অধ্যায় ০১ : আইয়ামে জাহিলিয়াত

আদম (আ) থেকে শুরু করে বহু নবীর কর্মক্ষেত্রে ছিলো আরব দেশ। কালক্রমে আরবের লোকেরা নবীদের শেকানো জীবন বিধান ভূরে যায়। তাদের আকীদা বিশ্বাসে ঢুকে পড়ে বিকৃতি।
তারা আল্লাহকে সব চাইতে বড় খোদা বলে স্বীকার করতো। কিন্তু বাস্তব জীবনে তারা নিজেদের মনগড়া ছোটখাটো খোদাগুলোর পূজা উপাসনাই করতো। তারা বিশ্বাস করতো যে মানুষের জীবনে এই সব খোদারই প্রভাব বেশী।
তারা এইসব মনগড়া খোদার নামেই মানত ও কুরবানী করতো। এদের কাছেই নিজেদের বাসনা পূরণের জন্য মুনাজাত করতো। তারা বিশ্বাস করতো, এই সব ছোটখাটো খোদাকে সন্তষ্ট করলেই আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হবেন। তারা ফিরিশতাদেরকে আল্লাহর কন্যা মনে করতো। জিনদেরকে আল্লাহর ক্ষমতা ইখতিয়ারের শরীক মনে করতো। যেই সব শক্তিকে তারা আল্লাহর শরীক মনে করতো সেই সবের মূর্তি বানিয়ে তারা পূজা করতো।
ঈমানী বিকৃতির সাথে সাথে পারষ্পরিক ঝগড়-বিবাদ আরবদের মধ্যে একটা সাধারণ ব্যাপারে পরিণত হয়েছিলো।
সুদী কারবার, লুটপাট, চুরি-ডাকাতি, নরহত্যা, জুয়াখেলা, নাচগান, মদপান, যিনা এবং জাতীয় বহু দুষ্কর্ম তাদেরকে প্রায় পশুতে পরিণত করেছিলো। তাদের বেহায়াপনা এতো চরমে উঠেছিলো যে নারী ও পুরুষ উলংগ হয়ে কাবার চারিদিকে তাওয়াফ করতো।
কন্যা সন্তানকে তারা জীবন্ত কবর দিতো। সেই সমাজে শ্রমজীবীরা ছিলো ক্রীতদাস। গোত্রের সরদারদের খেয়ালখুশীই ছিলো আইন।
পাশ্ববর্তী ইরান সাম্রাজ্য তখন আগুনের পূজা হতো। দিন-রাত আগুন জ্বালিয়ে রেখে লোকেরা তার চারদিকে জড়ো হয়ে সিজদা করতো। বিশাল রোম-সাম্রাজ্যে তখন খৃস্টবাদ প্রতিষ্ঠিত ছিলো। এই মতবাদে বিশ্বাসী লোকেরা মারইয়ামকে (রা) আল্লাহরকে স্ত্রীএবং ঈসাকে (আ) আল্লাহর পুত্র মনে করতো।
ইয়াহুদী ধর্মীয় নেতারা আল্লাহ-প্রদত্ত কিতাব বিকৃত করে সাধারণ মানুষকে ধোঁকা দিয়ে নিজেদের স্বার্থোদ্ধার করতো।
বিভ্রান্তি, বিকৃতি, শোষণ, নিপীড়ন, পাপাচার ও অপসংস্কৃতির এই যুগকেই বলা হয় আইয়ামে জাহিলিয়াত।

0 comments:

Comment Please

মন্তব্য..

সবিস্তার সূচীপত্র
টেম্পলেট কাষ্টমাইজেশন - তরঙ্গ ইসলাম | তরঙ্গ ইসলাম