__________________________________
**৪৪ . এর অর্থ হচ্ছে, তোমাদের কাছে যুদ্ধোপকরণ ও একটি স্থায়ী সেনাবাহিনী (Standing Army) সর্বক্ষণ তৈরী থাকতে হবে৷ তাহলে প্রয়োজনের সময় সংগে সংগেই সামারিক পদক্ষেপ নেয়া সম্ভবপর হবে৷ এমন যেন না হয়, বিপদ মাথার ওপর এসে পড়ার পর হতবুদ্ধি হয়ে তাড়াতাড়ি স্বেচ্ছাসেবক, অস্ত্রশস্ত্র ও অন্যান্য রসদপত্র যোগাড় করার চেষ্টা করা হবে এবং এভাবে প্রস্তুতি পূর্ব সম্পন্ন হতে হতেই শত্রু তার কাজ শেষ করে ফেলবে৷
__________________________________
61) আর হে নবী! শত্রু যদি সন্ধিও শান্তির দিকে ঝুঁকে পড়ে, তাহলে তুমিও সেদিকে ঝুঁকে পড়ো এবং আল্লাহর প্রতি নির্ভর করো। নিশ্চয়ই তিনি সবকিছু শুনেন এবং জানেন।
__________________________________
62) যদি তারা তোমাকে প্রতারিত করতে চায় তাহলে তোমার জন্য আল্লাহ যথেষ্ট। **৪৫ তিনিই তো নিজের সাহায়তায় ও মুমিনদের মাধ্যমে তোমাকে সমর্থন জানিয়েছেন
__________________________________
**৪৫ . অর্থাৎ আন্তর্জাতিক বিষয়াদিতে তোমাদের কাপুরুষোচিত নীতি অবলম্বন করা উচিত নয়৷ বরং আল্লাহর ওপর ভরসা করে নির্ভীক ও সাহসী নীতি অবলম্বন করা উচিত৷ শত্রু সন্ধির কথা আলোচনা করতে চাইলে নিসংকোচে তার সাথে আলোচনার টেবিলে বসে যাবার জন্যে তৈরী থাকা প্রয়োজন৷ সে সদুদ্দেশ্যে সন্ধি করতে চায় না বরং বিশ্বাসঘাতকতা করতে চায়, এ অজুহাত দেখিয়ে তার সাথে আলোচনায় বসতে অস্বীকার করো না৷ কারোর নিয়তে নিশ্চিতভাবে জানা সম্ভবপর নয়৷ সে যদি সত্যিই সন্ধি করার নিয়তে করে থাকে তাহলে অনর্থক তার নিয়তের ব্যাপারে সন্ধিহান হয়ে রক্তপাতকে দীর্ঘায়িত করবে কেন? আর যদি বিশ্বাসঘাতকতা কারার নিয়তে করে থাকে তাহলে তোমাদের আল্লাহর ওপর ভরসা করে সাহসী হওয়া দরকার৷ সন্ধির জন্যে যে হাত এগিয়ে এসেছে তার জবাবে হাত বাড়িয়ে দাও৷ এর ফলে তোমাদের নৈতিক শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণিত হবে৷ আর যুদ্ধ করার জন্যে যে, হাত উঠবে নিজের তেজস্বী বাহু দিয়ে তাকে ভেংগে গুঁড়ো করে দাও৷ এভাবে সমুচিত জবাব দিতে পারলে কোন বিশ্বাসঘাতক জাতি আর তোমাদের ননীর পুতুল মনে করার দুঃসাহস দেখাবে না৷
__________________________________
63) এবং মুমিনদের অন্তর পরষ্পরের সাথে জুড়ে দিয়েছেন। তুমি সারা দুনিয়ার সমস্ত সম্পদ ব্যয় করলেও এদের অন্তর জোড়া দিতে পারতে না।কিন্তু আল্লাহ তাদের অন্তর জুড়ে দিয়েছেন। **৪৬ অবশ্যি তিনি বড়ই পরাক্রমশালী ও জ্ঞানী ।
__________________________________
**৪৬ . আরববাসীদের মধ্য থেকে যারা ঈমান এনেছিলেন তাদের মধ্যে যে ভ্রাতৃত্ব , স্নেহ , প্রীতি,ভালবাসা সৃস্টি করে মহান আল্লাহ তাদেরকে একটি শক্তিশালী দলে পরিণত করেছিলেন, এখানে সেদিকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে৷ অথচ এ দলের ব্যক্তিবর্গ বিভিন্ন গোত্র থেকে বের হয়ে এসেছিলেন৷ তাদের মধ্যে শত শত বছর থেকে শত্রুতা চলে আসছিল৷ বিশেষ করে আল্লাহর এ মেহেরবানী তো আওস ও খাযরাজের ব্যাপারে ছিল সবচেয়ে বেশী সুস্পস্ট৷ এ গোত্র দুটি মাত্র দুবছর আগেও পরস্পরের রক্তের পিয়াসী ছিল৷ইতিহাসখ্যাত বুআস যুদ্ধ শেষ হয়েছিল তখনো খুব বেশী দিন হয়নি৷ এ যুদ্ধে আওস খাযরাজাকে এবং খাযরাজ আওসকে যেন দুনিয়ার বুক থেকে নিশ্চিহ্ন করে দেবার জন্য মরণ পণ করেছিল৷এ ধরনের মারাত্মক পর্যায়ের শত্রুতাকে মাত্র দুতিন বছরের মধ্যে গভীর বন্ধুত্বে ও ভ্রাতৃত্বে পরিণত করা এবং এসব পরসপর বিরোধী অংশগুলোকে একত্র করে এমন একটি সীসা ঢালা প্রাচীরে পরিণত করা যেমন নবী (সা) এর যুগের ইসলামী দলটি-নিসন্দেহে সাধারণ মানবীয় শক্তির অসাধ্য ব্যাপার ছিল৷ অন্যদিকে পার্থিব উপকরণাদির সাহায্যে এত বড় মহান কার্য সম্পাদন সম্ভবপর ছিল না৷ কাজেই মহান আল্লাহ বলেন, আমরা সাহায্য ও সমর্থনের এ বিরাট সুফল যখন তোমরা লাভ করতে পেরেছো তখন আগামীতেও তোমাদের দৃষ্টি পার্থিব কার্যকরণের ওপর নয় বরং আল্লাহর সমর্থনের ওপর নিবন্ধ হওয়া উচিত৷ কারণ সবকিছুর সফলতা একমাত্র তাঁর মাধ্যমেই সম্ভব৷
__________________________________
64) হে নবী! তোমার জন্য ও তোমার অনুসারী ঈমানদারদের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট।
0 comments: