উইকিলিকস ► নির্বাচনের আগের দিন খালেদা-মরিয়ার্টি বৈঠক



উইকিলিকসের তথ্য : নির্বাচনের আগের দিন খালেদা-মরিয়ার্টি বৈঠক

ঢাকা: ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর আগের দিন বিএনপির চেয়ারপারসন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রদূত জেমস এফ মরিয়ার্টি বৈঠকে করেন। বৈঠকে বিশ্বের সপ্তম জনবহুল দেশ বাংলাদেশে অবাধ, স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রচেষ্টা নিয়ে আলোচনা করা হয়।

তারবার্তায় বলা হয়, ‘নির্বাচনী প্রচারাভিযানে ক্লান্ত খালেদা জিয়া তার উপদেষ্টাদের পার্টির রূপরেখা নির্বাচনী ময়দানে উপস্থিত করার অনুমতি দেন। উপদেষ্টাদের কথাবার্তা অনুযায়ী, বিএনপির বিরুদ্ধে বিদ্যমান অভিযোগগুলো ছোটখাট মাপের। তবে বিএনপির নেতারা জানেন, ক্ষমতায় ফেরার সংগ্রাম কঠিনই হবে। বৈঠকে নতুন কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা না হলেও এতে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করা হয়। বৈঠকে বিএনপিকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়, নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতার ব্যাপারে মার্কিন সরকার তথ্যবহুল ও বস্তনিষ্ঠ অভিমত ব্যক্ত করতে সমর্থ হবে।’

২৯ ডিসেম্বর ঢাকার মার্কিন দূতাবাস থেকে ওয়াশিংটনে এসংক্রান্ত একটি তারবার্তায় পাঠানো হয়। সম্প্রতি তারবার্তাটি ফাঁস করেছে উইকিলিকস।

এতে বলা হয়েছে, ২০০৮-এর ২৮ ডিসেম্বর আয়োজিত মার্কিন দূতাবাস আয়োজিত বৈঠকে খালেদা জিয়া ছাড়াও অংশ নেন, বিএনপির উপদেষ্টা যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত সাবেক রাষ্ট্রদূত শমসের মবিন চৌধুরী, মেজর জেনারেল (অব.) ফজলে এলাহী আকবর, সাংবাদিক শফিক রেহমান। সংসদীয় নির্বাচনী প্রচারাভিযান আরম্ভ হওয়ার পর এই প্রথম বিএনপির সঙ্গে বৈঠক। বিভিন্ন সময়ে খালেদা জিয়া নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছেন।

তারবার্তায় বলা হয়, ‘খালেদার উপদেষ্টারা তার অদম্য মনোবলের প্রশংসা করে বলেন, নির্বাচনী প্রচারাভিযানে তিনি সাত হাজার কিলোমিটারের বেশি সড়ক ভ্রমণ করেছেন। ৬৪ জেলার ৫০টিতে সফর করেছেন। ২০০টি জনসভা ও দেড় কোটি ভোটারের সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাৎ করেছেন।’

তারবার্তায় বলা হয়, ‘বৈঠকে রাষ্ট্রদূত মরিয়ার্টি বংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন, তা খালেদাকে অবহিত করেন। বলা হয়, নির্বাচনের জন্য অনুকূল পরিস্থিতি বিরাজ করছে কি না তা মূল্যায়ন করতে দূতাবাসের একটি দল দেশব্যাপী সফর করেন। আমাদের (দূতাবাস) মূল্যায়ন হচ্ছে, নির্বাচনে ব্যাপক মানুষ অংশ নেবে এবং গ্রামের মানুষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও সন্তুষ্ট। একইসঙ্গে বিএনপির নির্বাচনী ইশতেহারের প্রশংসা করে মরিয়ার্টি বলেন, উভয় দলের নির্বাচনী ইশতেহারে মিল রয়েছে। বিশেষ করে, উভয় দলই তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে বাংলাদেশের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে একমত পোষণ করেছে। প্রধান দুটি দলই ক্ষমতাসীন ও বিরোধী থাকা অবস্থায় একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার করেছে।’

একইভাবে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারও পরবর্তী সরকার ও বিরোধী দলের কাজ করার ইচ্ছা পোষণ করে। রাষ্ট্রদূত বলেন, যুক্তরাষ্ট্র দেখতে চায় বাংলাদেশে গণতন্ত্র দৃঢ় শেকড় পেয়েছে।

তারবার্তাটির মন্তব্য অংশে বলা হয়, খালেদা জিয়া রাষ্ট্রদূতকে জানান, প্রচারাভিযানের পর অত্যন্ত ক্লান্ত। তাকে দেখাচ্ছেও সেরকম। বৈঠকটি এ কারণে গুরুত্ব ছিল এ কারণে যে, একটা ধারণা রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগকে পছন্দ করে। এ ধারণা ভাঙতে বৈঠটির গুরুত্ব রয়েছে। বস্তুত, এই বৈঠকের আগে শেখ হাসিনার সঙ্গেও বৈঠক করেন রাষ্ট্রদূত, যা খালেদার সঙ্গে বৈঠকের চেয়ে একবার বেশি।

0 comments:

Comment Please

মন্তব্য..

সবিস্তার সূচীপত্র
টেম্পলেট কাষ্টমাইজেশন - তরঙ্গ ইসলাম | তরঙ্গ ইসলাম