বৃহত্তম নিদর্শন – (৪) (৫) (৬)
তিনটি ভূমিধ্বস
ভূমিকা
কেয়ামত ঘনিয়ে আসার বৃহত্তম নিদর্শনাবলীর অন্যতম হচ্ছে, তিনটি বৃহৎ ভূমিধ্বস, যার ফলে বিশ্ববাসী ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়বে। জনজীবনে মারাত্মক প্রতিক্রিয়া দেখা দেবে।
ধ্বস মানে কি?
ভূমি ফেটে গিয়ে নিচের দিকে অদৃশ্য হয়ে যাওয়া।
নিকট অতীত এবং সাম্প্রতিক কালে অনেক ছোট ছোট ভূ-ধ্বসের খবর পাওয়া গেছে। তবে হাদিসে বর্ণিত ভূ-ধ্বস অনেক সুপরিসর ও ব্যাপক হবে।
শেষ জমানায় তিনটি বড় ধরনের ভূমিধ্বসের ঘটনা ঘটবে। কেয়ামতের এই নিদর্শনটি একাধিক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে।
যে সকল হাদিসে ভূমিধ্বসের কথা বর্ণিত হয়েছে
হুযাইফা বিন উছাইদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- আমরা কেয়ামত প্রসঙ্গে আলোচনা করছিলাম, নবী করীম সা. এসে জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা কি আলোচনা করছ? কেয়ামত নিয়ে আলোচনা করছি। বললেন, দশটি বৃহৎ নিদর্শন প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত কেয়ামত সংঘটিত হবে নাঃ
১) ধূম্র
২) দাজ্জাল
৩) অদ্ভুত প্রাণী
৪) পশ্চিম দিগন্তে প্রভাতের সূর্যোদয়
৫) মরিয়ম-তনয় ঈসার অবতরণ
৬) ইয়াজূজ-মাজূজের উদ্ভব
৭) ৮) ৯) তিনটি ভূ-ধ্বস। প্রাচ্যে, পাশ্চাত্যে এবং আরব উপদ্বীপে।
১০) সবশেষে ইয়েমেন থেকে উত্থিত হাশরের দিকে তাড়নাকারী অগ্নি।-” (মুসলিম)
যে সকল হাদিসে ব্যাপক ভূমি-ধ্বসের কথা বলা হয়েছে
কতিপয় হাদিসে ধ্বসিত স্থান ও কারণ-ও উল্লেখ হয়েছে।
উম্মুল মুমেনীন উম্মে সালামা রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সা. বলেন- “জনৈক খলীফার মৃত্যুকে কেন্দ্র বিরোধ সৃষ্টি হবে। তখন কুরায়েশ গোত্রীয় মদীনার একজন লোক পালিয়ে মক্কায় চলে আসবেন। মক্কার লোকেরা তাকে খুঁজে বের করে অনিচ্ছা সত্তেও রুকন এবং মাক্কামে ইবরাহীমের মাঝামাঝি স্থানে বায়আত গ্রহণ করবে। বায়আতের খবর শুনে শামের দিক থেকে এক বিশাল বাহিনী প্রেরিত হবে। মক্কা-মদীনার মাঝামাঝি বায়দা প্রান্তরে তাদেরকে মাটির নিচে ধ্বসে দেয়া হবে। বাহিনী ধ্বসের সংবাদ শুনে শাম ও ইরাকের শ্রেষ্ঠ মুসলমানগণ মক্কায় এসে রুকন ও মাক্কামে ইবরাহীমের মাঝামাঝিতে তাঁর হাতে বায়আত গ্রহণ করবে।” (আবু দাউদ)
কতিপয় হাদিসে -পাপের শাস্তি স্বরূপ ভূমিধ্বসের কথাও বর্ণিত হয়েছেঃ
আবু উমামা রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সা. বলেন- “এই উম্মতের একদল লোক নৈশভোজ, মদ্য পান ও গান-বাজনা করে রাতে শুতে যাবে। সকালে উঠে দেখবে যে, তাদের আকৃতি শুকরের মত বিকৃত হয়ে গেছে। অত্যাধিক ভূ-ধ্বস ঘটতে থাকবে। মানুষ সকালে উঠে বলতে থাকবে, কালরাতে অমুক এলাকায় ভূমি ধ্বসে গেছে। তাদের উপর পাথরের বর্ষণ হবে। মদ্য পান, সুদ বক্ষন, রেশম পরিধান, নর্তকী গ্রহণ ও আত্মীয়তা ছিন্নকরণ অপরাধে তাদের উপর প্রলয়ংকর বায়ূ প্রেরিত হবে।-” (মুস্তাদরাকে হাকিম)
ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সা. বলেন- “এই উম্মতের মাঝে ভূ-ধ্বস, আকার বিকৃতি ও পাথর বর্ষণের শাস্তি আসবে।-” (মুস্তাদরাকে হাকিম)
ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সা. বলেন- “একদা এক ব্যক্তি দম্ভ সহকারে লুঙ্গি টেনে ধরলে তাকে মাটির নিচে ধ্বসিয়ে দেয়া হয়। কেয়ামত পর্যন্ত সে মাটির নিচে চিল্লাতে থাকবে।-” (বুখারী)
আনাছ রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সা. বলেন- “মানুষ দ্রুত শহরমুখী হচ্ছে। প্রাচ্যে ‘-বছরা’ নামে একটি শহর আছে। সেখান দিয়ে অতিক্রম বা গমন করলে ওখানকার জলাভূমি, তৃণভূমি, বাজার এবং বিত্তশালীদের দরজায় প্রবেশ করো না। বরং বছরার উপকণ্ঠ দিয়ে অতিক্রম করবে। কারণ, সেখানেই ভূ-ধ্বস, পাথর বর্ষণ ও ভূ-কম্পন শাস্তি ঘটবে। সেখানকার একদলকে শুকর-বানরে পরিণত করা হবে।-” (আবু দাউদ)
নাফে’ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- একদা আমরা আব্দুল্লাহ বিন উমর রা.এর কাছে বসা ছিলাম। এক ব্যক্তি এসে বলল- অমুক (শামের একজন ব্যক্তি) আপনাকে সালাম জানিয়েছে। আব্দুল্লাহ বিন উমর বললেন- শুনেছি, সে নতুন কোন কুসংস্কার আবিস্কার করেছে। যদি তাই হয়, তবে তাকে গিয়ে আমার সালাম বলবে না। নবী করীম সা.কে আমি বলতে শুনেছি- “কুসংস্কারী যিন্দীক এবং তকদীরে অবিশ্বাসী ব্যক্তিদের উপর ভূমিধ্বস ও পাথর বর্ষণের শাস্তি আবর্তিত হবে।” (মুসনাদে আহমদ)
উপরোক্ত হাদিস-সমগ্র থেকে বুঝা যায়, এই উম্মতের মাঝে সময়ে সময়ে পাপের শাস্তি স্বরূপ ভূ-ধ্বসের ঘটনা ঘটতে থাকবে।
তবে শেষ জমানায় বৃহৎ তিনটি ভূমিধ্বসের মধ্যে আরব উপদ্বীপে ধ্বসের স্থান ও কারণ উদঘাটন করা গেছে। কিন্তু প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের ভূ-ধ্বস, কোথায় কি কারণে ঘটবে, কিছুই উদঘাটন করা যায়নি। আল্লাহই ভাল জানেন।
বৃহত্তম নিদর্শন – (৭)
ধূম্র (ধোঁয়া)
ভূমিকা
কেয়ামতের নিদর্শনাবলীর মধ্যে কিছু ভূমি কেন্দ্রিক, যেমন- ভূ-ধ্বস ও ফসলের মন্দাভাব। কিছু মানুষ কেন্দ্রিক, যেমন- পুরুষ হ্রাস পাওয়া, মহিলা বৃদ্ধি পাওয়া। কিছু মানব চরিত্র কেন্দ্রিক, যেমন- ব্যভিচার বৃদ্ধি। আর কিছু আসমান কেন্দ্রিক, যেমন- ধোঁয়া।
o ধূম্র কি ?
o গত হয়েছে?
o তাৎপর্য কি?
মূলত ধূম্র হচ্ছে কেয়ামত ঘনিয়ে আসার অন্যতম একটি নিদর্শন। আল্লাহ পাক বলেন- “অতএব আপনি সেই দিনের অপেক্ষা করুন, যখন আকাশ ধোঁয়ায় ছেয়ে যাবে। যা মানুষকে ঘিরে ফেলবে। এটা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদের উপর থেকে শাস্তি প্রত্যাহার করুন, আমরা বিশ্বাস স্থাপন করেছি। তারা কি করে বুঝবে, অথচ তাদের কাছে এসেছিলেন স্পষ্ট বর্ণনাকারী রসূল।-” (সূরা দোখান ১০-১৩)
আয়াতে ধোঁয়া বলতে কি উদ্দেশ্য?
১) উলামাদের একটি সম্প্রদায় বলেছেন, এখানে ধোঁয়া বলতে ঈমান আনয়নে অস্বীকার করায় কুরায়েশ লোকদের উপর যে ধোঁয়া এসেছিল, তা উদ্দেশ্য। কঠিন যন্ত্রণার দরুন সে সময় তারা আকাশের দিকে তাকিয়ে কিছুই দেখতে পাচ্ছিল না। আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ রা. সহ একদল তাবেয়ীন এই মত ব্যক্ত করেছেন। ইবনে জারীর তাবারী রহ. -মতটিকে প্রাধান্য দিয়েছেন।
মাছরূক বলেন- আমরা আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদের কাছে বসা ছিলাম। এক লোক এসে বলতে লাগল- হে আবু আব্দুর রহমান! এক লোক বলে বেড়াচ্ছে যে, অচিরেই ধোঁয়ার নিদর্শনটি আবর্তিত হবে। যন্ত্রণায় সকল কাফেরের দম বন্ধ হয়ে যাবে, মুমিনদের সর্দি-জাতিয় অনুভব হবে। একথা শুনে আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ রা. গোস্বায় বসে বলতে লাগলেন- ওহে লোকসকল! আল্লাহকে ভয় কর! যা জান, শুধু তাই মানুষের কাছে বর্ণনা কর! যা জান না, সে বিষয়ে “-“আল্লাহই ভাল জানেন-” বল! কারণ, অজ্ঞাত বস্তু সম্পর্কে আল্লাহ ছাড়া কেউ অবগত নয়। আল্লাহ পাক তাঁর নবীকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন- “বলুন, আমি তোমাদের কাছে কোন প্রতিদান চাই না এবং আমি লৌকিকতাকারী-ও নই!” নবী করীম সা. লোকদের পশ্চাদবরণ দেখে বলেছিলেনঃ “হে আল্লাহ! ইউসূফ আ.-এর যুগের মত (দুর্ভিক্ষের) সাত বৎসর অবতরণ কর!” ফলে দুর্ভিক্ষ লেগে গেল। লোকেরা চামড়া ও মৃত জন্তু বক্ষণ করতে লাগল। মানুষ তখন আকাশের দিকে তাকালে ধোঁয়া দেখতে পেত।-” (বুখারী-মুসলিম)
ইবনে মাসঊদ রা. আর-ও বলেন- “পাঁচটি নিদর্শন গত হয়ে গেছেঃ
১) সার্বক্ষণিক শাস্তি
২) পারস্যের উপর রোমকদের বিজয়
৩) বৃহদাক্রমণ (বদর যুদ্ধ)
৪) চন্দ্র বিদারণ
৫) ধোঁয়া।-”
২) অধিকাংশ উলামাদের মতে- আয়াতে উল্লেখিত ধোঁয়ার নিদর্শনটি আদো অপ্রকাশিত। কেয়ামতের অতি সন্নিকটে প্রকাশিত হবে। আলী বিন আবি তালিব, ইবনে আব্বাস ও আবু সাঈদ রা. এ মতটি গ্রহণ করেছেন।
হাফেয ইবনে কাছীর রহ.-ও এ মতটিকে প্রাধান্য দিয়েছেন।
এতদুভয়ের মাঝে সামঞ্জস্য বিধান করতে গিয়ে কতিপয় জ্ঞানী বলেন- ধোঁয়া দু’-বার প্রকাশ পাবে। একবার নবীযুগে প্রকাশ পেয়েছে। কেয়ামতের সন্নিকটে আরেকবার প্রকাশ পাবে। কোরআনের আয়াতে ধোঁয়া বলতে কুরায়েশ গোত্রকে আচ্ছন্নকারী ধোঁয়া উদ্দেশ্য।
ইবনে মাসঊদ রা. বলতেন- “ধোঁয়া মোট দু-বার প্রকাশিত হবে। একটি গত হয়েছে। আরেকটি অচিরেই প্রকাশ পাবে। আসমান-জমিন পূর্ণ হয়ে যাবে। মুমিনদের সর্দি জাতিয় অনুভব হবে। কাফেরদের নাসিকা ফুটো করে দেবে।-” (তাযকিরা)
প্রসিদ্ধ মত হচ্ছে, কোরআনের আয়াতে যে ধোঁয়ার অপেক্ষা করতে বলা হয়েছে, তা অনেক ব্যাপক হবে, সবাই তা স্পষ্ট লক্ষ করতে পারবে।
তবে কুরায়েশ যে ধোঁয়া দেখতে পেয়েছিল, সেটি তীব্র ক্ষুধার দরুন চোখের ধোকা।
ধোঁয়া সংক্রান্ত হাদিস
o হুযাইফা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- আমরা কেয়ামত প্রসঙ্গে আলোচনা করছিলাম, নবী করীম সা. এসে জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা কি আলোচনা করছ? বললাম- কেয়ামত নিয়ে আলোচনা করছি। বললেন, দশটি বৃহৎ নিদর্শন প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত কেয়ামত সংঘটিত হবে নাঃ (তন্মধ্যে একটি ছিল ধূম্র, হাদিসটি পূর্বে উল্লেখিত হয়েছে) (তিরমিযী, মুসনাদে আহমদ)
o আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সা. বলেন- “ছয়টি বৃহৎ নিদর্শন প্রকাশ হওয়ার পূর্বে-ই দ্রুত আমল করে নাও!
১) পশ্চিম দিগন্তে প্রভাতের সূর্যোদয়।
২) ধূম্র
৩) দাজ্জাল
৪) অদ্ভুত প্রাণী
৫) মৃত্যু
৬) মহা প্রলয়।-” (মুসলিম)
o আব্দুল্লাহ বিন আবি মুলাইকা রা. বলেন- একদিন প্রত্যুষে আমি ইবনে আব্বাস রা.এর কাছে গমন করলাম। তিনি বললেন- গতরাতে আমি একদম ঘুমুতে পারিনি। বললাম- কেন! কি হয়েছে? বললেন- লেজবিশিষ্ট তারকা (ধূমকেতু) উদয় হয়েছিল। ভয় পেয়েছিলাম, ধোঁয়া এসে যায় কি না!! তাই সকাল পর্যন্ত চোখে ঘুম আসেনি।-” (ইবনে জারীর তাবারী, ইবনে আবী হাতিম)
ইবনে আব্বাস রা. ধোঁয়ার আশঙ্কা করেছিলেন। বুঝা গেল, ধোঁয়া কেয়ামতের অন্যতম নিদর্শন।
বৃহত্তম নিদর্শন – (৮)
অদ্ভুত প্রাণী
ভূমিকা
ব্যভিচার, অনাচার ও হত্যাযজ্ঞ অধিক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় শেষ জমানায় কে মুমিন আর কে মুনাফিক পার্থক্য করা কঠিন হবে। তখন-ই আল্লাহ অদ্ভুত প্রাণীর আত্মপ্রকাশ ঘটাবেন।
o অদ্ভুত প্রাণী কি?
o কোথায় এবং কখন প্রকাশিত হবে?
o কি করবে?
কোরআনে সেই অদ্ভুত প্রাণীর আলোচনা
আল্লাহ পাক বলেন- “যখন প্রতিশ্রুতি (কেয়ামত) সমাগত হবে, তখন আমি তাদের সামনে ভূ-গর্ভ থেকে একটি জীব নির্গত করব। সে মানুষের সাথে কথা বলবে। এ কারণে যে, মানুষ আমার নিদর্শনসমূহে বিশ্বাস করত না।-” (সূরা নামল-৮২)
কেমন হবে এই অদ্ভুত প্রাণী? -কোন বিশুদ্ধ হাদিসে এর গুণাগুণ উল্লেখ হয়নি।
মাওয়ারদী এবং ছা’লাবী -প্রাণীটির আকৃতি বর্ণনা করতে গিয়ে প্রমাণহীন অদ্ভুত সব গুণাগুণ আবিস্কার করেছেন, যেমন- মস্তক হবে ষাঁঢ়ের, কান হবে হাতির....ইত্যাদি ইত্যাদি..!!
এ ব্যাপারে প্রামাণ্য ও স্বতঃসিদ্ধ কথা হল যে,
o বাস্তবেই তা একটি প্রাণী।
o সে মানুষের সাথে কথা বলবে।
o ভূ-পৃষ্ঠ থেকে বের হবে।
ভূ-পৃষ্ঠের কোন স্থান হতে বের হবে?
o কেউ বলেছেন, মক্কা নগরীর সাফা পর্বত থেকে।
o কেউ বলেছেন, কা’বার নিন্মদেশ থেকে।
o কেউ বলেছেন. নির্জন মরূপ্রান্তর থেকে।
বিশুদ্ধ কোন হাদিসে এ ব্যাপারে কিছু নির্দিষ্ট করা হয়নি।
সুতরাং আমরা বলব, আল্লাহর কালাম সত্য, অবশ্যই বের হবে। তবে কোত্থেকে বের হবে, তা অজানা।
প্রাণীর বাস্তবতা
o কেউ বলেছেন, সে একজন ব্যক্তি, মানুষের সাথে কথা বলবে। (সম্পূর্ণ ভুল)
o কেউ বলেছেন, এটি সালেহ আ.-এর ঊষ্ট্রী।
o কেউ বলেছেন, সালেহ আ.-এর ঊষ্ট্রীর বাচ্চা।
তার মিশন
সে মানুষকে বলবে, “মানুষ আল্লাহর নিদর্শনে বিশ্বাস করত না”। যেমনটি কোরআনে কারীমে এসেছে- “যখন প্রতিশ্রুতি (কেয়ামত) সমাগত হবে, তখন আমি তাদের সামনে ভূগর্ভ থেকে একটি জীব নির্গত করব। সে মানুষের সাথে কথা বলবে। এ কারণে যে, মানুষ আমার নিদর্শনসমূহে বিশ্বাস করত না।-” (সূরা নামল-৮২)
নাকে চিহ্ন
আবু উমামা রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সা. বলেন- “অদ্ভুত প্রাণী বের হয়ে মানুষের নাকে এক প্রকার চিহ্ন দিয়ে যাবে। এমনকি মানুষ উট ক্রয় করলে জিজ্ঞাসা করা হবে, কার কাছ থেকে কিনেছ? বলবে- অমুক নাসিকা চিহ্নিত ব্যক্তির কাছ থেকে ক্রয় করেছি।-” (মুসনাদে আহমদ)
o চিহ্নের ধরণ কেমন হবে? নাকে তা সবসময় থাকবে?
o তৎপর-বর্তী প্রজন্ম কি তাহলে নাসিকা চিহ্নিত হবে?
o এভাবে মুমিন এবং কাফের চিহ্নিত হওয়ার পর কি ঘটবে?
এভাবেই চলতে থাকবে, শেষ পর্যন্ত এমন সময় আসবে, যখন একে অন্যকে বলতে থাকবে, “হে মুমিন” অথবা “হে কাফের-”।
অবশেষে যখন আল্লাহ পাক কেয়ামত ঘটাতে ইচ্ছা করবেন, তখন মুমিনদের রূহ কব্জা করতে এক প্রকার সুবাতাস প্রেরণ করবেন। ফলে সকল মুমিনের মৃত্যু হবে। অবশেষে কাফেরদের উপর আল্লাহ কেয়ামতের কঠিন আযাব নিপতিত করবেন।
আব্দুল্লাহ বিন আমর রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সা. বলেন- “শেষ জমানায় দাজ্জাল বের হয়ে চল্লিশ (দিন/মাস/বৎসর, বর্ণনাকারী সন্দিহান) অবস্থান করবে। অতঃপর মরিয়ম-তনয় ঈসাকে আল্লাহ প্রেরণ করবেন। দেখতে সে উরওয়া বিন মাসঊদ সদৃশ হবে। সে দাজ্জালকে খুজে বের করে হত্যা করবে। অতঃপর মানুষ সাত বৎসর প্রশান্তিতে জীবন যাপন করবেন। পরস্পর হিংসা বিদ্বেষ থাকবে না। অতঃপর শামের দিক থেকে আল্লাহ পাক এক প্রকার সুবাতাস প্রেরণ করবেন, সকল মুমিনের রূহ সে কব্জা করে নেবে। অণু পরিমাণ ঈমান-ও যার অন্তরে আছে, তাকে-ও সে নিয়ে নেবে। মৃত্যু থেকে বাঁচতে কোন মুমিন যদি সেদিন পাহাড়ের গহীন গুহায় গিয়ে-ও আশ্রয় নেয়, সুবাতাস সেখানেও পৌঁছে যাবে। অতঃপর পৃথিবীতে শুধু অনিষ্টরা বেঁচে থাকবে, ভালমন্দ পার্থক্য করবে না। শয়তান তাদের মাঝে এসে বলবে- তোমরা কি আমার কথা শুনবে না!? তারা বলবে- আদেশ কর! শয়তান তাদেরকে মূর্তিপূজার আদেশ করবে। এভাবে তারা স্বচ্ছল ও প্রশান্তিময় জীবন যাপন করতে থাকবে। আকস্মিক -সিঙ্গায় ফুঁৎকার দেয়া হবে। শুনা মাত্রই সকলে হেলেদুলে মাটিতে লুটিয়ে পড়বে। প্রথম যে শুনতে পাবে, সে নিজের ঊটের আস্তাবলে কর্মরত থাকবে। সে-ই প্রথম মৃত্যুমুখে পতিত হবে। অতঃপর সকল মানুষ ধ্বংস হতে থাকবে।-” (মুসলিম)
মহাপ্রলয় : পর্ব-১১ (ভূমিধ্বস - ধোঁয়া - অদ্ভূৎ প্রাণী)
☼→
মহা প্রলয়
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
রিসেন্ট ব্লগ পোষ্টস
বিষয়শ্রেণী
রাইটার
প্রিয়-ক্লিক
কিছু বই
- অরক্ষিত স্বাধীনতাই পরাধীনতা
- অর্থনীতিতে রাসূল (সা) এর দশ দফা
- আদর্শ মানব মুহাম্মদ (সা)
- আসহাবে রাসূলের জীবনকথা
- ইসলাম ও জিহাদ
- ইসলাম পরিচিতি
- ইসলামী আন্দোলন : সাফল্যের শর্তাবলী
- ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের পারস্পরিক সম্পর্ক
- ইসলামী আন্দোলনের নৈতিক ভিত্তি
- ইসলামী দাওয়াত ও কর্মনীতি
- ইসলামী নেতৃত্বের গুণাবলী
- ইসলামী বিপ্লবের পথ
- ইসলামী রেনেসাঁ আন্দোলন
- ইসলামী সমাজে মজুরের অধিকার
- একটি আদর্শবাদী দলের পতনের কারণঃ তার থেকে বাঁচার উপায়
- চরিত্র গঠনের মৌলিক উপাদান
- দায়ী’ ইলাল্লাহ - দা’ওয়াত ইলাল্লাহ
- নামাজ কেন আজ ব্যর্থ হচ্ছে
- নামায-রোজার হাকীকত
- মোরা বড় হতে চাই
- যাকাতের হাকীকত
- রাসূলুল্লাহর বিপ্লবী জীবন
- শাহ ওয়ালিউল্লাহ দেহলভী ও তাঁর চিন্তাধারা
- সত্যের সাক্ষ্য
- হেদায়াত
0 comments: