আবোল তাবোল
রামধনুকের আব্ছায়াতে,
তাল বেতালে খেয়াল সুরে,
তান ধরেছি কণ্ঠ পুরে ।
হেথায় নিষেধ নাই রে দাদা,
নাই রে বাঁধন নাইরে বাধা ।
হেথায় রঙিন্ আকাশ তলে
স্বপন দোলা হাওয়ায় দোলে,
সুরের নেশায় ঝরনা ছোটে,
আকাশ কুসুম আপনি ফোটে,
রঙিয়ে আকাশ, রঙিয়ে মন
চমক জাগে ক্ষণে ক্ষণ !
আজকে দাদা যাবার আগে
বল্ব যা মোর চিত্তে লাগে-
নাই বা তাহার অর্থ হোক্
নাইবা বুঝুক বেবাক্ লোক ।
আপনাকে আজ আপন হতে
ভাসিয়ে দিলাম খেয়াল স্রোতে ।
আজকে আমার মনের মাঝে
ধাঁই ধপাধপ্ তব্লা বাজে-
রাম-খটাখট্ ঘ্যাচাং ঘ্যাঁচ্
কথায় কাটে কথার প্যাঁচ্ ।
আলোয় ঢাকা অন্ধকার,
ঘণ্টা বাজে গন্ধে তার ।
গোপন প্রাণে স্বপন দূত,
মঞ্চে নাচেন পঞ্চ ভূত !
হ্যাংলা হাতি চ্যাং-দোলা,
শূন্যে তাদের ঠ্যাং তোলা ।
মক্ষি রাণী পক্ষীরাজ-
দস্যি ছেলে লক্ষী আজ ।
আদিম কালের চাঁদিম হিম
তোড়ায় বাঁধা ঘোড়ার ডিম ।
ঘনিয়ে এল ঘুমের ঘোর,
গানের পালা সাঙ্গ মোর ।
দাঁড়ের কবিতা
ঠেকে গেছি বাপ্রে কি ভয়ানক প্রশ্নে !
ভেবে ভেবে লিখে লিখে বসে বসে দাঁড়েতে
ঝিম্ঝিম্ টন্টন্ ব্যথা করে হাড়েতে ।
এক ছিল দাঁড়িমাঝি- দাড়ি তার মস্ত,
দাড়ি দিয়ে দাঁড়ি তার দাঁড়ে খালি ঘষ্ত ।
সেই দাঁড়ে একদিন দাঁড়কাক দাঁড়াল,
কাঁকড়ার দাঁড়া দিয়ে দাঁড়ি তারে তাড়াল ।
কাক বলে রেগেমেগে, "বাড়াবাড়ি ঐ ত !
না দাঁড়াই দাঁড়ে তবু দাঁড়কাক হই ত ?
ভারি তোর দাঁড়িগিরি, শোন্ বলি তবে রে-
দাঁড় বিনা তুই ব্যাটা দাঁড়ি হোস্ কবে রে ?
পাখা হলে পাখি হয় ব্যাকরণ বিশেষে-
কাঁকড়ার 'দাঁড়া' আছে, দাঁড়ি নয় কিসে সে ?
দ্বারে বসে দারোয়ান, তারে যদি 'দ্বারী' কয়,
দাঁড়ে-বসা যত পাখি সব তবে দাঁড়ি হয় !
দূর দূর ! ছাই দাঁড়ি ! দাড়ি নিয়ে পাড়ি দে !"
দাঁড়ি বলে, "ব্যাস্ ব্যাস্ ! ঐখেনে দাঁড়ি দে ।"
পাকাপাকি
কাঁচা ইঁট পাকা হয় পোড়ালে তা আগুনে ।
রোদে জলে টিকে রঙ পাকা কই তাহারে ।
ফলারটি পাকা হয় লুচি দই আহারে ।
হাত পাকে লিখে লিখে চুল পাকে বয়সে,
জ্যাঠামিতে পাকা ছেলে বেশি কথা কয় সে ।
লোকে বলে কাঁঠাল সে পাকে নাকি কিলিয়ে ?
বুদ্ধি পাকিয়ে তোলে লেখাপড়া গিলিয়ে !
কান পাকে ফোড়া পাকে, পেকে করে টন্টন্-
কথা যার পাকা নয় কাজে তার ঠন্ঠন্ ।
রাঁধুনী বসিয়ে পাকে পাক দেয় হাঁড়িতে,
সজোরে পাকালে চোখ ছেলে কাঁদে বাড়িতে ।
পাকায়ে পাকায়ে দড়ি টান হয়ে থাকে সে ।
দুহাতে পাকালে গোঁফ তবু নাহি পাকে সে ।।
0 comments: