উইকিলিকসের তথ্য : আওয়ামী লীগ জেতায় মরিয়ার্টির কাছে পিনাকের উচ্ছ্বাস
সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিপুল ভোট পেয়ে জয়ী হওয়ার ঘটনায় তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রদূত জেমস এফ মরিয়ার্টির কাছে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন ভারতীয় হাইকমিশনার পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী।
২০০৯ সালের ১৩ জানুয়ারি বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রদূতের কাছে এ আনন্দ প্রকাশ করেন। তিনি আরও বলেন, নিরাপত্তা ও অন্যন্য ইস্যুতে আওয়ামী লীগের নতুন সরকারের সঙ্গে উন্নত সম্পর্ক চায় ভারত।
তারবার্তায় বলা হয়, ‘আগামী ফেব্রুয়ারিতে ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরে সন্ত্রাসবিরোধী তৎপরতায় পারস্পরিক সহায়তাই হবে আলোচনার কেন্দ্রীয় ইস্যু। সন্ত্রাসবাদবিরোধী লড়াইয়ে আঞ্চলিক টাস্ক ফোর্সের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বানের প্রতি সমর্থন জানান পিনাক রঞ্জন।’
গোপন তারবার্তায় বলা হয়, ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটে হওয়ায় পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। ঐতিহ্যগতভাবে আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে নয়াদিল্লির উষ্ণ সম্পর্ক বজায় রয়েছে। মরিয়ার্টিকে পিনাক রঞ্জন বলেন, বাংলাদেশের নতুন সরকারের সঙ্গে নিরাপত্তা আলোচনায় বাড়ানোই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। ভারতের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রণব মুখার্জির ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকা সফরের কথা ছিল।
তারবার্তায় দূতাবাস মন্তব্য করে, ভারত প্রায়ই অভিযোগ করে, বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীদের নিরাপদ আস্তানা। তাদের আরও অভিযোগ, সীমান্ত অতিক্রম সন্ত্রাসীরা ভারতে বোমা হামলা চালায়।
রাষ্ট্রদূত মরিয়ার্টি জানান, মার্কিন সরকার সন্ত্রাসবিরোধী আঞ্চলিক টার্স্ক ফোর্সের প্রয়োজনীয়তা ব্যাপারে সচেতন। একইসঙ্গে এ ব্যাপারে দ্বিতীয় পথও (ট্র্যাক টু গ্রোগ্রামস) বিবেচনায় রাখছে যুক্তরাষ্ট্র, এই পথে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা ব্যাপারটি সমন্বয়ের কাজ করতে পারে। পিনাক রঞ্জন এতে স্বাগত জানান।
মরিয়ার্টি বলেন, শেখ হাসিনার উচিৎ সন্ত্রাসবিরোধী কর্মসূচির অংশ হিসেবে এমন একজন ব্যক্তিকে নিয়োগ করা, যার কাজ হবে বাংলাদেশের বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সঙ্গে নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সমন্বয় করা। পিনাক রঞ্জন এতেও সম্মতি জ্ঞাপন করেন। এছাড়া আধা সামরিক বাহিনী র্যাবকে বিলুপ্ত করা উচিৎ হবে না মরিয়ার্টি অভিমত ব্যক্ত করলে, এর সঙ্গেও একমত পোষণ করেন ভারতীয় রাষ্ট্রদূত।
তারবার্তায় বলা হয়, র্যাব বাংলাদেশের সন্ত্রাসবিরোধী তৎপরতা পরিচালনার প্রধান বাহিনী। তবে বিএনপির আমলে এই বাহিনী প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কারণে কিছু আওয়ামী লীগ নেতা একে সন্দেহের চোখে দেখে থাকেন।
তারবার্তায় বলা হয়, ‘মার্কিন সরকার র্যাবকে মানবাধিকার প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেছে। রাষ্ট্রদূত মরিয়ার্টি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার (এফবিআই) বাংলাদেশি সংস্করণ হতে পারে র্যাব। আর এর জন্য র্যাবই সবচেয়ে ভালো অবস্থায় রয়েছে।
0 comments: