হারুন ইয়াহিয়ার আসল নাম আদনান ওকতার। তিনি তুরষ্কের আঙ্কারাতে ১৯৫৬ ইশায়ী সনে জন্মগ্রহণ করেন। বিশ্ববিখ্যাত এই পন্ডিত তার জীবন উৎসর্গ করেছেন মহান আল্লাহ রাব্বুল আ'লামিনের একত্ববাদ তথা তাওহীদ প্রতিষ্ঠা এবং বস্তুবাদ- নাস্তিক্যবাদের অসারতা প্রমান করার জন্য।
১৯৭৯ সালে তিনি Istanbul’s Mimar Sinan University তে তৃতীয় স্থান অধিকার করে ভর্তি হন । এই সময়কালটাতে মিমার সিনান ভার্সিটিতে মার্কিস্ট-কম্যুনিষ্ট নাস্তিকদের দাপট ছিলো দেখার মত। ইউনিভার্সিটির টিচার থেকে শুরু করে অন্যান্য স্টাফ ও বহু ছাত্র উগ্র নাস্তিক্যবাদ , বস্তুবাদ্ ও ডারউইনিজমের প্রপাগান্ডা চালাতো ছাত্রদের মাঝে, বিষিয়ে দিত তাদের মন ইসলামের ব্যাপারে।
আদনান ওকতার তথা জনাব হারুন ইয়াহিয়া এমন বিষাক্ত পরিবেশে ডারউইনিজমের অসারতা ও নাসতিক্যবাদের অযৌক্তিক প্রপাগান্ডার বিরুদ্ধে বলতে শুরু করেন। এমনকি স্মোল্লা মসজিদ নামের ভার্সিটি লাগোয়া মসজিদটিতে তিনি একা দাড়িয়ে নামাজ পড়তেন। কারন নামাজের জন্য লোকেদের মন প্রস্তুত ছিলোনা সময়টাতে।
আদনানের মা, জনাবা মেদিয়া ওকতার বলেন আদনান রাতের খুব কম সময় ই ঘুমাতেন । তিনি সমস্ত রাত পড়াশুনা করতেন, নোট নিতেন এবং লিখতেন। পড়তেন শত শত বই, মার্কিজম, লেনিননিজম, মাওবাদ, কম্যুনিজম, বস্তুবাদী দর্শন। তিনি বিবর্তনবাদের থিওরী সম্পর্কেও বিস্তারিত গবেষনামূলক স্টাডী করতেন। তিনি প্রচুর ডকুমেন্টস সংগ্রহ করেন। তিনি এসব থিওরী ও তন্ত্রসমূহের মিথ্যাচার ও অসারতা-আযৌক্তিকতার বিরুদ্ধে কলম চালাতে থাকেন এবং ইসলামের সত্যতা ও একমাত্র গ্রহণযোগ্যতার দিকে মানুষকে ইনভাইট করতে শুরু করেন।
আদনানের কর্মকান্ড বিক্ষুব্ধ করে তোলে তার আইডোলযী বিরোধীদের। তারা উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠে তার তুর্কি-জাতীয়তাবাদী ও ইসলামী কর্মকান্ডে। শুরু হয় তার বিরুদ্ধে গুরুতর ষড়যন্ত্র। ১৯৮৬ এর গ্রীষ্মে এরেষ্ট করা হয় তাকে । হারুন ইয়াহিয়া ঘোষণা করেন, “I am a member of the Turkish People, and of the Nation of Ibrahim,” ! নয় মাস তাকে একটি কক্ষে বন্দী করে রাখা হয়। পরে ৪০ দিন তাকে পায়ে শেকল পরিয়ে একটা ফরেনসিক মেডিকেল বেডে বন্দী করা হয়। এরপর তাকে একটা মানসিক হাসপাতালে অবরুদ্ধ করে রেখে প্রমান করার চেষ্টা করা হয় তার মানসিক সমস্যা রয়েছে! তাকে যাদের সাথে রাখা হয়, এদের অনেকেই গুরুতর মানসিক রোগী ছিলো। তার বন্দী সময়ে অন্তত সাতজন খুন হয় বন্দীদের মাঝে। হারুন ইয়াহিয়াকেও এই উদ্দেশ্যই হয়তো রাখা হয় এদের সাথে। বলপূর্বক চেতনানাশক প্রয়োগ করা হতো তার ওপর। প্রায় উনিশ মাস তার বন্দীদশা চলার পর তিনি নির্দোষ ও সুস্থ্য বলে প্রমানিত হন । একটি ষড়যন্ত্রের অবসান হয়। অবশ্য এই পুরো সময়টা তিনি কাজেও লাগান। লেখালেখি চালিয়ে যেতে থাকেন।
হারুন ইয়াহিয়ার কিছু বই (বাংলা অনুবাদ)
→ ডারউইনবাদ : বিশ্ব মানবতার আভিশাপ
→ কুরআনের আদর্শ বাস্তবায় : সব সমস্যার সমাধান
→ কিয়ামতের নিদর্শনসমূহ
→ যীশুর প্রত্যাবর্তন : রাসুল ইশা আ: ফিরে আসবেন
→ মানুষ সৃষ্টির বিষ্ময়কর ঘটনা
→ নূহ নবীর প্লাবন ও নিমজ্জিত ফেরাউন
→ পিঁপড়াদের রাজ্যে
→ অজ্ঞ যেভাবে কুরআনকে দেখে
→ কুরআনে নৈতিক মূল্যবোধ
→ ইমাম মাহদীর আগমনের নিদর্শনসমূহ
→ আল্লাহর নামসমূহ
→ সন্ত্রাসকে নিন্দা করে ইসলাম
→ রাসূল মুহাম্মাদ সা: এর মুযেজা
→ কুরানের কিছু গোপন রহস্য
হারুন ইয়াহিয়ার তৈরী ভিডিও ডকুমেন্টারী
কম্যুনিজমের রক্তাক্ত ইতিহাস ► কম্যুনিষ্ট নাস্তিকদের গনহত্যার ভিডিও ডকুমেন্টরিসমূহ
পেজভিউ
2 comments:
আপনার এই পোস্ট কপি পেস্ট করার অনুমতি দেন। সমস্যা নাই আপনার সাইট এর নাম থাকবে
কপি করেন।