হজ্জ শব্দের আবিধানিক অর্থ হল ইচ্ছে করা, আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে কোরয়ান ও হাদিসের নিয়ম মোতাবেক নির্দিষ্ট সময়ে কাবা শরিফ এবং নির্দিষ্ট স্থান সমূহে তাওয়াফ ও জিয়ারত করাকে ইসলামের পরিভাষায় হজ্জ বলা হয়। হজ্জের ফরজ ৩টি: এহরাম বাধা, আরাফায় অবস্থান করা এবং তাওয়াফে যিয়ারত করা। আর হজ্জের ওয়াজিব হল ৬টি: মীনায় অবস্থান করা, মুজদালিফায় রাত্রী যাপন করা, মিনায় শয়তানের উপর পাথর মারা ও মাথা মুন্ডন, কোরবানী করা, সায়ী/ দৌড়নো এবং বিদায় তাওয়াফ করা।
হজ্জের উপরোক্ত ফরজ এবং ওয়াজিব কার্য সমূহ যাতে যথাযত এবং সুষ্ঠভাবে সম্পাদন করা যায় সেই জন্য প্রয়োজন সুষ্ঠ সুন্দর ব্যবস্থা সর্ম্পূন গাইড এবং প্রশিক্ষন। কারন হজ্জ সম্পাদন করতে হয় এমন একদেশে যার ভাষা আরবী, নূতন এলাকা, নূতন পরিবেশ, বিভিন্ন ভাষার লক্ষ লক্ষ মানুষের ভীর এর প্রতিটি কার্য যথাযথ ভাবে পালন করা সত্যিই কঠিন যদি না থাকে সুষ্ঠ ব্যবস্থা সর্ম্পূন একটি গাইড।
সঠিক টুর অপারেটর কিভাবে নির্ধারন করবেন: / সঠিক সাইড কিভাবে নির্বাচন করবেন:
এটি সবচাইতে টিক্রি পদক্ষেপ। কখনও কালারফুল লিফলেট, কম/স্বল্প খরচে হজ্জ অথবা খুব অল্প সময়ে হজ্জ করা যাবে এমন কথা-বাত্রা বা ইনফরমেশন যেখানে দেখবেন তা দেখে, কখনও সংগে সংগে ঐ হজ্জ অপারেটরকে সিলেকট করবেন না। কারন হল অনেক টুর অপারেটর/ হজ্জ গাইড প্রতিষ্টান অনেক কিছু প্রচার করে কিন্তু বাস্তবে তারা তা করেনা। এমনকি লাইসেন্সধারী টুর অপারেটরগনও সবকিছু থেকে উৎকৃষ্ট নয়, কারন অনেকের তেমন বাস্তব অভিজ্ঞতা কম। কখনও কোন টুর অপারেটরের বেশ জাকজমকপূর্ন অফিস দেখে আকৃষ্ট হবেন না।
সুতরাং সবচাইতে বুদ্ধিমানের কাজ হবে যে সমস্ত টুর গাইড সর্ম্পকে লোকজন জানে এবং আপনার পরিচিত লোকজনের মধ্যে দুই একজন তাদের মাধ্যমে হজ্জ করেছেন ঐসব টুর গাইড কে সিলেকট করুন। অনেক টুর গাইড রয়েছে যারা শুধু মাত্র অর্থ ইনকাম করা তাদের উদ্দেশ্য, তারা কোন সময় মনে করেন না যে হজ্জ একটি স্প্রেরিটুয়াল জার্নি। সুতরাং যেহেতু হজ্জ একটি স্পেরিটুয়াল জার্নি, তাই কোন টুর গাইড সিলেকট করার পূর্বে সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করুন টুর গাইড সম্পর্কে। যাতে করে আপনি পবিত্র মক্কা নগরীতে গিয়ে হজ্জের সব ফরজ ও ওয়াজেব কার্যসমূহ সঠিক এবং সুস্থভাবে সম্পাদন করতে পারেন।
নিম্নলিখিত প্রশ্নগুলো টুর অপারেটরকে করতে পারেন, (যদি আপনি ইতিপূর্বে হজ্জ না করে থাকেন) যাতে করে সঠিক ও নির্ভরশীল তথ্য আপনি পেতে পারেন ফলে হজ্জ করা আপনার জন্য সহজ হয়:
১. বিমানের ভাড়া কত? কোথা থেকে ফ্লাইট ছাড়বে? কোথায় লেন্ড করবে? কোন ফ্লাইটে আপনি ভ্রমন করবেন?- কারন অনেক সময় সরাসরি ফ্লাইট এর ভাড়া বেশী। আবার ইয়ারলাইন্স টু ইয়ার লাইন্স ভাড়া কম বেশী হয়। কোন সময় আবার জেদ্দা এয়ার পোর্টে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়।
২. কতিদন মক্কা এবং মদিনায় অতিবাহিত করতে হবে?
৩. কোন হোটেলে অবস্থান করবে? হোটেলের নাম কি? কত নম্বর ষ্টারের হোটেল। কোন কোন টুর অপারেটর বলে যে হোটেল হারাম শরীফ থেকে ৫ মিনিটের পথ( পায়ে হেটে) কিন্তু বাস্তবে তা সত্যি নয়, জিংগেস করে নিবেন যে ৫ মিনিটের রাস্তা কোন সময়? হজ্জ এর মৌসুমে না অন্য সময়? কারন হজ্জের মৌসুমে অন্যান্য মৌসুমের চাইতে ৩/৪ জন গুন বেশী সময় লাগে। যদি টুর অপারেটর হোটেলের নাম আপনাকে বলে তা হলে আপনি অন্য কোন লোককে জিংগেস করে নিবেন বা গুগল সার্স করে সঠিক দুরত্ব জেনে নিবেন। সুতরাং নিশ্চিত হবেন যে আজিজিয়া না, কারন সেটি হজ্জএর নন-মৌসুমে ১৫-২০ মিনিটের পথ, আর হজ্জের মৌসুমে ১ ঘন্টার পথ টেকসি যোগে।
৪. প্রতি রুমে কতজন থাকার ব্যবস্থা তারা করবে? প্রতিরুমে ৩ জন থাকা যায়, কিন্তু ৪ থেকে ৫ জন কিছুটা ক্রাউটি। আর একটি লক্ষনীয় বিষয় হল যে, নন-মাহরেমগন একই রুমে থাকতে পারবেন না। যদি কোন গ্রুপে নন-মাহরেম থাকেন তাহলে পুরুষ এবং নারীগন পৃথক রুমে থাকতে হবে।
৫. সর্বমোট কত খরচ? অনেক সময় দেখা যায় যে তারা লিফলেটে ভাড়া উল্লেখ করে শেষের দিকে আরও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে। অর্থাৎ শেষে তারা যাত্রী প্রতি ৫০০-৭০০ ডলার (ইউ,এস) বেশি চার্জ করে। সুতরাং যদি আপনার কাছ থেকে বেশী ভাড়া আদায় করে তবে আপনি ২ জনের রুমে থাকবেন, ভাল ফাইভ ষ্টার হোটেলে থাকবেন। আর উল্লখ করবেন যে এটিই শেষ ভাড়া এর পর আর কোন ক্রমে ভাড়া বাড়ানো সম্ভব নয়। কারন অনেক টুর অপরেটর আপনার ফ্লাইট ছাড়ার ২-৩ দিন সপ্তাহে বলে যে জন প্রতি আরও ৫০০ থেকে ১০০০ ডলার (ইউ,এস) বেশি ভাড়া দিতে হবে। তখন সময় খুব কম থাকে আপনার অন্য কোন চয়েজ থাকেনা, তারা বলবে যে, হোটেলর ভাড়া বেড়ে দিয়েছে, ইয়ার লাইনের অতিরিক্ত টেকস ধরেছে ইত্যাদি ইত্যাদি। সুতরাং সময় থাকতে টুর অপারেটর সিলেকট করুন যাদেরকে লোকজন চিনেন এবং যাদের ভাল রেকর্ড রয়েছে।
৬. কোন কারনবশত: যদি নির্ধারীত ফ্লাইট মিস হয় বা দেরী হয় তাহলে যেন অলটানেটিফ ফ্লাইট এর ব্যবস্থা যেন করে অথবা নির্ধারীত সময়ের ২৪ ঘন্টা আগে যেন জানিয়ে দেয়। কারন যদি মক্কা অথবা মদিনায় আপনী ১ দিন কম থাকেন তবে অনেক খরচ কমে, তাই অনেক টুর গাইড ২-১ দিন ফ্লাইট পিছিয়ে দেয়।
৭. খাবারের খরচ কি মোট খরচের সংগে সম্পৃক্ত? যদি তাই হয় তবে দিনে কত বার? সচরাচর নাস্তা এবং রাত্রের খাবারের ব্যবস্থা করে, সুতরাং কনর্ফাম হয়ে নিবেন, এই ব্যাপারে। এটি সব চাইতে ভাল যদি আপনার খাবারের বন্দোবস্ত টুর প্যাকেজের সংগে ইনক্লড থাকে। কারন হজ্জের সময় সব রেস্তারায় ভীড় থাকে। নিজে খেয়ে আবার ফিরে আসতে অনেক সময় সাপেক্ষ ব্যাপার।
অন্যান্য বিষয় সমূহ লক্ষ্যণীয়, যেমন:
ক) যত তাড়াতাড়ী সম্ভব ফ্লাইটের রিজারভেশান দিয়ে দিবেন, দেরীতে দিলে ভাল ফ্লাইট অপশান পাওয়া সম্ভব হয় না।
খ) মেনিনজাইটিস ভ্যাকসীন নিতে হবে, জন প্রতি ২০০ ডলার (ইউ,এস) ফি। কিছু ইন্সুরেন্স ফি কভার করে কিছু ইন্সুরেন্স করে না। তাই আপনার ইন্সুরেন্সর সংগে যোগাযোগ করে দেখবেন।
গ) যদি আপনী এবং আপনার স্ত্রীর শেষ নাম এক না হয় তাহলে আপনাকে ম্যারজ সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে। যদি কেহ নব মুসলিম হন অথবা কোন ব্যক্তির নাম অমুসলিম হয়, সেই ক্ষেত্রে স্থানীয় মসজিদের ঈমাম সাহেবের নিকট থেকে সার্টিফিকেট নিয়ে জমা দিতে হবে যে আপনি মুসলিম।
নিজস্ব প্রস্তুতি:
১/ শারিরীক ও মানসিক ভাবে প্রস্তুতি গ্রহন করবেন যাতে হজ্জ যথাযথ ভাবে পালন করতে পারেন।
২/ সকল প্রকার পদক্ষেপে টুর গাইডের উপর নির্ভর করবেন না। নিজে বই পড়ে, সিডি বা ভিডিও দেখ হজ্জর সব অনুষ্ঠানগুলো আয়ত্ব করে নিবেন।
৩/ হজ্জের পূর্বে সচরাচর অমরা করতে হয়, তাই কিভাবে অমরা পালন করতে হয় তা জেনে নেবেন। কারন আপনার টুর গাইড আপনার অমরা পালনের ক্ষেত্রে সাহায্য করবেনা।
সর্বশেষে এইটুকু বলতে চাই যে কখনও ব্যয় বহুল প্যাকেজ গ্রহন করবেন না। কারন বিলাশ এবং ব্যয়বহুল হজ্জ প্যাকেজে অনেক সট-কাট থাকে, যা ইসলামী শরিয়ার সংগে মিল খায় না। কিছু কিছু লোকে বলে যে সবচাইতে ভাল পদ্ধতি হল ১০ দিনের জন্য হজ্জে যাও এবং যতটুকু সম্ভব সবকিছু সংক্ষিপ্ত ভাবে পালন কর। কিন্তু সত্যিকার অর্থে তা ঠিক নয়। আসল কথা হল সঠিক এবং ইসলামী শরিয়া অনুযায়ী হজ্জ করতে যতদিন সময় লাগে সেই সব দিনেই হজ্জ করতে হবে। সুতরাং আল্লাপাক আমাদেরকে সঠিক টুর গাইডের মাধ্যমে আমাদের সকলকে সেই ধরনের হজ্জ পালন করার তৌফিক দেন যে হজ্জ আল্লাপাকের দরবারে মন্জুর করেন। আমিন।যোগাযোগ, ঠিকানা, ফোন নং, ই-মেইল, ফ্যাক্স, ওয়েব সকইট অন্যান্য
হজ্জ্ব ফরম সংগ্রহ ও বিস্তারিত তথ্যের জন্য স্বস্ব জেলার জেলা প্রশাসনের কার্যালয়। ইসলামিক ফাউন্ডেশন বিভাগীয়/ জেলা কার্যালয় এবং উপজেলা কার্যালয়। নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়সহ হজ্জ্ব অফিস, আশকোনা উত্তরা, ঢাকা এবং ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। যেমন-
উপ সচিব- ০২-৭১৬৩৬৭ (মোঃ জাহাঙ্গীর),
কর্মকর্তা- ৭১৬৪৮০৭ ও ৭১৬৪৮১৯।
সরকারী ব্যাবস্থানায় হজ্জযাত্রীগনের বিস্তারিত তথ্য জানার প্রয়োজন হলে ঢাকার হজ্জ্ব অফিস ০২-৭৯১২৩৯১ ও ৭৯১১৭১৩।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন আগারগাঁও- ৮১২৮০৬৮
হজ্জ্ব অফিস, আশকোনা, উত্তরা, ঢাকা- ০২-৮৯৫৮৪৬২, ০২-৭৯১২৩৯১ ও ০২-৮৯১৬৫৭৪।
হজ্জ্ব এজেন্সীজ এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ।
সাত্তার সেন্টার ৩০/এ, নয়াপল্টন ভি আই,পি রোড, ঢাকা- ১০০০।
ফোন- ০২-৮৩৫৭০৩০, ০২-৯৩৩৮৮৬৭ ও ০২-৯৩৩৮৮৬৮।
ফ্যাক্স ৮৮-০২৯৩৩৮৫২৬
ই-মেইল- haab01@yahoo.com. islamicfoundationbd@yahoo.com
ওয়েব সাইট www.islamicfoundation.org.bd, www.haab.bd.com, www.hajj.gov.bd
হজ্জ যাত্রীদের অবশ্যই পালনীয়
- নির্ধারিত আবেদনপত্র পূরন করে আন্তর্জাতিক পাসপোর্ট সহ অফিসে জমা দিতে হবে।
- ৫ কপি ষ্ট্যাম্প সাইজ ও ১১ কপি পাসপোর্ট সাইজ এর রঙিন ছবি জমা দিতে হবে।
- আন্তর্জাতিক পাসপোর্ট এর মেয়াদ কমপক্ষে ৬ মাস পর্যন্ত এবং ৩ পাতা অব্যবহৃত থাকতে হবে।
- হজ্জযাত্রী শারীরিকভাবে সুস্থ্য কিনা তা নিশ্চিত হতে হবে।
- হজ্জযাত্রীকে নিজ দায়িত্বে স্ব-স্ব জেলার সিভিল সার্জন এর সাথে এজেন্সী প্রদত্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ পূর্বক যোগাযোগ করে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও ম্যানেনজাইপিস্ টিকা গ্রহন করতঃ মেডিকেল কার্ড সংগ্রহ করে তা বাধ্যতামূলকভাবে এজিন্সীতে জমা দিতে হবে।
- মহিলা হজ্জযাত্রীর ক্ষেত্রে তার সাথে অবশ্যই একজন শরীয়ত সম্মত হজ্জযাত্রী তথা মাহরাম পুরুষ হজ্জে যেতে হবে। মাহরাম পুরুষের তালিকার জন্য এজেন্সীর সাথে যোগাযোগ করতে হবে।
- মোয়াল্লেম ফি ৭ বছর এর কম বয়সী বাচ্চার লাগবে না, ৭ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে অর্ধেক এবং ১৫ বছর এর ক্ষেত্রে সম্পূর্ন লাগবে।
- টিকেট খরচ ২ বছরের কম বয়সী বাচ্চার ১০%, ২ থেকে ১২ বছরের মধ্যে ৭৫% এবং ১২ বছর এর ক্ষেত্রে সম্পূর্ন লাগবে।
- মায়ের পাসর্পোট এর সাথে সংযুক্তভাবে ২ বছরের কম বয়সী বাচ্চাদের মায়ের পাসপোর্টই হবে এবং ভাড়া লাগবে না। ২ বছরের ক্ষেত্রে আলাদা পাসপোর্ট লাগবে এবং সম্পূর্ন বাড়ী ভাড়া লাগবে না।
- শিশু/বাচ্চাদের বয়সের হিসাব হজ্জ এর সফরের শেষ দিন পর্যন্ত হিসাব করতে হবে এবং বয়স হিসাব জন্ম নিবন্ধন সনদ এজেন্সীতে জমা দেয়া সাপেক্ষে প্রযোজ্য।
- সকল বয়সী বাচ্চার সম্পূর্ন এজেন্সী সার্ভিস চার্জ লাগবে।
সম্মানিত হজ্জযাত্রীদের সঙ্গে যেসব সামানাপত্র থাকা প্রয়োজন
- ২ সেট এহরামের কাপড়, ২টা লুঙ্গি, ১টা গামছা, ২টা পায়জামা, ২টা গেঞ্জি, ২টা আন্ডার প্যান্ট, ২টা পাঞ্জাবী বা জুব্বা, ১টা ফতোয়া, ২টা টুপি, ১ জোড়া চামড়ার স্যান্ডেল, এহরামকালীন সময়ে পরার স্পঞ্জের সেন্ডেল ১ জোড়া, মহিলাদের জন্য বোরকা ১ সেট, সেলোয়ার কামিজ ২ সেট, শাড়ী কাপড়, ওড়না ও প্রয়োজনীয় কাপড় ছোপড় (বর্ণিত কাপড়গুলো সুতি হলে ভাল হয়)।
- ১টা ছোট বালিশ, ১টা পাতলা কাঁথা, ২টা বিছানার চাদর।
- ১টা মেলামাইনের প্লেট, ১টা গ্লাস।
- ১/২ কেজি শুকনা চিড়া, পরিমানমত গুড় (প্রয়োজন মনে করলে) অথবা শুকনা খাবার, গায়ে দেওয়ার জন্য খাটি সরিষার তৈল, লোশন, পান, সুপারি, খয়ের (যদি অভ্যাস থাকে)।
- ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন সহ নিয়মিত সেবনের প্রয়োজনীয় ঔষধ পত্র (তরল/সিরাপ জাতীয় ঔষধ না নেয়া ভাল)।
- বড় ব্যাগ ১টা, কাঁধে ঝুলানোর জন্য ব্যাগ ১টা, টাকা পয়সা জরুরী কাগজপত্র, পাসপোর্ট টিকেট রাখার জন্য কোমরের বেল্ট ১টা, হারাম শরীফে জুতা সাথে নেয়ার জন্য ব্যাগ ১টা।
- টয়লেট পেপার ১টা, টুথ ব্রাশ ১টা, পেষ্ট ১টা, হুইল সাবান ২টা, গায়ে মাখা সাবান ১টা, চিরুনী ১টা, ছোট আয়না ১টা, রেজার ১টা, ব্লেড ১টা, কাঁচি ১টা, ভ্যাজলিন ১টা, সুই সুতা (প্রয়োজন মনে করলে), পকেট ডায়েরী ১টা, কলম ১টা, ফল কাটার জন্য ছোট চাকু ১টা, (তবে চাকু অবশ্য চামড়ার কাভারে আবৃত থাকতে হবে)।
- তেলাওয়াতের জন্য ছোট কুরআন শরীফ ১টা, হজ্জের মাসায়ালা-মাসায়েল সম্বলিত বই ১টা।
- প্লাষ্টিকের পানির ফ্ল্যাক্স ১টা, ওরস্যালাইন ১০/১৫ প্যাকেট, চোখে ব্যবহারের জন্য চশমা ১টা (যদি অভ্যাস থাকে)।
সরকারী ব্যাবস্থাপনা হজ্জ্ব খরচ
এ বছর সরকারী ব্যবস্থাপনায় হজ্জ্ব যাত্রীদের জন্য খাওয়া ও কোরবানী ব্যয় বাদে হাজী প্রতি মোট খরচ হবে- ২,৫৯,০৪২ টাকা। এছাড়া প্রত্যেক হজ্জ্বযাত্রীকে খাওয়া ও কোরবানী খরচ বাবদ আনুষ্ঠানিক ৩০,০০০ টাকার সমপরিমান ১,৫০০ (এক হাজার পাঁচশত) সৌদি রিয়াল কম/বেশী পৃথকভাবে নিজ দায়িত্বে নিতে হবে।
টাকা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ
৭ই জুলাই ২০১১ইং। উক্ত তারিখের পর কোন অবস্থাতেই হজ্জ্বের টাকা জমা নেয়া হবে না। আবেদন ফরম সঠিকভাবে পূরন করে স্ব-স্ব জেলা প্রশাসনের কার্যালয় অথবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে ১০ জুলাই ২০১১ইং তারিখের মধ্যে জমা/ দাখিল করতে হবে।
ফরম প্রাপ্তিস্থান
সরকারী ব্যবস্থাপনায় আবেদনে ফরম জেলা প্রশাসনের কার্যালয়/ ইসলামিক ফাউন্ডেশন জেলা ও বিভাগীয় কার্যালয়/ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় এবং হজ্জ্ব অফিস, আশকোনা, ঢাকা হতে সংগ্রহ করা যাবে। এ ছাড়াও ওয়েব সাইট www. hajjgov.bd থেকে অন লাইনে ফরম পুরন করে ডাউন লোড ও প্রিন্ট আউট নিয়ে স্বাক্ষর পূর্বক দাখিল করা যাবে।
হজ্জ্বের ব্যয় বাবদ উক্ত সমুদয় অর্থ নিম্নবর্নিত তফসিলী ব্যাংকের যে কোন শাখায় জমা দেয়ার ব্যবস্থা আছে।০১. সোনালী ব্যাংক লিঃ
০২. অগ্রনী ব্যাংক লিঃ
০৩. জনতা ব্যাংক লিঃ
০৪. রূপালী ব্যাংক লিঃ
০৫. পূবালী ব্যাংক লিঃ
০৬. বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক লিঃ
০৭. রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, রাজশাহী
০৮. ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিঃ
০৯. আল-আরাফা ইসলামী ব্যাংক লিঃ
১০. দি সিটি ব্যাংক লিঃ
১১. দি প্রিমিয়ার ব্যাংক লিঃ
১২. দি বেসিক ব্যাংক লিঃ
সরকারী ব্যবস্থাপনায় হজ্জ্ব পালনের সুযোগ সুবিধা
০১. সৌদি ভিসা প্রাপ্তি এবং পূর্ব নির্ধারিত ফ্লাইটে সরাসরি সৌদি আরবে আসা যাওয়া সহ হজ্জ করার প্রতিশ্রুতি।
০২. মক্কা ও মদিনায় মানসম্মত হোটেল/ বাড়িতে হজ্জযাত্রীগনের থাকার / আবাসনের ব্যবস্থা।
০৩. মক্কায় হেরেম শরীফ থেকে ৮০০ হতে ১৩০০ মিটার এবং মদীনায় রওজা শরীফ থেকে আনুষ্ঠানিক ২০০ হতে ৫০০ মিটারের মধ্যে হজ্জযাত্রীগনের থাকার ব্যবস্থা।
০৪. প্রতিটি কক্ষে সার্বক্ষনিক এসি, বিদ্যুৎ ও পানির ব্যবস্থা এবং রেফ্রিজারেটরের সুবিধা।
০৫. মক্কার বাড়িগুলোতে ৪ থেকে ৭ জনের হজ্জযাত্রীর জন্য একটি টয়লেট ও গোসলখানার ব্যবস্থা।
০৬. জামারা থেকে মিনার নিকটবর্তী স্থানে তাবুতে হজ্জ যাত্রীদের রেখে শয়তানকে পাথর মারার স্থানে নিয়ে যাওয়ার বিশেষ ব্যবস্থা।
০৭. হজ্জের আরাকান ও আহকাম সম্পর্কে নিবিড় প্রশিক্ষণ ও হজ্জ্ব সংক্রান্ত বই সরবরাহ।
০৮. সম্পূর্ন সরকারী খরচে অসুস্থ হাজীদের চিকিৎসা ও সেবার সু-ব্যবস্থা গ্রহণ।
০৯. নিজের পছন্দ ও চাহিদা মত রান্না করে বা যে কোন হোটেলে খাওয়ার সুযোগ।
১০. ৪৫ জন হজ্জ যাত্রীর সংগে ১ জন অভিজ্ঞ হজ্জ্ব গাইড সার্বক্ষণিক থাকার ব্যবস্থা।
১১. মক্কা ও মদিনার পৃথক বাড়িভাড়া কম হলে সরকারী হাজীদের বাড়ি ভাড়ার জমাকৃত অতিরিক্ত অর্থ ফেরত প্রদানের নিশ্চয়তা।
১২. মদীনা তাবুতে প্রতি হাজীদের জন্য ১ বর্গ মিটার জায়গা ব্যবস্থা
১৩. অনুমোদিত রুটে জেদ্দা- মক্কা, মদীনা- মীনা আরাফাহ-এ যাওয়া আসার জন্য পরিবহন সুবিধা।
১৪. আশকোনাস্থ হজ্জ্ব ক্যাম্পের ডরমেটরমীতে ফ্লাইট পূর্ব থাকার ব্যবস্থা।
১৫. ক্যাফেটেরিয়াতে নিচ খরচে খাবারের ব্যবস্থা।
১৬. প্রতি মার্কিন ডলার ৭৪,০০ টাকা এবং প্রতি সৌদি রিয়াল ২০,০০ টাকা হারে ধরা হয়েছে।
- হজ্জ ক্যাম্পে অবস্থান কালে হজ্জ্বের বিভিন্ন আরকান, আহকাম জরুরী বিষয়াদি সম্পর্কে অভিজ্ঞ প্রশিক্ষক দ্বারা ও অভিজ্ঞ ভিজ্যুয়াল মিডিয়ার মাধ্যমে হজ্জ্ব যাত্রীদেরকে তিনদিনের প্রশিক্ষন প্রদান করা হয়।
হজ্জ্ব যাত্রীদের করনীয়
হজ্জ্ব যাত্রীগন আন্তর্জাতিক পার্সপোর্ট সংগ্রহ করে অনুমোদিত হজ্জ্ব এজেন্সীর অথবা সরকারী ব্যবস্থাপনায় সৌদি দূতাবাস হতে ইস্যুকৃত ভিসার মাধ্যমে হজ্জ্বে গমন করবেন।
০১. সরকারী ব্যবস্থাপনায় হজ্জ্ব যাত্রীদের লাগেজের নাম, আন্তর্জাতিক পাসপোর্ট নম্বর ও মোয়াল্লেম নম্বর ইংরজীতে লেখা বাধ্যতা মূলক।
০২. মাহরাম ব্যতীত মহিলা হজ্জযাত্রী এককভাবে হজ্জে গমনের যোগ্য বিবেচিত হবেন না।
০৩. মহিলা হজ্জ যাত্রীগনকে মাহরামের সাথে সাথে একত্রে টাকা জমা দিতে হবে।
০৪. প্রত্যেক হজ্জ যাত্রীর জন্য স্বাস্থ্য পরীক্ষা, মেনিনজাইটিস ও ইনফ্লুয়েন্জা প্রতিষেধক টিকা গ্রহণ এবং স্বাস্থ্য সনদ, পুলিশ ছাড়পত্র গ্রহণ বাধ্যতা মূলক।
০৫. হজ্জ যাত্রীদের সৌদি আরবে অবস্থানকালে সর্বোচ্চ ৪৫ দিন হবে।
০৬. বিমান কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থা অনুযায়ী বিমানে কোন হজ্জযাত্রী সর্বোচ্চ ৩২ কেজির বেশি মালামাল বহন করতে পারবেনা।
০৭. রিজিস্টার্ড ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ব্যতীত কোন ঔষধ নিতে পারবেন না।
০৮. চাল, ডাল, শুটকী, গুড় ইত্যাদিসহ পচনশীল খাদ্যদ্রব্য যেমন- রান্না করা খাবার, তরকারী সবজি, ফলমুল, পান সুপারি ইত্যাদি সৌদি আরবে নিয়ে যাওয়া যাবে না।
০৯. ডায়াগনস্টিক হৃদরোগসহ কোন ক্লিনিক ডিজিজের রোগীরা প্রেসক্রিপশন সহ অতি অবশ্যই ৪৫ দিনের ঔষধ সঙ্গে নিয়ে যাবেন।
১০. প্রত্যেক হজ্জ যাত্রীকে বাধ্যতা মূলক ভাবে মেডিকেল তথ্য সম্বলিত আইডি কার্ড কব্জী বেল্ট বহন করতে হবে। আবেদন পত্রে মেডিক্যাল তথ্যাবলী যথাযথভাবে পুরণ বাধ্যতামূলক।
১১. হজ্জ্ব গমনেচ্ছু প্রত্যেক ব্যাক্তিকে হজ্জ্বের আবেদনের সাথে মহানগর জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ড কর্তৃক প্রদত্ত স্বাস্থ্য সনদ সংযুক্ত করতে হবে।
১২. প্রত্যেক হজ্জ্বযাত্রী ৫৬ সেঃমিঃ x ২৫ সেঃ মিঃ x ৪৫ সেঃ মিঃ আয়তনের মাত্র ১টি ব্যাগ/ লাগেজ সংগে নিতে পারবেন। উক্ত ব্যাগে/ লাগেজের গায়ে আয়তনের সামঞ্জস্য রেখে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার ছাপ থাকা উত্তম হবে। লাল সবুজ রংয়ের ব্যাগ হলেও চলবে। ব্যাগের গায়ে বাংলা ও ইংরেজীতে বড় অক্ষরে ‘বাংলাদেশ’ শব্দ লিখতে হবে।
১৩. সৌদি আরবে অবস্থান কালে বাসস্থানের বাইরে গেলে হজযাত্রীগণকে পরিচয়পত্র, মোয়াল্লেম কার্ড ও হোটলের কার্ড অবশ্যই সংঙ্গে রাখতে হবে।কোরবানী সংক্রান্ত তথ্যাবলী
প্রত্যেক হজ্জ্বযাত্রীকে অবশ্যই খাওয়া কোরবানী খরচ/দম বাবদ ৩০,০০০ টাকা সমপরিমান ১,৫০০ সৌদি রিয়াল পৃথকভাবে সংঙ্গে নিতে হবে। কুরবানী/ দম সৌদি আরবস্থ ইসলামী ডেভেলমেন্ট ব্যাংক এর মাধ্যমে প্রদান করাই শ্রেয় হবে। কোরবানী/দম এর টাকা ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকে জমা দেয়া সৌদি সরকার কর্তৃক একমাত্র স্বীকৃত ব্যবস্থা। অসুবিধা এড়ানোর জন্য ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক টাকা জমা দেয়াই উত্তম।
হজ্জ নিয়মাবলী
হজ্জ ইসলামের পঞ্চস্তম্বের একটি জরুরী স্তম্ব। সামর্থবানদের ওপর হজ্জ আদায় করা ফরজ। কেউ যদি হজ্জ ফরজ হওয়ার বিষয় মানতে অস্বীকার করে, সে কাফির হয়ে যাবে। হজ্জের নির্দেশ দিয়ে আল্লাহ তালা পবিত্র কুরআনে ইর্শাদ করেছেন, “বাইতুল্লাহ শরীফে পৌছিতে সামর্থবান লোকদের উপর আল্লাহর উদ্দেশ্য বায়তুল্লাহর হজ্জ আদায় করা কর্তব্য। কেউ যদি তা মানতে অস্বীকার করে, তাহলে (সে জেনে নিক) আল্লাহ সৃষ্টির প্রতি মুখাপেক্ষী নন।“(সুরা আল-ইমরান, আয়াতঃ ৯৭) তাই হজ্জ একটি গুরুত্তপুর্ন ইবাদত, যা আল্লাহর ঘর কাবাশরীফকে কেন্দ্র করে আরবী বছরের শেষ মাস অর্থাৎ জিলহজ্জ মাসে অনুস্টিত হয়। ইহা একটি আর্থিক ও শারীরিক ইবাদত। এ কারনে একমাত্র ধনী ও সুস্থ-সবল পুরুষ-মহিলাদের জন্য জীবনে একবার হজ্জ করা ফরজ।
তবে মহিলাদের সাথে মাহরাম (বিবাহ হারাম এমন পুরুষ) থাকা আবশ্যক।
হজ্জ আদায়কারীর জন্য হজ্জের প্রয়োজনীয় ফরজ, ওয়াজিব সহ যাবতীয় মাসাআলা মাসায়িল জেনে নেয়া একান্ত প্রয়োজন। ইহা সামনে রেখেই আমার এই ক্ষুদ্র প্রয়াস। বিস্তারিত জানার জন্য বিজ্ঞ উলামাদের শরনাপন্ন হওয়া জরুরী। তাছাড়া হজ্জের মত গুরুত্বপুর্ন সফর কোন যোগ্য আলেমের সাথে করা প্রয়োজন।
নবীয়ে কারীম (সঃ) ইরশাদ করেন, অনিবার্য প্রয়োজন অথবা অত্যাচারী শাসক কিংবা কঠিন রোগ যদি হজ্জ পালন করতে কাউকে বিরত না রাখে আর সে হজ্জ পালন না করেই মৃত্যুবরন করে, তার মৃত্যু যেন ইয়াহুদ নাসারার মৃত্যু। (দারিমী)
হুজুরে পাক (সঃ) আরো বলেন যে ব্যক্তি হজ্জ করে, এবং ইহাতে বাজে কথা বলেনা আর কোন গুনাহের কাজ করেনা, সে নিজের গুনাহ থেকে এমন ভাবে মুক্ত ও পবিত্র হয়ে ফিরে, যেন তার মা তাকে এখনই প্রসব করেছে। (বুখারী/মুসলিম)
হজ্জঃ
৯ই জিলহজ্জ উকুফে আরাফার পুর্বে হজ্জের ইহরাম বেঁধে ১৩ই জিলহজ্জ পর্যন্ত কয়েকটি বিশেষ আমল আদায় করার নামই হজ্জ।
উমরাহ্
ইহরাম অবস্থায় বায়তুল্লাহ শরীফের তওয়াফ এবং সাফা-মারওয়ার সাঈ (৭চক্কর) করার পর হলক (মাথা মুন্ডানো) করে ইহরাম মুক্ত হওয়ার নাম উমরাহ। হজ্জের ৫ দিন ছাড়া বছরের যে কোন সময়ে উমরাহ করা যায়।
হজ্জ ফরজ হওয়ার শর্তাবলী
(১) মুসলমান হওয়া। (২) বুদ্ধিসম্পন্ন ও বালেগ হওয়া। (৩) শারিরীক সামর্থ থাকা। (৪) আর্থিক সামর্থ থাকা।(হজ্জের খরছ বহন এবং পরিবারের বরন-পোষনের জন্য প্রয়োজনীয় সম্পত্তি) (৫) মহিলাদের সাথে হজ্জের পুরো সময়ে মাহরাম থাকা। (৬) যাতায়াতের রাস্তা নিরাপদ হওয়া। (৭) উল্লেখিত শর্ত পুরনে সক্ষম অবস্থায় যেকোন হিজ্জ মওসুম অতিক্রম করা।
হজ্জের ফরজ ৩টি
(১) ইহরাম বাধা। (২) উকুফে আরাফা করা।(৯ই জিলহজ্জ আরাফার ময়দানে অবস্থান) (৩) তওয়াফে যিয়ারত। (তওয়াফে ইফাদা)
হজ্জের ওয়াজিব ৬টি
(১) সাফা ও মারওয়া উভয় পাহাড়ের মধ্যবর্তী স্থানে সাত বার সাঈ করা।
(২) ৯ই জিলহজ্জ দিবাগত রাত্রে মিযদালিফায় অবস্থান করা।
(৩) মিনায় জামারাহ সমূহের উপর রমী’ অর্থাৎ কঙ্কর নিক্ষেফ করা।
(৪) হজ্জে কিরান বা হজ্জে তামাত্তো আদায়কারীর জন্য কোরবানী করা।
(৫) ইহরাম ভঙ্গ করার পর মাথার চুল ছাঁটা অথবা মুন্ডানো।
(৬) মক্কার বাহিরের লোকদের জনয বিদায়ী তওয়াফ করা।
হজ্জ ৩ প্রকার
(১) হজ্জে তামাত্তুঃ মীকাত থেকে ইহরাম বেঁধে উমরাহ করে হালাল হয়ে যাওয়া অতঃপর ৮ই জিলহজ্জ নতুন করে হজ্জের জন্য ইহরাম বাঁধা। অর্থাৎ উমরাহ এবং হজ্জ এর নিয়ত আলাদা ভাবে করা।
(২) হজ্জে কিরানঃ মীকাত থেকে ইহরাম বেঁধে একই ইহরামে উমরাহ ও হজ্জ করা। অর্থাৎ উমরাহ এবং হজ্জ এর নিয়ত এক সাথে করা।
(৩) হজ্জে ইফরাদঃ মীকাত থেকে শুধু মাত্র হজ্জের উদ্দেশ্যে ইহরাম বেঁধে হজ্জ করা। অর্থাৎ শুধুমাত্র হজ্জের নিয়ত করা।
উমরাহের বিবরণ
১) মীকাত থেকে উমরার নিয়ত করে ইহরামের কাপড় পরিধান করে তলবিয়া পড়বেন (পুরুষেরা জোরে জোরে আর মহিলাগন চুপে চুপে) “লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা-শারীকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মূলক, লা-শারীকা লাক’’
২) পবিত্র মক্কায় পৌছে সাত চক্কর কাবা শরীফের চারিদিকে তাওয়াফ করবেন। আল্লাহু আকবর বলে হাজারে আসোয়াদ থেকে তাওয়াফ শুরু করবেন পুনরায় হাজারে আসোয়াদের কাছে গিয়ে শেষ করবেন। তাওয়াফ কালীন সময়ে ইচ্ছামত শরীয়তসম্মত যিকর ও দোয়া পাঠ করবেন। দোয়া নিজের ভাষায় ও পড়তে পারেন। এভাবে সাত চক্কর সম্পন্ন করবেন। তাওয়াফ শেষ করে জমজমের পানি পান করবেন এবং মাকামে ইব্রাহীমের পিছনে দু রাকাত নামায পড়বেন।
৩) তারপর সাফা-মারোয়ায় সাঈ করবেন। সাফা থেকে মারওয়ায় এক চক্কর এবং মারওয়া থেকে সাফা পর্যন্ত এক চক্কর, এভাবে মারওয়াতে গিয়ে সাত চক্কর পুর্ন করবেন।
৪) সাঈ পুর্ন করে মাথার চুল মুন্ডাবেন অথবা ছোট করবেন।(মহিলাদের জন্য চুলের অগ্রভাগ এক ইঞ্চি পরিমাণ ছোট করা)
হজ্জের বিবরণ
১) হজ্জের নিয়ত করে ইহরামের কাপড় পরিধান করে তলবিয়া পড়বেন। (পুরুষেরা জোরে জোরে আর মহিলাগন চুপে চুপে) “লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা-শারীকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মূলক, লা-শারীকা লাক’’
২) ৮ই জিলহজ্জ মীনার দিকে রওয়ানা হবেন, সেখানে জোহুর, আছর, মাগরিব ও ইশা এবং ৯ই জিলহজ্জ ফজরের নামায পড়বেন।
৩) ৯ই জিলহজ্জ সুর্য্য উদয়ের পর মীনা থেকে আরাফাতের দিকে রওয়ানা হবেন। সেখানে পুর্ন তিন দিন অবস্থান করবেন, এবং বেশী বেশী করে দোয়া ও ইস্তিগফারে মশগুল থাকবেন। যোহরের সময় যোহরের নামায এবং আসরের সময় আছরের নামায কছর আদায় করবেন।
৪) সুর্য্য অস্ত যাওয়ার পর ধীরে ধীরে তলবিয়া পড়তে পড়তে মুযদালিফার উদ্দেশ্যে গমন করবেন। সেখানে পৌঁছে (ইশার সময়) মাগরীব ও ইশার নামায একত্রে পড়বেন এবং ইশার নামায কছর আদায় করবেন। রাত্রে মটরের দানার সমান ৪৯টি কংকর তুলে নিবেন।
৫) ১০ই জিলহজ্জ ফজর পড়ে সুর্য্য উদয় হওয়ার কিছু পুর্বে তলবিয়া পড়তে পড়তে মীনার দিকে যাত্রা করবেন এবং দুপুরের আগে জামারাতুল আকাবায় (বড় শয়তানের উপর) আল্লাহু আকবর বলে পর পর সাতটি কংকর নিক্ষেপ করবেন।(সুর্য্য উদয় থেকে দুপুরের পুর্ব পর্যন্ত কংকর নিক্ষেপ করা সুন্নত, দুপুরের পর থেকে সুর্য্যাস্ত পর্যন্ত কংকর নিক্ষেপ করা মুবাহ, এবং সুর্য্যাস্ত থেকে ফজর পর্যন্ত নিক্ষেপ করা মাকরুহ।
৬) তারপর কোরবানী করে মাথার চুল হলক (মুন্ডানো) অথবা ছোট করবেন (মহিলাদের জন্য চুলের অগ্রভাগ এক ইঞ্চি পরিমান ছোট করা।)
৭) তাপর মক্কায় এসে তাওয়াফে যিয়ারত (তাওয়াফে ইফাদা) করবেন।
৮) তারপর সাফা ও মারওয়ায় সাতবার সাঈ করবেন।
৯) ১০ই জিলহজ্জ তাওয়াফ এবং সাঈর পর মীনায় ফিরে আসবেন এবং সেখানে ১১ ও ১২ তারিখ দুপুরের পর তিনটি জামারায় আল্লাহু আঁকাবর বলে সাতটি করে কংকর(মোট ২১টি করে দুদিন) নিক্ষেপ করবেন। (প্রথমে ছোট শয়তান, তারপর মেঝ শয়তান এবং তারপর বড় শয়তান)
১০) হজ্জের কাজ সম্পন্ন করার পর নিজ দেশে প্রত্যাবর্তন করার আগে কাবা শরীফের তাওয়াফ করতে হবে। এই তাওয়াফের নাম তাওয়াফে বিদা বা বিদায়ী তাওয়াফ। তারপর মদীনা মুনাওয়ারার দিকে সফর করুন।
জিয়ারতে মদীনা মুনাওয়ারা
হযরত আব্দুল্লা বিন উমর (রাঃ) বর্ননা করেন, যে রাসুল (সঃ) বলেন, যে ব্যক্তি আমার কবর জিয়ারত করবে তার জন্য আমার শাফায়াত ওয়াজিব হয়ে যাবে।(দারকুত্নী)
হুজুরে পাক (সঃ) আরো বলেন, আমার কবর ও আমার মিম্বরের মধ্যখানে যে জায়গা আছে তা জান্নাতের বাগানসমূহের একটি বাগান এবং আমার মিম্বর আমার হাউজ (কাউছার) এর উপর অবস্থিত। (ছহিহাইন)
হাদিসে আছে আল্লাহ তা’লা একজামাত ফিরিস্তা সৃষ্টি করে রেখেছেন যাদের কাজ হচ্ছে, জিয়ারতের ইচ্ছা পোষণকারীর দুরুদের তুহফা হুজুর (সঃ) এর দরবারে পৌছে দেয়া। তার আরজ করেন যে, অমুকের সন্তান অমুক জিয়ারতে এসেছেন এবং এই তুহফা অগ্রে পাটিয়েছেন।(যাদুল্কুলুব)
আদব
আদব ও ভক্তি সহকারে মদিনাতুল মুনাওয়ারার দিকে সফর শুরু করুন। পাক পরিষ্কার হয়ে শান্ত, গম্ভীর্য, আদব ও সম্মানের সাথে দৃষ্টি নিছু করে মহান দরবারের দিকে রওয়ানা হবেন। মদিনা শরীফে বাবে জিব্রিল দিয়ে প্রবেশ করা উত্তম, অনুরুপ যে কোন দরজা প্রবেশ করতে পারবেন। প্রবেশকালে ‘’বিছমিল্লাহি ওয়াচ্ছালাতু ওয়াচ্ছালামু আলা রাসুলিল্লাহি পড়ে ডান পা ভিতরে রাখবেন। অতপর রিয়াজুল জান্নাতে গিয়ে দু রাকাত ‘তাহিয়াতুল মসজিদ’ নামাজ পড়ুন, যদি মকরুহ ওয়াক্ত নাহয়। অতঃপর খুব মহব্বতের সাথে হুজুর (সঃ) এর রওজায়ে আথহরের সামনে হাজির হয়ে কবরে জীবিত খেয়াল করে দুরুদ ও সালাম পেশ করুন।
কতিপয় মুবারক সংক্ষিপ্ত দুরুদ ও সালাম
আসসালাতু ওয়াচ্ছালামু আলাইকা ইয়া নাবীয়াল্লাহ
আসসালাতু আচ্ছালামু আলাইকা ইয়া হাবীবাল্লাহ
ইআসসালাতু আচ্ছালামু আলাইকা য়া খাইরি খালকিল্লাহ
আসসালাতু আচ্ছালামু আলাইকা ইয়া খাতামুল আম্বিয়া
আসসালাতু আচ্ছালামু আলাইকা ইয়া সাইয়েদিল আম্বিয়ায়ি ওয়াল মুরসালীন ওয়া রাহ্মাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ
তারপর হযরত আবু বকর (রাঃ), হযরত উমার (রাঃ), এর উপর সালাম পেশ করবেন। রওজায়ে আথহরের জিয়ারত বাদে জান্নাতুল বাকিতে প্রবেশ করে হযরত উসমান (রাঃ), আয়েশা (রাঃ), ফাতিমাতুজ জোহরা (রাঃ), সাহাবায়ে কেরাম ও হুজুরের অন্যান্য বিবি গনের কবর জিয়ারত করবেন।
হজ্জ ও উমরাহের সময় সহজ কিছু দোয়া সমূহ
(১) নিয়ত বাঁধার পর পড়ুনঃ
• লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারীকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মুল্ক, লা-শারিকা লাক।
(২) ইহরামের নামাযেরপরহাততুলেদোয়াকরুনএবংপড়ুনঃ
• আল্লাহুম্মাগ ফিরতুকা আওছাউ মিন জুনুবী ওয়া রাহমাতুকা, আরজা ইন্দি মিন আমালী।
অর্থঃ- হে আল্লাহ,তুমার ক্ষমা আমার গুনাহের চেয়ে অত্যন্ত প্রশস্ত এবং আমার আমলের চেয়ে তোমার রহমতের প্রতি আমি অধিক আশ্বস্ত। হে আল্লাহ আমি তুমার কাছে তওবা করছি, আমি গুনাহের দিকে কখনও ফিরে যাবনা।
(৩) এহরামের নিয়তঃ
• আল্লাহুম্মা ইন্নি উরীদুল উমরাতা ফাইয়াছ ছিরহা লী, ওয়া তাকাব্বালহা মিন্নি।
অর্থঃ- হে আল্লাহ আমি উমরাহ পালনের নিয়ত করছি। তা আমার জন্য সহজ করে দিন এবং কবুল করে নিন।
(৪) মসজিদে হারামে প্রবেশ করে এই দোয়া পড়ুনঃ
• আল্লাহুম্মাগ ফিরলী যুনুবী ওয়াফতাহলী আবোয়াবা রাহ্মাতিকা।
অর্থঃ- হে আল্লাহ,আমার সকল গুনাহ মাফ করুন, এবং আমার জন্য আপনার রহমতের দরওয়াজা সমুহ খুলে দিন।
(৫) তওয়াফ শুরুর পুর্বে এই দোয়া পড়ুনঃ (কালরেখারউপরদাঁড়িয়ে)
• আল্লাহুম্মা ইন্নি উরীদু তাওয়াফা বাইতিকাল হারামী ছব’আতা আশোয়াতিনলিল্লহি তা’য়ালা ফাইছছিরহুলী ওয়া তাকাব্বালহু মিন্নী।
অর্থঃ- হে আল্লাহ আমি তুমার বায়তুল হারামকে সাত চক্ষরে তোয়াফ করার ইচ্ছা করছি একমাত্র তুমার সন্তুষ্টি লাভের জন্য। আমার জন্য তা সহজ করে দিন।এবং কবুল করে নিন।
(৬) হাজরে আছওয়াদেচুমু দেয়ার সময় পড়ুনঃ (৮চক্ষরে আঁট বার)
• আল্লাহু আকবর লাইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াছছালাতু ওয়াছছালামু আলা রাসুলিল্লাহি।
(৭)হাজরে আছোয়াদও রুকনেইয়ামানীর মধ্যখানেরদোয়া সমূহঃ
• সুবহানাল্লাহি ওয়ালহামদুলিল্লাহি ওয়া লাইলাহা, ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার,ওয়ালাহাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লাবিল্লাহি।
লাইলাহা ইল্লা আন্তা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ যোয়ালিমীন।
অর্থঃ- আল্লাহ পবিত্র এবং সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য, আল্লাহ ছাড়া ইবাদতের কেউ নেই। আল্লাহ তালা সব ছেয়ে মহান। ভাল কাজ করার শক্তি এবং মন্দ কাজ থেকে বেচে থাকার সামর্থ্য আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়।
হে আল্লাহ, তুমি ছাড়া কোন মাবুদ নাই, তুমি পবিত্র, নিশ্চয় আমি অত্যাচারকারীদের অন্তর্ভুক্ত।
• আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন, তুহিব্বুল আফউয়া, ফা’ফু আন্নী।
অর্থঃ- হে আল্লাহ, নিশ্চয় আপনি অত্যান্ত ক্ষমাশীল, ক্ষমা করাকে পছন্দ কর,আপনি আমাকে ক্ষমা করুন।
• রাব্বিগ ফিরলী ওয়াতুব আলাইয়্যা ইন্নাকা আন্তাত তাওয়াবুর রাহীম।
অর্থঃ- হে আমার প্রতিপালক, আপনি আমাকে ক্ষমা করুন, এবং আমার তওবা কবুল করুন। নিশ্চয় আপনি তওবা গ্রহনকারি দয়ালু।
• আছতাগ ফিরুল্লাহাল লাজি লাইলাহা ইল্লাহুয়াল হাইয়ুল কাইয়ুমু ওয়াতুবু ইলাইহি,
আল্লাহুম্মা ইন্নী আসআলুকা রিজাকা ওয়াল জান্নাতা ওয়া আউজু বিকা মিন গাজাবিকা ওয়ান্নারি।
অর্থঃ- হে আল্লাহ, আমি তুমার কাছে তুমার সন্তুষ্টি ও জান্নাত চাচ্ছি। এবং তুমার অসন্তুষ্টি ও দোজখ থেকে পানাহ চাচ্ছি।
• রাব্বানা আতিনা ফিদ্দোনিয়া হাসানা, ওয়াফিল আখিরাতি হাসানা, ওয়াকিনা আজাবান্নারি। ওয়া আদখিলনাল জান্নাতা মা’আল আব্রারি। ইয়া আজিজু ইয়া গাফফারু, ইয়া রাব্বাল আলামীন।
অর্থঃ- হে আল্লাহ আপনি আমাদেরকে দুনিয়াতেও কল্যাণ দান করুন ও পরকালের কল্যাণ দান করুন। এবং আমাদেরকে জাহান্নামের আযাব থেকে রক্ষা করুন। পুণ্যবানদের সাথে আমাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করান। হে মহা সম্মানী, হে মহা ক্ষমাকারি, হে সমস্ত জাহানের পালনকর্তা।
(৮) জমজমের পানি পান করার সময় এই দোয়া পড়বেনঃ
• আল্লাহুম্মা ইন্নী আসাআলুকা ইলমান নাফিয়া, ওয়া রিজকান ওয়াসিয়া, ওয়া আমালান সোয়ালিহা, ওয়া শিফাআম মিন কুল্লি দায়িন।
হে আল্লাহ, আমি তুমার কাছে উপকারী জ্ঞান, প্রশস্ত রিজিক, নেক আমল, এবং প্রত্যেক রুগ থেকে আরুগ্যতা চাচ্ছি।
(৯) সাফা পাহাড় আরোহণ কালে এই দোয়া পড়বেনঃ
• আব্দাউ বিমা বাদাআল্লাহু তাআলা বিহি ইন্নাস সাফা ওয়াল মারোয়াতা মিন শাআইরিল্লাহি।
অর্থঃ- আমি এই জায়গা থেকে সাঈ আরম্ভ করছি, যার উল্ল্যেখ আল্লাহ তালা প্রথমে করেছেন, নিশ্চয় সাফা এবং মারওয়া আল্লাহ তালার নিদর্শন সমূহের অন্ত্ররভুক্ত।
(১০) সাফা-মারোয়ার সাঈর নিয়তঃ
• আল্লাহুম্মা ইন্নী উরীদুছ সাঈয়া বাইনাসসাফা ওয়াল মারোয়াতি সাব’আতা আসোয়াতিন লিল্লাহি তালা ফাইছছিরহু লী ওয়া তাকাব্বালহু মিন্নী।
অর্থঃ- হে আল্লাহ, আমি সাফা ও মারোয়ার মধ্যখানে সাত চক্ষরে সাঈ করার নিয়ত করছি একমাত্র তুমার সন্তুষ্টি লাভের জন্য, আমার জন্য তা সহজ করে দিন এবং কবুল করে নিন।
(১১) সাঈ এর সময় সবুজ দুটি স্তম্বের মধ্যখানে এই দূয়া পড়বেনঃ
• রাব্বিগ ফির ওয়ারহাম ইন্নকা আন্তাল আআজ্জুল আকরাম।
অর্থঃ- হে প্রতিপালক, আপনি আমাকে ক্ষমা করুন ও দয়া করুন। নিশ্চয় আপনি সকলের উপর ক্ষমতাশীল ও সবচেয়ে বেশী সম্মানী।
(১২) আরাফার মাঠে, মীনায়, মুযদালিফায় ও চলতে ফিরতে সব সময় এই তাছবিহ গুলো পড়বেনঃ
• আল্লাহু আকবর আল্লাহু আকবার লাইলাহা ইল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ।
**সুবহানাল্লাহ, **আলহামদুলিল্লাহ, **লাইলাহা ইল্লাল্লাহ, **আল্লাহু আকবার।
**আস্তাফিরুল্লাহাল লাজি লাইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়ুল কাইকুমু ওয়াতুবু ইলাইহি।
এক নজরে হজ্জ ও উমরাহের কয়েকটি পরিভাষা এবং বিশেষ স্থান সমূহঃ
১) ইহরামঃ এর অর্থ হারাম করা। হজ্জ ও উমরাহের নিয়ত করে তল্বিয়া পাঠ করার পর কতিপয় হালাল বস্তু তাদের উপর হারাম হয়ে যায়। এজন্য তাকে ইহ্রাম বলে।
২) তলবিয়াঃ লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক——-পুরোটার নাম তলবিয়া।
৩) মীকাতঃ যেখান থেকে হজ্জ ও উমরার ইহরাম বাঁধা হয়।
৪) হারামঃ মক্কা মদিনার চারদিকের বেশ দূর পর্যন্ত এলাকাকে হারাম বলা হয়। এর ভিতরে স্থলজ প্রাণী শিকার করা, বৃক্ষ কাটা, পশুকে ঘাস খাওয়ানো হারাম।
৫) তোয়াফঃ বিশেষ পদ্ধতিতে কাবা ঘরের চারিদিকে প্রদক্ষিন করা।
৬) রমলঃ তওয়াফের প্রথম তিন চক্কর বীরের ন্যায় সাহসের সাথে বুক ফুলিয়ে কাঁধ দুলিয়ে চলা।
৭) ইজতেবাঃ ইহরামের চাদর ডান বগলের নিচের দিক থেকে পেছিয়ে এনে বাম কাঁধের উপর রাখা। তবে নামাযের সময় কাঁধ ঢেকে নামায পড়তে হয়।
8) জামারাতঃ মীনায় অবস্থিত তিনটি স্তম্ব যেগুলোকে পরুক্ষ ভাবে শয়তান বলা হয়।
১০) রমীঃ কঙ্কর নিক্ষেপ করা।
১১) হাজারে আসোয়াদঃ কাবা শরীফের পর্ব দক্ষিন কোনে স্থাপিত কালো পাথর।
১২) মাকামে ইব্রাহীমঃ যেখানে একটি বেহেস্তী পাথর রাখা আছে, যে পাথরের উপর দাঁড়িয়ে হযরত ইব্রাহীম (আঃ) ক্বাবা ঘর মেরামত করেছিলেন।
১৩) মাথাফঃ ক্বাবা ঘরের চতুর্দিকের খোলা জায়গা, যেখানে তোয়াফ করা হয়।
১৪) উকুফে আরাফাঃ ৯ই জিলহজ্জ আরাফার মাঠে আবস্থান করা।
১৫) জাবালে রহমতঃ আরাফার একটি পাহাড় যেখানে দাড়িয়ে হুজুর (সঃ) বিদায় হজ্জের ভাষণ দিয়েছিলেন।
১৬) মসজিদে খায়েফঃ মীনায় অবস্থিত মসজিদ যেখানে ৭০ জন নবী নামায আদায় করেছিলেন।
১৭) মসজিদে নামিরাঃ আরাফার মসজিদ।
১৮) মসজিদে তানঈম বা মসজিদে আয়িশাঃ মক্কার কাছে অবস্থিত মসজিদ যেটাকে উমরা মসজিদও বলা হয়। যেখান থেকে উমরাহের ইহরাম বাধা হয়।
১৯) জান্নাতুল মুওয়াল্লাহঃ মক্কা শরীফের নির্দৃস্ট বতকত্ময় কবরস্থান।
২০) জান্নাতুল বাকীঃ মদীনা শরীফের নির্দৃস্ট বরকত্ময় কবরস্থান।
২১) মসজিদে কুবাঃ মদিনা শরীফে অবস্থিত ইসলামের প্রথম মসজিদ।
২২) মসজিদে কিবলাতাইনঃ মদিনা শরীফের যে মসজিদে নবী করীম (সঃ) মসজিদে আকসার দিকে মুখ করে যোহরের নামায পড়া অবস্থায় কাবা শরীফের প্রতি মুখ ফিরিয়েছিলেন।
২৩) মসজিদে ঘামামাহঃ মদিনা শরীফের দক্ষিন পশ্চিম কোনে অবস্থিত মসজিদ যে খানে রাসুল (সঃ) ঈদের নামায পড়তেন।
ইহরাম অবস্থায় যা করা নিষেধ
(১) চুলকাঁটা, কামানো বা ছিঁড়ে ফেলা।
(২) নখ কাটা বা ছিঁড়ে ফেলা।
(৩) মাথায় ও দাড়িতে এমন ভাবে হাত বোলানো, যাতে চুল ছিঁড়ে যায় বা পড়ে যায়।
(৪) গোসলে বা কাপড় কাঁচায় সুগন্ধি সাবান ব্যবহার করা।
(৫) কোন প্রকার সুগন্ধি তৈল, আতর, ক্রীম ইত্যাদি ব্যাবহার করা।
(৬) গুমন্ত বা জাগ্রত অবস্থায় ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছায় মাথা ও চেহারা ঢাকা।
(৭) এমন জুতা পরিধান করা যাতে পায়ের মধ্যবর্তী উঁচু হাড় ঢাকা পড়ে যায়। এজন্য দুই ফিতা বিশিষ্ট স্যান্ডেল পরিধান করা।
0 comments: