একুশে আইন
আইন কানুন সর্বনেশে !
কেউ যদি পা পিছলে প'ড়ে,
প্যায়দা এসে পাক্ড়ে ধরে,
কাজির কাছে হয় বিচার-
একুশ টাকা দণ্ড তার ।।
সেথায় সন্ধে ছটার আগে
হাঁচ্তে হ'লে টিকিট লাগে
হাঁচ্লে পরে বিন্ টিকিটে
দম্দমাদম্ লাগায় পিঠে,
কোটাল এসে নস্যি ঝাড়ে-
একুশ দফা হাঁচিয়ে মারে ।।
কারুর যদি দাঁতটি নড়ে,
চারটি টাকা মাশুল ধরে,
কারুর যদি গোঁফ গজায়,
একশো আনা ট্যাকসো চায়-
খুঁচিয়ে পিঠে গুঁজিয়ে ঘাড়,
সেলাম ঠেকায় একুশ বার।।
চল্তে গিয়ে কেউ যদি চায়
এদিক্ ওদিক্ ডাইনে বাঁয়,
রাজার কাছে খবর ছোটে,
পল্টনেরা লাফিয়ে ওঠে,
দুপুর রোদে ঘামিয়ে তায়
একুশ হাতা জল গেলায়।।
যে সব লোকে পদ্য লেখে,
তাদের ধ'রে খাঁচায় রেখে,
কানের কাছে নানান্ সুরে
নামতা শোনায় একশো উড়ে,
সামনে রেখে মুদির খাতা-
হিসেব কষায় একুশ পাতা।।
হঠাৎ সেথায় রাত দুপুরে
নাক ডাকালে ঘুমের ঘোরে,
অম্নি তেড়ে মাথায় ঘষে,
গোবর গুলে বেলের কষে,
একুশটি পাক ঘুরিয়ে তাকে
একশ ঘণ্টা ঝুলিয়ে রাখে।।
বোম্বাগড়ের রাজা
কেউ কি জান সদাই কেন বোম্বাগড়ের রাজা-
ছবির ফ্রেমে বাঁধিয়ে রাখে আমসত্ত্ব ভাজা ?
রানীর মাথায় অষ্টপ্রহর কেন বালিশ বাঁধা ?
পাঁউরুটিতে পেরেক ঠোকে কেন রানীর দাদা ?
কেন সেথায় সর্দি হলে ডিগবাজি খায় লোকে ?
জোছ্না রাতে সবাই কেন আলতা মাখায় চোখে ?
ওস্তাদেরা লেপ মুড়ি দেয় কেন মাথায় ঘাড়ে ?
টাকের 'পরে পণ্ডিতেরা ডাকের টিকিট মারে ।
রাত্রে কেন ট্যাঁক্ঘড়িটা ডুবিয়ে রাখে ঘিয়ে ?
কেন রাজার বিছ্না পাতে শিরীষ কাগজ দিয়ে ?
সভায় কেন চেঁচায় রাজা "হুক্কা হুয়া" ব'লে ?
মন্ত্রী কেন কলসী বাজায় ব'সে রাজার কোলে ?
সিংহাসনে ঝোলায় কেন ভাঙা বোতল শিশি ?
কুমড়ো দিয়ে ক্রিকেট খেলে কেন রাজার পিসী ?
রাজার খুড়ো নাচেন কেন হুঁকোর মালা প'রে ?
এমন কেন ঘটছে তা কেউ বলতে পার মোরে ?
বুঝিয়ে বলা
ও শ্যামাদাস ! আয় ত দেখি ব'স তো দেখি এখেনে,
সেই কথাটা বুঝিয়ে দেব পাঁচ মিনিটে, দেখে নে ।
জ্বর হয়েছে ? মিথ্যে কথা ! ওসব তোদের চালাকি-
এই যে বাবা চেঁচাচ্ছিলে, শুনতে পাইনি ? কালা কি?
মামার ব্যামো ? বদ্যি ডাকবি ? ডাকিস নাহয় বিকেলে ;
না হয় আমি বাৎলে দেব বাঁচবে মামা কি খেলে ।
আজকে তোকে সেই কথাটা বোঝাবই বোঝাব-
না বুঝ্বি ত মগজে তোর গজাল দিয়ে গোঁজাব ।
কোন্ কথাটা ? তাও ভুলেছিস ? ছেড়ে দিছিস্ হাওয়াতে ?
কি বলছিলেম পরশু রাতে বিষ্টুবোসের দাওয়াতে ?
ভুলিস্নি ত বেশ করেছিস্, আবার শুনলে ক্ষেতি কি ?
বড় যে তুই পালিয়ে বেড়াস্, মাড়াস্নে যে এদিক্ই !
বলছি দাঁড়া, ব্যস্ত কেন ? বইগুলো আন্ নামিয়ে-
তুই থাকতে মুটের বোঝা বইতে যাব আমি এ ?
সাবধানেতে আন্, ধরছি দাঁড়া- সেই আমাকেই ঘামালি-
এই খেয়েছে ! কোন্ আক্কেলে শব্দকোষটা নামালি ?
ঢের হয়েছে ! আয় দেখি তুই বোস্ ত দেখি এদিকে-
ওরে গোপাল, গোটাকয়েক পান দিতে বল্ খেঁদিকে ।
বলছিলেম কি, বস্তুপিণ্ড সূক্ষ্ণ হতে স্থূলেতে,
অর্থাৎ কিনা লাগ্ছে ঠেলা পঞ্চভূতের মূলেতে-
গোড়ায় তবে দেখতে হবে কোত্থেকে আর কি ক'রে,
রস জমে এই প্রপঞ্চময় বিশ্বতরুর শিকড়ে ।
অর্থাৎ কিনা, এই মনে কর রোদ পড়েছে ঘাসেতে,
এই মনে কর চাঁদের আলো পড়ল তারই পাশেতে-
আবার দেখ ! এরই মধ্যে হাই তোলবার মানে কি ?
আকাশপানে তাকাস্ খালি, যাচ্ছে কথা কানে কি ?
কি বল্লি তুই ? এ সব শুধু আবোল তাবোল বকুনি ?
বুঝতে হলে মগজ লাগে, ব'লেছিলেম তখুনি ।
মগজভরা গোবর তোদের হচ্ছে ঘুঁটে শুকিয়ে,
যায় কি দেওয়া কোন কথা তার ভিতরে ঢুকিয়ে ?-
ও শ্যামাদাস ! উঠলি কেন ? কেবল যে চাস পালাতে !
না শুনবি ত মিথ্যে সবাই আসিস কেন জ্বালাতে ?
তত্ত্বকথা যায় না কানে যত মরি চেঁচিয়ে-
ইচ্ছে করে ডান্পিটেদের কান ম'লে দি পেঁচিয়ে ।
0 comments: