তাবুক যুদ্ধ
হিজরী নবম সন। রজব মাস। রোম-সম্রাট আবার সিরিয়া সীমান্তে সৈন্য মোতায়ন করেন। খবর পেয়ে আল্লাহর রাসূল (সা) যুদ্ধাভিযানের প্রস্তুতি শরু করেন। গ্রীষ্মকাল। প্রচন্ড গরম। দেশে খাদ্যাভাব। ফসল সবেমাত্র পাকতে শুরু করেন। দূরত্ব ছিলো অনেক। মুকাবিলা ছিলো বিশাল বাহিনীর সংগে।
মুসলিমরা যুদ্ধের জন্য তৈরী হন। নানা অজুহাত দেখিয়ে যুদ্ধ যাত্রা থেকে বিরত থাকে মুনাফিকরা। রজব মাসের খররোদ উপেক্ষা করে ৩০ হাজার যোদ্ধা নিয়ে আল্লাহর রাসূল (সা) রওয়ানা হন। লক্ষ লক্ষ রোমান সৈন্য তখন অপেক্ষামান।
রোম সম্রাট হিরাক্লিয়াস নিজে সেখানে উপস্থিত। ৩০ হাজার সৈন্য নিয়ে এবার মুহাম্মাদ (সা) নিজেই আসছেন, এই খবর গেলো তাঁর কাছে। এক বছর আগে তিন হাজার মুসলিম সেনা দুলাখ রোমান সেনার কিভাবে মুকাবিলা কে তাও তাঁর মনে উদিত হয়। ভাবনা পড়ে যান রোম সম্রাট। যথা সময়ে মুসলিম বাহিনী তাবুকে পৌঁছে। কিন্তু শত্রু সেনাদের কোন চিহ্ন দেখা গেলো না। জানা গেলো সবদিক ভেবে রোম সম্রাট সৈন্য প্রত্যাহার করে নেয়াই উত্তম মনে করেছেন। আল্লাহর রাসূল (সা) তাবুকে দশ দিন অবস্থান করেন।সীমান্ত অঞ্চলে শাসন-শৃংখলা সুসংহত করেন। এর পর মদীনায় ফিরে আসেন।
মুনাফিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ
তাবুক থেকে ফেরার পথে নাযিল হয় সূরা আত তাওবা।
এখন থেকে মুনাফিকদের প্রতি কি আচরণ করতে হবে এই সূরার একাংশে আল্লাহ তা বলে দেন।
যাদেরকে পেছনে থাকার অনুমতি দেয়া হয়েছিলো তারা আল্লাহর সংগে না যাওয়ার ও ঘরে বসে থাকতে পারায় খুব খুশী হয় এবং আল্লাহর পথে জীবন ও সম্পদ নিয়োজিত করে জিহাদ করা তাদের সহ্য হলো না। তারা লোকদের বললো, এই কঠিন গরমে বের হয়ো না। এদের যদি একটুও চেতনা হতো। এখন তাদের উচিত কম হাসা ও বেশী কাঁদা। কেননা, তার যেই পাপ উপার্জন করেছে তার শাস্তি এই।
আল্লাহ যদি তাদের মধ্যে তোমাকে ফিরিয়ে আনেন ও ভবিষ্যতে এদের কোন দল যদি তোমার নিকট জিহাদে শরীক হবার অনুমতি চায় তাহলে পরিষ্কার বলে দেবে, এখন তোমরা আমার আমার সাথে যেতে পারবে না। না আমার সাথে মিলে শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারবে। পূর্বে তোমরা ঘরে বসে থাকা পছন্দ করেছো, এখনও ঘরে বসে থাকা লোকদের মধ্যেই থাক।
আর তাদের কেউ মারা গেলে তুমি জানাযা জড়বে না, তার কবরের পাশেও দাঁড়াবে না। কেননা তারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সাথে কুফরী করেছে ও ফাসিক অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেছে। সূরা আত তাওবা : ৮১-৮২
মুনাফিকরা মাদীনার উপকন্ঠে একটি মসজিদ নির্মাণ করেছিলো। সেখানে বসে তারা মুসলিমদের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করতো।
যারা ক্ষতিসাধনের মানসে, কুফরের প্রসারকল্পে, মুমিনদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির আশায় একটি মসজিদ নির্মাণ করেছে- উদ্দেশ্য, যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে তাদের জন্য তা হবে মন্ত্রণালয়। তারা শপথ করে বলে যে, আমরা নেক উদ্দেশ্যেই তা নির্মাণ করেছি। আল্লাহ সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে তারা মিথ্যাবাদী। সূরা আত তাওবা : ১০৭
আল্লাহর রাসূলের (সা) নির্দেশ মুনাফিকদের এই মসজিদ ভেঙ্গে ফেলা হয়।
অধ্যায় ১৭ : তাবুক যুদ্ধ
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
রিসেন্ট ব্লগ পোষ্টস
বিষয়শ্রেণী
রাইটার
প্রিয়-ক্লিক
কিছু বই
- অরক্ষিত স্বাধীনতাই পরাধীনতা
- অর্থনীতিতে রাসূল (সা) এর দশ দফা
- আদর্শ মানব মুহাম্মদ (সা)
- আসহাবে রাসূলের জীবনকথা
- ইসলাম ও জিহাদ
- ইসলাম পরিচিতি
- ইসলামী আন্দোলন : সাফল্যের শর্তাবলী
- ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের পারস্পরিক সম্পর্ক
- ইসলামী আন্দোলনের নৈতিক ভিত্তি
- ইসলামী দাওয়াত ও কর্মনীতি
- ইসলামী নেতৃত্বের গুণাবলী
- ইসলামী বিপ্লবের পথ
- ইসলামী রেনেসাঁ আন্দোলন
- ইসলামী সমাজে মজুরের অধিকার
- একটি আদর্শবাদী দলের পতনের কারণঃ তার থেকে বাঁচার উপায়
- চরিত্র গঠনের মৌলিক উপাদান
- দায়ী’ ইলাল্লাহ - দা’ওয়াত ইলাল্লাহ
- নামাজ কেন আজ ব্যর্থ হচ্ছে
- নামায-রোজার হাকীকত
- মোরা বড় হতে চাই
- যাকাতের হাকীকত
- রাসূলুল্লাহর বিপ্লবী জীবন
- শাহ ওয়ালিউল্লাহ দেহলভী ও তাঁর চিন্তাধারা
- সত্যের সাক্ষ্য
- হেদায়াত
0 comments: