৫৫) অবশ্যি আল্লাহর কাছে যমিনের ওপর বিচরনশীল জীবের মধ্যে সবচেয়ে নিকৃষ্ট হচ্ছে তারাই যারা সত্যকে মেনে নিতে অস্বীকার করেছে৷ তারপর তারা আর কোন মতেই তা গ্রহণ করতে প্রস্তুত নয়৷ ___________
৫৬) বিশেষ করে তাদের মধ্যে থেকে এমন সব লোক যাদের সাথে তুমি চুক্তি করছো তারপর তারা প্রত্যেকবার তা ভংগ করে এবং একটুও আল্লাহর ভয় করে না৷ *৪১
____________________
*৪১ . এখানে বিশেষভাবে ইহুদীদের প্রতি ইশারা করা হয়েছে৷ মদীনা তাইয়েবায় আসার পর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সর্বপ্রথম তাদের সাথেই সৎ প্রতিবেশী সূলভ জীবন যাপন ও পারস্পরিক সাহায্য সহযোগিতার চুক্তি করেছিলেন ৷ তাদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখার জন্যে তিনি নিজের সামর্থ অনুযায়ী পূর্ণ প্রচেষ্টা চালিয়ে ছিলেন৷ তাছাড়া ধর্মীয় দিক দিয়েও তিনি ইহুদীদেরকে মুশরিকদের তুলনায় নিজের অনেক কাছের মনে করতেন, প্রত্যেক ব্যাপারেই তিনি মুশরিকদের মোকাবিলায় আহলি কিতাবদের মত ও পথকে অগ্রাধিকার দিতেন৷ কিন্তু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নির্ভেজাল তাওহীদ ও সৎ চরিত্র নীতি সংক্রান্ত যেসব কথা প্রচার করে চলছিলেন , বিশ্বাস ও কর্মের গোমরাহীর বিরুদ্ধে যে সমালোচনা করে চলছিলেন এবং সত্য দীন ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য যে প্রচেষ্ঠা ও সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছিলেন ইহুদীদের উলামা ও মাশায়েখ গোষ্ঠী তা একটুও পছন্দ করতে না৷ এ নতুন আন্দোলন যাতে কোনভাবেই সাফল্য লাভ করতে না পারে সে জন্যে তারা অনবরত ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছিল৷ এ উদ্দেশ্যে তারা মদীনার মুনাফিক মুসলমানদের সাথে মিলে চক্রান্ত করে চলছিল৷এ উদ্দেশ্যেই তারা আওস ও খাযরাজ বংশীয় লোকদের যেসব পুরাতন শত্রুতা ইসলাম পূর্বযুগে তাদের মধ্যে খুনাখুনি ও হানাহানির কারণ হতো সেগুলোকে উৎসাহিত ও উত্তেজিত করতো৷ এ উদ্দেশ্যেই কুরাইশ ও অন্যান্য ইসলাম বিরোধী গোত্রগুলোর সাথে তাদের গোপন যোগসাজস চলছিল৷ নবী (সা) ও তাদের মধ্যে যে মৈত্রী চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল তা সত্ত্বেও এসব কাজ করে চলছিল৷ যখন বদরের যুদ্ধ সংঘটিত হলো, শুরুতে তারা আশা করেছিল, কুরাইশদের প্রথম আঘাতেই এই আন্দোলনের মৃত্যু ঘন্টা বেজে উঠবে৷ কিন্তু ফলাফল দেখা গেলো তাদের প্রত্যাশার বিপরীত ৷ এ অবস্থায় তাদের অন্তরে আরো বেশী করে জ্বলে উঠলো হিংসার আগুন৷ বদরের বিজয় যাতে ইসলামের শক্তিতে একটি স্থায়ী বিপদে পরিণত না করে দেয় এ আশংকায় তারা নিজেদের বিরোধামূলক প্রচেষ্টা আরো বেশী জোরদার করে দিল৷ এমনকি একজন নেতা কা'ব ইবনে আশরাফ(কুরাইশদের পরাজয়ের খবর শুনে যে ব্যক্তি চিৎকার করে বলে উঠেছিল,আজ যমীনের পেট তার পিঠের চেয়ে আমাদের জন্যে অনেক ভাল)নিজে মক্কা গেলো৷ সেখানে সে উদ্দীপনাময় শোক গীতি গেয়ে কুরাইশদের অন্তরে প্রতিশোধ স্পৃহা জাগিয়ে তুলতে থাকলো৷ এখানেই তারা ক্ষান্ত হলো না৷ ইহুদীদের বনী কাইনুকা গোত্র সৎ প্রতিবেশী সূলভ বসবাসের চুক্তি ভংগ করে তাদের জনবসতিতে যেসব মুসলমান মেয়ে কোন কাজে যেতো তাদেরকে উত্যক্ত ও উৎপীড়ন করতে শুরু করলো৷ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন তাদের এ অন্যায় কার্যকলাপের জন্যে তাদের তিরস্কার করলেন তখন তারা জবাবে হুমকি দিলঃ "আমাদের মক্কার কুরাইশ মনে করো না৷ আমরা যুদ্ধ করতেও যুদ্ধ ক্ষেত্রে প্রাণ দিতে জানি৷ আমাদের মোকাবিলায় যুদ্ধ ক্ষেত্রে নামলে তোমরা টের পাবে, পুরুষ কাকে বলে ৷"
__________________________________________________
৫৭) কাজেই এ লোকদের যদি তোমরা যুদ্ধের মধ্যে পাও তাহলে তাদের এমনভাবে মার দেবে যেন তাদের পরে অন্য যারা এমনি ধরনের আচরণ করতে চাইবে তারা দিশা হারিয়ে ফেলে৷ *৪২ আশা করা যায় ,চুক্তি ভংগকারীদের এ পরিণাম থেকে তারা শিক্ষা গ্রহণ করবে৷
__________________________________________________
*৪২ . এর অর্থ হচ্ছে, যদি কোন জাতির সাথে আমাদের চুক্তি হয়, তারপর তারা নিজেদের চুক্তির দায়িত্ব বিসর্জন দিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হয়, তাহলে আমরাও চুক্তির নৈতিক দায়িত্ব থেকে মুক্ত হয়ে যাবো৷ এ ক্ষেত্রে আমরাও তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার ন্যায়সংগত অধিকার লাভ করবো৷ তাছাড়া যদি কোন জাতির সাথে আমাদের যুদ্ধ চলতে থাকে এবং আমরা দেখি ,শত্রুপক্ষের সাথে এমন এক সম্প্রদায়ের লোকরাও যুদ্ধে শামিল হয়েছে যাদের সাথে আমাদের চুক্তি রয়েছে তাহলে আমরা তাদেরকে হত্যা করতে এবং তাদের সাথে শত্রুর মত ব্যবহার করতে একটুও দ্বিধা করবো না৷কারণ তারা ব্যক্তিগতভাবে নিজেদের সম্প্রদায়ের চুক্তি ভংগ করে তাদের ধন-প্রাণের নিরাপত্তার প্রশ্নে তাদের সম্প্রদায়ের সাথে আমাদের যে চুক্তি রয়েছে তা লংঘন করেছে৷ ফলে নিজেদের নিরাপত্তার অধিকার তারা প্রমাণ করতে পারেনি৷
__________________________________________________
৫৮) আর যদি কখনো কোন জাতির পক্ষ থেকে তোমাদের খেয়ানত আশংকা থাকে তাহলে তার চুক্তি প্রকাশ্যে তার সামনে ছুড়ে দাও৷ *৪৩ নিসন্দেহে আল্লাহ খেয়ানতকারীকে পছন্দ করেন না৷
__________________________________________________
*৪৩ . এ আয়াতের দৃষ্টিতে যদি কোন ব্যক্তি,দল বা দেশের সাথে আমাদের চুক্তি থাকে এবং তার কর্মনীতি আমাদের মনে তার বিরুদ্ধে চুক্তি মেনে চলার ব্যাপারে গড়িমসি করার অভিযোগ সৃষ্টি করে অথবা সুযোগ পেলেই সে আমাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করবে এ ধরনের আশংকা দেখা দেয়, তাহলে আমাদের পক্ষে একতরফাভাবে এমন সিদ্ধান্ত হঠাৎ কোনক্রমেই বৈধ নয় যে, আমাদের ও তার মধ্যে কোন চুক্তি নেই৷ আর এই সংগে হঠাৎ তার সাথে আমাদের এমন ব্যবহার করা উচিত নয় যা একমাত্র চুক্তি না থাকা অবস্থায় করা যেতে পারে৷ বরং এ ধরনের অবস্থার সৃষ্টি হলে কোন বিরোধীতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করার আগে দ্বিতীয় পক্ষকে স্পষ্টভাবে একথা জানিয়ে দেবার জন্যে আমাদের তাগিদ দেয়া হয়েছে যে, আমাদের ও তোমাদের মধ্যে এখন আর কোন চুক্তি নেই৷ এভাবে চুক্তি ভংগ করার জ্ঞান আমরা যতটুকু অর্জন করেছি তারাও ততটুকু অর্জন করতে পারবে এবং চুন্তি কখনো অপরিবর্তিত আছে এ ধরনের ভূল ধারণা তারা পোষণ করবে না৷ আল্লাহর এ ফরমান অনুযায়ী নবী (সা) ইসলামের আন্তির্জাতিক রাজনীতির নিম্নোক্ত স্থায়ী মূলনীতি ঘোষনা করছিলেনঃ
------------------------------
"কোন জাতির সাথে কারোর কোন চুক্তি থাকলে চুক্তির মেয়াদ শেষ হবার আগে তার চুক্তি লংঘন করা উচিত নয়৷ এক পক্ষ চুক্তি ভংগ করলে উভয় পক্ষের সমতার ভিত্তিতে অপর পক্ষ চুক্তি বাতিল করার কথা জানাতে পারে" ৷
তারপর এ নিয়মকে তিনি আরো একটু ব্যাপকভিত্তিক করে সমস্ত ব্যাপারে এ সাধারণ নীতি প্রতিষ্ঠিত করেছিলেনঃ --------(যে ব্যক্তি তোমরা সাথে খেয়ানত ও বিশ্বাসঘাতকতা করে তুমি তার সাথে খেয়ানত করো না)এ নীতিটি শুধুমাত্র বক্তৃতা বিবৃতিতে বলার ও বইয়ের শোভা বর্ধনের জন্যে ছিল না বরং বাস্তব জীবনে একে পুরোপুরি মেনে চলা হতো৷ আমীর মুআবীয়া (রা) একবার নিজের রাজত্বকালে রোম সাম্রাজ্যের সীমান্তে সেনা সমাবেশ করতে শুরু করেন৷ তাঁর উদ্দেশ্য ছিল চুক্তির মেয়াদ শেষ হবার সাথে সাথেই অতর্কিতে রোমান এলাকায় আক্রমণ চালাবেন৷ তাঁর এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে রসূলের (সা)সাহাবী আমর ইবনে আমবাসা (রা) কঠোর প্রতিবাদ জানান৷ তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের এ হাদীসটি শুনিয়েই চুক্তির মেয়াদের মধ্যেই এ ধরনের শত্রুতামূলক কার্যকলাপকে বিশ্বাসঘাতকতা বলে অবিহিত করেন৷ অবশেষে আমীর মু'আবীয়াকে এ নীতির সামনে মাথা নোয়াতে হয় এবং তিনি সীমান্তে সৈন্য সমাবেশ বন্ধ করে দেন৷
একতরফাভাবে চুক্তি ভংগ ও যুদ্ধ ঘোষনা করা ছাড়া আক্রমণ করার পদ্ধতি প্রাচীন জাহেলী যুগেও ছিল এবং বর্তমান যুগের সুসভ্য জাহিলিয়াতেও এর প্রচলন আছে৷ এর নতুনতম দৃষ্টান্ত হচ্ছে বিগত দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে রাশিয়ার ওপর জার্মানীর আক্রমণ৷ এবং ইরানের বিরুদ্ধে রাশিয়া ও বৃটেনের সামরিক কার্যক্রম৷ সাধারণত এ ধরনের কার্যক্রমের স্বপক্ষে এ ওযর পেশ করা হয় যে, আক্রমণের পূর্বে জানিয়ে দিলে প্রতিপক্ষ সতর্ক হয়ে যায়৷এ অবস্থায় কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্মুখীন হতে হয় অথবা যদি আমরা অগ্রসর হয়ে হস্তক্ষেপ না করতাম তাহলে আমাদের শত্রুরা সুবিধা লাভ করতো৷ কিন্তু নৈতিক দায়িত্ব পালন থেকে অব্যহতি লাভের জন্যে এ ধরনের বাহানাকে যদি যথেষ্ট মনে করা হয় তাহলে দুনিয়ায় আর এমন কোন অপরাধ থাকে না যা কোন না কোন বাহানায় করা যেতে পারে না৷প্রত্যেক চোর,ডাকাত, ব্যভিচারী, ঘাতক, ও জালিয়াত নিজের অপরাধের জন্যে এমনি ধরনের কোন না কোন কারণ দর্শাতে পারে৷ অথচ মজার ব্যাপার হচ্ছে, আন্তরজাতিক পরিবেশে এরা একটি জাতির জন্যে এমন অনেক কাজ বৈধ মনে করে যা জাতীয় পরিবেশে কোন ব্যক্তি বিশেষ করলে তাদের দৃষ্টিতে অবৈধ বলে গণ্য হয়৷
এ প্রসংগে একথা জেনে নেয়ারও প্রয়োজন যে, ইসলামী আইন শুধুমাত্র একটি অবস্থায় পূর্ব ঘোষণা আক্রমণ করা বৈধ গণ্য করে৷ সে অবস্থাটি হচ্ছে, দ্বিতীয় পক্ষ যখন ঘোষণা দিয়েই চুক্তি ভংগ করে এবং আমাদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে শত্রুতামূলক কাজ করে৷ এহেন অবস্থায় উল্লেখিত আয়াতের নির্দেশ অনুযায়ী আমাদের পক্ষ থেকে তার কাছে চুক্তি ভংগ করার নোটিশ দেবার প্রয়োজন হয় না৷ বরং আমরা অঘোষিতভাবে তার বিরুদ্ধে সামরিক ব্যবস্থা গ্রহণ করার অধিকার লাভ করি৷বনী খুযাআর ব্যাপারে কুরাইশরা যখন হুদাইবিয়ার চুক্তি প্রকাশ্যে ভংগ করে তখন নবী (সা) তাদেরকে চুক্তি ভংগ করার নোটিশ দেয়ার প্রয়োজন মনে করেন নি এবং কোন প্রকার ঘোষনা না দিয়েই মক্কা আক্রমণ করে বসেন৷ নবী (সা) এর এ কার্যক্রম থেকেই মুসলিম ফকীহগণ এ ব্যতিক্রমধর্মী বিধি রচনা করেছেন৷ কিন্তু কোন অবস্থায় যদি আমরা এ ব্যতিক্রমধর্মী নিয়ম থেকে ফায়দা উঠাতে চাই তাহলে অবশ্যি সেই সমস্ত অবস্থা আমাদের সামনে থাকতে হবে যে অবস্থায় নবী (সা) এ পদক্ষেপ নিয়েছিলেন৷ এভাবে তাঁর সমগ্র কার্যক্রমের একটি সুবিধাজনক অংশ মাত্রের অনুসরণ না করে তার সবটুকুর অনুসরণ করা হবে৷হাদীস ও সীরাতের কিতাবগুলো থেকে যা কিছু প্রমাণিত হয় তা হচ্ছে নিম্নরূপঃ
একঃ কুরাইশদের চুক্তি ভংগের ব্যাপারটি এত বেশী সুষ্পষ্ট ছিল যে, তারা যে চুক্তি ভংগ করেছে এ ব্যাপারে দ্বিমত পোষণ করার কোন সুযোগ ছিল না৷ কুরাইশরা এবং তাদের সাথে সংশ্লিষ্ট লোকেরা নিজেরাও চুক্তি যথার্থই ভেঙে গেছে বলে স্বীকার করতো৷ তারা নিজেরাই চুক্তি নবায়নের জন্যে আবু সুফিয়ানকে মদীনায় পাঠিয়েছিল৷ এর পরিস্কার অর্থ ছিল , তাদের দৃষ্টিতেও চুক্তি অক্ষুন্ন ছিল না৷ তবুও চুক্তি ভংগকারী জাতি নিজেই চুক্তি ভঙ্গ করার কথা স্বীকার করবে, এটা জরুরী না৷ তবে চুক্তি ভংগ করার ব্যাপারটি একেবারে সুষ্পষ্ট ও সন্দেহাতীত হওয়া অবশ্যি জরুরী৷
দুইঃ কুরাইশদের পক্ষ থেকে চুক্তি ভংগ করার পরও নবী (সা) নিজের পক্ষ থেকে স্পষ্টভাবে বা ইশারা ইঙ্গিতে এমন কোন কথা বলেননি যা থেকে এ ইশারা পাওয়া যায় যে, এ চুক্তি ভংগ করা সত্ত্বেও তিনি এখানো তাদেরকে একটি চুক্তিবদ্ধ জাতি মনে করেন এবং এখনো তাদের সাথে তাঁর চুক্তিমূলক সম্পর্ক বজায় রয়েছে বলে মনে করেন৷ সমস্ত বর্ণনা একযোগে একথা প্রমাণ করে যে, আবু সুফিয়ান যখন মদীনায় এসে চুক্তি নবায়নের আবেদন করে তখন তিনি তা গ্রহণ করেননি৷
তিনঃ তিনি নিজে কুরাইশদের বিরুদ্ধে সামরিক কার্যক্রম গ্রহণ করেন এবং প্রকাশ্যে গ্রহণ করেন৷ তাঁর কার্যক্রমে কোন প্রকার প্রতারণার সামান্যমত গন্ধও পাওয়া যায় না৷ তিনি বাহ্যত সন্ধি এবং গোপনে যুদ্ধের পথ অবলম্বন করেননি৷
এটিই এ ব্যাপারে নবী (সা) এর উত্তম আদর্শ৷ কাজেই ওপরে উল্লেখিত আয়াতের সাধারণ বিধান থেকে সরে গিয়ে যদি কোন কার্যক্রম অবলম্বন করা যেতে পারে তাহলে তা এমনি বিশেষ অবস্থায়ই করা যেতে পারে এবং নবী (সা) যে ধরনের সরল-সহজ-ভদ্রজনোচিত পথে তা করেছিলেন তেমনি পথেই করা যেতে পারে৷
তাছাড়া কোন চুক্তিবদ্ধ জাতির সাথে কোন বিষয়ে যদি আমাদের কোন বিবাদ সৃষ্টি হয়ে যায় এবং আমরা দেখি পারষ্পরিক আলাপ আলোচনা বা আন্তর্জাতিক সালিশের মাধ্যমে এ বিবাদের মীমাংসা হচ্ছে না অথবা যদি আমরা দেখি, দ্বিতীয় পক্ষ বল প্রয়োগ করে এর মীমাংসা করতে উঠে পড়ে লেগেছে, তাহলে এ ক্ষেত্রে আমাদের জন্য বল প্রয়োগ করে এর মীমাংসায় পৌছানো সম্পূর্ণরূপে বৈধ হয়ে যাবে৷ কিন্তু উপরোক্ত আয়াত আমাদের ওপর এ নৈতিক দায়িত্ব চাপিয়ে দিয়েছে যে, আমাদের এ বল প্রয়োগ পরিষ্কার ও দ্ব্যর্থহীন ঘোষণার পর হতে হবে এবং তা হতে হবে প্রকাশ্যে৷ লুকিয়ে লুকিয়ে গোপনে এমন ধরনের সামারিক কার্যক্রম করা যার প্রকাশ্যে ঘোষণা দিতে আমরা প্রস্তুত নই, একটি অসদাচার ছাড়া আর কিছুই নয়৷ইসলাম এর শিক্ষা আমাদের দেয়নি৷
__________________________________________________
৫৯) সত্য অস্বীকারকারীরা যেন এ ভূল ধারণা ও পোষণ না করে যে,তারা জিতে গেছে৷ নিশ্চয়ই তারা আমাকে হারাতে পারবে না৷
0 comments: