এটা হল পৃথিবীর রাত্রির কালীন ছবির দৃশ্য। যেটা স্যাটেলাইট থেকে তোলা হয়েছে। এই ছবি দেখেই আমরা বুঝে নিতে পারি পৃথিবীর কোন জায়গাটি বেশী আলোকিত কোন জায়গাটি তুলনামূলক ভাবে অন্ধকারাচ্ছন্ন অংশ।
পৃথিবীর সকল রূপ সকল সৌন্দর্য আমরা উপভোগ করতে পারি অথছ এতে আমাদের নূন্যতম কোন অবদান নেই। এখানে মানবজাতির ইচ্ছা অনিচ্ছায় কিছুই আসে যায়না। আমাদের চোখ আছে শুধু দেখতে পারি, চিত্ত আসে শুধু উপভোগ করতে পারি। এর বাহিরে কিছুই করতে পারিনা!
এটি হল মাসের ১৪ তারিখের রাতের পূর্ন চাঁদ। যাকে পূর্নিমা হিসেবে বাংলা ভাষায় অভিহিত করা হয়। ফ্লোরোসেন্ট আলোর ন্যায় এর আলো প্রতিফলিত হয় সারা পৃথিবীর সর্বত্র। পৃথিবী থেকে এটি ৩,৮৪,৪০৩ কিমি দূরে অবস্থিত। যার ব্যাস ৩৪৭৬ কিমি, অর্থাৎ ৩৫০০ কিমি লম্বা একটি লম্বা রড এটার পেটে ঢুকিয়ে দিলে এদিক থেকে ওদিকে বেড়িয়ে যাবে, চাঁদ পৃথিবীর ৪ ভাগের এক ভাগের সমান।
মানুষের কোন কৃতিত্ব, যোগ্যতা, দক্ষতা, মর্যাদা প্রাপ্তির মাধ্যমে এটা আকাশে উদিত হয়না।
বিশাল এই টুকরাটিকে যদি কেউ একজন নিতান্ত দয়া করে এটাকে আকাশে উদিত না করাতেন, তাহলে পৃথিবীর সকল মানুষ গনভোট দিয়ে জয়লাভ করেও এটাকে আকাশে তুলতে, চারিদিকে ঘুরাতে কিংবা নিয়ন্ত্রন করতে সক্ষম হতেন না।
পৃথিবী কিভাবে সূর্যের আলো দ্ধারা আলোকিত হচ্ছে এটা তারই ছবি। পৃথিবী সূর্য থেকে খন্ডিত একটি গ্রহ মাত্র। সূর্য থেকে ১৪,৯০,০০,০০০ কিমি দূরে এর অবস্থান এবং এর ব্যাস ১২,৭৫৬ কিমি। অর্থাৎ ১৩,০০০ কিমি লম্বা একটি রড এটার পেটে ঢুকিয়ে দিলে এদিক থেকে ওদিকে বেড়িয়ে যাবে।
এভাবে হাজার বছর ধরে এই গ্রহে সকাল হয়েছে, সন্ধ্যা নেমেছে। আমাদের পূর্ব পূরুষেরাও এটা দেখে এসেছে, অনাগত ভবিষ্যৎ প্রজন্মও তাই দেখবে। এটাকে আপাত দৃষ্টিতে চিরস্থায়ী মনে হলেও মানুষ কিন্তু নশ্বর পৃথিবীতে একেবারেই ক্ষনস্থায়ী! পৃথিবী নিজের অস্থিত্বের জন্য কখনও মানুষের প্রয়োজনীতা অনুভব করেনা। বরং মানুষের অস্থিত্বের জন্য পৃথিবীকে তার প্রয়োজন অনেক বেশী।
দিনের আলোতে পরিপূর্ন পৃথিবীর দৃশ্য। যার তিন ভাগ জল একভাগ স্থল! তিন বৃত্তের এক বৃত্ত পরিপূর্ন পানি দ্বারা পূর্ণ। বাকী দুই বৃত্তের মাঝেও পানির আধিক্য খোলা চোখেই নজরে পড়ে, আরো নজরে পড়ে পুরো দুটি মহাদেশ পরিপূর্ন সাদা বরফে ঢাকা।
বাকী সামান্য স্থল বিশিষ্ট জায়গা নিয়ে আমরা বসবাস করছি। মানবজাতি দারড়ে বেড়াচ্ছে এরই চামড়ার উপরে। একে অপরকে চিরতরে নিশ্চিহ্ন করে দিতে, হাজারো চেষ্টা প্রচেষ্টার ত্রুটি করছেনা। সামান্য ক্ষমতার দম্ভে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে জনবসতিকে সদা তটস্থ করছে। বাহু শক্তি ও অর্থ শক্তির মত্তে, বিস্তীর্ণ জনপদকে বিরাণ ও ছাড়খার করে দিচ্ছে।
এখানে পৃথিবীকে আমরা তার ছোট চার ভাই যথাক্রমে; শুক্র, মঙ্গল, বুধ, প্লটো কে দেখতে পাচ্ছি। ছোট্ট ভাইদের তুলনায় পৃথিবী কত বড়, অনেক সুন্দর ও দৃষ্টিনন্দন! যেন প্রচুর প্রাচুর্যে ভরা!
এখানে আমরা পৃথিবীকে তার ছোট চার ভাই সহ, বড় চার ভাই যথাক্রমে; ইউরেনাস, নেপচুন, শনি, বৃহস্পতির সাথে দেখা যাচ্ছে। বড় ভাইদের তুলনায় পৃথিবীর ব্যাপ্তী কত ছোট্ট! কত ক্ষুদ্র! কত অসহায়!
এখানে পৃথিবীকে আমরা তার মা সূর্যের সাথে দেখতে পাচ্ছি। পৃথিবীর আয়তনের চেয়ে সূর্যের আয়তনের কি বিরাট ব্যবধান! সূর্যের তুলনায় পৃথিবী একটি ক্ষুদ্র বিন্দুর মত। পৃথিবীর চেয়ে সূর্য প্রায় ১৩ লক্ষ গুন বড় এবং এর ব্যাস ১৩,৯০,০০০ কিমি। অর্থাৎ ১৪ লক্ষ কিমি লম্বা একটি রড এটার পেটে ঢুকিয়ে দিলে সেটি অপর দিকে বেড়িয়ে যাবে।
এটির দূরত্ব যদি বর্তমানের চেয়ে বেশী হত পৃথিবী বরফের পিন্ড হয়ে যেত, যদি আরো কাছে হত তাহলে পৃথিবী মুরুভূমি হয়ে যেত। এত বিশাল আকৃতির অগ্নিগোলককে শুন্যে ঝুলিয়ে প্রতিনিয়ত দহন করা, ঘুরানো, নিয়ন্ত্রন, জ্বালানী সরবরাহ কিছুই মানুষের ইচ্ছা-অনিচ্ছার সাথে সম্পর্কিত নয়। মানুষ তা থেকে কেবল উপকারই নিতে পারে, তাকে অস্বীকার, অপ্রয়োজন ভাবার ইচ্ছাও মানুষের নাই। কেননা এসব ইচ্ছা-অনিচ্ছা নির্ভর করে শুধু একজন মাত্র নিয়ন্ত্রকের হাতেই।
তাহলে আসুন আমরা যে গ্যালাক্সির অধিবাসী, সেখানে সূর্যকে নিয়ে আমাদের সৌর-জগতের কি দশা!
এখানে সূর্যের সাথে Arcturus নক্ষত্রের সাথে তুলনা করা হয়েছে। Arcturus হল একটি বৃহদাকার নক্ষত্র, সূর্যের চেয়ে বহুগুনে বড় এটি। Arcturus এর তুলনায় সূর্যকে একটি ক্ষুদ্র অতি ক্ষুদ্র নক্ষত্রের মত দেখায়!
চিত্রে সৌরজগতের বৃহত্তম গ্রহ, বৃহস্পতিকে দেখাতে সুঁচের মাথার পরিমান স্থান দেওয়া হয়েছে! এখানে পৃথিবীর জন্য সুঁচ রাখার মত সামান্যতম একটু জায়গা নাই।
আসুন বৃহত্তম Arcturus নক্ষত্রের সাথে, তার পরিবারের অন্য নক্ষত্রের সাথে তফাৎ দেখি।
এখানে অতিকায় বিশাল Antares নক্ষত্রকে দেখা যাচ্ছে, এখানে বৃহদাকার Arcturus নক্ষত্রটিকে অতি ক্ষুদ্র মনে হচ্ছে। এবং সূর্য কে বুঝাতে সূঁচের মাথার পরিমান আকার ধরা হয়েছে। পৃথিবী তো দূরের কথা চিত্রে বৃহষ্পতি বলে কোন গ্রহ আছে সেকথাও প্রমানিত হচ্ছেনা!
Antares মহাকাশের ১৫ টি বুহদাকার নক্ষত্রের একটি, যেটি পৃথিবী থেকে ১০০ আলোক বর্ষ দূরে।
এই ছবিটির দিকে দেখুন!
এটা Cassini-Huygens Probe থেকে তোলা। সেটি যখন শনি গ্রহের বৃত্তের পাশ দিয়ে যাচ্ছিল তখনকার পাঠানো ছবি।
লাল বৃত্তের মাঝে সাদা দাগের মত বিন্দুটির আমাদের প্রিয় পৃথিবী! যাকে আমাদের সৌরজগতের একটি গ্রহের অক্ষ থেকেই এক ক্ষুদ্র দেখা যায়।
যা আপনার আমার সবার দৃষ্টিতে একটি ক্ষুদ্র বিন্দু ছাড়া আর কিছুই নয়! সাধারনের কাছে এই বিন্দুর কোন ব্যাস, পরিধি, জ্যা নির্ধারণের কোন উপায় নেই।
আবারো তাকিয়ে দেখুন, সে ক্ষুদ্র বিন্দুর প্রতি!! একটু ভাবুন!
অথছ এই ক্ষুদ্র বিন্দুতেই আমরা সকলেই একসাথে আছি.....!
এখানেই আমরা ঘটিয়ে চলছি যত আগ্রাসন, আর যত যুদ্ধ......!
আমাদের সকল সমস্যা এখানকার স্বার্থকে ঘিরেই.......!
এখানেই আমরা আমাদের শৌর্য-বির্যের ক্ষমতা দেখাচ্ছি......!
এখানেই যত বিজ্ঞান, অঙ্কন, সাহিত্য, সাংস্কৃতির সৃষ্টি......!
এখানেই আমাদের সভ্যতা বিনির্মাণ করছি, সমূদয় সৃষ্টিকূলকে সাথে নিয়ে....!
এখানেই আমাদের গতি, আমাদের সকল ধর্ম.....!
এখানেই আমাদের সকল জাতি, সকল দেশ, সকল সরকার, সকল কৃষ্টি....!
এখানেই আছে আমাদের সকল প্রিয়জন এবং সকল চরম ঘৃণিত ব্যাক্তি.....!
তাদের সবাইকে নিয়ে বসবাস করছি!
পৃথিবীর ৬০০ কোটিরও বেশী আদম সন্তান! আর.....
একটি দিনকে পেছনে ফেলে আরেকটি দিনের প্রত্যাশায় অবিরত লড়াই করছি।
এবার কিছুক্ষনের জন্য ভাবনাটি ছেড়ে দিন।
হয়ত চিন্তা করছেন দূরের ঐ নীল বিন্দুতে আপনি একা, বড় একাই অবস্থান করছেন।
চিন্তায় আছেন কেউ আপনাকে দেখতে পাচ্ছেনা। কেউ না, কেউ.......নয়.....!!!
আপনি কি করছেন?
কোথায় যাচ্ছেন?
কি খাচ্ছেন?
সব কিছুই যেন গোপনীয় থাকছে, কেউ আপনার কর্মকান্ড অবলোকন করার ক্ষমতায় নেই! আপনার জবাব দিহীর কোন ভয় নেই, দুঃচিন্তা নেই, তাই নেই কারো পরোয়া!
তবে, একজন মাত্র আছেন।
যিনি, আপনার মাথায় কয়টি চুল আছে তারও সূক্ষ্ম হিসেব রাখেন।
কে মারা যাচ্ছেন কিংবা কে জন্ম নিচ্ছেন সবকিছুর ব্যাপারেই তিনি সাম্যক অবগত।
কেননা,
“তাঁর কাছেই রয়েছে অদৃশ্য জগতের চাবি। এসব তিনি ব্যতীত কেউ জানেনা; জলে ও স্থলে যা কিছু আছে, তিনিই এ ব্যাপারে ওয়াকিফহাল। একটি পাতাও ঝড়ে না কিন্তু তিনিই জানেন। কোন শষ্য কণা মৃত্তিকার অন্ধকারে পতিত হয়না এবং সেটি আদ্র নাকি শুষ্ক; তা কিন্তু সব লিপিবদ্ধ রয়েছে প্রকাশ্য গ্রন্থে”।
সূরা আল্ আন-আম ৫৯।
অথছ, মানুষ অস্বীকার করে আল্লাহর সৃষ্টি সর্ম্পকে! কিন্তু তারা তাঁর মহা সৃষ্টি সর্ম্পকে এতটুকুনু ভাবেনা! মহা শূন্যের এই মহা বিস্ময়কর সৃষ্টি কি এমনিতেই সৃষ্টি হয়েছে, যার কোন একজন স্রষ্টা নাই?
আর সৃষ্টির চেয়ে স্রষ্টা শক্তিশালী; সৃষ্টিতেই স্রষ্টার পরিচয় লুকিয়ে থাকে। বাতাসের আকৃতি আমরা না দেখেও তাকে বিশ্বাস করি, বাতাস বিশ্বজগতে প্রলয় ঘটাতে সক্ষম। শব্দ কম্পনকে না দেখেও তার উপস্থিতিতে যখন কাঁচের ঘর ভেঙ্গে বালিতে পরিনত হয়, তখন তার উপস্থিতিকে মেনে নেই। চুম্বক শক্তিকে ধরে দেখতে না পারলেও, যখন তা মানুষের সৃষ্টিকে বিকল করে দেয়, তখন তাকে বিশ্বাস করি। উড়ন্ত ‘সসারকে’ এখনও মানুষ কব্জা করতে না পারলেও, কেউ বলেনা সে মহাশূন্যে এমনিতেই সৃষ্টি হয়েছে বরং বলা হয় “তাকে কেউ সৃষ্টি করেছে, মানুষকে দেখতেই তাকে এখানে পাঠানো হচ্ছে”।
শুধুমাত্র আল্লাহর সৃষ্ট সম্পদের বেলায় কথা আসলে বলা হয়, তা এমনিতেই সৃষ্টি হয়েছে, যার জন্য কোন স্রষ্টার প্রয়োজন নাই! উপরের বিস্তারিত বর্ণনাগুলোই কি আল্লাহকে দেখতে-চিনতে যথেষ্ট নয়! তার পরও কি নিজেকে অনেক বড় ও শ্রেষ্টতম ক্ষমতাবান ভাবনেন!? নিজেকে সেরা বুদ্ধিমান ভাববেন!?
আল্লাহ বলেছেন, “মানুষের সৃষ্টি অপেক্ষা নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডলের সৃষ্টি কঠিনতর; কিন্তু অধিকাংশ মানুষই তা অনুধাবন করেনা”। সূরা আল-মুমীন ৫৭।
উপরে বর্ণিত আল্লাহর সমূদয় সৃষ্টি,
সৃষ্টির উদ্দেশ্য......
জানিয়ে দিতে......
চিনিয়ে দিতে.......
বুঝিয়ে দিতে.......
সত্য, সোজা ও সঠিক পথ দেখিয়ে দিতে,
মোহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কে পাঠিয়েছেন, একজন প্রতিনিধি হিসেবে।
যিনি মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের পক্ষ হতে দুনিয়াবাসীর জন্য শ্রেষ্টতম উপহার। কেননা আল্লাহ যদি নিতান্ত দয়া ও অনুগ্রহ করে, তাঁর প্রতিনিধির মাধ্যমে এসবের ব্যাখা মানব সম্প্রদায়কে না জানাতেন, আমরা কখনও তা জানতাম না, বুঝতাম না। দুটি চোখ হাতে নিয়ে অন্ধের ন্যায় পৃথিবীর বিশাল ভূ-খন্ডে দিকহারা পঙ্গপালের মত ঘুরে বেড়াতাম!!! অতপর চরম ক্ষতিগ্রস্থ হতাম!!!
তাই ভাবুন, বারংবার চিন্তা করুন, তাহলে মহান আল্লাহ সহায় হবেন। তাঁর কাছে সত্যের সন্ধান চাইলে, তিনি বান্দাকে ফেরৎ দেন না, কেননা হেদায়াত আল্লাহর পক্ষ হতে সবচেয়ে বড় মূল্যবান সম্পদ।
একজন ব্যক্তিও যদি আমার এই ক্ষুদ্র ধারনা থেকে উপকৃত হন, তাহলে আমিও উপকৃত হইব। যদিও এই লিখাটি পড়তে সর্বমোট পাঁচ মিনিট সময় লাগবে, তবে আমার যথেষ্ট সময় ব্যয় করতে হয়েছে এর পিছনে। ভাবতে হয়েছে নানাভাবে, কিভাবে এটাকে উপস্থাপনা করা যায়? একজন মাত্র পাঠক, দর্শক এটা পড়ে ও দেখে যদি তার আত্মায় তৃপ্তি পায়, সেটাই হবে আমার জন্য সাফল্য। কেননা আমি আল্লাহকে ভালবাসি, আর ভালবাসি তাদের; যারা নিজেরাও মহান আল্লাহকে ভালবাসেন।
5 comments:
speech less.allah is the greatest .
ধন্যবাদ! আল্রাহ আপনার মঙ্গল করুক।
আচ্ছা আল্লাহ স্তুতি চায় কেন?প্রশংসা কি মহান আল্লাহর জ্বালানী ...।।BY the way আমি নাস্তিক নয়...।।সব ধর্মের ঈশ্বরই এমনটি চায়।চায় বললে ঠিক হবেনা করতে হয় কেন?
Fahim ahmed ,apnake onek onek shuveccha. Oshadharon lekha.
Allah apnar upor shanti borshon korun.
Onekei ei beparta bujhbe na, LLB er ekta part mone korte pare, se jakge ,
Keujodi jege jege ghumay to take na jaganor ceshta koratai sreo,
Jokhon bojhar boyosh hobe tokhon embitei bujhbe,
Aj ami amar baba ke harabar por allah ke bujhechi, temni oneker belay
kichu haranor ghotona ghot teo pare, tarpor hoyto allah ke pabe!
Allahu akbar
মানুষের জন্য আল্লাহর সকল আদেশ নিষেধগুলো মানুষের কল্যানের জন্য। মানুষ মানে মানবজাতি। ব্যাপারটা বুঝতে হলে সংকীর্ণতা ছেড়ে চিন্তায় প্রশস্ততা আনতে হবে। মুক্তমনা হতে হবে। একটু খেয়াল করে ভাবুন।
কুরআন থেকে আমরা জানতে পারি, আল্লাহ ফেরেসতাদেরকে একসময় জানিয়ৈ দিলেন- তিনি নতুন একটি সৃষ্টি করতে যাচ্ছেন। তিনি প্রতিনিধি শব্দটা ব্যবহার করলেন। অভিজ্ঞ ফেরেসতাজাতি আতকে উঠলেন কারন আল্লাহরই একটা সৃষ্টির সাথে প্রতিনিধি শব্দ ব্যবহারে বুঝা যাচ্ছিলো সেই সৃষ্টির সাথে স্বাধীনতা/স্বাধীন সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষমতা এসব থাকবে। ফেরেসতারা তখনই আশঙ্কা করলেন হানানহানি, বিপর্যয় ঘটনপটিয়সী এক জাতির। আল্লাহ বললেন, আমি যা জানি, তোমরা তা জানোনা।
আদম আ: তথা মানব জাতিকে আল্লাহ সৃষ্টি করে তাকে তার খলীফা অর্থাৎ অনেকখানি স্বাধীনতাসম্পন্ন পাওয়ার দিয়ে দিলেন। মানুষ হলো পৃথিবীতে আল্লাহর প্রতিনিধি!!!!! সহজ কথায় আল্লাহর যে কাজ, আল্লাহ তার সৃষ্টির জন্য যে সিস্টেম তৈরী করে রেখেছেন বা যে সিস্টেমে সমগ্র সৃষ্টি পরিচালিত হয়, তার একটা অংশে তারই এক সৃষ্টিকে দায়িত্বে বসিয়ে দেখতে লাগলেন এরা কি করে! কিছু চূড়ান্ত মৌলিক বিষয় ছাড়া মানবজাতিকে স্বাধীনতা দেয়া হলো, তারা কি করবে বা না করবে! এখানেই অন্য সমগ্র সৃষ্টির ওপর শ্রেষ্ঠত্ব পেয়ে গেলো মানুষ কারন এই স্বাধীনতা নেই আর কারো। আল্লাহ এখানেই মানুষের জন্য তৈরী করলেন পরীক্ষা! স্বাধীন সিদ্দান্ত নেবার ক্ষমতাপ্রাপ্ত মানবজাতি মহাবিশ্বে আল্লাহর প্রতিনিধিত্ব কতটুকু করতে পারবে, তার হিসেবনিকেশ ই হলো এই পরীক্ষা । মানবজাতি সৃষ্টির এই উদ্দেশ্যের কথাই ফেরেসতারা জানতেন না।
এবার, ব্যাপার হলো - আল্লাহর পৃথিবীতে আল্লাহর প্রতিনিধিত্ব (অর্থাৎ মানুষকে দায়িত্ব না দিলে আল্লাহ নিজেই যে কাজগুলো করতেন বা করাতেন) করতে হলে ঠিক কিভাবে করতে হবে, তা মানুষ জানেনা বা জানলেও কিছু সময় পরপর ভুলে যায়। আদম আ: কে প্রয়োজনীয় সমস্ত জ্ঞান দেয়া হলো - যুগে যুগে নবী রাসুলগনের মাধ্যমে তা আবার ঝালাই করে দেয়া হলো যারা ভুলে গেলো তাদের জন্য। কুরআন - হাদীস কিংবা অহি কিংবা আসমানি প্রতিটি আদেশনিষেধ মিলেই একটি পুর্নাঙ্গ সিষ্টেম যা মেনে কাজ করলে পৃথিবীতে আল্লাহর প্রতিনিধিত্বের দায়িত্ব মানুষ পালন করতে পারবে। স্বভাবতই- আল্লাহ সমগ্র সৃষ্টির যেখানেই যা তার মহান নিজস্ব সিস্টেমে পরিচালনা করছেন তাতে থাকে শতভাগ শান্তি আর শৃঙ্খলা - মানুষ যদি তার দায়িত্বের পর্থিব জীবনের কাজটুকু আসমানি হুকুমনামার আলোকে করে, তবে এখানেই থাকবে সেই শান্তি ও শৃঙ্খলা। আল্লাহর প্রতিটি হুকুম (যেমন ধরেন আল্লাহর প্রশংসা করা - মেহেদী ছুপা নাস্তিক যা উল্লেখ করলৌ) ই মানুষকে এই দায়ত্ব পালনে সাহায্য করার জন্য। এখন উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে আল্লাহ প্রশংসা করলে কিভাবে পৃথিবীতে শান্তি আসবে ? - এই প্রশ্ন মাথায় এলে বা এ টাইপের যেকোন প্রশ্নই মাথায় আসুকনা কেন, সমগ্র ব্যাপারটাকে সামগ্রীকতা নিয়ে ভাবতে হবে।
এক টুকরা রাবারের পাইপ দিয়ৈ মবিল প্রবাহিত হচ্ছে। অথবা ধরেন একটা নাট-বল্টু আলগা হয়ৈ আছে। শুধু এটুকু ভাবলে এর কোন গুরুত্বই হয়তো নাই। কিন্তু যখন দেখবেন, রাবারের পাইপটুকু কিংবা নাট-বল্টুটা একটা পাওয়ার জেনারেটরের অংশ তখনন এই পাইপে মবিল বেঁধে গেলেই মেশিন থেকে কাজ পাবেননা।
আল্লাহর প্রতিটি হুকুমের মর্ম বুঝতে হলে যা জানা প্রয়োজন
১. মানব সৃষ্টির উদ্দেশ্য
২. মানবজাতিকে আল্লাহ কি ক্ষমতা দিয়ৈছেন? কেন দিয়েছেন?
৩. আল্লাহর প্রতিনিধিত্ব কি এবং দায়িত্ব পালনের ফলাফল।
এই পৃথিবীর প্রতিটি ঘটনার(যেমন খাবারের অভাবে এক সোমালিয়ান শিশুর মৃত্যু) জন্য দায় নিতে হবে মানুষকে।