সুরা আনফাল (৩২ থেকে ৩৫) : আল্লাহর আযাব শুধু আকাশ থেকে পাথরবর্ষণ বা নুহ আ: এর প্লাবণের আকারেই আসেনা !

 http://photos-f.ak.fbcdn.net/hphotos-ak-ash3/12652_173494262132_1169945_a.jpg
৩২) আর সেই কথাও স্মরণ যোগ্য যা তারা বলেছিলঃ হে আল্লাহ! যদি এটা যথার্থই সত্য হয়ে থাকে এবং তোমার পক্ষ থেকে হয়ে থাকে তাহলে আমাদের ওপর আকাশ থেকে পাথর বর্ষণ করো অথবা কোন যন্ত্রণাদায়ক আযাব আমাদের ওপর আনো৷ ২৬
_________________________________________

২৬ . একথা তারা দোয়া হিসেবে নয়, চ্যালেঞ্জের সুরে বলতো৷ অর্থাৎ তাদের একথা বলার উদ্দেশ্য ছিল, যদি যথার্থই এটি সত্য হতো এবং আল্লাহর পক্ষে থেকে হতো, তাহলে একে মিথ্যা বলার ফলে তাদের ওপর আকাশ তেকে পাথর বর্ষিত হতো এবং ভয়াবহ আযাব তাদের ওপর আপতিত হতো৷ কিন্তু তা হয়নি৷ আর যখন তা হয়নি তখন এর অর্থ হচ্ছে , এটি সত্যও নয় এবং আল্লাহর পক্ষ থেকেও আসেনি৷
_________________________________________


৩৩) তুমিই যখন তাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলে তখন আল্লাহ তাদের ওপর আযাব নাযিল করতে চাচ্ছিলেন না৷ আর এটা আল্লাহর রীতিও নয় যে, লোকেরা ক্ষমা চাইতে থাকেবে এবং তিনি তাদেরকে আযাব দেবেন৷ ২৭
_________________________________________
২৭ . ওপরে তাদের যে বাহ্যিক দোয়ার উল্লেখ করা হয়েছে তার মধ্যে যে প্রশ্ন নিহিত ছিল এটি তার জওয়াব৷ এ জওয়াবে বলা হয়েছে , আল্লাহ মক্কী যুগে আযাব পাঠাননি কে?এর প্রথম কারণ ছিল, যতদিন কোন নবী কোন জনবসতিতে উপস্থিত থাকেন এবং সত্যের দাওয়াত দিতে থাকেন ততদিন পর্যন্ত জনবসতিতর অধিবাসীদের অবকাশ দেয়া হয় এবং পূর্বাহ্নে আযাব পাঠিয়ে তাদের সংশোধিত হবার সুযোগ কেড়ে নেয়া হয় না৷ এর দ্বিতীয় কারণ,যতদিন পর্যন্ত কোন জনবসতি থেকে এমন ধরনের লোকেরা একের পর এক বের হয়ে আসতে থাকে যারা নিজেদের পূর্ববর্তী গাফলতি ও ভুল কর্মনীতি ও সজাগ হয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে থাকে এবং নিজেদের ভবিষ্যত কর্মনীতি ও আচার-আচরণ সংশোধন করে নেয়, ততদিন পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট জনবসতিকে মহান আল্লাহ অনর্থন ধ্বংস করে দেবেন, এটা মোটেই যুক্তিসংগত নয়৷ তবে নবী যখন সংশ্লিষ্ট জনবসতির ব্যাপারে তার দায়িত্ব সর্বতোভাবে পালন করার পর নিরাশ হয়ে সেখান থেকে বের হয়ে যান অথবা তাকে বের করে দেয়া হয় কিংবা তাকে হত্যা করা হয় এবং সৎ ও সত্যনিষ্ঠ ব্যক্তিকে দেখতে প্রস্তুত নয়, তখনই আযাবের আসল সময় এসে যায়৷
_________________________________________

৩৪) কিন্তু এখন কেন তিনি তাদের ওপর আযাব নাযিল করবেন না যখন তারা মসজিদে হারামের পথ রোধ করেছে? অথচ তারা এ মসজিদের বৈধ মুতাওয়াল্লীও নয়৷ এর বৈধ মুতাওয়াল্লী হতে পারে একমাত্র তাকওয়াধারীরাই৷ কিন্তু অধিকাংশ লোক একথা জানে না৷
.
_________________________________________

৩৫) বায়তুল্লাহর কাছে তারা কি নামায পড়ে! তারা তো শুধু সিটি দেয় ও তালি বজায়৷ ২৮ কাজেই তোমরা যে সত্য অস্বীকার করে আসছিলে তার প্রতিদানে এখন আযাবের স্বাদ গ্রহণ করো৷ ২৯
_________________________________________

২৮ . আরববসীদের মনে ভুল ধারণা প্রচ্ছন্ন ছিল এবং সাধারণ আরববাসীরা যার ফলে প্রতারিত হচ্ছিল এখানে সেদিকে ইশারা করা হয়েছে৷ তারা মনে করতো , কুরাইশরা যেহেতু বাইতুল্লাহর খাদেম ও মুতাওয়াল্লী এবং সেখানে ইবাদত করে তাই তাদের ওপর রয়েছে আল্লাহর অনুগ্রহ৷ এ ধারণাটি প্রতিবাদ করে বলা হয়েছে, শুধুমাত্র উত্তরাধিকার সুত্রে খাদেম ও মুতাওয়াল্লির দায়িত্ব লাভ করলে কোন ব্যক্তি বা দল কোন ইবাদত গৃহের বৈধ খাদেম ও মুতাওয়াল্লী হতে পারে না৷ একমাত্র যারা মুক্তাকী আল্লাহকে ভয় করে তারাই ইবাদত গৃহের বৈধ মুতাওয়াল্লী হতে পারে৷আর
এদের অবস্থা হচ্ছে, যে গৃহটিকে শুধুমাত্র এবং নির্ভেজাল আল্লাহর ইবাদত করার জন্যে নির্ধারিত করা হয়েছিল সেখানে এরা এমন এক দল লোককে প্রবেশ করতে বাধা দিচ্ছে যারা নির্ভেজাল আল্লাহর ইবাদতকারী৷ এভাবে এরা মুতাওয়াল্লী ও খাদেমের দায়িত্ব পালন করার পরিবর্তেএ ইবাদত গৃহের মালিক হয়ে বসেছে৷এখন এরা যার ওপর নারায হবে তাকে এ ইবাদত গৃহে আসতে দেবে না৷ এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করার ব্যাপারে এরা নিজেদেরকে পূর্ণ ক্ষমতার অধিকারী বলে মনে করছে৷ এ ধরনের পদক্ষেপ ও কার্যকলাপ এদের মুত্তাকী না হবার এবং আল্লাহকে ভয় না করার সুষ্পষ্ট প্রমাণ৷আর এরা বাইতুল্লাহে এসে যে ইবাদত করে তাতে না আছে নিষ্ঠা ও আন্তরিকতা , না আছে আল্লাহর প্রতি ভক্তি ও নিষ্ঠা এবং আল্লাহকে স্মরণ করার প্রবণতা৷ তারা একটা অর্থহীন হৈচৈ ,শোরগোল ও ক্রীড়া-কৌতুক চালিয়ে যাচ্ছে৷ একে এরা নাম দিয়েছে ইবাদত৷ আল্লাহর গৃহের এ ধরনের নাম সর্বস্ব খিদতম এবং এ ধরনের মিথ্যা ইবাদতের ভিত্তিতে এরা কেমন করে আল্লাহর অনুগ্রহ লাভের অধিকারী হয়ে গেলো৷ এ ধরনের কার্যকলাপ এদেরকে কেমন করে আল্লাহর আযাব থেকে নিরাপদ রাখতে পারে?


২৯ . তারা মনে করতো, শুধুমাত্র আকাশ থেকে পাথর বৃষ্টি অথবা অন্য কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগের আকারেই আল্লাহর আযাব আসে৷ কিন্তু এখানে তাদের জানানো হয়েছে , বদর যুদ্ধে তাদের চূড়ান্ত পরাজয়ই আসলে তাদের জন্যে আল্লাহর আযাব ছাড়া আর কিছুই নয়৷ তাদের এ পরাজয় ইসলামকে জীবনী শক্তি লাভের সুসংবাদ এবং জাহেলী ব্যবস্থাকে মৃত্যুর সিদ্ধান্ত শুনিয়ে দিয়েছে৷

0 comments:

Comment Please

মন্তব্য..

সবিস্তার সূচীপত্র
টেম্পলেট কাষ্টমাইজেশন - তরঙ্গ ইসলাম | তরঙ্গ ইসলাম