উইকিলিকস ► সাহায্য চেয়ে হাসিনার ফোন, ভারতের জামায়াত-শঙ্কা


উইকিলিকসের তথ্য : বিডিআর বিদ্রোহ : সাহায্য চেয়ে হাসিনার ফোন, ভারতের জামায়াত-শঙ্কা

বিডিআর বিদ্রোহের সময় আন্তর্জাতিক সাহায্য চেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী, অন্যদিকে ভারতের শঙ্কা ছিলো জামায়াতে ইসলামী এ পরিস্থিতির সুযোগ নিতে পারে- উইকিলিকসের বরাত দিয়ে বলছে ভারতের একটি দৈনিক।

ভারতের ইংরেজি দৈনিক দ্য হিন্দু বলেছে, নয়া দিল্লিতে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স স্টিভেন হোয়াইটের ওয়াশিংটনে পাঠানো এক তারবার্তায় এ কথা বলা হয়।

স্টিভেন হোয়াইটের সঙ্গে সাক্ষাতে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব শিব শংকর মেনন ভারতের কূটনৈতিক তৎপরতার কথা তুলে ধরার পাশাপাশি জানান, ভারত সরকার এই বিষয়ে লন্ডন, বেইজিং, টোকির সঙ্গে যোগযোগ রক্ষা করে চলেছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহিংসতা চলাকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রণব মুখার্জীর সঙ্গে কথা বলে আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ের সাহায্যের কিছু বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন। তবে তিনি সুনির্দিষ্ট কোনো সাহায্য চাননি। এ অবস্থায় মুখার্জী তাকে প্রয়োজনীয় সহায়তার আশ্বাস দেন।

পররাষ্ট্র সচিব শিব শংকর মেনন মনে করেন, ওই অবস্থায় জামায়াত ইসলামী 'ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের' চেষ্টা করতে পারে- এ কথা উল্লেখ করে স্টিভেন তার তারবার্তায় লেখেন, এই বিদ্রোহে জামায়াতে ইসলামী সরাসরি জড়িত বলে সরাসরি উল্লেখ করেননি পররাষ্ট্র সচিব। তবে তিনি বলেছেন, ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনী ফল এবং সরকারের নেওয়া বিভিন্ন হুমকিজনক পদক্ষেপে দলটি [জামায়াত] চরম হতাশ। এই সহিংসতার ক্ষেত্রে নিজেদের অবস্থান নির্ধারণে দলটি বৈঠক করেছে বলেও উল্লেখ করেন মেনন।

২০০৯ সালের ২৫-২৬ ফেব্র"য়ারি পিলখানায় বিডিআর সদরদপ্তরে (বর্তমান বিজিবি) জওয়ানদের বিদ্রোহে ৫৬ সামরিক কর্মকর্তাসহ ৭৩ জন নিহত হয়।

তার বার্তার শুরুতে বলা হয়, ২৮ ফেব্র"য়ারি শনিবার বাংলাদেশ পরিস্থিতিতে ভারতের উদ্বেগের কথা শুনতে পররাষ্ট্র সচিব মেননের সঙ্গে দেখা করতে যান স্টিভেন। মেনন তাকে জানান, বিডিআর বিদ্রোহের সমাপ্তির খবরে ভারত স্বস্তি বোধ করছে। তবে সদ্য ক্ষমতায় আসা সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য জামায়াতে ইসলামী ওই গোলযোগকে হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করতে পারে- এই ভেবে চিন্তিত দিল্লি।

ওই সাক্ষাতে খুব কম সময়ের বিজ্ঞপ্তিতে হোয়াইটকে ডেকে পাঠানোর জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন মেনন।

২০০৯ সালের ২ মার্চ নয়াদিল্লি থেকে পাঠানো তারবার্তাটি উইকিলিকসের মাধ্যমে পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে দ্য হিন্দু। দৈনিকটির রোববারের মুদ্রিত সংস্করণে এর ভিত্তিতে একটি বিশ্লেষণ প্রকাশ হয়।

তারবার্তায় বলা হয়- বাংলাদেশে বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনা নিয়ে ভারত সরকার উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। দেশটিতে যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স স্টেভেন হোয়াইট দেখা করতে এলে পররাষ্ট্র সচিব শিব শংকর মেনন ভারতের সেই উদ্বেগের কথা তাকে অবহিত করেন।

"স্টিভেন মেননকে বলেন, বাংলাদেশে বিডিআর সহিংসতার খবর তিনি যখন শুনতে পান তখন তারা কলম্বোতে সার্কের স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠক করছিলেন। তবে শুরুতে ভারতের প্রাথমিক ভাষ্য ছিলো- এটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। বৈঠক চলার সময়েই গণকবরের সন্ধান পাওয়ার বিষয়টি তারা জানতে পারেন। এই খবরে ভারত সরকার ধারণা করে যে, এটি স্বতস্ফূর্ত নয় বরং বিস্তৃত পরিকল্পনারই অংশ।"

সচিব শিব শংকরের মতে, শেখ হাসিনার সরকার বিদ্রোহ প্রশমনে সঠিক পন্থা অবলম্বন করেছে এবং সরকারের কার্যক্রমে সেই সময় বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার সংহতি প্রকাশে ভারত সরকার আনন্দিত- বলা হয়েছে তারবার্তায়।

"তবে ওই সহিংতার প্রভাব সেনাবাহিনীতে পড়ার বিষয়টি নিয়ে ভারত চিন্তিত। কারণ এ ঘটনায় বহু সেনা কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। কারো কারো মৃতদেহ সুয়ারেজে ফেলে দেওয়া হয়েছে- উল্লেখ করে মেনন বলেন, এই আকষ্মিক হত্যাকাণ্ডে সেনাবাহিনীতে সমস্যা দেখা দিতে পারে।"

0 comments:

Comment Please

মন্তব্য..

সবিস্তার সূচীপত্র
টেম্পলেট কাষ্টমাইজেশন - তরঙ্গ ইসলাম | তরঙ্গ ইসলাম