পাহাড়ের ঢাল বেয়ে নেমে এলো পঞ্চাশজন ঘোড় সওয়ার। ঘন বন পেরিয়ে নদীর ভাংগা পুলের কাছে থামল ওরা। নদীর ওপারে বন আরো গভীর। উপত্যকায় জংলী গাছের সাথে আংগুরলতা, আপেল, নাশপাতি আর হরেক ফলের গাছ দেখে বুঝা যায়, কোন কালে এ অরণ্য এক সুদৃশ্য বাগান ছিলো। পুলের ওপাশে রাস্তার দুধারে গাছের ডালপালা ভাঙা সড়কটাকে ছাদের মত ঢেকে রেখেছে। ঘাস আর গুল্মলতা জড়িয়ে রেখেছে সড়কের ভাঙা ইট-পাথর। দেখলেই বুঝা যায়, এ সড়কে মানুষের পা খুব কমই পড়ে।
নদীটা গভীর নয়। সড়ক ছেড়ে কয়েক পা নিচে নামলে সহজেই নদী পেরোতে পারে সওয়াররা। কিন্তু সামনের দু'জন কি ভেবে পুলের কাছে পৌঁছেই পেছন ফিরে সওয়ারদের থেমে যেতে ইশারা করলো।
দলের সকলেই যুদ্ধসাঁজে সজ্জিত।
...কালো ঘোড়সওয়ার জবাব দিলো, "তবে বিদ্রোহীদের সাথে যে আচরণ করা হয় তেমনটি করা ছাড়া আমাদের আর কোন উপায় থাকবে না। সে আমাদের দুশমনদের কাছ থেকে তার নিজের স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছে। সে যদি শুধু এই সীমান্ত রক্ষার জিম্মা বহন করে, তবে তার আজাদীর সম্মান আমরা অবশ্যই করবো"।
"যদি আমাদের প্রস্তাব নাকচ করে দেয়?"
"তবু আমরা তার ওপর কোনরূপ হস্তক্ষেপ করবো না। শুধু এ আফসোস নিয়েই এখান থেকে বিদায় হবো যে, এক অসামান্য ব্যক্তিত্বকে গ্রানাডার সামরিক বাহিনীতে শামিল করতে পারলাম না।"
বনের মধ্যে একটা হরিণকে ঘুরতে দেখে এক সওয়ার ধনুক তাক করতেই আচমকা এক অপ্রত্যাশিত তীর এসে কাছেই গাছে বিঁধলো। তীরের সাথে একটা চিঠি। দুজন সওয়ার এগিয়ে খুলে নিলো চিঠিটি। কাগজে লেখা আছে, "নদীর অপর তীর সীমান্ত ঈগলের অধীন। এই চারনভূমি মুজাহিদদের ঘোড়ার জন্য নির্ধারিত। এ বনের ফল ও শিকার ধরার অধিকার শুধু তাদের ই আছে স্পেনের জমিনকে যারা পরাধীনতার নাগপাশ হতে মুক্ত করতে চায়। গ্রানাডার কেবল ঐ লোকেরাই এ জমিনে পা রাখতে পারবে যারা মুজাহিদদের জামায়াতে শামিল হতে চায়।"
স্পেনের পটভূমিতে নসীম হিজাযীর আরেকটি অনন্যসাধারণ উপন্যাস সীমান্ত ঈগল।
মিডিয়াফায়ার লিঙ্ক | গুগলড্রাইভ লিঙ্ক |
৭.৫৮ মেগাবাইট | ৮.০৩ মেগাবাইট |
0 comments: