ইউটিউব লিঙ্ক → (দ্য ব্ল্যাক)
ইউটিউব থেকে সহজে ডাউনলোড করতে হলে কিপভিড.কম ওয়েবে চলে যান এবং লিঙ্কটি ডাউনলোড বক্সে পেস্ট করে ডাউনলোড বাটন ক্লিক করুন। ব্রাউজার জাভা এনাবল করতে বলতে পারে, করে নিন।
যদি ইউটিউব ওপেন না হয় তাহলে ডাউনলোড করুন থেকে → (মিডিয়াফায়ার লিঙ্ক)
রিভিউটি যুলকারনাইনের লেখা থেকে নেয়া হলো
“The Black-Horor & Comedy” লেখা পোস্টারে থাকলেও ফিল্মটা আসলে আগাগোড়াই রাজনৈতিক। বাংলাদেশে এর আগেও রাজনৈতিক ফিল্ম তৈরি হয়েছে, যেমন- জহির রায়হানের জীবন থেকে নেয়া (১৯৭০), আলমগীর কবীরের সীমানা পেরিয়ে (১৯৭৭), ১৯৭৩ সালে নির্মিত আলমগীর কুমকুমের আমার জন্মভূমি ও খান আতার আবার তোরা মানুষ হ ,মোহাম্মদ আলীর বাংলার ২৪ বছর ও কার হাসি কে হাসে ইত্যাদী।
জঙ্গা ও মঙ্গা দুই ভাই। ক্ষমতার লোভে দুজনেই অন্ধ। যদিও ক্ষমতা জঙ্গার হাতে তবুও জঙ্গা মঙ্গাকে কানাকড়িরও ভাগ দিতে চায় না। আর ওদিকে মঙ্গা জঙ্গাকে খুন করে হলেও ক্ষমতা হাত করতে চায়। ক্ষমতার লোভে মঙ্গা জঙ্গাকে মারার চেষ্টায় নানা ফন্দি ফিকির করে আর জঙ্গা ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করতে বিরোধী সকল কন্ঠস্বরকে চিরতরে বন্ধ করে দেয়। অনেকাংশে রুপক এই কাহিনীর বর্ণনার গতিপথ দুই ভাইয়ের দ্বন্দ্বের দিকে না এগিয়ে চিত্রনাট্যে দিক পরিবর্তন করে। ক্ষমতার দ্বন্দ্বটা উহ্য হয়ে যায় বিরোধী কন্ঠস্বর রোধে জঙ্গার কর্মকান্ডে।
একদিন জঙ্গার কাছে খবর আসে মঙ্গা ইলিয়াছকে গুম করেছে, জঙ্গা নির্দেশ দেয় যা হয়েছে ভাল হয়েছে তবে মঙ্গা যেন আর কিছুই করতে না পারে। চারিদিকে শোর পড়ে যায় ইলিয়াছকে নিয়ে গেছে। জঙ্গার লোকেরা চারিদিকে লুটপাটে ব্যস্ত,দোকানে আগুন দেয়,রফিকের বাপের দোকান লুট করে। জঙ্গা ঘুরতে বের হয়ে চাষী ফকিরের মেয়ে শান্তিকে দেখে বিবাহ করবে বলে ঠিক করে। জঙ্গার অনৈতিক কাজে বাধা হবে বলে মুন্সি বাড়ীর লোকেরা সব জঙ্গার টর্চার হোমে;তাই চাষী ফকির করণীয় ঠিক করতে আসে আনোয়ার হোসেন বা রফিকের বাবার কাছে। চাষী ফকিরের সব টাকা লুট করা জঙ্গা এখন তার ছোট মেয়ে শান্তিকে যেন বিয়ে করতে না পারে তাই রফিকের বাপের নেতৃত্বে সবাই এক হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু জঙ্গার লোকেরা জানতে পেরে রফিকের বাপকে গ্রেফতার করে ইতিহাসের মামলায়।
রফিকের বাপের বিচার শুরু হয় জঙ্গার শালিস কেন্দ্রে। বুঝতে বাকি থাকে না বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটকে কেন্দ্র করে নির্মিত এই ফিল্ম। ফিল্মের শুরু হয় মঙ্গার ডায়ালগ দিয়ে, “এইটা আর নতুন কি ?? চোরের ব্যাটা তো চোরই হইব,আমার বাপ যে কত বড় চোর ছিল তা আমি জানি। তবে আমার বাপের একটা সমস্যা আছিলো, চুরি কইরা হিসাব মিলাইতে পারতো না। তিন লাখ কইতে যাইয়া তিরিশ লাখ কইয়া ফেলাইলো !! পরে গুইন্ন্যা বাইচ্ছা হাজারও মিলাইতে পারে না”। ফিল্মের শুরুতেই এই ডায়ালগ আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে,উসকে দেয় “তিরিশের তেলেসমাতি-জহুরী” ও “শর্মিলা বসুর ডেড রেকনিং:মেমরিস অব দি বাংলাদেশ ওয়ার” কেন্দ্রিক সৃষ্ট বিতর্ককে। অনেকের হয়তো মনে থাকবে শর্মিলা বসুর বইটি নিয়ে ইংল্যান্ডের প্রভাবশালী গার্ডিয়ান পত্রিকায় ইয়ান জ্যাকের একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। এখানে ওই প্রতিবেদনের শুরুতেই ইয়ান জ্যাক বলেন, সম্প্রতি শর্মিলা বসুর ডেড রেকনিং:মেমরিস অব দি বাংলাদেশ ওয়ার শীর্ষক বইটি দেখে তার ৩০ বছর আগের কথা মনে পড়ে।
তিনি তখন খুলনায় গিয়েছিলেন এবং স্থানীয় অনেক লোকের সাথে কথা বলেছিলেন। কিন্তু তাদের সাথে তার কথোপকথনকালে কেউই মাত্র আট বছর আগে সংগঠিত গণহত্যার কথা উল্লেখ করেননি। তার কাছে এটি আশ্চর্য মনে হয়েছে। গার্ডিয়ানে বলা হয়, শর্মিলার বইয়ে ওই প্রতিবেদনের সত্যতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তোলা হয়েছে। একটি হত্যাযজ্ঞ ঘটনায় আট হাজার হিন্দু নিহত হয়েছে বলা হলেও সেখানে সম্ভবত মারা গিয়েছিল মাত্র ১৬ জন। যুদ্ধ শেষের পরপরই ২০ লাখ লোক হত্যার পাক জেনারেল এর ভবিষ্যদ্বাণী বা হুমকিটি ৩০ লাখে উন্নীত হলো এবং ভারত ও বাংলাদেশে তা এখনো ব্যাপকভাবে গৃহীত। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ নিয়ে নিরপেক্ষ বা উল্লেখযোগ্য গবেষণা হয়েছে খুবই কম। এ ক্ষেত্রে শর্মিলা বসুর অর্জন তাৎপর্যপূর্ণ। তার মতে, ১৯৭১ সালে যুদ্ধ ও অন্যান্য কারণে সব পক্ষের মিলিয়ে মোট নিহত হয়েছে ৫০ হাজার থেকে এক লাখ মানুষ।
শর্মিলা বসু বা জহুরীর এই দাবীকেই প্রতিষ্ঠা দেওয়া হয় মঙ্গা বা শেখ রেহানার রুপক চরিত্রটিকে দিয়ে। ডায়ালগটার আরও একটা দিক আছে,স্বাধীনতা সংগ্রামের মহানায়ককে এখানে চোর বলা হয়েছে। মঙ্গা চরিত্রটির আরো একটা ডায়ালগে বলা হয়েছে,“বাবা,অই বাবা। আমাগো ডাইনে,বামে,সামনে,পিছনে-সবখানে চোর বাবা। চোরে চোরে পুরা গ্রাম ভইরা দিলা”। এ যেন অই কথার পুনরাবৃত্তি, “৭ কোটি বাঙ্গালীর জন্য ৮ কোটি কম্বল এনেছি কিন্তু আমার কম্বল গেল কই? সবাই পায় সোনার খনি আর আমি পাইছি চোরের খনি”।
জঙ্গা বিরোধীদের শায়েস্তা করতে শালিস কেন্দ্র খোলে,তখন জঙ্গার ডায়ালগটা ছিল এমন-“কেউ কেউ আমার সালিশ কেন্দ্র নিয়ে কটাক্ষ করছে;এটা কেমন শালিস কেন্দ্র?? পঞ্চায়েত কমিটির মত নাকি নিম্ন আদালত?? নাকি ইন্টারন্যাশনাল?? আমি বলি এটা জঙ্গার শালিস কেন্দ্র”। মনে পড়ে সফররত যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধাপরাধ বিষয়ক দূত স্টিফেন জে র্যাপ বলেছিলেন, বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ আইন ও বিধি নিয়ে আমাদের প্রশ্ন রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সবার সাথে আলোচনা করে এ বিষয়ে আমরা আমাদের বক্তব্য ও সুনির্দিষ্ট সুপারিশ জনাবো। স্টিফেন জে র্যাপ সাংবাদিকদের বলেছিলেন, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) অনুস্বাক্ষরকারী একটি দেশ।
সে হিসেবে বাংলাদেশকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের যেসব পদ্ধতি রয়েছে সেগুলোকে মেনে চলতে হবে। এ বিচার যাতে প্রশ্নবিদ্ধ না হয়, সে জন্য যুক্তরাষ্ট্র সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছে বলে আইনমন্ত্রীকে জানানো হয়েছে। স্টিফেন বলেন, যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম এবং ১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ আইনের আওতায় তৈরি করা বিধি নিয়ে আমাদের যে প্রশ্ন রয়েছে, সে ব্যাপারে আমরা মন্ত্রীকে জানিয়েছি। (তথ্যসূত্র- ঢাকা, ১১ জানুয়ারি;শীর্ষ নিউজ ডটকম)।
মনে পড়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করার লক্ষ্যে ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিভিন্ন কাজে আন্তর্জাতিক মান বজায় থাকছে না বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল বার হিউম্যান রাইটস কমিটি অব ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস (বিএইচআরসি)। বিশেষ করে গত ৫ নভেম্বর ট্রাইব্যুনালে সুখরঞ্জন বালি নামে এক প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্য দেয়াকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। বিএইচআরসি মূলত ইংল্যান্ড ও ওয়েলস বারের একটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা, যারা বিশ্বব্যাপী আইনজীবী ও বিচারকদের অধিকার নিশ্চিত করতে স্বাধীনভাবে কাজ করে। এ ছাড়াও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বিচারব্যবস্থা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করে সংস্থাটি। বার হিউম্যান রাইটস কমিটির চেয়ারম্যান ম্যাক্স মুলার কিউসি স্বারিত বিবৃতি থেকে আরো জানা যায়, ট্রাইব্যুনালের বিচারপ্রক্রিয়া ও বিচারকদের স্বচ্ছতা নিয়েও অভিযোগ রয়েছে সংস্থাটির কাছে।ট্রাইব্যুনালের কোনো সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করার সুযোগ না থাকাকে সঠিক নয় বলে মনে করেন তারা।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর বর্তমান চেয়ারম্যান মো: নিজামুল হক নাসিমের ব্যাপারে প্রশ্ন তুলে সংস্থাটি জানায়, ১৯৯০ সালে তিনি বিচারকার্যে ত্রুটির থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছিলেন বলে তাদের কাছে তথ্য আছে। এ ছাড়া বিচার শেষ হওয়ার আগেই অভিযুক্তদের ব্যাপারে আইনমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট অনেকের স্পর্শকাতর মন্তব্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে তারা। (তথ্যসূত্র- বাংলা নিউজ)। জঙ্গার ডায়ালগটি সেই ব্যাপারগুলোকেই সামনে নিয়ে আসে।
জঙ্গার অত্যাচারের প্রতিবাদ করায় আনোয়ার হোসেন ওরফে রফিকের বাবা কে ৪২ বছর আগে ইতির হাঁসকে রোস্ট করে খাওয়ার মামলায় আসামী করে জঙ্গার শালিস কেন্দ্রে বিচারের জন্য আনা হয়। শালিস কেন্দ্রে জঙ্গার ল’ইয়ার আনোয়ার হোসেনের ব্যাপারে অভিযোগ উত্থাপন করতে গিয়ে বলে, “এইযে কাঠগড়ায় দাঁড়ানো আনোয়ার হোসেন, তার নামের কাগজ-পত্রে গুগল ইঞ্জিন দিয়ে আমি দেখেছি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কারণে বিভিন্ন প্রয়োজনে নিজের নাম পরিবর্তন করেছেন। জন্মের সময় লোকেরা ডাকতেন খোকাবাবু,তরুণ বয়সে বন্ধুরা ডাকতো আনোয়ার,বিয়ের সময় কাজী সাহেব লিখলেন আনোয়ার হোসেন,বিয়ের পরে শশুরবাড়ির লোকে ডাকেন জামাইবাবু,ছেলে হওয়ার পর সকলে ডাকেন রফিকের বাপ। আজ এই আনোয়ার হোসেন রফিকের বাপ হয়েছেন,এতেই বুঝা যায় এই আনোয়ার হোসেন কতটা ভয়ানক”। এই দৃশ্যের আনোয়ার হোসেন বা রফিকের বাবা মূলত রফিক বিন সাঈদীর বাবা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। মানবতাবিরোধী মামলায় আটক এই জামায়াত নেতার নাম নিয়েও ট্রাইব্যুনালে শুনানি হয়েছিল। জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের অষ্টম সাক্ষী মো. মোস্তফা হাওলাদার বলেছিলেন, তিনি একজন দেলোয়ার হোসেন শিকদারকে চেনেন। তিনি বর্তমানে সাঈদী। আর কোনো দেলোয়ার শিকদারকে তিনি চেনেন না।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ০৩ মার্চ সোমবার জেরায় আসামিপক্ষের আইনজীবী কফিলউদ্দিন চৌধুরীর এক প্রশ্নের জবাবে সাক্ষী এ কথা বলেছিলেন। দৈনিক সমকাল ও দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকার সাবেক সম্পাদক আবেদ খানের অসমাপ্ত জেরা গত ০৩ মার্চ ট্রাইব্যুনালে শেষ হয়েছিল। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি তিনি মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেন এবং ওই দিনই তার জেরা শুরু হয়। ০৩ মার্চ তিনি আবার ট্রাইব্যুনালে হাজির হলে তাকে জেরা করেছিলেন মাওলানা সাঈদীর আইনজীবী। ২০০৭ সালে তিনি দৈনিক সমকালের সম্পাদক থাকা অবস্থায় প্রকাশিত ‘ধরাছোঁয়ার বাইরে জামায়াতের গডফাদাররা’ শীর্ষক খবর বিষয়ে তিনি আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন। ওই রিপোর্টে জামায়াত নেতা মাওলানা সাঈদী, শাহজাহান চৌধুরী, আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের ও মিয়া গোলাম পরওয়ারকে গডফাদার আখ্যায়িত করা হয়। মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে পিরোজপুরে রাজাকার বাহিনী গঠন এবং লুটপাট ও নির্যাতনের অভিযোগ করা হয়। জেরার সময় আবেদ খান বলেছিলেন, প্রকাশিত ওই রিপোর্টটি তিনি নিজে সমন্বয় করেননি। রিপোর্টে বর্ণিত শিকদার থেকে সাঈদী নাম ধারণ বিষয়েও তিনি যাচাই করেননি বলে জানিয়েছিলেন।
ইতির হাঁসকে নিয়ে প্রতিনিয়ত ইতিহাস লিখে যাওয়া গুলতাসির শালিস কেন্দ্রে আসে রফিকের বাপের বিপক্ষে সাক্ষী দিতে। গুলতাসিরকে তার বাবার নাম জিজ্ঞেস করা হলে সে বলে না দেখে বলা বড় মুশকিল। ইতির হাঁসের বইটা সে লিখেছে কিনা জিজ্ঞেস করলে সে জানায় তার মনে নাই,তাকে মাঝে মাঝে ভূতে ধরে তখন সে লিখে। কখন এই বইটা লিখেছিল প্রশ্ন করা হলে সে জবাব দেয় তার মনে নাই। আইনজীবী জিজ্ঞেস করে বইটির নাম ইতির হাঁস কিন্তু গুলতাসির ‘র’ বাদ দিয়ে একে ইতিহাস বানিয়েছে,এটা কি ইতিহাসের বিকৃতি না ? গুলতাসির জবাবে বলে তার লেখার মাঝে ‘র’ লুকিয়েছিল,আইনজীবী দেখতে পারেনি। তখন প্রশ্ন করা হয় ‘র’-কে কেন লুকালো গুলতাসির? জবাবে সে জানায় তার ভালবাসা,শেষ ভরসা ‘র’-ই ছিল। ইতিহাসের বানান করতে বলা হলে গুলতাসির বলে সে না দেখে বলতে পারবে না। অব্যাহত জেরার মুখে গুলতাসির উল্টা পাল্টা বকতে শুরু করে দেয়।
এই গুলতাসির আসলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের শিক্ষক মুনতাসির মামুন। জামায়াত নেতা গোলাম আজমের বিপক্ষে সাক্ষী দিতে তিনি আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে এসেছিলেন। সাক্ষী মুনতাসির মামুনকে যে জেরা করা হয়েছিল তার চুম্বক অংশ উল্লেখ করলাম-
প্রশ্ন : ১৯৭১ সালে মার্চ মাসে আপনি অনার্স কোন বর্ষের ছাত্র ছিলেন?
উত্তর : তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলাম।
প্রশ্ন : আপনি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন?
উত্তর : না। আমি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ করিনি ঠিক, তবে মুক্তিযুদ্ধে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কাজে যুক্ত ছিলাম।
প্রশ্ন : মুক্তিযুদ্ধের আগে অধ্যাপক গোলাম আযমের সাথে ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ হয়েছে?
উত্তর : না।
প্রশ্ন : জামায়াতে ইসলামীর কোনো জনসভায় কোনো দিন যোগদিয়েছেন?
উত্তর : না।
প্রশ্ন : স্বাধীনতার পূর্বে সর্বশেষ ডাকসু নির্বাচন কখন হয়েছিল?
উত্তর : আমার ঠিক খেয়াল নেই। সে নির্বাচনে প্রার্থী ছিলাম না।
প্রশ্ন : আপনি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হবার পর ডাকসু নির্বাচন হয়েছিল?
উত্তর : সন তারিখ মনে নাই।
প্রশ্ন : স্বাধীনতা যুদ্ধের পর সর্বশেষ কখন আদমশুমারি হয়েছিল?
উত্তর : বলতে পারব না।
প্রশ্ন : স্বাধীনতা যুদ্ধের আগে সর্বশেষ কখন আদমশুমারি হয়েছিল?
উত্তর : বলতে পারব না।
প্রশ্ন : ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পর্যন্ত আপনি অধ্যাপক গোলাম আযমের বিরুদ্ধে কোনো প্রবন্ধ লিখেছেন?
উত্তর : আমার স্মরণ নাই।
প্রশ্ন : অধ্যাপক গোলাম আযম পূর্ব পাকিস্তান পুনরুদ্ধার কমিটি গঠন করেছিলেন সন তারিখ বলতে পারবেন?
উত্তর : সন তারিখ বলতে পারব না। যখন করেছেন তখন জেনেছি।
প্রশ্ন : কোন মাধ্যমে পত্র-পত্রিকা অথবা টেলিভিশনের মাধ্যমে জেনেছিলেন?
উত্তর : স্মরণ নাই।
প্রশ্ন : অধ্যাপক গোলাম আযম যে পূর্ব পাকিস্তান পুনরুদ্ধার কমিটি গঠন করেছিলেন এর কোনো দৃশ্যমান কাগজ আছে?
উত্তর : নেই।
প্রশ্ন : কতজনের কমিটি হয়েছিল বলতে পারবেন?
উত্তর : না।
প্রশ্ন : কমিটির সম্পাদক কে ছিলেন?
উত্তর : না আমার কাছে গোলাম আযমের বিষয়টি মুখ্য ছিল।
প্রশ্ন: ১৯৭০ সালের নির্বাচনের সময় আপনি যে মিরপুর এলাকায় থাকতেন ওই এলাকা পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের কোন কোন এলাকা নিয়ে আসন ছিল?
উত্তর : মনে নেই।
প্রশ্ন : মিরপুর এলাকা থেকে ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জহির উদ্দিন জয়ী হয়েছিলেন?
উত্তর : হয়ে থাকতে পারেন।
প্রশ্ন : তিনি ছিলেন অবাঙ্গালী?
উত্তর : জানিনা।
প্রশ্ন : জেনারেল নিয়াজীর যে দলিলের কথা উল্লেখ করেছেন তা টাইপ করা কপি ছিল?
উত্তর : জি।
প্রশ্ন : এতে তার স্বাক্ষর আছে?
উত্তর : না।
প্রশ্ন : পেলেন কিভাবে?
উত্তর : রাজশাহীতে হেরিটেজ নামে একটি আর্কাইভ হয়েছে সেখান থেকে পাই।
প্রশ্ন : ‘মুক্তিযুদ্ধের চিহ্ন’ দলিলপত্র বইটি কখন বের হয়?
উত্তর : ২০১০ সালে প্রকাশিত হয়।
প্রশ্ন : ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণের সময় জেনারেল নিয়াজী সমস্ত অস্ত্রশস্ত্র দলিলাদি মিত্র বাহিনীর প্রধান জেনারেল জগজিত্ সিংহের নিকট হস্তান্তর করেন?
উত্তর : বলতে পারব না।
প্রশ্ন : জেনারেল নিয়াজীর সাথে অধ্যাপক মাহবুবুর রহমানের সাক্ষাত্ হয়েছিল কিনা?
উত্তর : বলতে পারব না।
প্রশ্ন : এই দলিলটি কোন নোটিশ, ধারাবাহিক বিবরণ বা অংশ এ বিষয়ে অনুসন্ধান করেছেন?
উত্তর : না করিনি।
এরপর ট্রাইব্যুনাল মুনতাসির মামুনকে কম জেরা করার জন্য আদেশ দেয়,যাতে অসন্তুষ্ট ছিলেন বিবাদীপক্ষের আইনজীবী।(বিস্তারিত)।
সে সাক্ষী দিলে রফিকের বাপের ফাঁসি কেউ আটকাতে পারবে না এমন আশ্বাস দিয়ে সাক্ষী দিতে এসেছিল গুলতাসির; এখন তার অবস্থা দেখে কেউই সাক্ষী দিতে রাজি হয় না। ফিল্মটির এক পর্যায়ে যখন এমন কথা আসে তখন মনে পড়ে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী বিরুদ্ধে সাক্ষী দিতে যাননি প্রখ্যাত শিক্ষক জাফর ইকবাল স্যার। গত ২৪ জুলাই দৈনিক জনতা পত্রিকায় প্রকাশিত একটি রিপোর্টে শহীদ ফয়জুর রহমানের ছেলে ড. জাফর ইকবালের উদ্ধৃতি দিয়ে লেখা হয়েছিল, আমি আমার বাবার হত্যার বিচার চাই। সাঈদী আমার বাবার হত্যাকারী সেটা আমি জানিই না। তাহলে কেন আমি সাঈদীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে যাবো?
রফিকের বাপের আইনজীবী ন্যায়বিচার পাওয়া যাবে না সন্দেহে মামলা মুলতবি রাখতে বললে জঙ্গা বলে,“মামলা মুলতবি রাখলেও সময় মুলতবি রাখা যাবে না। সময় যাবে তারিখ আসবে রায় হয়ে যাবে”।
পরিচালক এখানে ডিসেম্বরের মধ্যে রায় দেওয়ার জন্য সরকারী দলের তাড়াহুড়োকে হাইলাইট করেছেন। উল্লেখ করা যায় গত ১৯ অক্টোবর বাংলাদেশ প্রতিদিনের একটি রিপোর্টকে,“গোলাম আযম ও দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীসহ চার শীর্ষ ‘যুদ্ধাপরাধী’র বিচারের রায় ডিসেম্বরে,এমন টার্গেট নিয়েই ‘ঘুম হারাম’ করছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটররা।প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত বলেন, ডিসেম্বরের মধ্যেই চার আসামির বিচারের রায় আসতে পারে। একজন প্রসিকিউটর বলেন, টার্গেট অনুযায়ী শীর্ষ চার অভিযুক্ত জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির গোলাম আযম, নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লা ও মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলার রায় ডিসেম্বরের মধ্যে পাওয়ার আশা করা যায়। এদিকে বিষয়টি আঁচ করতে পেরে আসামিদের আইনজীবীরা তৎপর হয়ে উঠেছেন। তারা মনে করছেন, তড়িঘড়ি করে বিচার হলে ন্যায়বিচার পাওয়া যাবে না”। (তথ্যসূত্র)
এক দৃশ্যে জঙ্গার এক মাস্তান বলল যে হাওয়া বিবির সুবিশাল ঘরের জন্য জঙ্গার গায়ে বাতাস লাগছে না। মাস্তানের কথায় জঙ্গা হাওয়া বিবিকে তার ঘরছাড়া করে রাস্তায় নামিয়ে দেয়। এই হাওয়া বিবি যে হাওয়া ভবনের অধিকত্রী,সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া তা সহজেই অনুমেয়। সাংবাদিক এ বি এম মুসা বলেছিলেন, “চোরদের দেখলেই বলবেন তুই চোর”।(তথ্যসূত্র) ঠিক যেন তেমনই বনের মধ্য দিয়ে ঘটক সাধুকে নিয়ে যাবার সময় এক বানর ভিমরুল ও আবুলকে বলে,“অই চোরের গুষ্টি চোর”। আবুল বলল, “তুই চোর”। বানর বলল, “তুই চোর”। ভিমরুল বানরকে বলল,“আমারে চিনস ?? আইনের সব ফাঁক-ফোকর আমার জানা আছে;খালি মুখস্ত নাই। কালকেই তোর বিরুদ্ধে চার্জশীট দিয়া দিব”। এ যেন আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম এর রুপক চরিত্র। আর আবুল হলো অর্থমন্ত্রীর রুপক চরিত্র।
জঙ্গার বজরায় রাত্রে মিটিং বসে বাল্য বিয়ের ব্যাপারে। ওদিকে মঙ্গা প্রসঞ্জিত বাবু ও আশরাফকে বিষ ও ছুরি দেয় জঙ্গাকে মারার জন্য। মীটিংয়ে যোগ দেয় ভিমরুল,আবুল,প্রসঞ্জিত বাবু,আশরাফ,বাড়াবাড়ি কবির,স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, ঘটক সাধু সহ অনেকে। সবাই বলে গ্রামের মানুষ বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে কাজীর কাছে বিচার দিবে। জঙ্গা বলে কাজী ছাড়াই বিয়ে হবে। এক অনুচর প্রশ্ন করে কাজী ছাড়া বিয়ে কেমন করে হবে ?? জঙ্গা জানায় যেভাবে তার বাবা করেছিল সেভাবেই সে করবে। তখন বাড়াবাড়ি কবির বলে জঙ্গা তো দশ বছরের মেয়েকে বিয়ে করবে,জঙ্গার বাবা কিন্তু কোলের শিশুকে কেড়ে নিয়ে করেছিল। এখানে এসেই পরিস্কার হয় যে জঙ্গার কাজীবিহীন বাল্যবিবাহ মানে দলীয় সরকারের অধীনে সংসদ নির্বাচন। ফিল্মের এই পর্যায়ে দাবি করা হয় বঙ্গবন্ধু সদ্যভূমিষ্ট হওয়া বাংলাদেশকে এদেশের মানুষের কাছ থেকে কেড়ে নিতে চেয়েছিলেন,এখন তাঁর কন্যা চাইছে ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করতে।
বজরার মিটিংয়ের এক ফাঁকে আশ্রাফ জঙ্গাকে হত্যার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। তাকে নিয়ে যাওয়া হয় টর্চারহোমে। এরই মাঝখানে প্রসঞ্জিত বাবুর থলে থেকে বেরিয়ে পড়ে কালো বিড়াল। কালো বিড়াল সামলাতে না পারার কারণে জঙ্গা প্রসঞ্জিতের প্রতি অসন্তুষ্ট হয়। চাষী ফকির চরিত্রটি হল বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণ আর তাদের “শান্তি” ছাড়া কেউ নাই। ইতিহাসের মামলার নাটক লেখক বাড়াবাড়ি কবির হলো ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির শাহরিয়ার কবির। মোটামুটি সব চরিত্রের মূল পরিচয় বোঝা গেলেও পরিস্কার হয়নি সাধুর চরিত্রটি। তবে ফিল্মটির একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হচ্ছে দাদার প্রেতাত্মা। এর পরিচয় এসেছে এভাবে যে যখনই জঙ্গার উপর দাদার প্রেতাত্মা ভর করে জঙ্গার অশুভ শক্তি বেড়ে যায়।
শালিস কেন্দ্রে এক পাগল ঢুকে জঙ্গা আর তার দলবলকে চোর বলে ঢাকে,তখন অদৃশ্য থেকে দাদার প্রেতাত্মা জঙ্গাকে বলে,“সাবধান,বড়-ই সাবধান। যেভাবে শিখিয়ে ছিলুম সেভাবেই করতে হবে। ধরা খাইলে চলবে না। এটাই শেষ কামড়। তোমার শালিস কেন্দ্রের ফরম্যাট একেবারেই নতুন। এখনো তুমি শিখছ,কয়েকটাকে ঝুলানোর পড়েও তোমার শেখা শেষ হবে না। সব ফরম্যাট আমার কাছে রেডি আছে। আমি তোমাকে একে একে পাঠাচ্ছি। তুমি রায়ের জন্য রেডি হও”। গুলতাসির যখন জেরার মুখে পাগলের মতো বকতে শুরু করলো,তখন সবাই প্রহসনের বিচার মানে না,রফিকের বাপের পক্ষে সাক্ষী হবে বলে ঘোষনা দেয়। অদৃশ্য হতে দাদার প্রেতাত্মা তখন জঙ্গাকে বলে, “সাবধান,কঠিন হও। আমাদের টার্গেট সাধারণ মানুষ। সাক্ষী ক্লোজ কর। আটকাও সবাইকে। কার রায় কখন দিতে হবে সব আমি বলে দিচ্ছি। গুলতাসিরও পাগল হইয়া গেছে,এখন শুধু একখান রায় চায়,রায়। এরপর তোমার সাথে স্কাইপে কথা হবে। টর্চার হোমে পাঠাও।
সকালের আজান হলে গ্রামবাসী জঙ্গার বজরায় আগুন দেয়, জঙ্গা তখন দাদার প্রেতাত্মাকে ডাকলে সে জবাব দেয়-“তুমি ডিজিটাল হইছ ঠিকই কিন্তু স্কাইপির সিকিউরিটি রাখতে জানো না। আজ সব গোমর ফাঁস। মানুষকে ফান্দে ফেলা-ই শয়তানের কাম। তুমি বড় কঠিন ফান্দে আটকাইছো নাতি। আর ছুটার সুযোগ নাই। সত্য এগিয়ে আসলে মিথ্যা দাঁড়াতে পারে না। সত্য আসছে মিথ্যা পালাচ্ছে।আজ তোমার শেষ পরিণতি দেখার আমার আর সময় থাকলো না। নিজে বাঁচলেই নিজের নাম। গুডবাই নাতি,গুডবাই”। পুরো ফিল্মে অদৃশ্য থাকা এই চরিত্রটি এতটাই সমসাময়িক যে বিশ্বাস করতে অবাক লাগে। কিছুদিন আগে সাংবিধানিক প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে চলমান মামলার ব্যাপারে দেশের বাইরে থেকে স্কাইপের মাধ্যমে পরামর্শ নেয়ার ঘটনা ফাঁস হয়ে যাওয়ায় পদত্যাগ করেন বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম। দাদার প্রেতাত্মা হলো সেই চরিত্র (জিয়াউদ্দিন গং) যে বা যাদের পরামর্শে নাসিম বিচার চালাতেন বলে অভিযোগ।
বাষট্টি মিনিট চুয়াল্লিশ সেকেন্ড এর এই ফিল্মটি আইনি ঝামেলায় পড়বে কিনা সেটা ভবিষ্যতের বিষয়। তবে প্রধানমন্ত্রী সহ মন্ত্রী পরিষদবর্গকে কটাক্ষ করে নির্মিত এই ফিল্মের ব্যাপারে ভাল কিছু আশা করাটাই বোকামি। প্রিভিশন ইন্টারটেইনমেন্ট পরিবেশিত ফিল্মটির পরিচালনা,চিত্রনাট্য ও সংলাপ তিনদিকই সামলেছেন জাফর ফিরোজ নাম্নী কেউ। ফিল্মটি রিলিজ দেওয়া হয়েছে এর নিজস্ব ওয়েবপেইজ http//theblack.biz/-এ...
0 comments: