আল্লাহ তাআলার সাথে সম্পর্ক স্থাপনের তাৎপর্য সম্পর্কে কুরআন মজীদে বলা হয়েছে : মানুষের জীবন-মরণ, ইবাদাত-বন্দেগী, কুরবানী ইত্যাদি সবকিছু একমাত্র আল্লাহ তাআলার জন্যই নির্ধারিত হবে। এজন্যই নির্দিষ্ট করে তাঁর ইবাদাত করবে :
নিশ্চয়ই আমার সালাত, আমার কুরবানী, আমার জীবন, আমার মৃত্যু একমাত্র রাব্বুল আলামীন আল্লাহর জন্যই উৎসর্গীকৃত। সূরা আল আনআম : ১৬২
সে পূর্ণ একাগ্রতার সাথে দীনকে একমাত্র আল্লাহ তাআলার সম্বন্ধে এমন বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেছেন যে, এর অর্থ ও তাৎপর্যের ভিতর কোনোটাই অস্পষ্টতা নেই।
তাঁর বাণী সমূহ পর্যালোচনা করলে দেখা যায় আল্লাহ তাআলার সাথে সম্পর্ক স্থাপনের অর্থ হচ্ছে :
গোপনে এবং প্রকাশ্যে সকল কাজেই আল্লাহ তাআলাকে ভয় করো।
নিজের উপায়-উপাদানের তুলনায় আল্লাহ তাআলার মহান শক্তির উপরেই অধিক ভরসা করা এবং আল্লাহ তাআলাকে সন্তুষ্ট করার জন্য লোকের বিরাগভাজন হওয়া। এর সম্পূর্ণ বিপরীত অবস্থা হচ্ছে লোকের সন্তুষ্টিলাভের জন্য আল্লাহ তাআলার অসন্তোষ অর্জন করা অতপর এ সংযোগ-সম্পর্ক যখন বৃদ্ধি পেয়ে এমন অবস্থায় উপনীত হবে যে, লোকের সাথে বন্ধুত্ব, শত্রুতা এবং লেন-দেন ইত্যাদি সবকিছুই একমাত্র আল্লাহ তাআলার উদ্দেশ্যেই সম্পন্ন হবে, নিজের ইচ্ছা প্রবৃত্তি বা আগ্রহ ঘৃণার বিন্দুমাত্র প্রভাবও সেখানে থাকবে না, তখনই বুঝতে হবে যে, আল্লাহ তায়ালার সাথে তার সম্পর্ক পরিপূর্ণ হয়েছে।
এছাড়া প্রত্যেক রাতে আপনার দোয়ায়ে কুনুতে যা পাঠ করেন, তার প্রতিটি শব্দই আল্লাহ তাআলার সাথে আপনার এ সম্পর্কের পরিচয় দিচ্ছে। আপনারা আল্লাহ তাআলার সাথে কোন ধরনের যোগ-সম্পর্ক স্থাপনের স্বীকৃতি দিচ্ছেন, তা এ দোয়ার শব্দাবলীর প্রতি লক্ষ্য করলেই সুন্দরূপে বুঝতে পারেন।
হে আল্লাহ! আমরা তোমার কাছে সাহায্য চাচ্ছি, তোমারই কাছে সরল-সত্য পথের নির্দেশ চাচ্ছি, তোমারই কাছে ক্ষমা ভিক্ষা করছি, তোমারই উপরে আস্থা স্থাপন করছি, তোমারই উপর ভরসা করছি এবং তোমার যাবতীয় উত্তম প্রশংসা তোমার জন্য নির্দিষ্ট করছি। আমরা তোমারই কৃতজ্ঞতা পাশে আবদ্ধ, তোমার অকৃতজ্ঞ দলে শামিল নই। তোমার অবাধ্য ব্যক্তিকে আমার বর্জন করে চলি। হে আল্লাহ! আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদাত করি, তোমারই জন্য সালাত আদায় করি, সেজদা করি এবং তোমার জন্যই আমাদের যাবতীয় চেষ্ট-তৎপরতা নিবদ্ধ। আমরা তোমার অনুগ্রহ প্রার্থী এবং তোমার শাস্তি সম্পর্কে ভীত-সন্ত্রস্ত। নিশ্চয়ই তোমার যাবতীয় আযাব কাফেরদের জন্য নির্দিষ্ট।
হযরত রাসূলে করীম (স) তাহাজ্জুদের জন্য উঠার সময় যে দোয়া পাঠ করতেন তাতেও আল্লাহ তাআলার সাথে এ সম্পর্কের একটি চিত্র পাওয়া যায়। তিনি আল্লাহ তাআলাকে উদ্দেশ্য করে বলতেন :
হে আল্লাহ! আমি তোমারই অনুগত হলাম, তোমার প্রতি ঈমান আনলাম, তোমার উপর ভরসা করলাম, তোমার দিকে আমি নির্বিষ্ট হলাম, তোমার জন্যই আমি লড়াই করছি এবং তোমার দরবারেই আমি ফরিয়াদ জানাচ্ছি।
অধ্যায় ০২ : আল্লাহ তাআলার সাথে সম্পর্ক স্থাপনের অর্থ
☼→
হেদায়াত
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
রিসেন্ট ব্লগ পোষ্টস
বিষয়শ্রেণী
রাইটার
প্রিয়-ক্লিক
কিছু বই
- অরক্ষিত স্বাধীনতাই পরাধীনতা
- অর্থনীতিতে রাসূল (সা) এর দশ দফা
- আদর্শ মানব মুহাম্মদ (সা)
- আসহাবে রাসূলের জীবনকথা
- ইসলাম ও জিহাদ
- ইসলাম পরিচিতি
- ইসলামী আন্দোলন : সাফল্যের শর্তাবলী
- ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের পারস্পরিক সম্পর্ক
- ইসলামী আন্দোলনের নৈতিক ভিত্তি
- ইসলামী দাওয়াত ও কর্মনীতি
- ইসলামী নেতৃত্বের গুণাবলী
- ইসলামী বিপ্লবের পথ
- ইসলামী রেনেসাঁ আন্দোলন
- ইসলামী সমাজে মজুরের অধিকার
- একটি আদর্শবাদী দলের পতনের কারণঃ তার থেকে বাঁচার উপায়
- চরিত্র গঠনের মৌলিক উপাদান
- দায়ী’ ইলাল্লাহ - দা’ওয়াত ইলাল্লাহ
- নামাজ কেন আজ ব্যর্থ হচ্ছে
- নামায-রোজার হাকীকত
- মোরা বড় হতে চাই
- যাকাতের হাকীকত
- রাসূলুল্লাহর বিপ্লবী জীবন
- শাহ ওয়ালিউল্লাহ দেহলভী ও তাঁর চিন্তাধারা
- সত্যের সাক্ষ্য
- হেদায়াত
0 comments: