া রাজবংশের পতন হয়।

ইমাম মালিক কে আঘাতের পার আঘাৎ করে মেরে ফেলার নির্দেশ দেয় আবু জাফার মানসূর। অপরাধ ছিলো ইমাম মালেকের কেতাব মুআত্তাকে সকলের মাননীয় কিতাব করার জন্য মানসূর অনুরোধ করেন। ইমাম মালেক তার নির্দেশ মানতে চাননি। মানসূর ভেবে নিলেন এটা দেশোদ্রোহ। কাজেই ইমাম মালেক কে এ্যরেস্ট করে বেদম প্রহার করা হয়। এতে তার দু হাতের কনুই ভেংগে যায়, এই জন্য নামাজে তিনি বুকে হাত বাঁধতে পারতেন না।

মানসূর আবু হানিফা কে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করতে চেয়েছিলেন। ইমাম মনে করতেন যেহেতু আব্বাসীরা আহলে বায়তকে ক্ষমতায় বসাবে এই ওয়াদা করে উমায়্যাদের তাড়ায়ে দিয়ে নিজেরাই খলিফার আসন কেড়ে নেয় এবং আহলে বায়তের উপর চালায় নিরযাতন, কাজেই আব্বাসীয়রা জালিম ও মিথ্যুক বা প্রতারক। এদের অধীনে কাজ করলে হাদিস কুরান অনুযায়ি রায় দিতে পারবেন না। তাই তিনি মানসূরের প্রস্তাব ঘৃণা ভরে ফিরিয়ে দেন। এর জন্য তাকে এ্যরেস্ট করা হয়। নিদারুন শাস্তি দিয়ে শেষে বিষ প্রয়োগ করে জেলেই তাকে হত্যা করা হয়। তার সময়ে আলে বায়তের উপর যে জুলুম করা হয় তা শুনলে গা শিউরে ওঠে।

শেষ জীবনে ১৫৮ হিজরিতে তিনি এক ভয়ংকর স্বপ্ন দেখেন, যার অর্থ ইমাম রবী বলেন যে আপনার মৃত্যর পরোয়ানা এসে গেছে এবং আপনার মৃত্যু হবে করুন ভাবেই। তিনি ভয় পেয়ে ঐ বছর হজ্জ করতে বের হন। ৭ ই জিলহাজ্জ তার মারাত্মক ব্যাধি দেখা দেয়, পথেই অত্যন্ত খারাপ যায়গায় তার মরণ হয়, হজ্জ করা আর হয়নি তার।

ইমাম আহমাদ কে অত্যাচার করে খলিফা মামুন, মু'তাসিম এবং মুতাওক্কিল তার প্রথম দিকে। ঐরকম অত্যাচার ইসলামে খুব কম মানুষকে করা হয়েছে। মামুন ও মুতাসিমের মরণ ও হয়েছে খুব খারাপ ভাবে। কিম্তু মুতাওয়াক্কিল তাকে শেষে মাফ করে দেয় বলে আল্লাহ তাকে অমন ভাবে মারেনি।

ইমাম আহমাদ সারহিনদি ছিলেন মুজাদ্দিদ। তাকে কষ্ট দিয়েছে বাদশাহ আকবর। এবং তার ছেলে জাহাংগীর। সবাইকে আল্লাহর গযব পেয়ে বসেছিলো। তাদের মরণ হয়েছে খুব খারাপ ভাবে।

মিশরের ইখোয়ানকে যারা শাস্তি দিয়েছে আল্লাহ তাদেরকেও দিয়েছেন ঘৃণা ও আপমানের জীবন।

আজ মনে পড়ছে শায়খুল হাদিসের কষ্ট দেয়ার কথা। তার উপরে দেয়া কষ্টের জন্য বাংলাদেশের তদকালীন প্রধান মণ্ত্রীর ক্ষমতা শেষ হয়। সরকারি বাস ভবন নিজের নামে লিখে নিয়েও আবার ফিরিয়ে দিতে হয়।

Comment Please

মন্তব্য..

সবিস্তার সূচীপত্র
টেম্পলেট কাষ্টমাইজেশন - তরঙ্গ ইসলাম | তরঙ্গ ইসলাম