মঙ্গল (Mars) হল সূর্য হতে চতুর্থ দূরবর্তী গ্রহ যা পৃথিবীর ঠিক পরে,
সূর্যের বিপরীতে অবস্থিত। রোমান যুদ্ধ দেবতা Mars এর নামানুসারে এর নাম
মার্স (মঙ্গল) রাখা হয়েছে। মঙ্গলকে অনেক সময় "লাল গ্রহ" (Red Planet) বলেও
অভিহিত করা হয়; কারন এর মাটি আয়রন অক্সাইডের সমন্বয়ে গঠিত (যাকে মরিচা বলা
হয়)।
সৌরজগতে পৃথিবীর পরেই বিজ্ঞানীদের পরম আগ্রহের গ্রহ হল মঙ্গল। কারন পৃথিবী ব্যতিত সৌরজগতে প্রানের অস্তিত্ব থাকার সম্ভবনা সবচে বেশি এই মঙ্গলেই।
পৃথিবী থেকে মঙ্গলকে লাল দেখা গেলেও মঙ্গল থেকে পৃথিবীকে বড় নীল গ্রহ মনে হয়।
মঙ্গলের স্ট্যাটিসটিকসঃ
উপগ্রহঃ ২টি; ফোবস (Phobos) এবং ডিমস (Deimos)
নিজ অক্ষের উপর ঘুর্ণণকালঃ ২৪ ঘন্টা ৩৭ মিনিট
তাপমাত্রাঃ মাইনাস ১৪০ ডিগ্রি হতে ২০ ডিগ্রি সিলসিয়াস পর্যন্ত (গড় তাপমাত্রা মাইনাস ৫৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস)।
মঙ্গলের ১ বছর= পৃথিবীর ৬৮৭ দিন।
ব্যাসঃ ৬৭৯৬ কিমি (৪২২৩ মাইল)
বায়ুমন্ডলঃ মূলত কার্বন-ডাই-অক্সাইড
আপেক্ষিক ঘনত্বঃ ৩.৯ (পানির ১)
সূর্য হতে দূরত্বঃ ২২৭.৯ মিলিয়ন কিমি।
ভরঃ ৬.৪এর পর ২৩টি শুন্য বসালে যত হবে তত কিলোগ্রাম।
মঙ্গল অভিযাত্রাঃ
মঙ্গলে যাত্রাকারী প্রথম মহাকাশযান হল মেরিনার-৪ (১৯৬৫)। তবে মঙ্গলে অবতরণকারী প্রথম মহাকাশ যান হল মার্স-২ (১৯৭৬)। এরপর প্রায় দীর্ঘ ২০ বছর বিরতির পর ১৯৯৭ সালে মঙ্গলে অবতরণ করে পাথফাইন্ডার । বলা হয় পাথফাইন্ডার সবচে সফল মঙ্গল অভিযান। এরপর নিয়মিতই মঙ্গলের বুকে মহাকাশযান অবতরণ করেছে। সর্বশেষ ২০০৮ সালে ফিনিক্স (Phoenix) মঙ্গলে অবতরণ করে; এবং পানির জন্য অনুসন্ধান চালায়।
এ পর্যন্ত যত মঙ্গল অভিযান হয়েছে তার দুই-তৃতীয়াংশ অভিযান অজানা কারনে ব্যর্থ হয়েছে। এজন্য অনেকেই মঙ্গলকে সৌরজগতের "বারমুডা ট্রায়াঙ্গল" বলে থাকেন।
মঙ্গলে পাথ ফাইন্ডার
বায়ুমন্ডলঃ
মঙ্গলের বায়ুমন্ডল খুব পাতলা। এতে কার্বন-ডাই-অক্সাইড ৯৫.৩%, নাইট্রোজেন ২.৭%, আর্গন ১-৬%, অক্সিজেন ০.১৫% এবং পানি ০.০৩% বিদ্যমান। বায়ুমন্ডলের চাপ পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের ১% মাত্র। এছাড়া শক্তিশালী ধুলি-ঝড় মঙ্গলের বায়ুমন্ডলের অন্যতম বৈশিষ্ট। মঙ্গলের আবহাওয়া খুব সম্ভবত সৌরজগতের সবচে মরুময় আবহাওয়া। অবাক হওয়ার মত ব্যাপার যে এত পাতলা বায়ুমন্ডল থাকা সত্বেও মঙ্গলের আবহাওয়া সবচে মরু এবং ধুলিঝড়ময়।
এমনই রুক্ষ মঙ্গলের পৃষ্ঠ
বামের ছবিতে স্বাভাবিক মঙ্গল গ্রহ আর ডানের ছবিতে দেখা যাচ্ছে ধুলিঝড় পুরো মঙ্গলকে ছেয়ে ফেলেছে
মঙ্গলের "চাঁদ"
মঙ্গলের চাঁদ (উপগ্রহ) দুটি। এবং দুটি উপগ্রহই মঙ্গল-পৃষ্ঠ থেকে খুব কাছাকাছি। Phobos এর ব্যাস ১১ কিমি এবং মঙ্গলের পৃষ্ঠ থেকে মাত্র ৯ কিমি দূরে থেকে মঙ্গলকে প্রদক্ষিণ করে। বিজ্ঞানীরা অনুমান করছেন নিকট ভবিষ্যতে (১০ থেকে ৫০ মিলিয়ন বছরের মধ্যে!) Phobos মঙ্গলের বুকে আছড়ে পড়বে। কারন প্রতি ১০০ বছরে Phobos আর মঙ্গলের দূরত্ব ১.৮ মিটার করে কমছে।
মেরিনারের চোখে Phobos
আর Deimos এর ব্যাস ৬ কিমি এবং মঙ্গলের পৃষ্ঠ থেকে ২৩ কিমি দূরে থেকে মঙ্গলকে প্রদক্ষিণ করে।
ভাইকিং এর চোখে Deimos
মধ্যাকর্ষণ এবং চৌম্বকক্ষেত্রঃ
মঙ্গলে খুব ক্ষীণ চৌম্বকক্ষেত্র বিদ্যমান। এর মধ্যাকর্ষণ পৃথিবীর মধ্যাকর্ষণের মাত্র ৩৮% (প্রায় তিন ভাগের এক ভাগ)। একারনে পৃথিবীতে আপনি লাফ দিয়ে ৩ ফুট উঁচুতে উঠতে পারলে মঙ্গলে আপনি লাফ দিয়ে ৯ ফুট উঁচুতে উঠতে পারবেন।
গত শতাব্দির অন্যতম সেরা প্রশ্নঃ মঙ্গলে প্রাণের অস্তিত্ব-সম্ভব নাকি অসম্ভব?
যেকোন গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব থাকার প্রাথমিক শর্ত হল সেখানে পানির উপস্থিতি থাকতে হবে। মঙ্গলে অসংখ্য খাদ/ নালার উপস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এইসব খাদ/ নালার উপস্থিতি থেকে বলা যায় এক সময় মঙ্গলে তরল পদার্থ (যেটা পানি হওয়ার সম্ভবনা খুবই বেশি) প্রবাহমান ছিল এমনকি বন্যাও ছিল। এছাড়া খুব সম্ভবত বড় বড় লেক এমনকি সাগরও ছিল (যা মহাকাশযান থেকে পাঠানো উচ্চ রেজুলুশনের ছবি দেখে ধারণা করা যায়)। তবে এ ধারণাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে মঙ্গলের বর্তমান আবহাওয়া। কারন পুরো মঙ্গল একটি শুষ্ক, ধুলিঝড়ময় গ্রহ। কিন্তু ২০০৫ সালে পাঠানো মঙ্গলের ছবি পর্যালোচনা করে জমাটবাঁধা বরফের সাগরের মত দেখা যায় যা থকে অনুমান করা হয় খুব কাছের অতীতে (প্রায় ৫ মিলিয়ন বছর আগে!!) এই জমাটবাঁধা অংশ তরল ছিল। এইসব অনুমান পৃংখানুপংখ প্রমাণ করা কঠিনই বটে।
তবে ফিনিক্স মহাকাশযানের অনুসন্ধানে পর বিজ্ঞানীরা জোর দিয়ে বলছেন যে মঙ্গলের সারফেসে পানি না থাকলেও ভূ-পৃষ্ঠের নিচে জমাট বাঁধা বরফ আছে।
অনুমান করা হচ্ছে উত্তর মেরুতেই আছে জমাট বাঁধা বরফের "ক্যাপ"
এ পর্যন্ত মহাকাশযানের পাঠানো ছবি ও তথ্য পর্যালোচনা না করে বিজ্ঞানীরা এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে এখন পর্যন্ত মঙ্গলে প্রাণের কোন সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি; সবই অনুমান নির্ভর। তবে সেখানে প্রাণের অস্তিত্ব থাকার সম্ভবনা অতীতে যেমন ছিল, বর্তমানেও আছে। এর কারন হল মঙ্গলের যে সমস্ত অঞ্চলে প্রাণের অস্তিত্ব থাকার সম্ভবনা সবচে বেশি সেখানকার ছবি এবং তথ্য এখনও সুক্ষভাবে পরীক্ষা করা যায়নি। হয়ত ভবিষ্যতে একদিন সত্য জানা যাবে।
মঙ্গলের মজার তথ্যঃ
১। ইংরেজি মাস "মার্চ" এর নাম মঙ্গল গ্রহের (মার্স) নামানুসারে হয়েছে।
২। মঙ্গল গ্রহই একমাত্র গ্রহ যার ভূ-পৃষ্ঠ পৃথিবী থেকে টেলিস্কোপের সাহায্যে পরিষ্কার দেখা যায়।
৩। যদিও মঙ্গল গ্রহ পৃথিবীর তুলনায় অনেক ছোট, তথাপি মঙ্গলের ভূ-পৃষ্ঠের পরিমাণ পৃথিবীর চেয়ে বেশি।
৪। নিজ অক্ষের উপর মঙ্গলের গতি প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ১৪.৫ মাইল (পৃথিবীর ক্ষেত্রে ১৮.৫ মাইল প্রায়)।
৫। গত ৬০,০০০ বছরের মধ্যে ২০০৩ সালে মঙ্গল পৃথিবীর সবচে কাছাকাছি ছিল (মাত্র ৫৫,৭৬০,০০০ কিমি দূরে)।
৬। অতিরিক্ত শুষ্কতার কারনে সৃষ্ট ধুলিঝড় এতই তীব্র হয় যে তা অনেক সময় পুরো গ্রহকে ঢেকে ফেলে।
৭। সৌরজগতের সবচে দীর্ঘতম এবং গভীরতম গিরিখাত Valles Marineris মঙ্গল পৃষ্ঠে অবস্থিত। এটা মঙ্গলের নিরক্ষীয় রেখা বরাবর ৪ হাজার কিমি অঞ্চল জুড়ে বিস্তৃত এবং এর সর্বোচ্চ গভীরতা ৭ কিমি।
৮। মঙ্গলের সর্বোচ্চ পর্বত হল Olympus Mons (আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ যা ২৭ কিমি উঁচু)। এই Olympus Mons হল সৌরজগতের সবচে উঁচু পর্বত (mountain)। এ পর্বত আমাদের এভারেস্টের প্রায় ৩ গুণ উঁচু।
সূর্যের বিপরীতে অবস্থিত। রোমান যুদ্ধ দেবতা Mars এর নামানুসারে এর নাম
মার্স (মঙ্গল) রাখা হয়েছে। মঙ্গলকে অনেক সময় "লাল গ্রহ" (Red Planet) বলেও
অভিহিত করা হয়; কারন এর মাটি আয়রন অক্সাইডের সমন্বয়ে গঠিত (যাকে মরিচা বলা
হয়)।
সৌরজগতে পৃথিবীর পরেই বিজ্ঞানীদের পরম আগ্রহের গ্রহ হল মঙ্গল। কারন পৃথিবী ব্যতিত সৌরজগতে প্রানের অস্তিত্ব থাকার সম্ভবনা সবচে বেশি এই মঙ্গলেই।
পৃথিবী থেকে মঙ্গলকে লাল দেখা গেলেও মঙ্গল থেকে পৃথিবীকে বড় নীল গ্রহ মনে হয়।
মঙ্গলের স্ট্যাটিসটিকসঃ
উপগ্রহঃ ২টি; ফোবস (Phobos) এবং ডিমস (Deimos)
নিজ অক্ষের উপর ঘুর্ণণকালঃ ২৪ ঘন্টা ৩৭ মিনিট
তাপমাত্রাঃ মাইনাস ১৪০ ডিগ্রি হতে ২০ ডিগ্রি সিলসিয়াস পর্যন্ত (গড় তাপমাত্রা মাইনাস ৫৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস)।
মঙ্গলের ১ বছর= পৃথিবীর ৬৮৭ দিন।
ব্যাসঃ ৬৭৯৬ কিমি (৪২২৩ মাইল)
বায়ুমন্ডলঃ মূলত কার্বন-ডাই-অক্সাইড
আপেক্ষিক ঘনত্বঃ ৩.৯ (পানির ১)
সূর্য হতে দূরত্বঃ ২২৭.৯ মিলিয়ন কিমি।
ভরঃ ৬.৪এর পর ২৩টি শুন্য বসালে যত হবে তত কিলোগ্রাম।
মঙ্গল অভিযাত্রাঃ
মঙ্গলে যাত্রাকারী প্রথম মহাকাশযান হল মেরিনার-৪ (১৯৬৫)। তবে মঙ্গলে অবতরণকারী প্রথম মহাকাশ যান হল মার্স-২ (১৯৭৬)। এরপর প্রায় দীর্ঘ ২০ বছর বিরতির পর ১৯৯৭ সালে মঙ্গলে অবতরণ করে পাথফাইন্ডার । বলা হয় পাথফাইন্ডার সবচে সফল মঙ্গল অভিযান। এরপর নিয়মিতই মঙ্গলের বুকে মহাকাশযান অবতরণ করেছে। সর্বশেষ ২০০৮ সালে ফিনিক্স (Phoenix) মঙ্গলে অবতরণ করে; এবং পানির জন্য অনুসন্ধান চালায়।
এ পর্যন্ত যত মঙ্গল অভিযান হয়েছে তার দুই-তৃতীয়াংশ অভিযান অজানা কারনে ব্যর্থ হয়েছে। এজন্য অনেকেই মঙ্গলকে সৌরজগতের "বারমুডা ট্রায়াঙ্গল" বলে থাকেন।
মঙ্গলে পাথ ফাইন্ডার
বায়ুমন্ডলঃ
মঙ্গলের বায়ুমন্ডল খুব পাতলা। এতে কার্বন-ডাই-অক্সাইড ৯৫.৩%, নাইট্রোজেন ২.৭%, আর্গন ১-৬%, অক্সিজেন ০.১৫% এবং পানি ০.০৩% বিদ্যমান। বায়ুমন্ডলের চাপ পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের ১% মাত্র। এছাড়া শক্তিশালী ধুলি-ঝড় মঙ্গলের বায়ুমন্ডলের অন্যতম বৈশিষ্ট। মঙ্গলের আবহাওয়া খুব সম্ভবত সৌরজগতের সবচে মরুময় আবহাওয়া। অবাক হওয়ার মত ব্যাপার যে এত পাতলা বায়ুমন্ডল থাকা সত্বেও মঙ্গলের আবহাওয়া সবচে মরু এবং ধুলিঝড়ময়।
এমনই রুক্ষ মঙ্গলের পৃষ্ঠ
বামের ছবিতে স্বাভাবিক মঙ্গল গ্রহ আর ডানের ছবিতে দেখা যাচ্ছে ধুলিঝড় পুরো মঙ্গলকে ছেয়ে ফেলেছে
মঙ্গলের "চাঁদ"
মঙ্গলের চাঁদ (উপগ্রহ) দুটি। এবং দুটি উপগ্রহই মঙ্গল-পৃষ্ঠ থেকে খুব কাছাকাছি। Phobos এর ব্যাস ১১ কিমি এবং মঙ্গলের পৃষ্ঠ থেকে মাত্র ৯ কিমি দূরে থেকে মঙ্গলকে প্রদক্ষিণ করে। বিজ্ঞানীরা অনুমান করছেন নিকট ভবিষ্যতে (১০ থেকে ৫০ মিলিয়ন বছরের মধ্যে!) Phobos মঙ্গলের বুকে আছড়ে পড়বে। কারন প্রতি ১০০ বছরে Phobos আর মঙ্গলের দূরত্ব ১.৮ মিটার করে কমছে।
মেরিনারের চোখে Phobos
আর Deimos এর ব্যাস ৬ কিমি এবং মঙ্গলের পৃষ্ঠ থেকে ২৩ কিমি দূরে থেকে মঙ্গলকে প্রদক্ষিণ করে।
ভাইকিং এর চোখে Deimos
মধ্যাকর্ষণ এবং চৌম্বকক্ষেত্রঃ
মঙ্গলে খুব ক্ষীণ চৌম্বকক্ষেত্র বিদ্যমান। এর মধ্যাকর্ষণ পৃথিবীর মধ্যাকর্ষণের মাত্র ৩৮% (প্রায় তিন ভাগের এক ভাগ)। একারনে পৃথিবীতে আপনি লাফ দিয়ে ৩ ফুট উঁচুতে উঠতে পারলে মঙ্গলে আপনি লাফ দিয়ে ৯ ফুট উঁচুতে উঠতে পারবেন।
গত শতাব্দির অন্যতম সেরা প্রশ্নঃ মঙ্গলে প্রাণের অস্তিত্ব-সম্ভব নাকি অসম্ভব?
যেকোন গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব থাকার প্রাথমিক শর্ত হল সেখানে পানির উপস্থিতি থাকতে হবে। মঙ্গলে অসংখ্য খাদ/ নালার উপস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এইসব খাদ/ নালার উপস্থিতি থেকে বলা যায় এক সময় মঙ্গলে তরল পদার্থ (যেটা পানি হওয়ার সম্ভবনা খুবই বেশি) প্রবাহমান ছিল এমনকি বন্যাও ছিল। এছাড়া খুব সম্ভবত বড় বড় লেক এমনকি সাগরও ছিল (যা মহাকাশযান থেকে পাঠানো উচ্চ রেজুলুশনের ছবি দেখে ধারণা করা যায়)। তবে এ ধারণাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে মঙ্গলের বর্তমান আবহাওয়া। কারন পুরো মঙ্গল একটি শুষ্ক, ধুলিঝড়ময় গ্রহ। কিন্তু ২০০৫ সালে পাঠানো মঙ্গলের ছবি পর্যালোচনা করে জমাটবাঁধা বরফের সাগরের মত দেখা যায় যা থকে অনুমান করা হয় খুব কাছের অতীতে (প্রায় ৫ মিলিয়ন বছর আগে!!) এই জমাটবাঁধা অংশ তরল ছিল। এইসব অনুমান পৃংখানুপংখ প্রমাণ করা কঠিনই বটে।
তবে ফিনিক্স মহাকাশযানের অনুসন্ধানে পর বিজ্ঞানীরা জোর দিয়ে বলছেন যে মঙ্গলের সারফেসে পানি না থাকলেও ভূ-পৃষ্ঠের নিচে জমাট বাঁধা বরফ আছে।
অনুমান করা হচ্ছে উত্তর মেরুতেই আছে জমাট বাঁধা বরফের "ক্যাপ"
এ পর্যন্ত মহাকাশযানের পাঠানো ছবি ও তথ্য পর্যালোচনা না করে বিজ্ঞানীরা এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে এখন পর্যন্ত মঙ্গলে প্রাণের কোন সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি; সবই অনুমান নির্ভর। তবে সেখানে প্রাণের অস্তিত্ব থাকার সম্ভবনা অতীতে যেমন ছিল, বর্তমানেও আছে। এর কারন হল মঙ্গলের যে সমস্ত অঞ্চলে প্রাণের অস্তিত্ব থাকার সম্ভবনা সবচে বেশি সেখানকার ছবি এবং তথ্য এখনও সুক্ষভাবে পরীক্ষা করা যায়নি। হয়ত ভবিষ্যতে একদিন সত্য জানা যাবে।
মঙ্গলের মজার তথ্যঃ
১। ইংরেজি মাস "মার্চ" এর নাম মঙ্গল গ্রহের (মার্স) নামানুসারে হয়েছে।
২। মঙ্গল গ্রহই একমাত্র গ্রহ যার ভূ-পৃষ্ঠ পৃথিবী থেকে টেলিস্কোপের সাহায্যে পরিষ্কার দেখা যায়।
৩। যদিও মঙ্গল গ্রহ পৃথিবীর তুলনায় অনেক ছোট, তথাপি মঙ্গলের ভূ-পৃষ্ঠের পরিমাণ পৃথিবীর চেয়ে বেশি।
৪। নিজ অক্ষের উপর মঙ্গলের গতি প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ১৪.৫ মাইল (পৃথিবীর ক্ষেত্রে ১৮.৫ মাইল প্রায়)।
৫। গত ৬০,০০০ বছরের মধ্যে ২০০৩ সালে মঙ্গল পৃথিবীর সবচে কাছাকাছি ছিল (মাত্র ৫৫,৭৬০,০০০ কিমি দূরে)।
৬। অতিরিক্ত শুষ্কতার কারনে সৃষ্ট ধুলিঝড় এতই তীব্র হয় যে তা অনেক সময় পুরো গ্রহকে ঢেকে ফেলে।
৭। সৌরজগতের সবচে দীর্ঘতম এবং গভীরতম গিরিখাত Valles Marineris মঙ্গল পৃষ্ঠে অবস্থিত। এটা মঙ্গলের নিরক্ষীয় রেখা বরাবর ৪ হাজার কিমি অঞ্চল জুড়ে বিস্তৃত এবং এর সর্বোচ্চ গভীরতা ৭ কিমি।
৮। মঙ্গলের সর্বোচ্চ পর্বত হল Olympus Mons (আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ যা ২৭ কিমি উঁচু)। এই Olympus Mons হল সৌরজগতের সবচে উঁচু পর্বত (mountain)। এ পর্বত আমাদের এভারেস্টের প্রায় ৩ গুণ উঁচু।
লেখক : জর্জিস
0 comments: