কি মুস্কিল, হুঁকোমুখো হ্যাংলা, হাতুড়ে, রামগরুড়ের ছানা

কি মুস্কিল

সব লিখেছে এই কেতাবে দুনিয়ার সব খবর যত,
সরকারী সব আফিসখানার কোন্‌ সাহেবের কদর কত ।
কেমন ক'রে চাট্‌‌নি বানায়, কেমন করে পোলাও করে,
হরেক্‌ রকম মুষ্টিযোগের বিধান লিখ্‌‌ছে ফলাও ক'রে ।
সাবান কালি দাঁতের মাজন বানাবার সব কায়দাকেতা,
পূজা পার্বণ তিথির হিসাব শ্রাদ্ধবিধি লিখ্‌‌ছে হেথা ।
সব লিখেছে, কেবল দেখ পাচ্ছিনেকো লেখা কোথায়-
পাগ্‌লা ষাঁড়ে করলে তাড়া কেমন ক'রে ঠেকাব তায় !

 





হুঁকোমুখো হ্যাংলা

হুঁকোমুখো হ্যাংলা         বাড়ী তার বাংলা
         মুখে তার হাসি নাই, দেখেছ ?
নাই তার মানে ক ?         কেউ তাহা জানে কি ?
         কেউ কভু তার কাছে থেকেছ ?

শ্যামাদাস মামা তার          আপিঙের থানাদার,
         আর তার কেউ নাই এছাড়া-
তাই বুঝি একা সে         মুখখানা ফ্যাকাশে,
         ব'সে আছে কাঁদ-কাঁদ বেচারা ?

থপ্‌ থপ্‌ পায়ে সে         নাচ্‌ত যে আয়েসে,
         গাল ভরা ছিল তার ফুর্তি,
গাইত সে সারাদিন         'সারে গামা টিম্‌টিম্‌',
         আহ্লাদে গদ-গদ মূর্তি !

এইত সে দুপ'রে         ব'সে ওই উপরে,
         খাচ্ছিল কাঁচকলা চট্‌‌কে-
ওর মাঝে হল কি ?         মামা তার মোলো কি ?
         অথবা কি ঠ্যাং গেল মট্‌‌কে ?



        হুঁকোমুখো হেঁকে কয়,         আরে দূর, তা তো নয়,
                 দেখ্‌ছ না কি রকম চিন্তা ?
        মাছি মারা ফন্দি এ         যত ভাবি মন দিয়ে-
                 ভেবে ভেবে কেটে যায় দিনটা ।

        বসে যদি ডাইনে,         লেখে মোর আইনে-
                 এই ল্যাজে মাছি মারি ত্রস্ত ;
        বামে যদি বসে তাও,         নহি আমি পিছপাও,
                 এই ল্যাজে আছে তার অস্ত্র !

        যদি দেখি কোন পাজি         বসে ঠিক মাঝামাঝি,
                 কি যে করি ভেবে নাহি পাইরে-
        ভেবে দেখ একি দায়,         কোন্‌ ল্যাজে মারি তায়
                 দুটি বই ল্যাজ মোর নাইরে !"











হাতুড়ে


একবার দেখে যাও ডাক্তারি কেরামৎ-
কাটা ছেঁড়া ভাঙা চোরা চট্‌পট মেরামৎ ।
কয়েছেন গুরু মোর, "শোন শোন বৎস,
কাগজের রোগী কেটে আগে কর মক্‌স" ।
উৎসাহে কি না হয় ? কি না হয় চেষ্টায় ?
অভ্যাসে চটপট্‌ হাত পাকে শেষটায় ।
খেটে খুটে জল হ'ল শরীরের রক্ত-
শিখে দেখি বিদ্যেটা নয় কিছু শক্ত ।
কাটা ছেঁড়া ঠুক্‌ ঠাক্‌, কত দেখ যন্ত্র,
ভেঙে চুরে জুড়ে দেই তারও জানি মন্ত্র ।
চোখ বুজে চট্‌পট বড় বড় মুর্তি,
যত কাটি ঘ্যাস্‌ ঘ্যাস্‌ তত বাড়ে ফুর্তি ।
ঠাং-কাটা গলাকাটা কত কাটা হস্ত,
শিরিষের আঠা দিয়ে জুড়ে দেয় চোস্ত ।
এইবারে বলি তাই, রোগী চাই জ্যান্ত-
ওরে ভোলা, গোটাছয় রোগী ধরে আন্‌ত !
গেঁটেবাতে ভুগে মরে ও পাড়ার নন্দী,
কিছুতেই সারাবেনা এই তার ফন্দি-
এক দিন এনে তারে এইখানে ভুলিয়ে,
গেঁটেবাত ঘেঁটে-ঘুঁটে সব দেব ঘুলিয়ে ।
কার কানে কট্‌মট্‌ কার নাকে সর্দি,
এস, এস, ভয় কিসে ? আমি আছি বদ্যি ।
শুয়ে কে রে ? ঠাং-ভাঙা ? ধরে আন্‌ এখেনে-
স্ক্রুপ দিয়ে এঁটে দিব কি রকম দেখেনে ।
গাল ফোলা কাঁদ কেন ? দাঁতে বুঝি বেদনা ?
এস এস ঠুকে দেই- আর মিছে কেঁদ না,
এই পাশে গোটা দুই, ওই পাশে তিনটে-
দাঁতগুলো টেনে দেখি- কোথা গেল চিম্‌‌টে ?
ছেলে হও, বুড়ো হও, অন্ধ কি পঙ্গু,
মোর কাছে ভেদ নাই, কলেরা কি ডেঙ্গু-
কালাজ্বর, পালাজ্বর, পুরানো কি টাট্‌কা,
হাতুড়ির এক ঘায়ে একেবারে আট্‌কা !

 

 

রামগরুড়ের ছানা

রামগরুড়ের ছানা      হাসতে তাদের মানা,
      হাসির কথা শুনলে বলে,
      "হাস্‌ব না-না না-না" ।
সদাই মরে ত্রাসে-      ঐ বুঝি কেউ হাসে !
      এক চোখে তাই মিট্‌মিটিয়ে
      তাকায় আশে পাশে ।
ঘুম নাহি তার চোখে       আপনি ব'কে ব'কে
      আপনারে কয়, "হাসিস্‌ যদি
      মারব কিন্তু তোকে !"
যায় না বনের কাছে,      কিম্বা গাছে গাছে,
      দখিন হাওয়ার সুড়্‌সুড়িতে
      হাসিয়ে ফেলে পাছে !
সোয়াস্তি নেই মনে-      মেঘের কোণে কোণে
      হাসির বাস্প উঠছে ফেঁপে
      কান পেতে তাই শোনে ।
ঝোপের ধারে ধারে      রাতের অন্ধকারে
      জোনাক্‌ জ্বলে আলোর তালে
      হাসির ঠারে ঠারে ।
হাসতে হাসতে যারা      হচ্ছে কেবল সারা
      রামগরুড়ের লাগ্‌ছে ব্যথা
      বুঝছে না কি তারা ?
রামগরুড়ের বাসা      ধমক দিয়ে ঠাসা,
      হাসির হাওয়া বন্ধ সেথায়
      নিষেধ সেথায় হাসা ।




0 comments:

Comment Please

মন্তব্য..

সবিস্তার সূচীপত্র
টেম্পলেট কাষ্টমাইজেশন - তরঙ্গ ইসলাম | তরঙ্গ ইসলাম