আরেকটি বিশেষ অনুভুতি: জামায়াত অধ্যয়ন করতে যেয়ে দুই জন ব্যাক্তির প্রতি আমার বিশ্বাস up and down হয়।একজন জামায়াতের কান্ডারী মাওলানা মওদুদী আরেকজন বাংলাদেশ জামায়াতের কান্ডারী অধ্যাপক গোলাম আযম।মাওলানা মওদুদীর বই পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে আমার মত হাজার লাখ যুবককে দ্বীনের রাস্তা দেখিয়ে যাচ্ছে কিন্তু একই ব্যাক্তির রাজনৈতিক ভূমিকা তার প্রতি তৈরি হওয়া আমার বিশ্বাসের ভীত নাড়িয়ে দেয় কিন্তু শেষ বয়সে তার কিছু realization মানুষ হিসেবে তার মর্যাদা আমার কাছে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। যাই হউক,এই অনুভুতিটা এজন্য শেয়ার করলাম এই পোষ্ট থেকে মাওলানা মওদুদীকে আমাদের রাজনৈতিক নেতা হিসেবেই চোখে পরবে তখন যাতে কেউ বিভ্রান্ত না হন।
(গত সংখ্যায় যেখানে শেষ তারপর থেকে)
কমিটির চার সদস্য মাওলানা আমীন আহসান ইসলাহীর কাছে সুবিচার প্রার্থনা করলেন।মাও ইসলাহীকে মাওলানা মওদুদীর পরেই জামায়াতে মান্য করা হত।অধ্যাপক গোলাম আযম সাহেবের মতে মাও মওদুদীর পর তিনিই জামায়াতের আমীর হওয়ার সবচেয়ে যোগ্য ছিলেন।তিনি মাওলানা মওদুদীর সাথে জেলও খাটেন (1)। তিনি সেই ব্যাক্তি আন্দোলনের প্রতি তার দৃষ্টিভঙ্গী কেমন ছিল তা তার নিন্মলিখিত লেখা থেকে বুঝা যায়, "এ সংগ্রামের পথে আমাকে চলতেই হবে।যদি চলার সাধ্য না থেকে তবে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও চলতে থাকবো।এরও সাধ্য না থাকলে বুকে গড়িয়ে চলবো।সে ক্ষমতাটুকু যদি না থাকে তাহলে আমার চলার পথের দিকে তাকিয়ে থাকবো,যতক্ষণ প্রাণ থাকে।তবুও এ পথ ছেড়ে যাবো না।এ পথ ছাড়া আর কোন পথ নেই"(2)
ব্যক্তি জীবনে মাওলানা ইসলাহী খুবই ঠান্ডা মেজাজের মানুষ ছিলেন।তিনি এই ঘটনার আগ পর্যন্ত সবসময়ে মাওলানা মওদুদীকে সাপোর্ট করে গেছেন।এই প্রথম তিনি ঐ চার সদস্যদের পক্ষ হয়ে রেসপন্স করেন।তিনি মাওলানা মওদুদীকে ঐ চার সদস্য যারা কিনা জামায়াতের মধ্যে সবচেয়ে সিনিয়র ও উচ্চ তাকওয়ার অধিকারী, তাদের কথা স্বরণ করিয়ে দিয়ে তার ঐ সীদ্ধান্তের সমালোচনা করে জবাব চান।মাওলানা মওদুদী নিজে তাদেরকে রিভিউ কমিটিতে নিয়োগ দেন।তাদের তিন জনেই ছিলেন বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রাদেশের আমীর।যেমন; আব্দুল গাফ্ফার হাসান(১৯৪৮-৪৯,৫৬),আব্দুল জব্বার গাজী(৪৮-৪৯)এবং সুলতান আহমেদ (১৯৫৩-৫৪)।তিনি মাওলানা মওদুদীকে জিজ্ঞেস করেন,তাদের প্রতি তার আনা অপবাদের অন্যায় হিসেব না করেই তিনি কিভাবে তাদের সততার ব্যাপারে প্রশ্ন তোলেন।তিনি মাও মওদুদীকে আরও বলেন জামায়াত সেন্ট্রাল অফিসের স্টাফদের কুটিল পরোচনায় জামায়াত সংবিধান অনুসারে তিনি অগনতান্ত্রিক আচরণ করেছেন। মাও ইসলাহী এটাকে আরো গভীরে
গিয়ে দেখলেন সাংবিধানিক ভাবে প্রদত্ত শুরার ক্ষমতায় আমীরের অনধিকার প্রবেশ, আর তাই সংবিধানকে ডিফেন্ড করার চেষ্টা করলেন।(3)
উপরোক্ত কথাগুলোর সমন্বয়ে আমিন আহসান ইসলাহীর লেখা চিঠি যখন মাওলানা মওদুদী পেলেন তখন তিনি খুবই উত্তেজিত হয়ে পড়েন এবং জামায়াত সেক্রেটারী মিয়া তুফায়েল কে চিঠি লিখেন যাতে জামায়াত তাকে মৃত মনে করে(অথবা তিনি মারা গেলে যা করা হত) নতুন আমীর নির্বাচন করে নেয় (4)। মাওলানা মওদুদী খুব ভাল করেই জানতেন জামায়াতে তার অবস্থান কোথায়।ইসরার আহমেদের মতে মাওলানা মওদুদী জানতেন তার পদত্যাগ দলের ভিতর আতঙ্ক সৃষ্টি করার জন্য যথেষ্ঠ এবং জামায়াতের সদস্যদের চয়েসের ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার করবে। এই ঘটনার মাধ্যমে মাওলানা জামায়াতকে কঠিন দুটি চয়েসে ছেড়ে দেন;তিনি থাকবেন অথবা সমালোচকরা!(5)
মাওলানা মওদুদীর খুবই loyal lieutenants হিসেবে পরিচিত মিয়া তোফায়েল,নঈম সিদ্দিকি এবং মালিক নাসরুল্লাহ খান আজিজ মাও ইসলাহীর কাছে গেলেন এই ক্রাইসিসের সমাধানের জন্য। ইসলাহী তাদেরকে মাওলানা মওদুদীর পদত্যাগের কথা ভিতরে,বাহিরে কারো কাছে প্রকাশ না করার নির্দেশ দেন এবং গোপনে শুরার একটি সেশান ডাকতে বলেন।কিন্তু নঈম সিদ্দিকি এখানে হেকমত খাটিয়ে পদত্যাগ করে নিজেকে জামায়াতের কোন আদেশ-নিষেধ মানা থেকে মুক্ত করে নেন।এরপর তিনি ইসলাহীর আদেশ অমান্য করে মাও মওদুদীর পদত্যাগের খবর ও কারন হিসেবে মাও ইসলাহী ও রিভিউ কমিটিকে দায়ী করে খবর ছড়িয়ে দেন।এই খবর জামায়াত ছাড়িয়ে তৎকালীন মিডিয়েতেও চলে আসে।(6)
মাওলানা মওদুদীর পদত্যাগের পর চৌধুরী গোলাম মোহাম্মদ নায়েবে আমীর হিসেবে নিযুক্ত হন।তিনি মাও মওদুদী ও মাও ইসলাহীর মধ্যে সমঝোতার চেষ্টা করেন।জামায়াত নেতৃবৃন্দু এটা জনাতেন যে যদি সরকার জামায়াতের আভ্যন্তরীন এই ব্যাপারে জানতে পারে এবং জাতীয় সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ পায় তাহলে পরিস্থিতি আরো খারাপ হবে এবং ইসলামী আন্দোলন নিয়ে জনমনে সংশয় তৈরি হবে।গোলাম মোহাম্মদ মাওলানা মওদুদীকে তার পদত্যাগ পত্র তুলে নিতে বলেন এবং যারা এই ব্যাপারে জানে তাদেরকে কঠোর গোপনীয়তা পালন করতে নির্দেশ দেন।
মিয়া তোফায়েল ১২ জানুয়ারী ১৯৫৭ সালে শুরা সেশান ডাকেন কিন্তু ইসলাহী,আশরাফ এবং জব্বার গাজী ঐ সেশানে যোগ দেননি।মাও ইসলাহী বলেন জামায়াত নেতৃবৃন্দু ইচ্ছাকৃতভাবে এই সভা ডেকেছেন যাতে করে ওনাদের উপস্থিত হওয়ার পরিবেশ না থাকে(7)।মাওলানা মওদুদীর অভিযোগ ছিল মাও ইসলাহী নিজের উচ্চাকাঙ্খা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এসব করেছেন,এর sensitivity চিন্তা করে মাও ইসলাহী ভদ্রতা সুলভ ভাবে পদত্যাগ করেন(8)।কিন্তু গোলাম মোহাম্মদের নেতৃত্বে জামায়াতের উচ্চ পর্যায়ের একদল তাকে ফেব্রুয়ারী ১৯৫৭ সালে আগত রুকন সম্মেলন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে অনুরোধ করেন এবং পদত্যাগ পত্র তুলে নিতে রাজী করান।তিনি পদত্যাগ পত্র প্রত্যাহার করে নেন এবং ঐ দলের কাছে সমঝোতার ব্যাপারে সম্মত হন,যারাই তার কাছে গিয়েছে তিনি তাদের সাথে ছিলেন আন্তরিক(9)।
তিনি রিভিউ কমিটির দায়িত্বশীলদের প্রতি যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা তুলে নেয়ার এবং মাওলানা মওদুদীর ক্ষমতাকে সুনির্দিষ্ট করে দেবার দাবী জানান।গোলাম মোহাম্মদের নেতৃত্বে শুরা সদস্যগন কোন রকম পরিবর্তন ছাড়া মাওলানা ইসলাহীর প্রস্তাব মেনে নিতে বাধ্য হন এবং আব্দুল গাফ্ফার হাসান মাওলানা মওদুদীকে বাধ্য করেন তার পদত্যাগ পত্র তুলে নেয়ার(10)।কিন্তু মাওলানা মওদুদী ও তার সমর্থকগন কোন রকম সমঝোতায় যেতে রাজি হননি বরং মাও মওদুদী একটা শর্ত দিয়ে ঐ প্রস্তাবনায় রাজী হন; যে রুকন সম্মেলনের মাধ্যমে এই মতানৈক্যের ব্যাপারে সীদ্ধান্ত নিতে হবে।(11)
মাওলানা মওদুদী কেন রুকন সম্মেলনে এই সমস্যার সমাধান করতে চেয়েছিলেন, এর উপরে ভেলি রেজা নাসরের একটা এক্সপার্ট রিভিউ দেখুন, পুরোটাই ইংরেজিতে দিলাম কারন বাংলা করতে গেলে এর মুল স্পিরিটটাই নষ্ট হয়ে যায়।(এই লাইনগুলো কেউ বুঝলে ভাল, না বুঝলে আরো ভাল)
He (Maulana Mawdudi) intended to hold the threat of resignation over the shura' and the review committee, because he was convinced that the rank and file of the party supported him and that an open session would circumvent the constitutional powers of the shura', which was stacked against him by supporters of Islahi and the review committee. Faced with constitutional restrictions and unable to win his case through regular channels, Mawdudi circumvented the very rules he had himself devised to prevent the domination by any one leader.
This was a volte-face with momentous implications and a testament to the fundamental role politics and personal ambitions played in Mawdudi's decisions and policies. By acceding to an open meeting and Mawdudi's demand that Jama'at members arbitrate the issues in dispute, the shura' surrendered its constitutional powers to an ad hoc body, opening the door for the amir to undermine the authority of the shura' with the blessing of its members.(12)
মাছিগোটের ফলাফলতো এখানেই নির্ধারণ হয়ে যায়।এখানে একটা বিষয় আমাদের মনে রাখা দরকার মাওলানা মওদুদী একই সাথে ছিলেন Ideologue ,কারো কারো ভাষায় মুজাদ্দিদ এবং খুবই জানু politician(রাজনীতিবিদ),ইতিহাসের এই পর্যায়ে দেখা যায় তার geniuses of politics এর কাছে দলের শুরা সদস্যগন পরাভূত।
একটা উদাহরন দিয়ে শেষ করতে চাই, মানুষ হিসেবে আমরা সবাই সমান এতে কোন সন্দেহ নেই কিন্তু যোগ্যতার বিচারে মানুষের পার্থক্য আমরা করে থাকি।একজন ব্যারিষ্টার আব্দুর রাজ্জাক কে এক পাল্লায় এবং অন্যদিকে ১০-২০ জন সাধারন রুকনকে আরেক পাল্লায় রাখলে আমার কাছে মনে হয় প্রথম জনের দিকে পাল্লা ভারী হবে।মাছিগোটে সম্মেলনের এক পর্যায়ে মাওলানা আমিন আহসান ইসলাহীও মাওলানা মওদুদীকে একই প্রশ্ন করেছিলেন বলে জানা যায় " মাওলানা! আপনি সাধারন রুকনদের ভোটের সাথে আমাদের তুলনা(এখানে জ্ঞান ও প্রজ্ঞা বুঝানো হয়েছে)করলেন" কি আর করা আগেই বলেছি politician always ruled the world and here in Jamat too.
মাছিগোট জামায়াতে ইসলামীর paradigm shift (দিক পরিবর্তন) করে দিয়েছে,এ নিয়ে লেখা খুবই কম আামদের দেশে।অধ্যাপক গোলাম আযম সাহেব তার বইতে ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় অল্প একটু বর্ণনা করেছেন,যেটুকু বর্তমান আন্দোলনের পক্ষে যায় ঠিক ততটুকুই।তাই আমি একটু সবিস্তারে বর্ণনা করতে চাই।খুব বড় হয়ে যাবে তাই আরেকটা পর্বে দিতে হবে।
(গত সংখ্যায় যেখানে শেষ তারপর থেকে)
কমিটির চার সদস্য মাওলানা আমীন আহসান ইসলাহীর কাছে সুবিচার প্রার্থনা করলেন।মাও ইসলাহীকে মাওলানা মওদুদীর পরেই জামায়াতে মান্য করা হত।অধ্যাপক গোলাম আযম সাহেবের মতে মাও মওদুদীর পর তিনিই জামায়াতের আমীর হওয়ার সবচেয়ে যোগ্য ছিলেন।তিনি মাওলানা মওদুদীর সাথে জেলও খাটেন (1)। তিনি সেই ব্যাক্তি আন্দোলনের প্রতি তার দৃষ্টিভঙ্গী কেমন ছিল তা তার নিন্মলিখিত লেখা থেকে বুঝা যায়, "এ সংগ্রামের পথে আমাকে চলতেই হবে।যদি চলার সাধ্য না থেকে তবে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও চলতে থাকবো।এরও সাধ্য না থাকলে বুকে গড়িয়ে চলবো।সে ক্ষমতাটুকু যদি না থাকে তাহলে আমার চলার পথের দিকে তাকিয়ে থাকবো,যতক্ষণ প্রাণ থাকে।তবুও এ পথ ছেড়ে যাবো না।এ পথ ছাড়া আর কোন পথ নেই"(2)
ব্যক্তি জীবনে মাওলানা ইসলাহী খুবই ঠান্ডা মেজাজের মানুষ ছিলেন।তিনি এই ঘটনার আগ পর্যন্ত সবসময়ে মাওলানা মওদুদীকে সাপোর্ট করে গেছেন।এই প্রথম তিনি ঐ চার সদস্যদের পক্ষ হয়ে রেসপন্স করেন।তিনি মাওলানা মওদুদীকে ঐ চার সদস্য যারা কিনা জামায়াতের মধ্যে সবচেয়ে সিনিয়র ও উচ্চ তাকওয়ার অধিকারী, তাদের কথা স্বরণ করিয়ে দিয়ে তার ঐ সীদ্ধান্তের সমালোচনা করে জবাব চান।মাওলানা মওদুদী নিজে তাদেরকে রিভিউ কমিটিতে নিয়োগ দেন।তাদের তিন জনেই ছিলেন বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রাদেশের আমীর।যেমন; আব্দুল গাফ্ফার হাসান(১৯৪৮-৪৯,৫৬),আব্দুল জব্বার গাজী(৪৮-৪৯)এবং সুলতান আহমেদ (১৯৫৩-৫৪)।তিনি মাওলানা মওদুদীকে জিজ্ঞেস করেন,তাদের প্রতি তার আনা অপবাদের অন্যায় হিসেব না করেই তিনি কিভাবে তাদের সততার ব্যাপারে প্রশ্ন তোলেন।তিনি মাও মওদুদীকে আরও বলেন জামায়াত সেন্ট্রাল অফিসের স্টাফদের কুটিল পরোচনায় জামায়াত সংবিধান অনুসারে তিনি অগনতান্ত্রিক আচরণ করেছেন। মাও ইসলাহী এটাকে আরো গভীরে
গিয়ে দেখলেন সাংবিধানিক ভাবে প্রদত্ত শুরার ক্ষমতায় আমীরের অনধিকার প্রবেশ, আর তাই সংবিধানকে ডিফেন্ড করার চেষ্টা করলেন।(3)
উপরোক্ত কথাগুলোর সমন্বয়ে আমিন আহসান ইসলাহীর লেখা চিঠি যখন মাওলানা মওদুদী পেলেন তখন তিনি খুবই উত্তেজিত হয়ে পড়েন এবং জামায়াত সেক্রেটারী মিয়া তুফায়েল কে চিঠি লিখেন যাতে জামায়াত তাকে মৃত মনে করে(অথবা তিনি মারা গেলে যা করা হত) নতুন আমীর নির্বাচন করে নেয় (4)। মাওলানা মওদুদী খুব ভাল করেই জানতেন জামায়াতে তার অবস্থান কোথায়।ইসরার আহমেদের মতে মাওলানা মওদুদী জানতেন তার পদত্যাগ দলের ভিতর আতঙ্ক সৃষ্টি করার জন্য যথেষ্ঠ এবং জামায়াতের সদস্যদের চয়েসের ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার করবে। এই ঘটনার মাধ্যমে মাওলানা জামায়াতকে কঠিন দুটি চয়েসে ছেড়ে দেন;তিনি থাকবেন অথবা সমালোচকরা!(5)
মাওলানা মওদুদীর খুবই loyal lieutenants হিসেবে পরিচিত মিয়া তোফায়েল,নঈম সিদ্দিকি এবং মালিক নাসরুল্লাহ খান আজিজ মাও ইসলাহীর কাছে গেলেন এই ক্রাইসিসের সমাধানের জন্য। ইসলাহী তাদেরকে মাওলানা মওদুদীর পদত্যাগের কথা ভিতরে,বাহিরে কারো কাছে প্রকাশ না করার নির্দেশ দেন এবং গোপনে শুরার একটি সেশান ডাকতে বলেন।কিন্তু নঈম সিদ্দিকি এখানে হেকমত খাটিয়ে পদত্যাগ করে নিজেকে জামায়াতের কোন আদেশ-নিষেধ মানা থেকে মুক্ত করে নেন।এরপর তিনি ইসলাহীর আদেশ অমান্য করে মাও মওদুদীর পদত্যাগের খবর ও কারন হিসেবে মাও ইসলাহী ও রিভিউ কমিটিকে দায়ী করে খবর ছড়িয়ে দেন।এই খবর জামায়াত ছাড়িয়ে তৎকালীন মিডিয়েতেও চলে আসে।(6)
মাওলানা মওদুদীর পদত্যাগের পর চৌধুরী গোলাম মোহাম্মদ নায়েবে আমীর হিসেবে নিযুক্ত হন।তিনি মাও মওদুদী ও মাও ইসলাহীর মধ্যে সমঝোতার চেষ্টা করেন।জামায়াত নেতৃবৃন্দু এটা জনাতেন যে যদি সরকার জামায়াতের আভ্যন্তরীন এই ব্যাপারে জানতে পারে এবং জাতীয় সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ পায় তাহলে পরিস্থিতি আরো খারাপ হবে এবং ইসলামী আন্দোলন নিয়ে জনমনে সংশয় তৈরি হবে।গোলাম মোহাম্মদ মাওলানা মওদুদীকে তার পদত্যাগ পত্র তুলে নিতে বলেন এবং যারা এই ব্যাপারে জানে তাদেরকে কঠোর গোপনীয়তা পালন করতে নির্দেশ দেন।
মিয়া তোফায়েল ১২ জানুয়ারী ১৯৫৭ সালে শুরা সেশান ডাকেন কিন্তু ইসলাহী,আশরাফ এবং জব্বার গাজী ঐ সেশানে যোগ দেননি।মাও ইসলাহী বলেন জামায়াত নেতৃবৃন্দু ইচ্ছাকৃতভাবে এই সভা ডেকেছেন যাতে করে ওনাদের উপস্থিত হওয়ার পরিবেশ না থাকে(7)।মাওলানা মওদুদীর অভিযোগ ছিল মাও ইসলাহী নিজের উচ্চাকাঙ্খা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এসব করেছেন,এর sensitivity চিন্তা করে মাও ইসলাহী ভদ্রতা সুলভ ভাবে পদত্যাগ করেন(8)।কিন্তু গোলাম মোহাম্মদের নেতৃত্বে জামায়াতের উচ্চ পর্যায়ের একদল তাকে ফেব্রুয়ারী ১৯৫৭ সালে আগত রুকন সম্মেলন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে অনুরোধ করেন এবং পদত্যাগ পত্র তুলে নিতে রাজী করান।তিনি পদত্যাগ পত্র প্রত্যাহার করে নেন এবং ঐ দলের কাছে সমঝোতার ব্যাপারে সম্মত হন,যারাই তার কাছে গিয়েছে তিনি তাদের সাথে ছিলেন আন্তরিক(9)।
তিনি রিভিউ কমিটির দায়িত্বশীলদের প্রতি যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা তুলে নেয়ার এবং মাওলানা মওদুদীর ক্ষমতাকে সুনির্দিষ্ট করে দেবার দাবী জানান।গোলাম মোহাম্মদের নেতৃত্বে শুরা সদস্যগন কোন রকম পরিবর্তন ছাড়া মাওলানা ইসলাহীর প্রস্তাব মেনে নিতে বাধ্য হন এবং আব্দুল গাফ্ফার হাসান মাওলানা মওদুদীকে বাধ্য করেন তার পদত্যাগ পত্র তুলে নেয়ার(10)।কিন্তু মাওলানা মওদুদী ও তার সমর্থকগন কোন রকম সমঝোতায় যেতে রাজি হননি বরং মাও মওদুদী একটা শর্ত দিয়ে ঐ প্রস্তাবনায় রাজী হন; যে রুকন সম্মেলনের মাধ্যমে এই মতানৈক্যের ব্যাপারে সীদ্ধান্ত নিতে হবে।(11)
মাওলানা মওদুদী কেন রুকন সম্মেলনে এই সমস্যার সমাধান করতে চেয়েছিলেন, এর উপরে ভেলি রেজা নাসরের একটা এক্সপার্ট রিভিউ দেখুন, পুরোটাই ইংরেজিতে দিলাম কারন বাংলা করতে গেলে এর মুল স্পিরিটটাই নষ্ট হয়ে যায়।(এই লাইনগুলো কেউ বুঝলে ভাল, না বুঝলে আরো ভাল)
He (Maulana Mawdudi) intended to hold the threat of resignation over the shura' and the review committee, because he was convinced that the rank and file of the party supported him and that an open session would circumvent the constitutional powers of the shura', which was stacked against him by supporters of Islahi and the review committee. Faced with constitutional restrictions and unable to win his case through regular channels, Mawdudi circumvented the very rules he had himself devised to prevent the domination by any one leader.
This was a volte-face with momentous implications and a testament to the fundamental role politics and personal ambitions played in Mawdudi's decisions and policies. By acceding to an open meeting and Mawdudi's demand that Jama'at members arbitrate the issues in dispute, the shura' surrendered its constitutional powers to an ad hoc body, opening the door for the amir to undermine the authority of the shura' with the blessing of its members.(12)
মাছিগোটের ফলাফলতো এখানেই নির্ধারণ হয়ে যায়।এখানে একটা বিষয় আমাদের মনে রাখা দরকার মাওলানা মওদুদী একই সাথে ছিলেন Ideologue ,কারো কারো ভাষায় মুজাদ্দিদ এবং খুবই জানু politician(রাজনীতিবিদ),ইতিহাসের এই পর্যায়ে দেখা যায় তার geniuses of politics এর কাছে দলের শুরা সদস্যগন পরাভূত।
একটা উদাহরন দিয়ে শেষ করতে চাই, মানুষ হিসেবে আমরা সবাই সমান এতে কোন সন্দেহ নেই কিন্তু যোগ্যতার বিচারে মানুষের পার্থক্য আমরা করে থাকি।একজন ব্যারিষ্টার আব্দুর রাজ্জাক কে এক পাল্লায় এবং অন্যদিকে ১০-২০ জন সাধারন রুকনকে আরেক পাল্লায় রাখলে আমার কাছে মনে হয় প্রথম জনের দিকে পাল্লা ভারী হবে।মাছিগোটে সম্মেলনের এক পর্যায়ে মাওলানা আমিন আহসান ইসলাহীও মাওলানা মওদুদীকে একই প্রশ্ন করেছিলেন বলে জানা যায় " মাওলানা! আপনি সাধারন রুকনদের ভোটের সাথে আমাদের তুলনা(এখানে জ্ঞান ও প্রজ্ঞা বুঝানো হয়েছে)করলেন" কি আর করা আগেই বলেছি politician always ruled the world and here in Jamat too.
মাছিগোট জামায়াতে ইসলামীর paradigm shift (দিক পরিবর্তন) করে দিয়েছে,এ নিয়ে লেখা খুবই কম আামদের দেশে।অধ্যাপক গোলাম আযম সাহেব তার বইতে ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় অল্প একটু বর্ণনা করেছেন,যেটুকু বর্তমান আন্দোলনের পক্ষে যায় ঠিক ততটুকুই।তাই আমি একটু সবিস্তারে বর্ণনা করতে চাই।খুব বড় হয়ে যাবে তাই আরেকটা পর্বে দিতে হবে।
0 comments: