ভিন্ন ধারার গণমাধ্যম উইকিলিকসের ফাঁস করা তথ্যে ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগের লগি-বৈঠা সহিংসতার ঘটনাও এবার ঠাঁই পেয়েছে। প্রকাশ্যে লগি-বৈঠা দিয়ে পিটিয়ে মানুষ হত্যা করার লোমহর্ষক সে কথাই ওয়াশিংটনে জানিয়েছিলেন তত্-কালীন মার্কিন রাষ্ট্রদূত প্যাট্রিসিয়া বিউটেনিস। গোপন বার্তায় তিনি বলে-ছিলেন, আওয়ামী লীগ সমর্থকদের হাতেই ২৮ অক্টোবর জামায়াতের ৫ জন সমর্থক নির্মমভাবে নিহত হয়েছিল। তার বর্ণনামতে, লগি-বৈঠা দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে লাশের ওপর নর্তন-কুর্দনও করেছে আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকরা। তার বর্ণনা থেকে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের হাতে পুলিশের প্যান্ট খুলে নেয়ার ঘটনার বর্ণনাও বাদ যায়নি।
সে সময় প্রধান বিরোধী দল আওয়ামী লীগ কীভাবে রাজনৈতিক ময়দান সহিংস করে তোলে, তা-ও রাষ্ট্রদূত জানিয়েছেন মার্কিন বার্তায়। ২০০৬ সালের ২৯ অক্টোবর ও ২ নভেম্বর পৃথক দুই তারবার্তায় বিউটেনিস এ কথা জানান।
২৯ অক্টোবর ওয়াশিংটনে পাঠানো গোপন বার্তায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত প্যাট্রিসিয়া বিউটেনিস বলেন, রোববার ঢাকার রাজপথ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এ দিন প্রেসিডেন্ট ইয়াজউদ্দিন পৃথকভাবে বৈঠক করেন পরবর্তী প্রধান উপদেষ্টা পদে একজন সর্বজনগ্রাহ্য ব্যক্তিকে নিয়োগ দেয়ার জন্য।
বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জামায়াতে ইসলামী, প্রেসিডেন্ট ইয়াজউদ্দিনের স্বয়ং প্রধান উপদেষ্টার পদ গ্রহণ করার প্রস্তাব সমর্থন করে। কিন্তু বিরোধী দল আওয়ামী লীগ তা প্রত্যাখ্যান করে।
বিউটেনিস লিখেছেন, শনিবার সহিংসতায় ১৫ জন মারা গেছে, শত শত আহত হয়েছে, আর এটা হয়েছে আওয়ামী লীগের প্ররোচনায়। বিচারপতি কেএম হাসান প্রধান উপদেষ্টা হতে আগ্রহী নন—এ ঘোষণা দেয়ার পরও রাস্তায় সহিংসতা করতে থাকে দলটি। চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের মেয়র বন্দর বন্ধ করে দিয়েছে। ঢাকা ও সিলেটের সড়কও বন্ধ রয়েছে।
ক্ষমতাসীন জাতীয়তাবাদী দলের ক্ষমতা ছাড়ার কথা ছিল ২৮ অক্টোবর। সহিংসতা অব্যাহত থাকায় আগের দিন সন্ধ্যায় বিচারপতি হাসান বলেন, ‘আমি জাতীয় স্বার্থে দায়িত্ব গ্রহণে প্রস্তুত ছিলাম, কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলোর সহিংস মনোভাবের কারণে আমার পক্ষে তা আর সম্ভব হচ্ছে না।’
বিউটেনিস বার্তায় লিখেন, আওয়ামী লীগ অভিযোগ করে আসছিল, বিচারপতি হাসান ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিএনপিপন্থী। বিচারপতি হাসানের পর সংবিধান অনুযায়ী বিচারপতি মাহমুদুল আমিন চৌধুরী প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার কথা, কিন্তু জাতীয়তাবাদী দল তার ব্যাপারে একমত নয়। তারা বলছে, বিচারপতি মাহমুদুল আমিন গ্রহণযোগ্য নয়। কেননা সংবিধান অনুযায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিচারপতি আজিজ প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার কথা। তিনিই সর্বশেষ অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি। আওয়ামী লীগ অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি হামিদুল হকের নাম প্রস্তাব করেছিল, কিন্তু হামিদুল হক তার নাম প্রস্তাবের বাইরে রাখতে বলেন।
আওয়ামী লীগের দুজন সিনিয়র নেতার সঙ্গে পৃথক বৈঠককালে রাষ্ট্রদূত বিউটেনিস সহিংসতায় তার উদ্বেগের কথা জানান এবং বিচারপতি হাসানের বিষয়ে ক্রমাগত সহিংসতাকে উত্সাহিত করার কারণ জানতে চান।
রাষ্ট্রদূত লিখেছেন, ‘আওয়ামী লীগ প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার সাংবিধানিক প্রভিশনগুলো নিয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছিল। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন দল বিচারপতি হাসানকে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে গ্রহণযোগ্য করার চেষ্টা করে যাচ্ছিল।
বার্তার শেষে বিউটেনিস তার মন্তব্যে বলেন, ঢাকার পরিস্থিতি এখন উত্তেজনাপূর্ণ। নতুন করে সহিংসতার প্রেক্ষিতে গুজব ছড়িয়ে পড়েছে, জরুরি অবস্থা জারি হতে পারে। কয়েকজন বিচারপতি ও রাজনৈতিক নেতা আমাদের জানিয়েছেন, রাজপথে যারা সহিংসতা করছে তারা সবাই আওয়ামী লীগের, অন্য দলের কেউ নয়। প্রেসিডেন্ট আহমেদ তার ভাষণে বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নষ্ট হওয়ার বিষয়গুলো জানিয়েছেন।
রাষ্ট্রদূত বিউটেনিস ২ নভেম্বর ওয়াশিংটনে পাঠানো গোপন তারবার্তায় বলেন, ২ নভেম্বর রাষ্ট্রদূত বিউটেনিস ও পোলফ (নোট সংগ্রহকারী) জামায়াতে ইসলামীর আমির ও বিদায়ি শিল্পমন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামীর সঙ্গে বৈঠক করেন। জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল ও বিদায়ি সমাজকল্যাণ মন্ত্রী আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান ও ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাকও সভায় উপস্থিত ছিলেন।
নিজামী রাষ্ট্রদূতকে বলেন, তারা সবসময় সহিংসতার বিরুদ্ধে। তিনি অভিযোগ করেন, জামায়াতে ইসলামী গত ২৮ ও ২৯ অক্টোবর আওয়ামী লীগের সহিংসতার শিকার হয়। তিনি বলেন, জাতীয় মসজিদের কাছে জামায়াতের সমাবেশে আওয়ামী লীগ সমর্থকরা লগি-বৈঠা, বোমা ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা করে। এতে তাদের ৫ সমর্থক ঘটনাস্থলেই মারা যায়। তিনি বলেন, সারাদেশে সহিংসতায় তাদের ১৩ জন সমর্থক নিহত হয়েছে।
জামায়াতে ইসলামীর নেতারা রাষ্ট্রদূতকে ১০ মিনিটের ভিডিও ডকুমেন্টারি দেখান। সহিংসতা নিয়ে টিভি ফুটেজ দিয়ে এটা তৈরি করা হয়েছে। এতে জামায়াত কর্মীদের ওপর আওয়ামী লীগ কর্মীদের পাশবিক নির্যাতনের ঘটনা ঠাঁই পেয়েছে।
সে সময় প্রধান বিরোধী দল আওয়ামী লীগ কীভাবে রাজনৈতিক ময়দান সহিংস করে তোলে, তা-ও রাষ্ট্রদূত জানিয়েছেন মার্কিন বার্তায়। ২০০৬ সালের ২৯ অক্টোবর ও ২ নভেম্বর পৃথক দুই তারবার্তায় বিউটেনিস এ কথা জানান।
২৯ অক্টোবর ওয়াশিংটনে পাঠানো গোপন বার্তায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত প্যাট্রিসিয়া বিউটেনিস বলেন, রোববার ঢাকার রাজপথ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এ দিন প্রেসিডেন্ট ইয়াজউদ্দিন পৃথকভাবে বৈঠক করেন পরবর্তী প্রধান উপদেষ্টা পদে একজন সর্বজনগ্রাহ্য ব্যক্তিকে নিয়োগ দেয়ার জন্য।
বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জামায়াতে ইসলামী, প্রেসিডেন্ট ইয়াজউদ্দিনের স্বয়ং প্রধান উপদেষ্টার পদ গ্রহণ করার প্রস্তাব সমর্থন করে। কিন্তু বিরোধী দল আওয়ামী লীগ তা প্রত্যাখ্যান করে।
বিউটেনিস লিখেছেন, শনিবার সহিংসতায় ১৫ জন মারা গেছে, শত শত আহত হয়েছে, আর এটা হয়েছে আওয়ামী লীগের প্ররোচনায়। বিচারপতি কেএম হাসান প্রধান উপদেষ্টা হতে আগ্রহী নন—এ ঘোষণা দেয়ার পরও রাস্তায় সহিংসতা করতে থাকে দলটি। চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের মেয়র বন্দর বন্ধ করে দিয়েছে। ঢাকা ও সিলেটের সড়কও বন্ধ রয়েছে।
ক্ষমতাসীন জাতীয়তাবাদী দলের ক্ষমতা ছাড়ার কথা ছিল ২৮ অক্টোবর। সহিংসতা অব্যাহত থাকায় আগের দিন সন্ধ্যায় বিচারপতি হাসান বলেন, ‘আমি জাতীয় স্বার্থে দায়িত্ব গ্রহণে প্রস্তুত ছিলাম, কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলোর সহিংস মনোভাবের কারণে আমার পক্ষে তা আর সম্ভব হচ্ছে না।’
বিউটেনিস বার্তায় লিখেন, আওয়ামী লীগ অভিযোগ করে আসছিল, বিচারপতি হাসান ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিএনপিপন্থী। বিচারপতি হাসানের পর সংবিধান অনুযায়ী বিচারপতি মাহমুদুল আমিন চৌধুরী প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার কথা, কিন্তু জাতীয়তাবাদী দল তার ব্যাপারে একমত নয়। তারা বলছে, বিচারপতি মাহমুদুল আমিন গ্রহণযোগ্য নয়। কেননা সংবিধান অনুযায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিচারপতি আজিজ প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার কথা। তিনিই সর্বশেষ অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি। আওয়ামী লীগ অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি হামিদুল হকের নাম প্রস্তাব করেছিল, কিন্তু হামিদুল হক তার নাম প্রস্তাবের বাইরে রাখতে বলেন।
আওয়ামী লীগের দুজন সিনিয়র নেতার সঙ্গে পৃথক বৈঠককালে রাষ্ট্রদূত বিউটেনিস সহিংসতায় তার উদ্বেগের কথা জানান এবং বিচারপতি হাসানের বিষয়ে ক্রমাগত সহিংসতাকে উত্সাহিত করার কারণ জানতে চান।
রাষ্ট্রদূত লিখেছেন, ‘আওয়ামী লীগ প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার সাংবিধানিক প্রভিশনগুলো নিয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছিল। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন দল বিচারপতি হাসানকে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে গ্রহণযোগ্য করার চেষ্টা করে যাচ্ছিল।
বার্তার শেষে বিউটেনিস তার মন্তব্যে বলেন, ঢাকার পরিস্থিতি এখন উত্তেজনাপূর্ণ। নতুন করে সহিংসতার প্রেক্ষিতে গুজব ছড়িয়ে পড়েছে, জরুরি অবস্থা জারি হতে পারে। কয়েকজন বিচারপতি ও রাজনৈতিক নেতা আমাদের জানিয়েছেন, রাজপথে যারা সহিংসতা করছে তারা সবাই আওয়ামী লীগের, অন্য দলের কেউ নয়। প্রেসিডেন্ট আহমেদ তার ভাষণে বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নষ্ট হওয়ার বিষয়গুলো জানিয়েছেন।
রাষ্ট্রদূত বিউটেনিস ২ নভেম্বর ওয়াশিংটনে পাঠানো গোপন তারবার্তায় বলেন, ২ নভেম্বর রাষ্ট্রদূত বিউটেনিস ও পোলফ (নোট সংগ্রহকারী) জামায়াতে ইসলামীর আমির ও বিদায়ি শিল্পমন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামীর সঙ্গে বৈঠক করেন। জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল ও বিদায়ি সমাজকল্যাণ মন্ত্রী আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান ও ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাকও সভায় উপস্থিত ছিলেন।
নিজামী রাষ্ট্রদূতকে বলেন, তারা সবসময় সহিংসতার বিরুদ্ধে। তিনি অভিযোগ করেন, জামায়াতে ইসলামী গত ২৮ ও ২৯ অক্টোবর আওয়ামী লীগের সহিংসতার শিকার হয়। তিনি বলেন, জাতীয় মসজিদের কাছে জামায়াতের সমাবেশে আওয়ামী লীগ সমর্থকরা লগি-বৈঠা, বোমা ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা করে। এতে তাদের ৫ সমর্থক ঘটনাস্থলেই মারা যায়। তিনি বলেন, সারাদেশে সহিংসতায় তাদের ১৩ জন সমর্থক নিহত হয়েছে।
জামায়াতে ইসলামীর নেতারা রাষ্ট্রদূতকে ১০ মিনিটের ভিডিও ডকুমেন্টারি দেখান। সহিংসতা নিয়ে টিভি ফুটেজ দিয়ে এটা তৈরি করা হয়েছে। এতে জামায়াত কর্মীদের ওপর আওয়ামী লীগ কর্মীদের পাশবিক নির্যাতনের ঘটনা ঠাঁই পেয়েছে।
0 comments: