ওয়াজ মাহফিলে বক্তব্য দিয়ে টাকা নেয়া কি জায়েয?

প্রশ্নোত্তরঃ
মাহফিলে বক্তব্য  দিয়ে টাকা নেয়া কি জায়েয?
-----------------------------------
আবদুস শহীদ নাসিম
৩০/০৩/২০১৫
-----------------------------------
প্রশ্নঃ আসসালামু আলাইকুম। স্যার, আমাদের দেশে প্রায় প্রত্যেক বক্তাকে তাফসির মাহফিলে বক্তব্য রাখার বিনিময়ে ২০ হাজার, ৫০ হাজার এমনকি লক্ষ টাকা পর্যন্ত নিতে দেখা যায়। এটা কি ইসলামে জায়েয? জায়েয হলে কেন? কুরআন হাদিসের আলোকে জানালে খুশি হবো! @ রেজওয়ান নাম্বার টু

জবাবঃ ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়ারাহ মাতুল্লাহ। এ বিষয়টির দুটি দিক রয়েছে। সেগুলো হোলঃ

০১. আল্লাহর আয়াতের বিনিময়ে তুচ্ছ মূল্য ক্রয় করা

কুরআন মজিদে ইহুদি ধর্মগুরুদের ব্যাপারে বলা হয়েছে :
'তারা আল্লাহর আয়াতের বিনিময়ে তুচ্ছ মূল্য ক্রয় করতো।'

এই কাজটি ইসলামে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। একাজ হলো মূলত :

০১. নিজেদেরকে আল্লাহর কিতাব ও আয়াতের একমাত্র মুখপাত্র হিসেবে প্রচার করা এবং সাধারণ জনগণকে তা মানতে বাধ্য করা।

০২. আল্লাহর আয়াতকে দুনিয়াবি স্বার্থ হাসিলের বিনিময় হিসেবে ব্যবহার করা। আল্লাহর আয়াতকে ব্যবসায়িক পণ্য হিসেবে ব্যবহার করা।

০৩. নিজেদেরকে আল্লাহর কিতাবের একমাত্র ব্যাখ্যাতা বা সোল এজেন্ট মনে করা এবং ঘোষণা করা।

০৪. আল্লাহর কালাম জানা, শিক্ষাদান করা ও প্রচার করার ক্ষেত্রে নিজেদের ছাড়া বাকি সাধারণ মানুষকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা।

০৫. জাগতিক তুচ্ছ মূল্যের বিনিময়ে জনগণকে আল্লাহর আয়াতের ব্যাখ্যা প্রদান করা ইত্যাদি।



০২. দ্বিতীয় বিষয়টি হলো আল্লাহর কিতাবের দায়িত্ব পালন করা

অর্থাৎ মুসলিম হবার কারনে-

০১. দায়িত্ব ও কর্তব্য হিসেবে আল্লাহর কিতাবের জ্ঞানার্জন করা,

০২. সে অনুযায়ী আমল করা এবং

০৩. সে জ্ঞান মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়া।

ইসলামের দৃষ্টিতে এই তিনটি কাজ বিরাট নেকি ও কল্যাণের কাজ।

এখানে তৃতীয় অর্থাৎ আল্লাহর কিতাবের জ্ঞান মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়ার কর্তব্যটি পালনের পন্থা হলো :

০১. শিক্ষাদান করার মাধ্যমে,
০২. ব্যাখ্যা দান করার মাধ্যমে,
০৩. নিজেকে বাস্তব নমুনা হিসেবে পেশ করার মাধ্যমে,
০৪. দাওয়াত দান করার মাধ্যমে এবং
০৫. প্রচার ও তাবলিগ করার মাধ্যমে, ইত্যাদি।

যারা এই কাজগুলো দায়িত্ব-কর্তব্য হিসেবে নি:স্বার্থভাবে সম্পাদন করাকে নিজেদের ব্রত হিসেবে গ্রহণ করেছেন এবং এই কাজে সর্বাত্মক আত্মনিয়োগ করার কারণে জীবিকা উপার্জন করার সময় পান না, তাদের ব্যাপারে আলেমগণ ফতোয়া দিয়েছেন :

এই দায়িত্ব পালন করে বিনিময়ে গ্রহণ করা তাদের জন্য জায়েয। তবে শর্ত হলো, এই বিনিময়ে গ্রহণ করার ক্ষেত্রে-

০১. বাড়াবাড়ি করা যাবে না,
০২. শর্তারোপ করা যাবে না,
০৩. এবং যারা তুচ্ছ মূল্যের বিনিময়ে আল্লাহর আয়াত বিক্রি করে, তাদের মতো ব্যবসায়িক আচরণ করা যাবে না।


ধন্যবাদ

0 comments:

Comment Please

মন্তব্য..

সবিস্তার সূচীপত্র
টেম্পলেট কাষ্টমাইজেশন - তরঙ্গ ইসলাম | তরঙ্গ ইসলাম