জামায়াতের স্থায়ী কর্মসুচি:
১। বাংলাদেশের সকল নাগরিকের নিকট ইসলামের প্রকৃত রুপ বিশ্লেষণ করিয়া চিন্তার বিশুদ্ধিকরণ ও বিকাশ সাধনের মাধ্যমে জীবনের সর্বক্ষেত্রে ইসলামের অনুসরণ ও ইসলাম প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে অনুভূতি জাগ্রত করা।
২। ইসলামকে জীবনের সর্বক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত করিবার সংগ্রামে আগ্রহী সৎ ব্যাক্তিদিগকে সংগঠিত করা এবং তাহাদিককে ইসলাম কায়েম করিবার যোগ্যতাসম্পন্ন হিসেবে গড়িয়া তুলিবার উদ্দেশ্যে শিক্ষা দান
৩। ইসলামী মুল্যবোধের ভিত্তিতে সামাজিক সংশোধন,নৈতিক পুনর্গঠন ও সাংস্কৃতিক পরিবর্তন সাধন এবং দুঃস্থ মানবতার সেবা করা।
৪। ইসলামের পূর্ণাঙ্গ প্রতিষ্ঠাকল্পে গোটা রাষ্ট্রীয় ব্যাবস্থাপনায় বাণ্ঞ্ছিত সংশোধন আনয়নের উদ্দেশ্যে নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় সরকার পরিবর্তন এবং সমাজের সর্বস্তরে সৎ ও খোদাভীরু নেতৃত্ব কায়েমের চেষ্টা করা। (1)
তবে যুগান্তকারী পদক্ষেপ হচ্ছে ঐ দফা বাস্তাবায়নের জন্য "bottom-up” approach এর পরিবর্তে জামায়াত would follow the “top-down” approach to Islamize the society and individual by first capturing the state machinery.তার মানে ৪র্থ দফা তখন থেকেই সবচেয়ে বেশি ফোকাসে চলে আসল। কারন হিসেবে মাওলানা মওদুদীর বক্তব্য ছিল; ইসলাম কায়েমের লক্ষ্যে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা হস্তগত করা শুধু কাম্যই না বরং কুরআনের আয়াত(১৭:৮০)অনুসারে তা ফরজ!(2) ফলে The Jama'at, much like revivalist movements everywhere, began to show more interest in governing how Muslims lived than in their individual souls. (3)
সংবিধান পরিবর্তন
মাছিগোথ সম্মেলনের পর সংগঠনকে আরো বেশি গনমুখী করার সীদ্ধান্ত নেয়া হয়,যার ফলে সংবিধানে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়েছিল।আমীরের ক্ষমতাকে নিয়ন্ত্রন করার জন্য শুরা মেম্বার বাড়িয়ে ৫০ জনে উর্ণীত করা হলো এবং তাদের ভেটো পাওয়ারও দেয়া হল। পরস্পর বিপরীতমুখি দুটি ধারা সংযোজন করা হয়, যেমন, একদিকে মজলিশের দুই তৃতীয়াংশের মতের ভিত্তিতে আমীরে জামায়াতের অপসারন করার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে,(4)অন্যদিকে বলা হয়েছে আমির যদি মজলিশের ঐ সীদ্ধান্ত মেনে না নেন তাহলে রুকন সম্মেলনের মাধ্যমে তার মীমাংসা করা হবে।রুকনগন যদি আমীরের পক্ষে ভোট দেন তাহলে অনাস্থা প্রস্তাব গ্রহনকারী মজলিশে শুরা বাতিল হবে(মাছিগোথের মত)(5)
এখানে মজলিশের সীদ্ধান্তই মুখ্য হবে নাকি আমীরের সীদ্ধান্তে দল চলবে তা কি স্পষ্ট ?এজেন্ডা নির্ধারনেও আমীরের একচ্ছত্র অধিকার আর থাকলনা। মাছিগোট যাতে আবার ফিরে না আসে তারও ব্যাবস্থা রাখা হল।মতবিরোধের সীমা নির্ধারন করে দেয়া হল ফলে কার্যত দ্বীমতের স্থান আর রইলনা। রুকন হওয়ার জন্য যাবতীয় যোগ্যতা থাকলেও কেউ সদস্য হতে পারবেনা যতক্ষন পর্যন্ত জামায়াতের সাংগঠনিক দায়িত্বশীলগনের দৃষ্টিতে সদস্য (রুকন) হওয়ার যোগ্য বিবেচিত হন(6)
কোন সদস্য(রুকন)জামায়াতের গৃহীত কোন সীদ্ধান্তের সহিত তাহার দ্বিমতের কথা সিদ্ধান্ত গ্রহনকারী সংস্থার বাহিরে প্রকাশ করিলে,তিনি জামায়াতের এমন পদে নিযুক্ত থাকিতে পারিবেন না,যাহার কর্তব্যই হইতেছে জামায়াতের পলিসি বাস্তবায়ন কিংবা উহার ব্যাখ্যাদান করা (7)।এই ধারাটা এমন যে,এর ফলে জামায়াত নিয়ে অধ্যয়ন করার পথ একরকম রুদ্ধ হয়ে যায়।কারন কেউ যদি আনুগত্যের নামে কথাই না বলে তাহলে সময়ে সময়ে যে সীদ্ধান্তগুলো নেয়া হয় তার পর্যালোচনা কিভাবে করা যাবে?
পাকিস্তান জামায়াতের নেতৃবৃন্দের মধ্যে এই ব্যাপারে কিছুটা উদারতা দেখা গেলেও বাংলাদেশে টোটালি বিপরীত।ফলে যারাই বাংলাদেশ জামায়াত নিয়ে স্টাডি করতে গিয়েছে তাদেরকে তথ্যের সীমাবদ্ধতার কথা স্বীকার করতে হয়েছে।অথচ পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত সোর্স থেকে তথ্য নিলে আমাদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য হয়না।এখানেও সংগঠনের শিক্ষা সুনির্দিষ্ট পত্রিকা-জার্নাল ছাড়া বাকী সব সেকুলারদের তাই বিশ্বাস করা যাবে না।
মজলিশ ই আমেলা(এক্সিকিউটিভ কাউন্সিল বা কর্মপরিষদ) নামে নতুন একটা শক্তিশালী টিম গঠন করা হয়। শুরা এবং আমিরের মাঝে আরবিটারের মত কাজ করাই তাদের উদ্দেশ্য।শুরা থেকে কতিপয় লোককে আমীর যোগ্যতা অনুসারে ঐ টিমে নিয়োগ দিতেন। কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্যগন পদাতিকার বলে কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরার সদস্য হইবেন(8)। এর ফলে পলিসি নির্ধারন গুটি কয়েক লোকের ভিতর চলে আসল।যিনি শুরার সদস্য তিনিই আমীর,নায়েবে আমীর বা সেক্রেটারী,তিনিই যদি কর্মপরিষদ সদস্য হন,আবার একই ব্যাক্তি যদি এমপি প্রার্থী হন,হন মন্ত্রী তাহলে তাদের দ্বারা সাংগঠনিক কাজের সবক্ষেত্রে হক আদায় করা সর্বপরি সব কিছুতে ব্যালান্স করা সম্ভব কি?
শুরা হওয়া উচিৎ স্বাধীন চিন্তার অধিকারী,সুউচ্চ জ্ঞান সম্পন্ন বা ক্ষেত্র বিশেষে ইজতিহাদী যোগ্যতা সম্পন্ন লোকদের।রাসুলের (সঃ)এর মৃত্যুর পর খলিফা নির্ধারণে শুরার দায়িত্বপালন করেন মাত্র ৬জন সাহাবী যারা আধ্যাতিকতা,নৈতিকতা,প্রজ্ঞা,দুরদর্শীতায় অন্যান্য সকল সাহাবী থেকে ভিন্ন উচ্চতায় ছিলেন,আর এটাই হওয়া উচিৎ ইসলামী আন্দোলনের শুরার উদাহরন।
আব্দুর রাশীদ মতিন বলেন;The new strategy deployed to win political power would be similar to Lenin's strategy of Vanguardism(9)।তবে লেনিন এর স্ট্রাটেজি ছিল সশস্র বিপ্লব সাধনের জন্য আর মাওলানা মওদুদী তা থেকে মুল উপাদান অস্র ও বিপ্লব বাদ দিয়ে শুধু কাঠামোটা গ্রহন করেছেন। কর্মি তৈরির কেটাগরিতেও কিছুটা পরিবর্তন আনা হলো, মুতারিফ এবং মুতাথথির কেটাগরির পরিবর্তে শুধু মাত্র মুত্তাফিক(affiliate)সংযোজন করা হলো।সংগঠনের কাঠামো পরিবর্তন হলেও কঠিন শৃঙ্খলা এবং আনুগত্যের ধারা অপরিবর্তিতই রয়ে গেল বরং আরো কঠোর হল।
এত এত নিয়ম কানুন দিয়ে সংগঠনে শৃংখলা আসল বটে কিন্তু দীর্ঘমেয়াদী সাফল্যের লক্ষ্যে ইনটালেকসুয়াল তৈরির রাস্তা বন্ধ হয়ে গেল।কারন উপরের অর্ডার অনুসারে ১০জন কর্মি হয়ত বানানো যায় কিন্তু কেডার স্টাকসার দিয়ে উপরের নির্দেশে ১০ চিন্তাশীল নেতৃত্ব তৈরি করা কি সম্ভব?
চিন্তা করার ক্ষমতা এমন এক উপহার আল্লাহর যেটা সবাইকে দেয়া হয়না,আর এতে কেপ/ট্যাগ লাগিয়ে দিলে চিন্তাশীল লোকও কিছু দিন পর তার যোগ্যতা হারাতে বসে।
আজ সংগঠনে শুনা যায় আমাদের এত লাখ কর্মি আছে,এত হাজার রুকন আছে আরো কত কিছু.....বর্তমান বাংলাদেশ জামায়াতের শুরাতে প্রায় ৩০জনের মত প্রফেসর আছেন কিন্তু প্রফেসর খুরশীদ আহমেদের মত প্রফেসর দেখা যায়না,ইন্জিনিয়ার আছে কিন্তু খুররম মুরাদ এর মত ইন্জিনিয়ার অনুপস্থিত,ডক্টরও আছেন কিন্তু ইজেতবেগবিচ,তারিক রামাদানের মত দার্শনিক তৈরি হয়না,প্রচুর সংখ্যক মাওলানা আছেন কিন্তু ইউসুফ আল কারজাবির মত আলেম তৈরি হয়না,আমির আছেন কিন্তু শায়খ ইয়াসিনের মত আধ্যাতিক নেতা তৈরি হয়না, নেতা আছেন প্রচুর কিন্তু হাসান নাসরুল্লাহ,খালেদ মিশালের মত বিপ্লবী তৈরি হয়না।আমার সংগঠন তার কারনও খুজে পায়না......
By 1956 the Jama'at had lost its intellectual momentum. Its zeal and ideological perspective had been important for the development of contemporary Muslim thought in the Subcontinent and elsewhere, but the party was no longer producing ideas which would sustain its vitality as a religious movement and secure a place for it at the forefront of Islamic revivalist thinking. Most of Mawdudi's own seminal works, outlining his views on Islam, society, and politics had been written between 1932 and 1948. His worldview and thought had fully taken shape by the time he moved to Pakistan. (10)
করাচী মিউনিসিপল করপোরেসন নির্বাচন
যাই হউক, এ রকম সাংগঠনিক সাজসজ্জা নিয়ে জামায়াত করাচী মিউনিসিপল করপোরেসন নির্বাচনে অংশগ্রহন করে ১৯৫৮ সালে। ৪০০০০ রুপি খরচ করে ইলেকশান কেম্পেইন করা হয়েছিল।২৩ জন কেন্ডিডেটের মধ্যে ১৯ জনই জয়ী হয় ঐ নির্বাচনে। আশানুরুপ ফলাফল জামায়াতকে আশান্বিত করে,যারা মাছিগোটে নির্বাচনের পক্ষে ছিলেন তারা আর পিছনে ফিরে দেখার প্রয়োজন অনুভব করলেন না।
এই ফলাফলের মোটিভেশনে রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমতায় যাওয়ার ব্যাপারে জামায়াত আরো কয়েকধাপ এগিয়ে যায় এবং জাতীয় নির্বাচনের জন্য খুব ভালভাবে প্রস্তুতি নিতে থাকে।কিন্তু জামায়াতের এই প্রস্তুতিতে রণে ভঙ্গ দিয়ে মার্শাল ল জারি করেন আইয়ুব খান, সময় ছিল ৭ই অক্টোবর ১৯৫৮।Jamat interpreted the coup as a conspiracy to foil the election, which Jamat was sure to win, and deny the Jamat Access to power position.(11)
১। বাংলাদেশের সকল নাগরিকের নিকট ইসলামের প্রকৃত রুপ বিশ্লেষণ করিয়া চিন্তার বিশুদ্ধিকরণ ও বিকাশ সাধনের মাধ্যমে জীবনের সর্বক্ষেত্রে ইসলামের অনুসরণ ও ইসলাম প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে অনুভূতি জাগ্রত করা।
২। ইসলামকে জীবনের সর্বক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত করিবার সংগ্রামে আগ্রহী সৎ ব্যাক্তিদিগকে সংগঠিত করা এবং তাহাদিককে ইসলাম কায়েম করিবার যোগ্যতাসম্পন্ন হিসেবে গড়িয়া তুলিবার উদ্দেশ্যে শিক্ষা দান
৩। ইসলামী মুল্যবোধের ভিত্তিতে সামাজিক সংশোধন,নৈতিক পুনর্গঠন ও সাংস্কৃতিক পরিবর্তন সাধন এবং দুঃস্থ মানবতার সেবা করা।
৪। ইসলামের পূর্ণাঙ্গ প্রতিষ্ঠাকল্পে গোটা রাষ্ট্রীয় ব্যাবস্থাপনায় বাণ্ঞ্ছিত সংশোধন আনয়নের উদ্দেশ্যে নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় সরকার পরিবর্তন এবং সমাজের সর্বস্তরে সৎ ও খোদাভীরু নেতৃত্ব কায়েমের চেষ্টা করা। (1)
তবে যুগান্তকারী পদক্ষেপ হচ্ছে ঐ দফা বাস্তাবায়নের জন্য "bottom-up” approach এর পরিবর্তে জামায়াত would follow the “top-down” approach to Islamize the society and individual by first capturing the state machinery.তার মানে ৪র্থ দফা তখন থেকেই সবচেয়ে বেশি ফোকাসে চলে আসল। কারন হিসেবে মাওলানা মওদুদীর বক্তব্য ছিল; ইসলাম কায়েমের লক্ষ্যে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা হস্তগত করা শুধু কাম্যই না বরং কুরআনের আয়াত(১৭:৮০)অনুসারে তা ফরজ!(2) ফলে The Jama'at, much like revivalist movements everywhere, began to show more interest in governing how Muslims lived than in their individual souls. (3)
সংবিধান পরিবর্তন
মাছিগোথ সম্মেলনের পর সংগঠনকে আরো বেশি গনমুখী করার সীদ্ধান্ত নেয়া হয়,যার ফলে সংবিধানে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়েছিল।আমীরের ক্ষমতাকে নিয়ন্ত্রন করার জন্য শুরা মেম্বার বাড়িয়ে ৫০ জনে উর্ণীত করা হলো এবং তাদের ভেটো পাওয়ারও দেয়া হল। পরস্পর বিপরীতমুখি দুটি ধারা সংযোজন করা হয়, যেমন, একদিকে মজলিশের দুই তৃতীয়াংশের মতের ভিত্তিতে আমীরে জামায়াতের অপসারন করার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে,(4)অন্যদিকে বলা হয়েছে আমির যদি মজলিশের ঐ সীদ্ধান্ত মেনে না নেন তাহলে রুকন সম্মেলনের মাধ্যমে তার মীমাংসা করা হবে।রুকনগন যদি আমীরের পক্ষে ভোট দেন তাহলে অনাস্থা প্রস্তাব গ্রহনকারী মজলিশে শুরা বাতিল হবে(মাছিগোথের মত)(5)
এখানে মজলিশের সীদ্ধান্তই মুখ্য হবে নাকি আমীরের সীদ্ধান্তে দল চলবে তা কি স্পষ্ট ?এজেন্ডা নির্ধারনেও আমীরের একচ্ছত্র অধিকার আর থাকলনা। মাছিগোট যাতে আবার ফিরে না আসে তারও ব্যাবস্থা রাখা হল।মতবিরোধের সীমা নির্ধারন করে দেয়া হল ফলে কার্যত দ্বীমতের স্থান আর রইলনা। রুকন হওয়ার জন্য যাবতীয় যোগ্যতা থাকলেও কেউ সদস্য হতে পারবেনা যতক্ষন পর্যন্ত জামায়াতের সাংগঠনিক দায়িত্বশীলগনের দৃষ্টিতে সদস্য (রুকন) হওয়ার যোগ্য বিবেচিত হন(6)
কোন সদস্য(রুকন)জামায়াতের গৃহীত কোন সীদ্ধান্তের সহিত তাহার দ্বিমতের কথা সিদ্ধান্ত গ্রহনকারী সংস্থার বাহিরে প্রকাশ করিলে,তিনি জামায়াতের এমন পদে নিযুক্ত থাকিতে পারিবেন না,যাহার কর্তব্যই হইতেছে জামায়াতের পলিসি বাস্তবায়ন কিংবা উহার ব্যাখ্যাদান করা (7)।এই ধারাটা এমন যে,এর ফলে জামায়াত নিয়ে অধ্যয়ন করার পথ একরকম রুদ্ধ হয়ে যায়।কারন কেউ যদি আনুগত্যের নামে কথাই না বলে তাহলে সময়ে সময়ে যে সীদ্ধান্তগুলো নেয়া হয় তার পর্যালোচনা কিভাবে করা যাবে?
পাকিস্তান জামায়াতের নেতৃবৃন্দের মধ্যে এই ব্যাপারে কিছুটা উদারতা দেখা গেলেও বাংলাদেশে টোটালি বিপরীত।ফলে যারাই বাংলাদেশ জামায়াত নিয়ে স্টাডি করতে গিয়েছে তাদেরকে তথ্যের সীমাবদ্ধতার কথা স্বীকার করতে হয়েছে।অথচ পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত সোর্স থেকে তথ্য নিলে আমাদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য হয়না।এখানেও সংগঠনের শিক্ষা সুনির্দিষ্ট পত্রিকা-জার্নাল ছাড়া বাকী সব সেকুলারদের তাই বিশ্বাস করা যাবে না।
মজলিশ ই আমেলা(এক্সিকিউটিভ কাউন্সিল বা কর্মপরিষদ) নামে নতুন একটা শক্তিশালী টিম গঠন করা হয়। শুরা এবং আমিরের মাঝে আরবিটারের মত কাজ করাই তাদের উদ্দেশ্য।শুরা থেকে কতিপয় লোককে আমীর যোগ্যতা অনুসারে ঐ টিমে নিয়োগ দিতেন। কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্যগন পদাতিকার বলে কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরার সদস্য হইবেন(8)। এর ফলে পলিসি নির্ধারন গুটি কয়েক লোকের ভিতর চলে আসল।যিনি শুরার সদস্য তিনিই আমীর,নায়েবে আমীর বা সেক্রেটারী,তিনিই যদি কর্মপরিষদ সদস্য হন,আবার একই ব্যাক্তি যদি এমপি প্রার্থী হন,হন মন্ত্রী তাহলে তাদের দ্বারা সাংগঠনিক কাজের সবক্ষেত্রে হক আদায় করা সর্বপরি সব কিছুতে ব্যালান্স করা সম্ভব কি?
শুরা হওয়া উচিৎ স্বাধীন চিন্তার অধিকারী,সুউচ্চ জ্ঞান সম্পন্ন বা ক্ষেত্র বিশেষে ইজতিহাদী যোগ্যতা সম্পন্ন লোকদের।রাসুলের (সঃ)এর মৃত্যুর পর খলিফা নির্ধারণে শুরার দায়িত্বপালন করেন মাত্র ৬জন সাহাবী যারা আধ্যাতিকতা,নৈতিকতা,প্রজ্ঞা,দুরদর্শীতায় অন্যান্য সকল সাহাবী থেকে ভিন্ন উচ্চতায় ছিলেন,আর এটাই হওয়া উচিৎ ইসলামী আন্দোলনের শুরার উদাহরন।
আব্দুর রাশীদ মতিন বলেন;The new strategy deployed to win political power would be similar to Lenin's strategy of Vanguardism(9)।তবে লেনিন এর স্ট্রাটেজি ছিল সশস্র বিপ্লব সাধনের জন্য আর মাওলানা মওদুদী তা থেকে মুল উপাদান অস্র ও বিপ্লব বাদ দিয়ে শুধু কাঠামোটা গ্রহন করেছেন। কর্মি তৈরির কেটাগরিতেও কিছুটা পরিবর্তন আনা হলো, মুতারিফ এবং মুতাথথির কেটাগরির পরিবর্তে শুধু মাত্র মুত্তাফিক(affiliate)সংযোজন করা হলো।সংগঠনের কাঠামো পরিবর্তন হলেও কঠিন শৃঙ্খলা এবং আনুগত্যের ধারা অপরিবর্তিতই রয়ে গেল বরং আরো কঠোর হল।
এত এত নিয়ম কানুন দিয়ে সংগঠনে শৃংখলা আসল বটে কিন্তু দীর্ঘমেয়াদী সাফল্যের লক্ষ্যে ইনটালেকসুয়াল তৈরির রাস্তা বন্ধ হয়ে গেল।কারন উপরের অর্ডার অনুসারে ১০জন কর্মি হয়ত বানানো যায় কিন্তু কেডার স্টাকসার দিয়ে উপরের নির্দেশে ১০ চিন্তাশীল নেতৃত্ব তৈরি করা কি সম্ভব?
চিন্তা করার ক্ষমতা এমন এক উপহার আল্লাহর যেটা সবাইকে দেয়া হয়না,আর এতে কেপ/ট্যাগ লাগিয়ে দিলে চিন্তাশীল লোকও কিছু দিন পর তার যোগ্যতা হারাতে বসে।
আজ সংগঠনে শুনা যায় আমাদের এত লাখ কর্মি আছে,এত হাজার রুকন আছে আরো কত কিছু.....বর্তমান বাংলাদেশ জামায়াতের শুরাতে প্রায় ৩০জনের মত প্রফেসর আছেন কিন্তু প্রফেসর খুরশীদ আহমেদের মত প্রফেসর দেখা যায়না,ইন্জিনিয়ার আছে কিন্তু খুররম মুরাদ এর মত ইন্জিনিয়ার অনুপস্থিত,ডক্টরও আছেন কিন্তু ইজেতবেগবিচ,তারিক রামাদানের মত দার্শনিক তৈরি হয়না,প্রচুর সংখ্যক মাওলানা আছেন কিন্তু ইউসুফ আল কারজাবির মত আলেম তৈরি হয়না,আমির আছেন কিন্তু শায়খ ইয়াসিনের মত আধ্যাতিক নেতা তৈরি হয়না, নেতা আছেন প্রচুর কিন্তু হাসান নাসরুল্লাহ,খালেদ মিশালের মত বিপ্লবী তৈরি হয়না।আমার সংগঠন তার কারনও খুজে পায়না......
By 1956 the Jama'at had lost its intellectual momentum. Its zeal and ideological perspective had been important for the development of contemporary Muslim thought in the Subcontinent and elsewhere, but the party was no longer producing ideas which would sustain its vitality as a religious movement and secure a place for it at the forefront of Islamic revivalist thinking. Most of Mawdudi's own seminal works, outlining his views on Islam, society, and politics had been written between 1932 and 1948. His worldview and thought had fully taken shape by the time he moved to Pakistan. (10)
করাচী মিউনিসিপল করপোরেসন নির্বাচন
যাই হউক, এ রকম সাংগঠনিক সাজসজ্জা নিয়ে জামায়াত করাচী মিউনিসিপল করপোরেসন নির্বাচনে অংশগ্রহন করে ১৯৫৮ সালে। ৪০০০০ রুপি খরচ করে ইলেকশান কেম্পেইন করা হয়েছিল।২৩ জন কেন্ডিডেটের মধ্যে ১৯ জনই জয়ী হয় ঐ নির্বাচনে। আশানুরুপ ফলাফল জামায়াতকে আশান্বিত করে,যারা মাছিগোটে নির্বাচনের পক্ষে ছিলেন তারা আর পিছনে ফিরে দেখার প্রয়োজন অনুভব করলেন না।
এই ফলাফলের মোটিভেশনে রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমতায় যাওয়ার ব্যাপারে জামায়াত আরো কয়েকধাপ এগিয়ে যায় এবং জাতীয় নির্বাচনের জন্য খুব ভালভাবে প্রস্তুতি নিতে থাকে।কিন্তু জামায়াতের এই প্রস্তুতিতে রণে ভঙ্গ দিয়ে মার্শাল ল জারি করেন আইয়ুব খান, সময় ছিল ৭ই অক্টোবর ১৯৫৮।Jamat interpreted the coup as a conspiracy to foil the election, which Jamat was sure to win, and deny the Jamat Access to power position.(11)
0 comments: