খুচরো ছড়া |
নিম গাছেতে হচ্ছে শিম্-
হাতির মাথায় ব্যাঙের ছাতা
কাগের বাসায় বগের ডিম ॥
––––––––
বল্ব কি ভাই হুগ্লি গেলুম,
বল্ছি তোমায় চুপি চুপি-
দেখতে পেলাম তিনটে শুয়োর
মাথায় তাদের নেইকো টুপি॥
––––––––
আকাশের গায়ে কিবা রামধনু খেলে,
দেখে চেয়ে কত লোক সব কাজ ফেলে;
তাই দেখে খুঁতধরা বুড়ো কয় চটে,
দেখছ কি, এই রঙ পাকা নয় মোটে ॥
––––––––
ঢপ্ ঢপ্ ঢাক ঢোল ভপ্ ভপ্ বাঁশি,
ঝন্ ঝন্ করতাল্ ঠন্ ঠন্ কাঁসি ।
ধুমধাম বাপ্ বাপ্ ভয়ে ভ্যাবাচ্যাকা,
বাবুদের ছেলেটার দাঁত গেছে দেখা ॥
––––––––
বাস্রে বাস্ ! সাবাস্ বীর !
ধনুকখানি ধ'রে,
পায়রা দেখে মারলে তীর-
কাগ্টা গেল ম্'রে !
শুনেছ কি ব'লে গেল সীতানাথ বন্দ্যো?
আকাশের গায়ে নাকি টক্টক্ গন্ধ?
টক্টক্ থাকে নাকো হ'লে পরে বৃষ্টি-
তখন দেখেছি চেটে একেবারে মিষ্টি ।
––––––––
কহ ভাই কহ রে, অ্যাঁকাচোরা শহরে,
বদ্যিরা কেন কেউ আলুভাতে খায় না?
লেখা আছে কাগজে আলু খেলে মগজে,
ঘিলু যায় ভেস্তিয়ে বুদ্ধি গজায় না!
––––––––
শোন শোন গল্প শোন, `এক যে ছিল গুরু,'
এই আমার গল্প হল শুরু ।
যদু আর বংশীধর যমজ ভাই তারা,
এই আমার গল্প হল সারা ।
––––––––
বল্ছি, ওরে ছাগল ছানা,
উড়িস্নে রে উড়িস্নে।
জানিস্নে তোর উড়তে মানা-
হাত পাগুলো ছুড়িস্নে।
––––––––
খিল্খিল্লির মুল্লুকেতে থাকত নাকি দুই বেড়াল,
একটা শুধায় আরেকটাকে, "তুই বেড়াল না মুই বেড়াল?"
তাই থেকে হয় তর্ক শুরু, চীৎকারে তার ভূত পালায়,
আঁচড় কামড় চর্কিবাজী ধাঁই চটাপট চড় চালায় ।
খাম্চা খাবল ডাইনে বাঁয়ে হুড়মুড়িয়ে হুলোর মতো,
উড়ল রোঁয়া চারদিকেতে রাম্-ধুনুরীর তুলোর মতো ।
তর্ক যখন শন্ত হল, ক্ষান্ত হল আঁচড় দাগা,
থাকত দুটো আস্ত বেড়াল, রইল দুটো ল্যাজের ডগা ।
দাঁড়ে দাঁড়ে দ্রুম
ছুট্ছে লোকে নানান্ ঝোঁকে করছে হুড়োহুড়ি ;
ছুট্ছে কত ক্ষ্যাপার মত পড়্ছে কত চাপা-
সাহেব মেম থম্কে থেমে বল্ছে 'মামা ! পাপা !'
-আমরা তবু তবলা ঠুকে গাচ্ছি কেমন তেড়ে,
"দাঁড়ে দাঁড়ে দ্রুম ! দেড়ে দেড়ে দেড়ে !"
বর্ষাকালের বৃষ্টিবাদল রাস্তা জুড়ে কাদা,
ঠাণ্ডা রাতে সর্দিবাতে মরবি কেন দাদা ?
হোক্ না সকাল হোক্ না বিকেল হোক্ না দুপুর বেলা,
থাক্ না তোমার আফিস যাওয়া থাক্ না কাজের ঠেলা-
এই দেখ না চাঁদনি রাতের গান এনেছি কেড়ে,
"দাঁড়ে দাঁড়ে দ্রুম ! দেড়ে দেড়ে দেড়ে !"
মুখ্যু যারা হচ্ছে সারা পড়্ছে ব'সে একা,
কেউ বা দেখ কাঁচুর মাচুর কেউ বা ভ্যাবাচ্যাকা ;
কেউ বা ভেবে হদ্দ হল, মুখটি যেন কালি ;
কেউ বা ব'সে বোকার মত মুণ্ডু নাড়ে খালি ।
তার চেয়ে ভাই, ভাবনা ভুলে গাও না গলা ছেড়ে,
"দাঁড়ে দাঁড়ে দ্রুম ! দেড়ে দেড়ে দেড়ে !"
বেজার হয়ে যে যার মত করছ সময় নষ্ট-
হাঁট্ছ কত খাট্ছ কত পাচ্ছ কত কষ্ট !
আসল কথা বুঝছ না যে, করছ না যে চিন্তা,
শুনছ না যে গানের মাঝে তব্লা বাজে ধিন্তা ?
"পাল্লা ধ'রে গায়ের জোরে গিট্কিরি দাও ঝেড়ে,
"দাঁড়ে দাঁড়ে দ্রুম ! দেড়ে দেড়ে দেড়ে !"
গল্প বলা
রাজা নয় সে, রাজ পেয়াদা ।"
"তার যে মাতুল"- "মাতুল কি সে ?
সবাই জানে সে তার পিসে ।"
"তার ছিল এক ছাগল ছানা"-
"ছাগলের কি গজায় ডানা ?"
"একদিন তার ছাতের 'পরে"-
"ছাত কোথায় হে টিনের ঘরে ?"
"বাগানের এক উড়ে মালী"-
"মালি নয় ত ? মেহের আলি-"
"মনের সাধে গাইছে বেহাগ"-
"বেহাগ তো নয় বসন্ত রাগ ।"
"থোও না বাপু ঘ্যাঁচা ঘেঁচি"-
"আচ্ছা বল চুপ্ করেছি ।"
"এমন সময় বিছনা ছেড়ে
হঠাৎ মামা আস্ল তেড়ে,
ধরল সে তার ঝুঁটির গোড়া-"
"কোথায় ঝুঁটি ? টাক যে ভরা ।"
"হোক না টেকো, তোর তাতে কি ?
লক্ষীছাড়া মুখ্যু ঢেঁকি ।
ধরব ঠেসে টুঁটির 'পরে,
পিট্ব তোমার মুণ্ডু ধরে-
কথার উপর কেবল কথা,
এখন বাপু পালাও কোথা ?"
ডানপিটে
কোন্ দিন ফাঁসি যাবে নয় যাবে জেলে ।
একটা সে ভূত সেজে আঠা মেখে মুখে,
ঠাঁই ঠাঁই শিশি ভাঙে শ্লেট দিয়ে ঠুকে ।
অন্যটা হামা দিয়ে আলমারি চড়ে,
খাট থেকে রাগ ক'রে দুম্দাম্ পড়ে !
বাপ্রে কি ডানপিটে ছেলে !-
শিলনোড়া খেতে চায় দুধভাত ফেলে !
একটার দাঁত নেই, জিভ দিয়ে ঘষে,
এক মনে মোমবাতি দেশলাই চোষে !
আরজন ঘরময় নীল কালি গুলে,
কপ্ কপ্ মাছি ধ'রে মুখে দেয় তুলে !
বাপ্রে কি ডানপিটে ছেলে !-
খুন হত টম চাচা ওই রুটি খেলে !
সন্দেহে শুঁকে বুড়ো মুখে নাহি তোলে,
রেগে তাই দুই ভাই ফোঁস ফোঁস ফোলে !
নেড়াচুল খাড়া হয়ে রাঙা হয় রাগে,
বাপ্ বাপ্ ব'লে চাচা লাফ দিয়ে ভাগে ।
0 comments: