নোট বই, হুলোর গান, গন্ধ বিচার

নোট বই 

 

 

এই দেখ পেন্সিল, নোটবুক এ হাতে,
এই দেখ ভরা সব কিল্‌বিল লেখাতে ।
ভালো কথা শুনি যেই চট্‌ পট্‌ লিখি তায়-
ফড়িঙের ক'টা ঠ্যাং, আরশুলা কি কি খায় ।
আঙুলেতে আঠা দিলে লাগে কেন চট্‌চট্‌,
কাতুকুতু দিলে কেন গরু করে ছট্‌ফট্‌ ।
দেখে শিখে প'ড়ে শুনে ব'সে মাথা ঘামিয়ে
নিজে নিজে আগাগোড়া লিখে গেছি আমি এ ।
কান করে কট্‌ কট্‌, ফোড়া করে টন্‌ টন্‌-
ওরে রামা ছুটে আয়, নিয়ে আয় লণ্ঠন ।
কাল থেকে মনে মোর লেগে আছে খট্‌কা
ঝোলাগুড় কিসে দেয়, সাবান না পট্‌কা ?
এই বেলা প্রশ্নটা লিখে রাখি গুছিয়ে
জবাবটা জেনে নেব মেজদাকে খুঁচিয়ে ।
পেট কেন কাম্‌ড়ায়, বল দেখি পার কে ?
বল দেখি ঝাঁজ কেন জোয়ানের আরকে ?
তেজপাতে তেজ কেন ? ঝাল কেন লঙ্কায় ?
নাক কেন ডাকে আর পিলে কেন চমকায় ?
কার নাম দুন্দুভি ? কাকে বলে অরণি ?
বল্‌বে কি ? তোমরা ও নোট্‌বই পড় নি ।

হুলোর গান



বিদ্‌ঘুটে রাত্তিরে ঘুট্‌ঘুটে ফাঁকা,
গাছপালা মিশ্‌মিশে মখ্‌মলে ঢাকা ।
জট্‌বাঁধা ঝুল কালো বটগাছতলে,
ধক্‌ধক্‌ জোনাকির চক্‌মকি জ্বলে,
চুপ্‌চাপ্‌ চারিদিকে ঝোপঝাড়গুলো-
আয় ভাই গান গাই আয় ভাই হুলো ।

গীত গাই কানে কানে চীৎকার ক'রে,
কোন্‌ গানে মন ভাঙে শোন্‌ বলি তোরে-
পূবদিকে মাঝ রাতে ছোপ্‌ দিয়ে রাঙা
রাতকানা চাঁদ ওঠে আধখানা ভাঙা ।
চট্‌ ক'রে মনে পড়ে মট্‌কার কাছে
মালপোয়া আধাখানা কাল থেকে আছে ।

দুড়্‌ দুড়্‌ ছুটে যাই দূর থেকে দেখি
প্রাণপণে ঠোঁট চাটে কানকাটা নেকী ।
গালফোলা মুখে তার মালপোয়া ঠাসা
ধুক ক'রে নিভে গেল বুকভরা আশা ;
মন বলে আর কেন সংসারে থাকি
বিল্‌কুল্‌ সব দেখি ভেল্‌কির ফাঁকি ।

সব যেন বিচ্ছিরি সব যেন খালি,
গিন্নীর মুখ যেন চিম্‌নির কালি ।
মন ভাঙা দুখ্‌ মোর কণ্ঠেতে পুরে
গান গাই আয় ভাই প্রাণফাটা সুরে ।


গন্ধ বিচার


সিংহাসনে বস্‌ল রাজা বাজল কাঁসর ঘণ্টা,
ছট্‌ফটিয়ে উঠ্‌ল কেঁপে মন্ত্রীবুড়োর মনটা ।
বল্‌‌লে রাজা, "মন্ত্রী, তোমার জামায় কেন গন্ধ ?"
মন্ত্রী বলে, "এসেন্স দিছি- গন্ধ ত নয় মন্দ !"
রাজা বলে, "মন্দ ভালো দেখুক শুঁকে বদ্যি, "
বদ্যি বলে, "আমার নাকে বেজায় হল সর্দি ।"
রাজা হাঁকেন, "বোলাও তবে- রাম নারায়ণ পাত্র ।"
পাত্র বলে, "নস্যি নিলাম এক্ষনি এইমাত্র-
নস্যি দিয়ে বন্ধ যে নাক, গন্ধ কোথায় ঢুকবে ?"
রাজা বলেন, "কোটাল তবে এগিয়ে এস, শুঁকবে ।"
কোটাল কহে, "পান খেয়েছি মশলা তাহে কর্পূর,
গন্ধে তারি মুণ্ডু আমার এক্কেবারে ভরপুর ।"
রাজা বলেন, "আসুক তবে শের পালোয়ান ভীমসিং,"
ভীম বলে, "আজ কচ্ছে আমার সমস্ত গা ঝিম্‌ ঝিম্‌ ।
রাত্রে আমার বোখার হল, বল্‌ছি হুজুর ঠিক বাৎ"-
ব'লেই শুল রাজসভাতে চক্ষু বুজে চিৎপাত ।

রাজার শালা চন্দ্রকেতু তারেই ধ'রে শেষটা
বল্‌ল রাজা, "তুমিই না হয় কর না ভাই চেষ্টা ।"
চন্দ্র বলেন, "মারতে চাও ত ডাকাও না হয় জল্লাদ,
গন্ধ শুঁকে মর‌‌তে হবে এ আবার কি আহ্লাদ ?"
ছিল হাজির বৃদ্ধ নাজির বয়সটি তার নব্বই,
ভাব্‌‌লে মনে, "ভয় কেন আর একদিন তো মরবই-"
সাহস ক'রে বল্‌‌লে বুড়ো, "মিথ্যে সবাই বক্‌‌ছিস,
শুঁকতে পারি হুকুম পেলে এবং পেলে বক্‌‌শিস ।"
রাজা বলেন, "হাজার টাকা ইনাম পাবে সদ্য,"
তাই না শুনে উৎসাহেতে উঠ্‌ল বুড়ো মদ্দ ।
জামার পরে নাক ঠেকিয়ে- শুঁক্‌ল কত গন্ধ,
রইল অটল, দেখ্‌‌লে লোকে বিষ্ময়ে বাক্‌ বন্ধ ।
রাজ্যে হল জয় জয়কার বাজ্‌ল কাঁসর ঢক্কা,
বাপ্‌‌রে কি তেজ বুড়োর হাড়ে, পায় না সে যে অক্কা ! 

কহ ভাই কহ রে


কহ ভাই কহ রে              অ্যাঁকা চোরা শহরে,
     বদ্যিরা কেন কেউ আলুভাতে খায় না
লেখা আছে কাগজে             আলু খেলে মগজে
     ঘিলু যায় ভেস্তিয়ে, বুদ্ধি গজায় না ।

0 comments:

Comment Please

মন্তব্য..

সবিস্তার সূচীপত্র
টেম্পলেট কাষ্টমাইজেশন - তরঙ্গ ইসলাম | তরঙ্গ ইসলাম