১.পরস্পরের সাপেক্ষে ধ্রুববেগে ধাবমান সকল রেফারেন্স ফ্রেমে পদার্থ বিজ্ঞানের যে কোন সূত্র একই রকম সমীকরণ দ্বারা প্রকাশ করা যায়।
২. শূণ্যস্থানে বা বায়ু মাধ্যমে আলোর বেগ ধ্রুব এবং এ বেগ আলোর উৎস ও পর্যবেক্ষকের আপেক্ষিক বেগের ওপর নির্ভরশীল না ।
এবং কোন বস্তু থেকে বিকিরিত আলো আমাদের চোখে এসে পৌছালেই আমরা তাকে দেখতে পারি । যেমন সূর্যকে প্রকৃতপক্ষে ৮ মিনিট পরে দেখি আমরা ।
প্রথম কথা হলো মিরাজ মহান-নবী মুহাম্মাদ সা এর জন্য একটি মিরাকল বা মু'জেজা । মিরাকল এমনই ফ্যাক্ট যার মানেই হচ্ছে মানবীয় ব্যাখ্যা দিয়ে তাকে আয়ত্ব করা সম্ভব না । যদি মিরাকল কে মানুষ বুঝেই ফেলে তবে সেটা আর মিরাকল থাকেনা ।
মিরাজের রাত্রিতে কি হয়েছিলো :
১. সুরা বণী ইসরাইলের প্রথম আয়াত, তিনি সেই পরম-পবিত্র মহিমাময় সত্ত্বা যিনি তার স্বীয় বান্দাহ কে এক রাতে ভ্রমণ করিয়েছেন মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত । যার পরিবেশকে করেছেন তিনি বরকতময় । যেন তাকে নিজের কিছু কুদরত দেখান । নিশ্চয় ই তিনি সবকিছুর শ্রোতা ও দ্রষ্টা ।
২. সুরা নাজ্ ম এর ১৩-১৮ আয়াত, ...পুনরায় আর একবার সে তাকে (জিবরাঈল্) সিদরাতুল মুনতাহার নিকটে দেখেছে । যার সন্নিকটেই জান্নাতুল মাওয়া অবস্থিত । সে সময় সিদরাকে আচ্ছাদিত করছিলো এক আচ্ছাদনকারী জিনিস । দৃষ্টিঝলসেও যায়নি কিংবা সীমা অতিক্রমও করেনি । সে তার রবের বড় বড় নিদর্শনসমূহ দেখেছে ।
-৬২২ খৃষ্টাব্দের ২৭ রজব মধ্যরাতে জিবরাঈল আ মুহাম্মদ সা এর কাছে এলেন "বুরাক" নামের বাহন নিয়ে । বুরাক শব্দটির অর্থ বিদ্যুৎ বা ইলেকট্রিসিটি শব্দের সাথে সম্পর্কিত ...
- রাসুল সা এসময় ঘুমিয়ে ছিলেন । জিবরাঈল আ তাকে ঘুম থেকে জাগিয়ে আল্লাহর ম্যাসেজ পৌছে দিলেন । এসময় রাসুলুল্লাহ সা এর বক্ষ পুনরায় বিদীর্ণ করে জমজমের পানি দিয়ে ধোয়া হয় । হাদীসের বর্ণনা অনুযায়ী রাসুলের বক্ষ (অন্তর) প্রজ্ঞা এবং আলো [ইংরেজীতে wisdom ও splendour (special light "Noor") ] দিয়ে পূর্ণ করে দেয়া হয়!! রাসুল সা এরপর হাউজে কাউসর এর পানি তে গোসল করেন !
-মিরাজের যাত্রার দুটি অংশ ছিলো । প্রথমটি আনুভূমিক দ্বিতীয়টি উলম্ব । প্রথম অংশটিকে ইসরা বলা হয় । এসময়ের ভ্রমণটি ছিলো বায়তুল্লাহ (কাবা) থেকে বায়তুল মুকাদ্দাস পর্যন্ত । বায়তুল মুকাদ্দাসে (মসজিদুল আকসা-ফিলিস্তীন) আল্লাহ তায়ালা সকল নবীর সমাবেশ ঘটান । এসময়ে সকল নবী এবং ফেরেস্তারা সম্মিলিতভাবে ২ রাকায়াত নামাজ আদায় করেন নবী মুহাম্মাদ রাসুলুল্লাহ সা এর ইমামতিতে ।
- এখান থেকে শুরু হয় উদ্র্ধমূখী যাত্রা । মানুষের কল্পণার অতীত গতিতে বোরাক ছুটে চলে মহাশূণ্যের দিকে । আকাশের প্রতিটি স্তরে প্রধান ফেরেস্তাগন এবং নবীদের সাথে সাক্ষাৎ এবং কথাবার্তা হয় রাসুলুল্লাহ সা এর সাথে । ১ম স্তরে হযরত আদম (Adam) আ, ২-য় স্তরে হযরত ইয়াহিয়া (John) আ এবং হযরত ইশা (Jesus Christ) আ, ৩-য় স্তরে হযরত ইউসুফ (Joseph) আ , চতুর্থ স্তরে হযরত ইদরীস (Enoch) আ, পন্ঞম স্তরে হযরত হারুন (Aaron) আ , ষ্ষঠ স্তরে হযরত মুসা (Moses) আ এবং সপ্তম স্তরে হযরত ইব্রাহীম (Abraham) আ মুহাম্মদ সা কে স্বাগতম জানান
- জীবরাইল আ এর বোরাক পরিচালনায় রাসুল সা সিদরাতুল মুনতাহা নামক স্থানে এসে পৌছলে উদ্র্ধমূখী যাত্রার দ্বিতীয় স্তর শুরু হয় । এপর্যায়ে জীবরাঈল আ আর অগ্রসর হতে অপারগতা প্রকাশ করেন ।
-বাহন পরিবর্তন হয় এখানে । রফরফ নামের আরেকটি যান রাসুলুল্লাহ সা কে আল্লাহর নিকটবর্তী স্থানে (!!) পৌছে দেয়ার দায়িত্ব নেয় !
আইনস্টাইন ও স্পেশাল থিওরী অব রিলেটিভিটি :
আলবার্ট আইনস্টাইন তার স্পেশাল থিওরী আব রিলেটিভিটি প্রকাশ করেন ১৯০৫ সালে এবং জেনারেল থিওরী অব রিলেটিভিটি প্রকাশ করেন ১৯১৭ সালে । এখানে সাধারন একটা প্রশ্ন মনে আসে তাহলো, কেন তিনি স্পেশাল থিওরী, জেনারেল থিওরীর আগেই প্রকাশ করলেন । জানিনা... কেউ জানলে জানাতে পারেন ...
প্রথম স্বীকার্য: Special Principle of Relativity - The laws of physics are the same in all inertial frames of reference. In other words, there are no privileged inertial frames of reference.
দ্বিতীয় স্বীকার্য: - Invariance of c - The speed of light in a vacuum is a universal constant, c, which is independent of the motion of the light source.
এ থিওরী থেকে প্রাপ্ত ফলাফল :
১. টাইম ডায়ালেশন (সময় দীর্ঘায়ণ) : একই ঘটনার , স্থির কোন স্থানে পরিমাপকৃত সময়ব্যবধান ধ্রুববেগে গতিশীল স্থানে পরিমাপকৃত সময় ব্যবধানের চাইতে বেশি । (অর্থাৎ রুমে বসে ব্লগ লিখতে ৩ মিনিট লাগলে কোন মহাকাশযানে বসে লিখতে হয়তো ১ মিনিট লাগবে- ব্যাপারটা এরকম...)
২.Relativity of simultaneity : মনে করুন, আপনি কোথাও দাড়িয়ে একই সাথে ২ টি ঘটনা ঘটতে দেখছেন । কিন্তু ওই ঘটনাদুটিই অন্য কোন স্থান ( ধরুন, গতিশীল) থেকে অন্য কেউ একই সাথে ঘটতে দেখবে না । সে দেখবে একটি ঘটনা শেষ হবার পর বা শুরু হবার কিছুক্ষণ পর আরেকটি শুরু হলো ।
৩. লরেন্জ কনট্রাকশন : একই বস্তুর ডাইমেনশন (দৈর্ঘ্য..উচ্চতা..) গুলো দুটি ভিন্ন গতিতে গতিশীল স্থান থেকে মাপলে ভিন্ন ভিন্ন পাওয়া যাবে ।
৪. বস্তু গতিশীল হলে এর ভর বৃদ্ধি পায়....
৫. E = mc² ......... ভর আর শক্তি একই সত্তার ভিন্ন রূপ এবং রূপান্তরযোগ্য ।
....
....
....
মি'রাজ ও স্পেশাল থিওরী অব রিলেটিভিটি :
১. রাসুলুল্লাহ সা এর উদ্র্ধগমনের সম্ভ্যাব্যতার ব্যাপারটি নিয়ে প্রশ্নের কোন অবকাশ ই নেই । যেহেতু মহাকাশ ভ্রমন সংক্রান্ত বৈজ্ঞানিক থিওরী -ও আজকাল অনেক পুরোনো হয়ে গেছে ।
২. অন্তত একজন হলেও লাইট-স্পিড বা এর চেয়ে বেশি গতিতে ভ্রমণ করতেই হবে আইনস্টাইনের সূত্রকে বাস্তবতা দেয়ার স্বার্থে হলেও । ধরে নেই সেই ভ্রমণকারী মুহাম্মাদ সা ।
৩. মহাবিশ্ব ভ্রমণ শেষে রাসুল সা ফিরে এসে দেখতে পান, দরজার শেকল ঠিক আগের অবস্থানে দুলছে । এতবিশাল স্থান অতিক্রম করার পরেও সময়ের কোন হেরফের কিভাবে না হয়ে পারে ?
উত্তর ১: আল্লাহ ইজ অলমাইটি..
উত্তর ২: স্পেশাল থিওরী অব রিলেটিভিটির; টাইম-স্পেস-ভেলোসিটি রিলেশন । আলোর গতির সমান গতিতে চললেই সময় স্থির হয়ে যাবে খুব সহজে । তখন সময়কে ধরে রেখে যতখানি ইচ্ছা কাজ করে নেয়া সম্ভব । টাইম ডায়লেশন এবং Relativity of simultaneity মূলত এ দুটি ফলাফল এ ঘটনার ব্যাখ্যা ।
৪. আলো ১ বছরে ৯.৪৬ ট্রিলিয়ন কিলোমিটার পরিমান স্থান অতিক্রম করতে পারে । এবং বলা হয় পৃথিবীকে কেন্দ্র ভাবলে দৃশ্যমান মহাবিশ্বের ব্যাসার্ধ ৪৬.৫০ বিলিয়ন আলোকবর্ষ । অর্থাৎ আলোর গতিতে চললেও এই দৃশ্যমান মহাবিশ্বের শেষ প্রান্তে পৌছুতে এত বিশাল সময়ের প্রয়োজন । যদিও মহাবিশ্বের সত্যিকার ব্যাস আরো অনেক অনেক বেশি । তো, প্রশ্ন দাড়ালো রাসুল সা কিভাবে এত বিরাট সময়কে অতি অল্প সময়ের মধ্যে শেষ করতে পারলেন ?
উত্তর : স্পেশাল রিলেটিভিটি থিওরী থেকে প্রাপ্ত লরেন্জ কন্ট্রাকশন ফলাফল । এ ফলাফল অনুযায়ী গতিশীল অবস্থানে দৈর্ঘ্য সংকুচিত হয়ে যায় । অর্থাৎ রাসুল সা এর জন্য গতির কারনে মহাবিশ্বের বিশাল দৈর্ঘ্য ছোট হয়ে গিয়েছিলো । আল্লাহ ই জানেন , আসলে কি হয়েছিলো !!
৫. E=mc2 সূত্র অনুযায়ী, কোন বস্তু আলোর গতিতে চলমান হলে তা বস্তু থেকে শক্তিতে রুপান্তরিত হয়ে যাবে । এই শক্তি যখন পুনরায় বস্তুতে রুপান্তরিত হবে তখন কিছু পরিমান লস হবে যা mass defect বলে পরিচিত । কোন জীবন্ত শরীর এই প্রকৃয়ার মধ্য দিয়ে গেলে নাকি তার শারীরীক কিছু পরিবর্তরন হওয়া উচিত । যেমন শরীরের অংগ প্রত্যংগ গুলোর অবস্থান পরিবর্তন । কিন্তু মিরাজের ক্ষেতে এমনটা হয়নি । কেন ?
উত্তর : এখানে একটি ব্যাপার মনে করিয়ে দিতে হবে আবার । মি’রাজ ছিলো একটি অবশ্যম্ভাবী ঘটনা যা বাস্তবে ঘটেছিলো । এটি কোন থিওরী বা সূত্র বা ধারনা নয় । এটি বাস্তবতা ।
যেকোন সূত্রকেই বাস্তবে সত্য হতে হলে কিছু শর্ত সম্পন্ন হওয়া লাগে । খুব সাধারন কিছু ব্যাপার উদাহরনস্বরূপ, তাপ-চাপ-.. ইত্যাদি.....
যতদুর ভাবা যায়, মিরাজে; আইনস্টাইনের থিওরীর এই অংশকে অতিক্রম করা হয়েছিলো কিছু পূর্বপ্রস্তুতির মাধ্যমে । যাত্রার পূর্বে মহানবী সা এর বক্ষ বিদীর্ন করা, অন্তর প্রজ্ঞা ও নুর দিয়ে পূর্ণ করে দেয়া.. এসবের সত্যিকারের রহস্য আমরা জানিনা এখন ও.....
তারপর.....
লাইলাতুল মিরাজের বিষ্ময়যাত্রা: বোঝার চেষ্টা করছি... - বিবেক সত্যি
মিরাজ সংক্রান্ত কনফিউশনের সবটুকু দূর করে দিয়েছেন ব্লগার মুদ্দাকির । তার ব্লগ থেকে একটা কপি এখানে রাখা হলো..
মুসলমানের পৌরাণিক মিরাজ
ধর্মে বিশ্বাস করে এমন আধুনিক মানুষের কাছে মিরাজের চেয়ে হাস্যকর কল্প কাহিনি বোধ করি আর নাই। প্রথম যুগের মুসলমানরা মানুষের মনে প্রভাব বিস্তার করবার জন্য কি দারুন এক কাহিনি বানাইসে!!?? আমার নিজের জীবনে একটা ছোট ঘটনা বলি।“তখন ক্লাস eight এ পড়ি। কর্মে তেমন না হইলেও, মনে মনে আমি তখন প্রচন্ড ধার্মিক। ইসলাম ধর্ম স্যার আর আরবী ক্লাস ছাড়া, ধর্মের সকল বিষয়ে, আমার সেই ছোট বেলা থেকেই ছিল পরম শ্রদ্ধা। আর আমাদের ধর্ম স্যারকে আমি মোটেয় ইসলামের একজন Ambassador মনে করতাম না। তার মত একচোখা শিক্ষক আমার পুরা স্কুলে ছিল না। তবে উনি ধর্মের গল্প ভালই পড়াইতেন। যেমনঃ মিরাজের গল্প।
আমি এবং আমার বন্ধুরা ছিলাম বিজ্ঞানের পোকা। অঙ্ক আর বিজ্ঞান ক্লাস গুলা বাদে, বাকি সব ক্লাসে দুষ্টামির সীমাকে আমরা ছাড়াইয়া যাইতাম। এমনি একদিন বাংলা দ্বিতীয় পত্র ক্লাসে, দুষ্টামি করতে করতে হঠাৎ খেয়াল করলাম, কোন এক মনযোগী ছাত্র, স্যার কে প্রশ্ন করেছে, “স্যার পৌরানিক মানে কি?” স্যার উত্তর দেয়া শুরু করলেন, “ যেমন ধর মুহাম্মাদ নামে এক ব্যাক্তি আরবে ছিলেন, তিনি অশিক্ষিত ছিলেন, একটা ধর্ম প্রচার করেছেন, অনেক যুদ্ধ জিতেছেন, অনেক মানুষ তার অনুসরন করেছে, সমাজের বিরাট পরিবর্তন হয়েছে উনার দ্বারা, এই সবই হল ঐতিহাসিক সত্য। কিন্তু মুহাম্মাদ নামের লোকটি যে আল্লাহের সাথে দেখা করেছে, সাত আসমান ভ্রমন করেছে শুধুমাত্র একরাতের কিছু অংশ ব্যয় করে, এটা পৌরানিক, এবং এর কোন ঐতিহাসিক ভিত্তি নাই। তাই এক কথায় ইসলাম সত্য কিন্তু মিরাজ হল পৌরানিক কাহিনি।”
খুব খুব খুব মন খারাপ হয়েছিল ঐ দিন। সেকেন্ডে নিশ্চুপ হয়ে গিয়েছিল পুরা ক্লাস। এমন কি আমার যে বন্ধুরা “রসময় গুপ্তের বই” চালাচালি করছিল তারাও এই কথায় ঠান্ডা হয়ে গিয়েছিল। ৩৫ জন মুসলমান ছেলে হঠাৎ ভদ্র-নিশ্চুপ, তাদের দেখাদেখি ১৪জন খ্রিস্টান ছাত্রও চুপ। ঐ ক্লাসে ঐ দিন আর কেউ কথা বলে নাই বা হইতে পারে আমার কান আর কাজ করতেসিলো না। আমাদের ঐ স্যার ছিলেন সনাতন ধর্মের লোক। তার প্রতি শ্রদ্ধার যে ফাইল ছিল আমাদের হার্ড ডিস্কে, তার অনেক গুলোই একনিমিশে ডিলিট করে দিয়েছিলেন তিনি। আমার স্কুল জীবনে আমি আর তাকে অন্তর থেকে শ্রদ্ধা জানাতে পারি নাই।
কিন্তু আমার ঐ শিক্ষকের প্রতি শ্রদ্ধা আমার ফিরেছে অনেক আগেই, যখন বুঝতে পারলাম, অনেক কর্মে-মর্মে মুসলমানও মিরাজ কে পৌরানিকই ভাবে। তারা অনেকেই ভাবে মিরাজ শুধুই নবীজির স্বপ্ন ছিল!!!?? তিনি স্বশরিরে সপ্ত আকাশ গমন করেন নাই, আল্লাহের সাথে তার সরাসরি কথা হয় নাই, দেখা হয় নাই……ইত্যাদি। আর আমার ঐ শিক্ষকতো ছিলেন মুর্তি পূজক। so no more hard feelings towards him.”
আমি অবশ্য মক্কা থেকে জেরুজালেম গমন(ইসারা), সপ্ত আকাশ ভ্রমন, বেহেস্ত দোজখ দর্শন, আল্লাহের আরশে নবীজি হযরত মুহাম্মাদ(সাঃ) এর কিছু কাল অবস্থান(মিরাজ) এই সব কিছুই শারীরিক ভাবে হয়েছে বলেই বিশ্বস করি। এবং মনে করি যে মুমিন হবার জন্য শুধু আবু বকর(রাঃ) না, সকল মুসলিম বান্দারই উচিৎ আগে সিদ্দিক হবার চেষ্টা করা।
বিজ্ঞান মনষ্ক দের প্রশ্ন হইতে পারে বিলিয়ন বিলিয়ন আলোক বর্ষ দূরত্ত্ব অতিক্রম করে আবার ফিরে আসা এক রাতের কিছু অংশে সম্ভব কি না?
থিউরিটিকাল পদার্থ বিজ্ঞান অনুযায়ি সম্ভব। আমার লেখা "সময় নিয়ে বিজ্ঞানের ঘাপলা" লেখাটাতে আপনাদের worm hole এর কথা বলে ছিলাম। মানুষ যদি কোন ভাবে worm hole ব্যাবহার করতে শিখে যায়, তাহলেই সম্ভব। হয়ত বা এটা সময়ের ব্যাপার মাত্র। থিউরিটিকাল পদার্থ বিজ্ঞান এর worm hole এর ধারনা দেয়া কঠিন কাজ। তবে কেউ যদি worm hole ব্যাবহার করলে, ঘটনাটা কি ঘটবে বুঝতে চান, তবে Jodi Foster অভিনিত “Contact” ছবিটা দেখতে পারেন। এই ছবিতে নায়িকা Jodi Foster মোট ১৮ ঘন্টা স্পেস ট্রাভেল করেন with the help of a machine that can use worm hole to pass a great distance in a very short time. এই ১৮ ঘন্টা সময়ের মধ্যে উনি অন্য এক গ্যালাক্সিতে জান, এবং ঐখানে কিছুকাল অতিক্রম করার পড় ফিরে আসেন, কিন্তু দুনিয়াতে ১ সেকান্ডও অতিক্রম হয় না।
আবার প্রশ্ন হইতে পারে এতো বেশী গতিতে মানুষের দেহ ভ্রমন উপযোগী কি না?
উত্তর হইল, যদি মানুষের দেহ গতিটা feel করে তাহলে তা সম্ভব না।(যেমন রিকশায় চড়লে আপনি হাড়ে হাড়ে টের পাবেন যে আপনি একটা যানবাহনে আছেন) কিন্তু যদি worm hole ব্যাবহারের machine টা এমন হয় যে, গতিটা মানুষের দেহ feel করবে না, তাহলে সম্ভব। যেমন উন্নত মানের গাড়িতে বসলে গাড়ির গতি বা রাস্তার বন্ধুরতা কিছুই feel করা যায় না।
মিরাজের space travelling part টা পুর্নাঙ্গ টাই আরেক ভাবে, only theuritically ব্যাক্ষা করা যায়।
শক্তি = (ভর)*(আলোরগতি/সেকেন্ড)*(আলোরগতি/সেকেন্ড)
এখানে (আলোর গতি/সেকেন্ড) হল একটি ধ্রুবক। আর মূল রাশিগত তুলনাটা হল শক্তি আর ভর এর মধ্যে।
এই সমিকরনটা প্রতিপাদনের পর থেকেই, বিজ্ঞানিরা open secret ভাবে top secret একটা গবেষনা চালাচ্ছেন। আর তা হল ভরকে শক্তিতে রুপান্তর করা, আর শক্তিকে ভরে রুপান্তর করা। শক্তিকে ভরে রুপান্তর তারা করতে পারেন কিনা তা এখনো প্রকাশ পায় নাই। তবে ভরকে শক্তিতে রুপান্তর করে তারা পারমানবিক বোমা বানিয়েছেন। তবে তারা এখনো, শুধু মাত্র বড় বড় পরমানু গুলোকে ভাংতে সক্ষম যন্ত্র বানাতে পেরেছেন। যেমন এই রকম একটি বড় পরমানু হল Urenium, এর নাম হয়তো আপনারা সকলেই শুনে থাকবেন। এই প্রক্রিয়া কে তারা ফিশান বলে থাকেন। তবে এই পরমানু ভাংবার প্রক্রিয়া তারা এখনও নিয়ন্ত্রন করতে শিখেন নাই।
একটা পরমানু = প্রটন + নিউট্রন + ইলেক্ট্রন + আরো কিছু unstable কনা। পরমানু যেমন একটা মৌলিক পদার্থের ক্ষুদ্রতম কনা, তেমনি প্রটন, নিউট্রন, ইলাট্রন আবার বিভিন্ন রকম শক্তির smallest রূপ। যেমন বিদ্যুৎ শক্তি হল ধাতুর(বা যে কোন পরিবাহির) মধ্যে দিয়ে শুধু মাত্রই ইলেক্ট্রনের flow.
বিজ্ঞানিদের চেষ্টা হল তারা নির্দিষ্ট একটা ভর m কে নির্দিষ্ট একটা শক্তি E(e1+e2+e3+….) তে পরিনত করবেন। এবং নির্দিষ্ট শক্তি E কে পুর্ন নিয়ন্ত্রনে রাখবেন, তারপর E কে আবার নির্দিষ্ট ভর m তে convert করবেন। ধরেন ১০ বছর পর যদি এই প্রক্রিয়া সম্ভব হয়ে যায়। তবে আপনি নিউইয়র্কে অবস্থান করা, আপনার বন্ধু সোহেল কে টিএসসি থেকে চিনা বাদাম কিনে, কয়েক মিলি সেকেন্ডে পাঠাতে পারবেন teleportation machine এর মাধ্যমে।
বাদাম কিনবেন, ম্যাশিনে দিবেন, বাদাম গুলো হয়ে যাবে, বাদাম শক্তি তরঙ্গ, বাদাম শক্তি তরঙ্গ কয়েক মিলি সেকেন্ডে পৌছে যাবে times squre এ থাকা রিসিভারে। সেখান থেকে বাদাম শক্তি তরঙ্গ আবার হয়ে যাবে বাদাম। আমরা যেমন এখন telephone এর মাধ্যমে শব্দ শক্তি কে বিদ্যুৎ শক্তিতে পরিনত করে, তা তারের মাধ্যমে বা বেতারের মাধ্যমে, নির্দিষ্ট দুরত্ত্ব পরিভ্রমন করিয়ে, সেই বিদ্যুৎ শক্তিকে আবার শব্দ শক্তি বানিয়ে তা শুনি।
Teleportation এর ব্যাপারটা একটা পরমানু বা একটা নির্দিষ্ট কোন মৌলিক পদার্থের ক্ষেত্রে চিন্তা করলে সহজ। মাঝে মাঝে মনে হয় আজ কালই হয়ে যাবে। কিন্তু মানুষের মতো একটা বহু কোষী প্রানির ক্ষেত্রে Teleportation খুবই complecated মনে হয়।
এখানে বলতে হয়, জাপান থেকে একটা টিভি কিনে, এর পার্টস গুল খুলে সবচেয়ে ছোট ছোট অংশে ভাগকরে, ঢাকাতে নিয়ে এসে আবার ঐ নির্দিষ্ট টিভিটিতে পরিনত করা একজন electrical engineer এর জন্য যেমন কোন ব্যাপারই না। তেমনি নবীজি(সাঃ) কে আল্লাহ যদি teleport করে space travell করিয়ে থাকেন, তাহলে তা ছিল, তার কাছে হবে খুবি simple ব্যাপার।
আর worm hole এবং teleportation এর concept যদি এক করেন তবে তো সোনায় সোহাগা।
কিছু কথাঃ
১) আমার মতে একজন আধুনিক মুসলমানের জন্য মিরাজ যে শারিরিক ভ্রমন তা বিশ্বাস না করা বোকামি।
২) ১৪০০ বছর আগের অমুসলিমরা, এক রাত্রে বাইতুল মোকাদ্দাস যেয়ে ফিরে আসাকে(ইসরাকে) প্রশ্নবিদ্ধো করে ছিল। আজ-কাল শুধু অ,আ,ক,খ, জানা লোকও তা করবেনা।
৩) বোরাককে নিয়ে বা long distance space travelling নিয়ে আজকের অমুসলিমদের যত চুলকানি, তা আর ১৪০ বছর পর থাকে কিনা তা আমার সন্দেহ।
৪) এই লেখায় মিরাজকে আমি বিজ্ঞান দিয়ে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই নাই, কারন তা এখন সম্ভব না, আমি যা বিজ্ঞান বলেছি তা শুধুই theury. কিন্তু অবশ্যই চাই মুসলিমরা(যারা মিরাজ শারিরিক বিশ্বাস করে না) চিন্তা করুক, আর অমুসলিমরাও চিন্তা করুক।
আমি নিশ্চিত ১৮৫০ এ জন্ম নেয়া আপনার দাদার দাদাকে আপনি মোবাইল ফোনের concept বুঝাইতে পারতেন না। তেমনি আমি এও নিশ্চিত তারো আগের অভিজান প্রিয় রানি ইসাবেলাকেও আপনি ২০০০ যাত্রিবাহি প্লেন A380 এর concept বুঝাইতে পারতেন না। যদিও তারা উভয়েই হযরত সোলায়মান (আঃ) এর বাতাস ভ্রমন ও জ্বীন দিয়া দুনিয়ার কোনা কোনা থেকা খবর নেয়ার মুজিজা ঠিকি বিশ্বাস করত। তবে কিছু মানুষ ছিল, যারা তখন এই গুলা(মোবইল/এরোপ্লেন) নিয়া ভাবতো, কিন্তু বলার সাহস করতনা।
বোরাক নিয়ে যারা হাশি তামাসা করেন তাদের উদ্দেশ্যে কিছু কথাঃ
প্রথম কথা,
বোরাক শব্দের অর্থ lightening বা বিজলি। আমার কাছে বোরাক শব্দটা কেমন যেন ইঙ্গিত পুর্ন মনে হয়। বিজলির কথা চিন্তা করলে, আলো-বিদ্যুৎ এই ধরনের শক্তিশালী দ্রুতচলনশীল শক্তির কথাই মনে পড়ে। এই যানটির এই নামটি যিনি দিয়েছেন, উনি খুব সম্ভবত, নিশ্চিত ভাবেই জানতেন যে, এই বোরাকের গতি প্রকৃতির ধর্ম, বস্তুগত ধর্ম, আলো-বিদ্যুৎ ইত্যাদি বস্তুর সাথে সম্পর্কিত। আপনারা নিশ্চই বলবেন না, যে আমার প্রিয় মুর্খ নবীজি(সাঃ) বিদ্যুৎ-আলো ইত্যাদি বস্তুর সম্পর্কে পদার্থ বিদ্যার আধুনিক ধারনা গুলো জানতেন। এবং জেনে শুনেই উনি এই নামটা দিয়েছেন।
দ্বিতীয় কথা,
বোরাক সম্পর্কে হাদিস থেকে morphological(আকৃতিগত) যে বর্ননা পাওয়া যায়, তা কেমন যেন space travelling machine সুলভ না। এটা আমি মানি। আবার হাদিস থেকে এর গতি সম্পর্কিত যে বর্ননা পাওয়া যায় আমি তাও মানি। কিন্তু আপনারা তা মানেন না। আপনারা বোরাকের morphological বর্ননা কে গ্রহন করে নিয়ে, তার ব্যাঙ্গ করেন ঠিকি কিন্তু speed সংক্রান্ত বর্ননা গ্রহন করেন না বলেই মনে হয়।
এখন,
ধরেন একজন Astronaut যদি একটা রকেট, বাইরে থেকে মাত্র কয়েকবার দেখবার সুজোগ পাইতেন, ঐ রকেটটা যদি automatically চলত, তিনি যদি শুধু মাত্রই যাত্রি হইতেন, এবং বর্তমান কালের অন্য কোন মানুষেরা যদি কোন রকম কোন রকেট না দেখে থাকত। তবে সাধারন মানুষকে রকেটের morphology বোঝানর জন্য উনি(Astronaut) কি কি বলতেন?? হয়তো বলতেন যানটা দেখতে গাজরের মত অথবা মুলার মত অথবা কলমের মত অথবা মসজিদের লম্বা মিনার গুলোর মত অথবা উত্থিত পুংলিঙ্গের মত………ইত্যাদি। কিন্তু কোথায় গাজর মুলা আর কলম??? আর কোথায় রকেট?? কিন্তু morphology ঠিকি মিলে!!!!
আবার বোরাক এক লাফেই দৃষ্টিসীমা পার করতে পারে। আলো বা তারচেয়ে গতিশীল কোন কিছু ছাড়া কি তা সম্ভব??? এই ইঙ্গিতটা খালি আমার অন্যতম প্রিয় বিজ্ঞানী “আইনেষ্টাইন” বুঝতে পেরেছিল। আপনারা কেউ বুঝলেন না!!!! তার আগে বুঝতে পারলেই ফেমাস হয়া যাইতেন।।আহা!! আফসোস!!!
তৃতীয় কথা,
Physics এ infinite জ্ঞান সম্পন্ন, অবিশ্বসীদের দেখলাম বোরাকের পাখা নিয়া অনেক চিন্তিত?? মহাশুন্যে বাতাস নাই, পাখা কেমনে কাজ করবে??? পাখির পাখার কাজ thrust তৈরি করে শরিরটাকে উড়ান, তারপর পাখার সাহাজ্যেই horizontal flight maintain করা বা কম বেশি করা। এই thrusting property টা মহাশুন্য অবস্থান করা স্পেস স্যাটাল গুলাও ব্যাবহার করে, তারা ছোট ছোট thrust তৈরি করে প্রতিনিয়তই তাদের অবস্থান পরিবর্তন করে। Physics বিশারদদের বুঝতে সমস্যা হবার কথা নয়, যে কি ভাবে বায়ু শুন্য মহাকাশে স্পেস স্যাটাল গুলো thrust ব্যাবহার করে। so আমার ধারনা উনারা শুধু ইসলাম থেকে মানুষকে দূরে সরাবার জন্যই উল্টা-পাল্টা বাজে তর্কের অবতারনা করে।
আবার বোরাকের পাখা আর space এ বায়ু শুন্যতা নিয়া তাদের যদি এখন কারো confusion থাকে, তাদের শুধু এইটুকু বলতে চাই যে, জুলভার্নের আগে কেউ কিন্তু কোন দিন ভাবেই নাই যে, বাতাসে ভর করে যদি উড়তে হয়, তবে সেই ভর দেবার জিনিসটা হইতে হবে বাতাসের চেয়ে অনেক ভারি। কিন্তু তার আগে বিভিন্ন সময়ের বিজ্ঞানিরা প্রচুর কাজ করেছে, উড়াল যন্ত্র বানাবার জন্য। so science কখন কথায় মোড় নেয়, কেউই জানেনা। একদিন হয়ত দেখবেন বায়ু শুন্য স্থানে চলতেও পাখাই লাগে???!!!!
শেষ কথাঃ
বিজ্ঞান ইসলাম বিচারের পরশ পাথর নয়। মিরাজও ঠিক তাই। ইসলাম আল্লাহের বিধান আর বিজ্ঞান হইল পরিবর্তনশীল জ্ঞান। কিন্তু নিম্ন মানের বিজ্ঞান দিয়া আপনারা যেহেতু মিরাজকে পৌরাণিক বানাইতে চান, তাই আমি বর্তমান কালের উচ্চমানের বিজ্ঞান দিয়া আমার পৌরাণিক মিরাজের একটু support করলাম। (উদ্দেশ্য ছিল বিজ্ঞান বুঝানোই, একটু ধর্মকে ব্যাবহার করলাম আরকি), মুমিন বান্দারা ভালো কাজে বেশি বেশি ধর্মকে ব্যাবহার করুন।
আল্লাহাফেজ , ইনশাল্লাহ পরে আবার কথা হবে।
আল্লাহ প্রতিদিন আমাকে এবং সকল মুসলমান কে মুমিন বান্দার মিরাজ, সলাত কায়েম করার তৌফিক দিন। (আমিন)
লেখক : মুদ্দাকির
0 comments: