ধর্মবিদ্বেষীকে হত্যা করা কি বৈধ? মুরতাদের শাস্তি কি?

মুরতাদের শাস্তি
------------------------
আবদুস শহীদ নাসিম
০৯/০৩/২০১৫
----------------------
প্রশ্নঃ  স্যার আমার একটা প্রশ্ন আছে, আমার আগের প্রশ্নের জবাব পাই নাই, তবুও আমি আশাবাদী এই দফায় প্রশ্নের উত্তর পাবো... প্রশ্ন হলো, ইসলামি শরীআ অনুসারে মুরতাদের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড ; এটা তো ইসলামিক রাষ্ট্রে কায়েম করা সম্ভব। কিন্তু যে দেশে ইসলামিক সরকার নেই সেই দেশে কি এটা মুসলিমদের বিধান করতে হবে? নাকি সেই দেশের ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য নয়?

জবাবঃ 

ইসলামি রাষ্ট্র, ইসলামি আইনের বিধি প্রণয়ন এবং ইসলামি সরকার ছাড়া ইসলামি দণ্ড কার্যকর করবে কে? কিভাবে?

সুতরাং কোন দেশে যখন ইসলামি আইন রাষ্ট্রীয়ভাবে অনুমোদন লাভ করবে, আদালতে ইসলামি আইনের ভিত্তিতে বিচার-ফায়সালা হবে এবং সরকার তা কার্যকর করতে উদ্যোগী হবে, কেবল তখনই ইসলামি দণ্ড কার্যকর করা সম্ভব।



 
ধর্ম বিদ্বেষীকে হত্যা করা বৈধ কিনা?

---------------------------------
আবদুস শহীদ নাসিম
০২/০৩/২০১৫
---------------------
প্রশ্ন: কেউ যদি ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে এবং আল্লাহ ও রসূলের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ায় এবং এই কাজে চরম বাড়াবাড়ি করে, তাহলে তাকে হত্যা করা বৈধ কিনা? বৈধ না হলে এ ব্যাপারে ঈমানদার মুসলিমদের দায়িত্ব কী? কারন, যারা এ ধরনের বিদ্বেষ ছড়ায় তারা তো মুসলিমদের অন্তরে ও বিশ্বাসে প্রচণ্ড আঘাত হানে।

 
জবাব : এ বিষয়টি খুবই সেনসেটিভ। এ বিষয়ে ইসলামের বিধান এবং করণীয় হলঃ

কেউ যদি ইসলাম ধর্মের এবং আল্লাহ ও রসূলের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ায় এবং এক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি করে, এটা একটা জঘন্য অন্যায় ও আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। শুধু ইসলাম কেন, যেকোনো ধর্মের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানো এবং আঘাত দিয়ে কথা বলা ইসলাম সমর্থন করেনা। তবে যুক্তিপূর্ণ সমালোচনা করা হলে ভিন্ন কথা।

এ প্রসংগে ইসলামে বিধান হলো:

‌১. কেউ ইসলাম এবং আল্লাহ ও রসূলের বিরুদ্ধে আঘাত হেনে বিদ্বেষমূলক অপপ্রচার চালালে সেটা একটা দণ্ডনীয় অপরাধ। কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে এ ধরনের লোকদের উপর দণ্ড কার্যকর করা বা তাদেরকে হত্যা করা ইসলাম সমর্থন করেনা। কোনো মুসলিম এ ধরনের কাজ করতে পারেনা।(দেখুন আল কুরআন ১৭ঃ ৩৩)

২. ইসলামের দৃষ্টিতে এই ধরনের লোকদের শাস্তির আওতায় আনার দায়িত্ব হচ্ছে সরকারের। এদেরকে আইনের আওতায় এনে সাক্ষ্য প্রমাণের মাধ্যমে অপরাধ প্রমাণ করতে হবে। এভাবে ন্যায্য বিচার নিশ্চিত করে প্রশাসনকে তাদের উপর নির্ধারিত দণ্ড প্রয়োগ করতে হবে।(দেখুন আল কুরআন ১৭ঃ ৩৩)

৩. ধর্মবিশ্বাসীদের বিশ্বাসে আঘাত হানার কারণে তারা সংক্ষুদ্ধ হয়ে এ ধরনের লোকদের দণ্ড প্রদানের জন্যে সরকারের নিকট দাবী জানাতে পারেন এবং জানানো উচিত। তারা নিজেরাও আদালতে এদের বিরুদ্ধে মোকদ্দমা দায়ের করতে পারেন।

৪. সরকার, প্রশাসন ও বিচার বিভাগের দায়িত্ব হোল, এ ধরনের অপরাধীদের উপর যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা কার্যকর করা। এ ব্যাপারে এ তিনটি বিভাগের যে কেউ অবহেলা করলে সে কারণে বাড়াবাড়ি এবং সীমালংঘন মূলক কাজের পথ খুলে যেতে পারে। এ ব্যাপারে সবারই সতর্ক থাকা উচিত।

৫. অন্য কোনো ধর্মের লোকেরা আল্লাহকে গালি-গালাজ করলেও মহান আল্লাহ তাদের দেবতাদের গালি-গালাজ করতে মুসলিমদের নিষেধ করেছেন। (দ্র. আল কুরআন: ০৬: ১০৮)

সুতরাং মুসলমানদেরকে এসব ক্ষেত্রে অত্যন্ত সহনশীল হতে হয়। মুসলিমদের উচিত বেশি বেশি আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করা ও প্রচার করা। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে গঠনমূলক সমালোচনা করা এবং পজেটিভ কাজ করাই মুসলিমদের কর্তব্য।

0 comments:

Comment Please

মন্তব্য..

সবিস্তার সূচীপত্র
টেম্পলেট কাষ্টমাইজেশন - তরঙ্গ ইসলাম | তরঙ্গ ইসলাম